শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫ | ১৩ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

ছাত্রদল নেতার সমন্বয়ক পরিচয়ে প্রকল্প গ্রহণ, বাস্তবায়নে অনিয়মের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ

সমন্বয়ক পরিচয়ে প্রকল্প করে সেই অর্থ আত্মসাৎ-এর অভিযোগ উঠেছে মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাফিউল আজম জুয়েলের বিরুদ্ধে। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন খাতের বরাদ্দের (সরকারি) টাকা সমন্বয়ক পরিচয়ে প্রকল্প করে সেই অর্থ আত্মসাৎ-এর অভিযোগ উঠেছে একই ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাফিউল আজম জুয়েলের বিরুদ্ধে।

ইউনিয়ন পরিষদ তথ্য সূত্রে জানা গেছে, রাস্তা মেরামত বাবদ ৮টি প্রকল্প ধরে প্রায় ১৩ লাখ ৭১ হাজার টাকা সমন্বয়ক পরিচয়ে বরাদ্দ নেয় ছাত্রদলের ওই নেতা। কিন্তু মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সরেজমিনে ঘুরে এবং স্থানীয়দের কথা বলে জানা গেছে ওই সব রাস্তায় নামমাত্র কাজ করা হয়েছে। কোনো কোনো রাস্তায় ২-৩ গাড়ি মাটি ফেলা হলেও অনেক রাস্তায় ফেলা হয়নি। অভিযোগ রয়েছে এসব সরকারি টাকা পুরোটাই আত্মসাৎ করেছেন ছাত্রদলের ওই সাংগঠনিক সম্পাদক।

 

স্থানীয় বাসিন্দা কলিম উদ্দিন, কবির হোসেন ও আজিজুল হক বলেন, "এক গাড়ি মাটি এনে যেসব জায়গায় ভাঙা গর্ত সেখানে একটু একটু করে মাটি দিয়ে চলে গেছে। আমরা চলাচল করতে পারি না। রোগী হাসপাতালে নিতে নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। গাড়ি চলে না। বৃষ্টি হলে কাঁদার জন্য হাঁটা যায় না। কয়দিন আগে দুই-তিন গাড়ি মাটি ফেলছে। কিন্তু এটা মাটি ফেলা বলে না।"

 

জুলাই-আগস্টের রাজিবপুর উপজেলার অন্যতম আন্দোলনকারী রঞ্জু চৌধুরী বলেন, "রাজিবপুরে আমরা আন্দোলন করি এবং আমরাই নেতৃত্ব দেই। হুট করে শুনতেছি মোহনগঞ্জে নতুন একজন সমন্বয়ক বের হয়েছে। যে ইতিমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন খাতের ১৩ লাখ ৭১ হাজার টাকা রাস্তা মেরামতের জন্য বরাদ্দ নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। এটা শুনে আমরা মোহনগঞ্জ গিয়ে ইউপি সদস্য ও স্থানীয়দের সাথে নিয়ে বরাদ্দের টাকা কোথায় কোথায় খরচ করেছে। কোন রাস্তায় কতটুকু মাটি ভরাট করেছে এসব হিসেব জানতে চাই। প্রথম দিন নানা টালবাহানা করে আমাদেরকে হিসেব দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং নাফিউল আজম জুয়েল জানায় পরবর্তীতে তারিখ ঠিক করে সবার সামনে হিসেব দিবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) আবারও ইউপি সদস্য ও স্থানীয়দের সাথে নিয়ে সবাই বৈঠকে বসে, সেদিন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমানও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। হিসেব চাইলে সব মিলিয়ে ৬ লাখ টাকার হিসেব দেয় জুয়েল। পরে বাকি টাকার হিসেব চাইলে উপস্থিত সকলের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি (জুয়েল)। সেদিন ওই ঘটনায় বৈঠক পণ্ড হয়।"

এ বিষয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান বলেন, "সমন্বয়করা দুই-তিন মাস আগে কাজগুলো করে৷ তো এর আগে একদিন বসা হয়েছিল সেদিন অনেকেই ছিল, আবার অনেকেই ছিল না। পরে আজকে হিসেব দেওয়ার মতো সবাই উপস্থিত ছিল। সবাই বসছিল আমিও ছিলাম৷ তো হিসেবের মাঝখানে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে আর আমরা পুরো হিসেবটা পাই নাই।"

পুরো হিসেবটা নিতে পারেন নি নাকি জুয়েল দিতে পারেন নি কোনটা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "না মানে হিসেবের মাঝখানে গিয়ে গণ্ডগোলটা লাগে। পরে আর হিসেবটা নেওয়া হয় নাই।"

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "এই প্রশ্নটা করা লাগছিল ইউএনওকে। কাকে বরাদ্দ দিলো কি দিলো না সেটা তারাই ভালো বলতে পারে। চাপ প্রয়োগ করে নিলে এটা আসলে হয় না। এটা তো চেয়ারম্যান-মেম্বাররা করবে৷ তারা জনপ্রতিনিধি। এটা তো কোনো ব্যক্তি করতে পারে না।"

মোহনগঞ্জ ইউপি সদস্য ও প্রকল্প সভাপতি গোলাম হোসেন জানান, "আমাকে একটি প্রকল্পের সভাপতি করা হয়েছিল। আমার প্রকল্পটি ছিল নয়ার চর বাজার থেকে পূর্ব দিকে বাছেদ ডাক্তারের মোড় পাকা রাস্তার সংযোগ পর্যন্ত গর্ত ভরাট। মোট প্রকল্পের বরাদ্দ ছিলো ১৩ লাখ ৭১ হাজার টাকা।"

গোলাম হোসেন আরও বলেন, "আমার প্রকল্পের বাজেট ধরা হয়েছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৭৪৮ টাকা। তবে এ প্রকল্পের কোনো কাজই করা হয় নাই।" তিনি আরও জানান, "মাস্টার রোল থেকে শুরু করে জুয়েলই সব কিছু করেছে। এবং বিল তুলতে আমাদের যে সাক্ষর লাগে সেটিও আমাদেরকে চাপ প্রয়োগ করে নিয়েছে।"

অন্য আরেকটি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "পরিষদে উন্নয়ন খাতের বরাদ্দকৃত অর্থটা ছিল। আমরা এস্টিমেট করে হতদরিদ্র পরিবারের জন্য সেলাই মেশিন, নলকূপ ও স্প্রে মেশিন বিতরণ করতে চেয়েছিলাম। এর আগে আমরাও ওই খাতের টাকা দিয়ে রাস্তা মেরামত কাজ করতে চেয়েছিলাম কিন্তু ইউএনও বলেছিলো ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন খাতের টাকা দিয়ে রাস্তা মেরামতের কাজ করা যাবে না। পরে ইউএনওকে বলে উন্নয়ন খাতের টাকা তারা রাস্তার কাজ করার জন্য নেয়।"

মোহনগঞ্জ ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান মাসুদ বলেন, "আজকে রাজিবপুরের সমন্বয়করা হিসেব নিতে আসছিল। তাদের কাছে সঠিক হিসেব দিতে পারে নাই। অমুকের কাছে ১০ হাজার, কুড়িগ্রাম গিয়েছি ১৫ হাজার এ-ই সেই আবোলতাবোল করে ৬ লাখ টাকার মতো হিসেব দিতে পারছে।"

ওই ইউপি সদস্য আরও বলেন, "ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন খাতের টাকা আমরা মেম্বাররা ভাগাভাগি করে সেলাই মেশিন, নলকূপ স্থাপন ও স্প্রে মেশিনের প্রকল্প দাখিল করছিলাম। ইউএনও বলল পাকা রাস্তার কাজ ছাড়া কাঁচা রাস্তার কাজ করা যাবে না। পরে তো এটা ছাড়া আর কাজ নাই পরে আমরা সেলাই মেশিন, নলকূপ আর স্প্রে মেশিনের প্রকল্প দাখিল করি। হঠাৎ করে সরকার যখন পতন হলো তখন জুয়েল সমন্বয়ক সেজে এসে আমাদেরকে চাপ প্রয়োগ করলো। আর হুমকি দিলো, সরকার হটাতে লাগছে ১৪ দিন চেয়ারম্যান-মেম্বারদের হটাতে লাগবে না ১৪ সেকেন্ড। জুয়েল পরিষদে এসে এই বক্তব্য দিয়ে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের মধ্যে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি করলো।"

মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের সাথে আলোচনা করছেন নাফিউল আজম জুয়েল। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

তবে আসাদুজ্জামান মাসুদের দাবি, "নাফিউল আজম জুয়েলকে উন্নয়ন খাতের টাকা দিতে মেম্বারদেরকে চাপ প্রয়োগ করেছিলেন রাজিবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর আহমেদও।" তিনি বলেন, "আমরা যখন প্রকল্প নিবো রাস্তার কাজই করবো। রাস্তার কাজ করলে একটু লাভ বেশি হয়, এজন্য আমরা রাস্তার করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ইউএনও বলল কাঁচা রাস্তার কাজ করতে পারবেন না, এটা নিয়মে নাই৷ করলে পাকা করতে হবে। পরে আমরা বাধ্য হয়ে সেলাই মেশিন, নলকূপ আর স্প্রে মেশিনের প্রকল্প দাখিল করি।"

