সারাবিশ্ব

থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়ে সংস্কৃতিমন্ত্রী হলেন পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা


সারাবিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশ :০৩ জুলাই ২০২৫, ০৪:০১ পিএম

থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়ে সংস্কৃতিমন্ত্রী হলেন পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা। ছবি: সংগৃহীত

থাইল্যান্ডের আলোচিত রাজনীতিক পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা প্রধানমন্ত্রীর পদ হারালেও নতুন মন্ত্রিসভায় নিজের অবস্থান ধরে রেখেছেন। ১ জুলাই থাই ক্রিমিনাল কোর্ট তার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সাময়িক স্থগিত করার মাত্র দু’দিন পর, বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) তিনি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

সকাল ৯টা ৭ মিনিটে ব্যাংককের গভর্নমেন্ট হাউসে অনুষ্ঠিত শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন পেতংতার্ন। সাদা ইউনিফর্মে সাংবাদিকদের উদ্দেশে হাসিমুখে শুভেচ্ছা জানান তিনি। তার সঙ্গে আরও ১৩ জন নতুন মন্ত্রী শপথ গ্রহণ করেন। শপথগ্রহণের মধ্য দিয়ে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে নিজ নিজ দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

এর আগে সকাল থেকেই একে একে গভর্নমেন্ট হাউসে পৌঁছাতে থাকেন নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। উপস্থিত ছিলেন কৃষি ও সমবায় মন্ত্রী আত্তাকর্ন সিরিলাত্তায়াকর্ন, উপশিক্ষামন্ত্রী তেওয়ান লিপতাপাল্লপ, উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী চাইচানা ডেচডেচো, অনুচা সসোমসুব এবং শ্রমমন্ত্রী পংকাবিন জুংরুংরুয়াংকিতসহ অন্যরা।

প্রটোকলের অংশ হিসেবে, মন্ত্রীরা ‘সান্তি মাইত্রি’ ভবনে গিয়ে আরটি-পিসিআর টেস্ট করান এবং সরকারিভাবে ব্যবহারের জন্য পরিচয়পত্র ও প্রাসঙ্গিক নথিপত্র গ্রহণ করেন। পাশাপাশি, সাদা পোশাকে অফিসিয়াল ছবিও তোলেন তারা।

শপথ গ্রহণ শেষে এক বিশেষ মন্ত্রিসভার বৈঠকে নতুন ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফুমথাম উইচায়াচাই-এর নিয়োগের বিষয়টি ঘোষণা করা হয়। আপাতত পুরো মন্ত্রিসভার নেতৃত্বে রয়েছেন সুরিয়া জুংরুংরুয়াংকিত।

প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পেতংতার্নের সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার পরপরই সরকারে বড় রদবদল শুরু হয়। এর পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ক্ষমতাসীন জোট থেকে থাইল্যান্ডের রক্ষণশীল দল ভুমজাথাই পার্টির বেরিয়ে যাওয়া। এর ফলে সরকারকে এখন সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে ছোট দলগুলোর ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে, যা দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়িয়ে তুলছে।

এই টালমাটাল অবস্থার মধ্যেই, সরকার বাজেট পাসসহ গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়ন কতটা কার্যকরভাবে করতে পারবে, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন। এদিকে সম্প্রতি একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়ে যাওয়ায় পেতংতার্নের জনপ্রিয়তায়ও বড় ধরনের ধস নেমেছে। কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে সীমান্ত ইস্যু নিয়ে তার একটি বিতর্কিত ফোনালাপ ফাঁস হয়, যা তাকে রাজনৈতিকভাবে চাপে ফেলে দেয়।

উল্লেখ্য, পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার কন্যা। এক সময় তিনি সেনা-সমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে বর্তমানে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে। থাই আদালত তাকে ১ জুলাই থেকে ওঠা অভিযোগগুলোর ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য ১৫ দিনের সময়সীমা দিয়েছে।