শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫ | ১৩ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

নিভৃত মননে

সন্ধ্যার পর থেকে নিদারুণ অস্থিরতায় ভুগছি। কেন এমন লাগছে বুঝতে পারছি না। বারান্দায় বসে বসে মোবাইল সেটের বাটন টিপছিলাম আনমনা হয়ে। কারো সঙ্গে কথা বলতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু কার সঙ্গে কথা বলব ভেবে পাচ্ছি না। হঠাৎ আমার মোবাইল সেটে রিং বাজলো। অজানা নম্বর দেখে লাইন কেটে দিলাম। অচেনা কারো সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করে না। আবার রিং হলো। খুব অন্যমনস্কভাবেই এবার ধরলাম।  - হ্যালো, কে বলছেন?
- আমি... (একটু আমতা আমতা করছে) আবির। আপনি কি তামান্না?
- হ্যাঁ, আমি তামান্না। কিন্তু আপনি কে? 
- আমি আবির হাসান। আপনার দূর সম্পর্কের এক ফুফাতো ভাই। আপনাদের গ্রামের বাড়ি মুকুন্দপুর, ভোলা। আমি কি ঠিক বলেছি? 
- হ্যাঁ। ঠিকই তো বলেছেন কিন্তু আপনি...?
- আপনার বাবার নাম আহমেদ সুলতান কাদেরী।
- হ্যাঁ। আচ্ছা... আপনি দেখছি সবই চিনেন কিন্তু ...
- কিন্তু... আপনি আমাকে চিনতে পারছেন না, এই তো?
-সত্য কথা বললে, হ্যাঁ, আমি আপনাকে চিনতে পারছি না। একটু বিস্তারিত বলুন। অনেক দিন হয়তো দেখা নেই, কথা নেই। 
- আমার বাবার নাম জায়েদ হাসান। আমার নাম আবির হাসান। আমি ছেলেবেলায় আপনাদের বাসায় অনেকবার গিয়েছি। 
আবির হাসান নামটি শোনার পর আমি কোনো কথা বলতে পারিনি। আবিরও না। মনে হলো সহস্রবছরের অনুসন্ধানের পর কাঙ্ক্ষিত ফসিল পেয়ে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি। আবিরও কি তাই? এভাবে কিছুক্ষণ সময় কেটে গেল বিমূঢ় ঘোরের মধ্যে।  
- আমাকে চিনতে পারছেন না? 
- হ্যাঁ। পেরেছি। সেই যে কবে থেকে তোমাকে খুঁজছি আর তোমার দেখা পাইনি। এভাবে কোথায় কোন সাগরের ঝিনুকের পেটে লুকিয়েছিলে? আমি তুমি করে বলে ফেললাম কিছু মনে করো না আবির। 
- না, কিছু মনে করিনি। আমিও ভাবছিলাম তুমি যদি আমাকে আগের মতোই বলতে তাহলে ভালো লাগতো। খুব ভাল লাগতো। সত্যি... খুব ভাল লাগছে তামান্না। খু..উ..ব।  
- কী করছ? কোথায় আছ? কেমন আছ?
- কীভাবে তোমাকে বলব বুঝতে পারছি না। ঢাকায় থাকি। জনবহুল দমবদ্ধ বসবাস অযোগ্য এক শহরে। তুমি?
- কুষ্টিয়াতেই। ঢাকায় স্যাটেল করেছ?
- হ্যাঁ। 
কী বলব, কিছুই ভাবতে পারছি না। বুকের শব্দপাখিরা হঠাৎ কোথায় যেন উড়ে গেল। নিজেকে মনে হলো সহস্রবছরের ফসিল যার মধ্যে প্রাণের স্পন্দন নেই। এমন নির্জীবতা কেন, তা বোঝার জন্য যখন নিজের মধ্যে ডুবে বুঁদ হয়ে পড়ে রইলাম তখন আবিরের কথা শুনে সম্বিত ফিরে পেলাম। 
- কথা বলছ না কেন?    
- ও! হ্যাঁ। এতদিন কোথায় ছিলে? একটিবার খোঁজ-খবর না নিয়ে পারলে? 
- কীভাবে যোগাযোগ রাখি বলো? বড়রা সুযোগ না দিলে ছোটরা পারে না। বেহায়াপনা হয়। 
- তত্ত্বকথা। তোমার কথা সব সময় ঠিক নয়। বড়-ছোট কোনো কথা নয়, ছেলেদের যোগাযোগ রাখা যতটা সহজ মেয়েদের পক্ষে ততটা সহজ নয়। বলো সত্যি বলিনি? 
- হয়তো সত্যি, নয়তো না। তখন দুজনের দুটি ধারা ছিল। হয়তো অবিমৃষ্যকারী ধারা। তেল আর জলের ধারা।  
- তুমি আগের মতোই আছ। পুরনো ছাঁচেই কথা বলো। 
- অনেকটা সময় আমরা দুজনের কেউ কোনো কথা বলতে পারিনি। আমার বুকের ভেতরটা বরফের মতো জমে গেছে। জানি না আবিরেরও সে রকম কিছু হয়েছে কি না। হাজারো কথার ভেতর কথা হারিয়ে ফেললাম। কোনটা বলব? এতদিন পর তার কথা শুনেই এলোমেলো। জীবনের একেক সময় হয়তো একেক কথা জরুরি হয়ে পড়ে। 
- কী করছ আবির? 
- একটা আর্ট ফার্ম দিয়েছি। ছবি আঁকি। আগামী মাসের ১০ তারিখ আমার একটা এক্সজিবিশন আছে। তুমি আসবে... এজন্যই তোমাকে ফোন করা। 
- আমার ফোন নম্বর কোথায় পেলে?
- রুহি খালার কাছ থেকে। 
- তুমি অনেক বড় হয়ে গেছ। আমি ছোটবেলায় ভাবতাম তুমি জীবনে অনেক বড় হবে। তোমার বুদ্ধিদীপ্ত চোখেই আমি দেখতে পেতাম তুমি অনেক বড় মাপের মানুষ। হয়তো আমার স্বপ্নেই তুমি বড় হয়েছ। 
- এভাবে বলো না তামান্না। তবে তোমাদের মতো বড় হওয়ার এক স্বপ্নে তাড়িত হতাম আমি। সে অর্থে হয়ত তোমার স্বপ্নেই আমি এতটা পথ এসেছি। 
- মনে হচ্ছে তুমি ঝিনুকের গর্ভে লুকিয়ে গিয়ে মুক্তোই হয়েছ। খুবই ভালো লাগছে ভাবতে। কিন্তু এই ভালো লাগাটা কোনোভাবেই প্রকাশ করতে পারছি না আবির। জীবন কি আশ্চর্য, তাই না?
- হ্যাঁ... তাই...। জানো তামান্না, তোমার কথা আমার প্রায়ই মনে হতো। বলা যায় প্রতিদিনই নিভৃতক্ষণে। কিন্তু আমি সাহস পেতাম না তোমার সঙ্গে দেখা করতে। পাছে তুমি কী ভাবো? তোমার আব্বু, আম্মু তারাই বা কী ভাবেন? তোমরা এত বড়লোক ছিলে যে তোমাদের বাড়ির দিকে তাকালে আমার চোখ ঝলসে যেত। তখন মনে মনে ভাবতাম তোমাদের মতো যদি কোনোদিন হতে পারতাম! 
- তুমি তো আমাদের চেয়ে অনেক বড় হয়ে গেছ। জানো আবির, আমিও তোমাকে মনে মনে খুঁজতাম। যখন স্কুলে যেতাম তখন মনে মনে ভাবতাম তোমাকে যদি কোথাও দেখতে পেতাম। ছোট্ট শহর কুষ্টিয়া। সেই শহরে গাড়ি দিয়ে যেতাম। সামান্য পথ, পাঁচ মিনিটেই পথ শেষ। পথ কিংবা সময় দীর্ঘ হলে হয়তো কোনোদিন পেয়েও যেতাম। নানান কাজে নিশ্চয়ই তুমি কুষ্টিয়ায় আসতে, তাই না?
- হ্যাঁ। অনেক সময় কাজ ছাড়াও যেতাম। তোমাকে পথে পথে খোঁজতাম। কোনোদিন তোমাকে দেখিনি। বাবা মারা যাওয়ার পর তোমাদের বাড়িতে যেতে সাহস হতো না। কী উছিলায় যাব? বছরান্তে হিসেব করেছি তুমি এই ক্লাসে উঠেছ, আগামী বছর এই ক্লাসে উঠবে। যখন কলেজে পা রেখেছ, একদিন মনে মনে ভাবলাম কলেজে তো আর বাধা নেই। তোমার সঙ্গে একবার দেখা করি। কিন্তু পরে জানলাম তুমি মেয়েদের কলেজে পড়। সেখানে গিয়ে কীভাবে তোমার সাথে দেখা করি বলো? 
- তুমি আসতে পারতে। জানো, আমি ছেলে হলে ঠিকই তোমাকে খঁজে বের করতাম। 
- সবচেয়ে বড় কথা কি ছিল জানো? 
- কী করে জানব?
