শনিবার, ১০ মে ২০২৫ | ২৭ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে

মানুষের বেঁচে থাকা, তার সমাজচেতনা, বিশ্বাস, ভাবনা, মূল্যবোধ ইত্যাদিসহ তার সামগ্রিক জীবনচেতনা প্রতিফলিত হয় সংস্কৃতির মধ্যে। সংস্কৃতির মধ্য দিয়েই ব্যক্তি মানুষ অন্যদের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করে। এভাবে ব্যক্তির ভাবনা সমগ্রের ভাবনা হয়ে ওঠে। একটি জাতি গঠনে যা নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। সংস্কৃতি শুধু বেঁচে থাকা নয়, বরং সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে শেখায়।

প্রগতি শব্দের অর্থ জ্ঞানে বা কর্মে এগিয়ে চলা বা বর্তমানকে ধারণ করা। যারা এই কাজটা যথাযথভাবে করতে সক্ষম হন, তাদেরই ‘প্রগতিশীল' বলা হয়। আর প্রগতিশীলতা হলো মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়। প্রগতিশীল মানুষ সমাজের ঘুণে ধরা জরা দূর করতে জীবন উৎসর্গ করেন। প্রগতিশীল মানুষ নিজে সৃষ্টিশীল কাজ করে, অন্যদের উৎসাহিত করে। নিজের চেতনায় বিপ্লব ঘটিয়ে হচ্ছে প্রগতিশীল হওয়া। সমাজ বিপ্লবের সঙ্গে সম্পর্কহীন করে প্রগতিশীলতাকে বুঝলে আমরা বারবার ভুল জায়গায় প্রগতিশীলতাকে খুঁজব। সমাজবিপ্লবকে ঠিকভাবে জানতে পারলে আমরা প্রগতিশীল ও প্রতিক্রিয়াশীলের পার্থক্য বুঝতে সক্ষম হব। পুরোনো সমাজব্যবস্থা থেকে প্রগতিশীল শক্তিগুলোর মাধ্যমে সাধিত বিকাশের একটি গুণগত, নতুন ও উচ্চতর পর্যায়ের দিকে সমাজের অগ্রগতি, একটি নতুন ও প্রগতিশীল সমাজব্যবস্থায় উত্তরণ।

আমরা স্বাধীন বাংলাদেশে ৫২ বছর অতিক্রম করার পথ পরিক্রমার পর্যালোচনা থেকে নিজেদের সাংস্কৃতিক অবস্থান বুঝে নিতে চাই আমরা কোথায় আছি। বাংলাদেশের সংস্কৃতি তার নিজস্ব রূপ-রস-রং-গন্ধ নিয়ে বিকশিত হয়ে চলছে, সংস্কৃতির বিবর্তনে আস্থাশীল সংস্কৃতি সমগ্র বাঙালি সংস্কৃতিকেই জোগাচ্ছে পরিপুষ্টি ও প্রণোদনা।

বাঙালি জাতিসত্তার জাগরণ ও সংগ্রামের মূল লক্ষ্য ছিল বাঙালির আপন ভুবন অনুসন্ধান এবং জাতিসত্তা ও ধর্ম পরিচয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য রচনা করে সম্প্রীতির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। স্বাধীন রাষ্ট্রে আমরা বিকাশের পথ তৈরির অবকাশ বিশেষ পাইনি। সাড়ে তিন বছরের মধ্যে রাষ্ট্রের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ড এবং সংবিধান ও রাষ্ট্রাচার থেকে চার জাতীয় মূলনীতির পরিবর্তন করে দেশকে পরিচালিত করা হয়েছে ভিন্ন পথে। ধর্মের মোড়কে আবারও সামাজিক স্থিতির বিনাশ এবং দ্বিজাতিতত্ত্বের সাম্প্রদায়িক চিন্তার আধিপত্য বিস্তারে চলে রাষ্ট্রীয় প্রয়াস।