এই কাজ ইউএনও সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া জুয়েলকে কিভাবে দেওয়া হলো জানতে চাইলে তিনি (মাসুদ) বলেন, "কি জানি, সেটা তো জানি না। ওই যে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের ১৪ সেকেন্ডও লাগবে না সরাতে এসব কথাবার্তা বলে আমাদের থেকে প্রকল্প নিল৷ পরে আমরা বলেছি যে, রাস্তার কাজ করা যাবে না। পাকা কাজ করতে হবে। পরে ওরা ইউএনওর কাছে গিয়েছিল ইউএনও বলছে যে করা যাবে৷ এরপর তো আর ৭ লাখ টাকার কোনো হিসেব নাই।"

প্রকল্প কিভাবে নিলেন? কি পরিচয়ে নিলেন এবং কোন ক্ষমতাবলে নিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাফিউল আজম জুয়েল বলেন, "এখানে ক্ষমতার কিছু নাই। আমি ইউনিয়নের বাসিন্দা, আমি ছাত্র, আমি জুলাই আন্দোলনের একমাত্র নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তি। ছাত্র আন্দোলন করার পর যখন দেখলাম আমার ইউনিয়নের অবস্থা এই রকম। তখন বন্যা পরবর্তী সময়ে রাস্তা ঘাটে চলার অবস্থা থাকে না। প্রতিদিন ভ্যান গাড়ি উল্টে যায়। পরে ইউএনওর কাছে যাই যাওয়ার পরে বলি যে কোনো প্রকল্প বা কোনো ভাবে যদি মাটি ফেলানো যায়। তো তখন ইউএনও বলে যে এরকম তো প্রকল্প নাই। একটা বরাদ্দ আছে যেটা আমি দিতে পারি। এই বিষয়ে পরে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারদের সাথে কথা হয়। কথা হওয়ার পরে আর কি এটা হয় আর কি। এর পর ইউএনও দিয়ে দিল। মেম্বাররাও বলল হ্যাঁ এটা করা যেতে পারে। এখানে ক্ষমতার কিছু নেই। আমি একজন ছাত্র, আমি একজন জনতা।"

অভিযোগ রয়েছে আপনি ইউপি সদস্যদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে বরাদ্দ নিয়েছেন এবং বরাদ্দ না দিলে ইউপি সদস্যদের অপসারণের কথা বলেছেন এ বিষয়ে আপনার মতামত কি? অভিযোগটা আসলে কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নের জবাবে জুয়েল জানান, "আমি অপসারণ করতে চাইলে কি আর চাইলে কি অপসারণ হবে নাকি! আমি কে? এখানে চাপের কি আছে। এখানে ইউএনও নিজে সরাসরি হ্যান্ডেল করছে। কিছু একটা করা দরকার। তিনি (ইউএনও) নিজে এসে সরেজমিন পরিদর্শন করে গেছে।"

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে তেমন একটা কাজ করেন নাই এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, "এখানে কিছু বিষয় আছে, ইন্টারনাল কিছু বিষয় আছে আরকি। কাজটা হয়েছে তিনভাগে। প্রথম মেম্বাররা করে গেছে এর পরে আমি ১ লাখ ৯৪ হাজার টাকার কাজ আমি করছি। বাদবাকি কাজ করছে আরেকজন। ওই পাশে চর নেওয়াজী রোডটা ওইটা কন্ট্রাক্টে দেওয়া ছিল। যে ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা বাজেট ওইটা তোমরা করে নিও। ওইখানে যাওয়া হয় নাই আমাদের। তো কিছু ১ লাখ ২৬ হাজার টাকার মতো আমার কাছে আছে।"

এই কাজগুলো করার জন্য জনপ্রতিনিধিরা, সে কাজগুলো করার জন্য আপনাদের কেন দায়িত্ব নিতে হলো? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "তারা ১৪ বছরে কি করছে! ১৪ বছরে তারা একটা মাটিও ফেলায় নাই। কাবিখার নামে ২ ইয়া মাটি ফেলে কাজ শেষ এগুলো খাওয়ার ধান্দা ছাড়া কিছুই না। আমরা শুধু একটা ফেয়ার একটা কাজ চাচ্ছিলাম। এর মধ্যে আমাকে রাজনৈতিক ভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা। এটা একটা প্রোপাগান্ডা।"

এসব বিষয়ে মোহনগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, "ইউএনও জুয়েলকে বরাদ্দ দিতে বলে৷ আমরা দরিদ্র মানুষের জন্য সেলাই মেশিন, নলকূপ ও স্প্রে মেশিনের প্রকল্প দাখিল করছিলাম। ইউএনও সমন্বয়কদের বরাদ্দ দিতে বলায় সেগুলো বাতিল করে তাকে (জুয়েল) দেওয়া হয়েছে। আমরা তাদেরকে বরাদ্দ দিতে প্রথমে রাজি ছিলাম না পরে ইউএনও বলার পর তাদেরকে বরাদ্দটা দিয়ে দিয়েছি।"

