শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

রোহিঙ্গা সংকট: বাংলাদেশের উদ্যোগ বাস্তবায়নে সমন্বিত সহায়তা প্রয়োজন

বাংলাদেশ মানবিক কারণে নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে প্রায় ছয় বছর ধরে সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। আশ্রয় এবং সার্বিক সহযোগিতা দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য প্রথম থেকেই মিয়ানমার, চীন ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা নিয়ে সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় মিয়ানমার এগিয়ে না আসার কারণে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম এখনও সফলতার মুখ দেখছে না।

২০১৭ সালের নভেম্বরে প্রত্যাবাসন বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ চুক্তি হয়েছিল, সেই চুক্তি মোতাবেক ২০১৮ সালে এক দফা প্রত্যাবাসনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপর চীনের মধ্যস্থতায় ২০১৯ সালে আবার প্রত্যাবাসন শুরুর চেষ্টা হয়েছিল তবে তা সফলতার মুখ দেখেনি। গত প্রায় ছয় বছরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত আলোচনায় চীনের সম্পৃক্ততার পর ২০২০ সাল থেকে ছোট পরিসরে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা চলছিল এবং এ বিষয়ে চীন মিয়ানমারকে চাপ দিয়ে যাচ্ছিল। সম্প্রতি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে উদ্যোগী হয়ে মিয়ানমার সেদেশে নিযুক্ত ৮ দেশের ১১ জন কূটনীতিককে মিয়ানমারের মংডু ও সিটওয়ে শহরে অর্ন্তবর্তীকালীন ক্যাম্পসহ আশপাশের এলাকা সরেজমিনে দেখাতে নিয়ে যায়।

মিয়ানমার হাজার খানেক রোহিঙ্গা নেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে, তবে এই প্রক্রিয়ায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে অনেক সময় লাগবে। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে এই দীর্ঘমেয়াদী অবস্থানের ফলে যেসব সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে তার মোকাবিলায় কক্সবাজার থেকে আরও রোহিঙ্গা স্থানান্তর জরুরি হয়ে পড়েছে।

রোহিঙ্গারা বর্তমানে কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে ঘনবসতিপূর্ণ পরিবেশে ও মানবেতর জীবনযাপন করার কারণে সেখানে সামাজিক ও নিরাপত্তা সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে বিরোধ, মারামারি, অপহরণ, পাচার ও জিম্মি করার ঘটনা ঘটছে। অনেক রোহিঙ্গা বিভিন্ন ধরনের মাদক ও অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে প্রায়ই গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে এবং এসব ঘটনায় একাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। গুলিকরে কিংবা কুপিয়ে হত্যার ঘটনার পাশাপাশি ক্যাম্পে নাশকতামূলক আগুন লাগানোর ঘটনাও ঘটছে।

বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা), দুইটি সন্ত্রাসী গ্রুপ এবং সাতটি ডাকাত দলসহ ১০টি দুর্বৃত্ত দল সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে আরসা বেশিরভাগ ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণ করছে। আরসার উপস্থিতি ও সন্দেহজনক কার্যক্রম ক্যাম্পগুলোতে নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি করেছে। গত ৫ মার্চ বালুখালীর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লেগে প্রায় ২ হাজার ঘর পুড়ে যাওয়ার ফলে ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ঘরগুলো একটার সঙ্গে আরেকটা লাগানো এবং ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় আগুন দ্রুত পার্শ্ববর্তী ক্যাম্পগুলোতে ছড়িয়ে পড়ায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। আরসা সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে এই আগুন দিয়েছে বলে অনেকে মনে করে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানতে গঠিত তদন্ত কমিটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পরিকল্পিত নাশকতা বলে প্রমাণ পেয়েছে। তদন্ত কমিটি কমিটির প্রতিবেদনে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আধিপত্য বিস্তার করতে বা এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোনো ঘটনার কারণে আগুন দেওয়ার ঘটনাটি ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মামলা, নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান ও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানোসহ ১০টি সুপারিশ করেছে। ২০২১ সালের ২২ মার্চেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই সময় ১১ জন প্রাণ হারায়, প্রায় পাঁচ’শ আহত হয় ও ৯ হাজারের বেশি ঘর পুড়ে যায়। প্রাপ্ত তথ্য মতে, ২০২১ সালে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২২২টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ৯৯টি দুর্ঘটনাজনিত, ৬০টি নাশকতামূলক বাকি ৬৩টির কোনো কারণ জানা যায়নি।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রাতের বেলায় সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি-সংঘর্ষের ঘটনায় সাধারণ রোহিঙ্গাদের আতঙ্কে রাত কাটে। ক্যাম্পগুলোতে প্রায় ছয় বছর ধরে স্বাস্থ্য, খাদ্য, শিক্ষা, আবাসনসহ বিভিন্ন ধরনের মানবিক সেবায় দেশ-বিদেশের শতাধিক সংস্থার ২০ হাজারের ও বেশি কর্মী কাজ করছে। পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হওয়ার কারণে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি ক্যাম্পে কাজ করতে যাওয়া এনজিও-আইএনজিওর কর্মীরাও এ সব ঘটনায় উদ্বিগ্ন এবং তাদের অনেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। অপহরণ, খুন ও আরসাসহ অন্যান্য সন্ত্রাসীদের হুমকির কারণে ২০টির বেশি এনজিও ক্যাম্পগুলোতে তাদের সেবা কার্যক্রম সীমিত রেখেছে এবং কয়েকটি এনজিও তাদের কাজ বন্ধ করে দিচ্ছে। ক্যাম্পের বাইরে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা স্থানীয় কৃষকদের অপহরণ করে দুর্গম জায়গায় নিয়ে নির্যাতন করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় জনগণও আতঙ্কে রয়েছে। দ্রুত এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করলে জননিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির কারণে সাধারণ রোহিঙ্গা, স্থানীয় অধিবাসী, ক্যাম্পে কর্মরত দেশি-বিদেশি এনজিও-আইএনজি কর্মী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এতে ক্যাম্পের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে যা বন্ধে অবিলম্বে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে।

