রবিবার, ১১ মে ২০২৫ | ২৮ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

বৈশাখ ও ঈদ সামনে রেখে জঙ্গিদের বিষয়ে সতর্ক গোয়েন্দারা

পহেলা বৈশাখ ও ঈদ সামনে রেখে জঙ্গিদের নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মনে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, আপাতত জঙ্গিদের হামলা চালানোর সক্ষমতা নেই। কিংবা হামলার কোনো পরিকল্পনাও তাদের নেই। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জঙ্গিদের বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অবশ্য জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও সতর্ক রয়েছেন। সম্প্রতি পুলিশ সদর দপ্তরের এক বৈঠকে পুলিশ প্রধান এসব বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। বৈঠকে উপস্থিত থাকা একাধিক দায়িত্বশীল কমকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন একাধিক কর্মকর্তারা বলেন, উৎসব এলে অনলাইন ও বিভিন্ন মাধ্যমে জঙ্গিদের কার্যক্রম বা তৎপরতা বেড়ে যায়। এজন্য মনিটরিং করা হচ্ছে। পাশাপাশি জঙ্গিদের ধরতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

গত বছরের ২০ নভেম্বর ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পুলিশের চোখে-মুখে পিপার স্প্রে প্রয়োগ করে প্রকাশক দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয় তাদের সহযোগীরা। এদের কাউকেই এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। ইতোমধ্যে ৫ মাস পার হয়ে গেছে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যদি জঙ্গিদের নিয়মিত মনিটরিং না করে এবং তাদের হামলা করার সক্ষমতা ভেঙে না দেয় তাহলে তারা আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে যেতে পারে। আদালতের ঘটনা তার প্রমাণ। বিশ্লেষকদের দাবি, জঙ্গিদের নিয়মিত নজরদারিতে রাখতে হবে। নজরদারি কমে গেলে জঙ্গিরা সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে চাইবে।

এদিকে পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, চলমান রমজান, বাংলা নববর্ষ ও ঈদকে মাথায় রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যেকোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে সতর্ক ও প্রস্তুত রয়েছে।

জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) মো. মনজুর রহমান বলেন, জঙ্গিদের কাযর্ক্রম মনিটরিং করা হচ্ছে। তাদের বিভিন্ন পরিকল্পনা শক্ত হাতে দমন করা হবে। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটকে নির্দেশনা দেওয়া আছে, জঙ্গিরা যাতে দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে না পারে, সেই বিষয়ে লক্ষ রাখতে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ নেতারা অনেকেই বর্তমানে ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। বাইরে থাকা জঙ্গিরা হলেন- সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক (মেজর জিয়া), আমীর আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদ, দাওয়াতী শাখার প্রধান মায়মুন, অর্থ ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান রাকিব, রাজীব, বাশারুজ্জামান, রিপন, খালেদসহ অনেকেই এখনো ধরা পড়েনি। তাদের নিয়ে অনেকটা উদ্বেগে আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

র‌্যাবের দেওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, বর্তমানে জঙ্গিরা পাহাড়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে এবং তারা বয়সে অনেক ছোট। এজন্য জঙ্গি সংগঠনের নেতারা তাদের কোথাও হামলার চেষ্টা করতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে। এসব কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে র‌্যাবের গোয়েন্দারা তৎপর রয়েছে।

র‌্যাবের গোয়েন্দা তথ্য মতে, সম্প্রতি বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় অর্ধশতাধিক জঙ্গি নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কিয়ায় যোগদান করেছে এবং তারা সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। র‌্যাব ইতোমধ্যে তাদের ১০ জনকে গ্রেপ্তার করছে। তবে, এখনো বাইরে রয়েছে ৪৫ জন জঙ্গি। বাইরে থাকা জঙ্গিরা পাহাড়ের ভেতরে ও বাইরে বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। মূলত তারাই বিভিন্ন জায়গায় হামলার পরিকল্পনা করতে পারে বলে ধারণা করছেন গোয়েন্দারা।

