মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২৭ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash

দুদকের ৪ মামলা

শেখ হাসিনার এপিএস লিকুর শতকোটি টাকার সম্পদের পাহাড়

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব-২ (এপিএস) গাজী হাফিজুর রহমান লিকু। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব-২ (এপিএস) গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের গল্পটি যেন এক রূপকথার মতো। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার হিসেবে মাত্র ৫,১০০ টাকা বেতন নিয়ে তার কর্মজীবন শুরু হলেও অল্প সময়ের মধ্যে তিনি অঢেল সম্পদের মালিক বনে যান। ২০১৪ সালে এপিএস হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পর তার ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির পরিধি আরও বিস্তৃত হয়।

অভিযোগ উঠেছে, নিজ নামে সম্পদ কম দেখিয়ে বেনামে গড়ে তুলেছেন অধিকাংশ অবৈধ সম্পদ। এ ছাড়া ভিয়েতনামে শত কোটি টাকা পাচার করেছেন, শ্যালককে সেই দেশের ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বর্তমানে পালিয়ে শ্যালক-দুলাভাই দেশটিতে বিলাসী জীবনযাপন করছেন।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পাঁচ হাজার ১০০ টাকা বেতন দিয়ে গাজী হাফিজুর রহমান (লিকু) কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি এপিএস হিসাবে পদোন্নতি পান। এরপর দুর্নীতি ও অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে প্রায় হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন তিনি। শুধু নিজের নামে নয়; স্ত্রী, শ্যালক ও আত্মীয়-স্বজনের নামে বিঘার পর বিঘা জমি এবং ডজনখানেক বাড়ি নির্মাণ করেছেন। সরকার পরিবর্তনের পর যেগুলোর সন্ধান মিলছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গোয়েন্দা অনুসন্ধানেও তার বিরুদ্ধে কয়েক-শ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ মিলেছে। বাস্তবে যার মূল্য প্রায় হাজার কোটি টাকা। গোয়েন্দা অনুসন্ধানে প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরু করেছে সংস্থাটি।

দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এপিএস-২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকু ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। গোয়েন্দা অনুসন্ধানে তার নিজ ও আত্মীয়-স্বজনের নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় কমিশন থেকে প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনার সঙ্গে লিকু। ছবি: সংগৃহীত

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জের কর অঞ্চল-৪ এর করদাতা গাজী হাফিজুর রহমান (লিকু)। মোট ভাই পাঁচজন। ২০২৩ সালে এপিএস হিসেবে বাদ পড়ার পর সৌদি আরবে ওমরাহ করতে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। সেখান থেকে ভিয়েতনামে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

তার আয়কর ফাইলে সর্বশেষ ২০২৩-২৪ করবর্ষে মূল বেতন ৬৭ হাজার ১০ টাকা, নিট আয় নয় লাখ পাঁচ হাজার ৪৪৪ টাকা এবং নিট সম্পদ এক কোটি চার লাখ ৮৭ হাজার টাকা দেখিয়েছেন। আয়কর রিটার্নের বাইরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে ৬০ লাখ ২১ হাজার ২৮৮ টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ২০২৩ সালের ২৫ জুন স্ত্রী রহিমা আক্তারের নামে ৫০ লাখ টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া মেটলাইফ এলিকোতে ২৮ লাখ টাকার পলিসির সন্ধান পেয়েছে দুদক।

লিকু প্রথম আয়কর প্রদান করেন ২০০৯-২০১০ করবর্ষে। তার আয়কর ফাইলে সর্বশেষ ২০২৩-২৪ করবর্ষে মূল বেতন ৬৭ হাজার ১০ টাকা, নিট আয় নয় লাখ পাঁচ হাজার ৪৪৪ টাকা এবং নিট সম্পদ এক কোটি চার লাখ ৮৭ হাজার টাকা দেখিয়েছেন।

আয়কর রিটার্নের বাইরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে ৬০ লাখ ২১ হাজার ২৮৮ টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ২০২৩ সালের ২৫ জুন স্ত্রী রহিমা আক্তারের নামে ৫০ লাখ টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া মেটলাইফ এলিকোতে ২৮ লাখ টাকার পলিসির সন্ধান পেয়েছে দুদক।

