শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

রমজানের শিক্ষা, অপব্যয়, আত্মশুদ্ধি ও ঈদুল ফিতর পালন

প্রতি বছর বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায় একমাস সিয়াম পালন করে। অন্যান্য ধর্মেও উপবাস থাকা বা রোযার মতো কিছু আচার রয়েছে। তার অর্থ হচ্ছে এটি পবিত্রতা অর্জন করা, আত্মশুদ্ধি এবং আমাদের দৈনন্দিন কাজে সততা ও নিষ্ঠা আনার এক প্রশিক্ষণ। এই মাসে সংযম সাধনের সঙ্গে সঙ্গে অপব্যয়ও রোধ করা উচিত। কিন্তু আমরা দেখতে পাই, রমজান মাস এলে যেন আলাদা এক অপব্যয়ে মেতে ওঠে কিছু লোক। যেমন ইফতার পার্টির নামে চলে অপচয়, লোক দেখানো বড় বড় আয়োজন সেখানে খাদ্য অপচয়ের মহড়া চলে। এটি ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে প্রাতিষ্ঠানিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত। তবে, এবার সরকার প্রধান তার পার্টির লোকাদের ইফতার পার্টি থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন যেটি একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলা যায়।

রমজানে না খেয়ে থাকা শরীরের সংযম আর অন্যান্য খারাপ কাজ, মানুষের ক্ষতি হয় এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকার প্রশিক্ষণ হচ্ছে আত্মার সংযম। কাজেই রমজান হচ্ছে শারীরিক ও আত্মিক পবিত্রতা অর্জনের প্রশিক্ষণ। কিন্তু আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা যে যেভাবে পারেন অতিরিক্ত লাভের প্রতিযোগিতায় নেমে যান। এটি লাভের মাস, এটি উপার্জনের মাস, একটি বরকতের মাস। তাই বলে, আমাদের অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা যা করেন তা কিন্তু লাভ নয়, এটি হচ্ছে নিজের লোকসান নিজে ডেকে আনা, সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করা। এটি কোনোভাবেই রমজানের শিক্ষা নয়। প্রতিটি মানুষকে রমজান এই সংযমের শিক্ষা দেয়। ভেজাল খাদ্যদ্রব্য বিক্রি, পচা খাবার-দাবার বিক্রি, অতিরিক্ত দামে বিক্রি—সবই চলছে। বরং এই মাসে যেন আরও বেশি ও বড় আকারে এসব বিষয়গুলো দেখা যায়। তাহলে রমজানের সেই শিক্ষা কোথায়? মূলত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে, পরিবার থেকে এই শিক্ষাগুলো মানুষের অজর্ন করার কথা, সেটি না হলে সমাজে এর প্রতিফলন ঘটে না। আমরা রমজানে এত প্রশিক্ষণ নিচ্ছি প্রতিবছর অথচ অফিসের ঘুষ কমেনি, মানুষের অহমিকাবোধ কমেনি, পরশ্রীকাতরতা কমেনি । সর্বত্রই অনিয়ম আর বিশৃঙ্খলা। শুধু আচার পালন করা হচ্ছে। এ সময় ব্যাপকহারে বেড়ে যায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি। কেউ বসে নেই। নতুন নতুন কৌশলে এসব হয়ে থাকে। গোটা সমাজকে যদি পরিশুদ্ধ করা না যায় তাহলে পুলিশের সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে এসব বন্ধ করা খুব কঠিন। সাময়িক কিছু স্বস্তি মিলে কিন্তু‘ ক্ষত শুকায় না। উন্নত বিশ্বে সাধারণত ট্রাফিক ছাড়া সাধারণ পুলিশের দেখা পাওয়া যায় না, যদিও পাওয়া যায় কোনো ধরনে অস্ত্র ছাড়া। অবার মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশগুলোতেও পদে পদে পুলিশ। পুলিশ দিয়ে সমাজকে সভ্য করা যায় না। সভ্য করতে হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আদর্শ সামাজিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করতে হবে। আর সেটি শুধুমাত্র সরকারই না, শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সবাইকেই ভূমিকা পালন করতে হবে।

আমরা যদি ব্যক্তি থেকে প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত লক্ষ্য করি দেখব যে, রমজানের সংযম শিক্ষার বিষয়টি সেই অর্থে প্রতিফলিত হচ্ছে না কোথাও। দু’জন মানুষ রাস্তায় সামান্য বিষয় নিয়ে কিংবা অযথাই ঝগড়া বাঁধিয়ে দিচ্ছে এবং চরম উত্তেজিত অবস্থা একে অপরকে গালাগাল করছে, এমনকি হাতও ব্যবহার করছে। ট্রাফিক নিয়ম কানুন মানছে না, গাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছে তাই এ অবস্তায় হাঁটাহাটি করছে অথচ গাড়ির সাথে একটু লেগে গেলে ড্রাইভারকে ধরে অযথা গালিগালাজ করা ও শারীরিকভাবে হেনস্তা করা অহরহই চলছে, রমজান বলে কোনো ছাড় নেই। অথচ যারা এগুলো করছেন তারা সবাই কিন্তু না খেয়ে আছেন অর্থাৎ রোযা রেখেছেন। মিটিং, মিছিল সব হচ্ছে, মিটিং মিছিলে শক্তি প্রয়োগ ও বল প্রয়োগ সবই চলছে। তা’ হলে রমজানের শিক্ষাটা কোথায়?

আমরা জাপানের কথা জানি যে, সেখানে এত ঘন ঘন মসজিদ নেই, ওয়াজ নসিহত নেই, রমজানের মতো প্রশিক্ষণ নেই অথচ সব শৃঙ্খরার মধ্যে চলছে। মানুষ অফিসে, কাজে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত, কোনো ফাঁকি দেওয়ার চিন্তা নেই। ঘুষ নেই, মানুষকে ধোকা দেওয়ার জন্য, হয়রানি করার জন্য সরকারি আধা সরকারি কর্মকর্তারা বসে নেই। তারা মানুষকে সর্বোত্তম সেবার দেওয়ার জন্য ব্যস্ত, সর্বোচ্চ চেষ্টাটি করে থাকেন। তাহলে আমাদের হলো টা কী? আমরা এত ধর্ম চর্চ করছি, এত সংযম পালন করছি, মসজিদে দৌড়াচ্ছি তারপরেও এসব বিষয় এতটুকু কমেনি। কয়েকটি কারনের মধ্যে মূল কারণ হচ্ছে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশেষ করে ছোটবেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এসব শেখানো হয় জাপানে, আমাদের শেখানো হয় না। কীভাবে বড়দের সম্মান করতে হয়, কীভাবে তাদের সাথে কথা বলতে হয়, কীভাবে খেতে হয় , দেশসেবার নমুনা, দেশকে কেন ভালবাসতে হয় ইত্যাদি শিক্ষা জাপানি ছেলেমেয়েরা ছোট বয়স থেকেই পেয়ে থাকে। প্রকৃত শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে আমাদের শিশুদের জন্য এসবের আদলে শিক্ষাদান করার প্রকৃত প্রচেষ্টাটি গ্রহণ করা উচিত। আমরা চেষ্টা করছি, কারিকুলাম আছে, শিক্ষাদনা চলছে কিন্তু যেজন্য এগুলো করা হচ্ছে তার প্রতিফলন ব্যক্তির মাঝে নেই, সমাজে নেই, রাষ্ট্রে নেই। বিষয়গুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষনের দাবি রাখে।

