রাজনীতি

টেলিকম নীতিমালায় তড়িঘড়ি সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগে বিএনপি


ঢাকাপ্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশ :০৩ জুলাই ২০২৫, ০৩:৩০ পিএম

টেলিকম নীতিমালায় তড়িঘড়ি সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগে বিএনপি
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের টেলিকম খাতে নতুন নীতিমালা নিয়ে সরকারের দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির মতে, টেলিকম খাতের ‘ড্রাফট টেলিকম নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং রিফর্ম পলিসি ২০২৫’ গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগী হলেও, এত বড় একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে তাড়াহুড়া করা হলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে দেশের প্রতিযোগিতামূলক বাজার ও সাধারণ জনগণের ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির ওপর।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই উদ্বেগের কথা জানান।

তিনি বলেন, “নীতিমালার উদ্দেশ্য যেমন প্রশংসনীয়—গ্রামীণ জনগণকে ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং লাইসেন্স প্রক্রিয়া সহজীকরণ—তেমনই এতে কিছু মৌলিক দুর্বলতা রয়েছে যা দীর্ঘমেয়াদে টেলিকম খাতে বৈষম্য তৈরি করতে পারে।”

বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, খসড়া নীতিমালায় কিছু ধারা বড় মোবাইল অপারেটরদের জন্য বিশেষ সুবিধাজনক, যা ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। “একাধিক খাতে মালিকানা রাখার অনুমোদন দিলে বাজারে একচেটিয়া দখলদারিত্বের আশঙ্কা বাড়বে, যা সুস্থ প্রতিযোগিতার পরিবেশ নষ্ট করবে,” বলেন তিনি।

ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মালিকানা সীমা নিয়ে যে অস্পষ্টতা রয়েছে, তা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া, উল্লম্ব ও সমান্তরাল মালিকানা (ক্রস-ওনারশিপ) সম্পর্কে স্পষ্ট দিকনির্দেশনার অভাবে বড় প্রতিষ্ঠানগুলো আরও বেশি বাজার দখল করতে সক্ষম হবে।

তিনি জানান, আইএসপি ও এএনএসপি লাইসেন্স একীভূত করার ফলে বড় কোম্পানিরা সুবিধা পাবে, অথচ ছোট ও মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এটি হবে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। উচ্চমান বজায় রেখে সারাদেশে সেবা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা এসএমইদের জন্য আর্থিকভাবে কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াবে।

বিএনপি সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালার চূড়ান্তকরণের আগে সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে এবং পূর্ণাঙ্গ আর্থিক ও সামাজিক প্রভাব বিশ্লেষণ করতে হবে।

ফখরুল বলেন, “এই মুহূর্তে নীতিমালায় যেসব অস্পষ্টতা ও পক্ষপাতের সুযোগ রয়েছে, তা শুধু অর্থনৈতিক ভারসাম্য নয় বরং জাতীয় ডিজিটাল নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রেও হুমকি হতে পারে। তাই নীতিটি হতে হবে সর্বজনগ্রাহ্য, স্বচ্ছ এবং সমতাভিত্তিক।”

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানও উপস্থিত ছিলেন।