বাংলাদেশ বৈশ্বিক ফোরামে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে সবসময় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় ১০ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত বালি প্রসেস ফোরামের মানবপাচার ও চোরাচালান সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক অপরাধবিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যা আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি এবং সমস্যা সমাধানে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে টেকসই প্রত্যাবাসনে সব দেশকে সক্রিয়ভাবে কাজ করার আহ্বান জানায়। প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টিতে অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা কামনা করে বাংলাদেশ। মানবিক সাহায্যের পাশাপাশি শরণার্থী ভিসার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের অস্ট্রেলিয়া নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনার জন্য অনুরোধ করা হয়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আসিয়ানের সদস্য দেশগুলোকে যুক্ত করতে এবং এ বিষয়ে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে ইন্দোনেশিয়ার সহযোগিতা চাওয়া হয়।

চলমান প্রেক্ষাপটে দ্রুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর কোনো নিশ্চয়তা না থাকায় এবং কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোর ক্রমঅবনতিশীল পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও বেশি রোহিঙ্গা ভাসানচরে স্থানান্তর করতে আগ্রহী।

রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরে জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জীবিকার ব্যবস্থা রয়েছে এবং সেখানে তারা বসবাসযোগ্য পরিবেশে মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবে। ১৭ ফেব্রুয়ারি জাপান, চীন, ফ্রান্স ও ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূতসহ ১৬ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল ভাসানচর পরিদর্শন করে সেখানে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের জীবনযাত্রা ও সুযোগ সুবিধা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করে।

মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ‘বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও মানবিক সহায়তা কার্যক্রম’বিষয়ক সভায় সরকার রোহিঙ্গাদেরকে কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে স্থানান্তরে বন্ধুরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তার আহ্বান জানিয়ে দুটি প্রস্তাব দিয়েছে। প্রথম প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে নেওয়ার খরচ বহন এবং দ্বিতীয় প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের জন্য ভাসানচরে আরও নতুন অবকাঠামো নির্মাণ করার কথা উল্লেখ করা হয়।

