চলতি বছর এশিয়া কাপের আয়োজক পাকিস্তান। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আয়োজক ভারত। দুই টুর্নামেন্ট নিয়ে মহাবিপদে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এবং এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)। সমস্যার সমাধানে ‘হাইব্রিড মডেল’ নিয়ে কাজ করছে সংস্থা দুটো। যদি সেটা বাস্তবায়িত হয়, তাহলে বাংলাদেশে হবে পাকিস্তানের বিশ্বকাপ ম্যাচ!
সামনের সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানে হওয়ার কথা এশিয়া কাপ। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে দল পাঠাতে ঘোর আপত্তি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড অব কন্ট্রোলের (বিসিসিআই)। সমাধানে আসতে এসিসির বৈঠকে আলোচনা করা হয় ‘হাইব্রিড মডেল’ নিয়ে। হাইব্রিড মডেলটা হলো এমন- পাকিস্তানে হবে এশিয়া কাপ। ভারত তাদের ম্যাচ খেলবে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে।
যদি রোহিত শর্মারা ফাইনালে পৌঁছে যান, তাহলে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের পাশাপাশি শিরোপার লড়াইও নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। এসিসির এমন প্রস্তাব গ্রহণ করেছে বিসিসিআই। তাতে আইসিসিও একই পথে হাঁটার পাঁয়তারা করছে। কেননা, অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ হলে সেখানে দল না পাঠানোর ঘোষণা দিয়ে রেখেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
বুধবার (২৯ মার্চ) ক্রিকইনফো তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দুই বোর্ডের মুখোমুখি অবস্থানে এশিয়া কাপ মডেলটিকে বিকল্প হিসেবে দেখছে আইসিসি এবং গত সপ্তাহে এ নিয়ে আলোচনাও হয়েছে বিশ্ব ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ সংস্থার বৈঠকে।
এশিয়া কাপের বিকল্প ভেন্যু হিসেবে শোনা যাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, শ্রীলঙ্কা এবং ইংল্যান্ডের কথা। তবে বিশ্বকাপে নিরপেক্ষ ভেন্যু হতে পারে বাংলাদেশ। যেহেতু ভারতের প্রতিবেশী লাল-সবুজ দেশ, তাই লজিস্টিক সার্পোট কোনো বাধার কারণ হয়ে দাঁড়াবে না। কিন্তু সবটাই এখনো আলোচনার টেবিলে। চূড়ান্ত হয়নি কোনো কিছুই। সেটা যেমন এশিয়া কাপ নিয়ে, তেমনি বিশ্বকাপ নিয়েও।
নতুন সংবিধান প্রণয়ন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া এবং এতে অনেক সময় লাগতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি জানান, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশেও নতুন সংবিধান প্রণয়নে ৮-৯ বছর লেগেছে, তাই বাংলাদেশেও এটি দীর্ঘমেয়াদি একটি কাজ হবে।
আলোচনায় আসিফ নজরুল বলেন, “গণপরিষদ যখন কাজ করবে, তখন তারা নতুন সংবিধান প্রণয়নের কাজ চালিয়ে যাবে। এই প্রক্রিয়া শেষ হতে ২-৩ বছর সময় লাগতে পারে। এই সময়ে কি আমরা ৭২-এর সংবিধান গ্রহণ করব? আমি মনে করি, এই সময়ের জন্য কিছু মৌলিক বিষয় জাতীয় সংসদ পরিবর্তন করে নিতে পারে— যেমন প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা হ্রাস, উচ্চ আদালতের বিকেন্দ্রীকরণ ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ।”
তিনি বলেন, “নতুন সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সামনে যে সংসদ থাকবে, তা একটি অন্তর্বর্তীকালীন সংসদ হিসেবে কাজ করবে এবং প্রয়োজনে ৭২-এর সংবিধানের সংশোধন করবে।”
জুলাই সনদ প্রসঙ্গে আসিফ নজরুল বলেন, “এ বিষয়ে সবাই একমত হবে এমনটা ধরার সুযোগ নেই। তবে জুলাই সনদের কিছু মৌলিক প্রস্তাব নতুন সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।”
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমাবদ্ধ করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দুই মেয়াদ জনপ্রিয় দাবি, আমারও দাবি। কিন্তু কেবল বললেই হবে না, তা যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী দুই মেয়াদে সীমিত— এমন ব্যবস্থা পৃথিবীর কোথায় আছে তা খুঁজে বের করতে হবে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমিয়ে আনা।”
বিদেশি অস্ত্র-বোমাসহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৭ সদস্য গ্রেপ্তার। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি বিদেশি পিস্তল, সাত রাউন্ড গুলি, ৩৬টি ককটেল, একটি প্রাইভেট কার এবং একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস—যা ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল। এ ছাড়া, পরিকল্পিত একটি বড় ধরনের স্বর্ণালংকার ডাকাতির ছকও নস্যাৎ করেছে ডিবি।
গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত সদস্যরা হলেন- মাসুদ রানা চৌকিদার (৩৮), শাকিল (২১), মামুন (৪০), মো. রাব্বি (২৬), মো. আসাদ মিয়া (৪৫), মো. পলাশ শেখ (৩৭) এবং আনোয়ার হোসেন (৪৪)। এদের মধ্যে আনোয়ার হোসেন কিশোরগঞ্জ জেলার এবং পলাশ শেখ বরিশাল জেলার বাসিন্দা। এই দুইজনই এই ডাকাত দলের মূল পরিকল্পনাকারী ও নেতৃত্বে ছিলেন বলে ডিবি নিশ্চিত করেছে।
গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত দলের ৭ সদস্য এবং উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম। ছবি: সংগৃহীত
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (১০ মে) দিবাগত রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যাত্রাবাড়ীর দনিয়া কলেজ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ডিবির একটি দল। প্রথম ধাপে মাসুদ রানা চৌকিদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি বিদেশি ৭.৬২ এমএম পিস্তল ও সাত রাউন্ড গুলি। জিজ্ঞাসাবাদে সে ডাকাতির পরিকল্পনার কথা স্বীকার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার বাসায় অভিযান চালিয়ে ৩৬টি শক্তিশালী ককটেল উদ্ধার করে ডিবি। পরবর্তীতে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট এসে ককটেলগুলো নিষ্ক্রিয় করে এবং প্রমাণ হিসেবে ভিডিও ধারণ করে আদালতে উপস্থাপনের প্রস্তুতি নেয়।
ডিবি কর্মকর্তারা জানান, ডাকাত দলের সদস্যরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে যাত্রাবাড়ীর দনিয়া কলেজের সামনে জড়ো হচ্ছিল। তাদের পরিকল্পনা ছিল গোপালগঞ্জ জেলার বৌলতলী বাজারে অবস্থিত নিউ ডলি জুয়েলার্সে ডাকাতি চালানোর। পরিকল্পনা অনুযায়ী ভোররাতে তারা দনিয়া কলেজে একত্র হয় এবং ডাকাতি করতে রওনা দেওয়ার আগ মুহূর্তেই ডিবির নজরে পড়ে।
সকাল ১০টার দিকে একটি প্রাইভেট কার ও একটি হাইয়েস মাইক্রোবাসে করে ডাকাত দলের আরও সদস্যরা সেখানে আসে। ডিবি তৎক্ষণাৎ অভিযান চালিয়ে গাড়িসহ চারজন—শাকিল, মামুন, মো. রাব্বি ও মো. আসাদ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুপুরের দিকে ধোলাইপাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় ডাকাতি পরিকল্পনার মূল হোতা মো. পলাশ শেখ এবং আনোয়ার হোসেনকে।
ব্রিফ করছেন ডিবির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার হওয়া এই সাতজনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি ও অস্ত্র মামলার রেকর্ড রয়েছে। ডিবির দাবি, এরা দীর্ঘদিন ধরে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের হয়ে বিভিন্ন জেলায় স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি করে আসছিল। তারা আগে রেকি করত এবং তারপর অস্ত্র ও বিস্ফোরক নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে ডাকাতি করত।
ডিবির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, গত জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ৮৭ জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকেই রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় সংঘটিত জুয়েলার্স ডাকাতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এর মধ্যে বনশ্রীর ডাকাতি, সীমান্ত সম্ভারের ক্রাউন জুয়েলার্স, ডেমরার ফারদিন জুয়েলার্স এবং শিল্পী জুয়েলার্সের ঘটনায় গ্রেপ্তার ও মালামাল উদ্ধার হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সারা দেশে স্বর্ণালংকারের দোকানগুলো টার্গেট করে কাজ করে এমন কয়েকটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। এই চক্রগুলো রেকি করে, অস্ত্র সংগ্রহ করে এবং গাড়ি ব্যবহার করে বড় ধরনের হামলা চালায়। এই চক্রগুলোর বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে।
ডিবি জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া সব সদস্যের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে মামলাও করা হচ্ছে। পুলিশ আশা করছে, এদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ অবৈধভাবে জনগণের যে সম্পদ লুটপাট করেছে, তা বাজেয়াপ্ত করে জনগণের কল্যাণে ব্যয় করা উচিত। তিনি দাবি করেন, দলটি এখন আর শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়, বরং এটি ‘সীমান্তপারের ষড়যন্ত্রকারী শক্তি’ হিসেবে কাজ করছে।
রবিবার (১১ মে) দুপুরে পুরানা পল্টনে গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
নুর আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিবাদী’ দল আখ্যা দিয়ে বলেন, “এ দলটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা না করলে দেশের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়বে।” তিনি অভিযোগ করেন, “বিরোধী দলসমূহ একটি সমাবেশ করার পর প্রায় ৩০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, অথচ আওয়ামী লীগের মাত্র ৩২ জন নেতাকর্মীও গ্রেফতার হয়নি।”
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নিলে সেটি দেশের জন্য ভবিষ্যতে বড় সংকট হয়ে দাঁড়াবে। তিনি অভিযোগ করেন, দলটি গত নয় মাস ধরে দেশবিরোধী প্রোপাগান্ডা চালিয়ে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করেছে।
নুর আরও বলেন, “আমরাও যমুনা ঘেরাও কর্মসূচি দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে প্রধান উপদেষ্টা তরুণদের বক্তব্য শুনে দেশের ভবিষ্যতের গতি নির্ধারণ করতে চান। সে বিশ্বাস থেকেই আমরা কর্মসূচি স্থগিত করেছি।”
সরকারের অভ্যন্তরে ‘আপসকামী উপদেষ্টা’ থাকার অভিযোগ এনে তিনি বলেন, “সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের কিছু সদস্য বিদেশি দূতাবাসে গিয়ে গোপন বৈঠক করছেন। এরপরই করিডর দেওয়ার ঘোষণা আসে এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।”
সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের দেশত্যাগ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নুর। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রপতির পালিয়ে যাওয়ার দায় শুধু একজন জেলা পুলিশ কর্মকর্তার নয়, এর সঙ্গে ইমিগ্রেশন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।”
নুর সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, “এই সরকার আমাদের রক্ত-ঘাম ও জেল-জুলুমের বিনিময়ে গঠিত হয়েছে। আবারও যদি আমাদের এই সরকারের বিরুদ্ধেই আন্দোলনে নামতে হয়, সেটি হবে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”
সংবাদ সম্মেলনে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।