বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

কুড়িগ্রামের চাকিরপশার ‘বিল’ না ‘নদী’, বিতর্ক চরমে

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার অভ্যন্তরে অবস্থিত চাকিরপশার বিলকে ঘিরে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। এটি নদী না বিল এ নিয়ে চলছে পক্ষে বিপক্ষে তুমুল বিতর্ক। পরিবেশবাদী সংগঠন রিভারনাইন পিপলস ও চাকিরপশার সুরক্ষা কমিটি এটিকে নদী ঘোষণার জন্য আন্দোলন চালিয়ে আসছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের টেকনিক্যাল কমিটি। স্থানীয় প্রভাবশালী মহল কর্তৃক দখল করা বিলটি যখন উদ্ধার করা যাচ্ছিল না, তখন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের তৎপরতায় পরিবেশ ও প্রতিবেশের জন্য এটি আশাব্যঞ্জক হলেও চাকিরপশার বিলকে কীভাবে নদ বা নদী বলা যায় তা নিয়ে বিতর্ক থামছেই না।

বিতর্কের মাঝেই জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের টেকনিক্যাল কমিটি তাদের প্রতিবেদনে চাকিরপশারকে কোথাও নদ বা নদী হিসেবে উল্লেখ করেনি। তারা এটিকে বিল হিসেবে উল্লেখ করে বিলের পানির প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য পরামর্শক হিসেবে ইটাকুড়ি বিল থেকে চাকিরপশার বিল পর্যন্ত প্রতিবন্ধক সড়কগুলোতে সেতু নির্মাণ এবং ব্যক্তি মালিকানায় দখল করা জায়গা রেকর্ড সংশোধনের মাধ্যমে পুকুর পাড় অপসারণ করে পানির প্রবাহ ঠিক রাখার পরামর্শ দিয়েছে। তারপরও কেউ কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিলের নাম গোপন করে এটিকে নদ বা নদী হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করছেন। যার আদৌ কোনো সত্যতা, তথ্য-উপাত্ত বা ভিত্তি পাওয়া যায়নি।

সরেজমিন চাকিরপশার বিলে গিয়ে দেখা যায়, দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা শহরের এক কিলোমিটারের মধ্যেই অবস্থিত একটি অশ্বখুড়ের মতো গোলাকার বিল বা ছড়া। মাঝখানে কৈলাশকুটি নামে একটি গ্রাম রয়েছে। এই বিল বা ছড়ার সাথে নদীর কোনো সংযোগ নেই। আশির দশকে তৎকালীন জিয়া সরকার খাল খনন কর্মসূচির মাধ্যমে বিলের পানি সহজে নদীতে স্থানান্তর করতে একটি সংযোগ খাল তৈরি করে। যা উলিপুরের বুড়ি তিস্তা খাল হয়ে ব্রহ্মপূত্র নদে গিয়ে পড়ত।

পরবর্তীতে পানি উন্নয়ন বোর্ড পানি নিষ্কাশন ও খাল খনন প্রকল্পের আওতায় জমি অধিগ্রহণ করে। তারা সেচ কার্যক্রম ও পানির প্রবাহ ধরে রাখার জন্য পার্শ্ববর্তী উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের গোড়াইপিয়ার নামক স্থানে একটি রেগুলেটর স্থাপন করে। পরবর্তীতে অধিগ্রহণ করা খাল বা নালার সংস্কার কাজ না করায় এখন সেটি সরেজমিনে পরিণত হয়েছে। কোথাও নালার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। চাকিরপশার বিল থেকে রেগুলেটরের দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। মাঝখানে কোনো খাল বা নালার অস্তিত্ব না থাকায় চাকিরপশারকে কীভাবে নদ বা নদী বলা হচ্ছে এ নিয়ে হতবাক এলাকার মানুষ। তথাকথিত চাকিরপশার নদের উৎপত্তিস্থল বলা হচ্ছে ৩ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত ইটাকুড়ি বিল থেকে। ইটাকুড়িও একটি বদ্ধ জলাশয়, বিল বা নালা। এর সাথে তিস্তা নদীর কোনো সংযোগ নেই। এই বদ্ধ বিল বা জলাশয় থেকে নদ বা নদী কীভাবে উৎপত্তি হলো তা নিয়ে গবেষণা হতে পারে। ফলে রিভারনাইন পিপলসের নদী নিয়ে আন্দোলন কতটা যুক্তিসঙ্গত- তা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের টেকনিক্যাল টিমের এক কর্মকর্তা জানান, নদী রক্ষা কমিশন থেকে যে টেকনিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছিল তাদের কর্মকাণ্ড ছিল একপেশে। ফলে টেকনিক্যাল টিমের সাথে ভিন্নমত পোষণ করে তাতে স্বাক্ষর করেননি কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রাজারহাট উপজেলার ভূমি কর্মকর্তা।

রাজারহাট ভূমি অফিসের রেকর্ড অনুসারে দেখা যাচ্ছে, রাজারহাট ও চাকিরপশার ইউনিয়নের মধ্যে অবস্থিত চাকিরপশার বিলটি বদ্ধ জলাশয় হিসেবে তৎকালীন ১৯৪০ সালে ভারত সম্রাটের নামে ‘বিল শ্রেণি’ হিসেবে সিএস রেকর্ডে নথিভুক্ত হয়। ৫টি মৌজায় ৬টি খতিয়ানে মোট ২৫৯.৪৫ একর জমি নথিভুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে পাকিস্তান সরকারের পক্ষে রংপুর কালেক্টরের নামে ১ নম্বর খাস খতিয়ানে ৫টি মৌজায় ৫টি খতিয়ানে ১৮৪.০৮ একর জমি ‘বিল শ্রেণি’ হিসেবে রেকর্ডভুক্ত করা হয় ১৯৬২ সালে। এরপর নব্বই দশকের সময় ভূমিখোরদের আগ্রাসনে কমতে থাকে সরকারি নথিভুক্ত জমি। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সিএসএ জমি রেকর্ড করা হয় ২৬৫,৩১ একর, এসএ রেকর্ডে ১৮৪.০৮ একর এবং আরএস রেকর্ডে ৩৬.২৮ একর। অসাধু ব্যক্তিরা কতটা বেপরোয়া হলে এমন হতে পারে সেটি এখানকার জমির সর্বশেষ অবস্থান দেখলে বোঝা যায়। দীর্ঘ সময় ধরে বিলগুলো গ্রাস করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে তারা আসলে কার পক্ষে কাজ করেছেন।

নথি ঘেটে ৫টি মৌজায় কীভাবে বিলগুলো গ্রাস হয়েছে তার চিত্র দেখে চমকে উঠার মতো। চাকিরপশার তালুকে সর্বশেষ রেকর্ড করা হয়েছিল ২০.৩৩ একর জমি। এখন সরকারের ভাগে রয়েছে মাত্র ৫.১১ একর জমি। ভূমি দস্যুদের নামে রেজিস্ট্রি হয়ে গেছে ১৫.২২ একর জমি । নাফাডাঙ্গা বিলের ৮৮.৫৩ একর জমির মধ্যে বন্দোবস্ত ও ব্যক্তিগত মামলায় লোপাট হয়ে গেছে ২,৪০৫ একর জমি। একই অবস্থা চান্দামারী বিলের ৮৩.৭৯ একর জমির। এই বিলের ৪২,৬৭ একর ভূমি সরকারি ফাইল থেকে গায়েব হয়ে ব্যক্তি মালিকানায় চলে গেছে। সদাগড় বিলের ২৩.৫৩ একর জমির মধ্যে ১৬.৭৩ একর রেকর্ডভুক্ত হয়েছে ব্যক্তি মালিকানায়। সর্বশেষ খালিশা বিলের ৮৩.৭৯ একর জমির মধ্যে বন্দোবস্ত ও ব্যক্তিগত মামলায় লোপাট হয়ে গেছে ৪৯.১৩ একর জমি । এ ব্যাপারে রাজারহাট ভূমি অফিসের ভাষ্য, সরকার থেকে মাঠ পর্যায়ে ব্যক্তির নামে রেকর্ড সংশোধনের জন্য রংপুর জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে আপত্তি দায়ের করা হয়েছে এবং আদালতের ডিগ্রির বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

