শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫ | ১৩ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

আন্দোলনের ভাষা ও ভাষা আন্দোলন

মুখের ভাষা কেড়ে নেওয়া এবং হাতে পায়ে শিকল পড়ানোর চক্রান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন কীভাবে স্বাধীনতার আন্দোলনে পরিণত হলো তা বুঝতে হলে একুশের কথা সামনে চলে আসে। শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই আমাদের ভূখণ্ডের মানুষের দীর্ঘদিনের। যে কোনো সংগ্রামের একটা সূচনা বিন্দু থাকে, স্বাধীনতার জন্য মরণপণ লড়াইয়েরও তেমনি শুরু খুঁজতে হলে প্রথমেই আসে ৫২ সালের কথা।

৭১ এ অর্জিত এই স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরুটা হয়েছিল ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। ৮ ফাল্গুন বা ২১ ফেব্রুয়ারি যে বেদনা এবং যে চেতনা জাগিয়ে দিয়েছিল তা আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করেছিল। বৈষম্য বেদনা জাগিয়েছিল বলেই মুক্তির চেতনার জন্ম হয়েছিল।

ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের পর আলোচনার টেবিলে ভারত ভাগ হয়। পাকিস্তান সৃষ্টির পর প্রথম যে প্রশ্ন এল এই রাষ্ট্রের সংবিধান কেমন হবে। শুধু মুসলমানদের জন্য কেন, কোনো ধর্মের ভিত্তিতেই কি কোনো দেশ হতে পারে? যদি তাই হত তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশের অধিবাসিই তো মুসলমান, তাহলে তারা সবাই মিলে একটা দেশ হতে পারে না কেন? আবার এক দেশে বহু ধর্মের মানুষ থাকলে তাদের পরিচয় কী হবে? আবার ভারতে যে মুসলমানরা থেকে গেলেন তাদের পরিচয় কী হবে? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারা গেলেও আশ্বস্ত করা হয়েছিল এই বলে যে, একদিন হিন্দু আর হিন্দু হিসেবে নয়, মুসলমান আর মুসলমান হিসেবে নয় তারা সবাই বিবেচিত হবেন পাকিস্তানের নাগরিক হিসেবে। অর্থাৎ ধর্মীয় পরিচয় আর নাগরিক পরিচয় এক হবে না। একেবারে দ্বিজাতি তত্ত্বের বিপরীতমুখী যাত্রা! তাহলে এত সাম্প্রদায়িক লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু কীসের জন্য? এই টানা পোড়নে পাকিস্তানের সংবিধান প্রণয়নে তাই দীর্ঘ সময় লেগে গেল। ১৯৪৭ সালে জন্ম নিল পাকিস্তান আর তার ৯ বছর পর ১৯৫৬ সালে প্রণীত হল সংবিধান। এই সময়টাতে সংবিধান না থাকলেও রাষ্ট্র পরিচালনার ব্রিটিশ প্রবর্তিত বিধান তো ছিল, তা দিয়েই চলছিল সব।

রাষ্ট্রের ধর্ম নিয়ে সমাধানে আসতে না আসতেই প্রশ্ন এল রাষ্ট্রের ভাষা কি হবে? এক ধর্ম, এক দেশ, এক ভাষা এই ধরনের চিন্তা থেকেই মুসলমান, পাকিস্তান এবং উর্দু ভাষাকে সমার্থক করার আয়োজন চলছিল সর্বত্র। এই সময় ১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ ঢাকায় এলেন মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ। ২১ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ( বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) অনুষ্ঠিত গণসম্বর্ধনায় তিনি বললেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা, অন্য কোনো ভাষা নয়। ভাষা আন্দোলনকে তিনি মুসলমানের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেন। তার বক্তব্যের প্রতিবাদ হয় সমাবেশের মধ্যেই।

এর পর ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে অনুষ্ঠিত সমাবর্তনে স্টুডেন্টস রোল ইন নেশন বিল্ডিং শীর্ষক বক্তৃতায় তিনি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে প্রতিষ্ঠার দাবিকে বাতিল করে দিয়ে বলেন, পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে একটি এবং সেটি অবশ্যই উর্দু। কারণ উর্দুই পাকিস্তানের মুসলিম পরিচয় তুলে ধরে। ছাত্ররা সমস্বরে না, না বলে জিন্নাহর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানায়। ক্ষুব্ধ ছাত্র জনতার ভাষার দাবিকে তাচ্ছিল্য করে ২৮ মার্চ ঢাকা ত্যাগ করেন জিন্নাহ।

জিন্নাহ চলে গেছেন কিন্তু উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যেতে পারেননি। প্রশ্ন ছিল, উর্দু কি পাকিস্তানের কোনো প্রদেশের ভাষা? সিন্ধু, বেলুচিস্তান, পাঞ্জাব, উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ প্রত্যেকেরই তো আলাদা ভাষা। ভাষা দিয়ে কি ধর্মের পরিচয় তুলে ধরা যায়? আরবি ভাষায় কি মুসলমান ছাড়া কেউ কথা বলে না? আরবের খ্রিস্টান, ইহুদি ধর্মাবলম্বী মানুষরাও তো আরবি ভাষায় কথা বলে। এ কথা তো সত্য যে মানুষ যত দ্রুত ধর্মান্তরিত হতে পারে তত সহজে ভাষান্তরিত হতে পারে না। আরবের মুসলমান আর ইন্দোনেশিয়ার মুসলমান ধর্মে এক হলেও ভাষা এবং সংস্কৃতিতে তারা এক নয়। আর পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের কথাও যদি বিবেচনা করা হয় তাহলে যে ভাষায় ৫৪ শতাংশ মানুষ কথা বলে তাদের দাবি কি অগ্রগণ্য বলে বিবেচিত হবে না?

ভাষা আন্দোলনের মূল সুর ছিল গণতান্ত্রিক এবং অসাম্প্রদায়িক। রাষ্ট্র তার নাগরিককে ধর্মের ভিত্তিতে বিবেচনা করবে না। এই ভূখণ্ডে জন্ম নেওয়া ও বসবাস করা মানুষরা প্রত্যেকেই রাষ্ট্রের নাগরিক। যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে যুক্তি হবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভিত্তি, যুক্তি যদি সঠিক হয় তাহলে তা গ্রহণ করতে হবে। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদদের স্মরণে নির্মিত হয়েছিল শহীদ মিনার। এখানে ছিল না কোনো ধর্মের বিভাজন। তারা জীবন দিয়েছিলেন এই ভূখণ্ডের সব মানুষের মুখের ভাষার জন্য। তাই সব ধর্মের মানুষ যেন শ্রদ্ধা জানাতে পারে সে উদ্দেশ্যেই নির্মিত হয়েছিল শহীদ মিনার। সংগ্রামের প্রতিজ্ঞা বা সংগ্রামীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনার এখনো মানুষের মিলনক্ষেত্র।

একুশ শিখিয়েছিল আত্মসমর্পণ নয় আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াই করতে। একুশ মানে মাথা নত না করা। এটা আমাদের কাছে এখনো একটি প্রেরণাদায়ক কথা। প্রবল শক্তির কাছে বা যুক্তিহীনতার কাছে আত্মসমর্পণ করে প্রাণে বেঁচে থাকা যায় কিন্তু সম্মানের সঙ্গে বাঁচা যায় না। স্বাধীনতার সঙ্গে মুক্তির যে স্বপ্ন দেখেছিল মানুষ তা অর্জন করতে হলেও যুক্তিই হবে অন্যতম হাতিয়ার। ভাষার দাবিতে লড়াই পথ দেখিয়েছে নাগরিক অধিকার অর্জন করতে হলে ভোটের অধিকার দরকার। বৈষম্য দূর করার প্রথম পদক্ষেপ হল সকলের ভাতের অধিকার। সে কারনেই স্লোগান উঠেছিল কেউ খাবে আর কেউ খাবে না, তা হবে না, তা হবে না। আর এ সব দাবিকে একসাথে যুক্ত করেছিল একটি দাবি, যা হলো— এই ভূখণ্ডকে স্বাধীন করতে হবে।