লিকু ও তার স্ত্রী রহিমা আক্তার। ছবি: সংগৃহীত

লিকুর স্ত্রী রহিমা আক্তারের নামে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানাধীন রামদিয়াতে ‘মেসার্স রাফি অ্যাগ্রো অ্যান্ড ফিশারিজ’ নামের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার জমির পরিমাণ ৪৭১ শতাংশ এবং দালিলিক মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা।

রাজধানী ঢাকা শহরের মোহাম্মদপুর থানাধীন বসিলায় ‘মধু সিটিতে’ এক বিঘা জমির ওপর ছয়তলা ভবন নির্মাণ করেছেন লিকু। যার মূল্য কোটি টাকা। এ ছাড়া ঢাকার আদাবরের ৬ নম্বর রোডের ৫৮৩ নম্বর বাড়ির এ-৬ ফ্ল্যাটটি তার স্ত্রী রহিমা আক্তারের নামে। ওই বাড়ির মালিক নজরুল ইসলাম রহিমা আক্তারের বন্ধু বলে জানা গেছে। ২৫ মিতালী রোড, আনোয়ার ল্যান্ডমার্ক, ধানমন্ডি, ঢাকায় লিকুর বেনামে আরও একটি ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে। স্ত্রী ও অন্যদের নামে অর্ধডজন প্রাইভেট গাড়ি ও মাইক্রোবাসের খোঁজ পাওয়া গেছে।

লিকুর স্ত্রী রহিমা আক্তারের নামে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানাধীন রামদিয়াতে ‘মেসার্স রাফি অ্যাগ্রো অ্যান্ড ফিশারিজ’ নামের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার জমির পরিমাণ ৪৭১ শতাংশ এবং দালিলিক মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা।

খুলনা-ঢাকা-সাতক্ষীরা-গোপালগঞ্জ রুটে ‘ওয়েলকাম এক্সপ্রেস’ নামে ৪২টি যাত্রীবাহী পরিবহন চলাচল করছে। এর মধ্যে সাতটি গাড়ি তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন। গাড়িগুলো টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কালু ও তার যৌথ মালিকানায় পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিটি গাড়ির মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা। এ ছাড়া ঢাকা মহানগরে ওয়েলকাম বাস সার্ভিসেও তার শেয়ার রয়েছে।

গোপালগঞ্জ পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সোনাকুড় মাঠের পাশে ১৩ শতাংশ জমির ওপর শ্যালক শেখ মো. ইকরাম ওরফে হালিম মোল্লার নামে (বেনামে) ১০তলা কমার্শিয়াল ও আবাসিক ভবন নির্মাণ করেছেন। যা ‘স্বর্ণা টাওয়ার’ নামে পরিচিত। জানা যায়, হালিম মোল্লা তার স্ত্রী স্বর্ণা খানমের নামে এটি গড়েছেন।

অনুসন্ধানে আরও দেখা গেছে, গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া থানাধীন কুশলা ইউনিয়নসহ গোপালগঞ্জ সদর থানাধীন কাজুলিয়া গ্রামে ৪০০ বিঘা জমিতে মৎস্যঘের রয়েছে। এ ছাড়া গোপালগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন থানাপাড়া রোডে পৈত্রিক জমিতে পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করেছেন। যার মূল্য দুই কোটি টাকা।

অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন জায়গায় গড়ে তুলেছেন আলিশান সব বাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

জানা যায়, লিকুর শ্যালক শেখ মো. ইকরাম ওরফে হালিম মোল্লা। তিনি গার্মেন্টস ব্যবসার আড়ালে মূলত হুন্ডি ব্যবসা করতেন। হুন্ডির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা তিনি বিদেশে পাচার করেছেন। তিনি ভিয়েতনামে বসবাস করেন। গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর সব অবৈধ অর্থ বৈধ করার কাজে তিনি সহযোগিতা করেন। দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে বিষয়টি বেরিয়ে এসেছে।

নিজ বাড়ির পাশে থানাপাড়া রোডে অনির্বাণ স্কুলের দক্ষিণ পাশে ছয়তলা ভবন নির্মাণ করেছেন লিকু। সেখানে তার শ্বশুর-শাশুড়ি বসবাস করছেন।

