সোমবার, ১৩ মে ২০২৪ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (শেষ পর্ব)

নীতিনির্ধারণ করছে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি বা বিভিন্ন থিংকট্যাঙ্ক

 

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। সম্প্রতি ঢাকাপ্রকাশ’র সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি কথা বলেছেন দেশের শিক্ষানীতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম এবং করোনাকালের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাহেরীন আরাফাত। আজ প্রকাশিত হলো সাক্ষাৎকারটির চতুর্থ পর্ব

ঢাকাপ্রকাশ: আমরা দেখছি যে, প্রাথমিক, মাধ্যমিক বা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এক ধরনের শিক্ষাপদ্ধতি আছে। আমরা এটাও জানি, শিক্ষার সঙ্গে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ বিষয়টা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আপনি কী রকম দেখছেন? এ বিষয়টা একটু বিশ্লেষণ করে বললে ভালো হয়।

আনু মুহাম্মদ: অর্থনীতি মানে কী? শিক্ষার সঙ্গে তো সবকিছুই সম্পর্কিত। অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যদি এ রকম হয়–বিশাল সংখ্যক মানুষের কাজের, আশ্রয়ের কোনো নিশ্চয়তা নাই, তাহলে তাদের সন্তানরা শিক্ষার মধ্যে প্রবেশ করতে পারে না। যতটুকু প্রবেশ করার চেষ্টা করে, সেখানেও ঝরে পড়ার হার খুব বেশি থাকে। শ্রমজীবী মানুষের অনেক পরিবারে আমরা দেখি, তাদের খুব ইচ্ছা থাকে সন্তান লেখাপড়া করবে; কিন্তু একটা পর্যায়ের পর আর পারে না। প্রধান কারণ হচ্ছে–বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় শিক্ষা যে রাষ্ট্রের দায়িত্ব, রাষ্ট্র তা থেকে ক্রমাগত দূরে সরে যাচ্ছে। তার ফলে একটা বিরাট অংশ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বঞ্চিত হওয়ার ফলাফল কী? ফলাফল হচ্ছে–তাদের মধ্যে যে সক্ষমতা ছিল, তাদের মধ্যে যে সম্ভাবনা ছিল, সেটা আর বাস্তবায়ন হয় না। তার ফলে আমরা যদি উৎপাদনশীল খাতের কথা চিন্তা করি, শিল্পের কথা চিন্তা করি, কিংবা অবকাঠামোর কথা চিন্তা করি–কৃষি, শিল্প, অবকাঠামো, নদী ব্যবস্থাপনা, বন ব্যবস্থাপনা–এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তরুণ নাগরিকরা যে ভূমিকা রাখতে পারত, তা তারা পালন করতে পারছে না। সরকারের মুখে শুনি–আমরা তো সমুদ্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করতে পারব না, তাই বিদেশি কোম্পানি নিয়ে আসতে হবে। এই বিদেশি কোম্পানি আনার ফলে প্রকল্প অনেক বেশি ব্যয়বহুল হয়ে যায়, অনেক বেশি অনিশ্চিত হয়ে যায় এবং এখন আমরা ক্রাইসিসটা দেখতে পাচ্ছি। এটা কেন হলো–বাংলাদেশের তরুণদের কি জেনেটিক্যালি কোনো সমস্যা আছে যে, তারা লেখাপড়া শিখতে পারবে না। তাদের সেই সুযোগটাই দেওয়া হয় না। প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত চিন্তা থাকত যে, এসব বিষয় যে যেদিকে দরকার সেদিকে শিক্ষাগ্রহণ করবে, তাহলে অবস্থা ভিন্ন হতে পারত।

