শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫ | ১৪ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১২

বিষাদ বসুধা

অফিসের গেটের সামনে মোহিনীকে বহনকারী পাজেরো জিপটি এসে থামে। ড্রাইভার গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে পেছনের দরজা খোলার জন্য এগিয়ে যায়। দরজা খুলে কুর্ণিশের ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকে সে। এই কাজটি মোহিনীর পছন্দ নয়। অনেকবার ড্রাইভারকে তিনি বলেছেন। ওমন কুর্ণিশের ভঙ্গিতে তুমি দাঁড়াবে না। আমার ভালো লাগে না। তারপরও সে এই কাজটি করে। আসলে এটা তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আগে যেখানে সে চাকরি করত— সেখানে এ রকম নির্দেশনাই ছিল। সেখানে সে টানা দশ বছর চাকরি করেছে। অজ্ঞাত কারণে তার চাকরি চলে যায়। মাস খানেক আগে সে মোহিনীর ড্রাইভার হিসেবে যোগ দিয়েছে। দশ বছরের অভ্যাস হঠাৎ করে বদলাবে কি করে?

মোহিনী হাতে ব্যাগ নিয়ে গাড়ি থেকে নামল। দুএক কদম সামনে এগোতেই মোহিনী কিছুটা হোচট খেলেন। তিনি গেটের সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়ালেনও। চারদিকে তাকিয়ে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করলেন। হঠাৎ তার বুকটা কেমন যেন কাঁপন দিয়ে উঠল। আগে কখনো এমনটি হয়নি। এমন থমথমে পরিবেশও কখনো দেখেননি। হাজারো প্রশ্ন তার মাথায় হুমড়ি খেয়ে পড়ে। পরিবেশটা এমন মনে হচ্ছে কেন? কি হয়েছে? কোনো অঘটন কি ঘটেছে?

মোহিনী মনে মনে ভাবেন, নিশ্চয়ই কিছু ঘটেছে। তা না হলে এমন লাগবে কেন? এমন হবেই বা কেন? আমার নিজের অফিস। অথচ নিজের কাছেই অচেনা মনে হয়। কি ঘটতে পারে? এমনটি ভাবতে ভাবতেই মোহিনীর সিঁড়ির উপর পা রাখলেন। এরমধ্যেই মোহিনীর একান্ত সহকারি শাহনাজ বেগম হুড়মুড় করে তার সামনে দাঁড়াল। কাচুমাচু করে বলল, সরি ম্যাম, একটু দেরি হয়ে গেল!
শাহনাজ, অফিসে কি হয়েছে বলো তো?
জি ম্যাম বলছি। আপনি অফিসে বসার পর বলি!
আচ্ছা ঠিক আছে। অফিসের কি অবস্থা? সবাই এসেছে তো?
জি ম্যাম।
অফিসের কারো কোনো সমস্যা হয়েছে?
জি ম্যাম।

কার সমস্যা? কি সমস্যা? তুমি এমন রাগঢাক কেন করছ? তাড়াতাড়ি বলো।
বলছি ম্যাম। আপনি বসুন।

মোহিনী হাতের ব্যাগ পাশে রেখে নিজের চেয়ারে বসলেন। শাহনাজ বেগম এই সময়টুকুর জন্যই অপেক্ষা করছিল। মোহিনী চেয়ারে বসার পরই বলল, ম্যাম একটা দুঃসংবাদ আছে।
সেটাই তো আমি জানতে চাচ্ছি। দুঃসংবাদটা কি?

শফিকুর রহমান সাহেব করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তার লাশ পরিবারের কাছে দেয়নি। সরকারিভাবে দাফন করা হয়েছে।
তাই নাকি! ওহ! বুঝতে পারছি। ছোঁয়াচে রোগ। অন্যদের মধ্যে যাতে না ছড়াতে পারে সেজন্যই এই ব্যবস্থা। আচ্ছা, তার বাসায় কে কে আছে?
তার স্ত্রী আর দুই ছেলে মেয়ে।
তার স্ত্রীকে ফোনে ধরো। আমি কথা বলব।
জি ম্যাম।