চেয়ারম্যান-মেম্বারদের চাপ প্রয়োগ করে নাফিউল আজম জুয়েলকে বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজিবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর আহমেদ বলেন, "আমি চাপ প্রয়োগ করবো কেন? এটা বললে তো হবে না। আমি তাদের বলতে যাবো কেন? এটা তো তাদের বিষয়। এরকম অভিযোগ করলে তো সমস্যা। আন্দাজে বললে তো হবে না। ওদেরকে আমার সাথে যোগাযোগ করতে বলেন কোথায় সমস্যা। এরকম যদি অভিযোগ আসে আমরা ব্যবস্থা নিবো। সমন্বয়কদের কিভাবে দেওয়া হবে এটা তো ইউনিয়ন পরিষদের কাজ। এসব উল্টাপাল্টা অভিযোগ করলে তো সমস্যা। এমন করলে তো তাদের বিরুদ্ধে আমি ব্যবস্থা নিবো৷ রেকর্ড দিন এসব উল্টাপাল্টা বললে তাদের বিরুদ্ধে আমি ব্যবস্থা নিবো। সে (জুয়েল) উল্টাপাল্টা করে থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আর এখানে ইউএনওকে জড়ানোর কোনো দরকার নাই, কোনো প্রয়োজন নাই৷ আইন আইনের মতো করে চলবে। একজন বলল আর তাই হয়ে গেলো নাকি!"

এর আগে সরকার পতনের পর ১০, ১১ ও ১২ আগস্ট নাফিউল আজম জুয়েল মোহনগঞ্জের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সমন্বয়ক পরিচয়ে উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে সাক্ষাৎ করেন। এবং এর পরেই বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে সরকারি নানা দপ্তর থেকে বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে আসছেন তিনি। যা নিশ্চিত করেছেন সেই সময় তার সঙ্গে থাকা একাধিক শিক্ষার্থী।

 

রাজিবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর আহমেদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করছেন নাফিউল আজম জুয়েল সহ অন্যান্যরা। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সংগঠক ও রাজিবপুর উপজেলা ছাত্র প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম রবিন বলেন, "নাফিউল আজম জুয়েল নামের আমাদের কোনো সমন্বয়ক নেই। যিনি সমন্বয়ক পরিচয়ে প্রকল্প নিয়ে তার সাথে আমাদের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের কোনো প্রকার সম্পর্ক নেই।"

মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে নাফিউল আজম জুয়েল সহ অন্যান্যরা। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলা শাখা। মুখপাত্র জান্নাতুল তহুরা তন্বীর সাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "নাফিউল আজম জুয়েল বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেউ নন। তার সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। কমিটির বাইরে কেউ যদি সমন্বয়ক পরিচয় চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দুর্নীতি ও কোনো অপরাধ করলে তার দায়ভার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বহন করবে না।" সরকারি অর্থ আত্মসাতের সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রমাণ সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিও জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে।

নাফিউল আজম জুয়েল ওয়াজ ও দোয়া মাহফিলের ব্যানারে নিজেকে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক হিসেবে দাবি করেন।

 

নাফিউল আজম জুয়েল ওয়াজ ও দোয়া মাহফিলের ব্যানারে নিজেকে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক হিসেবে দাবি করেছেন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকাপ্রকাশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টির আন্দোলনকারী ছাত্র ও সমন্বয়কদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। বিশ্ববিদ্যালয়টির জুলাই ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত দুই শিক্ষার্থী, সাকেব হাসান ও তালহা রায়েন জানান, "নাফিউল আজম জুয়েল নামে আমরা কাউকে চিনি না। আমাদের আন্দোলনে এ নামে কোনো সমন্বয়কও ছিলেন না।"

তারা আরও জানান, "ওয়াসিফ তাজওয়ার ও ফয়সাল আশিক-ই জুলাই ছাত্র আন্দোলনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টির নেতৃত্ব দিয়েছেন।"

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টির সমন্বয়ক ওয়াসিফ তাজওয়ার ও ফয়সাল আশিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ফয়সাল আশিক ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, "নাফিউল আজম জুয়েল নামে কাউকে আমরা চিনি না। আমাদের আন্দোলনে এ নামে কোনো সমন্বয়কও ছিলেন না।"

ওয়াজ ও দোয়া মাহফিলের ব্যানারে নাম কেন? এছাড়াও একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টির সমন্বয়ক পরিচয় ব্যবহার করেছেন এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে নাফিউল আজম জুয়েল বলেন, "ভাই পাশেই মাহফিল। ভাইব্রাদার দিয়েছে। আমার বাড়ির পাশেই মাহফিল। এখানে নাম দিতে পারে না? ওটা যে নাম দিছে আমি জানি-ই না। আন্দোলন তো আমরা ভার্সিটি কেন্দ্রিক-ই করছি। তো ওখানে লিখছে যে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির (সমন্বয়ক)। ভার্সিটির ট্যাগ লাগাইছে ওইটা।"

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা ছাত্রদলের এক সদস্য জানান, "জুয়েলকে খুব কাছ থেকেই আমি দেখেছি। হঠাৎ তার আর্থিক ও সামাজিক পরিবর্তনে হতবাক হয়েছি। কয়েকজন নেতা-কর্মীকে বিভিন্ন সময় উপহার ও অর্থ দিয়ে সাহায্য করার কথাও শুনেছি।"

রাজনীতির সাথে কত বছর ধরে জড়িত আছেন? এবং জানতে পেরেছি বিভিন্ন সময় আপনি দলীয় নেতাদেরকে উপহার দেন এই বিষয়ে আপনার মতামত কি? জবাবে জুয়েল জানান, "আমার ব্যবসা ছিল ফোনের। আমার বিজনেস ফোনের। উপহার দেই বলতে যে রেটে কিনি সেই রেটেই দেই।"

তিনি (জুয়েল) প্রায় ১০ বছর থেকেই ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পূর্বেই অবগত করেছিলেন।

নাফিউল আজম জুয়েল-এর সম্পর্কিত মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রদলের কমিটির তথ্য। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলছেন স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার পতনের পর এলাকায় আপনি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি? জবাবে তিনি (জুয়েল) বলেন, "আমি নিজেও এগুলোর পক্ষপাতী না। স্বৈরাচারীকে পতন করে যদি আমি নিজেই স্বৈরাচারের মতো আচরণ করি। বিষয়টা কেমন না। আমি অত্যন্ত মানবিক নিজে না খেয়ে মানুষকে খাওয়ানোর চেষ্টা করি। আর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যারা তাদের নাম প্রকাশ করা প্রয়োজন। আর কারা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেটা আমি জানি।"

সবশেষ জানতে চাই, দলীয় এবং সমন্বয়ক এক সাথে দুইটা পরিচয় বহন করা যায় কিনা? জবাবে তিনি (জুয়েল) আরও বলেন, "শোনেন আপনাদের না ডিপ নলেজটা অনেকটা কম। রাজিবপুরে যারা সমন্বয়ক পরিচয় দেয় তাদের ভূমিকা আর আমার ভূমিকার মধ্যে পার্থক্য কি? বলতে পারবেন? তারা যা করছে আমিও করছি। তারাও ছাত্র আমিও ছাত্র। তাদেরও কমিটি নাই আমারও কমিটি নাই। সবাই কি সমন্বয়ক? আমি সমন্বয়ক পদধারী কেউ না৷ কোথাও আপনি যদি দেখেন লাস্ট ইউনিয়নে একটা কমিটি হয়েছে। সেদিন আমাকে সরিয়ে দেওয়ার পর কোথাও আমি বলি নাই আমি সমন্বয়ক। আমি রাজনীতি করি ক্লাস ৯ম ১০ম শ্রেণী থেকে। ২০১৪ সালে মামলায় ১৪ বার হাজিরা দিছি। ফ্যাসিস্ট হাসিনার সময়ে। আমি কোনো সমন্বয়ক না আমি একজন ছাত্র। আর আমার পদ হচ্ছে আমি জাতীয়তাবাদের সৈনিক। আমি মোহনগঞ্জের মানুষের কাছে হিসেব দিতে রাজি আছি। এখানে অনেক পরিশ্রম করছি। নিজের পকেটের টাকাও তো খরচ হয়েছে।"

ছাত্রদল নেতা নাফিউল আজম জুয়েলের বিষয়ে রাজিবপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোখলেছুর রহমান ও সদস্য সচিব নাজমুল মাহমুদ এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাফিউল আজম জুয়েল-এর নাম কমিটিতে বহাল থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাজিবপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোখলেছুর রহমান।

Header Ad
Header Ad

দেশজুড়ে রথযাত্রা উৎসব শুরু আজ

ছবি: সংগৃহীত

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উৎসব শুরু আজ। সনাতনী রীতি অনুযায়ী, প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শুরু হয় জগন্নাথদেবের রথযাত্রা।

বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে আনন্দমুখর পরিবেশে ৯ দিনব্যাপী শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা মহোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। আগামী ৫ জুলাই বিকেল ৩টায় উল্টো রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে এই উৎসব শেষ হবে। এ বছর ঢাকাসহ সারা দেশে ইসকনের ১২৮টি মন্দির ও আশ্রমে এদিন রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, জগন্নাথদেব হলেন জগতের নাথ বা অধীশ্বর। জগৎ হচ্ছে বিশ্ব আর নাথ হচ্ছেন ঈশ্বর। তাই জগন্নাথ হচ্ছেন জগতের ঈশ্বর। তার অনুগ্রহ পেলে মানুষের মুক্তিলাভ হয়। জীবরূপে তাকে আর জন্ম নিতে হয় না। এই বিশ্বাস থেকেই রথের উপর জগন্নাথ দেবের প্রতিমূর্তি রেখে রথ নিয়ে যাত্রা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

শুভ রথযাত্রা উপলক্ষ্যে ঢাকায় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) আয়োজিত ৯ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান মালায় রয়েছে, হরিনাম সংকীর্তন, বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামানায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, পদাবলী কীর্তন, আরতি কীর্তন, ভগবত কথা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শ্রীমদ্ভাগবত গীতা পাঠ, ধর্মীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শন ও ধর্মীয় নাটক মঞ্চায়ন।

ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী জানান, ইসকন স্বামীবাগ আশ্রমে শুক্রবার সকাল ৮টায় বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞের মধ্য দিয়ে শুভ রথযাত্রা মহোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়ে দুপুর দেড়টায় আলোচনা সভা শেষে বিকেল ৩টায় রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করা হবে।

ঢাকায় রথযাত্রার রুট উল্লেখ করে তিনি জানান, স্বামীবাগ আশ্রম থেকে রথযাত্রা শুরু হয়ে জয়কালী মন্দির, ইত্তেফাক মোড়, শাপলা চত্বর, দৈনিক বাংলা মোড়, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেট, পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেস ক্লাব, কদম ফোয়ারা, হাইকোর্ট মাজার, দোয়েল চত্বর, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জগন্নাথ হল, পলাশী মোড় হয়ে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে গিয়ে পৌঁছবে। পরে আগামী ৫ জুলাই বিকেল ৩টায় উল্টোরথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা একই পথে বিপরীত দিক থেকে অর্থাৎ ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির থেকে স্বামীবাগ আশ্রমে আনা হবে।

এছাড়া পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারের জগন্নাথ জিউ ঠাকুর মন্দির, জয়কালী রোডের রামসীতা মন্দির এবং শাঁখারীবাজার একনাম কমিটিসহ রাজধানীর অন্যান্য মন্দির ও দেশের বিভিন্ন মন্দিরেও রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

Header Ad
Header Ad

ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ বিলিয়ন ডলারের গোপন প্রস্তাব

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের সঙ্গে সমঝোতায় গোপনে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনা এবং মার্কিনদের কথামতো চালাতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন নানাভাবে চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে চারটি সূত্র সিএনএনকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র মতে, ট্রাম্প প্রশাসন ইরানকে বেসামরিক-শক্তি উৎপাদনকারী পারমাণবিক কর্মসূচি গড়ে তুলতে সহায়তা করার জন্য ৩০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত অর্থ প্রদান, নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা এবং বিশ্বব্যাপী ইরানের ফ্রিজ হওয়া তহবিলের বিলিয়ন ডলার মুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা করেছে। আর এ সবই করা হচ্ছে অত্যন্ত গোপনে।

যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের মূল খেলোয়াড়রা গত দুই সপ্তাহে ইরান ও ইসরায়েলে সামরিক হামলার মধ্যেও পর্দার আড়ালে ইরানিদের সঙ্গে কথা বলেছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর এই সপ্তাহেও আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেছেন, বেশ কয়েকটি প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে। এগুলো প্রাথমিক ও ক্রমবর্ধমান। তবে একটি অ-আলোচনাযোগ্য শর্ত বহাল রয়েছে। তা হলো, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শূন্য হতে হবে। যদিও ইরান ধারাবাহিকভাবে বলেছে, তাদের প্রয়োজনে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ করা হচ্ছে তবুও চাপ প্রয়োগকারীরা এ শর্তে ছাড় দিতে নারাজ। দুটি সূত্র সিএনএনকে অন্তত একটি প্রাথমিক খসড়া প্রস্তাব সরবরাহ করেছে। এতে ইরানের জন্য বেশ কয়েকটি প্রণোদনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং উপসাগরীয় অংশীদারদের মধ্যে একটি গোপন বৈঠকে কিছু বিবরণ চূড়ান্ত করা হয়েছে। মার্কিন সামরিক হামলার আগের দিন ছিল কয়েক ঘণ্টার সেই বৈঠক সম্পর্কে জানা দুটি সূত্র সিএনএনকে এসব নিশ্চিত করেছে।

আলোচিত শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, ইরানের একটি নতুন অ-সমৃদ্ধকরণ পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য আনুমানিক ২০-৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হবে। এ কেন্দ্র বেসামরিক শক্তি উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হবে। ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং প্রস্তাব সম্পর্কে জানা সূত্রগুলো সিএনএনকে জানিয়েছে, অর্থ সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসবে না; বরং আরব অংশীদাররা এই বিল পরিশোধ করার পথ খোঁজা হচ্ছে। ইরানের পারমাণবিক শক্তি সুবিধাগুলোতে বিনিয়োগের বিষয়টি সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পারমাণবিক আলোচনার পূর্ববর্তী রাউন্ডগুলোতেও আলোচিত হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই আলোচনাগুলোর নেতৃত্ব দিতে ইচ্ছুক। পারমাণবিক কর্মসূচি গড়ে তুলতে কারও না কারও অর্থ প্রদান করতে হবে। তবে আমরা সেই প্রতিশ্রুতি দেব না।

অন্যান্য প্রণোদনার মধ্যে রয়েছে ইরানের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা অপসারণের সম্ভাবনা এবং ইরানকে ৬ বিলিয়ন ডলার ফ্রিজ সম্পদ ব্যবহার করতে দেওয়া, যা বর্তমানে বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রয়েছে এবং তারা বহু বছর তা অবাধে ব্যবহার করতে পারছে না।

সূত্র সিএনএনকে বলেছে, বিভিন্ন মানুষের দ্বারা অনেক ধারণা উত্থাপিত হচ্ছে এবং তাদের অনেকেই সৃজনশীল হওয়ার চেষ্টা করছে। এখানে কী ঘটবে, তা সম্পূর্ণরূপে অনিশ্চিত। ইসরায়েলি ও মার্কিন হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে প্রথম পাঁচ রাউন্ডের আলোচনা সম্পর্কে জানা একটি পৃথক সূত্রও একই তথ্য দিয়েছে।

উইটকফ বুধবার সিএনবিসিকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি শান্তি চুক্তি চায়। সব প্রস্তাব ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র প্রাপ্তি থেকে বিরত রাখার জন্য নকশা করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র বলেছে , ইরান শান্তিপূর্ণ বেসামরিক উদ্দেশ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি চালু রাখতে পারে। তবে সেই কর্মসূচির জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না। পরিবর্তে ইরান সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম স্বল্প মাত্রায় আমদানি করতে পারবে। কতটুকু খরচ হচ্ছে, তা পর্যবেক্ষকদের নিয়মিত জানাতে হবে।

উইটকফ বলেন, এখন ইরানের সঙ্গে আলোচনা হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমরা কীভাবে ইরানকে উন্নত বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচি চালু রাখার সুযোগ দেব, সেটিই মুখ্য।

 

Header Ad
Header Ad

প্রত্যেক জেলায় হাসপাতালের মত সিনেমা হলও দরকার: জাহিদ হাসান

ছবি: সংগৃহীত

‘প্রত্যেকটা জেলায় শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য যেমন হাসপাতাল আছে তেমনি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সিনেমা হল থাকা দরকার। সুস্থ বিনোদন থাকলে মানুষ নেশা, হানাহানি ও মব জাস্টিস থেকে দূরে থাকবে। আমাদের যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাসস্থান দরকার তেমনি বিনোদনের জন্য সিনেমা হল দরকার।’

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানী বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘উৎসব’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনী শেষে কথাগুলো বলছিলেন নন্দিত অভিনেতা জাহিদ হাসান।

‘উৎসব’ সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান। চরিত্রের নাম জাহাঙ্গীর। শুটিংয়ের বহুদিন পেরিয়ে গেলেও জাহাঙ্গীর চরিত্রের মধ্যে থেকে এখনো বের হতে পারেননি বলেন জানালেন এই অভিনেতা।

 

ছবি: সংগৃহীত

জাহিদ হাসান বলেন, ‘এখনো আমি এই চরিত্রটার মধ্যে ডুবে আছি। সিনেমার আমার চরিত্রের নাম জাহাঙ্গীর। আসলে আমাদের প্রত্যেকটা মানুষের মাঝে জাহাঙ্গীর লুকিয়ে আছে। কারণ, আমাদের প্রত্যেকটি মানুষের মাঝে হিরোইজম আছে, ভিলেন আছে। আছে উপলব্ধি করার ক্ষমতা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমাদের সেই রিয়েলাইজেশনের সময়টা আছে। কখন মৃত্যু হয় আমরা জানি না। এই রিয়েলাইজ যদি আমাদের মধ্যে থাকে তাহলে আজ আমরা যারা জাহাঙ্গীরের মত আছি, কাল আমরা ভালো হয়ে যাবো।’

ঈদের সিনেমা মানেই এখন যেন অ্যাকশন অথবা থ্রিলার। গত কয়েক বছরে ঈদে বাজিমাত করা সিনেমাগুলোর দিকে তাকালে এমনটাই মনে হতে পারে। সেসব থেকে বেরিয়ে হাস্যরস পরিবার এবং সম্পর্কের গল্পে এবার ঈদে বাজিমাত করেছে ‘উৎসব’। এই সফলতার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করলেন প্রত্যেক শিল্পীর সততাকে।