আমরা যে যে কাজ করছি সেটি দায়িত্বশীলভাবে করলেই আমি সততা প্রদর্শন করছি। আমার দ্বারা যাদের সেবা পাওয়ার কথা তারা সেবাটি পাচ্ছেন কি না সেটি আমাকে অবশ্যই দেখতে হবে। এ বিষয়গুলো ব্যক্তি থেকে শুরু করলে সমাজ পরিবর্তন হতে বাধ্য। আমরা সবসময় সবকিছু রাষ্ট্রের কাছে আশা করি। কিন্তু সে আশা তো গুড়ে বালি। জনৈক অধ্যাপক ( বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত) অল্প কয়েকদিন ছুটি কাটিয়ে রমজানের শেষের দিকে দেশ থেকে কার্যস্থলে চলে যাচ্ছেন। এয়ারপোর্ট থেকে ফোন দিলেন । এয়ারপোর্টের অবস্থা যেন আগের চেয়েও বহুগুন খারাপ হয়েছে। তিনি বলছেন এয়ারপোর্টে প্রবেশের লাইন বাইর পর্যন্ত চলে এসেছে। প্রচন্ড গরমে মানুষ হাঁসফাঁস করছে অথচ কর্তৃপক্ষের দু’পয়সার তৎপরতা নেই যে, দ্রুত ইমিগ্রেশনের কাজ সেরে যাত্রীদের ভেতরে ঢুকিয়ে দেবেন। অধ্যাপক বলছেন, পরিবর্তন কিভাবে আসবে? কে করবে? রাষ্ট্র না কর্মকর্তা কর্মচারী নিজেরা? কারুরই তো সেভাবে কোনো উদ্যোগ নেই। যাই হোক কর্মস্থলে গিয়ে জানিয়েছেন যে তিনি পৌঁছেছেন প্রচণ্ড শরীর ও মাথাব্যথা নিয়ে। এতো গেল এয়ার পোর্টের কথা, অন্যান্য ট্রান্সপোর্টের জায়গাগুলো হয়রানির চরম পর্যায়ে। অথচ অধিকাংশই কিন্তু রোযা রেখেছেন, যার যার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার কথা।

প্রতি ধর্মেই মানুষকে না ঠকানোর জন্য বিশেষভাবে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে, যদি কোন মানুষ অন্য কোন মানুষের হক নষ্ট করে অর্থাৎ তার পাওনা তাকে না দেয় কিংবা তার কোন অর্থনৈতিক ক্ষতি করে তাহলে তাকে আল্লাহও ক্ষমা করবেনা যতক্ষণ না ওই আক্রান্ত ব্যক্তি তাকে ক্ষমা করে দেন। বিশাল বিষয়। অথচ আমরা খেয়ালই করি না। অহরহ অন্য মানুষের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ছি, মনে কষ্ট দিচ্ছি, তার পাওয়া দিচ্ছিনা, তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যার যতটুকু ক্ষমতা আছে তার চেয়ে ঢের বেশি প্রদর্শনের চেষ্টা সর্বদাই ব্যস্ত থাকছি আবার উপবাসও করছি। রমজান মাসের প্রশিক্ষণে এগুলোই সবই অন্তর্ভূক্ত কিন্ত আমরা তা গ্রাহ্য করছি না। আমরা যেমন প্রচুর শিক্ষক প্রশিক্ষণ দিচ্ছি টেঠ ক্লাসরুম পরিবর্তন হচ্ছে না, আমাদের শিক্ষাদানে পরিবর্তন আসছে না। এ যেন প্রশিক্ষনের জন্য প্রশিক্ষণ, বাস্তবায়নের জন্য নয়, পরিবর্তনের জন্য নয়। একই ঘটনা যেন আমাদের রোযা রাখার মধ্যেও ঘটছে।