জানতে চাইলে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছেন, জঙ্গিদের আমরা কঠোর নজরদারির মধ্যে রেখেছি। র‌্যাবের প্রতিটি সদস্য সম্মিলিতভাবে জঙ্গি দমন বা অন্যান্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণে যেকোনো স্থানে যেকোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে নিয়োজিত। তিনি আরও বলেন, আমরা বিভিন্ন অভিযানে অসংখ্য জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি এবং তাদের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছি। তবে নতুন কিছু জঙ্গি সংগঠনের প্রশিক্ষিত যুবকরা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তাদের হামলার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এসব বিষয় মাথায় রেখে ও বিভিন্ন উৎসব মাথায় রেখে আমরা সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদারে কাজ করছি।

কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি)তথ্য মতে, হলি আর্টিজান হামলার ৮ বছর পর এসে অনলাইনে কিছু জঙ্গি সংগঠন এখনও সক্রিয়। বর্তমানে তারা দেশের বিভিন্ন পাহাড়কে বেছে নিচ্ছে এবং অনলাইনে নতুন নতুন কর্মীদের সংখা বাড়িয়ে বিভিন্ন অপরাধের ট্রেনিং করাচ্ছে।

জানতে চাইলে সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আদলত থেকে জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার পর সম্প্রতি দেশে জঙ্গিবাদী প্রত্যক্ষ কোনো অপতৎপরতা লক্ষ্য করা না গেলেও অনলাইনে তাদের তৎপরতা আগের তুলনায় বেড়েছে। অফলাইনে জঙ্গিদের তৎপরতা নেই, তবে তারা অনলাইনে সক্রিয়। এজন্য নগরবাসীর উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। কোনো ঘটনা ঘটার আগেই জঙ্গিদের আমরা গ্রেপ্তার করছি।

তিনি বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে জঙ্গি বা অন্যান্য সন্ত্রাসীদের হামলা চালানোর কোনো ক্ষমতা নেই। এ ছাড়া কোনো জঙ্গি সংগঠন পূর্ব বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কোথাও হামলা করে না। বিভিন্ন উৎসব এলে তারা সক্রিয় হতে চায়, তবে তাদের মেরুদণ্ড আমরা বারবার ভেঙে দিচ্ছি এবং এসব বিষয়ে আমরা অতিরিক্ত সতর্ক রয়েছি।

তিনি বলেন, উৎসবকে সামনে রেখে কোনো জঙ্গিগোষ্ঠী যাতে কোনো ধরনের নাশকতা সৃষ্টির সুযোগ না পায় সেজন্য সিটিটিসির গোয়েন্দা তৎপর রয়েছে।

এই বিষয়ে জনাতে চাইলে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (আব) আব্দুর রশীদ বলেন, জঙ্গিদের যদি সরকারি বাহিনীর সদস্যরা মনিটরিং বা চাপের মুখে না রাখে তাহলে তারা অনেক ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করবে। তবে সম্প্রতি আদালত থেকে ২ জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাটি মানুষ স্বাভাবিকভাবে নেয়নি। মানুষের মনে আরেকটা ধারণা তৈরি হয়েছে ১৩৩ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো জঙ্গিদের কেন গ্রেপ্তার করা হয়নি। এর দায়ভার তারা আইনের লোকের উপর যায় এবং সরকারি বাহিনী এটা এড়িয়ে যেতে পারে না।

এনএইচবি/এসএন

 

Header Ad
Header Ad

লঞ্চে দুই তরুণীকে বেল্ট দিয়ে মারধর, নেহালসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

লঞ্চে দুই তরুণীকে বেল্ট দিয়ে মারধর (ইনসটে নেহাল আহমেদ ওরফে জিহাদ)। ছবি: সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জে যাত্রীবাহী এমভি ক্যাপ্টেন লঞ্চে দুই তরুণীকে বেল্ট দিয়ে পেটানোর ঘটনায় আলোচিত ঘটনায় এবার আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ। মুক্তারপুর নৌ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মিলন হোসেন রোববার (১১ মে) সকালে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে মুন্সীগঞ্জ শহরের বাসিন্দা নেহাল আহমেদ ওরফে জিহাদকে। তার সঙ্গে অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পর জিহাদকে আটক করে গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং রোববারই তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

মামলায় যৌন নিপীড়ন, বেআইনি অনুপ্রবেশ, লঞ্চে ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মামলা হয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায়।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, “ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে আমরা অভিযুক্ত জিহাদকে শনিবার আটক করি। আমরা ভুক্তভোগী দুই তরুণীকে থানায় অভিযোগ দিতে বলেছিলাম, কিন্তু তারা আসেননি। একইভাবে লঞ্চ কর্তৃপক্ষকেও অভিযোগ করতে বলা হয়েছিল, সাড়া মেলেনি। পরে মুক্তারপুর নৌ পুলিশ নিজেই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে।”

