রবিবার, ১১ মে ২০২৫ | ২৮ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

চিনি নিয়ে ছিনিমিনি চলছে, ‘সিন্ডিকেট’ সুবিধা লুটছে

কেজিতে তিন টাকা দাম কমানোর পর বাজারে চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মিলমালিকরা নানা সুবিধা নিলেও সিন্ডিকেট করে এখন চিনি আটকে রেখেছেন।

চিনির দাম কমানোর পর শনিবার (৮ এপ্রিল) থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। কিন্তু তারপর বাজারে কমানো দামে চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। পাইকারি ব্যবসায়ী ও ডিলাররা বলছেন, মিলে কাগজ পৌঁছেনি। তাই কম দামের চিনি দিচ্ছে না।

খুচরা ব্যবসায়ীদেরও অভিযোগ পাইকারি বাজারে ও ডিলারের কাছে চিনি নেই। তাহলে আমরা কীভাবে পাব? তাদের অভিযোগ মিলমালিকরা সুবিধা নিলেও সিন্ডিকেট করে আটকে রেখেছে চিনি। এজন্য বাজারে চিনি নেই।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কোনো কোনো দোকানে চিনি পাওয়া যাচ্ছে সেটাও আগের দামেই। সরকার দাম কমানোর পরও তারা আগের দামই অর্থাৎ ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি রাখছেন।

অথচ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) পরিশোধিত খোলা চিনির কেজিতে ৩ টাকা কমিয়ে ১০৪ টাকা এবং প্যাকেট চিনির দামও ৩ টাকা কমিয়ে ১০৯ টাকা নির্ধারণ করেছে। যা ৮ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।

কিন্তু গত শনিবার (৮ এপ্রিল) থেকে বিভিন্ন বাজার ঘুরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে বাজারে কম দামের চিনি বিক্রি হতে দেখা যায়নি। পাইকারি থেকে শুরু করে খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা জানান, এখনো কম দামে চিনি পাইনি। তাই আগের মতোই ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।

গত শনিবার থেকে মোহাম্মদপুর টাউনহলের বিসমিল্লাহ জেনারেল স্টোরের রবিউল এবং নিউ হক ভ্যারাইটি স্টোরের সোহেল, মনির স্টোরের আনোয়ারসহ বিভিন্ন খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে চিনি আছে, কত টাকা কেজি জিজ্ঞাসা করা মাত্র তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কীভাবে চিনি পাব? পাইকারি বাজারে চিনি নেই। আবার কিছু পাওয়া গেলে বেশি দামেই ১১২ টাকা কেজি কিনতে হচ্ছে। তাহলে কীভাবে কিনব। কারণ, বেশি দাম নিলে জরিমানা খেতে হয়। তাদেরও অভিযোগ সরকার দাম কমানোর ঘোষণা দিলেও ভোক্তারা পাচ্ছে না।

কৃষিমার্কেটেও কম দামে পাওয়া যায় না চিনি। জানতে চাইলে সিটি এন্টারপ্রাইজের আবু তাহের বলেন, ৫ হাজার ৪৮০ টাকা বস্তা বা ১০৯.৬০ টাকা কেজি চিনি কিনেছি। বিক্রি করা হচ্ছে সামান্য লাভে। কম দামের চিনির ব্যাপারে তিনি বলেন, কই মার্কেটে তো পাই না। গতকালও ১০৯ টাকার বেশি দামে চিনি কিনেছি।

এদিকে, কারওয়ান বাজারেও আল্লাহর দান জেনারেল স্টোরের শাহ আলমসহ লক্ষীপুর স্টোর, আ. গনি স্টোরসহ অন্যান্য খুচরা ব্যবসায়ীরা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, শুধু শুনছি চিনির দাম কমেছে। কিন্তু কোম্পানি থেকে তো দিচ্ছে না, আমরা পাচ্ছি না। বিক্রিও করতে পারছি না। আবার কোথাও পাওয়া গেলেও ১১৫ থেকে ১২০ টাকার কম কেজি বিক্রি করা যাচ্ছে না।

তারা আরও বলেন, এই মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ডিলার ও পাইকারি বাজার। সেখান থেকে আমরা এনে বিক্রি করি। কিন্তু তারাতো খোলা চিনি ১০৪ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১০৯ টাকা কেজি দিচ্ছে না।

তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চায়না কিচেন মার্কেটের দ্বিতীয় তলার মেঘনা গ্রুপের ডিলার জামান ট্রেডার্সের মালিক মো. জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘ভাই আমরাও শুনেছি সরকার চিনির দাম কেজিতে ৩ টাকা কমিয়েছে। কিন্তু মিলে যোগাযোগ করা হলে অফিসাররা জানান, সরকার দাম কমানোর ঘোষণা দিলেও আমরা কিছু জানি না, এখনো কাগজ পাইনি। তাহলে কীভাবে ব্যবসা করব? কোন পথে যাব।’

সর্বশেষ কবে থেকে ডিও দিয়েছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অনেক দিন থেকে চিনি পাই না। আবার পেলেও বেশি দাম চাই। তাই রমজান মাসে চিনি কিনি না। কারণ, জরিমানা খেতে চাই না।

শুধু এই ডিলার নয়, চিনির পাইকারি বাজার মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি মো. আবুল হাসেমও অভিযোগ করে বলেন, ‘না না কোনো চিনি পাচ্ছি না। সরকার ঘোষণা দিয়েছে গত শনিবার থেকে কেজিতে ৩ টাকা দাম কমানোর। অথচ মিলে যোগাযোগ করা হলে তারা বলছে এখনো দাম কমানোর কাগজ পাইনি। তাই কম দামে চিনি বিক্রি করতে পারব না। তবে আগের রেটে ১০৬ থেকে ১০৮ টাকা কেজি হলে দিচ্ছে। মিল থেকে নতুন করে কোনো ডিও নিচ্ছে না।’

বাজারে বেশি দাম কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খুচরা ব্যবসায়ীরা বেশি লাভ করছে। এটা দেখার দায়িত্ব সরকারের। আবার মিল থেকে কম দামের চিনি দিচ্ছে না, সেটাও দেখা দরকার। কারণ, মিল থেকে সুবিধা নেবে আর ভোক্তাদের কাছে কম দামে চিনি বিক্রি করবে না। তা হতে পারে না।

এদিকে, কারওয়ান বাজারেও খুচরার মতো পাইকারি বাজারে চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। এই বাজারে সিটি গ্রুপের ডিলার এটি এন্টারপ্রাইজ ওমর ফারুক ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘চিনি নেই। কোম্পানি থেকে দেয় না। আগে ১১০ টাকা কেজি কেনা হয়েছিল। বিক্রি করা হয়েছে ১১১টাকা। কম দামের চিনি আসলে তখন বিক্রি করতে পারব।’

তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফার সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। পরে মেঘনা গ্রুপের সিনিয়র উপদেষ্টা শফিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তার ফোন বন্ধ থাকায় কোনো মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

তবে প্রতিষ্ঠানটির উপ-মহাব্যবস্থাপক তসলিম শাহরিয়ার বলেন, ‘সব জায়গায় প্যাকেট চিনি দেওয়া হচ্ছে। তার সবাই পাচ্ছে চিনি। যারা বলছে পাই না তারা মিথ্যে কথা বলছে। যদি তাদের চিনি না দিই তাহলে আমাদের চিনি যাচ্ছে কোথায়?’

এখনো বাজারে কম দামের চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচএম সফিকুজ্জামান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘এটা কমন প্যাকটিস যে দাম কমলে বাজারে আসতে সময় লাগে। মিল থেকে বিভিন্ন অজুহাত দেখায়। কিন্তু দাম বাড়লে তাৎক্ষনিকভাবে তা কার্যকর হয়। ভোক্তাদের বেশি দামেই কিনতে হয়।’

তিন দিন চলে গেলেও ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ভোক্তারা কম দামের চিনি পাচ্ছে না। এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটা মিলমালিকদের উপর নির্ভর করছে।’

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই বলছে, দেশে চিনির চাহিদা ১৮ থেকে ২০ লাখ টন। এর মধ্যে রমজান মাসে লাগে প্রায় ৩ লাখ টন। অন্যান্য মাসে গড়ে দেড় লাখ টন চিনির চাহিদা রয়েছে। দেশে মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টন চিনি উৎপাদন হয়। বাকি চিনি আমদানি করে চাহিদা মেটানো হয়।

আরইউ/এমএমএ/

 

Header Ad
Header Ad

লঞ্চে দুই তরুণীকে বেল্ট দিয়ে মারধর, নেহালসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

লঞ্চে দুই তরুণীকে বেল্ট দিয়ে মারধর (ইনসটে নেহাল আহমেদ ওরফে জিহাদ)। ছবি: সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জে যাত্রীবাহী এমভি ক্যাপ্টেন লঞ্চে দুই তরুণীকে বেল্ট দিয়ে পেটানোর ঘটনায় আলোচিত ঘটনায় এবার আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ। মুক্তারপুর নৌ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মিলন হোসেন রোববার (১১ মে) সকালে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে মুন্সীগঞ্জ শহরের বাসিন্দা নেহাল আহমেদ ওরফে জিহাদকে। তার সঙ্গে অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পর জিহাদকে আটক করে গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং রোববারই তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

মামলায় যৌন নিপীড়ন, বেআইনি অনুপ্রবেশ, লঞ্চে ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মামলা হয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায়।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, “ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে আমরা অভিযুক্ত জিহাদকে শনিবার আটক করি। আমরা ভুক্তভোগী দুই তরুণীকে থানায় অভিযোগ দিতে বলেছিলাম, কিন্তু তারা আসেননি। একইভাবে লঞ্চ কর্তৃপক্ষকেও অভিযোগ করতে বলা হয়েছিল, সাড়া মেলেনি। পরে মুক্তারপুর নৌ পুলিশ নিজেই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে।”

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা পোশাক পরা এক তরুণী লঞ্চের সামনের অংশে দাঁড়িয়ে আছেন, আর জিহাদ নামের এক যুবক তাকে বেল্ট দিয়ে বর্বরভাবে মারধর করছেন। আশপাশে থাকা ৫০-৬০ জন বিভিন্ন বয়সী পুরুষ সেই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে উল্লাস করছেন ও স্লোগান দিচ্ছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সময় লঞ্চে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল, তা জনমনে চরম ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

Header Ad
Header Ad

ভারতে ব্লক পিনাকী, ইলিয়াস, কনক ও জুলকারনাইনের ইউটিউব চ্যানেল

সাংবাদিক ড. কনক সরওয়ার, সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের, ব্লগার ও লেখক পিনাকী ভট্টাচার্য, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট, লেখক ও ব্লগার পিনাকী ভট্টাচার্য, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন, ড. কনক সরওয়ার এবং জুলকারনাইন সায়েরের ইউটিউব চ্যানেল। ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশটির নাগরিকরা এখন থেকে এসব ইউটিউব চ্যানেলে আর প্রবেশ করতে পারবেন না।

শনিবার (১০ মে) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পিনাকী ভট্টাচার্য। তিনি লেখেন, “আমার, ইলিয়াসের এবং কনকের ইউটিউব চ্যানেল ব্লক করে দেওয়া হয়েছে ভারতে। ভারতমাতা তার শত্রুদেরকে চিনে।” একই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি ইঙ্গিত দেন যে, বাংলাদেশে কারা তাদের বিরোধিতা করছে, তা এখন সহজেই বোঝা যাচ্ছে।

এদিকে, জুলকারনাইন সায়ের তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “আমার অপরাধটা কিরে ভাই? কবে ইউটিউব চ‍্যানেল একটা খুলছিলাম, তেমন কিছুই পোস্ট করি না, ওইটাও ভরত মাতা তাগো দেশে ব্যান কইরা দিলো।”

এই ঘটনার একদিন আগে, শুক্রবার (৯ মে) ভারতের অনুরোধে ইউটিউব থেকে বাংলাদেশের চারটি জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেলও ব্লক করে দেওয়া হয়। চ্যানেলগুলো হলো—যমুনা টিভি, একাত্তর টিভি, বাংলাভিশন ও মোহনা টিভি। ভারত থেকে বিবিসির এক প্রতিবেদক নিশ্চিত করেছেন, এই চ্যানেলগুলো ইউটিউবে আর দেখা যাচ্ছে না। এসব চ্যানেল চালাতে গিয়ে ভারতীয় ইউজারদের সামনে ভেসে উঠছে একটি বার্তা—“সরকারি নির্দেশে জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলার কারণে এই কনটেন্ট এই দেশে (ভারতে) পাওয়া যাচ্ছে না।”

ভারতের ডিজিটাল নিরাপত্তা ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের আওতায় সরকার যদি মনে করে, কোনো অনলাইন কনটেন্ট জাতীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব কিংবা জনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি, তাহলে তা ব্লক করার আদেশ দেওয়ার পূর্ণ অধিকার রাখে। ডিসমিসল্যাবের প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) জানিয়েছিল, ভারতে তাদের ৮ হাজার অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হয়েছে সরকারি নির্দেশনায়। এসব পদক্ষেপকে ঘিরে ভারতের গণমাধ্যম ও ডিজিটাল স্বাধীনতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

Header Ad
Header Ad

চীন-পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতায় আফগানিস্তান, ভারতীয় প্রভাব নিয়ে উদ্বেগে নয়াদিল্লি

ছবি: সংগৃহীত

চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকে অংশ নেন আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি, চীনের বিশেষ দূত ইউ জিয়াওয়ং এবং পাকিস্তানের বিশেষ প্রতিনিধি মোহাম্মদ সাদিক।

বৈঠকে আঞ্চলিক পুনর্বিন্যাস এবং চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) প্রকল্পটি আফগানিস্তানে সম্প্রসারণের বিষয়ে একমত হয়েছে তিন দেশ। সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এই প্রকল্প কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হলে আফগানিস্তানে ভারতীয় প্রভাব কেবল কূটনৈতিক মিশনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে কৌশলগত দিক থেকে উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি।

২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগামে ঘটে যাওয়া এক ঘটনায় পাকিস্তানের অবস্থানকে নীরবে সমর্থন করেছে তালেবান, এমন দাবিও করেছে সূত্রটি। এতে বোঝা যাচ্ছে, ভারতীয় অবস্থান থেকে তালেবান নেতৃত্ব ধীরে ধীরে দূরত্ব তৈরি করছে এবং চীন-পাকিস্তান জোটের দিকে আরও ঝুঁকে পড়ছে।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আফগান তালেবান শিগগিরই কাবুলে চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ষষ্ঠ দফা আলোচনার আয়োজন করবে। তালেবানের নেতৃত্বে এটিই হবে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের এই ধরনের আলোচনা, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন বার্তা দেবে।

তিন পক্ষ দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ায় পশ্চিমা প্রভাব উপেক্ষা করে আফগানিস্তানের সঙ্গে গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা চালিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। বিশেষ করে চীন আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাতকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে সমর্থনের ঘোষণা দিয়েছে, যা ভবিষ্যতে আঞ্চলিক সংযোগ এবং সড়কপথে যোগাযোগ আরও মজবুত করবে।

চলমান ত্রিপক্ষীয় আলোচনার অংশ হিসেবে, পাকিস্তানের বিশেষ দূত চীনা প্রতিনিধিকে সঙ্গে নিয়ে আফগান বাণিজ্যমন্ত্রী আজিজির সঙ্গে পৃথক বৈঠকে মিলিত হন। আলোচনাগুলোকে গঠনমূলক আখ্যা দিয়ে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন বিশেষ দূতগণ।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের মে মাসে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের ধারাবাহিকতাতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যার মূল লক্ষ্য ছিল আফগানিস্তানে সিপিইসি সম্প্রসারণ এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা।

এই নতুন কৌশলগত মেরুকরণ ভারতসহ অন্যান্য আঞ্চলিক শক্তির জন্য এক নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আফগানিস্তানে চীন-পাকিস্তান জোটের এই সক্রিয়তা দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

লঞ্চে দুই তরুণীকে বেল্ট দিয়ে মারধর, নেহালসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ভারতে ব্লক পিনাকী, ইলিয়াস, কনক ও জুলকারনাইনের ইউটিউব চ্যানেল
চীন-পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতায় আফগানিস্তান, ভারতীয় প্রভাব নিয়ে উদ্বেগে নয়াদিল্লি
এলডিসি থেকে উত্তরণে দ্রুত-সমন্বিত পদক্ষেপের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
ভারত–পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি: কবে শুরু হচ্ছে আইপিএল
‘আওয়ামী লীগ পালিয়েছে’ বলায় বিএনপির ৪ কর্মীকে কুপিয়ে জখম
রাজনৈতিক দলের বিচারে ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ
ভারতে যাওয়ার সময় দর্শনা চেকপোস্টে আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার
সরকার শেখ হাসিনার পথেই হাঁটছে: রিজভী
লা লিগার মোড় ঘুরাতে আজ এল ক্লাসিকোতে মুখোমুখি বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদ
দুই পুত্রবধূকে সঙ্গে নিয়ে ভাইয়ের বাসায় খালেদা জিয়া
যুদ্ধবিরতির ২৪ ঘণ্টা না যেতেই ভারত-পাকিস্তানকে ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব
মেসির দুর্দান্ত গোলেও রক্ষা হয়নি, মিনেসোটার কাছে বিধ্বস্ত ইন্টার মায়ামি
‘এই মোটু’ বলে কটাক্ষ, রেগে গিয়ে গুলি
গেজেটের পরই আওয়ামী লীগের নিবন্ধন নিয়ে সিদ্ধান্ত: সিইসি
আবারও শাহবাগ অবরোধ
বিশ্ব মা দিবস আজ
আইনের মাধ্যমে আ.লীগ নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া ইতিবাচক মনে করে বিএনপি
ঢাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই
জুলাই ঘোষণাপত্র ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে