
রং তুলিতে প্রতিমা সাজাতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯:৩৬ পিএম | আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৩, ০১:২৮ এএম

দশ হাতে দশ ভুজা নিয়ে আগমন ঘটছে দেবী দুর্গার। প্রকৃতিও যেন জানান দিচ্ছে সেই বার্তা। আকাশের নীল ও মেঘ এবং জমিনের সাদা কাশফুল যেন তারই আগমনী গান গাচ্ছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। সেই পূজা উপলক্ষে দেশজুড়ে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ।
প্রায় চারশ' বছরের অধিক সময় নানান সংস্কৃতি ও স্থাপনার জন্য বিখ্যাত রাজধানী ঢাকা। এ শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জায়গা পুরান ঢাকা। প্রতি উৎসবেই যেন নিজেকে জানান দেয় নতুন রূপে। মাটির প্রলেপে শিল্পীর তুলির ছোঁয়ায় পূর্ণতা পাচ্ছে দেবী দুর্গার প্রতিমা।
এবারের দুর্গাপূজা আগামী ১ অক্টোবর (১৪ আশ্বিন) ষষ্ঠী পূজা দিয়ে শুরু করে ৫ অক্টোবর (১৮ আশ্বিন) বিজয়া দশমী দিয়ে শেষ হবে। করোনা না থাকায় এবারের আমেজ যেন বাধনহীন। ঢাকার বিভিন্ন স্থানের পূজা উদযাপন কমিটিসহ অন্যান্য সংগঠনের নেই দম ফেলার অবকাশ। সারা রাত জেগেও কাজ করছেন অনেক শিল্পীরা। নিজের সর্বোচ্চ কারিগরি দক্ষতা দিয়ে ফুটিয়ে তুলছেন বাহারি কারুকাজ।
পুরান ঢাকার সূত্রাপুর, কাঠেরপুল, একরামপুর, শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, লক্ষ্মীবাজার, শ্যামবাজার, পাটুয়াটুলি, প্যারীদাস রোড, কলতাবাজার, মুরগিটোলা, মদনমোহন দাস লেন, গোয়ারনগর, বাংলাবাজার জমিদারবাড়ী, গেন্ডারিয়া, ডালপট্টি, কুলুটোলাসহ বিভিন্ন এলাকায় চলছে প্রতিমা নির্মাণের কাজ। নানা সংগঠন মণ্ডপের পাশে বানাতে শুরু করেছেন মঞ্চ। প্রতিমা বানানোর জন্য পাশেই রাখা হয়েছে কাদা-মাটি, বাঁশ, খড়, সুতলি, রংসহ নানান উপকরণ। এসব উপকরণ দিয়ে বানানো হচ্ছে নানান প্রতিমা।
কারিগররা সাধারণত অজন্তা ধাঁচের প্রতিমা বানিয়ে থাকেন। এগুলো ওরিয়েন্টাল প্রতিমা হিসেবে পরিচিত। অজন্তা ধাঁচের প্রতিমার চাহিদা এখন বেশি। এ ধরনের মূর্তিতে শাড়ি, অলংকার ও অঙ্গসজ্জা সবই করা হয় মাটি ও রং দিয়ে।
এ বছর পুরান ঢাকায় নবকল্লোল পূজা কমিটি, শ্রীশ্রী শিব মন্দির, প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব, সংঘমিত্র পূজা কমিটি, শ্রীশ্রী রাধা মাধব জিউ দেব মন্দির, নতুন কুঁড়ি পূজা কমিটি, নববাণী পূজা কমিটি, রমাকান্ত নন্দীলেন পূজা কমিটিসহ আরও বেশ কিছু ক্লাব পূজা আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে শিবমন্দির, তাঁতী বাজার, সঙ্গ মিত্র, প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব, গোয়ালনগর ঘাট, জুলন বাড়ীতে বড় পূজার আয়োজন করা হচ্ছে।
এবার ঢাকায় ২৪১টি মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে মহানগর দক্ষিণে ১৫৪টি ও উত্তরে ৮৭টি। সবচেয়ে বেশি পূজা অনুষ্ঠিত হবে পুরান ঢাকার সূত্রাপুর থানায়। এখানে মোট পূজার সংখ্যা ২৫টি।
দুর্গোৎসব দুর্গাপূজার প্রধান উপকরণ হচ্ছে মা দুর্গার প্রতিমা। এ ছাড়াও লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, অসুরসহ বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তি। দেবী দুর্গা ও তার বাহন সিংহের প্রতিমাসহ তৈরি করা হচ্ছে যাকে বধের জন্য দেবীর আগমন সেই মহিষাসুরের প্রতিমা। একই সঙ্গে তৈরি হচ্ছে দেবী লক্ষ্মী, সরস্বতী, দেবতা কার্তিক, গণেশ, এবং তাদের বাহন পেঁচা, রাজহাঁস, ইঁদুর আর ময়ূর। প্রতিমা তৈরির মাঠগুলো ঘুরে এমনটিই লক্ষ্য করা যায়।
মৃৎশিল্পীরা বলেন, প্রতিবছর এই সময়ের জন্য আমরা অপেক্ষা করি। এটি শুধু আমাদের পেশা নয় আমাদের নেশাও। মন থেকে ভালোবাসি এই কাজ করতে।
বাংলাবাজারের মৃৎশিল্পী বলাই পাল জানান, আমরা প্রতিবছরেই অনেক প্রতিমা তৈরি করি। এবারও সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি। ৪০ হাজার টাকা থেকে ৪ লাখ টাকার মধ্যে এসব প্রতিমা নির্মাণ করা হয়। আমাদের কাছে অনেক জায়গা থেকে অনেকেই আসে প্রতিমা নেওয়ার জন্য।
দুর্গাপূজার উপকরণ কিনতে ময়মনসিংহ থেকে শাঁখারীবাজারে এসেছেন উত্তম পাল। তিনি জানান, শাঁখারীবাজারে আমরা প্রতিবছরই আসি। এখানে সব উপকরণ একসঙ্গে পাওয়া যায়, অন্যান্য জায়গার চেয়ে দাম কম পাওয়া যায়।
প্রতিমা তৈরিতে আগের মতো আর কারিগর পাওয়া যায় না বলে জানান মৃৎশিল্পে আন্তর্জাতিক পদক পাওয়া শাঁখারীবাজারের প্রাচীন প্রতিমা শিল্পী হরিপদ পাল। তিনি বলেন, প্রতিমা তৈরির কাজে এখন অনেকের আগ্রহ নেই। আগের চেয়ে মুনাফা এখন কম। এই সময় সবকিছুর দাম বাড়ছে, কিন্ত মূল্য বাড়েনি শিল্পীদের। এই পেশায় অনেকেই এখন আসতে চায় না, তবে অনেকেই ভালোবেসে এখনো এই কাজ করছে।
এসজি