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা পোশাক পরা এক তরুণী লঞ্চের সামনের অংশে দাঁড়িয়ে আছেন, আর জিহাদ নামের এক যুবক তাকে বেল্ট দিয়ে বর্বরভাবে মারধর করছেন। আশপাশে থাকা ৫০-৬০ জন বিভিন্ন বয়সী পুরুষ সেই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে উল্লাস করছেন ও স্লোগান দিচ্ছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সময় লঞ্চে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল, তা জনমনে চরম ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

Header Ad
Header Ad

ভারতে ব্লক পিনাকী, ইলিয়াস, কনক ও জুলকারনাইনের ইউটিউব চ্যানেল

সাংবাদিক ড. কনক সরওয়ার, সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের, ব্লগার ও লেখক পিনাকী ভট্টাচার্য, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট, লেখক ও ব্লগার পিনাকী ভট্টাচার্য, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন, ড. কনক সরওয়ার এবং জুলকারনাইন সায়েরের ইউটিউব চ্যানেল। ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশটির নাগরিকরা এখন থেকে এসব ইউটিউব চ্যানেলে আর প্রবেশ করতে পারবেন না।

শনিবার (১০ মে) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পিনাকী ভট্টাচার্য। তিনি লেখেন, “আমার, ইলিয়াসের এবং কনকের ইউটিউব চ্যানেল ব্লক করে দেওয়া হয়েছে ভারতে। ভারতমাতা তার শত্রুদেরকে চিনে।” একই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি ইঙ্গিত দেন যে, বাংলাদেশে কারা তাদের বিরোধিতা করছে, তা এখন সহজেই বোঝা যাচ্ছে।

এদিকে, জুলকারনাইন সায়ের তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “আমার অপরাধটা কিরে ভাই? কবে ইউটিউব চ‍্যানেল একটা খুলছিলাম, তেমন কিছুই পোস্ট করি না, ওইটাও ভরত মাতা তাগো দেশে ব্যান কইরা দিলো।”

এই ঘটনার একদিন আগে, শুক্রবার (৯ মে) ভারতের অনুরোধে ইউটিউব থেকে বাংলাদেশের চারটি জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেলও ব্লক করে দেওয়া হয়। চ্যানেলগুলো হলো—যমুনা টিভি, একাত্তর টিভি, বাংলাভিশন ও মোহনা টিভি। ভারত থেকে বিবিসির এক প্রতিবেদক নিশ্চিত করেছেন, এই চ্যানেলগুলো ইউটিউবে আর দেখা যাচ্ছে না। এসব চ্যানেল চালাতে গিয়ে ভারতীয় ইউজারদের সামনে ভেসে উঠছে একটি বার্তা—“সরকারি নির্দেশে জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলার কারণে এই কনটেন্ট এই দেশে (ভারতে) পাওয়া যাচ্ছে না।”

ভারতের ডিজিটাল নিরাপত্তা ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের আওতায় সরকার যদি মনে করে, কোনো অনলাইন কনটেন্ট জাতীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব কিংবা জনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি, তাহলে তা ব্লক করার আদেশ দেওয়ার পূর্ণ অধিকার রাখে। ডিসমিসল্যাবের প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) জানিয়েছিল, ভারতে তাদের ৮ হাজার অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হয়েছে সরকারি নির্দেশনায়। এসব পদক্ষেপকে ঘিরে ভারতের গণমাধ্যম ও ডিজিটাল স্বাধীনতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

Header Ad
Header Ad

চীন-পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতায় আফগানিস্তান, ভারতীয় প্রভাব নিয়ে উদ্বেগে নয়াদিল্লি

ছবি: সংগৃহীত

চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকে অংশ নেন আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি, চীনের বিশেষ দূত ইউ জিয়াওয়ং এবং পাকিস্তানের বিশেষ প্রতিনিধি মোহাম্মদ সাদিক।

