শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ | ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Dhaka Prokash

শুভকাজের নামে পরিবেশ ধ্বংসের আয়োজন

আমাদের দেশে প্রাকৃতিক সম্পদ লুণ্ঠনের ইতিহাস অনেক প্রাচীন। নদী, পাহাড়, বন, খাল, বিল, হাওর-সবকিছুই আমাদের ভোগ করা দরকার। ফলে ধ্বংসের শেষপ্রান্তে এসে ঠেকেছে বন। দখল-দূষণ আর ভরাট হয়ে নদীও চরম বিপন্ন। এসব ক্ষেত্রে যা-কিছু অনিয়ম তার সঙ্গে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের বড় ধরনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সমাজ ও সরকারের প্রভাবশালীদের অনৈতিক প্রভাব। এটি যে একটি আত্মঘাতি কাজ তা কারো উপলব্ধিতেই আসছে না। পরিবেশ দূষণের ফলাফল যেহেতু তাৎক্ষণিকভাবে দৃশ্যমান নয়, সেহেতু বিষয়টি অনেকেই অনুভব করতে পারছে না। মূলত একারণেই প্রকৃতি ও পরিবেশবিষয়ক শিক্ষা প্রয়োজন। সর্বস্তরের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে কিছু বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে কিছুটা হলেও শেষ রক্ষা হতে পারে।

সম্প্রতি সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে গ্রহণকরা কতিপয় পরিবেশ বিধ্বংসী সিদ্ধান্ত আমাদের হতবাক করেছে। সরকার সবসময় বন ও পরিবেশ সংরক্ষণের কথা বললেও বাস্তবে এধরনের পদক্ষেপ চরম হঠকারী ও হতাশাজনক। একটি প্রতিনিধিত্বশীল জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়-মৌলভীবাজার জেলার সবচেয়ে জীববৈচিত্র্যপূর্ণ বনভূমি লাঠিটিলায় ৫ হাজার ৬৩১ একরজুড়ে সাফারি পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে বন বিভাগ। জেলার জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের ওই বনভূমি সেখানকার একমাত্র সংরক্ষিত বন হিসেবে চিহ্নিত। এই বনে অসংখ্য প্রজাতির গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদ ও প্রাণীর বাস। আমরা জানি মৌলভীবাজারে এর আগে বর্শিঝোড়া ইকোপার্ক, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবকুণ্ড ইকোপার্ক, মাধবকুণ্ড লেক, বাইক্কার বিলসহ বেশ কিছু পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। বছরে প্রায় পাঁচ লাখ পর্যটক সেখানে যান। পর্যটকদের জন্য হোটেল, মোটেল, রেস্তোরাঁ, রাস্তাসহ নানা অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। এর ফলেই ওই বনভূমি ও জলাভূমিগুলোর জীববৈচিত্র্য হুমকিতে আছে বলে নানা গবেষণায় উঠে এসেছে। তার ওপর আবার কেন সাফারি পার্কের নামে এই পর্যটন কেন্দ্র? ৫৫ হাজার বর্গমাইলের ছোট্ট এই দেশে কয়টি সাফারি পার্ক প্রয়োজন?

সরকারের এমন অনাকাক্সিক্ষত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল লাঠিটিলা পরিদর্শন শেষে বলেছেন, সংরক্ষিত বনে সাফারি পার্ক হলে বনের পরিবেশ বদলে যাবে। মানুষকে পুনর্বাসন করা সম্ভব। কিন্তু বনের পরিবেশ, জীবজন্তুকে পুনর্বাসন করা সম্ভব নয়। সাফারি পার্ক করতে হলে বিকল্প জায়গায় করা যেতে পারে। সাফারি পার্ক হোক। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ুক, বিনোদনের জায়গা বাড়ুক। কিন্তু তা সংরক্ষিত বনে নয়।

দেশে বিদ্যমান পরিবেশ আইন অনুযায়ী এ ধরনের বনে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যায় না। অথচ ৯৮০ কোটি টাকার সম্ভাব্য ব্যয় ধরে ওই সাফারি পার্ক নির্মিত হলে সেখান পর্যটকদের জন্য নানা অবকাঠামো, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন, উপকেন্দ্রসহ ভারী অবকাঠামো নির্মিত হবে। আর সেখানে বছরে ৮ থেকে ১০ লাখ দর্শনার্থী আসবেন বলে প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তাহলে এটি কি আর বন হিসেবে গন্য হবে? লাঠিটিলার বুনো আবহ কি টিকে থাকবে?