বিশ্বায়নের অর্থনৈতিক ধারা সংস্কৃতির উপর নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করছে। প্রযুক্তি সেখানে যোগ করেছে আরও ব্যাপকতা। ডিজিটালের যুগে আধুনিক সংযোগ প্রযুক্তি সংস্কৃতির উৎপাদন, পুনরুৎপাদন এবং মানুষের সঙ্গে মানুষের সংযোগে অভাবিত সব পরিবর্তন বয়ে এনেছে। আমরা এই পরিবর্তনে ভাসছি, অনেকটাই সুখস্রোতে গা এলিয়ে দেওয়ার মতো। প্রযুক্তির উপর মানুষের ও সংস্কৃতির আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারছি না। বিপুল শঙ্কা ও বিশাল সম্ভাবনার দোলাচলে আমরা রয়েছি। সেখানে অর্থময় পরিবর্তন ঘটাতে হলে চাই মানবসম্পদের বিকাশ ও অভ্যুদয়। শিক্ষায়, জ্ঞানচর্চায় চাই সংস্কৃতির ছোঁয়া। সংস্কৃতির বাহন হবে প্রযুক্তি। এর উপাদান হতে হবে জাতীয়তা ও স্বকীয়তা, যা একই সঙ্গে মেলাবে স্থানীয়, আঞ্চলিক, স্বদেশিকতার সঙ্গে বিশ্বময়তার ভবিষ্যৎমুখী জাতীয়তাবোধ ও আন্তর্জাতিকতা আলিঙ্গন করে বাংলাদেশ বিকশিত হবে, সৃজনমুখর হবে এমন প্রত্যাশার সঙ্গে অনাগত এই বিকাশের দিকে তাকিয়ে আছি, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক বিকাশকে একীভূত করবে।

বিরূপ সময়েও মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী বাঙালি সমাজ ও সংস্কৃতিতে এই লড়াই নানাভাবে পরিচালনা করেছে, বাঙালি সংস্কৃতির সৃজনধারায় যার নানা প্রকাশ আমরা দেখি। বাংলাদেশের সংস্কৃতির পরিবর্তনশীলতা বিচার করতে এখনো পুরোনো ধ্যানধারণা, সাম্প্রদায়িক বিভেদ, ঘৃণা ও বিদ্বেষ সঞ্চার নানাভাবে জাতিকে পথভ্রষ্ট করতে চায় মাঝে মাঝেই। ৫২ বছরে তার প্রকাশ এবং সংঘাত ও হিংসাত্মক আক্রমণের উদাহরণ রয়েছে অনেক।

সংস্কৃতির বিস্তার ও বৈচিত্র্য, যা বহন করে জাগরণ ও সৃষ্টিশীলতার বীজ। সংস্কৃতির শাখা-প্রশাখা ডালপালা নতুন প্রসার পাচ্ছে, যেখানে বাঙালির সংগ্রাম ও মুক্তির চেতনা অর্জন করছে নতুন মাত্রা। বাংলাদেশের সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের রচনাভাণ্ডার হিসেবে পৃথক এক ঘরানা গড়ে উঠেছে, যেটা স্বাধীনতা সংগ্রামকারী খুব কম দেশেই মিলবে। এই ধারা যে নতুন প্রজন্মের মধ্যেও বহমান, তা আমাদের আশা জাগায় তবে এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও সরকারের দিক থেকে আরও অনেক কিছু করার রয়েছে। সংস্কৃতি সমাজে যে সম্প্রীতি ও সদ্ভাবের বাতাবরণ তৈরি করে দেশের বিকাশ ও প্রবৃদ্ধির জন্য, তা অত্যাবশ্যক শর্ত। সম্প্রীতির বিরুদ্ধে সংঘাত, ভালোবাসার বিপরীতে ঘৃণা, বৈচিত্র্যের বিপরীতে আরোপিত একরঙা সমাজ, এমন দ্বন্দ্বে বাংলাদেশ টালমাটাল। সব বাধা পেরিয়ে অব্যাহত থাকবে সংস্কৃতির অভিযাত্রা।

সুন্দরভাবে বাঁচতে হলে শুধু নিজের জন্য নয়, গোটা সমাজের জন্য যা কিছু প্রতিবন্ধক সেগুলোকে যথাযথ উপলব্ধি করতে হয়। আর তা করতে প্রয়োজন হয় নিজের মধ্যে এক ধরনের সূক্ষ্ম অনুভূতি জাগিয়ে তোলা। সংস্কৃতির পরিমণ্ডল ছাড়া এই সূক্ষ্ম অনুভূতি জন্ম নেয় না। সংস্কৃতি সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের জীবনকে আরও সুন্দর, নির্বিঘ্ন, পরিশীলিত ও সমাজসচেতন করে তোলে। এ কারণে মানুষের সংস্কৃতি সবসময় বিকাশমান, সৃজনশীল ও কল্যাণময়। মানবসমাজে সংস্কৃতির আবির্ভাব হয়েছিল বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রামের প্রাণশক্তি হিসেবে। এ কারণে সংস্কৃতি শুধুমাত্র বিনোদন বা মনোরঞ্জনের বিষয় নয়, বরং তার প্রধান ভূমিকাই হলো মানুষের জীবন সংগ্রামের সহায়ক হওয়া।

