বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৭

স্নানের শব্দ

মাত্র এক সপ্তাহের বিরতি, কিন্তু শবনমের মনে হচ্ছে যেন বহু বহু দিন পর অফিসে ঢুকেছে সে। সব কিছইু কেমন যেন অচেনা, নতুন। অথচ দৃশ্যত সব একরকমই আছে, সেই তেঁতুল বিচি রঙের সেন্টার টেবিল, টেবিলের কাঁচের নিচে চাপা দেওয়া তারেক আর শবনমের সঙ্গে পাঁচ বছর বয়সী শ্রাবণের হাস্যোজ্জল ছবি, কালো রেক্সিনের রিভলভিং চেয়ার, ডেক্সটপ কম্পিউটর, সাইড টেবিলে কয়েকটা ফাইল, সৌখিন টবে রাখা মিনি ক্যাকটাস। জানালারও ওই পাশে রুগ্ন নিম গাছ। অফিস সহকারী প্রতিদিনের মতো টেবিলে পানির গ্লাস আর মগ ভর্তি কফি রেখে গেছে।

সিইওর সঙ্গে একবার সৌজন্য সাক্ষাতের কথা ভাবে শবনম। এটা দাপ্তরিক ভদ্রতা, আমি যে আবার পুরোদমে কাজে যোগ দিয়েছি ঊর্ধ্বতনকে সেই ম্যাসেজটা পৌঁছে দেওয়া। পাশাপাশি এ কদিন কাজকর্মের কি অগ্রগতি হলো, ম্যানেজমেন্টের গতি প্রকৃতি কোনদিকে কথাচ্ছলে সেটাও আন্দাজ করে নেওয়া যাবে। শবনম সিইওর পারসোনাল সেক্রেটারি রেশমিকে ফোন দেয়, বস রুমে আছে কি না জানতে।
‘না ম্যাম, স্যার তো রুমে নাই।’
‘ও। কোনো মিটিংয়ে গেছে নাকি?’
‘না, ম্যাম। আপনি শোনেন নাই? স্যারের একটা ঝামেলা হয়েছে..’
‘কি ঝামেলা? আমি তো কয়েক দিন ছুটিতে ছিলাম, জানি না, কি হয়েছে, বলো তো? উনার ফ্যামিলির কিছু?’
এবার রেশমি আমতা আমতা শুরু করে।
‘না, ঠিক ফ্যামিলির না, ওসমান স্যার হয়ত আপনাকে পরে জানাবে ম্যাডাম। আমি আসলে তত বেশি কিছু জানি না।’
মেয়েটার কণ্ঠে স্পষ্ট অস্বস্তির ছাপ। শবনম আর জোরাজুরি না করে ফোন ছেড়ে দেয়। মাত্র এই কদিনে কি এমন ঝামেলা হতে পারে যা এমনকি মেয়েটা মুখ ফুটে বলতেও চাইছে না। শবনম আন্দাজ করার চেষ্টা করে মনে মনে। কোনো আর্থিক দুর্নীতি? ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে মতবিরোধ? কি হতে পারে? নিজে থেকে কেউ না জানালে এই পজিশনে অযাচিত কৌতুহল দেখানো তাকে মানায় না।
অফিসে কেমন একটা থম ধরা, রাখরাখ ঢাকঢাক পরিবেশ। শবনমের অস্বস্তি হয়, আর সেই অস্বস্তি নিয়েই নিচের ফ্লোরে অ্যাকাউন্টস চিফের কক্ষে উঁকি দেয় শবনম। চিফ অ্যাকাউন্টেন্ট আতিয়ার নোয়াখালীর মানুষ। আঞ্চলিক ভাষাতে কথা বলেন স্বাচ্ছন্দ্যেই। শবনমের শাশুড়ির মৃত্যুতে আন্তরিকভাবে সৌজন্যসূচক শোকপ্রকাশ শেষে তিনিই খবরটা দিলেন।
‘আঁই তো এই যুগের ব্যাপার-সেপার বিশেষ বুঝি ন’। কি এক মিটু বলে আইছে দ্যাশে, ওই একটা ট্রেইনি এক্সিকিউটিভ নাফিসা তানজিনা.. না কি জানি নাম, চিনিও না ঠিকমতো, কি এক মিটু লেইখছে... সিওরে লই.. উতাল পাথাল পড়ি গেছে এক্কেবারে ..এমডি হেতিরে কইছে কিছুদিন অফিসে না আইত বইলা ..’
ও, ঘটনা তাহলে এই?
এই ভবের অফিসে প্রতিদিন কত নতুন নতুন ছেলে মেয়েই তো সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো আসে যায়, সবার কথা মনে থাকে না কিন্তু নাফিসা তানজিনার কথা স্পষ্ট মনে আছে শবনমের।
প্রচলিত অর্থে হয়ত তাকে সেরকম আহামরি সুন্দরী বলা যাবে না, কিন্তু তার সমস্ত উপস্থিতির মধ্যে একটা সহজ সুন্দর সরল লাবণ্য হীরক খণ্ডের মত ঝিকমিকিয়ে উঠত। মাথাভর্তি জলপ্রপাতের মতো কোঁকড়ানো এলোমেলো চুল ছিল মেয়েটার, চেহারা চালচলন আর পোষাক-আশাকে মনে হতো বিদেশি, বাঙালি নয়। কথায় কথায় একদিন শবনম জেনেছিল, ওর জন্ম ওমানে, বাবা-মার সঙ্গে ছোটবেলাটা ওখানেই কেটেছে, কিশোরী বেলায় ছিল কাতারে পরে দেশ এসে প্রাইভেট কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে। কোম্পানির এইচ আর ডিপার্টমেন্টে ট্রেইনি এক্সকিউটিভ হিসেবে জয়েন করছিল নাফিসা। এই জুনিয়র এক্সিকিউটিভদের সঙ্গে সাধারণত যোগদানের প্রথম দিনের পরিচয়পর্বের পর শবনমের সঙ্গে আর খুব বেশি দেখা সাক্ষাতের সুযোগ নেই। কিন্তু নাফিসার সঙ্গে ঘন ঘন দেখা হওয়ার কারণ শবনমের কক্ষটি তখন ছিল এইচ আর ডিপার্টমেন্টের পাশেই।