বৈঠকে আঞ্চলিক পুনর্বিন্যাস এবং চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) প্রকল্পটি আফগানিস্তানে সম্প্রসারণের বিষয়ে একমত হয়েছে তিন দেশ। সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এই প্রকল্প কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হলে আফগানিস্তানে ভারতীয় প্রভাব কেবল কূটনৈতিক মিশনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে কৌশলগত দিক থেকে উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি।

২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগামে ঘটে যাওয়া এক ঘটনায় পাকিস্তানের অবস্থানকে নীরবে সমর্থন করেছে তালেবান, এমন দাবিও করেছে সূত্রটি। এতে বোঝা যাচ্ছে, ভারতীয় অবস্থান থেকে তালেবান নেতৃত্ব ধীরে ধীরে দূরত্ব তৈরি করছে এবং চীন-পাকিস্তান জোটের দিকে আরও ঝুঁকে পড়ছে।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আফগান তালেবান শিগগিরই কাবুলে চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ষষ্ঠ দফা আলোচনার আয়োজন করবে। তালেবানের নেতৃত্বে এটিই হবে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের এই ধরনের আলোচনা, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন বার্তা দেবে।

তিন পক্ষ দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ায় পশ্চিমা প্রভাব উপেক্ষা করে আফগানিস্তানের সঙ্গে গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা চালিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। বিশেষ করে চীন আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাতকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে সমর্থনের ঘোষণা দিয়েছে, যা ভবিষ্যতে আঞ্চলিক সংযোগ এবং সড়কপথে যোগাযোগ আরও মজবুত করবে।

চলমান ত্রিপক্ষীয় আলোচনার অংশ হিসেবে, পাকিস্তানের বিশেষ দূত চীনা প্রতিনিধিকে সঙ্গে নিয়ে আফগান বাণিজ্যমন্ত্রী আজিজির সঙ্গে পৃথক বৈঠকে মিলিত হন। আলোচনাগুলোকে গঠনমূলক আখ্যা দিয়ে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন বিশেষ দূতগণ।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের মে মাসে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের ধারাবাহিকতাতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যার মূল লক্ষ্য ছিল আফগানিস্তানে সিপিইসি সম্প্রসারণ এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা।

এই নতুন কৌশলগত মেরুকরণ ভারতসহ অন্যান্য আঞ্চলিক শক্তির জন্য এক নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আফগানিস্তানে চীন-পাকিস্তান জোটের এই সক্রিয়তা দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

লঞ্চে দুই তরুণীকে বেল্ট দিয়ে মারধর, নেহালসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ভারতে ব্লক পিনাকী, ইলিয়াস, কনক ও জুলকারনাইনের ইউটিউব চ্যানেল
চীন-পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতায় আফগানিস্তান, ভারতীয় প্রভাব নিয়ে উদ্বেগে নয়াদিল্লি
এলডিসি থেকে উত্তরণে দ্রুত-সমন্বিত পদক্ষেপের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
ভারত–পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি: কবে শুরু হচ্ছে আইপিএল
‘আওয়ামী লীগ পালিয়েছে’ বলায় বিএনপির ৪ কর্মীকে কুপিয়ে জখম
রাজনৈতিক দলের বিচারে ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ
ভারতে যাওয়ার সময় দর্শনা চেকপোস্টে আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার
সরকার শেখ হাসিনার পথেই হাঁটছে: রিজভী
লা লিগার মোড় ঘুরাতে আজ এল ক্লাসিকোতে মুখোমুখি বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদ
দুই পুত্রবধূকে সঙ্গে নিয়ে ভাইয়ের বাসায় খালেদা জিয়া
যুদ্ধবিরতির ২৪ ঘণ্টা না যেতেই ভারত-পাকিস্তানকে ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব
মেসির দুর্দান্ত গোলেও রক্ষা হয়নি, মিনেসোটার কাছে বিধ্বস্ত ইন্টার মায়ামি
‘এই মোটু’ বলে কটাক্ষ, রেগে গিয়ে গুলি
গেজেটের পরই আওয়ামী লীগের নিবন্ধন নিয়ে সিদ্ধান্ত: সিইসি
আবারও শাহবাগ অবরোধ
বিশ্ব মা দিবস আজ
আইনের মাধ্যমে আ.লীগ নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া ইতিবাচক মনে করে বিএনপি
ঢাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই
জুলাই ঘোষণাপত্র ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে