
সারাবিশ্ব
মুম্বাইয়ের ১,৫০০ মসজিদ থেকে মাইক সরাল পুলিশ

ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের মুম্বাই শহরে প্রায় ১,৫০০ মসজিদসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয় থেকে লাউডস্পিকার (মাইক) সরিয়ে নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। কাশ্মীর মিডিয়া সার্ভিসের এক প্রতিবেদনে বুধবার (২ জুলাই) এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী মুম্বাই পুলিশ এই অভিযান পরিচালনা করে। শুধু মসজিদ নয়, শহরের অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থেকেও লাউডস্পিকার সরানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মুম্বাই পুলিশ কমিশনার দেবিন ভারতী।
তিনি জানান, “আমরা শুধুমাত্র মসজিদ নয়, সকল ধর্মের উপাসনালয়ে স্থাপিত লাউডস্পিকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। শহরজুড়ে উপাসনালয়গুলোকে লাউডস্পিকারমুক্ত করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আগে রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করা হয়েছে। কমিশনার স্পষ্ট করে জানান, যেসব স্থানে লাউডস্পিকার সরানো হয়েছে, সেসব স্থানে পুনরায় তা স্থাপন করা যাবে না। তবে ধর্মীয় উৎসবের সময়ে আবেদন ও নির্ধারিত শব্দ দূষণ আইনের আওতায় অস্থায়ীভাবে লাউডস্পিকারের ব্যবহার অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে।
এদিকে, স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, তাদের অভিযোগ—উগ্র হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়েই এ ধরনের একতরফা পদক্ষেপ নিচ্ছে পুলিশ। তারা এটিকে ধর্মীয় বৈষম্যের একটি প্রকাশ বলেও উল্লেখ করেছেন।
তবে মুম্বাই পুলিশ দাবি করেছে, তারা শুধুমাত্র সরকারি নির্দেশনা ও আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করছেন এবং কোন উপাসনালয় যাতে শব্দদূষণ আইনের সীমা অতিক্রম না করে, তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানকে সীমাবদ্ধ করার এমন পদক্ষেপ দেশটির ধর্মনিরপেক্ষতা ও সংখ্যালঘু অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
এদিকে, মুম্বাইয়ের ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনগুলো এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানা গেছে। পরিস্থিতি যাতে উত্তপ্ত না হয়, সে জন্য প্রশাসন অতিরিক্ত নজরদারি চালাচ্ছে।