দীর্ঘ সময় ধরে এসএ ও আরএস এর মাধ্যমে কতিপয় অসাধু ব্যক্তিদের খাস করা জমি এখন ১১৬টি হোল্ডিংয়ে পরিণত হয়েছে। অবৈধ কাগজপত্র তৈরি করে তারা ষাটের দশক থেকে এ সব জমি ভোগদখল করে আসছে। আগে বাপ-দাদারা জমি ভোগ করেছে, এখন করছে তাদের সন্তানরা। হচ্ছে হাত বদল। সারা বছর ধরে পানির প্রবাহ থাকা বিলকে তারা শ্রেণি পরিবর্তন করে জলাশয় থেকে কাগজে-কলমে দোলা শ্রেণিতে পরিণত করেছে। এর ফলে উজানের শত শত কৃষকের একরের পর একর ফসলি জমি বর্ষায় জলাবদ্ধতার কারণে খালি ফেলে রাখতে হচ্ছে।

এদিকে চাকিরপশার বিলের প্রবাহ বন্ধ করে পুকুরের মতো পাড় দিয়ে ছোট ছোট ডোবায় ভাগ-বাটোয়ারা করে ব্যক্তিগতভাবে মাছ চাষ করছে অবৈধ দখলদাররা। এতে সৃষ্টি হয়েছে প্রতিবন্ধকতা। এর ফলে উজানের পানি এখন আর এদিক দিয়ে বের হচ্ছে না। নিষ্ঠুরভাবে পরিবেশ ও প্রতিবেশের উপর দেয়াল তুলে দিয়েছে তারা। সরকারের এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের এই বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের ফলে চাকিরপশার বিল হারিয়ে ফেলেছে তার শারীরিক কাঠামো। এতে বৃত্তবানদের কাছ থেকে মালিকানা হারিয়েছে সাধারণ মৎসজীবীরা। পানিতে নামলেই লাঠিয়াল বাহিনী তেড়ে আসছে। ভূমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে উচ্ছেদে যেতেও পারছে না প্রশাসন।

সমাজকর্মী ও হরিশ্বর তালুক উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ মোল্লা (৭৪) জানান, আমরা কখনো দেখিনি এটা নদী। জন্মের পর থেকে রাজারহাটবাসী এটাকে বিল হিসেবে দেখে আসছে। জোড় করে বিলকে নদী বলা যায় না। যে বিলের মাছ খেয়েই আমরা বেড়ে উঠেছি।

চাকিরপশার কিশামত পূর্ণকর গ্রামের আবু হানিফ (৭১) বলেন, ‘হামার বাপ-দাদারা বৃটিশ আমল থাকি এটা বিল বলি জানছে। মাঝোত নদী নিয়ে আন্দোলন হইলো। এতে হামার কি লাভ হইল। আগোত হামরা মাছ মারি খাছি। এ্যালা বিলোত নামবেরে দেয় না। বড়লোকেরা বিলটা খায়া ফেলাল বাহে। হামরা সাধারণ মানুষ মাছ খাবার পাই না।’

তথ্যানুসন্ধান করে দেখা যায়, এই বিলের বড় একটি অংশ প্রায় ৬ একর জমি দখল করে আছে সাবেক চেয়ারম্যান পনির উদ্দিন আহমেদের সন্তান মিন্টু ও বাবলুরা। সাবেক ইসমাইল চেয়ারম্যানের নাতি টিটুরা দখল করে আছে ১০ একর জমি এবং আব্দুল্লাহ সরওয়ার্দীর ছেলে বর্তমান রাজারহাট উপজেলা চেয়ারম্যান বাপ্পীরা দখল করে আছে ৬ একর জমি। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতা আবু বকর ১২ একর জমি দখলে নিয়ে ফারুক নামে একজনকে লিজ দিয়েছে। অপরদিকে পাঠানপাড়া ঈদগাহ মাঠ এলাকার সরকারি লিজকৃত জমি ভোগ করছে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবুনুর গ্রুপের মোশাররফ, রনিসহ বেশ কয়েকজন। ব্র্যাক অফিস থেকে চান্দামারী রামশিং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত সরকারি লিজকৃত জমি ভোগদখল করছে বাপ্পী গ্রুপের রিপন, মুন, রাইসুলসহ বেশ কয়েকজন। এখানে বছরের পর বছর যারা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত তারা এখন মাছবিহীন জীবনযাপন করছে।

মাজাপাড়া গ্রামের নুর ইসলাম (৪৬) জানান, এই চাকিরপশার বিল ও চান্দামারী বিলকে ঘিরে রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার পরিবার। যারা বৃটিশ আমল থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত। মাছের উপর র্নিভরশীল। এসব মাঝি পরিবার এখন পেশী শক্তির কাছে তাদের পেশা হারাতে বসেছে।

রাজারহাট কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অনিমেষ ও মহসিন জানায়, বিলের উপরে এলজিইডি কর্তৃক পাকা সড়ক করা হয়েছে। যারা জমি দখলে রেখেছেন তারাও তীরে পাড় দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। ফলে পরিবেশ ও প্রতিবেশের বিশাল ক্ষতি হয়েছে। এসব কারণে শত শত বিঘা আবাদী জমি জলাবদ্ধতায় চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। এখানে ২২ থেকে ২৫টি পরিবারের জন্য শত শত কৃষক চোখের জল ফেলছে। আমাদের আন্দোলন বিলকে পূর্বের অবস্থায় ফিরে নিয়ে যাওয়া হোক। এটা নদী নয়। জোড় করে এটিকে নদী বানানো যাবে না।

এদিকে চাকিরপশা নদী না বিল এ নিয়ে গত ২০২১ সালের ২ ও ৩ নভেম্বর টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। কমিশনের পরিকল্পনা ও মনিটরিং বিশেষজ্ঞ সৈয়দ মতলুবুর রহমানকে আহ্বায়ক, সহকারি প্রধান মাহমুদুল হাসানকে সদস্য সচিব, পানি বিশেষজ্ঞ মো. সাজিদুর রহমান, কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সদস্য করা হয়। টেকনিক্যাল কমিটির সঙ্গে ছিলেন কুড়িগ্রাম এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী, কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, রাজারহাটের উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার এবং রাজারহাটের ভূমি কর্মকর্তা।

পরবর্তীতে চাকিরপশার বিলকে নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকে বসে এই কমিটি। তবে দ্বিধাবিভক্ত দেখা দেয়। ফলে প্রতিবেদনে স্বাক্ষরদানে বিরত থাকেন কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসি ল্যান্ড। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের প্রতিবেদনটি সর্বজনিন হিসেবে স্বীকৃতি পেতে ব্যর্থ হলেও তারা ঢাকায় গিয়ে নিজেদের মতামতকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রতিবেদনটি জেলা প্রশাসক ও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, কুড়িগ্রাম অফিসকে প্রেরণ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, নদ বা নদীর যে উপসঙ্গগুলো থাকে সেটি এখানে নেই। এখানে কোনো চর পড়ে না, নদী ভাঙন নেই, স্রোতে বা পানির প্রবাহ নেই, তীর বা পাড় নেই। ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত তিস্তা নদীর সঙ্গে কোনো প্রকার সংযোগ নেই। এখানে শুধুমাত্র বর্ষা মৌসুমে তদন্ত করা হয়েছে, শুকনো মৌসুমে এর অবস্থান নির্ণয় করা হয়নি। কিছুটা তাড়াহুড়ো ছিল। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো বিশেষজ্ঞকে দিয়ে পরীক্ষা করা হয়নি। ফলে কমিটি দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়লেও চূড়ান্ত প্রতিবেদনে চাকিরপশার বিলের নাম উল্লেখ না করে পার্শ্ববর্তী উলিপুর উপজেলার বুড়ি তিস্তা বিলের নাম উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, পাকিস্তান আমল থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড তাদের অধিগ্রহনকৃত জমির খাজনা দিয়ে আসছে। আমরা ২০২২-২৩ অর্থবছরে খাল/নালা হিসেবে গত বছরের ২৪ মে ৫ হাজার ৯১২ টাকা খাজনা দিয়েছি। বিল এবং সেচ জমির জন্য রেগুলেটর স্থাপন করা হয়েছে। ফলে এটিকে নদ বা নদী বলার কোনো অবকাশ নেই।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন তাদের চূড়ান্ত রিপোর্টে বলেছেন, গত ১৪/১১/২০২১ তারিখে কমিটি জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে হয়। তৈরি করা প্রতিবেদনে কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌখিকভাবে জানান যে প্রেরিত প্রতিবেদনের সাথে কিছু বিষয়ে তাদের মতদ্বৈততা রয়েছে এবং কিছু বিষয়ে পরিবর্তন প্রয়োজন। পরবর্তীতে মতপার্থক্য দূর না হওয়ায় এবং সেটিতে স্বাক্ষর না হওয়ায় কিছু সুপারিশ দিয়ে চাকিরপশারকে বুড়ি তিস্তার অংশ হিসেবে ধরে এটিকে বিল হিসেবে চুড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের রিপোর্টের ফলাফলে উল্লেখ করা হয়েছে সিএস রেকর্ড অনুযায়ী চাকিরপশার একটি বিল। যা এসএ রেকর্ডে অনেক ব্যক্তির নামে বিল বা দলা শ্রেণি হিসেবে রেকর্ডভুক্ত করা আছে। এ ছাড়া ১ নম্বর খাস খতিয়ানের কৃষি জমি সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা অনুযায়ী ইজারা প্রদান করা আছে। সিএস জরিপ ও বর্তমান অবস্থান অনুযায়ী চাকিরপশার বিলের অভ্যন্তরে বুড়ি তিস্তা নদীর কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ১৯৮০ সালে ব্যক্তির জমি অধিগ্রহণ করে একটি খাল খনন করা হয়। যার মাধ্যমে রাজারহাট উপজেলার নিম্নাঞ্চলের পানি নিষ্কাশিত হয়। চাকিরপশার বিলের সাথে বুড়ি তিস্তা নদীর কোনো সম্পর্ক নেই।

এ বিষয়ে রাজারহাট মীর ঈসমাইল হোসেন ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাজেদুর রহমান চাঁদ জানান, এর আগে ইটাকুড়ি বিল ভোগদখল করে আসছিল ড. তুহিন ওয়াদুদের বাপ-দাদারা । তার দাদা সাফাতুল্যাহ প্রেসিডেন্ট (সাবেক চেয়ারম্যান) ইটাকুড়ি ও চাকিরপশার বিল সংযোগ স্থান ভোগদখল করে নেন। এরপর তার ছেলে অর্থাৎ ড. তুহিন ওয়াদুদের বাবা আব্দুল কুদ্দুছ ডাক্তার সেই জমিগুলো বিক্রি করে দেন।

তিনি আরও জানান, রাজারহাটের ছাটমল্লিকবেগ গ্রামের আহমদ উল্যাহর ছেলে লেবু মিয়া ও তার চাচাতো ভাই ফারুক মন্ডল সেই জমি কিনেছেন। আরো অনেকে সেই জমি কিনে নিজ স্বত্বমূলে ভোগদখল করছে। আগে সে আন্দোলন করেনি। এখন তার বাড়ি চাকিরপশার বিলের উজানে। চাকিরপশার বিলের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় তাদের পারিবারিক কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ জন্য বিলকে নদী বানাচ্ছেন। নিজেকে সুশীল সমাজের ধারক বাহক হিসেবে পরিচিত করতে তিনি এই হীনচেষ্টা চালাচ্ছেন। যেটা কারো কাম্য নয়।

রাজারহাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম জানান, জন্মের পর থেকে বিল হিসেবে দেখে আসছি। চাকিরপশা যদি নদী হয় তাহলে চলনবিলকে এরা মহাসাগর হিসেবে দাবি করবে। জেলার বাইরের মানুষের কাছে আমরা হাসির খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছি। আমাদেরকে বলা হচ্ছে এখানে নাকি নদ-নদী গ্রাস করা হচ্ছে। যেখানে ৪০ দশক থেকে বিল হিসেবে পরিচিতি পেয়ে আসছে সেখানে কোনো বিশেষজ্ঞ দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে কাউকে খুশি করার জন্য এই বিলকে নদী বলা হচ্ছে।বাইরের মানুষ এসে দেখুক চাকিরপশার বদ্ধ জলাশয়, আসলে নদী না বিল।

পরিবেশবাদী সংগঠন রিভারনাইন পিপলস’র পরিচালক ও রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ জানান, চাকিরপশার একটি প্রাকৃতিক প্রবাহ আছে। এর বর্তমান দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ কিলোমিটার। কোথাও চাকিরপশার, কোথাও মরাতিস্তা কোথাও বুড়িতিস্তা নামে পরিচিত। কুড়িগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের তালিকাভুক্ত বুড়িতিস্তা নদীর উজানের অংশ চাকিরশপার।

তিনি আরও জানান, রাজারহাটের ইটাকুড়ি থেকে উলিপুরের থেতরাইয়ের তিস্তা পর্যন্ত একে বাধাহীন করতে হবে, সিএস নকশা ধরে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে হবে, সাধারণদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন করলে চাকিরপশার বাঁচবে। হাজার হাজার একর জমির জলাবদ্ধতা দূর হবে। জেলেরা জীবিকা ফিরে পাবে, জীববৈচিত্র রক্ষা পাবে।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন কর্তৃক গঠিত টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য ও রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরে তাসনিম জানান, আমাদের সংগৃহিত রেকর্ডকৃত কাগজপত্র কখনোই বলছে না চাকিরপশার একটি নদ বা নদী। ফলে কমিটির সাথে আমি দ্বিমত পোষণ করি। বিলের অধিকাংশ জমি বন্দোবস্ত ও ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। তাদেরকে আমি বৈধ কাগজপত্র নিয়ে ডেকেছিলাম। তারা কাগজপত্র দেখিয়েছে। এখন তাদের দাবি করা কাগজপত্র যে সঠিক নয় এটি প্রমাণ করতে আমাকে আইনগতভাবে এগুতে হচ্ছে। উচ্ছেদ করতে গেলে আমাকে আইন মেনেই এগুতে হবে। ভুলগুলো সংশোধন করতে হবে। যে প্রক্রিয়াটা চলমান রয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, সবগুলো অভিযোগ পেয়েছি। পর্যালোচনা করছি। এটি জটিল আকার ধারণ করেছে। সমন্বিতভাবে সমাধান করতে হবে। ইতোমধ্যে চাকিরপশার বিলের ইজারা স্থগিত করা হয়েছে। বিলগুলো অন্যায়ভাবে ব্যক্তি মালিকানা বলে রেকর্ড করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, গেজেট হয়ে থাকলে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনালে আপিল করা হবে। মামলা করা হবে। যদি না হয়ে থাকে তাহলে জোনাল সেটেলমেন্ট রংপুর জোনে আপত্তি করা হবে। যে কাজগুলো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এসআইএইচ

Header Ad

মৌসুমের সর্বোচ্চ ৩৯.২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে নওগাঁ

মৌসুমের সর্বোচ্চ ৩৯.২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে নওগাঁ। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁয় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ ৩৯দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে বদলগাছি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ অফিস। যা জেলায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বেলা তিনটায় এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

বদলগাছি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক হামিদুল হক জানিয়েছেন, আজ জেলায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯দশমিক ২ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাতাসের আর্দ্রতা ২৭ শতাংশে পৌঁছেছে। আকাশ পরিষ্কার থাকায় রোদ এর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী কয়েকদিন জেলায় বৃষ্টির কোনো আগাম বার্তা নেই। দেশে যেহেতু হিট-অ্যালার্ট চলছে তাই খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের না হওয়ায় ভালো।

এদিকে তীব্র তাপদাহে বিপাকে পড়েছে জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ। তাপমাত্রা বেশি থাকায় দৈনন্দিন কাজ করতে তাদের ব্যাঘাত ঘটছে। অনেক স্থানে কাজ না থাকায় অলস সময় পার করছে তারা। তীব্র গরমে একটু গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে অনেকে। জেলায় বর্তমানে ধান কাটাই মাড়াই এর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তীব্র তাপমাত্রায় অতি হয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ইসতিস্কার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লীরা। বৃষ্টির জন্য দুই হাত তুলে প্রার্থনা করেছেন তারা।

তীব্র গরমে বেশি বেশি পানি পান করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এছাড়াও হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন তারা।

চেন্নাইয়ের হয়ে খেলা সবসময় স্বপ্ন ছিল: মোস্তাফিজ

মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

চলমান আইপিএলে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধিত্ব করছেন মোস্তাফিজুর রহমান। এবারের মৌসুমে তিনি চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলছেন। তিনি বর্তমানে দলটির শীর্ষ উইকেট শিকারিও। চেন্নাইয়ের ডাক পাওয়ার পরের অনুভূতি, মহেন্দ্র সিং ধোনিদের সঙ্গে আলোচনা ও দলের অভ্যন্তরীণ আবহ নিয়ে কথা বলেছেন এই টাইগার পেসার।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) চেন্নাইয়ের মিডিয়া বিভাগকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই বাংলাদেশি পেসার বলেন, এটা চেন্নাইয়ের হয়ে আমার প্রথমবার খেলতে আসা। ২০১৬ সালে আইপিএলে আমার অভিষেক হয়, তবে সবসময় স্বপ্ন ছিল এই ফ্র্যাঞ্চাইজির (চেন্নাই) হয়ে খেলা।

মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

‘যখন চেন্নাই টিম ম্যানেজমেন্টের কল আসে, এরপর থেকে সারারাত আর ঘুম আসতেছিল না। এক রকম উত্তেজনা কাজ করছিল। কিন্তু পরদিন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা ছিল, তাই ঘণ্টাখানেকের মতো ঘুমাই, এরপর থেকে শুধু মেসেজ আসছিল। রাত দেড়টার মতো বাজে তখন, সবাই আমাকে অভিনন্দন জানাতে থাকে।’

গত আসরগুলোতে মোস্তাফিজের ফিল্ড সেটাপ নিয়ে অভিযোগ তুলেছে অনেকেই। তবে এবারে আসরে সেই অভিযোগকে ভুল প্রমাণ করেছেন ধোনি। ফলে ধোনি-ব্রাভোদের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেছেন ফিজ।

তিনি বলেন, এখানকার সবাই খুব আন্তরিক, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের। জাতীয় দলে যেমন সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, তেমনি এখানেও শুরু থেকে আমার অস্বস্তি লাগেনি। এখানে বড় ভূমিকা ছিল মাহি (মহেন্দ্র সিং ধোনি) ভাইয়ের, ডিজে ব্রাভো (চেন্নাইয়ের বোলিং কোচ) এবং অন্যান্য কোচিং স্টাফের। ডেথ ওভারে ফিল্ডিং সেট-আপ থেকে শুরু করে ছোট ছোট কিছু বিষয় জানায়, সেগুলো আমার ডেথ ওভারের বোলিংয়ে খুব ভালো কাজে লাগে।’

ফিজ আরও বলেন, মাহি ভাইয়ের সঙ্গে বেশিরভাগ বোলিং নিয়েই কথা হয়, তবে যা হয় মাঠেই। এর বাইরে তেমন কথা হয় না। মাহি ভাই এসেই বলেন যে এটা (কৌশল) করলে ভালো হয়।

মোস্তাফিজুর রহমান এবং মহেন্দ্র সিং ধোনি। ছবি: সংগৃহীত

‘আইপিএলে খেললে একজন ক্রিকেটার অনেক আত্মবিশ্বাস পায়, পুরো টুর্নামেন্টে আন্তর্জাতিক সব তারকা ক্রিকেটাররা থাকে। এখানে যদি আমি সফল হই, যেকোনো জায়গায় সফল হওয়াটা সহজ হয়।’

জাতীয় দলের হয়ে খেলা এই টাইগার পেসার বলেন, যখন আমি বাংলাদেশের হয়ে খেলি তখন বাড়তি প্রেরণা কাজ করে। আর বিশেষ করে যখন ভারত, পাকিস্তানসহ অন্য বড় দলের সঙ্গে খেলি, যেখানে হাইলাইটস হয় বেশি, সবমিলিয়ে বড় দলের সঙ্গে খেলতে সবসময় ভালো লাগে। এসব ম্যাচে দর্শক থাকে অনেক বেশি। খেলা দেখি কম, তবে খেলতে পছন্দ করি।

বৃষ্টি কামনায় টাঙ্গাইলে ইস্তিস্কার নামাজ আদায়

টাঙ্গাইল পৌর শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায়। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

প্রচণ্ড দাবদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন, বৃষ্টি না হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে ধানসহ বিভিন্ন ফসল। নেমে গেছে সেচ পাম্পের পানির স্তর। তাই বৃষ্টির আশায় ও প্রশান্তির জন্য টাঙ্গাইলে বিশেষ নামাজ (সালাতুল ইস্তিস্কার) আদায় করেছেন মুসল্লিরা।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ১০টায় টাঙ্গাইল পৌর শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে জেলা ইমাম ও মুয়াজ্জিন পরিষদের উদ্যোগে নামাজের আয়োজন করা হয়। প্রায় ৫ শতাধিক মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন।