মানুষের সামাজিক সংকট ও এগিয়ে চলার পথে যাবতীয় বাধা-বিঘ্ন থেকে উত্তরণে সুস্থ সংস্কৃতি মানুষকে নতুন দিশা দিতে পারে। মানুষের আবেগকে ধারণ করে বলেই তা নানা মাধ্যমের মধ্য দিয়ে সংকটে-সমস্যায় মানুষের প্রতিবাদ, বিদ্রোহ ও সংগ্রামের অনুপ্রেরণা হয় এবং সমাজকে বদলে দিতে মানুষের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে ওঠে। সুস্থ সংস্কৃতি হলো সেই সংস্কৃতি যা যাবতীয় অসঙ্গতির বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। সংস্কৃতির ঐতিহাসিক দায়িত্ব হলো সুস্থ, সংগতিপূর্ণ ও প্রগতিশীল এক সমাজ গড়ে তোলার সংগ্রামের সঙ্গে একাত্ম হওয়া। যারা সংস্কৃতির নানা মাধ্যমে কাজ করেন, তাদের এই বাস্তবতার বাইরে থাকার কোনো উপায় নেই। লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিক তথা সাংস্কৃতিক জগতের মানুষদের জন্য যাবতীয় সামাজিক অসঙ্গতির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এবং সামগ্রিক প্রগতির পক্ষে থাকা একটা নৈতিক দায়। প্রতিটি সমাজেই সুস্থ অগ্রগতির ধারা বজায় রাখতে এক চলমান সাংস্কৃতিক আন্দোলন প্রয়োজন হয়।

বাঙালির জীবনে যখনই ক্রান্তিকাল দেখা দিয়েছে তখনই সে তার প্রতিবাদ, সংগ্রাম ও আন্দোলনের মাধ্যম হিসেবে সংস্কৃতির নানা ক্ষেত্রগুলোকে বেছে নিয়েছে। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লবের পর থেকে বাংলায় যে স্বদেশচেতনা জাগ্রত হতে থাকে নানা দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে দিয়ে তার প্রকাশ ঘটে। বাঙালির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে শক্তি জুগিয়েছে প্রতিবাদী গণ-সংস্কৃতি। ভাষা আন্দোলন, গণআন্দোলন বা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে এদেশের মানুষ যখন সক্রিয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে তখনো আমরা গান, কবিতা, নাটক, কার্টুন বা ব্যঙ্গচিত্র ইত্যাদির সৃজনশীল ব্যবহার দেখেছি। স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পরেও বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে সংস্কৃতির নানা ক্ষেত্র জনগণের প্রতিবাদ-দ্রোহ ও আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে স্ব-স্ব ভূমিকা রেখেছে।

সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলন-সংগ্রামে মূল ভূমিকা পালন করে সংগঠিত রাজনৈতিক শক্তি বা সংগঠন। সাংস্কৃতিক সংগঠন তার কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে স্বতন্ত্র শক্তি হিসেবে সমাজ পরিবর্তনের লড়াইয়ে সহযোগীর ভূমিকা পালন করতে পারে। সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক শক্তির অনৈক্য ও দুর্বলতার প্রভাব স্বাভাবিকভাবে সাংস্কৃতিক আন্দোলনকেও প্রভাবিত করে। আমরা দেখেছি বিভাগপূর্ব ভারতে যে সচেতন সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল তার নেপথ্যে প্রধান ভূমিকা পালন করেন সাংস্কৃতিক কর্মীরা।

দেশের জন্মলগ্নে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম বিপুল কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। যেমন মুক্তিকামী মানুষকে প্রেরণা দিতে, তাদের মনোবল চাঙ্গা করতে এবং শত্রুর বিরুদ্ধে প্রাণপণে লড়াই করে যাওয়ার ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক ধারার গুরুত্বপূর্ণ অবদান অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে আমরা কম-বেশি সবাই জানি। অনেকেই একতারা-দোতারা হাতে গান করে মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অনুপ্রাণিত করেছেন। যেকোনো দলের রাজনৈতিক অনুষ্ঠানগুলোর উদ্বোধনী কিংবা সমাপনীতে গান-বাজনার আয়োজন করা হতো।

