ঈদুল আজহার আগমনী মুহূর্তে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে টানা পাঁচ দিন বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ৭ জুন শনিবার সকালে দেওয়া এক পূর্বাভাসে সংস্থাটি জানিয়েছে, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়া অফিস জানায়, শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় উল্লিখিত বিভাগের দু-একটি জায়গায় এই আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে। অন্যদিকে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকলেও আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। এই সময়ে সারা দেশের দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

রবিবার, সোমবার ও মঙ্গলবারেও আবহাওয়ার একই ধারা অব্যাহত থাকতে পারে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে এসময়ে বিক্ষিপ্তভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে অন্যান্য বিভাগে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকলেও তেমন বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।

মঙ্গলবারের পরের দিন অর্থাৎ বুধবারের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু এলাকায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের অন্যত্র তখনও আবহাওয়া শুষ্কই থাকবে এবং তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

ঈদের সময় মানুষ সাধারণত ঘরমুখো হয় এবং খোলা আকাশের নিচে কোরবানি কার্যক্রম চলে থাকে। তাই এমন বৃষ্টির পূর্বাভাস ঈদ উদযাপনে কিছুটা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে জনসাধারণকে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

বৃষ্টির এই ধারাবাহিকতা ঈদের আনন্দে বিঘ্ন সৃষ্টি করলেও, খরা ও দাবদাহের পর দেশের কৃষি ও পরিবেশের জন্য এটি কিছুটা স্বস্তির বার্তাও বয়ে আনছে বলে মত দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার খান ইউনিসে একটি ভবনে বিস্ফোরণে চার ইসরায়েলি সেনা নিহত এবং আরও পাঁচজন আহত হয়েছেন। ঈদুল আজহার দিন শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে দক্ষিণ গাজার বানি সুহেইলা এলাকায় তারা অভিযান চালাচ্ছিল। এ সময় সৈনিকরা একটি ভবনে প্রবেশ করলে সেটিতে পেতে রাখা বিস্ফোরকের ফাঁদে পড়েন। ভবন ধসে পড়লে চার সেনা নিহত হন এবং আহত হন আরও পাঁচজন, যাদের একজনের অবস্থা গুরুতর।

নিহতদের মধ্যে দুই সেনার পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে—মাগলান কমান্ডো ইউনিটের সার্জেন্ট মেজর (রিজার্ভ) চেন গ্রস এবং ইয়াহালোম কম্ব্যাট ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিটের স্টাফ সার্জেন্ট ইয়োভ রাভার। বাকি দুই সেনার নাম পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আইডিএফ মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফ্রিন বলেন, “গাজায় সুড়ঙ্গ শনাক্তে ভবনগুলোতে প্রবেশের প্রয়োজন হয়। আমরা সম্ভাব্য বিস্ফোরণ ঠেকাতে সতর্কতামূলক নানা পদ্ধতি ব্যবহার করি, তবে কখনও কখনও বিপদ এড়ানো সম্ভব হয় না। এই ঘটনাটি আমরা তদন্ত করছি।”

এদিকে একই দিনে গাজা সিটির শেজাইয়া এলাকায় মর্টার হামলায় ৬৪৬তম প্যারাট্রুপার ব্রিগেডের এক রিজার্ভ সেনা আহত হয়েছেন। তাকে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান দীর্ঘদিন ধরে চলমান, এবং এরই মধ্যে দুই পক্ষের বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ঈদের দিনেও গাজায় রক্তপাত থামেনি, যা নতুন করে সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

ট্রাম্প দাবি করেন, তার কূটনৈতিক হস্তক্ষেপেই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার যুদ্ধ থেমেছে। তিনি বলেন, "পাকিস্তানের নেতৃত্ব খুবই শক্তিশালী। কেউ কেউ এটা পছন্দ নাও করতে পারে, কিন্তু এটাই সত্যি।"

তিনি আরও বলেন, “আমি উভয় পক্ষকেই সতর্ক করে বলেছিলাম—যদি যুদ্ধ করেন, তাহলে আমরা বাণিজ্য করবো না।” ট্রাম্প জানান, যুদ্ধ থামাতে পারায় তিনি গর্বিত এবং উভয় দেশের নেতৃত্বই শক্তভাবে কাজ করেছে।

গত ২২ এপ্রিল ভারতশাসিত কাশ্মীরে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হলে ভারত এর জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে। যদিও নয়াদিল্লি কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি। পাকিস্তান ওই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানায়।

এই ঘটনার পর ভারত সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করে, পাশাপাশি বাণিজ্য ও সীমান্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। জবাবে পাল্টা পদক্ষেপ নেয় পাকিস্তান। পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

৭ মে ভারত পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরসহ কয়েকটি এলাকায় হামলা চালায়। জবাবে পাকিস্তান একটি রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে এবং একটি ইসরায়েলি ড্রোন প্রতিহত করে। ১০ মে ভারত পাকিস্তানের একটি বিমানঘাঁটিতে হামলা চালালে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুস’ নামে পাল্টা অভিযান পরিচালনা করে।

চূড়ান্তভাবে ১০ মে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। পরে পাকিস্তান ট্রাম্প ছাড়াও চীন ও উপসাগরীয় দেশগুলোর শান্তিপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করে।