খালেদা জিয়াকে নিয়ে তুরস্কের গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ
০২ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:৪৯ পিএম | আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১০:২০ এএম

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে তুরস্কের গণমাধ্যম। দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদুলু এজেন্সি ‘বিরোধীদলীয় নেতাকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে বাধা দিচ্ছে বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সোমবার (২ অক্টোবর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিরোধীদলীয় নেত্রী ও দুইবারের প্রধানমন্ত্রী অসুস্থ খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে বাধা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
প্রতিবেদনে চিকিৎসকদের বরাতে বলা হয়, গত ৯ আগস্ট থেকে ঢাকার একটি হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চিকিৎসাধীনে রয়েছেন ৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে ফরোয়ার্ড করা আপিলকে ‘না’ জানিয়ে বলেছেন, মন্ত্রণালয় বিদ্যমান আইন অনুযায়ী তাকে বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দিতে পারে না। সরকারের আইনগত অনুমতি দেওয়ার সুযোগ নেই। সব কাজ আইনি কাঠামো অনুযায়ী করতে হবে। আইনকে বাইপাস করা, যে কোনো ক্ষেত্রেই একটি খারাপ উদাহরণ তৈরি করে।
প্রতিবেদনে বলা আরও বলা হয়, ৭৮ বয়সী বেগম জিয়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন গত ৯ আগস্ট থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং উচ্চ লিভার সিরোসিস, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
প্রতিবেদনে গত শনিবার ভয়েস অব আমেরিকায় প্রচারিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকারের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিদেশে চিকিৎসার অনুমোদন নেওয়ার আগে খালেদা জিয়াকে অবশ্যই কারাগারে ফিরে যেতে হবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, জিয়ার দল অবশ্য তার বিরুদ্ধে আদালতের রায় প্রত্যাখ্যান করেছে এবং খালেদা জিয়াকে তার অবস্থা গুরুতর উল্লেখ করে অবিলম্বে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়েছে।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের বরাতে বলা হয়, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড লিভার ট্রান্সপ্লান্টের সুপারিশ করেছে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে বিদেশে একটি উন্নত মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি সেন্টারে পাঠানো দরকার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিধবা স্ত্রী দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। কোভিড মহামারি চলাকালে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ, বর্তমান সরকার তাকে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বাড়িতে থাকা এবং দেশ ছেড়া যাবে না এই দুই শর্তে মুক্তি দেওয়া হয়।

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত
০২ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:৩৯ পিএম | আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১০:১৮ এএম

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। আজ সন্ধ্যা ৬টা ৪৭ মিনিটে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তাৎক্ষণিকভাবে এতে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল ভারতের মেঘালয় রাজ্য। আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৩।
গত সেপ্টেম্বর মাসে তিনবার দেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর মধ্যে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ২। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৫৯ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে টাঙ্গাইলে।
এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর সিলেট অঞ্চলে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভারত–মিয়ানমার সীমান্ত। এ ছাড়া ৯ সেপ্টেম্বর আরেকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের আসামের কাছাড় এলাকা।
আগস্ট মাসে দুই দফায় বাংলাদেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর মধ্যে একটি অনুভূত হয় ২৯ আগস্ট। এর উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট। এর আগে ১৪ আগস্ট আরেকবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর কেন্দ্রস্থল ছিল বাংলাদেশ–ভারত সীমান্তবর্তী সিলেটের কানাইঘাট এলাকায়।

কোভিড-১৯ টিকার জন্য চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেলেন দুই বিজ্ঞানী
০২ অক্টোবর ২০২৩, ০৪:২৬ পিএম | আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১০:১৫ এএম

চিকিৎসাবিজ্ঞানে অবদান রাখায় এ বছর নোবেল পুরস্কার জিতলেন কাতালিন ক্যারিকো ও ড্র ওয়াইজম্যান। সুইডেনের নোবেল অ্যাসেমব্লি অ্যাট ক্যারোলিনস্কা ইন্সটিটিউট সোমবার (২ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটে তাদের নাম ঘোষণা করে।
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, নিউক্লিওসাইড বেজ মডিফিকেশন সংক্রান্ত আবিষ্কারের জন্য চিকিৎসায় ২০২৩ সালের নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে কাতালিন কারিকো ও ড্রু ওয়েইজম্যানকে। তাদের এ আবিষ্কারের ওপর ভর করে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকর এমআরএনএ টিকা উদ্ভাবন করা হয়।
১৯০১ সাল থেকে চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। এ যাবত ১২ জন নারী চিকিৎসায় নোবেল পেয়েছেন।
চিকিৎসায় সর্বকনিষ্ঠ নোবেলজয়ী হরেন ফ্রেডরিক জি. ব্যান্টিং। তিনি ইনসুলিন আবিষ্কারের জন্য ১৯২৩ সালে নোবেল পেয়েছিলেন। চিকিৎসায় সবচেয়ে বেশি বয়সী নোবেলজয়ীর নাম পেটন রৌস। তিনি ৮৭ বছর বয়সে এ পুরস্কার পান।
সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নামে ও তার রেখে যাওয়া অর্থে ১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার দেয়া শুরু হয়। প্রতি বছর চিকিৎসা, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতিতে দেয়া হয় বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার। ১৮৯৫ সালে এক উইলে ‘মানবজাতির সর্বোচ্চ সেবায় অবদান রাখা’ ব্যক্তিদের জন্য এই পুরস্কার নিবেদিত করেছেন তিনি।
নোবেল পুরস্কারের মধ্যে চিকিৎসাশাস্ত্রের পুরস্কারটি সোমবার সুইডেনের স্টকহোমে ঘোষণা করা হয়। মঙ্গলবার ঘোষণা করা হবে পদার্থবিজ্ঞানের পুরস্কার। বুধবার রসায়ন ও বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে সাহিত্যের পুরস্কার।
আগামী শুক্রবার অসলো থেকে ঘোষণা করা হবে বহুল কাঙ্ক্ষিত নোবেল শান্তি পুরস্কার। আর অর্থনীতির পুরস্কারটি ঘোষণা করা হবে ৯ অক্টোবর।