আন্দোলন থামে না তার পরিণতিতে না যাওয়া পর্যন্ত। তাই ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়ে আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করে স্বাধীন হলাম কিন্তু বন্দি হয়ে গেলাম পুঁজির কাছে। মুখের ভাষায় পড়তে হলে যে শিক্ষা লাগে তাতো আমরা জানি। সেই শিক্ষা ক্রমাগত ব্যয়বহুল পণ্যে পরিণত হচ্ছে ফলে তা চলে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। শিক্ষার উপর আক্রমণের পাশাপাশি আক্রমণ আসছে সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের উপর। ছাত্রদের ভুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে অতীতের সংগ্রামের ইতিহাসকে।

ভাষা চিন্তার বাহন। মায়ের ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে জীবন দিলেও সে ভাষায় কথা বলতে গেলে যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ লাগে, দেশে কি এখন সে অবস্থা আছে? এই প্রশ্নে দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া আর কোনো উত্তর নেই। মত প্রকাশের স্বাধীনতা আর ভোটের অধিকারের জন্য লড়তে হচ্ছে এখনো। নানা ধরনের কালাকানুন আর সাম্প্রদায়িক বাতাবরণে সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে গণতান্ত্রিক পরিবেশ। মাথা নত না করার সাহস দিয়েছে একুশ, আর মাথা নত করে রাখার পরিবেশ তৈরি করেছে রাষ্ট্র। যে রাষ্ট্র জনগনের ট্যাক্সে চলে সেই রাষ্ট্র জনগণকে দেখায় ভয়। ফলে দেশ, অর্থনীতি নিয়ে কথা বলতে গেলে বন্ধু স্বজনরাও পরামর্শ দেয় এবং বলে, বাদ দাও তো এ সব, কি দরকার রাজনীতির বিষয়ে মাথা ঘামিয়ে!

এই ভয় আর ভরসাহীনতার রাষ্ট্র তো আমরা চাইনি। আমরা চেয়েছিলাম রাষ্ট্রটা হবে জনগনের এবং জনগণকে ভরসা দেবে।

একুশ যে চেতনা জাগিয়েছিল তার মর্মে ছিল মুক্তির আকুতি। শোষণ থেকে মুক্তি, বৈষম্য থেকে মুক্তি আর মুক্তি অপমান থেকে। এই চেতনা ছড়িয়ে গেছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের চেতনায়। কোনো মানুষ যেন তার মাতৃভাষার অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয় সেই লড়াইকে এগিয়ে নিতে একুশ যেন প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে আরও বহুদিন।

রাজেকুজ্জামান রতন: সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।

আরএ/

Header Ad
Header Ad

খিলক্ষেতে মণ্ডপ সরানোর বিষয়ে ব্যাখ্যা দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় একটি অস্থায়ী পূজা মণ্ডপ অপসারণ নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার প্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (২৭ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।

এতে উল্লেখ করা হয়, ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় একটি দুর্গা মন্দির ধ্বংসের অভিযোগে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।

তবে প্রকৃত ঘটনা হলো- গত বছর দুর্গাপূজার সময় পূর্বানুমতি ছাড়াই স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন একটি জমিতে অস্থায়ী পূজা মণ্ডপ স্থাপন করেছিল। পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এ শর্তে অনুমতি দেয় যে পূজা উদযাপন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আয়োজকরা অস্থায়ী মণ্ডপটি সরিয়ে ফেলবেন। তবে দুঃখের বিষয় হলো, ২০২৪ সালের অক্টোবরে পূজা শেষ হওয়ার পর আয়োজকরা পারস্পরিক শর্ত লঙ্ঘন করে অস্থায়ী মণ্ডপটি সরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে তারা সেখানে একটি ‘মহাকালী’ (কালী মূর্তি) স্থাপন করে।

বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পরেও দুর্ভাগ্যবশত তারা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে উপেক্ষা করে মণ্ডপটিকে স্থায়ী করার উদ্যোগ নেয়। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, মণ্ডপের আয়োজকদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ এলাকায় বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন রেললাইনের উভয় পাশে অবৈধভাবে নির্মিত শত শত দোকান এবং রাজনৈতিক দলের অফিসসহ সমস্ত অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণের জন্য একটি পাবলিক বিজ্ঞপ্তি জারি করে। মূলত বিদ্যমান রেললাইনের পূর্ব দিক থেকে ২০০ ফুট দূরে কেবল বাংলাদেশ রেলওয়ের জমি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয় ও চতুর্থ সেকশন ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণ এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের আওতায় আরও দুইটি রেল ট্র্যাক নির্মাণ করা হচ্ছে এবং এ প্রকল্পের আওতায় নতুন লাইন সম্পন্ন করার জন্য এ জমির খুব প্রয়োজন ছিল।

বিগত মাসগুলোতে অবৈধ ভূমি দখলকারীদের বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হলেও তা উপেক্ষা করা হয়। গত ২৪ ও ২৫ জুন বাংলাদেশ রেলওয়ে অবশেষে সবাইকে সমস্ত অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেয়, যার মধ্যে পূজা আয়োজকদের অস্থায়ীভাবে নির্মিত মণ্ডপটি অপসারণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়। অবশেষে ২৬ জুন যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বাংলাদেশ রেলওয়ে খিলক্ষেত এলাকার রেল ট্র্যাক বরাবর সমস্ত অননুমোদিত স্থাপনা শান্তিপূর্ণভাবে উচ্ছেদ করে। উচ্ছেদ প্রক্রিয়া চলাকালীন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে যথাযথ শ্রদ্ধার সঙ্গে অস্থায়ী মণ্ডপের প্রতিমা নিকটবর্তী বালু নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। সরকারি জমি পুনরুদ্ধারের জন্য অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণ একটি নিয়মিত এবং আইনসম্মত প্রশাসনিক কার্যক্রম।

যদিও দেশের আইন অনুসারে নির্মিত কোনো ধর্মীয় স্থাপনার সঙ্গে বৈষম্য না করে সমস্ত উপাসনালয়ের পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করে। তবুও কোনো পরিস্থিতিতেই সরকারি জমি দখল করে কোনো ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণ করা অনুমোদিত নয়। অস্থায়ী মণ্ডপের আয়োজকরা তাদের নিজস্ব অঙ্গীকার লঙ্ঘন করে রেল কর্তৃপক্ষের আস্থা এবং সদিচ্ছাকে স্পষ্টতই কাজে লাগিয়েছেন।

বাংলাদেশ সব সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার মধ্যে রয়েছে উপাসনালয়ের সুরক্ষা। বাংলাদেশকে তার সমন্বিত ঐতিহ্য বজায় রাখতে কখনও বাধা দেয়নি যেখানে প্রতিটি নাগরিক তার বিশ্বাস বা বিশ্বাস নির্বিশেষে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং উন্মুক্ত সমাজে স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারে। বাংলাদেশ সবাইকে তথ্য এবং বাস্তবতা উপেক্ষা করে কোনো বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

Header Ad
Header Ad

কুমারখালীতে এনসিপির পদ পেলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, সমালোচনার ঝড়

আসাদুজ্জামান আলী। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উপজেলা সমন্বয় কমিটিতে যুগ্ম সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আসাদুজ্জামান আলী নামে এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। এনসিপির এ পদে একজন প্রাক্তন ছাত্রলীগ নেতার অন্তর্ভুক্তিকে ঘিরে স্থানীয় পর্যায়ে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক ও সমালোচনা।

গত ২১ জুন এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে কুমারখালী উপজেলা শাখার ১২ সদস্যের সমন্বয় কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটিতে কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ স্বাক্ষর করেন। এই কমিটিতেই আসাদুজ্জামান আলীকে যুগ্ম সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