- বড় কথা ছিল তোমার সঙ্গে দেখা করে আমি কী বলব? সে রকম কোনো কথা বলার ভাষা ও উছিলা পাইনি বলেও যাওয়া হয়নি। তারপর সত্য কথাটা যদি কেউ শুনত যে, এক হতদরিদ্র পিতার এক ছেলের মনের ভেতরে তোমাকে দেখার এমন বাসনা তাহলে মানুষে কি ভাবতো, বলো? তোমার আব্বা-আম্মুই বা কী ভাবতেন? অকৃতজ্ঞ মানুষের দলে আমাকে ভিড়াতেন। তাই না?
- তা নিরেট সত্য। তোমাকে কেউ হয়তো সহ্যই করত না। তবে আমার মনে হতো তোমার ভেতরে তেজের নেভা আগুন আছে। তুমি একদিন অনেক বড় হবে। তুমি যখন বাগানে বসে ছবি আঁকতে তখন আমি তোমাকে দেখতে পেতাম তুমি বড় মানুষের দলে। এইসব উছনে যাওয়া তথাকথিত ধনী মানুষের চেয়ে তুমি অনেক উপরের এক মানুষ।  আবির কোনো কথা বলছে না। টেলিফোনে ভারি বাতাসের সোঁ সোঁ শব্দ হচ্ছে।  আমিও কথা বলতে পারছি না। মন ও মননে এমন অসাড়তা আমি আর কোনোদিন অনুভব করিনি। দম বন্ধ হয়ে আসা এক গুমোট বদ্ধঘরে যেন আটকা পড়লাম। চারপাশের বাতাস ভারি হয়ে উঠছে। জানালালাগোয়া বকুল গাছ থেকে টোপ টোপ করে পাতা ঝরছে। শুধু ভাবছি দিনে দিনে আমি কেমন করে তার কাছে হেরে গিয়েছিলাম। একি পরাজয় নাকি ঈর্ষা আমি কিছুই বুঝতে পারছি না আজ। নাকি ধনি-দরিদ্রের মধ্যকার বিভেদের হিংস্রতা, নাকি আমার বাবা-মা কর্তৃক আরোপিত হতদরিদ্রদের থেকে দূরে থাকার অনুপনেয় নির্দেশ নাকি, বস্তুর দ্বান্দ্বিকতা, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। তবে আবিরের কথা শুনে আমার পুঁজিবাদ আর্শীবাদপুষ্ট ঠুনকো আভিজাত্যকে এই মুহূর্তে ঘৃণা হচ্ছে। একজন মানুষের জীবনে বড় হওয়া কোনো বিষয় না যদি তার মধ্যে তেজ থাকে, আকাঙ্ক্ষা থাকে। মৌলিকতা আর তেজহীন মানুষের প্রাচুর্য থাকলেই কি...সে আর জড়বস্তুর মধ্যে পার্থক্য কী?  
- হঠাৎ নীরব হয়ে গেলে কেন? কথা বলো তামান্না। নাকি বিরক্ত হচ্ছো?
- না... না... বিরক্ত হব কেন? এত বছরের জমানো কথা... কোনটা রেখে কোনটা বলি বলো... তাই একটু এলোমেলো লাগছে। 
- তোমার দেওয়া পেন্সিল ও রবারটা এখনও আমি যত্ন করে রেখেছি। 
- সত্যি বলছ? 
- হ্যাঁ। আমার টেবিলে সব সময় থাকে। এই তো আমার সামনেই চক চক করছে। সেদিন আমার মেয়েটা কামড়িয়ে একটু সামান্য ভেঙ্গে ফেলেছে। ও চকলেট ভেবে খেয়ে ফেলতে চেয়েছিল।  
- এগুলো এখনও রেখেছ?
- হ্যাঁ। এগুলোই তো আমার আশীর্বাদ। তোমার পেন্সিল দিয়েই আমি ছবি আঁকতে শুরু করেছিলাম। হঠাৎ মনে হলো এত সুন্দর পেন্সিলটা শেষ করে ফেলা ঠিক হবে না। সুন্দর জিনিস দিয়ে সুন্দর কিছু সৃষ্টি করতে হবে। তাই রেখে দিয়েছিলাম। তখন কী দিয়ে ছবি আঁকব, তাই ভেবে পাচ্ছিলাম না। একটা পেন্সিল কেনার সামর্থ্য তো আমাদের ছিল না, তুমি ভালো করেই জানো। তারপর কাঠ কয়লা দিয়ে মাটিতে ছবি আঁকা শুরু করলাম। মাটির বেড়ায়, স্কুলের দেওয়ালে, কলেজের দেওয়ালে অনেক ছবি এঁকেছি। অনেক পোর্টেট। আর তোমার দেওয়া পেন্সিল ও রবার... আমি এখনও রেখে দিয়েছি একটা সুন্দর ছবি আঁকব বলে। এত সুন্দর পেন্সিল দিয়ে কি আলতু-ফালতু ছবি আঁকা যায় বলো? 
- আমিও রেখেছি... বাবুই পাখির বাসাটি। আমার বিয়ের পর মাঝে মাঝে বদলির কারণে এখানে-সেখানে গেলেও আমি বাবুই পাখির বাসাটি সঙ্গেই নিয়ে যাই। আমার বাসা সাজানোর সময় এই বাবুইর বাসাটিও থাকে। কত মানুষ যে নিয়ে যেতে চেয়েছে... এটা কি কাউকে দেওয়া যায়, বলো? এত সুন্দর জিনিস একবার হাত ছাড়া হলে জীবনে আর ফিরে পাব, বলো?
অকস্মাৎ আবার নিরেট নীরবতা। আমার বুকের ভেতরটা এক প্রকার কান্নায় ভেসে যাচ্ছে। চোখ দুটি কেন ঝাপসা হয়ে গেল আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। আমি বুঝতে পারছি না এখন আর কী বলব? বাবুই পাখির বাসাটি আমার ছোট ছেলেটা একটু নষ্ট করে ফেলেছে। আমি কেন তাকে বলব? সব কথা কি তাকে বলা উচিত? 
- তোমার সাথে আমার ক’বার দেখা হয়েছিল মনে আছে, তামান্না?
- আমার মনে নেই। তবে তোমাকে নিয়ে আমাদের বাগান বাড়িতে খেলতাম, তুমি গাছে চড়ে আমাকে জলপাই পেড়ে দিতে, অর্কিড পেড়ে দিতে... তা মনে আছে। তুমি খুবই সাহসী ছিলে। তোমার সাহস দেখে আমি তাজ্জব হয়ে যেতাম। 
- তোমার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে আটবার। আব্বার সঙ্গে যেতাম তোমাদের বাসায়। মামি আমাকে তোমার বড় ভাইয়ের পুরান শার্ট দিতেন পরার জন্য। আব্বাকে টাকা দিতেন চলার জন্য। আব্বা খুব খুশি হতো, তোমার আম্মু-আব্বুকে আশীর্বাদ করত প্রাণ ভরে। 
- এসব কথা বলো না আবির। তুমি শুধু বলো, অর্কিডের কথা, জলপাইয়ের কথা...। আর বলো বাবুই পাখির বাসাটির কথা। সেদিন তোমার জামার নিচে লুকিয়ে এই বাবুই পাখির বাসাটি আমার জন্য এনেছিলে, তাই না? তারপর এক বিকেলে তুমি আমাকে আমাদের বারান্দায় নীরবে ডেকে নিয়ে এটা দিবে কি দিবে না এমন ইত¯তত করে এক সময় দিলে। আমি যে এতটা খুশি হবো তা তুমি ভাবতেই পারোনি। তারপর... খুশিতে তোমার চোখে পানি এসে গিয়েছিল। তাই না? তখন তুমি ফাইভে পড়তে আমি ফোরে... তাই না?  
আবির আর কোনো কথা বলেনি। মনে হলো দীর্ঘশ্বাস আছড়ে পড়ছে সেল ফোনের সেটে। আমার বুকেও অজস্র ঢেউ আছড়ে পড়ছে। একবার ভাবছিলাম আবিরকে বলি আমার বাসায় বেড়িয়ে যেতে। তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছে হয়। আমি বলতে পারলাম না। কারণ, ও ছোটবেলায় একদিন বলেছিল, ধনিরা গরিবদের বাড়িতে বেড়াতে যায় না। ওদের বাড়িতে কেউ বেড়াতে যায় না। ওরা শুধু অন্যদের বাড়িতে যায়। আজকে যদি আবির সেরকম কিছু ভেবে বসে তাহলে এই লজ্জা রাখব কোথায়? 
এক সময় লাইন কেটে গেল। আমি শত চেষ্টা করেও আর কানেকশন পাইনি। মানুষ জীবনে সব কিছু পায় না জানি। কিন্তু আমি অনেক কিছুই পেয়ে গেছি। আবির এখনও আমার দেওয়া পেন্সিল ও রবারটি রেখেছে একটি ভালো ছবি আঁকার প্রত্যাশায়... এর চেয়ে বড় পাওয়া আমার জীবনে আর কী হতে পারে?  
হঠাৎ মনে হলো দক্ষিণ মেরুর শব্দহীন কোনো এক অজানা গহ্বরে আমি প্রবেশ করলাম। সেখানে কতক্ষণ ছিলাম আমার জানা নেই। আমার সমস্ত বিমূঢ়তা কাটিয়ে সম্বিৎ ফিরে পেলাম যখন অপু এসে বলল, ‘আম্মু  তোমার চোখে পানি কেন?’
টিটি/

Header Ad
Header Ad

সেই পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন

ছবি: সংগৃহীত

স্ট্রোক করা মাকে নিয়ে হাসপাতালে যান আনিসা আহমেদ নামে এক এইচএসসি শিক্ষার্থী। এজন্য পরীক্ষার হলে ঢুকতে দেরি হওয়ায় বসতে পারেননি পরীক্ষায়। তার পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার)।

শুক্রক্রবার (২৭ জুন) সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় তা জানানো হয়।

বার্তায় বলা হয়, চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন)। অসুস্থ মাকে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেরি হওয়ায় প্রথম দিনের এইচএসসি পরীক্ষায় রাজধানীর সরকারি মিরপুর বাঙলা কলেজ কেন্দ্রের এক শিক্ষার্থীর পরীক্ষা না দিতে পারার ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে।

এ বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা সিআর আবরার বলেন, মানবিক বিবেচনায় ওই শিক্ষার্থীর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণ সংক্রান্ত আইন ও বিধির আলোকে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। তার এ দুঃসময়ে আমরাও সমব্যথী। এ পরীক্ষার্থীকে উদ্বিগ্ন না হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

Header Ad
Header Ad

দেশজুড়ে রথযাত্রা উৎসব শুরু আজ

ছবি: সংগৃহীত

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উৎসব শুরু আজ। সনাতনী রীতি অনুযায়ী, প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শুরু হয় জগন্নাথদেবের রথযাত্রা।

বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে আনন্দমুখর পরিবেশে ৯ দিনব্যাপী শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা মহোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। আগামী ৫ জুলাই বিকেল ৩টায় উল্টো রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে এই উৎসব শেষ হবে। এ বছর ঢাকাসহ সারা দেশে ইসকনের ১২৮টি মন্দির ও আশ্রমে এদিন রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, জগন্নাথদেব হলেন জগতের নাথ বা অধীশ্বর। জগৎ হচ্ছে বিশ্ব আর নাথ হচ্ছেন ঈশ্বর। তাই জগন্নাথ হচ্ছেন জগতের ঈশ্বর। তার অনুগ্রহ পেলে মানুষের মুক্তিলাভ হয়। জীবরূপে তাকে আর জন্ম নিতে হয় না। এই বিশ্বাস থেকেই রথের উপর জগন্নাথ দেবের প্রতিমূর্তি রেখে রথ নিয়ে যাত্রা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

শুভ রথযাত্রা উপলক্ষ্যে ঢাকায় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) আয়োজিত ৯ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান মালায় রয়েছে, হরিনাম সংকীর্তন, বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামানায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, পদাবলী কীর্তন, আরতি কীর্তন, ভগবত কথা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শ্রীমদ্ভাগবত গীতা পাঠ, ধর্মীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শন ও ধর্মীয় নাটক মঞ্চায়ন।

ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী জানান, ইসকন স্বামীবাগ আশ্রমে শুক্রবার সকাল ৮টায় বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞের মধ্য দিয়ে শুভ রথযাত্রা মহোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়ে দুপুর দেড়টায় আলোচনা সভা শেষে বিকেল ৩টায় রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করা হবে।

ঢাকায় রথযাত্রার রুট উল্লেখ করে তিনি জানান, স্বামীবাগ আশ্রম থেকে রথযাত্রা শুরু হয়ে জয়কালী মন্দির, ইত্তেফাক মোড়, শাপলা চত্বর, দৈনিক বাংলা মোড়, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেট, পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেস ক্লাব, কদম ফোয়ারা, হাইকোর্ট মাজার, দোয়েল চত্বর, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জগন্নাথ হল, পলাশী মোড় হয়ে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে গিয়ে পৌঁছবে। পরে আগামী ৫ জুলাই বিকেল ৩টায় উল্টোরথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা একই পথে বিপরীত দিক থেকে অর্থাৎ ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির থেকে স্বামীবাগ আশ্রমে আনা হবে।

এছাড়া পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারের জগন্নাথ জিউ ঠাকুর মন্দির, জয়কালী রোডের রামসীতা মন্দির এবং শাঁখারীবাজার একনাম কমিটিসহ রাজধানীর অন্যান্য মন্দির ও দেশের বিভিন্ন মন্দিরেও রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

Header Ad
Header Ad

ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ বিলিয়ন ডলারের গোপন প্রস্তাব

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের সঙ্গে সমঝোতায় গোপনে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনা এবং মার্কিনদের কথামতো চালাতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন নানাভাবে চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে চারটি সূত্র সিএনএনকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র মতে, ট্রাম্প প্রশাসন ইরানকে বেসামরিক-শক্তি উৎপাদনকারী পারমাণবিক কর্মসূচি গড়ে তুলতে সহায়তা করার জন্য ৩০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত অর্থ প্রদান, নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা এবং বিশ্বব্যাপী ইরানের ফ্রিজ হওয়া তহবিলের বিলিয়ন ডলার মুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা করেছে। আর এ সবই করা হচ্ছে অত্যন্ত গোপনে।

যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের মূল খেলোয়াড়রা গত দুই সপ্তাহে ইরান ও ইসরায়েলে সামরিক হামলার মধ্যেও পর্দার আড়ালে ইরানিদের সঙ্গে কথা বলেছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর এই সপ্তাহেও আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেছেন, বেশ কয়েকটি প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে। এগুলো প্রাথমিক ও ক্রমবর্ধমান। তবে একটি অ-আলোচনাযোগ্য শর্ত বহাল রয়েছে। তা হলো, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শূন্য হতে হবে। যদিও ইরান ধারাবাহিকভাবে বলেছে, তাদের প্রয়োজনে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ করা হচ্ছে তবুও চাপ প্রয়োগকারীরা এ শর্তে ছাড় দিতে নারাজ। দুটি সূত্র সিএনএনকে অন্তত একটি প্রাথমিক খসড়া প্রস্তাব সরবরাহ করেছে। এতে ইরানের জন্য বেশ কয়েকটি প্রণোদনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং উপসাগরীয় অংশীদারদের মধ্যে একটি গোপন বৈঠকে কিছু বিবরণ চূড়ান্ত করা হয়েছে। মার্কিন সামরিক হামলার আগের দিন ছিল কয়েক ঘণ্টার সেই বৈঠক সম্পর্কে জানা দুটি সূত্র সিএনএনকে এসব নিশ্চিত করেছে।

আলোচিত শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, ইরানের একটি নতুন অ-সমৃদ্ধকরণ পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য আনুমানিক ২০-৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হবে। এ কেন্দ্র বেসামরিক শক্তি উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হবে। ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং প্রস্তাব সম্পর্কে জানা সূত্রগুলো সিএনএনকে জানিয়েছে, অর্থ সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসবে না; বরং আরব অংশীদাররা এই বিল পরিশোধ করার পথ খোঁজা হচ্ছে। ইরানের পারমাণবিক শক্তি সুবিধাগুলোতে বিনিয়োগের বিষয়টি সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পারমাণবিক আলোচনার পূর্ববর্তী রাউন্ডগুলোতেও আলোচিত হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই আলোচনাগুলোর নেতৃত্ব দিতে ইচ্ছুক। পারমাণবিক কর্মসূচি গড়ে তুলতে কারও না কারও অর্থ প্রদান করতে হবে। তবে আমরা সেই প্রতিশ্রুতি দেব না।

অন্যান্য প্রণোদনার মধ্যে রয়েছে ইরানের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা অপসারণের সম্ভাবনা এবং ইরানকে ৬ বিলিয়ন ডলার ফ্রিজ সম্পদ ব্যবহার করতে দেওয়া, যা বর্তমানে বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রয়েছে এবং তারা বহু বছর তা অবাধে ব্যবহার করতে পারছে না।

সূত্র সিএনএনকে বলেছে, বিভিন্ন মানুষের দ্বারা অনেক ধারণা উত্থাপিত হচ্ছে এবং তাদের অনেকেই সৃজনশীল হওয়ার চেষ্টা করছে। এখানে কী ঘটবে, তা সম্পূর্ণরূপে অনিশ্চিত। ইসরায়েলি ও মার্কিন হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে প্রথম পাঁচ রাউন্ডের আলোচনা সম্পর্কে জানা একটি পৃথক সূত্রও একই তথ্য দিয়েছে।

উইটকফ বুধবার সিএনবিসিকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি শান্তি চুক্তি চায়। সব প্রস্তাব ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র প্রাপ্তি থেকে বিরত রাখার জন্য নকশা করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র বলেছে , ইরান শান্তিপূর্ণ বেসামরিক উদ্দেশ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি চালু রাখতে পারে। তবে সেই কর্মসূচির জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না। পরিবর্তে ইরান সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম স্বল্প মাত্রায় আমদানি করতে পারবে। কতটুকু খরচ হচ্ছে, তা পর্যবেক্ষকদের নিয়মিত জানাতে হবে।

উইটকফ বলেন, এখন ইরানের সঙ্গে আলোচনা হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমরা কীভাবে ইরানকে উন্নত বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচি চালু রাখার সুযোগ দেব, সেটিই মুখ্য।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সেই পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন
দেশজুড়ে রথযাত্রা উৎসব শুরু আজ
ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ বিলিয়ন ডলারের গোপন প্রস্তাব
প্রত্যেক জেলায় হাসপাতালের মত সিনেমা হলও দরকার: জাহিদ হাসান
দেশে ফিরতে ইরান থেকে পাকিস্তান পৌঁছেছেন ২৮ বাংলাদেশি
যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির সাক্ষাৎ
খুলনায় বিএনপির নেতার বাড়ি ভাঙচুর, এসআই সুকান্ত চুয়াডাঙ্গায় গ্রেপ্তার
বিশেষ সুবিধা: ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের কার কত বেতন বাড়ছে
হানিয়া আমিরের সঙ্গে সিনেমায় অভিনয়, ভারতে দিলজিৎকে নিষিদ্ধের দাবি
আমি যদি ভবিষ্যতে শেখ হাসিনার মতো করি, আমারও পতন হবে: কাদের সিদ্দিকী
চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে জোট গড়ছে না বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের নামে থাকা ৯৭৭ স্থাপনার নাম পরিবর্তন
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে ‘পাবলিক’ রাখতে হবে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইল
প্রকৃত ঘটনা জানলে হাসনাত আবদুল্লাহ তার ভুল বুঝতে পারবেন: দুদকের ডিজি
বিরামপুরে আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস পালিত
এনসিপির তুষারের বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর আলাপ’সহ যত অভিযোগ নীলা ইসরাফিলের
২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ১৯ জনের করোনা শনাক্ত
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছর নির্ধারণ করে স্বৈরাচারকে রুখে দেয়া হয়েছে: সালাহউদ্দিন আহমদ
নীরবতা ভেঙে খামেনি বললেন, ইরান ‘বিজয়’ অর্জন করেছে (ভিডিও)
সাংবাদিকতায় বাংলাদেশের মতো স্বাধীনতা উন্নত বিশ্বেও নাই: প্রেস সচিব