সাদা শার্ট জিনস পড়া প্রাণ চাঞ্চল্যে ভরপুর মেয়েটি কখনো মাটিতে পা ফেলে হাঁটতো না, যেন উড়তো, দৌড়াতো। ওর উজ্জ্বল কালো চোখ দুটোতে সারাক্ষণই ঝিলিক দিত কৌতুহল আর আনন্দ।
তারপর কি হলো, হঠাৎ করেই অফিসে আসা বন্ধ করে দিয়েছিল মেয়েটা। কর্মক্ষেত্রে ব্যক্তিগত কৌতুহল বা অল্পপরিচিত কারো খোঁজ খবর করার সুযোগ যেমন কম তেমনি কর্পোরেট আদবকায়দায় সেটি হয়তো ঠিক শোভনও হয় না, তাই নানারাকম কাজের ভিড়ে শবনম ভুলেই গিয়েছিল নাফিসা তানজিনার কথা।
কি লিখেছে মেয়েটা?
আতিয়ার সাহেব ফটোকপি করা একটা কাগজ বাড়িয়ে দেয় শবনমের দিকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইংরেজি ভাষায় লিখেছে নাফিসা। শবনম কাগজটাতে চোখ বুলায়।
‘সেদিন আমি তার কক্ষে গিয়েছিলাম একটা ফাইলে স্বাক্ষর করাতে। আমাকে বসিয়ে রেখে তিনি মনোযোগ দিয়ে ফাইলের কাগজপত্র দেখলেন, পড়লেন, তারপর সবটা দেখে আমার কাজের খুব প্রশংসা করলেন। এটা সেটা জানতে চাইলেন। তারপর প্রয়োজনীয় স্বাক্ষর শেষে ফাইল ফেরত দেওয়ার সময় আচমকা আমাকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। বুকে হাত দেন আর মুখ বাড়িয়ে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেন। আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম কয়েক মুহূর্তের জন্য। বুঝতে পারছিলাম না, কি হচ্ছে, কি করবো। তারপরই তাকে দুহাতে ঠেলে সরিয়ে প্রায় দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে আসি। লজ্জা, ঘৃণা, অপমান এবং একরাশ ভয় আমাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। ওই ঘটনায় আমি মূক ও বধির হয়ে গিয়েছিলাম। ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলাম ভেতরে ভেতরে। এর পর বহুদিন বাইরে যেতে, নতুন মানুষের সঙ্গে কথা বলতে ভয় পেতাম আমি। এই ট্রমা, ভয় আর নিদারুণ মানসিক যন্ত্রণা থেকে বেরিয়ে আসতে আমার বছরের পর বছর লেগেছে। তবু সম্পূর্ণভাবে সেই ক্ষত সেরে উঠেনি।