জাহিদ হাসানের কথায়, ‘প্রডাক্টশন বয় থেকে শুরু করে এই সিনেমার সঙ্গে আমরা যারা যুক্ত ছিলাম তারা প্রত্যেকেই অনেক সৎ ছিলাম। অভিনয় নিয়ে কোনো অসৎ অবস্থার মধ্যে আমরা যাইনি। এটাই মনে হয় আমাদের সফলতার বড় বিষয়। এই সিনেমার প্রত্যেকটি দৃশ্যের সঙ্গে আমাদের আবেগ জড়িয়ে আছে।’

করোনা মহামারির পর অভিনয়ে খুব একটা দেখা যায়নি জাহিদ হাসানকে। নির্মাতাদের সঙ্গে অভিনয় নিয়ে খুব একটা কথা হয়নি তার। কারোনার পর ‘উৎসব’-ই তার প্রথম সিনেমা। তার ভাষ্য, ‘করোনার পর খুব একটা অভিনয় করা হয়নি। আমাকে অভিনয়ে নেওয়া বা না নেওয়াটা নির্মাতাদের দায়িত্ব। বলতে গেলে গত কয়েকবছর সেভাবে সুযোগও আসেনি। ‘উৎসব’ সিনেমার মধ্যে সেই সুযোগটা এলো। অভিনয় করলাম। দর্শক প্রতিক্রিয়া দেখে বুঝেছি অন্তত ফেল করিনি।’

 

ছবি: সংগৃহীত

সিনেমার হলের সংখ্যা কম হওয়ায় দেশের সিনেমা সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছচ্ছে না বলে দুঃখ প্রকাশ করেন জাহিদ হাসান। সেইসঙ্গে জেলা প্রশাসকদের বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ারও অনুরোধ জানান তিনি।

জাহিদ হাসান বলেন, ‘আমার বাড়ি সিরাজগঞ্জ। আমার বোন ফোন করে বললেন এখানে তো সিনেমা হলে নেই। তাই আমরা সিনেমা দেখতে পারছি না। এই কথা শুনে কষ্ট পেয়েছি। এটা সত্য সিরাজগঞ্জের মত দেশের অনেক বড় শহরে সিনেমা হল নেই। জেলা প্রশাসকসহ দায়িত্বশীল পর্যায়ে যারা আছে তাদের সবাইকে অনুরোধ করবো তারা যেন প্রত্যেকটি জেলায় সিনেমা হলের ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়ে তার বাস্তবায়ন করেন।’

তানিম নূর পরিচালিত ‘উৎসব’ সিনেমায়ি জাহিদ হাসান ছাড়াও অভিনয় করেছেন জয়া আহসান, অপি করিম, চঞ্চল চৌধুরী, আফসানা মিমি, তারিক আনাম খান, আজাদ আবুল কালাম, ইন্তেখাব দিনার, সুনেরাহ বিনতে কামাল, সৌম্য জ্যোতি, সাদিয়া আয়মান।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দেশজুড়ে রথযাত্রা উৎসব শুরু আজ
ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ বিলিয়ন ডলারের গোপন প্রস্তাব
প্রত্যেক জেলায় হাসপাতালের মত সিনেমা হলও দরকার: জাহিদ হাসান
দেশে ফিরতে ইরান থেকে পাকিস্তান পৌঁছেছেন ২৮ বাংলাদেশি
যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির সাক্ষাৎ
খুলনায় বিএনপির নেতার বাড়ি ভাঙচুর, এসআই সুকান্ত চুয়াডাঙ্গায় গ্রেপ্তার
বিশেষ সুবিধা: ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের কার কত বেতন বাড়ছে
হানিয়া আমিরের সঙ্গে সিনেমায় অভিনয়, ভারতে দিলজিৎকে নিষিদ্ধের দাবি
আমি যদি ভবিষ্যতে শেখ হাসিনার মতো করি, আমারও পতন হবে: কাদের সিদ্দিকী
চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে জোট গড়ছে না বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের নামে থাকা ৯৭৭ স্থাপনার নাম পরিবর্তন
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে ‘পাবলিক’ রাখতে হবে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইল
প্রকৃত ঘটনা জানলে হাসনাত আবদুল্লাহ তার ভুল বুঝতে পারবেন: দুদকের ডিজি
বিরামপুরে আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস পালিত
এনসিপির তুষারের বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর আলাপ’সহ যত অভিযোগ নীলা ইসরাফিলের
২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ১৯ জনের করোনা শনাক্ত
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছর নির্ধারণ করে স্বৈরাচারকে রুখে দেয়া হয়েছে: সালাহউদ্দিন আহমদ
নীরবতা ভেঙে খামেনি বললেন, ইরান ‘বিজয়’ অর্জন করেছে (ভিডিও)
সাংবাদিকতায় বাংলাদেশের মতো স্বাধীনতা উন্নত বিশ্বেও নাই: প্রেস সচিব
রংপুরে দেশীয় অস্ত্র ও অবৈধ মাদকসহ ২ যুবক গ্রেফতার