লিকুর সেজ ভাই গাজী মুস্তাফিজুর রহমান দিপুর নামে পটুয়াখালীর কুয়াকাটার লাইট হাউজের পাশে ‘ওশান ব্লু’ নামের রিসোর্ট রয়েছে। এটি মূলত গড়েছেন লিকু। সেখানে সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানেরও শেয়ার রয়েছে বলে জানা গেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, লিকুর সেজ ভাই গাজী মুস্তাফিজুর রহমান দিপুর নামে পটুয়াখালীর কুয়াকাটার লাইট হাউজের পাশে ‘ওশান ব্লু’ নামের রিসোর্ট রয়েছে। এটি মূলত গড়েছেন লিকু। সেখানে সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানেরও শেয়ার রয়েছে বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে, গোপালগঞ্জ সদর থানাধীন পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর গোবরা নামক স্থানে লিকুর শ্যালক হালিম মোল্লার শ্যালক রিপন ফকিরের নামে ১৫ শতক জমিতে আলিশান ডুপ্লেক্স বাড়ির সন্ধান মিলেছে। একই ওয়ার্ডে হালিম মোল্লার অপর শ্যালক মিল্টন ফকিরের নামে তিনতলা বাড়ি এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সোনাকুড় নামক স্থানে নিলের মাঠের পাশে ১০ শতাংশ জায়গায় একতলা বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে।

লিকুর আপন ছোট ভাই গাজী শফিকুর রহমান ছোটনের নামে গোপালগঞ্জ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ২২ শতাংশ জমি, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে শ্যালকের নামে সোয়া কোটি টাকার সাত কাঠা জমি, গোপালগঞ্জের বেদগ্রাম মোড়ে স্ত্রী রহিমা বেগমের নামে ৮ শতাংশ ও ১০ শতাংশ বসতভিটা, গোপালগঞ্জ পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ১৫ বিঘা জমি, ভায়রাভাই ওমর আলীর নামে পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে চারতলা বাড়ি ক্রয় করেছেন বলে দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।

গাজী হাফিজুর রহমান লিকু এবং তার স্ত্রী-সন্তানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রবিবার (১৩ জানুয়ারি) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ এসব মামলা করা হয়েছে।

দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার এপিএস থাকা অবস্থায় নানা দুর্নীতি ও ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে লিকুর বিরুদ্ধে এসব মামলা দায়ের করা হয়।’

তিনি জানান, লিকু, তার স্ত্রী রহিমান আক্তার, ভাই গাজী মুস্তাফিজুর রহমান দিপু ছাড়াও শেখ মো. ইকরাম, তানভীর আহম্মেদ, মো. লিয়াকত হোসেন সবুজ, কালু শেখ, হামিম শেখ, মিন্টু রহমান ও আরাফাত হোসেনকে আসামি করে প্রথম মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। দুদকের উপ-পরিচালক মো. আহসানুল কবীর পলাশ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গাজী হাফিজুর রহমান লিকু ও অন্যান্য আসামি গোপালগঞ্জে তাদের নামের ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ৩৩টি ব্যাংক হিসাবে ১৪৪ কোটি ৫৯ লাখ ১৩ হাজার ১০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেন। একইসঙ্গে দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে পাওয়া অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস আড়ালের উদ্দেশ্যে রূপান্তর, হস্তান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দন্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

দ্বিতীয় মামলাটি করা হয় শুধু লিকুর বিরুদ্ধে। এ মামলাটিরও বাদী দুদকের উপ-পরিচালক মো. আহসানুল কবীর পলাশ। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনার একান্ত সচিব-২ থাকা অবস্থায় লিকু ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫৫ কোটি ৩২ লাখ ৮৮০ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে নিজের ভোগ দখলে রেখে দুদক ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

তৃতীয় মামলাটিতে রহিমাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে লিকুকে। মামলাটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রাকিবুল হায়াত। তিনি মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, লিকু ও তার স্ত্রী রহিমা একে অপরের সহযোগিতায় অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তিকে বৈধতা দানের অসৎ উদ্দেশ্যে ২৩ কোটি ২৫ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ভোগ দখলে রেখে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

চতুর্থ মামলাটিতে লিকুকে দুই নম্বর আসামি এবং ছেলে শেখ ইকরামকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. মনজুরুল ইসলাম মিন্টু। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, আসামিরা একে অপরের সহায়তায় অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তিকে বৈধতা দানের উদ্দেশ্যে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৪ কোটি ৭৫ লাখ ৭৯ হাজার ৩৪৮ টাকার সম্পদ ভোগ দখলে রেখে দুদক আইন ও দন্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

Header Ad
Header Ad

অল্প বয়সেই চুল পাকছে? জেনে নিন কার্যকর সমাধান

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে অনেকেই অল্প বয়সেই চুল পাকার সমস্যায় ভুগছেন। এটি শুধুমাত্র বয়স বৃদ্ধির কারণে ঘটে না, বরং খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রা এবং পরিবেশগত কারণও এর জন্য দায়ী হতে পারে। তবে কিছু কার্যকর পদ্ধতি অনুসরণ করলে এ সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

চুল পাকার অন্যতম কারণ হলো মেলানিন উৎপাদন কমে যাওয়া। মেলানোসাইট নামক কোষ চুলের গোড়ায় মেলানিন উৎপন্ন করে এবং চুলের স্বাভাবিক রং ধরে রাখে। কিন্তু এই কোষ নষ্ট হয়ে গেলে বা মেলানিন উৎপাদন কমে গেলে চুল ধূসর বা সাদা হয়ে যেতে পারে। এছাড়া জিনগত প্রভাবও অনেক ক্ষেত্রে দায়ী। যদি পরিবারে কারও অল্প বয়সে চুল পাকার ইতিহাস থাকে, তবে আপনাকেও একই সমস্যার মুখোমুখি হতে হতে পারে।

অপুষ্টি চুল পাকার আরেকটি বড় কারণ। বিশেষ করে, ভিটামিন বি১২, আয়রন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাবে চুল তার স্বাভাবিক রং হারিয়ে ফেলে। মানসিক চাপও চুল পাকার অন্যতম কারণ হিসেবে কাজ করে। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ শরীরের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়, যা চুলের মেলানিন উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

খাদ্যাভ্যাসেরও একটি বড় ভূমিকা রয়েছে চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখার ক্ষেত্রে। প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্ট ফুড ও পুষ্টিহীন খাবার চুলের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়া, অতিরিক্ত কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী ব্যবহার চুলের স্বাভাবিক রং নষ্ট করতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে লিভারের অসুখ, ধূমপান ও মদ্যপানের কারণেও চুল পেকে যেতে পারে।

চুল পাকা প্রতিরোধে কিছু কার্যকর সমাধান গ্রহণ করা যেতে পারে। প্রথমত, লুটিওলিন সমৃদ্ধ ফল ও সবজি খাওয়া দরকার। লুটিওলিন এক বিশেষ অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা চুলের রং ধরে রাখতে সহায়তা করে। গাজর, ব্রকলি, লেটুস, পালংশাক, বিট, বাঁধাকপি, ফুলকপি, আঙুর, আপেল, চেরি, পেয়ারা, স্ট্রবেরি ও পিচ প্রভৃতি ফল ও সবজিতে লুটিওলিন পাওয়া যায়। এটি মেলানোসাইট কোষের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, প্রদাহ হ্রাস করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

 

ছবি: সংগৃহীত

সঠিক পুষ্টি গ্রহণও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন বি১২, আয়রন ও অন্যান্য খনিজ উপাদান নিশ্চিত করা প্রয়োজন। প্রাকৃতিক তেলের ব্যবহার যেমন নারিকেল তেল, আমলকি তেল ও মেথি তেল চুল পাকা প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।

মানসিক চাপ কমানোও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত যোগব্যায়াম, মেডিটেশন ও পর্যাপ্ত ঘুম চুল পাকার হার কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া, অতিরিক্ত কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনীর ব্যবহার কমিয়ে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা উচিত।

ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে আমলকি, মেথি বীজ ও কারি পাতার পেস্ট তৈরি করে চুলে লাগালে প্রাকৃতিকভাবে চুল পাকার সমস্যা দূর করা সম্ভব। অল্প বয়সে চুল পাকা অনেকের জন্যই দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে, তবে সঠিক জীবনযাত্রা ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার গ্রহণের মাধ্যমে এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। নিয়মিত যত্ন নিলে আপনার চুলও দীর্ঘদিন কালো ও সুন্দর থাকবে।

Header Ad
Header Ad

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভালো করবে বাংলাদেশ : সিমন্স

ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভালো করার ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ দলের কোচ ফিল সিমন্স। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে শুরু হবে আট দলের এই বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট। সেই লক্ষ্যে মিরপুরে চলছে বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি। অনুশীলনের ফাঁকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সিমন্স জানান, বাংলাদেশ দলের সামর্থ্য নিয়ে তিনি আত্মবিশ্বাসী এবং ট্রফি জয়ের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবে দল।

সিমন্স বলেন, ‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের ভালো করার সম্ভাবনা আছে। আমরা সেরা ক্রিকেট খেলতে পারলে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। ট্রফি জেতার ব্যাপারে বিশ্বাস না থাকলে এখানে থাকতাম না।’

তবে তিনি স্বীকার করেন, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে বাংলাদেশের প্রস্তুতি যথেষ্ট ভালো হয়নি। তার ভাষায়, ‘আমি একমত যে সেরা প্রস্তুতি হচ্ছে না। তবে আমরা সাদা বলের ক্রিকেটের সঙ্গে ছিলাম। এখন আমাদের হাতে ছয় দিনের প্রস্তুতি ক্যাম্প আছে, সেখানে পরিকল্পনা মতো অনুশীলন করব।’

গত অক্টোবরে চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বরখাস্ত হওয়ার পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন ফিল সিমন্স। আপাতত তার চুক্তি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্তই। এরপর তার ভবিষ্যৎ কী হবে, সেটি এখনো অনিশ্চিত। সিমন্স বলেন, ‘আমি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত আছি। এরপর কী হবে, এখনই বলতে পারছি না।’

Header Ad
Header Ad

সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপঙ্কর তালুকদার আটক

সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপঙ্কর তালুকদার। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপঙ্কর তালুকদারকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর সোবহানবাগ থেকে তাকে আটক করে ডিবি পুলিশের একটি দল।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) তালেবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, একাধিক মামলার আসামি সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপঙ্কর তালুকদার। রাজধানীর সোবহানবাগে তার অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর ডিবি পুলিশের একটি দল তাকে আটক করে। তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

অল্প বয়সেই চুল পাকছে? জেনে নিন কার্যকর সমাধান
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভালো করবে বাংলাদেশ : সিমন্স
সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপঙ্কর তালুকদার আটক
এই মুহুর্তে কোন স্থানীয় নির্বাচন নয়, আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন: আহমেদ আযম খান
৪৭ বছরের ইতিহাস ভেঙে অভিষেকেই ব্রিটজকের বিশ্বরেকর্ড
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার জন্য কাজ করছে সরকার
ডিবি পরিচয়ে ডাকাতি, যুবলীগ নেতাসহ গ্রেফতার ১২
বেনজীরকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ
টাঙ্গাইলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা ইকবাল গ্রেফতার
ভ্যালেন্টাইনস ডে পালন বিষয়ে যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ
দুদক পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানকে প্রত্যাহার
স্বামীর টাকায় ঘুষ দিয়ে চাকরি পেয়েই ডিভোর্স দিলেন স্ত্রী
গাজীপুরে হামলার ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক, ফাঁকা বাড়িঘর ঝুলছে তালা
রাঘববোয়াল থেকে চুনোপুঁটি কেউ ছাড় পাবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
অবহেলার কারণে কেউ হজে যেতে না পারলে দায় এজেন্সিকেই নিতে হবে: ধর্ম উপদেষ্টা
আমরা অফিশিয়ালি কোনো প্রার্থী ঘোষণা করিনি: জামায়াত আমির
আন্দোলনে শহীদদের পরিবার প্রতি মাসে পাবে ভাতা
কুড়িগ্রাম সীমান্তে শূন্যরেখায় বিএসএফের সিসি ক্যামেরা, বিজিবির কড়া প্রতিবাদ
সালমান, আনিসুল, পলক ও শমসের মবিনের ফের রিমান্ড মঞ্জুর
গোবিন্দগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত্যু