বাংলাদেশ নিজ ব্যবস্থাপনায় ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য আবাসন তৈরি করেছে এবং কক্সবাজার থেকে এপর্যন্ত সেখানে ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়েছে। আরও ৭০ হাজার রোহিঙ্গাকে সেখানে স্থানান্তর করা প্রয়োজন। এই স্থানান্তর ব্যয়বহুল এবং বাংলাদেশের একার পক্ষে এই ব্যয়বহন করা কষ্টসাধ্য। রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে নেওয়ার ব্যয়বহনে সহায়তা করতে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর কাছে প্রস্তাব করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ভাসানচরের তিন ভাগের একভাগ জায়গায় ক্যাম্প নির্মাণ করেছে, বাকি দুইভাগ জায়গায় অবকাঠামো নির্মাণ করলে আরও রোহিঙ্গাকে সেখানে স্থানান্তর করা যাবে। ভাসানচরে নতুন অবকাঠামো নির্মাণের জন্য বন্ধু দেশগুলোর কাছে সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। দ্রুততম সময়ে যত বেশি রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া যাবে ততই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সংকটের কারণ উদ্ঘাটন ও মোকাবিলায় জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূত নোলিন হাইজারকে জোরালো ভূমিকা পালন এবং ‘রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড বার্ডেন শেয়ারিং’ নীতির আওতায় জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর কাছে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরার আহ্বান জানায়।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তা নিশ্চিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ক্যাম্পগুলোতে ত্রান ও অন্যান্য সহায়তা প্রদানে নিয়োজিত কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সাথে সাথে স্থানীয়দের নিরাপত্তা ও তাদের মধ্যে বিরাজমান আতঙ্ক কাটাতে সহায়তা জোরদার করতে হবে।

প্রত্যাবাসন দ্রুত ও টেকসই করতে জাতিসংঘ ও সাহায্য সংস্থাগুলোকে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রমের পাশাপাশি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিস্থিতি সৃষ্টির প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলার নিয়ন্ত্রণে এপিবিএনের সাথে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা মিলে সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে অপরাধ নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তদন্ত কমিটির সুপারিশ মোতাবেক বাড়তি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আর্থিক সহায়তা দরকার। কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তরেও বাংলাদেশের সহায়তা অতি জরুরি। চলমান প্রেক্ষাপটে, ক্রমঅবনতিশীল পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সহায়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের নেয়া কার্যক্রম বাস্তবায়নে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সমন্বিতভাবে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণকরে সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসবে এটাই প্রত্যাশা।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) হাসান মো. শামসুদ্দীন: মিয়ানমার ও রোহিঙ্গাবিষয়ক গবেষক

আরএ/

Header Ad

৭৬ বছরের তাপপ্রবাহের রেকর্ড ভাঙল, জানা গেল বৃষ্টির তারিখ

ফাইল ছবি

এপ্রিল মাসের শুরু থেকেই টানা তাপপ্রবাহে পুড়ছে সমগ্রদেশ। দিন যত যাচ্ছে তাপমাত্রার পারদ ততই উপরে উঠছে। এমন টানা তাপপ্রবাহ গত ৭৬ বছরে দেখেনি বাংলাদেশ। যা এপ্রিল মাসের দীর্ঘব্যপ্তিকাল বলছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, ১৯৪৮ সাল থেকে দেশের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এরপর থেকে গত ৭৬ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম দীর্ঘ সময় ধরে তাপপ্রবাহ বইছে বাংলাদেশে।

আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক জানান, ১৯৪৮ সাল থেকে দেশের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত চলমান তাপপ্রবাহ একটানা সবথেকে বেশিদিন স্থায়ী রয়েছে। গতবছর এপ্রিল থেকে মে পর্যন্ত ২৩ দিন তাপপ্রবাহ বজায় ছিল যা আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে দেয়।

তিনি জানান, চলতি বছর গতকাল পর্যন্ত ২৩ দিন তাপপ্রবাহ বজায় ছিল। আজ তা রেকর্ড ভেঙ্গেছে এবং আরও কিছুদিন তা বজায় থাকবে। তাছাড়া এবারের তাপমাত্রা বলতে গেলে সারা দেশের উপরেই বিরাজ করছে যা এর আগে দেখা যায়নি।

বৃষ্টির পূর্বাভাস সম্পর্কে তিনি বলেন, ২ মে’র পর থেকে সারাদেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এসময় কালবৈশাখী হতে পারে। টানা ২ থেকে ৩ দিন বা তার বেশিও বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির ফলে সারাদেশের তাপমাত্রা কমে আসবে।

ফিলিস্তিনি মৃত মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া শিশুটি আর বেঁচে নেই

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দক্ষিণে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত এক মায়ের গর্ভ থেকে জীবিত জন্ম নেওয়া সেই মেয়ে শিশুটি আর বেঁচে নেই। বৃহস্পতিবার শিশুটি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে এবং তাকে তার মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।

গত রোববার মধ্যরাতের পর দক্ষিণ গাজার রাফাহ হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে মৃত ফিলিস্তিনি মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেয় শিশু সাবরিন আল-সাকানি।

পরে তাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা। শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখতে হ্যান্ড পাম্প ব্যবহার করে তার ফুসফুসে বাতাস সরবরাহ করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো গেল না। তার নাম রাখা হয়েছিল মৃত মায়ের নামেই। মৃত্যুর পর শিশু সাবরিনকে তার মায়ের পাশেই সমাহিত করা হয়েছে।