বিশেষ এই নামাজে ইমামতি করেন- টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের খতিব, জেলা ইমাম ও মুয়াজ্জিন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন।

ইস্তিস্কার নামাজে অংশ নেয়া মাদরাসা শিক্ষক মাহবুব আলম বলেন, প্রচণ্ড তাপদাহ থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ ও মোনাজাতে অংশ নিয়েছি। গরমের কারণে মানুষ ও প্রাণিকুল নাকাল হয়ে পড়েছে। সবার খুবই কষ্ট হচ্ছে। জমির আধাপাকা ধানসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হচ্ছে।

টাঙ্গাইল পৌর শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায়। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

তিনি আরও বলেন, এ থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর দরবারে দুই হাত তুলে মোনাজাত করছি। নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের দোয়া কবুল করে এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দেবেন।

মুসল্লি কাদের মিয়া জানান, টানা ক‌য়েক‌দি‌ন ধরে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রখর রো‌দের কার‌ণে জী‌বিকা নির্বাহের জন্য বাইরে বের হ‌তে পার‌ছেন না শ্রমজী‌বী মানু‌ষ। বৃষ্টি না হওয়ায় ফসল নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ কারণে বৃষ্টি চেয়ে আল্লাহর দরবারে দুই রাকাত নামাজ আদায় ও বিশেষ দোয়া করা হয়।

জেলা ইমাম ও মুয়াজ্জিন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ হাহাকার করছে। মহান আল্লাহ কোনো কারণে আমাদের ওপরে নারাজ হয়েছেন। এ কারণে বৃষ্টিবর্ষণ বন্ধ রেখেছেন। আজকে মহান আল্লাহর কাছে বৃষ্টি বর্ষণের জন্য মুসল্লিদের নিয়ে নামাজ আদায় করা। নামাজ শেষে অনাবৃষ্টি এবং গরম থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর রহমত কামনা করে মোনাজাত করেছি।

এদিকে, টাঙ্গাইল ছাড়াও জেলার মধুপুর, গোপালপুর, ঘাটাইল ও সখীপুরে বৃষ্টি ও শান্তি কামনায় বিশেষ নামাজ আদায় করা হয়।

সর্বশেষ সংবাদ

মৌসুমের সর্বোচ্চ ৩৯.২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে নওগাঁ
চেন্নাইয়ের হয়ে খেলা সবসময় স্বপ্ন ছিল: মোস্তাফিজ
বৃষ্টি কামনায় টাঙ্গাইলে ইস্তিস্কার নামাজ আদায়
মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে আরও ৬ ধাপ পেছালো বাংলাদেশ
বৃষ্টি কবে হবে, জানাল আবহাওয়া অফিস
এফডিসিতে ইউটিউবার প্রবেশ নিষিদ্ধ চাইলেন অঞ্জনা
অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা, ক্ষোভে বাসে আগুন দিল শিক্ষার্থীরা
থাইল্যান্ডে হিট স্ট্রোকে ৩০ জনের মৃত্যু
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় ‘এমপিরাজ’ তৈরি হয়েছে: রিজভী
অনুমতি মিললে ঈদের আগেই গরু আমদানি সম্ভব: ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত
আবারও ঢাকাই সিনেমায় কলকাতার পাওলি দাম
ময়মনসিংহে সড়ক দুর্ঘটনায় সাবেক কৃষকলীগ নেতাসহ নিহত ২
গোবিন্দগঞ্জে বৃষ্টির জন্য ইস্তিসকার নামাজ আদায়
বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নগদ অর্থের তথ্য চেয়ে চিঠি দুদকের
ভূমি মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, নেবে ২৩৮ জন
জয়কে আজীবন বয়কট, ২ জনকে সাময়িক বহিষ্কার
বৃষ্টির আশায় নওগাঁর বিভিন্ন উপজেলায় ইসতিসকার নামাজ আদায়
নওগাঁয় ঔষধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
টাঙ্গাইলে পঁচা মাংস বিক্রি, ব্যবসায়ীকে জরিমানা