স্কুল-কলেজগুলোতে ছাত্র-শিক্ষক সমবেত হয়ে গল্প বলা, নাটক মঞ্চস্থ করা, গানের অনুষ্ঠান করা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা করা ইত্যাদি সহশিক্ষা হিসেবে খুবই কার্যকর। মনে হয় সমাজও ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ছে নানা ভয়-ভীতির খপ্পরে পড়ে। ফলে এক ধরনের ভয় কিংবা আশঙ্কার কারণে আগের মতো অহরহ যেখানে-সেখানে, যেমন-তেমন করে মনের আনন্দে বিনোদন উৎসব করা সম্ভব হয় না। এমনকি জাতীয় পর্যায়ের অনেক উৎসবকে সন্ধ্যার মধ্যে সম্পন্ন করার তাগিদ আমরা দেখতে পাই।

প্রগতিশীল রাজনীতির ধারক, বাহক ও সঞ্চালক হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় সরকার প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। তাই সংস্কৃতির বিকাশ একটা কঠিন বিষয় নয়। তবে শিশু, কিশোরসহ নতুন প্রজন্মকে সংস্কৃতিবান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তোলায় আরও মনোযোগ দিতে হবে। যেকোনো ধরনের সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে এলাকার সাধারণ মানুষের সহযোগিতা পাওয়া যায়।

সুস্থ, স্বাভাবিক, সুন্দর সামাজিক জীবনযাপনের জন্য খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক বিনোদনের কোনো বিকল্প নেই। সমাজে সুস্থধারার সংস্কৃতিচর্চার মধ্য দিয়ে সুনাগরিক তৈরি করা যেমন সম্ভব, তেমনি কুসংস্কার ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা দূর করা সম্ভব।

সুস্থধারার শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক চর্চা সমাজে যত কমতে থাকে প্রগতিশীল মানুষের জীবনযাত্রা তত বেশি বাধাগ্রস্ত হতে থাকে, বিপদের সম্মুখীন হতে থাকে, সমাজে অস্থিরতা বাড়তে থাকে, যুব সমাজের অবক্ষয় শুরু হতে থাকে, সর্বোপরি সমাজ তার বাসযোগ্যতা হারিয়ে অসারে পরিণত হয়। এই অসারতার অন্ধকার প্রতিক্রিয়াশীল সাম্প্রদায়িক রাজনীতির জন্য অবারিত সম্ভাবনা তৈরি করে।

বর্তমানে আমরা যে সামাজিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমাদের সামনের যাত্রা মসৃণ করতে, দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাকে টেকসই করতে এবং এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের কাতারে মাথা উঁচু করে দাঁড় করাতে সমাজকে এখনই প্রস্তুত করা জরুরি। সরকারের উন্নয়নের লক্ষ্য, মিশন ও ভিশন অর্জনে দেশজুড়ে প্রগতিশীল সমাজ বিনির্মাণের কোনো বিকল্প নেই।

হীরেন পণ্ডিত: প্রাবন্ধিক ও গবেষক

এসএন

 

Header Ad
Header Ad

ভারতে বিরুদ্ধে ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস’ শুরু করল পাকিস্তান

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ সেনা অভিযানের পাল্টা জবাব দিতে ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস’ শুরু করেছে পাকিস্তান। এ অভিযানের আওতায় ইতোমধ্যে গতকাল শুক্রবার রাতে ভারতের ১১টি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাহিনী।

এই স্থাপনাগুলোর মধ্যে পাঠানকোট বিমান ঘাঁটি, উধামপুর বিমান ঘাঁটি, গুজরাট বিমান ঘাঁটি, রাজস্থান বিমান ঘাঁটি এবং ভারতের সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্রাহমোসের একটি মজুতস্থান উল্লেখযোগ্য। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জিও নিউজকে এসব তথ্য নিশ্চত করেছেন।

পাল্টা এ হামলায় ফাতাহ-১ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। দেশটির নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি এই ক্ষেপণাস্ত্রের রেঞ্জ ১২০ কিলোমিটার।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর ওই কমর্কর্তা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতের হামলায় ভারতের জম্মু-কাশ্মিরের বারামুলা জেলার উরি শহরে ভারতীয় সেনবাহিনীর একটি ব্রিগেডের হেডকোয়ার্টার এবং সরবরাহ বা রসদ ডিপো, নাগরোটা শহরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি আর্টিলারি ব্যাটারি ধ্বংস হয়েছে।

এছাড়া ভারতের পাঞ্জাবের আদমপুর বিমান ঘাঁটিতে মোতায়েন করা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ সিস্টেমও ক্ষেপণাস্ত্র চালিয়ে ধ্বংস করেছে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। এই হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান জেএফ-১৭। শুক্রবারের হামলায় এটিকে সবচেয়ে বড় সাফল্য বলে উল্লেখ করেছেন পকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাহিনীর ওই কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় হামলা চালিয়ে ২৬ জন পর্যটককে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে হত্যা করে একদল সন্ত্রাসী। নিহত এই পর্যটকদের সবাই পুরুষ এবং অধিকাংশই হিন্দু ধর্মাবলম্বী।

এ ঘটনায় সিন্ধু নদের পানি বণ্টনচুক্তি ও পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিলসহ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কয়েকটি কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয় ভারত। জবাবে ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ, ভিসা বাতিলসহ কয়েকটি পাল্টা পদক্ষেপ নেয় পাকিস্তানও।

দুই দেশের মধ্যে চলমান এই উত্তেজনার মধ্যেই গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের অধিকৃত কাশ্মিরসহ বিভিন্ন এলাকায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে এক সংক্ষিপ্ত সেনা অভিযান পরিচালনা করে ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী। নয়াদিল্লির তথ্য অনুযায়ী, এ অভিযানে ৭০ জন পাকিস্তানি সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। তবে পাকিস্তানের দাবি, নিহত হয়েছে ৩১ জন এবং আহত হয়েছে ৫৭ জন।

ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর তিন দিনের মধ্যে ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস’ শুরু করল পাকিস্তান।

Header Ad
Header Ad

শাহবাগ ছাড়া অন্য কোথাও ‘ব্লকেড’ দিবেন না: হাসনাত আবদুল্লাহ

ছবি: সংগৃহীত

গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধসহ তিন দফা দাবিতে আজ গণজমায়েতের ডাক দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। শনিবার বিকেল ৩টায় রাজধানীর শাহবাগে এই গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হবে।

একইসঙ্গে দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলাতেও এ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে রাজধানীর অন্যান্য পয়েন্ট যেমন মিরপুর, বাড্ডা, রামপুরা, সায়েন্সল্যাবসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মহাসড়কে ব্লকেড না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।

গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ আহ্বান জানান।

হাসনাত আবদুল্লাহ লিখেছেন ‘শাহবাগ ছাড়া ঢাকা বা সারাদেশের হাইওয়েগুলোতে ব্লকেড দেবেন না। জেলাগুলোতে স্বতঃস্ফূর্ত জমায়েত করুন, সমাবেশ করুন। কিন্তু ব্লকেড না, ব্লকেড খুলে দিন।’

এর আগে, গতকাল শুক্রবার রাতে শাহবাগ থেকে গণজমায়েতের ঘোষণা দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের এই মুখ্য সংগঠক।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও সহযোগী নেতাদের আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে বিচার নিশ্চিত ও জুলাই ঘোষণাপত্রের তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’

তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছি, ২৫ ঘণ্টা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে আমাদের অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছি। আমরা জানি না এ কর্মসূচির শেষ কোথায়। যতক্ষণ না পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ করা হয়, কতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

Header Ad
Header Ad

চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি নির্বাচনে জয়ী হলেন যারা

সভাপতি শাহীন সুমন ও মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন শাহীন কবির টুটুল। ছবি: সংগৃহীত

দফায় দফায় পেছানোর পর অবশেষে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির নির্বাচন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে আগামী দুই বছরের জন্য পরিচালক সমিতির নতুন নেতৃত্ব পেয়েছেন দুই শাহীন!

শুক্রবার (৯ মে) নির্বাচন শেষে ফলাফল ঘোষণার মাধ্যমে জানানো হয়, এতে সভাপতি পদে শাহীন সুমন ১৬৬ ভোট পেয়ে হারিয়েছেন মুশফিকুর রহমান গুলজারকে। অন্যদিকে মহাসচিব পদে ১৮০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন শাহীন কবির টুটুল, তিনি হারিয়েছেন সাফিউদ্দিন সাফিকে।

এদিন সন্ধ্যায় ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবদুল লতিফ।

নির্বাচিত অন্যরা হলেন সহসভাপতি আবুল খায়ের; উপমহাসচিব কবিরুল ইসলাম; কোষাধ্যক্ষ সায়মন তারিক; প্রচার, প্রকাশনা ও দফতর সচিব ওয়াজেদ আলী; আন্তর্জাতিক ও তথ্যপ্রযুক্তি সচিব বন্ধন বিশ্বাস; সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সচিব মোস্তাফিজুর রহমান।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর মেয়াদি পরিচালক সমিতির নেতৃত্বে নির্বাচিত কার্যনির্বাহী সদস্যরা হলেন—ছটকু আহমেদ, শাহাদাৎ হোসেন, পল্লী মালেক, জাকির হোসেন, বজলুর রাশেদ চৌধুরী, সাইদুর রহমান, হাবিবুল ইসলাম, জয় সরকার, গাজী মাহবুব ও বুলবুল বিশ্বাস।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির নির্বাচনের ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচিত উপমহাসচিব কবিরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার সকাল ১০টায় শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৫৯ জন ভোটারের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ৩৯১।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে দুটি প্যানেল। এর মধ্যে মুশফিকুর রহমান গুলজার–সাফিউদ্দিন সাফি প্যানেলে সভাপতি ও মহাসচিব পদপ্রার্থী ছাড়া সম্পাদকীয় পদে প্রার্থী ছিলেন—আবুল খায়ের বুলবুল (সহসভাপতি), সালাউদ্দিন (উপমহাসচিব), সায়মন তারিক (কোষাধ্যক্ষ), আবদুর রহিম বাবু (সাংগঠনিক সম্পাদক), রফিক শিকদার (প্রচার, প্রকাশনা ও দপ্তর সচিব), এস ডি রুবেল (আন্তর্জাতিক ও তথ্যপ্রযুক্তি সচিব) ও মুস্তাফিজুর রহমান মানিক (সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সচিব)।

অন্য প্যানেলে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন টানা দুইবারের মহাসচিব শাহীন সুমন। তিনি প্যানেল গড়েছেন শাহীন কবির টুটুলকে নিয়ে। এই প্যানেল থেকে সম্পাদকীয় পদে প্রার্থী ছিলেন—মন্তাজুর রহমান আকবর (সহসভাপতি), কবিরুল ইসলাম রানা (উপমহাসচিব), সেলিম আজম (কোষাধ্যক্ষ), ওয়াজেদ আলী বাবুল (প্রচার, প্রকাশনা ও দপ্তর সচিব), বন্ধন বিশ্বাস (আন্তর্জাতিক ও তথ্যপ্রযুক্তি সচিব) ও সাইফ চন্দন (সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সচিব)।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ভারতে বিরুদ্ধে ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস’ শুরু করল পাকিস্তান
শাহবাগ ছাড়া অন্য কোথাও ‘ব্লকেড’ দিবেন না: হাসনাত আবদুল্লাহ
চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি নির্বাচনে জয়ী হলেন যারা
ছয়টি ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুড়েছে ভারত, পড়েছে নিজেদের রাজ্যেই
শাহবাগে বিক্ষোভে উত্তাল জনতা, খালেদা জিয়ার উপস্থিতি চায় ইনকিলাব মঞ্চ
১৭ বছর পর দেশে ফিরে মসজিদে জুমার নামাজ পড়লেন জোবাইদা রহমান
ভারতে ইউটিউবে বন্ধ যমুনা-বাংলাভিশনসহ ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল
আটকের পরও যে ফোনে ছেড়ে দেওয়া হয় আবদুল হামিদকে
নওগাঁয় দুলাভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে গ্রেপ্তার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা
বাংলাদেশ সফরে আসছে না ভারত, অনিশ্চিত এশিয়া কাপ
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল শাহবাগ, জনস্রোতে ভরপুর রাজপথ
বিএনপি ছাড়া সব রাজনৈতিক দল এখন শাহবাগে: সারজিস আলম
শিক্ষার্থী পারভেজ হত্যায় গ্রেপ্তার টিনা ৩ দিনের রিমান্ডে
চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড ৪১.০২ ডিগ্রি সেলসিয়াস; বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ
কাশ্মীরে ফের বিএসএফের গুলি, ৭ পাকিস্তানি নিহত: দিল্লির দাবি বিচ্ছিন্নতাবাদী
নওগাঁয় ককটেল বিস্ফোরণে উড়ে গেল বাড়ির টিন
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত ‘আমাদের বিষয় নয়’: যুক্তরাষ্ট্র
দেশের তীব্র তাপপ্রবাহ নিয়ে যা বলল আবহাওয়া অফিস
আ.লীগ নিষিদ্ধে গুরুত্বের সাথে সরকার বিবেচনা করছে: সরকারের বিবৃতি
টাঙ্গাইলে নাশকতা মামলায় আ.লীগ নেতা রাজ্জাকসহ ২ জন গ্রেফতার