...কোম্পানির নাম স্পষ্ট করে লিখলেও নিপীড়কের পুরো নাম লেখেনি সে, সংক্ষেপে লিখেছে এনসি। ‘এনসি পুরুষ এবং ক্ষমতাবান। তার বিরুদ্ধে কার কাছে অভিযোগ করবো, সেই সময় তা বুঝিনি আমি। এখন আমি মুখ খুললাম এই ভেবে যে সবার সামনে তার মুখোশ উন্মোচিত হোক। নারীর জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরি হোক।’
কাগজটা পড়া শেষ করে শবনম স্থাণু হয়ে বসে থাকে। যেন বোবা হয়ে গেছে সে, পাথর হয়ে গেছে।
‘দেখছেননি? কি লেইখছে? এমুন একটু আধটু দুষ্টামি পুরুষ মানুষ তো করেই.. এত বছর পরে হেইগুন লই লিখি একটা বেড়াত্যাড়া লাগায় দিসে ..’
শবনমের জলন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে পুরো বাক্য শেষ করার আগেই থেমে যান আতিউর সাহেব।
‘এন সি কি বলছে?’ শবনম নিচু স্বরে জানতে চায়।
‘কি আর কইব? অভিযোগ অস্বীকার কইরছে, চাইর বছর আগের ঘটনা, হেতের বলে কিচ্ছু মনে নাই। কইছে বানোয়াট, মিথ্যা। পরে আবার আমাগো পারচেজের পল্লবিও, ওই যে দুইবছর আগে চাকরি ছাড়ি দি অষ্ট্রেলিয়া গেল গা, হুনছি হেও নাকি হ্যারাসমেন্টের লিখিত অভিযোগ দিছে ম্যানেজমেন্টের কাছে, হের পর আর কি, এমডি একটা তদন্ত কমিটি বানাইছে আর সিইওরে কইছে ছুটিতে যাইত বইলা..পত্রিকায় তো নিউজও আসি গেছে, খেয়াল করেন নাই? বাও রে বাও কি জমানা আইলো.. জীবনে এমন আজব জিনিস শুনি নাই!’

কোনোমতে ভারী পা টেনে টেনে নিজের ঘরে এসে বসে শবনম। না, চাকরিক্ষেত্রে এক ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও তার সঙ্গে কখনো অসৌজন্যতামূলক আচরণ করেনি নির্ঝর চৌধুরী, কোনোদিন কোনো খারাপ ইশারা-ইঙ্গিত করেছেন তেমনটাও মনে পড়ে না। তবে তার মানে এই না যে নাফিসা বা পল্লবির অভিযোগ অসত্য। কত বিবিধ বিচিত্র চেহারা আছে মানুষের! সময় সুযোগ মতো ক্ষণিকের অসচেতনতায় ভদ্র সুবেশের আড়াল সরিয়ে দাঁত নখসমেত সেই বিকট বীভৎস চেহারা সামনে বেরিয়ে আসে। এতদিন মনে করা হতো এসব বুঝি বিনোদন জগতেই বেশি ঘটে, হলিউডের অ্যাশলে, বলিউডের তনুশ্রীরাই কাস্টিং কাউচের শিকার হয়। কিন্তু মিলানোর হ্যাশট্যাগ আহ্বানের ঢেউ যে এভাবে বাংলাদেশে এসেও আছড়ে পড়বে, ঘূর্ণিঝড় বইয়ে দেবে, পুরুষের পালিশ করা চকচকে আবরণ ধুয়ে বেরিয়ে আসবে বিশ্রি কদাকার চেহারা তা কি শবনম ভেবেছিল কখনো?

বেশ কয়েক বছর আগে, শবনমের মনে পড়ে মৌসুমী বলেছিল, একজন স্বনামখ্যাত সাহিত্যিক, আবার নামী কাগজের সাহিত্য সম্পাদক তাকে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘আপনি এখনো বিয়ে করেন নাই, একা একা লাগে না..’
‘না, এটা আমার চয়েস, আমি স্বেচ্ছায় সিঙ্গেল থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ মৌসুমী সাবলীল ভাবেই জানিয়েছিল।
‘তাহলে শারীরিক চাহিদা কিভাবে মিটান? না, মানে জৈবিক চাহিদা তো অস্বীকার করার কিছু না.. সেটা নিশ্চয়ই আছে আপনার.. মানে এতে দোষের কিছু নেই, ...রাজি থাকলে আপনি আর আমি একদিন লং ড্রাইভে যেতেই পারি... আরও অনেক কিছুই হতে পারে...’
মৌসুমী রাগে দুঃখে অপমানে কাঁপতে কাঁপতে তার রুম থেকে বেরিয়ে এসেছিল। সাহস করে কাউকেই তখন কথাটা খুলে বলতে পারেনি, উল্টো মানুষজন তাকে নিয়েই হাসাহাসি করবে ভেবে।

শবনম হাত গুটিয়ে বসে থাকে। রাগ, ক্রোধ, দুঃখ ও অস্বস্তির ককটেলে মনটা একটা তিক্ত বিষাদে আচ্ছন্ন হয়ে থাকে তার।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব-৬

স্নানের শব্দ: পর্ব-৫

স্নানের শব্দ: পর্ব-৪

স্নানের শব্দ: পর্ব-৩

স্নানের শব্দ: পর্ব-২

স্নানের শব্দ: পর্ব-১ 

আরএ/

Header Ad
Header Ad

উত্তরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে হামলার ঘটনায় মামলা

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষণিকা বাসে ভাঙচুর ও শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। একই সঙ্গে এ ঘটনায় আসামিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।

উত্তরার এডিসি আহমেদ আলী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্ষণিকা বাসে হামলার ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা হয়েছে।

মামলায় নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এরআগে মঙ্গলবার দুপুর ১টা ১০ মিনিটে রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবহনকারী ক্ষণিকা বাসে ব্যাপক ভাঙচুর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বাসের ড্রাইভারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহত শিক্ষার্থীরা উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

সোহাগ মিয়া নামের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ওই শিক্ষার্থী জানান, উত্তরা বিএনএসে কোনো এক বিআরটিসির ট্রাক উত্তরা হাই স্কুলের এক শিক্ষার্থীকে চাপা দেয়। সেই প্রসঙ্গে স্কুলের কিছু বাচ্চারা বিএনএস রাস্তা ব্লক করে রাখে। কাকতালীয়ভাবে সে সময়ে ক্ষণিকার ১:১০ এর বাস সেখানে উপস্থিত হলে তারা শুরুতেই বাসে হামলা করে লুকিং গ্লাস ভেঙে দেয়। এরপর ড্রাইভারকে মারধর শুরু করে।

তিনি বলেন, প্রতিহত করতে গেলে তারা আমাদের ধাওয়া দিয়ে বাসের পিছনের গেট পর্যন্ত নিয়ে আসে। এসময় তারা সেখানে দাঁড়ানো আমাদের সিনিয়রদের মারধর শুরু করে। তা প্রতিহত করার চেষ্টা করলে তারা আশপাশ থেকে লাঠিসোঁটা, ইট-পাটকেল নিয়ে এসে বাসের গেটে নিরাপত্তার জন্য দাঁড়ানো সকলকে এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করে। যা একসময় বাস গুঁড়িয়ে দেয়ায় রূপ নেয়।

ঘটনায় শুরুতে হামলায় উত্তরা হাই স্কুলের শিক্ষার্থীদের কয়েকজন থাকলেও শেষে যারা ছিল বেশিরভাগই বহিরাগত ও নেশাগ্রস্ত টোকাই বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করছে বলেও এ শিক্ষার্থী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, হামলা বিশ্ববিদ্যালয়কে টার্গেট করে করা হয়নি। তারা সব বাসেই হামলা করছিল। এ সময়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসটি তাদের সামনে পড়ে। আমাদের ৪-৫জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এক জন গুরুতর আহত হয়েছেন। 

 

Header Ad
Header Ad

দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, প্রস্তুত হচ্ছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

ছবি: সংগৃহীত

চিকিৎসা শেষে লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান তিনি।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার জন্য বিশেষ অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত সপ্তাহে পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে চিঠি দেন। চিঠিতে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে রয়েছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, তবে আশঙ্কামুক্ত নয়। তা সত্ত্বেও তিনি দেশে ফিরতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করতে দলের পক্ষ থেকে সরকারকে অনুরোধ করা হয়।

কূটনৈতিক সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স চেয়ে দোহায় বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে দেশটির সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে।

মে মাসের শুরুতে খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার সম্ভাবনা আছে।

৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য কাতার সরকারের দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে গত ৮ জানুয়ারি লন্ডনে যান। তিনি দীর্ঘদিন থেকে নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। লন্ডনের হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে তিনি সেখানে বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় অবস্থান করছেন।

 

Header Ad
Header Ad

বাংলাদেশ এখন আর আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল নয়: অর্থ উপদেষ্টা

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ এখন আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল নয় বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “আমরা এখন আর আগের মতো আইএমএফ নির্ভরশীল নই। সেই দিন চলে গেছে। বাজেট সাপোর্টের অর্থ সাধারণত ৫ বছরের মধ্যে ফেরত দিতে হয়, অথচ প্রকল্প চলে ২০ বছর। তাই আমরা প্রতিটি ঋণের আগে অনেক হিসাব-নিকাশ করি। শুধু টাকা দিলেই গ্রহণ করব না। ঋণের বোঝা নিতে আমরা আগ্রহী নই।”

আইএমএফের দীর্ঘসূত্রিতা ও কঠিন শর্তাবলি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নয় মাস ধরে আইএমএফের টাকা আসছে না। তবে আমরা শক্ত অবস্থান নেব। টাকা না দিলে তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ইন্দোনেশিয়ায় এমনটাই হয়েছিল, অনেকের চাকরি চলে যায়। এমন ঘটনা মালয়েশিয়াতেও ঘটেছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা এখন ফরেন এক্সচেঞ্জ মার্কেট এবং রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখতে পেরেছি আইএমএফের টাকা ছাড়াই। এমনকি এই সরকার আসার পর আইএমএফ থেকে এক টাকাও পাইনি। তবুও আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতি ভালো আছে। রিফর্ম দ্রুত হয়েছে, যা ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।”

আইএমএফের শর্ত প্রসঙ্গে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “তাদের কিছু শর্ত আছে, যেমন—এনবিআরকে স্বতন্ত্র করা এবং ফরেন এক্সচেঞ্জ মার্কেট ওপেন করে দেওয়া। তবে আমরা সব শর্ত মানতে চাই না। আমাদের স্বার্থের দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেব। স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের জন্য আমরা এক বিলিয়ন ডলার চেয়েছি, তারা ৫০০ মিলিয়ন দিতে চাচ্ছে—আমরা চিন্তাভাবনা করছি।”

তিনি বলেন, “বিশ্বব্যাংকের প্রকল্প ঋণ চলমান থাকবে। পাশাপাশি এডিবি, এআইআইবি, এনডিবি এবং ইসলামি ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সহায়তা পাইপলাইনে রয়েছে। প্রজেক্ট সাপোর্ট নিয়ে কোনো সমস্যা নেই, তবে বাজেট সাপোর্ট নিয়ে কিছু আলোচনা চলছে।”

অর্থ উপদেষ্টা জানান, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এআইআইবি, আইএফসি, আইওএম, ওপেক ফান্ডসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। ইউএস সরকারের বিভিন্ন বিভাগ যেমন—এনার্জি, স্টেট, লেবার, কৃষি এবং ট্রেজারি বিভাগের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনায় অংশ নিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, “এবারের সফর সফল। আগে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের পেছনে দৌড়াতো সবাই, এখন দেশগুলোর প্রতিনিধিরা সরাসরি ইউএস প্রেসিডেন্ট অফিস ও অন্যান্য বিভাগীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে।”

অর্থসংস্থানের বিষয়েও ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে বলে জানান ড. সালেহউদ্দিন। তিনি বলেন, “ওপেক ফান্ডের সঙ্গে ১০০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয়েছে, যা বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ হবে। আইএফসিও ৫০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।”

সব মিলিয়ে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিকভাবে অনেক সচেতন ও শক্তিশালী। আমরা আর কাউকে চোখ বন্ধ করে অনুসরণ করি না। আমাদের নিজস্ব কৌশলে সামষ্টিক অর্থনীতিকে এগিয়ে নিচ্ছি।”

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

উত্তরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে হামলার ঘটনায় মামলা
দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, প্রস্তুত হচ্ছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স
বাংলাদেশ এখন আর আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল নয়: অর্থ উপদেষ্টা
সেনাবাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিলেন মোদি, দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা তুঙ্গে
সারাদেশে শিলাবৃষ্টির আভাস, নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কতা
'বাংলাদেশি' সন্দেহে আটক সাড়ে ৬ হাজার, অধিকাংশই ভারতীয় মুসলিম
দীপ্ত টিভির সংবাদ বিভাগ বন্ধে সরকারের কোনো নির্দেশনা নেই: তথ্য উপদেষ্টা
এই মুহূর্তে ইমরানকে দরকার পাকিস্তানের, মুক্তি ও সর্বদলীয় বৈঠক নিয়ে আলোচনা!
টাঙ্গাইলে এলজিইডিতে দুদকের অভিযানে অর্থ আত্মসাতের পাওয়া গেছে প্রমাণ
লক্ষাধিক নতুন রোহিঙ্গাকে আশ্রয়ের অনুরোধ জানাল জাতিসংঘ
ডাকাত দেখে আতঙ্কে অসুস্থ গৃহকর্তা, পানি খাইয়ে সেবা করল ডাকাতরা, পরে লুট
‘মানবিক করিডর’ নিয়ে নানা প্রশ্ন : স্পষ্ট করলেন প্রেসসচিব
ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করল পাকিস্তান সেনাবাহিনী
মাদরাসার শিক্ষকদের জন্য বড় সুখবর
দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা
সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল
মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো
সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই চার বছর পর সাদমানের সেঞ্চুরি
স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন প্রধান উপদেষ্টার, মাসিক খরচের বিষয়ে যা জানা গেল!