গত শনিবার রাতে রাফাহ’য় ভয়াবহ হামলা চালায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। এই হামলায় নিহত ১৯ জনের মধ্যে একই পরিবারের স্বামী, স্ত্রী ছাড়াও মেয়েও ছিল।

মৃত মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেয়া শিশুটির দেখভাল করছিলেন চিকিৎসক মোহাম্মদ সালামা। তিনি বলেন, ‘জরুরি সি-সেকশনের বা সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম নেয়া শিশুটির প্রসবের সময় ওজন ছিল ১ দশমিক ৪ কেজি। এই সময় শিশুটির মাতৃগর্ভে থাকার কথা ছিল। কিন্তু শিশুটির সেই অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে।’ শিশুটির ভূমিষ্ঠের সময় চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, নির্ধারিত সময়ের আগেই জন্ম গ্রহণের কারণে গুরুতর শ্বাসকষ্টে ভুগছিল শিশু সাবরিন।

শিশুটির মা, সাবরিন আল-সাকানি ৩০ সপ্তাহের গর্ভবতী ছিলেন। ইসরায়েলি হামলার পর উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত সাবরিনকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা প্রসবের জন্য জরুরি ভিত্তিতে তার সিজারিয়ান অপারেশন করেন।

অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি শ্রীময়ী, দুশ্চিন্তায় কাঞ্চন মল্লিক

কাঞ্চন মল্লিক ও শ্রীময়ী চট্টরাজ। ছবি: সংগৃহীত

গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন টালিউড অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজ। অসুস্থ হওয়ার পর তাৎক্ষণিক বিষয়টি অনুভব করতে পারেননি তিনি। পরে পরিস্থিতি গুরুতর হতেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় এ অভিনেত্রীকে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ থেকেই সমস্যা হয়েছে শ্রীময়ীর। তীব্র গরমের মধ্যে গত শনিবার সারাদিন শুটিং করেছেন। দিন শেষে বাড়ি ফেরার পরই দুর্বল হয়ে পড়ে তার শরীর।

এ অভিনেত্রী তার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানিয়েছেন, সারারাত বমি হয়েছে। ওআরএস খেয়েছিলেন। এরপরও পরিস্থিতি একই ছিল। পেটেও যন্ত্রণা হচ্ছিল তার। তবে সবশেষ ডাক্তারের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি হতে হলো।

এদিকে স্ত্রী শ্রীময়ীর এ অবস্থা দেখে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন টালিউড অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক। গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে স্ত্রীর পাশেই থাকছেন এ টালি তারকা।

সর্বশেষ সংবাদ

৭৬ বছরের তাপপ্রবাহের রেকর্ড ভাঙল, জানা গেল বৃষ্টির তারিখ
ফিলিস্তিনি মৃত মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া শিশুটি আর বেঁচে নেই
অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি শ্রীময়ী, দুশ্চিন্তায় কাঞ্চন মল্লিক
প্রথমবার এশিয়া কাপে আম্পায়ারিং করবেন বাংলাদেশের জেসি
বিয়ে না দেওয়ায় মাকে জবাই করলো ছেলে
রেকর্ড তাপপ্রবাহের জন্য সরকার দায়ী: রিজভী
চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড, জনজীবনে অস্বস্তি
বিএনপির আরও ৭৫ নেতা বহিষ্কার
প্রেমিকার আত্মহত্যা, শোক সইতে না পেরে প্রেমিকও বেছে নিলেন সে পথ
দুই বিভাগে ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস
অভিষেকেই শূন্য রানে ৭ উইকেট নিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়লেন রোহমালিয়া
ফিলিস্তিন স্বাধীন হলে অস্ত্র ত্যাগ করবে হামাস
দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না: ওবায়দুল কাদের
কয়েক মিনিটের দেরিতে বিসিএসের স্বপ্ন ভঙ্গ ২০ পরীক্ষার্থীর
লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
থাই প্রধানমন্ত্রীর গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে শেখ হাসিনা
আগুন নেভাতে দেরি হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, ২ ফায়ারম্যান আহত
পাবনায় অগ্রণী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ১০ কোটি টাকা আত্নসাৎ, গ্রেপ্তার ৩
মৃত্যুর দু’বছর পর ব্রুনাই থেকে দেশে ফিরছে দুই প্রবাসীর লাশ
৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা চলছে