সর্বশেষ একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা গেছে, পরিবেশবাদীদের মতামত উপেক্ষা করে প্রকল্প এলাকার মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কাজ শুরু করেছে একটি নকশা প্রস্তুতকারী সংস্থা!

এবার দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চল থেকে সর্বদক্ষিণে চোখ ফেরানো যাক। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য আরেকটি প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণ করতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভসংলগ্ন ঝিলংজা ‘রক্ষিত বনভূমির’ ৭০০ একর জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অথচ এটি প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন একটি বনভূমি। জানা যায় যে, বন বিভাগ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির আপত্তি উপেক্ষা করে ভূমি মন্ত্রণালয় এই জমি বরাদ্দ দিয়েছে। ১৯৩৫ সালে ব্রিটিশ সরকার একে রক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করে। বন বিভাগ এত বছর ধরে এটি রক্ষণাবেক্ষণ করছে। বিপন্ন এশীয় বন্য হাতিসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বন্য প্রাণীর নিরাপদ বসতি এই ঝিলংজা বনভূমি। বন আইন অনুযায়ী, পাহাড় ও ছড়াসমৃদ্ধ এই বনভূমি কোনো সংস্থার জন্য ইজারা বা বরাদ্দ দেওয়ার নিয়ম নেই। অপকর্মটি জায়েজ করার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দপত্রে দেশের অন্যতম জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ এই বনভূমিকে অকৃষি খাসজমি হিসেবে দেখানো হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয় বলেছে, বরাদ্দ দেওয়া জমির ৪০০ একর পাহাড় ও ৩০০ একর ছড়া বা ঝরনা। তারা জমির মূল্য ধরেছে ৪ হাজার ৮০৩ কোটি ৬৪ লাখ ২৩ হাজার ৬০০ টাকা। কিন্তু একাডেমির জন্য প্রতীকী মূল্য ধরা হয়েছে মাত্র ১ লাখ টাকা। সরকার কর্তৃক জোর-জবরদস্তি ও অনৈতিক প্রক্রিয়ায় দেশের প্রাণবৈচিত্র্য ধ্বংসের ক্ষেত্রে এর চেয়ে বড় উদাহারণ আর কি হতে পারে!

আমরা এখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করছি। কিন্তু গত ৫০ বছরে এক্ষেত্রে আমাদের অর্জনের চেয়ে বিসর্জন বেশি। আমরা হারিয়েছি আমাদের সবগুলো নিবিড় বন, প্রাকৃতিক জলাধার। সবই এখন নিয়ন্ত্রিত, বিবর্ণ, হতশ্রী। বেদখল আর অপরিকল্পিত কর্মযজ্ঞের চাপে বিলীন হয়েছে আমাদের প্রতিবেশগত ঐতিহ্য। তবে এসবের অনেক কুফলও আমরা পেতে শুরু করেছি। আন্তর্জাতিকভাবে তো বটেই জাতীয়ভাবেও আমরা কঠিন পরিবেশ সঙ্কটের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছি। এবছর আমাদের প্রকৃতিতে অস্থিতিশীল শীতের প্রভাব তারই একটি বড় নজির।
দ্বিমেরু প্রভাবে এবার শীতের মধ্যেও বঙ্গোপসাগর হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলে বঙ্গোপসাগরের তাপমাত্রা মূল ভূখণ্ডের চেয়ে প্রায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে, হিমালয় থেকে এবার অপেক্ষাকৃত শীতল বাতাস উত্তরাঞ্চল দিয়ে প্রবেশ করে সারা দেশে ছড়িয়ে হাড়কাঁপানো শীত আনার চেষ্টা করছে। কিন্তু বঙ্গোপসাগরে বাড়তি তাপের কারণে ফুটন্ত পানির ধোঁয়ার মতো ঘন মেঘ তৈরি হচ্ছে। উপকূল দিয়ে আসা উষ্ণ মেঘ আর উত্তরাঞ্চল দিয়ে আসা হিমেল বাতাসের মধ্যে রীতিমতো লড়াই শুরু হয়েছে। এ কারণে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে না হতেই মেঘের দল এসে তাতে উত্তাপ ঢেলে দিচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগ বঙ্গোপসাগর নিয়ে নতুন কিছুতথ্য দিয়েছে। তারা বলছে, বঙ্গোপসাগরে ইন্ডিয়ান ওশান ডাইপল বা ভারত মহাসাগর দ্বিমেরু পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এটা অনেকটা প্রশান্ত মহাসাগরের ‘এল নিনো’ ও ‘লা নিনার’ মতো একটা বিষয়। এর প্রভাবে ভারত মহাসাগর থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে একদিকে সাগরের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গরম হয়ে ওঠে, অন্যদিকে পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঠণ্ডা হয়ে যায়। ভারত মহাসাগরের তাপমাত্রার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বাংলাদেশের কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলের তাপমাত্রা বর্তমানে ২৭ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকছে, যা এই সময়ের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। নিঃসন্দেহে এটা কোনো ভালো লক্ষণ নয়। গত এক দশকে আমাদের ঋতুবৈচিত্র্যে কোনো স্থিতিশিলতা লক্ষ্য করা যায়নি। শীতের সময়ে শীত না থাকা, বর্ষায় বৃষ্টি না হওয়া এবং গরমে অসহনীয় তাপমাত্রা-এসবই এখন আমাদের নিত্যসঙ্গী।

 

কিন্তু এই বিবর্ণ, রিক্ত, হতশ্রী জন্মভূমি আমার নয়। এই বঙ্গভূমি সহস্র বছরের এক শ্যামল প্রকৃতির অনুপম উপাখ্যান। কিন্তু এর যা কিছু ভালো তার অধিকাংশই আমরা হারিয়ে ফেলেছি। যেমন হারিয়েছি আমাদের উদ্ভিদঐতিহ্যকেও। অথচ মানুষের জীবনের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ বৃক্ষের জীবনও আমাদের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। আমাদের জীবনে উদ্ভিদের অবদান ও বন্ধুত্বের ভূমিকা নানাভাবে আলো ফেলতে পারে। বৃক্ষদের এমন আদর্শ জীবন আমাদের বদলেও দিতে পারে। বদলে দিতে পারে সমাজের চিত্রও। ফরাসী লেখক জাঁ গিওনোর ‘দি ম্যান হু প্লান্টেড ট্রিস’ গল্পটির কথা মনে পড়ে? এই অমর গল্পের মূল নায়ক একজন মেষ পালক, নাম অ্যালজার্ড বুফিয়ের। যিনি প্রায় ৪০ বছর ধরে ফ্রান্সের এক বিজন ও রুক্ষ উপত্যকায় গাছ লাগিয়েছিলেন। তিনি প্রতিদিন শত শত ওক ও বার্চের বীজ বুনতেন পাহাড়ের ঢালু উপত্যকায়। এভাবেই ধীরে ধীরে একদিন সেই মরুময় উপত্যকা সহস্র বৃক্ষে সুশোভিত হয়ে ওঠে। বুফিয়ের একা একাই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এমন অসাধ্য সাধন করেছিলেন। যে কোনো পরিবর্তনের জন্য মাত্র একজন নিষ্ঠাবান মানুষের উদ্যোগই বেশ বড়সড় ভূমিকা রাখতে পারে। আমাদের দেশে এখনো বুফিয়ের-এর মতো কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি, তবে এমন অনেকেই আছেন যারা ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও নিভৃতে বৃক্ষায়নের কাজটি করে চলেছেন। তারা যেমন সবুজ পৃথিবীর স্বপ্ন দেখছেন আবার দেখাচ্ছেনও। এঁরাই আমাদের বুফিয়ের।
ইচ্ছে করলেই আমরা এই দেশটাকে আবারো সবুজে মুড়িয়ে দিতে পারি। পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চল থেকে আমাদের এই ভূ-ভাগ তুলনামূলকভাবে অনেক নবীন। সে কারণে বিবর্তন প্রক্রিয়ায় এ অঞ্চল এখনো ততটা সংকটাপন্ন হয়ে ওঠেনি। এটা আমাদের জন্য একটা বড় সুযোগ। এই সুযোটাই যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে। তবে একথা সত্যি যে মানুষ কখনো বন তৈরি করতে পারে না। বন তৈরি হয় প্রাকৃতির আপন নিয়মে। প্রকৃতির শত শত বছরের পৃষ্ঠপোষকতায় কেবল বনভূমি গড়ে উঠতে পারে, অন্য কোনোভাবে নয়। এ কারণেই মানুষ শুধু বৃক্ষায়নের কাজটিই করতে পারে। এ প্রেক্ষিতে বনায়ন শব্দটি আক্ষরিক অর্থে ভিত্তিহীন ও ভুয়া। বর্তমানে দেশে আশঙ্কাজনকহারে গাছপালার ঘনত্ব কমে যাবার প্রেক্ষাপটে আমরা ব্যাপকহারে বৃক্ষায়নের কাজটি করতে পারি। আমাদের মাটি এতই উর্বর যে কোথাও দুটি গাছ রোপণ করলে কয়েক বছর পর দেখা যায়, সেখানে আরো অসংখ্য গাছ আপনাআপনিই জন্মেছে। এটা আমাদের মাটির গুণ। সবচেয়ে বড় কথা সংরক্ষিত উপকুল দেখতে চাইলে গাছপালা লাগানোর ক্ষেত্রে সমগ্র উপকুলকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। উপকুলীয় অঞ্চলগুলো সংরক্ষিত থাকলে আমরা অনেকটাই নিরাপদে থাকব।

একটু ভালোভাবে খেয়াল করলেই দেখা যাবে, স্বল্প পরিসরের কোনো একটি পতিত স্থান হরেকরকম তৃণ-গুল্মে আচ্ছাদিত। এত স্বল্প পরিসরে এমন উদ্ভিদ বৈচিত্র্য সত্যিই দুর্লভ। দেশজুড়ে একই চিত্র চোখে পড়বে। মৃত্তিকার আপন গুণই এখানে গাছপালার অফুরাণ প্রাণশক্তি। পুরনো দালান কোঠার ফাঁকফোকরে জন্ম নেয় অনেক পরজীবী; বট, অশ্বত্থ, ফার্ণ। একটি পুরনো টালির ছাদে দুএকটি স্থানে অনেকদিনের ধুলোবালি জমে খানিকটা পুরু হয়ে উঠেছে। সেখানেই দেখা গেল অনেকগুলো চারাগাছ জন্মেছে। উষ্ণমণ্ডলের বীজগুলো অপেক্ষাকৃত কষ্টসহিষ্ণু। এরা বংশবিস্তারের জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে পারে। আমাদের দক্ষিণে নোনা জলের বন এবং বিল-হাওরের উদ্ভিদরাজিরও প্রজনন প্রক্রিয়া একই। বর্ষার উপচেপড়া পানিতে আশপাশের তৃণ-গুল্ম আপাত দৃষ্টিতে একেবারেই নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়ে। কিন্তু পানি শুকিয়ে যেতে না যেতেই আবারো নবজন্মে উদ্বেলিত হয় নতুন প্রাণ। সবচেয়ে বড় কথা, এখানে সবুজায়নের জন্য খুব বেশি কাঠখড় পোড়াতে হয় না। অথচ একবার শীতপ্রধান দেশগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখুন। তাদের গ্রীষ্ম মাত্র তিন-চারমাস। আবার কোনো কোনো বছর গ্রীষ্ম উপভোগ করার সুযোগও হয় না। সেখানে যখন গ্রীষ্ম উঁকিঝুকি দিতে শুরু করে তখন থেকেই শুরু হয় বাগান সজ্জার কাজ। গোটা শীতকাল বাগানটা যখন বরফের নিচে চাপা থাকে তখন কি আর সেখানে কোনো প্রাণের স্পন্দন থাকে। ফলে গ্রীষ্মে ওদেরকে অনেকটা শূন্য থেকেই শুরু করতে হয়। ওরা দশটা গাছের পরিচর্যার জন্য যে অর্থ ব্যয় করে আমাদের একটি বাগানের জন্যও তা ব্যয় হয় না বা করা যায় না। প্রকৃতির এই অফুরাণ প্রাণসম্পদকে আমরা খুব সহজেই কাজে লাগাতে পারি।

 

লেখক: প্রকৃতি ও পরিবেশবিষয়ক লেখক, সাধারণ সম্পাদক তরুপল্লব

tarupallab@gmail.com

Header Ad

ধোলাইখালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের আগুন নিয়ন্ত্রণে

ধোলাইখালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের আগুন নিয়ন্ত্রণে। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর ধোলাইখাল এলাকায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিটের সোয়া এক ঘণ্টার বেশি সময় চেষ্টায় শনিবার (১৮ মে) বেলা ১১টা ৫৭ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

এর আগে শনিবার সকাল পৌনে ১১টায় খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়, চারতলা ভবনটির দ্বিতীয় তলায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শাখায় আগুন লাগে।

সূত্রাপুর ও সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের পাঁচটি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। কোনো হতাহতেরও খবর পাওয়া যায়নি।

টাঙ্গাইলে ধান কাটতে এসে বজ্রপাতে প্রাণ হারালেন দুই ভাই

বজ্রপাতে নিহত দুই ভাই। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে মাঠে ধান কাটতে এসে বজ্রপাতে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৮ মে) সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার বীর বাসিন্দা ইউনিয়নের নোয়াবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- আফজাল হোসেন ও আমির হোসেন। তারা রংপুর জেলার উপজেলার চকদফরপুর গ্রামের বাসিন্দা। তারা সম্পর্কে আপন খালাতো ভাই।

স্থানীয়রা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার আউলিয়াবাদ বাজারে ঘর ভাড়া নিয়ে সেখানে থেকে আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটার কাজ করতো। শনিবার (১৮ মে) ভোরে বীরবাসিন্দা ইউনিয়নের নোয়াবাড়ী গ্রামের হযরত আলীর ধান ক্ষেতে তারা ৬ জন শ্রমিক ধান কাটছিল। এসময় বৃষ্টি শুরু হলে ধান ক্ষেত থেকে দৌড়ে বাড়িতে যাওয়ার সময় আফজাল ও আমীরের ওপর বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলে তাদের মৃত্যু হয়।

বীরবাসিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন জানান, সকালে কয়েকজন শ্রমিক হযরত আলীর ক্ষেতে ধান কাটতে যান। এসময় গুড়িগুড়ি বৃষ্টি সাথে বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজনের মৃত্যু হয়। আহত হন আরো চারজন। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

কালিহাতী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজীব জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহাদাত হুসাইন জানান, ওই দুই শ্রমিকের মৃত্যুর খবর জেনেছি। তাদের আর্থিক সহযোগিতা করাসহ মরদেহ স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

মেসি-বার্সা চুক্তির সেই ন্যাপকিন বিক্রি হলো ১১ কোটি টাকায়

লিওনেল মেসি এবং সেই ঐতিহাসিক ন্যাপকিন। ছবি: সংগৃহীত

লিওনেল মেসির সঙ্গে বার্সেলোনার প্রথম চুক্তি হয়েছিল যে ন্যাপকিন পেপারে, সেটা অবশেষে বিক্রি হলো নিলামে। ধারণা করা হয়েছিল এর দাম ৬ উঠতে পারে লাখ ৩৫ হাজার ডলার পর্যন্ত।

তবে বিক্রির বেলায় দেখা গেল প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গেছে। শুক্রবার ন্যাপকিন পেপারটি নিলামে ৯ লাখ ৬৫ হাজার ডলারে (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১ কোটি ২৯ লাখ টাকা) বিক্রি হয়েছে। নিলামে ন্যাপকিন পেপারের ভিত্তিমূল্য ছিল ৩ লাখ ডলার।

লিওনেল মেসি এবং সেই ঐতিহাসিক ন্যাপকিন। ছবি: সংগৃহীত

ব্রিটিশ নিলাম হাউস বোনহামসে নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিলামে ন্যাপকিন পেপারের ভিত্তিমূল্য ছিল ৩ লাখ ডলার। ধারণা চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হয়েছে এই নেপকিন পেপারটি।

আর্জেন্টাইন এজেন্ট হোরাশিও গ্যাগিওলি প্রথমে মেসির নাম সুপারিশ করেছিলেন। তার উপস্থিতিতে ন্যাপকিন পেপারে এই চুক্তি সম্পন্ন হয়। বোনহামস জানিয়েছে, ন্যাপকিন পেপারটি গ্যাগিওলির কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এটি নিলামে যে দামে বিক্রি হয়েছে, সেখান থেকে একটি অংশ অনলাইন নিলামের প্রশাসনিক ফি হিসেবে দিতে হবে—এটি ‘ক্রেতার প্রিমিয়াম’।

লিওনেল মেসি। ছবি: সংগৃহীত

ঐতিহাসিক সেই ন্যাপকিন পেপার। বার্সার সঙ্গে মেসির প্রথম চুক্তিপত্র হিসেবে এই ন্যাপকিন পেপারকে বিবেচনা করা হয়।

১৩ বছর বয়সী মেসি এই ন্যাপকিন পেপারে বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন। ২০০০ সালের সেপ্টেম্বরে ট্রায়ালের জন্য পরিবারের সঙ্গে বার্সেলোনায় যান মেসি। সঙ্গে ছিলেন দুই আর্জেন্টাইন প্রতিনিধি ফাবিয়ান সোলদিনি ও মার্তিন মনতেরো এবং গাজ্জোলি। ট্রায়ালে সবাইকে চমকে দেন মেসি। তাই চুক্তির আশা নিয়ে রোসারিওতে ফেরে তার পরিবার।

সেই সময়ের বার্সেলোনা সভাপতি হুয়ান গাসপার্ত অবশ্য হরমোনজনিত সমস্যায় ভোগা ১৩ বছর বয়সী একটি ছেলের সঙ্গে চুক্তিতে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ মনে করেছিলেন। তাকে রাজি করানোর জন্য বার্সেলোনার তখনকার টেকনিক্যাল সেক্রেটারি কার্লো রেক্সাসকে চাপ দেন গাজ্জোলি ও মিনগেলা। শেষ পর্যন্ত চুক্তির কথা লেখা হয়েছিল ওই ন্যাপকিন পেপারে।

সর্বশেষ সংবাদ

ধোলাইখালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের আগুন নিয়ন্ত্রণে
টাঙ্গাইলে ধান কাটতে এসে বজ্রপাতে প্রাণ হারালেন দুই ভাই
মেসি-বার্সা চুক্তির সেই ন্যাপকিন বিক্রি হলো ১১ কোটি টাকায়
এবার রাজধানীর ধোলাইখালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে আগুন
কারওয়ান বাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে
গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি-বাতাসে রাজধানীতে স্বস্তি
সাতক্ষীরায় ট্রাক উল্টে প্রাণ গেল দুই শ্রমিকের, আহত ১১
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট
ভাঙা হাত নিয়েই ‘কান চলচ্চিত্র উৎসব’ মাতালেন ঐশ্বরিয়া
ঢাকাসহ ৬ বিভাগে ঝড়-শিলাবৃষ্টির আভাস, কমবে তাপপ্রবাহ
আচরণবিধি লঙ্ঘন: আ.লীগ নেতাকে জরিমানা, ৭ ডেগ খিচুড়ি জব্দ
সৌদিতে চলতি বছরে প্রথম বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু
যমজ ২ বোনকে হাতুড়ি দিয়ে পেটালেন ছাত্রলীগ নেতা
যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
গাজায় দীর্ঘমেয়াদে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হামাস
কেএনএফের নারী শাখার সমন্বয়ক আকিম বম গ্রেপ্তার
সবচেয়ে দক্ষ প্রশাসকের নাম শেখ হাসিনা : ওবায়দুল কাদের
দুধ দিয়ে গোসল করানো হলো মুক্ত নাবিক সাব্বিরকে, পরিবারে বইছে খুশির জোয়ার
ট্যুরিস্ট ভিসায় ৩ দিন ভারত ভ্রমণ করতে পারবেন না বাংলাদেশীরা
গোবিন্দগঞ্জে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের ঘটনায় যুবক গ্রেফতার