পবিত্র রমজানের পর আসে খুশীর ঈদ। মানুষের বিভিন্ন অনৈতিক, আবেগতাড়িত ও অবিবেচনাপ্রসূত কার্যাবলীর কারনে অনেকের জীবনে গভীর অশান্তি নেমে আসে ঈদ যাত্রায়। মানুষ বড়িতে যাওয়ার জন্য ঢাকাসহ বড় বড় সিটি থেকে গ্রামের বাড়িতে নাড়ীর টানে ছুটতে শুরু করে। আর এই ছোটা নিয়ে শুরু হয় বিভিন্ন ধরনের অদ্ভূত সব কর্মকাণ্ড। অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টিসহ বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ বেড়ে যায় বহুগুণে। এগুলো দেখলে মনে হয়, রমজানে ক’জন সহীহ শুদ্ধভাবে রোযা পালন করছে। এমনিতেই বহুল জনসংখ্যার দেশে এই যাত্রা একটি বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছায় কারণ সাধারণ অবস্থাতেই আমাদের রাস্তাঘাটে জ্যাম লেগে থাকে। আর ঈদ এলে এই জ্যাম পুরোটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এ সব কাজে যারা নিয়োজিত থাকে তারা অনেক সময় ইচ্ছে করেই জ্যাম লাগিয়ে থাকে। মানুষকে কষ্ট দিতে পেরে এক ধরনের পৈশাচিক আনন্দ তারা উপভোগ করে। যারা রাস্তাঘাট নির্বিঘ্ন করার দায়িত্বে নিয়োজিত তারাও নিজ থেকে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করে না, কোন দায়বদ্ধতা নেই, কোন চাপ নেই, নৈতিক কোনো তাড়না নেই যে, তাদের এই পবিত্র দায়িত্ব সততার সাথে পালন করতে হবে। তাই প্রতিবছর আমরা দেখতে পাই যানবাহনের দীর্ঘ লাইন, এই লাইন ত্রিশ, চল্লিশ , পঞ্চাশ মাইল কিংবা তারও বেশি। প্রচণ্ড দাবদাহ, প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে না পারাসহ বহু পেরেসানির মধ্যে ছটফট করতে থাকে ছোট শিশু ও নারী যারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা, পুরো দিন ও রাত এমনকি ঈদের দিন বিকেলেও অনেকে বাসায় পৌঁছাতে পারে না। এত কষ্ট সহ্য করে যখন বাসায় পৌঁছে, সাথে সাথে চিন্তা কীভাবে আবার কর্মস্থলে আসবেন। এগুলোর জন্য আমরা নিজেদের ভাগ্যকেই দায়ী করি কারণ এগুলো দেখার কেউ কখনো ছিল না, এখনো নেই। তারপরেও দিন চলে যাচ্ছে, সমাজ চলছে, মানুষের তার নিজের প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাচ্ছে, এই তো পৃথিবী, এই তো ধরনীর নিয়ম। একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও ন্যায়নীতি পরায়ণ সমাজে বাস করার আগ্রহ ও ইচ্ছে অধিকাংশ মানুষের মধ্যে থাকলেও সে রকম প্রচেষ্টা অনেকেরই নেই। যে যার দায়িত্বটুকু সঠিকভাবে পালন করলেই আমরা সমাজকে পাল্টে দিতে পারি।

মাছুম বিল্লাহ: শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক

আরএ/

Header Ad

সৌদির যেকোনো ভিসা থাকলেই ওমরাহ পালন করা যাবে

ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ওমরাহ পালনে বিদেশিদের জন্য ভিসা ব্যবস্থাপনা আরও সহজ করেছে সৌদি আরব। এখন থেকে যেকোনো ধরনের ভিসায় সৌদি আরব গেলেই বিদেশিরা ওমরাহ পালনের অনুমতি পাবেন।

সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে সৌদির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় বলেছে, যেকোনো দেশ থেকে এবং যেকোনো ভিসায় সৌদি আরবে আগতরা এখন থেকে স্বাচ্ছন্দ্যে ওমরাহ পালন করতে পারবেন।

মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ব্যক্তিগত, পারিবারিক, ট্রানজিট, শ্রম ও ই-ভিসাসহ সব ভিসাধারী ব্যক্তিরা এ সুযোগ পাবেন। এছাড়া ওমরাহ পালনের অনুমতি ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ের জন্য ‘নুসুক’ অ্যাপ ব্যবহার করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটির সরকার।

এদিকে মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববিতে হজ ও ওমরাহ পালনকারীদের ইবাদত সহজ করতে ‘ডিজিটাল ব্যাগ’ চালু করেছে সৌদি সরকার।

সৌদি আরবের ধর্ম মন্ত্রণালয় জানায়, এই ব্যাগ প্রোগ্রাম হজ ও ওমরাহযাত্রীদের জীবনমান সহজ করবে। তাদের হজ ও ওমরাহ পালন সহজ করবে। মুসল্লিদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে এর মাধ্যমে। বিশেষ করে কখন তারা কোন বিধান পালন করবে, সে বিষয়ে সতর্ক করা হবে।

নাটোরে বোনের বৌভাতে গিয়ে একে একে তিন ভাইয়ের মৃত্যু

নিহত জাওহার আমিন লাদেন। ছবি: সংগৃহীত

নাটোরের বড়াইগ্রামে মামাতো বোনের বউভাতের অনুষ্ঠানে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে জাওহার আমিন লাদেন (১৮) নামে আরও এক কলেজছাত্র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা গেছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজন প্রাণ হারালেন।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ এ চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়

নিহত জাওহার বড়াইগ্রামের গোপালপুর গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা রুহুল আমিনের ছেলে।

জানা গেছে, গত ১৫ এপ্রিল মামাতো বোনের বৌভাতের অনুষ্ঠানে যায় তিন ভাই। পরে মোটরসাইকেল নিয়ে বেড়াতে বের হন তারা। পথে বড়াইগ্রাম কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের সামনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে তিনজনই গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মামাতো ভাই আকিব হাসান (১৫) ও খায়রুল বাশার ছাগির (১৭) মারা যায়। বুধবার রাতে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরেক ভাই জাওহারের মৃত্যু হয়।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আজম খান বলেন, গত ১৫ এপ্রিল উপজেলার ধামানিয়াপাড়া গ্রামে মামাতো বোনের বৌভাতের অনুষ্ঠানে গিয়ে তিন মামাতো-ফুফাতো ভাই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে তিনজন গুরুতর আহত হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজনই মারা গেছেন।

জনপ্রতি ১২-১৪ লাখ চুক্তিতে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রশ্নফাঁস, গ্রেপ্তার ৫

গ্রেপ্তার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের পাঁচ সদস্য। ছবি: সংগৃহীত

প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত সংঘবদ্ধ চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপরই বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। চক্রটি এর আগেও বিভিন্ন সময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে কয়েকশ’ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গ্রেপ্তার পাঁচজনের মধ্যে দুইজন ঢাবি শিক্ষার্থী ও তিনজন পরীক্ষার্থী।

ডিবি জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলে বসে এ পরীক্ষার প্রশ্নের সমাধান করতেন তারা। পরীক্ষা শুরুর আগেই পরীক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হতো উত্তরপত্র।

গ্রেপ্তাররা হলেন- ঢাবি শিক্ষার্থী জ্যোতির্ময় গাইন (২৬) ও সুজন চন্দ্র রায় (২৫) এবং পরীক্ষার্থী মনিষ গাইন (৩৯), পংকজ গাইন (৩০) ও লাভলী মণ্ডল (৩০)।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) নিজ কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

ডিবিপ্রধান বলেন, গত ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ২১ জেলার সাড়ে তিন লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এ পরীক্ষা চলাকালে প্রশ্নের উত্তরপত্র ও ডিভাইসসহ মাদারীপুরে সাতজন ও রাজবাড়ীতে একজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়।

ডিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। ছবি: সংগৃহীত

এ ঘটনায় দুই জেলায় আলাদাভাবে মামলা করে সংশ্লিষ্টরা। রাজবাড়ীতে আটক হওয়া পরীক্ষার্থী আদালতে নিজের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে তিনি জানান, কীভাবে এবং কখন তার মোবাইলে উত্তরপত্র এসেছে। মাদারীপুরে গ্রেপ্তার হওয়া পরীক্ষার্থীদের বেশিরভাগই জামিনে বের হয়ে যান। ঘটনাটি তদন্তের জন্য মাদারীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাসুদ আলমের অনুরোধে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম দক্ষিণ বিভাগ তদন্তে নামে।

মাঠে নেমে গ্রেপ্তার করা হয় চক্রের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী জ্যোতির্ময় গাইন ও সুজন চন্দ্রকে। তারা দুজনেই ঢাবির জগন্নাথ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

তারা গোয়েন্দা পুলিশকে জানান, পরীক্ষার আগেই তারা প্রশ্ন সমাধানের জন্য পেয়েছেন। এ প্রশ্ন সমাধানের দায়িত্ব পেয়েছেন জ্যোতির্ময় গাইনের চাচা অসিম গাইনের মাধ্যমে।

প্রশ্ন প্রতি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার আশ্বাসে তাদের দিয়ে প্রশ্ন সমাধান করান অসিম। এ প্রস্তাবে জ্যোতির্ময় ও সুজনসহ সাতজন ঢাবির জগন্নাথ হলের জ্যোতির্ময়গুহ ঠাকুরতা ভবনের ২২৪ রুমে বসে তারা প্রশ্নের সমাধান করে পাঠান। অসিম তার ভাতিজা জ্যোতির্ময় গাইনকে প্রশ্ন সামাধানের দায়িত্ব দিয়েছেন।

গ্রেপ্তার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের পাঁচ সদস্য। ছবি: সংগৃহীত

অন্যদিকে, তিনি পরীক্ষার দুই থেকে তিন মাস আগেই পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। বিশেষ করে যাদের চাকরির বয়স শেষের পথে, এমন পরীক্ষার্থীদের টার্গেট করতেন। তাদের পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকায় চুক্তি করতেন।

পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগেই প্রশ্নের উত্তরপত্র পরীক্ষার্থীদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন অসিম গাইন। তাদের সমাধান করে দেওয়া প্রশ্নের মধ্যে ৭২ থেকে ৭৫টিই মিলেছে।

ডিবি প্রধান আরও বলেন, আমাদের তদন্তে এখন পর্যন্ত যে প্রমাণ পেয়েছি, তাতে এ চক্রের হোতা অসিম গাইন। তার বাড়ি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায়। তিনি আগেও বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন। তিনি অল্পদিনে কয়েকশ’ কোটি টাকা আয় করেছেন। এ টাকা দিয়ে তার গ্রামে বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ করেছেন।

এলাকায় রাজনৈতিক প্রভাব থাকা অসিমের মানবপাচার, হুন্ডি ব্যবসা ও ডিশের ব্যবসা রয়েছে। যেখানে তিনি প্রশ্ন ফাঁস করে আয় করা টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। আমরা তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। তাকে গ্রেপ্তার করলে কীভাবে প্রশ্নগুলো পান, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারব।

এ ঘটনায় দুজনকে আমরা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। যারা প্রশ্নের সমাধান করেছেন, আদালতে তারাও স্বীকার করেছেন। যারা প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন, তারাও স্বীকার করেছেন। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে তদন্ত চলছে।

প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের পরীক্ষা বাতিলের অনুরোধ জানানো হবে কি-না, এ প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ হারুন বলেন, আমরা এ মামলার তদন্তে নেমে যা যা পেয়েছি সবকিছুই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। এরপর তারা সিদ্ধান্ত নেবেন পরীক্ষা বাতিল করবেন না-কি বহাল রাখবেন।

সর্বশেষ সংবাদ

সৌদির যেকোনো ভিসা থাকলেই ওমরাহ পালন করা যাবে
নাটোরে বোনের বৌভাতে গিয়ে একে একে তিন ভাইয়ের মৃত্যু
জনপ্রতি ১২-১৪ লাখ চুক্তিতে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রশ্নফাঁস, গ্রেপ্তার ৫
কুড়িগ্রামে হিট স্ট্রোকে নারীর মৃত্যু
রবিবার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারও চলবে ক্লাস
বাংলাদেশের উন্নতি দেখে এখন লজ্জিত হই: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
মৌসুমের সর্বোচ্চ ৩৯.২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে নওগাঁ
চেন্নাইয়ের হয়ে খেলা সবসময় স্বপ্ন ছিল: মোস্তাফিজ
বৃষ্টি কামনায় টাঙ্গাইলে ইস্তিস্কার নামাজ আদায়
মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে আরও ৬ ধাপ পেছালো বাংলাদেশ
বৃষ্টি কবে হবে, জানাল আবহাওয়া অফিস
এফডিসিতে ইউটিউবার প্রবেশ নিষিদ্ধ চাইলেন অঞ্জনা
অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা, ক্ষোভে বাসে আগুন দিল শিক্ষার্থীরা
থাইল্যান্ডে হিট স্ট্রোকে ৩০ জনের মৃত্যু
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় ‘এমপিরাজ’ তৈরি হয়েছে: রিজভী
অনুমতি মিললে ঈদের আগেই গরু আমদানি সম্ভব: ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত
আবারও ঢাকাই সিনেমায় কলকাতার পাওলি দাম
ময়মনসিংহে সড়ক দুর্ঘটনায় সাবেক কৃষকলীগ নেতাসহ নিহত ২
গোবিন্দগঞ্জে বৃষ্টির জন্য ইস্তিসকার নামাজ আদায়