আমরা শুনি যে, বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাঙ্কিয়ে বাংলাদেশ অনেক পেছনে, গবেষণার র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ অনেক পেছনে। এসব ঘটনার প্রধান কারণ হলো–ওই পরিবেশটাই নাই। অর্থনীতি যেভাবে চলছে, তাদের দিক থেকে ওই চাহিদাই নাই। অর্থনীতি যদি চলে চোরাই টাকার উপরে, অর্থনীতির মধ্যে যারা ক্ষমতাবান তারা যদি বন দখল, নদী দখল, ব্যাংক দখল তারপর বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি, অনিয়ম সেগুলোর উপর ভর করেই চলতে থাকে এবং যদি দেখা যায় যারা ক্ষমতাবান তারা এ দেশের কোনোকিছু নিয়েই চিন্তা করে না, তারা মনে করে যে তারা বিদেশে থাকবে। এবং তাদের সন্তানেরা বিদেশে পড়াশোনা করবে। কী রকম একটা ভয়ংকর অসঙ্গতি যে, যারা দেশ পরিচালনা করছে, তারা দেশকে নিজের দেশ মনে করে না। নিজের বাসভূমি মনে করে না। আর যারা নিজেদের বাসভূমি মনে করে তাদের হাতে কোনো ক্ষমতা নাই। সরকারি প্রাথমিক স্কুল যেগুলো আছে, সেখানে যদি সরকারি কর্মকর্তা, মন্ত্রী, এমপির ছেলে-মেয়েরা পড়ত; তাহলে তো প্রাথমিক স্কুলের এ অবস্থা হতো না। যদি তাদের সন্তানরা মাধ্যমিক স্কুলে পড়ত, এখানকার সরকারি কলেজে পড়ত, বা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ত; তাহলে তো এগুলোর এমন অবস্থা থাকত না। কিন্তু তারাই নীতিনির্ধারণ করছে। যারা নীতিনির্ধারণ করে, তাদের যদি নিজেদের একটা ওনারশিপ বা নিজেদের স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত না হয়; তাহলে তো ফল আসবে না। অথচ তাদের স্বার্থটা থাকে, সে কীভাবে আরও দ্রুত টাকা বানাবে কিংবা ক্ষমতার মধ্যে টিকে থাকবে, ব্যাংক থেকে টাকা আনবে এবং তাড়াতাড়ি কীভাবে বিদেশে সবাইকে সেটেল করবে–এই চিন্তাই তাদের থাকে; কিন্তু তারা তো নীতিনির্ধারণ করছে সব। তার ফলে অর্থনীতির যে প্রবণতা বা উন্নয়নের যে ধরন, সেই ধরনটার কারণে শিক্ষার যে প্রয়োজনীয় বিকাশের সম্ভাবনা, সেটা আর হয় না। কারণ নীতিনির্ধারক এবং সর্বজন–এ দুইয়ের মধ্যে একটা বড় ধরনের পার্থক্য তৈরি হয়। স্বাস্থ্যখাতেও তা-ই দেখা যায়। আজ বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালে যদি মন্ত্রী, এমপি, তাদের সন্তানরা চিকিৎসা করত, তাহলে তো পাবলিক হাসপাতালের এ দশা হয় না। তার মানে হচ্ছে–রাষ্ট্রের দায়িত্বে যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সে প্রতিষ্ঠানগুলোর বৈরি হচ্ছে রাষ্ট্রের কর্ণধাররা।

অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ করছে যেসব জায়গা, সেগুলোর সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানের কোনো সম্পর্ক নাই। যেমন–আমি অর্থনীতিতে, অর্থশাস্ত্রে আছি। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অর্থনীতি বিভাগগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারণের কোনো সম্পর্ক নাই। অর্থনীতির বিভিন্ন ধরনের নীতিনির্ধারক আছে, সেগুলোর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার কথা। তাদের ইনভলভ করার কথা, সেগুলোর কোনো সম্পর্ক নাই। সেখানে নীতিনির্ধারণ কে করছে–নীতিনির্ধারণ করছে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি বা বিভিন্ন থিংকট্যাঙ্ক। সরকারের সঙ্গে সম্পর্কিত যেসব থিংকট্যাঙ্ক, কিংবা বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কিত থিংকট্যাঙ্ক–তারা নীতিনির্ধারণ করছে। তাহলে শিক্ষার সঙ্গে অর্থনীতির সম্পর্ক কীভাবে হয়!

করোনার সময় ভ্যাকসিন–এগুলো তো কোনো ব্যাপারই ছিল না। বাংলাদেশে এতগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়–সেখানে ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা হবে, করোনা নিয়ে গবেষণা হবে–এসব নিয়ে গবেষণা করাই তো কাজ। সেগুলো নিয়ে কোনো কাজ হয়নি। বন একের পর এক উজাড় করা হচ্ছে। বন কতটা দরকার–এগুলো তো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিভিন্ন পাঠ্যসূচির মধ্যে থাকা দরকার।

আমি বলতে চাচ্ছি যে, বাংলাদেশের যে উন্নয়ন যাত্রা বা রাজনৈতিক ক্ষমতা–এ দুয়ের সম্মিলনে এমন একটা বিষবৃক্ষ তৈরি হয়েছে যে, সেখানে জ্ঞানের কোনো জায়গা নেই। জ্ঞানের কোনো প্রয়োজনই মনে করে না। তারা নিজেরা সিদ্ধান্ত নেয়, নিজেদের স্বার্থে কী দরকার। জনস্বার্থে কী দরকার, তার থেকে যোজন যোজন দূরে তো বটেই, তার বিপরীতে অবস্থান নিয়েই অর্থনীতি এবং উন্নয়ন নির্ধারিত হয়। তার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি তাদের চরম উদাসীন না শুধু, বিরোধী একটা অবস্থান আমরা দেখতে পাচ্ছি।

ঢাকাপ্রকাশ: আমরা বিভিন্ন দেশের ক্ষেত্রে দেখেছি যে, সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হবে এমন না, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার দরকারও নেই। একটা স্তর পার করার পর সে হয়তো নির্দিষ্ট একটা কাজে চলে যাচ্ছে, ওই কাজটা রাষ্ট্র বা সরকার তাকে দিচ্ছে। আমাদের দেশে ধারণাটা এ রকম হয়ে উঠেছে কি না যে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেই হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ে না পড়লে চাকরি পাওয়া, বা এ রকম সুযোগ-সুবিধা সে পাবে না। আমরা দেখছি যে, পিয়নের চাকরির জন্য মাস্টার্স পাস ছেলে-মেয়েরা এপ্লাই করছে। শিক্ষার সঙ্গে কাজের যে সম্পর্ক, সে জায়গাগুলো আমাদের এখানে কীভাবে দেখা হচ্ছে?

আনু মুহাম্মদ: কর্মসংস্থানের বিষয়ে রাষ্ট্র এবং সরকারের অবস্থান হলো–কর্মসংস্থানের কোনো দায়িত্ব আমরা নিতে পারব না। এটা হলো সরকারের পজিশন–তোমরা নিজেরা কাজ খুঁজে নাও বা নিজেরা উদ্যোক্তা হও, ব্যবসায়ী হও। সুতরাং এটার সঙ্গে তো পড়াশোনার কোনো সম্পর্ক নাই। বরং দেখা যাচ্ছে–যাদের লেখাপড়ার ব্যাপারে কোনো আগ্রহ নাই, তারাই দেখা যাচ্ছে যে, সরকারের বেশি কাছের। আসলেই যদি অর্থনীতির বিকাশের কথা আমরা চিন্তা করি বা জনস্বার্থের কথা চিন্তা করি তাহলে একটা পরিকল্পনার দরকার হয়। যেমন–এই খাতে কত ধরনের লোক দরকার, সেগুলো কীভাবে তৈরি হবে, সেটার জন্য একটা টাকা খরচ করতে হবে, সেটার জন্য দরকার মতো প্রশিক্ষণ দিতে হবে, দরকার মতো বিদেশ থেকে লোক আনতে হবে, বিভিন্ন দেশে লোক পাঠাতে হবে। এটা নিয়ে সামগ্রিক পরিকল্পনা থাকা দরকার। সে রকম কোনো সামগ্রিক পরিকল্পনা নাই, যে আমরা কোন খাতে, কী দরকার, সে অনুযায়ী কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার।

আমাদের দেশে কম্পিউটার, মোবাইল, গাড়ি যারা ঠিকঠাক করে; এরা সবাই দেখা যাবে যে, অনেক উদ্ভাবনী শক্তিসম্পন্ন–এদের কোনো ট্রেনিং নাই, নিজেরা নিজেরাই শিখে নিচ্ছে, বা আরেকজন ওস্তাদের কাছ থেকে শিখে নিচ্ছে। একটা যে প্রশিক্ষণের প্রক্রিয়া থাকবে, তা নেই। তার মানে বোঝা যায়–এরা যদি সুযোগ পেত, তাহলে অনেক ভালো টেকনিক্যাল কাজ করতে পারত। কিংবা তারা ইনোভেশন বা উদ্ভাবনের মধ্যে যেতে পারত। সেই সুযোগটা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এবং অর্থনীতির ব্যবস্থার মধ্যে নেই। যেমন–বাংলাদেশের সব গ্রামে প্রাথমিক স্কুল প্রতিষ্ঠা এবং কলেজ পর্যন্ত যদি রাষ্ট্রের দায়িত্বটা প্রধান থাকে, তাহলে সেখানে শিক্ষকের জন্যই তো অনেক কর্মসংস্থানের দরকার। এখন কোচিং সেন্টার যারা চালাচ্ছে, কিংবা টিউটোরিয়াল হোম চালাচ্ছে; তাদের তো কোচিং সেন্টার, টিউটোরিয়াল হোম চালানোর দরকার নাই। তারা আরও সম্মানজনকভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যেই শিক্ষকতা করতে পারত। প্রাইভেট, টিউশনি করে তার জীবিকা অর্জন করতে হতো না। এরাই তো এখন উদ্বৃত্ত জনসংখ্যা। এখন মাস্টার্স ডিগ্রি পাস করেও ঘুরে বেড়াচ্ছে, কিংবা প্রাইভেট-টিউশনি করছে; নানারকম ধান্দা করতে হচ্ছে। কোথায় মামা, খালু আছে। কোথায় দশ লাখ টাকা দিতে হবে–এ সবের মধ্যে ডুবে যাচ্ছে। মেধার চেয়ে তো এখন নিয়োগ বাণিজ্যটা প্রধান তৎপরতা। অর্থাৎ নিয়োগও এখন একটা অর্থনৈতিক তৎপরতা। কে কত টাকা দিতে পারে! মানে পুরো ব্যবস্থাটাই এমন এখানে সবকিছুই একটা কেনা-বেচার সম্পর্ক। যে কোনো জায়গায় টাকা-পয়সা দিলে আমি কাজ পাব–এই যে মানুষের একটা ধারণা, এর মাঝখানেই আবার বেশকিছু মধ্যস্তত্বভোগী তৈরি হয়েছে। তারপর টেকনিক্যাল দিকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে, আমাদের আর্কিটেক্ট, আমাদের সোশ্যাল সাইয়েন্টিস্ট, সাইয়েন্টিস্ট, কম্পিউটার সাইয়েন্টিস্ট, আমাদের আইটি স্পেশ্যালিস্ট কী মাত্রায় দরকার, কী সংখ্যায় দরকার–সামনের ১০ বছরে, ৫০ বছরে, ১০০ বছরে সে অনুযায়ীই তো আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দাঁড় করাতে হবে। সেগুলোর কোনো পরিকল্পনা না থাকার ফলে প্রত্যেকটা একক ব্যক্তি, তার নিজের দায় থেকে কাজের খোঁজ করে। তার যদি কানেকশন থাকে, টাকা থাকে, সে যদি কোনো ধান্দা করে কোনো একটা ব্যবস্থা করতে পারে–এরকম করে সবাইকে একটা অসহায় অবস্থার মধ্যে ফেলা হয়েছে। সেটার পরিকল্পনার মধ্যে গেলে তো রাষ্ট্রের একটা দায়িত্ব নিতে হবে, রাষ্ট্র সে দায়িত্ব নিতে তো রাজি নয়।

এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রধান মনোযোগ হলো সরকারি কর্মকর্তা হওয়া, বিসিএস ক্যাডার হওয়া। তারা দেখতে পাচ্ছে বিসিএস হচ্ছে একমাত্র জায়গা–যেখানে স্থায়ী একটা কর্মসংস্থান, পাশাপাশি একটা ক্ষমতার ব্যাপার। আর এটা হচ্ছে একটা নিশ্চিত জায়গা। অন্য কোথাও নিশ্চয়তা নাই। সেজন্য তাদের মধ্যে একটা উন্মাদনা–সেই উন্মাদনার কারণে তাদের পক্ষে যে বিষয়ে মেধা আছে তাদের, যে যে বিষয়ে তারা ভূমিকা পালন করতে পারে; সেটাও করতে পারছে না। তাদের থার্ড ইয়ার থেকেই বিসিএসের বইপত্র মুখস্ত করতে হয়। বিসিএসে এমন ধরনের প্রশ্ন হয়–মুখস্ত করে সেখানে মেধা যাচাই করা হয়। তার ফলে শিক্ষার যে বিষ সেটা কর্মসংস্থানকেও প্রভাবিত করে। আর অর্থনীতিতে উৎপাদনশীলের চেয়ে একটা লুণ্ঠনমূলক যে পরিস্থিতি এবং দেশের সামগ্রিক যে অর্থনৈতিক নীতিমালা, সেটা প্রণয়নে, বাস্তবায়নে দেশের যে বিদ্যায়তন, সেটার কোনো ভূমিকা না থাকার ফলে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

এসএ/

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ১)

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ২)

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ৩)

 

 

 

Header Ad

রাজধানীতে ২৩ জন গ্রেপ্তার

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযানে ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিভিন্ন অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ।

সোমবার (১৩ মে) সকালে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ১৪০৫ পিস ইয়াবা, ৩.৫ গ্রাম হেরোইন, ১২ কেজি ৬৫০ গ্রাম গাঁজা ও ৩ গ্রাম আইস উদ্ধার জব্দ করা হয়।

ডিএমপি জানায়, নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে রোববার (১২ মে) সকাল ৬টা থেকে সোমবার (১৩ মে) সকাল ৬টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য উদ্ধারসহ তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ১৬টি মামলা রুজু হয়েছে।

এসএসসি পাস করেছে বিদ্যালয়ের একমাত্র পরীক্ষার্থী রুবিনা

ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া একমাত্র শিক্ষার্থী রুবিনা আক্তার পাস করেছে।

রবিবার (১২ মে) এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে সে জিপিএ ২.১৭ পেয়ে পাস করেছে বলে প্রধান শিক্ষক মো. নুর জামাল মিয়া নিশ্চিত করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের অনন্তপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছর মাত্র একজন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। তার নাম রুবিনা আক্তার। তার পরীক্ষার রোল নম্বর ৫১৭৪৭৭, বিভাগ মানবিক। ফলাফলে সে জিপিএ ২.১৭ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে বলে জানা গেছে।

অনন্তপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯৯৮ সালে স্থাপিত হয়। ২০০৪ সালে বিদ্যালয়টির নিম্ন মাধ্যমিক শাখা এমপিওভুক্ত হয়। এরপর ২০১২ সালে মাধ্যমিক পর্যায় পাঠদানের অনুমতি পায়। পাঁচজন এমপিওভুক্ত শিক্ষকসহ প্রতিষ্ঠানটিতে মোট ১১ জন শিক্ষক কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। বিদ্যালয়টি থেকে এ বছর মানবিক বিভাগের একমাত্র শিক্ষার্থী রুবিনা আক্তার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এ অবস্থার জন্য করোনা ও বাল্য বিবাহকে দায়ী করেছেন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকরা। ফলাফল প্রকাশের পর শিক্ষার্থী রুবিনা আক্তার বলে, ফলাফল ভালো হয়নি, তারপরও পাস করেছি এটাই সৌভাগ্য।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর জামাল মিয়া বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের একমাত্র পরীক্ষার্থী রুবিনা আক্তার জিপিএ ২.১৭ পেয়ে পাস করেছে। ফলাফল সন্তোষজনক নয় তারপরও প্রতিষ্ঠানের সম্মান রক্ষা হওয়ায় আমি খুশি। তিনি জানান, রুবিনার আরও ৫-৬ জন বান্ধবী ছিল। এসএসসি পরীক্ষা আসতে আসতে সবার বিয়ে হয়ে গেছে

আবারও সীমান্তে বিএসএফের গুলি, হাসপাতালে বাংলাদেশী যুবক

ফাইল ছবি

সীমান্তে হত্যা যেন বেড়েই চলছে। প্রতি মাসেই বিএসএফের গুলিতে ঘটছে হত্যাকাণ্ড। সীমান্ত হত্যা নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে নিয়মিত আলোচনা হলেও তবুও থামছে না। সবশেষ রোববার (১২ মে) দিবাগত রাতে বেনাপোল সীমান্তে বাংলাদেশী যুবককে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বিএসএফ। এতে আমজেদ আলী নামের ওই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

পরিবার জানিয়েছে, রোববার রাতে পুটখালী সীমান্ত দিয়ে ভারতে গরু পাচার করার সময় ভারতীয় বিএসএফ গুলি ছুড়লে আমজেদ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পালিয়ে বাড়িতে চলে আসে। পরে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে যশোর জেনারেল হাসপাতালের পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন।

এর আগে, বুধবার (৮ মে) দুই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। হত্যার দুই দিন পর শুক্রবার (১০ মে) সন্ধ্যার দিকে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা ও ভারতের ফুলবাড়ি জিরো লাইন সীমান্ত দিয়ে ওই দুই বাংলাদেশির মরদেহ তেতুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে ভারতের ফাঁসিদেওয়া থানা পুলিশ।

সীমান্তে বছরের পর বছর ধরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলি ও নির্যাতনে প্রাণ হারাচ্ছেন নিরীহ বাংলাদেশিরা। বিগত ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারিতে বিএসএফের গুলিতে নির্মম হত্যার শিকার হয় কিশোরী ফেলানী খাতুন। তার মরদেহ সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে রাখা হয়েছিল। ওই সময় কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে থাকা কুড়িগ্রামের কিশোরী ফেলানীর মরদেহের ছবি আলোড়ন তুলেছিল দেশে-বিদেশে। ওই ঘটনার পর দফায় দফায় আলোচনায় সীমান্তে হত্যা বন্ধে প্রতিশ্রুতি দেয় বিএসএফ। তবে গত বছরগুলোতে পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় একেবারেই উল্টোচিত্র।

বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাবে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএসএফের হাতে মারা গেছেন ২০০ এর বেশি বাংলাদেশি। নির্যাতনের শিকার হয়েছেন শতাধিক মানুষ। যার মধ্যে গতবছর ২৮ জনের প্রাণহানি ও ৩১ জন মারাত্মক শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

আসকের তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে ২০২০ সালে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশিকে হত্যা করে বিএসএফ। ওই বছর ৪৮ জন বাংলাদেশি প্রাণ হারান, যার মধ্যে ৪২ জন বিএসএফের গুলিতে ও ছয়জন শারীরিক নির্যাতনে মারা যান। এর আগের বছর যে ৪৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন তাদের মধ্যে ৩৭ জন বিএসএফের গুলিতে এবং ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে নির্যাতনে। গত সাত বছরের মধ্যে বিএসএফের গুলিতে সবচে কম বাংলাদেশির মৃত্যু হয় ২০১৮ সালে ১৪ জনের।

সরকারের হিসেবে বলছে, ২০০৯ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ৯ বছরে বিএসএফের হাতে ২৯১ জন বাংলাদেশি নিহত হন। এ ৯ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণ হারিয়েছেন ২০০৯ সালে। আর সবচেয়ে কম ১৭ জন হত্যার শিকার হয়েছেন ২০১৭ সালে।

সর্বশেষ সংবাদ

রাজধানীতে ২৩ জন গ্রেপ্তার
এসএসসি পাস করেছে বিদ্যালয়ের একমাত্র পরীক্ষার্থী রুবিনা
আবারও সীমান্তে বিএসএফের গুলি, হাসপাতালে বাংলাদেশী যুবক
আবারও দুঃসংবাদ দিল আবহাওয়া অফিস
মালয়েশিয়ায় ২৭ বাংলাদেশী অভিবাসী আটক
রাতেই কুবুবদিয়ায় পৌঁছাবে এমভি আবদুল্লাহ
সড়ক দুর্ঘটনায় অভিনেত্রীর মৃত্যু
এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জ শুরু, চলবে ১৯ মে পর্যন্ত
হাসপাতাল চত্বরে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ১
সৌদি পৌঁছেছেন ১২ হাজার ৬৪৯ হজযাত্রী
এসএসসির ফল প্রকাশের পর সারাদেশে ৮ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে বিসিবি সভাপতির হঠাৎ বৈঠক, অধিনায়ক বদলের গুঞ্জন!
অন্তর্বাসে লুকানো থাকত ডিভাইস, ১০ মিনিটে শেষ হতো চাকরির পরীক্ষা
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে আরাকান আর্মির গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
বিএনপিকে নিশ্চিহ্নে ক্র্যাকডাউনের পরিকল্পনা করছে সরকার: রিজভী
নওগাঁয় ধান ব্যবসায়ী ও কৃষকদের ৩৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
সরকারি চাকরিতে বয়স বাড়ানোর সুপারিশের কার্যকারিতা নেই: শিক্ষামন্ত্রী
এসএসসির ফল পুনঃনিরীক্ষণ শুরু কাল, আবেদন করবেন যেভাবে
ভারতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কিডনি হাতিয়ে নিতো চক্রটি
উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর নির্দেশ ইসির