মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৭

স্নানের শব্দ

মাত্র এক সপ্তাহের বিরতি, কিন্তু শবনমের মনে হচ্ছে যেন বহু বহু দিন পর অফিসে ঢুকেছে সে। সব কিছইু কেমন যেন অচেনা, নতুন। অথচ দৃশ্যত সব একরকমই আছে, সেই তেঁতুল বিচি রঙের সেন্টার টেবিল, টেবিলের কাঁচের নিচে চাপা দেওয়া তারেক আর শবনমের সঙ্গে পাঁচ বছর বয়সী শ্রাবণের হাস্যোজ্জল ছবি, কালো রেক্সিনের রিভলভিং চেয়ার, ডেক্সটপ কম্পিউটর, সাইড টেবিলে কয়েকটা ফাইল, সৌখিন টবে রাখা মিনি ক্যাকটাস। জানালারও ওই পাশে রুগ্ন নিম গাছ। অফিস সহকারী প্রতিদিনের মতো টেবিলে পানির গ্লাস আর মগ ভর্তি কফি রেখে গেছে।

সিইওর সঙ্গে একবার সৌজন্য সাক্ষাতের কথা ভাবে শবনম। এটা দাপ্তরিক ভদ্রতা, আমি যে আবার পুরোদমে কাজে যোগ দিয়েছি ঊর্ধ্বতনকে সেই ম্যাসেজটা পৌঁছে দেওয়া। পাশাপাশি এ কদিন কাজকর্মের কি অগ্রগতি হলো, ম্যানেজমেন্টের গতি প্রকৃতি কোনদিকে কথাচ্ছলে সেটাও আন্দাজ করে নেওয়া যাবে। শবনম সিইওর পারসোনাল সেক্রেটারি রেশমিকে ফোন দেয়, বস রুমে আছে কি না জানতে।
‘না ম্যাম, স্যার তো রুমে নাই।’
‘ও। কোনো মিটিংয়ে গেছে নাকি?’
‘না, ম্যাম। আপনি শোনেন নাই? স্যারের একটা ঝামেলা হয়েছে..’
‘কি ঝামেলা? আমি তো কয়েক দিন ছুটিতে ছিলাম, জানি না, কি হয়েছে, বলো তো? উনার ফ্যামিলির কিছু?’
এবার রেশমি আমতা আমতা শুরু করে।
‘না, ঠিক ফ্যামিলির না, ওসমান স্যার হয়ত আপনাকে পরে জানাবে ম্যাডাম। আমি আসলে তত বেশি কিছু জানি না।’
মেয়েটার কণ্ঠে স্পষ্ট অস্বস্তির ছাপ। শবনম আর জোরাজুরি না করে ফোন ছেড়ে দেয়। মাত্র এই কদিনে কি এমন ঝামেলা হতে পারে যা এমনকি মেয়েটা মুখ ফুটে বলতেও চাইছে না। শবনম আন্দাজ করার চেষ্টা করে মনে মনে। কোনো আর্থিক দুর্নীতি? ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে মতবিরোধ? কি হতে পারে? নিজে থেকে কেউ না জানালে এই পজিশনে অযাচিত কৌতুহল দেখানো তাকে মানায় না।
অফিসে কেমন একটা থম ধরা, রাখরাখ ঢাকঢাক পরিবেশ। শবনমের অস্বস্তি হয়, আর সেই অস্বস্তি নিয়েই নিচের ফ্লোরে অ্যাকাউন্টস চিফের কক্ষে উঁকি দেয় শবনম। চিফ অ্যাকাউন্টেন্ট আতিয়ার নোয়াখালীর মানুষ। আঞ্চলিক ভাষাতে কথা বলেন স্বাচ্ছন্দ্যেই। শবনমের শাশুড়ির মৃত্যুতে আন্তরিকভাবে সৌজন্যসূচক শোকপ্রকাশ শেষে তিনিই খবরটা দিলেন।
‘আঁই তো এই যুগের ব্যাপার-সেপার বিশেষ বুঝি ন’। কি এক মিটু বলে আইছে দ্যাশে, ওই একটা ট্রেইনি এক্সিকিউটিভ নাফিসা তানজিনা.. না কি জানি নাম, চিনিও না ঠিকমতো, কি এক মিটু লেইখছে... সিওরে লই.. উতাল পাথাল পড়ি গেছে এক্কেবারে ..এমডি হেতিরে কইছে কিছুদিন অফিসে না আইত বইলা ..’
ও, ঘটনা তাহলে এই?
এই ভবের অফিসে প্রতিদিন কত নতুন নতুন ছেলে মেয়েই তো সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো আসে যায়, সবার কথা মনে থাকে না কিন্তু নাফিসা তানজিনার কথা স্পষ্ট মনে আছে শবনমের।
প্রচলিত অর্থে হয়ত তাকে সেরকম আহামরি সুন্দরী বলা যাবে না, কিন্তু তার সমস্ত উপস্থিতির মধ্যে একটা সহজ সুন্দর সরল লাবণ্য হীরক খণ্ডের মত ঝিকমিকিয়ে উঠত। মাথাভর্তি জলপ্রপাতের মতো কোঁকড়ানো এলোমেলো চুল ছিল মেয়েটার, চেহারা চালচলন আর পোষাক-আশাকে মনে হতো বিদেশি, বাঙালি নয়। কথায় কথায় একদিন শবনম জেনেছিল, ওর জন্ম ওমানে, বাবা-মার সঙ্গে ছোটবেলাটা ওখানেই কেটেছে, কিশোরী বেলায় ছিল কাতারে পরে দেশ এসে প্রাইভেট কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে। কোম্পানির এইচ আর ডিপার্টমেন্টে ট্রেইনি এক্সকিউটিভ হিসেবে জয়েন করছিল নাফিসা। এই জুনিয়র এক্সিকিউটিভদের সঙ্গে সাধারণত যোগদানের প্রথম দিনের পরিচয়পর্বের পর শবনমের সঙ্গে আর খুব বেশি দেখা সাক্ষাতের সুযোগ নেই। কিন্তু নাফিসার সঙ্গে ঘন ঘন দেখা হওয়ার কারণ শবনমের কক্ষটি তখন ছিল এইচ আর ডিপার্টমেন্টের পাশেই।

সাদা শার্ট জিনস পড়া প্রাণ চাঞ্চল্যে ভরপুর মেয়েটি কখনো মাটিতে পা ফেলে হাঁটতো না, যেন উড়তো, দৌড়াতো। ওর উজ্জ্বল কালো চোখ দুটোতে সারাক্ষণই ঝিলিক দিত কৌতুহল আর আনন্দ।
তারপর কি হলো, হঠাৎ করেই অফিসে আসা বন্ধ করে দিয়েছিল মেয়েটা। কর্মক্ষেত্রে ব্যক্তিগত কৌতুহল বা অল্পপরিচিত কারো খোঁজ খবর করার সুযোগ যেমন কম তেমনি কর্পোরেট আদবকায়দায় সেটি হয়তো ঠিক শোভনও হয় না, তাই নানারাকম কাজের ভিড়ে শবনম ভুলেই গিয়েছিল নাফিসা তানজিনার কথা।
কি লিখেছে মেয়েটা?
আতিয়ার সাহেব ফটোকপি করা একটা কাগজ বাড়িয়ে দেয় শবনমের দিকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইংরেজি ভাষায় লিখেছে নাফিসা। শবনম কাগজটাতে চোখ বুলায়।
‘সেদিন আমি তার কক্ষে গিয়েছিলাম একটা ফাইলে স্বাক্ষর করাতে। আমাকে বসিয়ে রেখে তিনি মনোযোগ দিয়ে ফাইলের কাগজপত্র দেখলেন, পড়লেন, তারপর সবটা দেখে আমার কাজের খুব প্রশংসা করলেন। এটা সেটা জানতে চাইলেন। তারপর প্রয়োজনীয় স্বাক্ষর শেষে ফাইল ফেরত দেওয়ার সময় আচমকা আমাকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। বুকে হাত দেন আর মুখ বাড়িয়ে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেন। আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম কয়েক মুহূর্তের জন্য। বুঝতে পারছিলাম না, কি হচ্ছে, কি করবো। তারপরই তাকে দুহাতে ঠেলে সরিয়ে প্রায় দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে আসি। লজ্জা, ঘৃণা, অপমান এবং একরাশ ভয় আমাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। ওই ঘটনায় আমি মূক ও বধির হয়ে গিয়েছিলাম। ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলাম ভেতরে ভেতরে। এর পর বহুদিন বাইরে যেতে, নতুন মানুষের সঙ্গে কথা বলতে ভয় পেতাম আমি। এই ট্রমা, ভয় আর নিদারুণ মানসিক যন্ত্রণা থেকে বেরিয়ে আসতে আমার বছরের পর বছর লেগেছে। তবু সম্পূর্ণভাবে সেই ক্ষত সেরে উঠেনি।

...কোম্পানির নাম স্পষ্ট করে লিখলেও নিপীড়কের পুরো নাম লেখেনি সে, সংক্ষেপে লিখেছে এনসি। ‘এনসি পুরুষ এবং ক্ষমতাবান। তার বিরুদ্ধে কার কাছে অভিযোগ করবো, সেই সময় তা বুঝিনি আমি। এখন আমি মুখ খুললাম এই ভেবে যে সবার সামনে তার মুখোশ উন্মোচিত হোক। নারীর জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরি হোক।’
কাগজটা পড়া শেষ করে শবনম স্থাণু হয়ে বসে থাকে। যেন বোবা হয়ে গেছে সে, পাথর হয়ে গেছে।
‘দেখছেননি? কি লেইখছে? এমুন একটু আধটু দুষ্টামি পুরুষ মানুষ তো করেই.. এত বছর পরে হেইগুন লই লিখি একটা বেড়াত্যাড়া লাগায় দিসে ..’
শবনমের জলন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে পুরো বাক্য শেষ করার আগেই থেমে যান আতিউর সাহেব।
‘এন সি কি বলছে?’ শবনম নিচু স্বরে জানতে চায়।
‘কি আর কইব? অভিযোগ অস্বীকার কইরছে, চাইর বছর আগের ঘটনা, হেতের বলে কিচ্ছু মনে নাই। কইছে বানোয়াট, মিথ্যা। পরে আবার আমাগো পারচেজের পল্লবিও, ওই যে দুইবছর আগে চাকরি ছাড়ি দি অষ্ট্রেলিয়া গেল গা, হুনছি হেও নাকি হ্যারাসমেন্টের লিখিত অভিযোগ দিছে ম্যানেজমেন্টের কাছে, হের পর আর কি, এমডি একটা তদন্ত কমিটি বানাইছে আর সিইওরে কইছে ছুটিতে যাইত বইলা..পত্রিকায় তো নিউজও আসি গেছে, খেয়াল করেন নাই? বাও রে বাও কি জমানা আইলো.. জীবনে এমন আজব জিনিস শুনি নাই!’

কোনোমতে ভারী পা টেনে টেনে নিজের ঘরে এসে বসে শবনম। না, চাকরিক্ষেত্রে এক ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও তার সঙ্গে কখনো অসৌজন্যতামূলক আচরণ করেনি নির্ঝর চৌধুরী, কোনোদিন কোনো খারাপ ইশারা-ইঙ্গিত করেছেন তেমনটাও মনে পড়ে না। তবে তার মানে এই না যে নাফিসা বা পল্লবির অভিযোগ অসত্য। কত বিবিধ বিচিত্র চেহারা আছে মানুষের! সময় সুযোগ মতো ক্ষণিকের অসচেতনতায় ভদ্র সুবেশের আড়াল সরিয়ে দাঁত নখসমেত সেই বিকট বীভৎস চেহারা সামনে বেরিয়ে আসে। এতদিন মনে করা হতো এসব বুঝি বিনোদন জগতেই বেশি ঘটে, হলিউডের অ্যাশলে, বলিউডের তনুশ্রীরাই কাস্টিং কাউচের শিকার হয়। কিন্তু মিলানোর হ্যাশট্যাগ আহ্বানের ঢেউ যে এভাবে বাংলাদেশে এসেও আছড়ে পড়বে, ঘূর্ণিঝড় বইয়ে দেবে, পুরুষের পালিশ করা চকচকে আবরণ ধুয়ে বেরিয়ে আসবে বিশ্রি কদাকার চেহারা তা কি শবনম ভেবেছিল কখনো?

বেশ কয়েক বছর আগে, শবনমের মনে পড়ে মৌসুমী বলেছিল, একজন স্বনামখ্যাত সাহিত্যিক, আবার নামী কাগজের সাহিত্য সম্পাদক তাকে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘আপনি এখনো বিয়ে করেন নাই, একা একা লাগে না..’
‘না, এটা আমার চয়েস, আমি স্বেচ্ছায় সিঙ্গেল থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ মৌসুমী সাবলীল ভাবেই জানিয়েছিল।
‘তাহলে শারীরিক চাহিদা কিভাবে মিটান? না, মানে জৈবিক চাহিদা তো অস্বীকার করার কিছু না.. সেটা নিশ্চয়ই আছে আপনার.. মানে এতে দোষের কিছু নেই, ...রাজি থাকলে আপনি আর আমি একদিন লং ড্রাইভে যেতেই পারি... আরও অনেক কিছুই হতে পারে...’
মৌসুমী রাগে দুঃখে অপমানে কাঁপতে কাঁপতে তার রুম থেকে বেরিয়ে এসেছিল। সাহস করে কাউকেই তখন কথাটা খুলে বলতে পারেনি, উল্টো মানুষজন তাকে নিয়েই হাসাহাসি করবে ভেবে।

শবনম হাত গুটিয়ে বসে থাকে। রাগ, ক্রোধ, দুঃখ ও অস্বস্তির ককটেলে মনটা একটা তিক্ত বিষাদে আচ্ছন্ন হয়ে থাকে তার।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব-৬

স্নানের শব্দ: পর্ব-৫

স্নানের শব্দ: পর্ব-৪

স্নানের শব্দ: পর্ব-৩

স্নানের শব্দ: পর্ব-২

স্নানের শব্দ: পর্ব-১ 

আরএ/

Header Ad

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে কড়াকড়ির মানে ‘ডাল মে কুচ কালা হ্যায়’: দেবপ্রিয়

‘মোয়াজ্জেম হোসেন স্মারক বক্তৃতা’ অনুষ্ঠা‌নে বক্তব্য রাখছেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবা‌দিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার মানে সেখানে ‘ডাল মে কুচ কালা হ্যায়’—এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন বেসরকা‌রি সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

মঙ্গলবার (৭ মে) রাজধানীর পল্ট‌নে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের স্মরণে ‘মোয়াজ্জেম হোসেন স্মারক বক্তৃতা’ অনুষ্ঠা‌নে এসব কথা ব‌লেন তি‌নি।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, এতদিন তথ্যে নৈরাজ্য চল‌ছিল, এখন অপঘাত ঘট‌ছে। বাংলা‌দেশ ব্যাংকে সাংবা‌দিক প্রবেশ কর‌তে দি‌চ্ছে না। এর মা‌নে তা কী বার্তা দি‌চ্ছে। এখন ওখা‌নে এমন কিছু ঘট‌ছে, তা য‌দি জনসমক্ষে প্রকাশ পায় তাহ‌লে বড় ধর‌নের নাশকতা হ‌য়ে যা‌বে। এই নাশকতাকারীরা হ‌চ্ছে বাংলা‌দে‌শের অর্থনৈ‌তিক বিটের সাংবা‌দিকরা।

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ১৯৯০-এর দশক গণতন্ত্রের জন্য স্বর্ণযুগ ছিল। বর্তমানে সেটিকে বিশ্রুত মনে হয়। বর্তমানে তথ্য-উপাত্তে অপঘাত হয়েছে। আগে তথ্য-উপাত্তে দৃষ্টিশক্তির অভাব ছিল। এখন বৈকল্য এসেছে। এর সর্বশেষ প্রমাণ বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকারে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা। একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান তার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে চাইলে এটা করতে পারে না। ঘরেই যদি না ঢোকা যায় তাহলে কী বার্তা পাওয়া যাচ্ছে? এ থেকে বার্তা আসছে যে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে যেসব তথ্য-উপাত্ত থাকে সেগুলোর অবস্থা এমন যে, সেগুলো জনসম্মুখে প্রকাশ পেলে বড় ধরনের নাশকতা হয়ে যেতে পারে।

‘মোয়াজ্জেম হোসেন স্মারক বক্তৃতা’ অনুষ্ঠা‌নে বক্তব্য রাখছেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক তথ্য-উপাত্তের জন্য শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান ছিল। অনেক তথ্য তাৎক্ষণিক পাওয়া যেতো। তার বিশ্বাসযোগ্যতাও ছিল। বিশেষ করে বৈদেশিক লেনদেন সংক্রান্ত। অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তুলনায় নির্ভরযোগ্য ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই বাংলাদেশ ব্যাংক যদি এভাবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে নেয় তাহলে সুনামহানি ঘটবে, এতে সন্দেহ নেই।

তিনি বলেন, রপ্তানি হচ্ছে, কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যালান্স অব পেমেন্টের তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে, টাকা আসছে না। সাংবাদিকদের মাধ্যমে মানুষ তা জানে। এখন এই তথ্য বন্ধ করা হচ্ছে। এ ধরনের সংবেদনশীল তথ্য নিয়ন্ত্রণ করা হলে সেটা সরকারের জন্য অপকারী। আর বাংলাদেশ ব্যাংক এমন সময়ে এই উদ্যোগ নিয়েছে যখন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সরকারের সংস্কার উদ্যোগের ফলাফল বিশ্লেষণ করছে। সেসময় প্রবেশ নিষেধ, তার মানে ‘ডাল মে কুচ কালা হ্যায়। এ আত্মসংরক্ষণমূলক পদক্ষেপ সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ ধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

সাম্প্রতিক সময়ে অনেক নতুন ধরনের তথ্য সরকার প্রকাশ করতে শুরু করেছে। এতে দেশের গবেষকরা তথ্য-উপাত্ত প্রবাহে হঠাৎ আলোর ঝলকানি দেখছিলেন জানিয়ে দেবপ্রিয় বলেন, আলোতে শুধু ঝলকানি থাকে না, তাতে তাপও থাকে। সেই তাপ অনেকে সহ্য করতে পারছেন না। এতে সবচেয়ে ক্ষতি হচ্ছে শুভ মনস্কামনাসম্পন্ন রাজনীতিবিদদের।

ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে বিমান হামলার সাইরেন

প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে রকেট বা ড্রোন হামলার আশঙ্কায় অন্তত চারবার সাইরেন বাজানো হয়েছে। ৩০ মিনিটের কম সময়ের মধ্যে এসব সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ মে) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সরাসরি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সতর্কতার অর্থ হলো রকেট বা ড্রোন হামলা হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সেইসঙ্গে কোনো গোষ্ঠী হামলার দায় এখন পর্যন্ত স্বীকার করেনি।

উল্লেখ্য, গত ৮ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। এতে শুরু গাজায় ৩৪ হাজারের বেশি প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছে ৭৮ হাজারের বেশি। অন্যদিকে ইসরায়েলে হামাসের হামলায় নিহত হয়েছে ১২০০ জন, আহত তিন হাজারের বেশি।

এই যুদ্ধের শুরু থেকে ইসরায়েলি বাহিনী ও হিজবুল্লাহের মধ্যে গোলাগুলি হচ্ছে। হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা আক্রমণ চালাবে।

বন্ধুদের আড্ডায় রাসেল ভাইপারের ছোবল, প্রাণ গেল রাবি শিক্ষার্থীর

নিহত শিক্ষার্থী শাকিনুর রহমান সাব্বির। ছবি: সংগৃহীত

সন্ধ্যায় পদ্মার নদীর তীরে বন্ধুদের সঙ্গে বসে আড্ডা দেওয়র সময় বিষধর রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শাকিনুর রহমান সাব্বির নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (৬ মে) সন্ধ্যায় পদ্মা নদীর পাড়ে তিনি সাপের ছোবলে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসারত অবস্থায় রাতেই তার মৃত্যু হয়। মৃত সাব্বির রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায়।

সাব্বিরের সাপের ছোবলে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি তার বন্ধু রাকিবুল ইসলামের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে প্রথম জানা যায়।

ফেসবুক পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আসসালামু আলাইকুম। আমার বন্ধুকে গতকাল সন্ধ্যায় রাসেল ভাইপার বাইট করেছে। ৩৫ মিনিটের মধ্যে আল্লাহর রহমতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছিলো। ভ্যাক্সিন পুশ করার পরের কিছু সময় ভালো ছিলো। আজকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। খুব টেনশন হচ্ছে। আপনারা সবাই আমার বন্ধুর জন্য দোয়া করবেন প্লিজ। সে যেন আমাদের মাঝে আবার ফিরে আসে।’ পরে আরেকটি পোস্টের মাধ্যমে তিনি সাব্বিরের মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করেন।

রাকিবুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, ‘মাগরিবের নামাজ শেষে কয়েকজন বন্ধু মিলে মোক্তার বাজার সংলগ্ন পদ্মাপাড়ে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। সেখানে বসে সবাই জিলাপি খাচ্ছিলাম। জিলাপি খাওয়া শেষে আমাদের মধ্যে একজন কাগজের প্যাকেটটা ফেলে দেয়। সাব্বির হাত মোছার জন্য সেই কাগজটা তোলার সময় বিষধর রাসেল ভাইপার তাকে ছোবল দেয়। তখন সাপটিকে মেরে আমরা বন্ধুরা তাকে আধাঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু শেষমেশ তাকে আর বাঁচানো গেল না।’

এ বিষয়ে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহম্মদ বলেন, রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে ওই রাবি শিক্ষার্থী মারা গেছেন। তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে কড়াকড়ির মানে ‘ডাল মে কুচ কালা হ্যায়’: দেবপ্রিয়
ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে বিমান হামলার সাইরেন
বন্ধুদের আড্ডায় রাসেল ভাইপারের ছোবল, প্রাণ গেল রাবি শিক্ষার্থীর
সিক্স-জি নেটওয়ার্ক নিয়ে হাজির জাপান, গতি ফাইভ-জি’র চেয়ে ২০ গুণ
হ্যাটট্রিক জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ
টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তৃতীয় বিয়ের আলোচনার মধ্যে ‘তুফান’ নিয়ে হাজির শাকিব খান
ডেঙ্গুতে আমার মা মারা গেছেন, আর কেউ যেন মারা না যায়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সিনেমায় আসছেন সোহেল চৌধুরী–দিতির কন্যা লামিয়া
৬ মাসের মধ্যে শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল পুরোপুরি চালু : মন্ত্রী
টানা পঞ্চমবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন পুতিন
ডামি ও প্রতারণার উপজেলা নির্বাচনের সঙ্গে জনগণ নেই : রিজভী
কারওয়ান বাজারে হঠাৎ প্রাইভেটকারে আগুন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে লাগবে ডোপ টেস্ট
ম্যাডোনার কনসার্টে হাজির ১৬ লাখ দর্শক
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ
এ বছর পুলিৎজার পুরস্কার পেল যেসব সংবাদমাধ্যম
৩ দিনেই স্টার সিনেপ্লেক্স থেকে নামিয়ে দেওয়া হল 'ডেডবডি'
গরমে আনারস খাওয়ার উপকারিতা
দেশে যানবাহনের নতুন স্পিড লিমিট, মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতি ৬০ কিলোমিটার