টানা চারদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, নাভিশ্বাস জনজীবনে

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
টানা চারদিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে চুয়াডাঙ্গায়। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী এ জেলায় অতি তাপপ্রবাহে জনজীবন হয়ে উঠেছে একেবারে দুর্বিষহ। গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষিকাজ এবং বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া পেশাজীবীরাও।
রবিবার (১১ মে) দুপুর ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ছিল মাত্র ২৬ শতাংশ। দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা ছিল ৩৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর আগের তিন দিনেও পরিস্থিতি একই রকম ছিল—
- শনিবার (১০ মে): ৩টায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, দুপুরে ৪০ ডিগ্রি।
- শুক্রবার (৯ মে): ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
- বৃহস্পতিবার (৮ মে): ৩৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানিয়েছেন, ১৩ মে পর্যন্ত এই তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে এবং ১৪ মে কিছুটা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এই তীব্র দাবদাহে সবচেয়ে কষ্টে রয়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। কেউ রোদ এড়াতে গাছতলায় আশ্রয় নিচ্ছেন, কেউ কাজ বন্ধ করে বসে আছেন। ভ্যানচালক কোরবান আলী রোদ সহ্য করতে না পেরে গাছতলায় ঘুমিয়ে পড়েছেন। ডেলিভারি কর্মী সিয়াম ও শাকিলও রোদ থেকে বাঁচতে কাজ ফেলে বিশ্রামে। ইজিবাইকচালক হাবিবুর রহমান বলেন, “আয়-ইনকাম একদম কমে গেছে। সমিতির কিস্তি দিতে পারিনি।”
তীব্র গরমের প্রভাব পড়েছে কৃষিতেও। চুয়াডাঙ্গার কৃষক আহমদ আলী বলেন, “রোদ-গরমে মাঠে দাঁড়ানো যায় না, প্রতিদিন সেচ দিতে দিতে হাঁফিয়ে উঠেছি।” সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় আউশ ধান রোপণের প্রস্তুতি ব্যাহত হচ্ছে।
রাস্তাঘাটে লোকজনের চলাচল কমে গেছে। দুপুরের রোদে শহরের পরিবেশ মরুভূমির মতো গরম। দিন শেষে রাতেও তাপ কমছে না।
স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না বের হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। হিট স্ট্রোক এড়াতে পর্যাপ্ত পানি ও লেবুর শরবত খাওয়ার কথা বলা হলেও রাস্তার পাশে খোলা শরবত না খাওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে জনসচেতনতামূলক প্রচার শুরু করেছে। তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে এখন জেলার মানুষ এক পশলা বৃষ্টির অপেক্ষায়।