আসাদুজ্জামান আলী কুমারখালী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং এক সময় কুমারখালী পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমারখালী শাখার সদস্য সচিবের দায়িত্বও পালন করেন। তবে নানা অভিযোগে তাকে সেখান থেকেও বহিষ্কার করা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, আলী ছাত্রলীগে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন সময় প্রভাব খাটিয়ে চাঁদাবাজি, মামলা ও ঘুষ বাণিজ্য, সেল্টার বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ রয়েছে। এমনকি তার বাবা আবদুর সামাদ পাখির বিরুদ্ধেও অনিয়ম ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগ আছে।

২০২৪ সালের মার্চ মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুষ্টিয়া জেলা শাখার পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও নীতি বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে আলীকে পদচ্যুত করা হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে এনসিপির কমিটিতে আলীর অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তাদের বক্তব্য, অতীতের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড জানা সত্ত্বেও কীভাবে একজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এনসিপির মতো একটি দলে নেতৃত্বের জায়গা পেলেন, তা নিয়ে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের জবাবদিহি প্রয়োজন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আসাদুজ্জামান আলী খান। তিনি বলেন, “আমি আন্দোলনে জীবনবাজি রেখে সক্রিয় ছিলাম। সরকার পতনের আন্দোলনে মাঠে ছিলাম। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলক।”

তিনি আরও দাবি করেন, প্রতিপক্ষের লোকজন তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে চাইছে। “আমার বিরুদ্ধে কেউ কোনো অপকর্ম প্রমাণ করতে পারলে আমি কুমারখালী ছেড়ে চলে যাব,” বলেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

দেশে করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ১০ জন

ছবি: সংগৃহীত

দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে ১০ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।

শুক্রবার (২৭ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১৯৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে ১০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫২৮ জনে, মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানায়, করোনা মহামারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেশে মোট ২০ লাখ ৫২ হাজার ৭৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যুবরণ করেছেন ২৯ হাজার ৫১৯ জন।

উল্লেখ্য, দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ওই বছরের ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর ২০২১ সালের ৫ ও ১০ আগস্ট দেশে এক দিনে সর্বোচ্চ ২৬৪ জন করে মারা যান।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খিলক্ষেতে মণ্ডপ সরানোর বিষয়ে ব্যাখ্যা দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
কুমারখালীতে এনসিপির পদ পেলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, সমালোচনার ঝড়
দেশে করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ১০ জন
১১ নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উইন্ডিজ ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে
গাজায় হামাসের হামলায় ৩ দিনে ১৫ ইসরায়েলি সেনা নিহত
বেনাপোল বন্দরে কাগজপত্রবিহীন প্রায় ২ কোটি টাকার নিষিদ্ধ পণ্য জব্দ
ডেঙ্গুতে আরও দুজনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ১৫৯
ব্যবসায়ীকে দাড়ি ধরে টানা হেঁচড়া-মারধরের ঘটনায় আসামি নাসিম গ্রেপ্তার
অভিমান ভুলে বুকে জড়িয়ে নিলেন রিয়া মনি, হিরো আলমকে নিয়ে ছুটলেন ঢাকায়
এক মিনিট আগেও অফিস ছাড়তে পারবেন না সরকারি চাকরিজীবীরা
প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে জীবন দিলেন কলেজছাত্রী
সাবেক সিইসি নূরুল হুদা আরও ৪ দিনের রিমান্ডে
মিরপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকে উঠে গেল বাস, নিহত ১
খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল: স্বীকার করলেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী
জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় ৩৬ বাংলাদেশি আটক
বন্ধুর বাড়িতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে হিরো আলমের আত্মহত্যার চেষ্টা
বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনায় ভারত প্রস্তুত: রণধীর জয়সওয়ালম  
সুন্দর বিশ্ব তৈরি করতে চায় বাংলাদেশ: ড. ইউনূস
উড্ডয়নের পর ইঞ্জিনে ত্রুটি, ঢাকায় ফিরল বিমানের ফ্লাইট
সেই পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন