বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪ | ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৫

স্নানের শব্দ

অঞ্জনার বিউটি পার্লারে চার পাঁচ ঘণ্টা ধরে স্পা, অয়েল ম্যাসেজ, হেয়ার কেয়ার, পেডিকিউর, ম্যানিকিউর করিয়ে একদম ফ্রেশ ঝরঝরে প্রশান্তির একটা অনুভতি হলো শবনমের। মাঝে মাঝে পার্লারে এসে কাজ কর্ম ভুলে নিজেকে ছেড়ে দেওয়ার এই অভ্যাসটা রপ্ত করিয়েছিল রওশন আপা। শবনমের চাকরি জীবনের প্রথম দিককার সিনিয়র সহকর্মী। দেখতে যেমন সুন্দরি ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন তেমনি মেধাবি, সবসময় আপাদমস্তক পরিপাটি ফিটফাট, সতেজ, সজীব একজন মানুষ।

শবনমকে বলতেন, ‘শেনো, নিজের যত্ন, নিজের আরামের ব্যবস্থা নিজেই করবা। নয়তো কাজ করার যে শক্তি উদ্যম সবই ফুরিয়ে যাবে। নিজে ভালো না থাকলে অন্যদের ভালো করবা কীভাবে? দুর্বল হলে কেউ কিন্তু তোমাকে দাম দিবে না।’

সেই রওশন আপা মারা গেলেন স্তন ক্যান্সারে ভুগে। অপারেশন, রেডিয়েশন, কেমো কিছুই তাকে বাঁচাতে পারল না। আপা অবশ্য খুব সাহসের সঙ্গে মৃত্যুটা মোকাবিলা করেছিলেন। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মৃদু গলায় স্পষ্ট বলেছিলেন,
‘দেখো যা অনিবার্য, তা নিয়ে কান্নাকাটির কি আছে? দুদিন আগে বা পরে মরতে তো হতোই! না হয় আমি একটু আগের স্টেশনেই নেমে গেলাম!’

রওশন আপা বেঁচে থাকলে, কর্মক্ষম থাকলে তিনি হয়ত কোম্পানির সিইও পদ পর্যন্ত পেতে পারতেন। কে জানে? শবনম-ই কি পারবে শেষ পর্যন্ত এই মইয়ের চূড়ায় উঠতে, এতো বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে ...!

শবনমের ভেতর থেকে কেউ যেন প্রশ্ন করে, চূড়ায় কি উঠতেই হবে? কীভাবে উঠবে? কি এমন হবে শীর্ষে উঠলে? না উঠলেই বা জীবনের কি এমন ক্ষতি বৃদ্ধি হবে?

তার ভেতর থেকেই আবার উত্তর আসে, আমি না হলে অন্য কেউ ওই পদে যাবে, জায়গা তো খালি থাকবে না, তাহলে আমিই বা নই কেনো? যদি আমি যোগ্যতা সম্পন্ন হই, যদি আমার দক্ষতা থাকে, ভালো কাজের অভিজ্ঞতা থাকে, যদি গ্রহণযোগ্যতা থাকে, তবে ক্যারিয়ারের শিখরে কেনইবা উঠব না আমি? কেন পিছিয়ে থাকব? কেন গুটিয়ে রাখব নিজেকে? নিজের যোগ্যতা কেনো প্রমাণ করব না?

কিন্তু ব্যাপারটা কি এতই সোজা? গাছের ফলের মতো টুপ করে তোমার সামনে এসে পড়বে পদোন্নতি? বহুকালের ট্যাবু ভেঙে একজন নারীকে কি এত সহজে ওরকম উচ্চ পদে বসতে দেবে ওরা? তা নয় বলেই তো দুর্ভাগ্যজনক হলেও মনিরুজ্জামানদের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, ওরা কতটা সুচারুভাবে, কতটা দক্ষতার সঙ্গে প্রমাণসহ ওসমান গণির দুর্নীতির তথ্যটা উপযুক্ত জায়গায় অর্থাৎ ঊর্ধ্বতনদের কাছে বিশ্বাসযোগ্যভাবে উপস্থাপন করতে পারে! এটার ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু। আচ্ছা, আজকে কি ওরা বোর্ড মেম্বারদের কারো সঙ্গে দেখা করতে পেরেছে? শবনম ইচ্ছে করলে ফোন করে জেনে নিতে পারে, কিন্তু করল না।

পার্লার থেকে বেরুতে বেরুতে প্রায় সন্ধ্যা হলো। আকাশে বেলা শেষের রুগ্ন আলো। রাস্তার পার ঘেষে গাছ নেই, পাখি নেই, শুধু বিষণ্ন বাস, রিকশা, প্রাইভেটকার, ফুটপাথে ক্লান্ত অবসন্ন মানুষ। যেন ধোয়া ঠেলে, হর্ণ টিপে, মলিন বাতি জ্বালিয়ে কোনো অনিশ্চিত অন্ধকারের দিকে ছুটে যাচ্ছে তারা। একটু খিদে খিদে লাগছিল শবনমের। এরকম সন্ধ্যাগুলোতে নাস্তা হিসেবে পেঁয়াজ, কাচা মরিচ, সর্ষের তেল আর মচমচে চানাচুর মিশিয়ে মুড়ি মাখা হতো ওদের মফস্বলের বাসায়। কি অপূর্ব স্বাদ আর গন্ধ ছিল সেই মুড়ি মাখার! আহা, বড় হতে হতে শৈশবের সেইসব স্বাদ গন্ধ কোন অজানায় হারিয়ে যায়, আর কোনোদিনই খুঁজে পাওয়া যায় না!
শবনম ভাবল, এই সন্ধ্যা নামা ব্যস্ত শহরে নিজেকে একটা ট্রিট দিলে কেমন হয়? ধানমন্ডির এদিকটায় অনেকগুলো রেস্টুরেন্ট পাশাপাশি। দুই পা সামনে এগিয়ে ‘সিক্রেট আই’ নামের একটা রেস্টুরেন্টের কুয়াশাচ্ছন্ন কাঁচের দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকেই একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেল শবনম। লাউড স্পিকারে ড্রাম গিটারের চড়া বাদ্যসহযোগে ইংরেজি গান বাজছে, হাল্কা আলোয় অল্প বয়সী ছেলেমেয়েরা নিচু টেবিল ঘিরে বসে উচ্চস্বরে উদ্দাম আড্ডা দিচ্ছে। এই পরিবেশে তার বয়সী একজন একলা নারী হয়ত খানিকটা বেমানানই। একটু ইতস্তত করে বেরিয়ে আসবে কিনা একবার ভাবল শবনম। নীল ইউনিফর্ম পরা একটা কমবয়সী সুদর্শন ছেলে তাকে উদ্ধার করতে হাসি মুখে এগিয়ে এল তখন, কোণার দিকের একটা চেয়ার টেনে শবনমকে বসার ব্যবস্থা করে দিল সে। মেন্যু দেখে একটা চিকেন স্যান্ডউইচের সঙ্গে ল্যাটে কফি অর্ডার করল শবনম।

নিজেকে একটু গুছিয়ে নিয়ে বসলো স্থির হয়ে। কেউ তাকাচ্ছে না তার দিকে, সবাই আপনাতে বিভোর, নিজেদের হৈ হল্লা আর কোলাহল ঘিরে নিজেরাই মগ্ন। ফলে এই মধ্যবয়সিনী নারী যে বেখাপ্পা আসবাবের মতো সমাবেশের কোণায় একাকী ঘাপটি মেরে বসে আছে তা নিয়ে কারো কোনো মাথা ব্যাথা দেখা গেল না।

ফলে চারপাশের হৈচৈ উপেক্ষা করে আবার নিজের চিন্তায় ডুব দিল শবনম। মানুষের কত চাহিদা, তাই না? ভাবলো সে, এক জীবনে কত কিছু পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়। প্রেম, বিয়ে, সন্তান, চাকরি, বাড়ি, গাড়ি। দৌড় আর দৌড়। এই জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে কত কত মাইলফলক পেরিয়ে এসে কত কত সফলতার ফিতা ছুঁয়ে এখন আরও সামনে এগিয়ে যাওয়ার হাতছানি। পর্বতের রৌদ্র আলোকিত সোনালী চড়া স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, কিন্তু তা স্পর্শ করতে হলে হাঁটতে হবে আরও অনেকদূর। থামা যাবে না।

মনিরুজ্জামানরা নিজে থেকে, বলতে গেলে স্বপ্রণোদিত হয়ে ওসমান গণির কাজ কর্মের ফাঁক-ফোঁকর খুঁজে বের করে নিয়ে তার কাছে এসেছে। হ্যাঁ, সে ওদের সেই কাজ করতে বলেনি, কোনো রকম উসকানিও দেয়নি। আবার বাধাও দেয়নি (অবশ্য বাধা দেবারই বা কি আছে!) উৎসাহিতও করেনি। বরং এই সময়ে ভাগ্যক্রমে এটা তার জন্য যুদ্ধে জেতার একটা মোক্ষম সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। না চাইতেই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার একটা অস্ত্র, একটা কৌশল হাতে পেয়ে গেছে সে। যুদ্ধক্ষেত্রে তো সবই বৈধ। অল ইজ ফেয়ার ইন লাভ অ্যান্ড ওয়ার। নিয়ম মানলে যুদ্ধে জেতা যাবে না। তবে এটাও ঠিক যে প্রতিপক্ষ চুপচাপ হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। বিনা যুদ্ধে অন্য পক্ষও কি ছাড়বে সূচগ্র্য মেদেনী? ওরাও তো প্রাণপণ চেষ্টা করবে শবনমের ত্রুটি খুঁজে বের করতে।
পেছনের দিকে তাকিয়ে নিজের ভুল-ত্রুটি খোঁজার চেষ্টা করে শবনম। নাহ অফিশিয়াল কাগজপত্রে সইসাবুদ করার ক্ষেত্রে সে বরাবরই খুব সাবধানি, ভাল করে না পড়ে, না দেখে কোথাও সই করে না সে।

ওয়েটার টেবিলে গরম কফি আর স্যন্ডউইচ দিয়ে গেছে। শবনম স্যান্ডউইচ শেষ করে ধীরে ধীরে কফির কাপে চুমুক দেয়। একটু দূরে আবছা আলো আঁধারে দুই বন্ধুর সাথে বসে থাকা সাদা শার্ট আর কালো প্যান্ট পড়া কোঁকড়া চুলের মেয়েটাকে দেখে হঠাৎ করে নাফিসা তানজিনার কথা মনে পড়ে তার। চেহারায় বেশ মিল আছে দুজনের। কে জানে আত্মীয় কি না। আহা, অফিস প্লেসে যৌন হয়রাণির ভয়াবহ ক্ষত আর বেদনা বুকে নিয়ে কেমন আছে নাফিসা? সর্বসমক্ষে সত্যটা বলতে পেরে মনের মধ্যে চেপে রাখা যন্ত্রণার খানিকটা উপশম কি হয়েছে তার? কে জানে?

বিল মিটিয়ে উঠে দাঁড়াতেই শবনমের সামনে দিয়ে মাথা ভর্তি রঙীন চুল দুলিয়ে একটা মেয়ে দ্রুত হেঁটে চলে যায়। ওকে দেখে শ্রাবণের কথা মনে পড়ে শবনমের। এতক্ষণে নিশ্চয়ই বাসায় ফিরেছে মেয়েটা। হয়ত তারেকও ফিরেছে। অভ্যাসবশত ওরা ভাবছে শবনম অফিসেই আছে, মিটিং সিটিং নিয়ে ব্যস্ত। তাই কেউ ফোন করেনি। একটা উবার ডেকে বাড়ির পথ ধরে শবনম। তার মনে হয়, আজকের দিনটা কাটলো একটা সুতা ছেঁড়া ঘুড়ির মতো। কিছুটা উদ্দেশ্যবিহীন। সকালের আকস্মিক বৃষ্টি, সিদ্ধান্ত নিয়ে অফিস কামাই করা, খালি বাসায় কয়েক ঘণ্টা একলা সময় পার করা তারপর সৌন্দর্য চর্চার উসিলায় প্রায় একটা বেলা খরচ করে ফেলা এবং এলোমেলো ভাবনায় উড়ে চলা। নট ব্যাড। নিত্য কর্মের স্বাভাবিক চাঞ্চল্য থেকে এই সাময়িক মুক্তি, এই অচঞ্চল ঝিম ধরা একটা দিন, নিজের সঙ্গে নিজেই সকাল সন্ধ্যা মগজের ভেতর উল্টা পাল্টা কথোপকথন করে কাটিয়ে দেওয়া।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>
স্নানের শব্দ: পর্ব-১৪

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৩

স্নানের শব্দ: পর্ব-১২

স্নানের শব্দ: পর্ব-১১

স্নানের শব্দ: পর্ব-১০

স্নানের শব্দ: পর্ব-৯

স্নানের শব্দ: পর্ব-৮

Header Ad

গণমাধ্যমের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

কর্মশালায় বক্তব্য রাখছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। ছবি: সংগৃহীত

তথ্য অধিকার আইনের আওতায় গণমাধ্যমের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

মঙ্গলবার (৮ মে) রাজধানীর দারুস সালামে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘তথ্য অধিকার আইন ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, তথ্য অধিকার আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন সরকার নিশ্চিত করতে চায়। এ আইন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে পাশ করা হয়। সরকার নিজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য এ আইন করেছে। তবে যেকোনো একটি আইন সমাজে তৈরি হলে, সে আইন বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে। এ আইনে যারা তথ্য নেবেন বা যারা তথ্য দেবেন দুই পক্ষেরই কিছু বোঝাপড়ার অভাব থাকতে পারে। এ আইন শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবে গণমাধ্যমকে আরও শক্তিশালী করেছে। কিন্তু সে অস্ত্রের ব্যবহার না অপব্যবহার হবে সেটা বোঝা এবং এ আইনে যাদের কাছে তথ্য চাওয়া হবে তাদের মধ্যে একটি সংস্কৃতিগত রূপান্তর দরকার। তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় জড়তা থাকে। যেগুলো জনসম্পৃক্ত তথ্য, জনগণের যেটা অধিকার সে তথ্য দেয়ার বিষয়টি সরকার নিশ্চিত করতে চায়। গণমাধ্যমের সাংবাদিকদেরও তথ্য চাওয়ার ক্ষেত্রে পেশাদার অ্যাপ্রোচ থাকা প্রয়োজন।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, তথ্য অধিকার আইনের অধীন যে তথ্য চাওয়ার অধিকার আছে সে বিষয় নিয়ে অনেক সময় যারা তথ্য চাইবেন তাদের পক্ষ থেকেও কিছু ভুল বোঝাবুঝি থাকে। কোনো তথ্য সর্বসাধারণের জন্য এবং কোনো তথ্য গোপন তথ্য সেটার পার্থক্য করতে পারা জরুরি। কিছু তথ্য আছে স্পর্শকাতর যেগুলো গোপন আইনের অধীন রক্ষিত আছে, এগুলো সর্বসাধারণের জন্য নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক, বিটিআরসিসহ এ ধরনের অন্যান্য স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হয়। এসব কৌশল বাস্তবায়নের আগপর্যন্ত অনেক সময় গোপন রাখতে হয়। এগুলো প্রকাশ করলে অনেক সময় বৃহত্তর স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এক্ষেত্রে সাংবাদিকতা, তথ্যের অবাধ প্রবাহ, তথ্য মানুষের কাছে পৌঁছানো এবং স্পর্শকাতর তথ্য এসবগুলোর মধ্যে ভারসাম্য করতে হয়। সেখানে প্রশিক্ষণ, যোগাযোগ ও মিথস্ক্রিয়া সব পক্ষের করা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, তথ্যের অবাধ প্রবাহ, জনগণের কাছে তথ্য পৌঁছানো ও অপতথ্য মোকাবিলা করতে হবে। তবে সর্বসাধারণের জন্য তথ্য এবং জাতীয় স্বার্থে যেগুলোক পৃথিবীর সব দেশে স্পর্শকাতর ও গোপন তথ্য হিসেবে ধরা হয় সেগুলোর মধ্যে পার্থক্য নিরূপণের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। আমরা সরকার ও প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিতে চাই। এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অঙ্গীকার।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, তথ্য অধিকার আইনকে আমরা আরও প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমরা চাই, সাংবাদিকরা যেন এ আইন ব্যবহার করে আরও ক্ষমতাপ্রাপ্ত হোন, এ আইনের পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারেন এবং তার উপযোগিতা আমরা সমাজে পাই। একইসঙ্গে এ আইনের আমরা দায়িত্বশীল ব্যবহার দেখতে চাই। যাদের এ আইনের অধীনে তথ্য দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে তাদের প্রতি আহ্বান থাকবে যেন তথ্য চাওয়া হলে সেটি দেওয়া হয়। জনগণের পক্ষ থেকে যখন গণমাধ্যম তথ্য চাইবে, সে তথ্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। সঠিক তথ্য যত দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরবরাহ করা হবে, ততো গুজব বা অপপ্রচার হওয়ার সুযোগ কম হবে।

তিনি আরও বলেন, যে তথ্য জনগণের বলে তথ্য অধিকার আইন নিশ্চিত করছে, সেই তথ্য গণমাধ্যমকে দিতে হবে। এ তথ্যগুলো যত দ্রুততার সঙ্গে সহজলভ্য করা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ এ ধরনের অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠানের জন্য তত ভালো। আমাদের সবার এ মানসিকতা তৈরি করা দরকার যে, সঠিক তথ্য যত দ্রুত জনগণের কাছে চলে আসবে- এটা আমাদের জন্য মঙ্গল।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার চায় তথ্য অধিকার আইনের আওতায় যারা তথ্য দেবেন না, তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে যেন কোনো ধরনের জড়তা বা মানসিক বাধা না থাকে। সরকার আরও চায় সরকারি প্রতিটি প্রতিষ্ঠান দ্রুততম সময়ের মধ্যে তথ্য সহজলভ্য করুক। আর যারা তথ্য চাইবেন আমরা চাই তথ্য অধিকার আইন তারা সঠিকভাবে ব্যবহার করবেন। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই আইন ব্যবহারের সক্ষমতা তৈরি হোক সেটাও আমরা চাই; যাতে এ আইনের অপব্যবহার কেউ না করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য দেওয়া প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটি পরিকল্পিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য সহজলভ্য করা হবে।

তিনি আরও যোগ করেন, অপসংবাদিকতা হলে তার সবচেয়ে বড় শিকার হয় পেশাদার সাংবাদিকরা। অপপ্রচার হলে পেশাদার সাংবাদিকতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সব আইনেই কিছু অসৎ ব্যক্তি অপব্যবহারের সুযোগ নিতে চায়। সেটা আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে; কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা আইন (সিএসএ) ব্যবহার করে কোনো সাংবাদিকতার চর্চা আটকে দেওয়ার সুযোগ নেই। সিএসএ পেশাদার সাংবাদিকতাকে সুরক্ষা দেবে।

জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সুফী জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য কমিশনের প্রধান তথ্য কমিশনার ডক্টর আবদুল মালেক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. খুরশীদ আলম।

দুই দিনের ঢাকা সফরে এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা দুই দিনের সফরে ঢাকা এসেছেন। বুধবার (৮ মে) সন্ধ্যায় এক বিশেষ ফ্লাইটে তিনি বিমানবন্দরে অবতরণ করেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর এ‌টি দি‌ল্লির কোনো প্রতি‌নি‌ধির প্রথম ঢাকা সফর।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাঠানো দিল্লি সফরের আমন্ত্রণপত্র তুলে দেবেন। ওই দিন তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা ঢাকা সফরের সময় পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও ভারত আগামী জুন মাসের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের বিষয়টি মোটামুটি চূড়ান্ত করেছিল। এখন প্রধানমন্ত্রীর ওই সফর পিছিয়ে জুলাইয়ে আয়োজন করতে চাইছে ভারত। ঢাকা সফরের সময় বিনয় কোয়াত্রা এটি বাংলাদেশের কাছে তুলে ধরতে পারেন।

ছেলে-পুত্রবধূর অপমান সইতে না পেরে বৃদ্ধ মা-বাবার বিষপান

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ছবি: সংগৃহীত

নাটোরের গুরুদাসপুরে ছেলের ওপর অভিমান করে মা-বাবার এক সঙ্গে বিষ পানের ঘটনা ঘটেছে। স্বজন ও স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন।

বুধবার (৮ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের হামলাইকোল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

বিষপানে গুরুতর অসুস্থ বাবা-মা হলেন- মো. আলম শেখ (৬০) ও নাজমা বেগম (৫০)।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আলম শেখ বলেন, আমার দুই মেয়ে এক ছেলে। ছেলে সবুজ শেখকে সব জমি-জমা লিখে দিয়েছি। ছেলে কথা দিয়েছিল সংসারের সকল দায়িত্ব নেবে এবং আমার সব ঋণ পরিশোধ করবে। কিন্তু জমি লিখে নেওয়ার পর ছেলে কথা রাখেনি। এদিকে ঋণের কারণে পাওনাদারদের অপমান-অপদস্থ সহ্য করতে হচ্ছে। পাশাপাশি ছেলে ও ছেলের বউ এর দুর্ব্যবহার তো রয়েছেই। তাই অতিষ্ঠ হয়ে স্বামী-স্ত্রী এক সঙ্গে বিষপান করেছেন বলে জানান তিনি।

মা-বাবার বিষপানে আত্মহত্যাচেষ্টার বিষয়ে জানতে চাইলে ছেলে সবুজ শেখ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. স্নিগ্ধা আক্তার জানান, বিষপান করে দুজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে আলম শেখের স্ত্রী নাজমা বেগমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

গণমাধ্যমের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
দুই দিনের ঢাকা সফরে এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব
ছেলে-পুত্রবধূর অপমান সইতে না পেরে বৃদ্ধ মা-বাবার বিষপান
৪৬তম বিসিএস প্রিলির ফল প্রকাশ হতে পারে আগামীকাল
জনগণের কষ্ট লাঘবে সরকার সবসময় সচেষ্ট: প্রধানমন্ত্রী
ফের আলিয়া ভাটের আপত্তিকর ভিডিও ফাঁস!
‘কাচ্চি ভাই’ রেস্টুরেন্টের মালিক সিরাজ গ্রেপ্তার, দুই দিনের রিমান্ডে
এক লাফে ডলারের দাম বাড়ল ৭ টাকা
আজ বিশ্ব গাধা দিবস, পালন করা হয় যেভাবে...
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ৩০-৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে: সিইসি
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে জাইকার প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ
প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা
বগুড়ায় ব্যালট পেপার বাইরে দেওয়ায় প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও প্রার্থীর এজেন্ট আটক
জাতীয় দলে ফিরলেন সাকিব-মুস্তাফিজ-সৌম্য
ওমরাহ পালন শেষে দেশে ফিরলেন মির্জা ফখরুল
মাদারীপুরে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, বিস্ফোরণ, আহত ১০
দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে অনুসন্ধান চলছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ভোট কারচুপির অভিযোগে ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির ভোট বর্জন
মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুপক্ষের মারামারি, আহত ৫০
নওগাঁর ভোট কেন্দ্রগুলোতে নেই ভোটার উপস্থিতি