শাহনাজ বেগম মোহিনীর কক্ষ থেকেই ফোন করে শফিকুর রহমানের বাসায়। শফিকুর রহমানের স্ত্রী সুলেখা ফোন ধরেন। শাহনাজ বেগম ফোনে বলে, আমি শফিক সাহেবের অফিস থেকে বলছি। ম্যাম কথা বলবেন। তারপর সে ফোনের রিসিভারটা মোহিনীর হাতে এগিয়ে দেয়। মোহিনী ফোন ধরতেই টেলিফোনের ওপাশ থেকে কান্নার শব্দ ভেসে আসে। মোহিনী ফোনের রিসিভার কানে ধরে থাকেন। মোহিনী কারো কান্না সহ্য করতে পারেন না। কান্নার শব্দ তাকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। তার চোখে পানি আসে। তিনিও কাঁদেন। এক পর্যায়ে সুলেখা বললেন, আমরা বুঝতেই পারলাম না, কিভাবে কী হয়ে গেল! হঠাৎ করেই শফিক অসুস্থ হয়ে পড়ে। হাসপাতালে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কোমায় চলে যায়। সেখান থেকে আর ফিরল না। আমরা তাকে এক নজর দেখতেও পারলাম না! এখন আমাদের কি হবে? আজ বিকালে আমাদের তিনজনকেই হাসপাতালে নিয়ে যাবে। আমরাও আক্রান্ত কি না তা পরীক্ষা করবে।
মোহিনী বেদনাহত কণ্ঠে বললেন, আপনি কোনো চিন্তা করবেন না ভাবি। আমরা আছি আপনার পাশে। আমরা থাকবো সব সময়। আমাদের প্রতিষ্ঠানেই আপনি চাকরি করবেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সুলেখা শফিক বললেন, ধন্যবাদ আপা। শুনছি আপনি মানুষকে অনেক উপকার করেন। সাধারণ মানুষের পাশে থাকেন। সেই জন্যই কিছুটা ভরসা পাচ্ছি। অন্তত ছেলে মেয়ে নিয়ে পথে বসতে হবে না।

না না। কি বলেন? এ ধরনের নেতিবাচক চিন্তা মনেও আনবেন না। যে কোনো প্রয়োজনে আমাকে ফোন দেবেন। কোনো রকম দ্বিধা রাখবেন না। শফিক সাহেব অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি এই প্রতিষ্ঠানে অনেক দিয়েছেন। আমরা থাকতে তার পরিবার বিপদে হাবুডুবু খাবে তা হতে পারে না। আপনাদেরকে কোন হাসাপাতালে নেবে, কুর্মিটোলায় নাকি মুগদাতে?
সম্ভবত কুর্মিটোলায়। আমি জানাবো। আপনার মোবাইল নম্বরটা যদি দেন…।

মোহিনী মোবাইল নম্বর দিয়ে সুলেখা শফিকের কাছ থেকে বিদায় নিলেন। তারপর শাহনাজ বেগমকে উদ্দেশ করে বললেন, তুমি ওনার সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রেখ। যখন যা দরকার হয় তা দিও। তাকে সহযোগিতার ক্ষেত্রে কোনো রকম কার্পণ্য করবে না। তুমি বরং এখনই তার বাসায় কাউকে দিয়ে পঞ্চাশ হাজার টাকা পাঠিয়ে দাও। বুঝতে পারছ?
জি ম্যাম।
দেরি কোরো না। উনি হাসপাতালে যাওয়ার আগেই তার হাতে যেন টাকাটা পৌঁছে।
জি জি।
আর শোন, প্রশাসনের জিএমকে আমার কক্ষে পাঠাও।
জি ম্যাম।

শাহনাজ বেগম বের হয়ে নিজের কক্ষে যায়। ইন্টারকমে প্রশাসনের জিএম আবুল কালামকে ফোন মোহিনীর কক্ষে যাওয়ার জন্য বলে। আবুল কালাম সঙ্গে সঙ্গে মোহিনীর কক্ষে এসে হাজির হয়। মোহিনী তাকে উদ্দেশ করে বলেন, শফিক সাহেবের সঙ্গে যারা কাজ করতেন তাদেরকে হোম কোয়ারিন্টিনে পাঠিয়ে দেন। পুরো অফিসকে আবারও খুব ভালো করে সেনিটাইজ করান। বাইরের লোক আসা-যাওয়া আপাতত বন্ধ রাখুন। আর অফিসের সামনে সেনিটাইজ করার যাবতীয় ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে। বুঝতে পারছেন?
জি জি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে কোথাও সেনিটাইজার পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু কি সেনিটাইজার! ডেটল, স্যাভলন থেকে শুরু করে জীবানু নিরোধন যা যা আছে সব কিনে নিয়ে গেছে।
বলেন কী!
তাহলে আর বলছি কী ম্যাম! হুজুগে বাঙালি কি খামাখা বলে! মানুষ পাগলের মতো বাজার থেকে সব কিনে নিয়ে গেছে। যে যা পেরেছে। আমরা কারওয়ান বাজারে লোক পাঠিয়েছি। যেখান থেকে ফোন করে জানালো কিচ্ছু নেই! পরে আর কী করা, ডেটল কোম্পানিকে বললাম, আমাদেরকে কিছু সেনিটাইজার দিতে। ওরা বলল, কাল সকালে ব্যবস্থা করবে।
মাই গড! এই অবস্থা! তাহলে সাধারণ মানুষের কী হবে! যার টাকা ছিল সে কিনে নিয়ে গেছে। যার টাকা নেই সে নিশ্চয়ই এগুলো কিনতে পারেনি! তাদের সংখ্যাই তো বেশি। তাদের কি হবে?
তাদের আর কী হবে? তাদের ভরসা আল্লাহ!

দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়েন মোহিনী। কিছুক্ষণ পর তিনি বললেন, আরেকটা কথা, আমরা তো অনেককে ছুটি দিয়েছি তাই না?
জি ম্যাম।
তারপরও এতো লোক কেন?
ম্যাম, তারা আমাদের অফিসের গাড়িতেই যাতায়াত করে।
তা করুক। তাদের মুভমেন্ট তো হচ্ছে। ব্যবসা অনেক করেছি। এখন মানুষের বাঁচা-মরার প্রশ্ন। আগে বাঁচতে হবে। বেঁচে থাকলে অনেক ব্যবসা করা যাবে। এরমধ্যেই আমাদের একজন গুরুত্বপূর্ণ লোককে আমরা হারিয়েছি। আর কাউকে হারাতে চাই না।
জি ম্যাম।

চলবে…

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১১

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৮

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১

Header Ad
Header Ad

ড. ইউনূসের জন্মদিনে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা

তারেক রহমান ও অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ৮৫তম জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শনিবার (২৮ জুন) সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীতে প্রধান উপদেষ্টার অফিসে বিএনপির চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ফুল ও কেক পৌঁছে দেন।

প্রধান উপদেষ্টার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল ফেরদৌস হাসান সেলিম ফুলের তোড়া ও শুভেচ্ছা সামগ্রী গ্রহণ করেন।

ফুলেল শুভেচ্ছা পেয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং তার সুস্বাস্থ্য ও সফলতা কামনা করেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৪০ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা এবং ক্ষুদ্রঋণ ধারণার প্রবর্তক হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত। তার এই অনন্য অবদানের জন্য ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন।

Header Ad
Header Ad

পিআর পদ্ধতির নামে নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা চলছে: সালাহউদ্দিন আহমদ

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে প্রস্তাবিত পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজনের দাবিকে ‘নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীতে জিয়াউর রহমান স্মরণে আয়োজিত এক স্মারক প্রকাশনা ও আর্কাইভ উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন বলেন, “যারা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাচ্ছেন, তাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট—তারা নির্বাচন বিলম্ব কিংবা সম্পূর্ণভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া বানচাল করতে চায়। পিআর পদ্ধতি বাংলাদেশের বাস্তবতায় প্রয়োগযোগ্য নয়।”

তিনি আরও বলেন, “সংস্কার মানে বাইবেল নয়, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। সংস্কারের মূল প্রবক্তা বিএনপি নিজেই। আমরা এরইমধ্যে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব জাতির সামনে উপস্থাপন করেছি। তাই জাতীয় ঐক্যের নামে একপাক্ষিক দৃষ্টিভঙ্গি চাপিয়ে দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়।”

সালাহউদ্দিন আহমদ জোর দিয়ে বলেন, “কেউ যদি মনে করেন সবাইকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মত মেনে নিতেই হবে, তাহলে ঐকমত্য কখনোই সম্ভব নয়। একতরফা মানসিকতা থেকে বেরিয়ে এসে জাতীয় বাস্তবতাকে বুঝতে হবে।”

বিএনপি এখন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত নির্দিষ্ট দিন-তারিখ ঘোষণা না করায় নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

“সরকার যদি সত্যিই নির্বাচন চায়, তাহলে তাদের উচিত দ্রুত সময়সূচি ঘোষণা করা। বর্তমানে স্থানীয় নির্বাচনের মতো আয়োজন উপযুক্ত নয়; জাতীয় নির্বাচনই এখন দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান, সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং প্রেস সচিব শফিকুল আলম প্রমুখ।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামি দলগুলোর পক্ষ থেকে জাতীয় নির্বাচনে পিআর পদ্ধতির দাবি জোরালো হচ্ছে। বিশেষ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তাদের মহাসমাবেশে এ পদ্ধতি চালুর দাবি তোলে। বিএনপি এই পদ্ধতির বিরোধিতা করে বলছে, এটি বাস্তবসম্মত নয় এবং এতে নির্বাচনের স্বাভাবিক গতিপথ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ইস্যুতে দেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, যা আগামী নির্বাচনের আগে একটি বড় রাজনৈতিক বিতর্কে রূপ নিতে পারে।

Header Ad
Header Ad

জোটবদ্ধ ইসলামি দল হবে আগামী দিনের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি: চরমোনাই পীর

সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম । ছবি: সংগৃহীত

ইসলামপন্থীদের ঐক্যের প্রতি গণমানুষের প্রবল প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, “যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারি, তাহলে জোটবদ্ধ ইসলামি দলই হবে আগামী দিনের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি। ইনশাআল্লাহ, রাষ্ট্রক্ষমতা আমাদের হাতেই আসবে।”

শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

চরমোনাই পীর বলেন, “আমরা স্বাধীনতার পর ৫৪ বছরে বহু রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় দেখেছি, কিন্তু ইসলামি দল আজও রাষ্ট্রক্ষমতায় আসতে পারেনি। এর বড় কারণ—আমরা বারবার নেতৃত্ব ও নীতির বাছাইয়ে ভুল করেছি। এবার আর সে ভুল নয়, এবার আমরা ঐক্যবদ্ধ হবো।”

তিনি জানান, শুধু ইসলামি দলগুলো নয়, বরং দেশপ্রেমিক আরও কিছু রাজনৈতিক শক্তিকে একত্রে নিয়ে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ার প্রক্রিয়া চলছে। সেই ঐক্যই হতে পারে রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার সেতুবন্ধ।

চরমোনাই পীর বলেন, “আমি বহু আগেই বলে আসছি—ইসলামপন্থী ভোট এক বাক্সে আনতে হবে। আমরা যদি কার্যকর ঐক্য গড়ে তুলতে পারি, তাহলে জনগণ আমাদের ওপর আস্থা রাখবে এবং ইসলামি শক্তিই হবে এই দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব।”

তিনি নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের ওপর জোর দিয়ে বলেন, “আগামী নির্বাচনে ‘সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি’ চালু করতে হবে। যে দল যত ভোট পাবে, তারা তত আসনে প্রতিনিধিত্ব পাবে। এটা এখন জনদাবি—বহু রাজনৈতিক দল এই দাবিতে একমত।”

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “বিএনপির উচিত পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণের চিন্তা করা। এতে করে প্রকৃত জনপ্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠা পাবে।”

এ সময় তিনি ইসলামী আন্দোলনের সংস্কার প্রস্তাবনাগুলোর প্রতি দলটির অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “সংস্কার প্রশ্নে আমরা আপসহীন। দেরি করা মানেই ২০২৪-এর গণ-আন্দোলনের সঙ্গে বেইমানি। আমরা বিশ্বাস করি, ৭২-এর সংবিধান জনআকাঙ্ক্ষার প্রতি বধির ছিল, তাই সেটিতে প্রয়োজনীয় সংশোধন অপরিহার্য।”

তিনি আরও বলেন, “ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সবসময় শান্তিপূর্ণ উপায়ে জনমত গঠনে বিশ্বাসী। তবে জনগণের ইচ্ছাকে উপেক্ষা করে যদি নির্বাচন হয়, তাহলে দেশজুড়ে নতুন গণজাগরণ শুরু হবে।”

মহাসমাবেশে হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতি ও ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠে এই বক্তব্য নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের বার্তা দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে ইসলামপন্থীদের সক্রিয় ও সংগঠিত ভূমিকাই যে এখন আলোচনার কেন্দ্রে, সেটাই যেন প্রতিফলিত হলো এই বক্তব্যে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ড. ইউনূসের জন্মদিনে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা
পিআর পদ্ধতির নামে নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা চলছে: সালাহউদ্দিন আহমদ
জোটবদ্ধ ইসলামি দল হবে আগামী দিনের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি: চরমোনাই পীর
খামেনির প্রাণ বাঁচালাম, ধন্যবাদটুকুও দিলো না: ট্রাম্প
পুরস্কার না নিয়ে মনু মিয়ার জানাজায় অভিনেতা খায়রুল বাসার
মা হারালেন ব্যান্ড তারকা তানজির তুহিন
ক্ষমতায় গেলে ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থান নিশ্চিত করবে বিএনপি: আমীর খসরু
ফিলিস্তিনের মতো সাইপ্রাসও দখলে নিচ্ছে ইসরায়েল!
কালও চলবে এনবিআরের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর’
‘এনবিআরের প্রশাসনিক আন্দোলনের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই’
সিইসির সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক নিয়ে যা বললেন প্রেস সচিব
নওগাঁয় ছাত্রদলের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নব গঠিত কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত
করোনায় আরও দুইজনের মৃত্যু,  শনাক্ত ৭
এক সপ্তাহের মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে: ট্রাম্প
ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশে ১৬ দফা ঘোষণা
নতুন রক্তের গ্রুপের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা
গোলাপ জলে গোসল করে রাজনীতি ছাড়লেন আওয়ামী লীগ নেতা
সাগরতীরে বিলাসবহুল রিসোর্ট উদ্বোধন করলেন কিম জং উন
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৬২
কূটনৈতিক অস্ত্র পানি নিয়ে ভারতের কঠোর অবস্থান, শঙ্কায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তান