সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শতাধিক অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিলো ডিএসসিসি

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শতাধিক অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিলো ডিএসসিসি। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের পর উদ্ভূত নিরাপত্তা উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বড় পরিসরে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া এ অভিযানে শতাধিক অবৈধ দোকান ও স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মূল ফটক এলাকা থেকে শুরু হওয়া এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন ডিএসসিসির নির্বাহী হাকিম মো. আমিনুল ইসলাম। তার সঙ্গে ছিল গণপূর্ত অধিদপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শাহবাগ থানা পুলিশ এবং আনসার বাহিনী।
বেলা দেড়টার দিকে দেখা যায়, ভ্রাম্যমাণ দোকান, কাঠ-টিনের ঘরসহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা ভাঙতে চারটি বুলডোজার ব্যবহার করা হচ্ছে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করেন। এমনকি উন্মুক্ত লাইব্রেরি সংলগ্ন একটি কাঠের ঘরও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
অভিযানের বিষয়ে নির্বাহী হাকিম আমিনুল ইসলাম বলেন, “সোহরাওয়ার্দী উদ্যান একটি ঐতিহাসিক ও জাতীয় স্থান। এখানে যারা ঘুরতে আসেন, তাদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতেই আমরা এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট ম্যানেজার (ভারপ্রাপ্ত) ফাতেমা বিনতে মুস্তাফা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকা নিরাপদ রাখতে এই যৌথ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা চাই উদ্যানের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন ও সুশৃঙ্খল থাকুক।”
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মোটরসাইকেলে আসার সময় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে নিহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য। এরপর থেকে ক্যাম্পাসে শুরু হয় প্রতিবাদ ও ধর্মঘট। উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা কলা ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে তালা লাগিয়ে দেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করে।
এই প্রেক্ষাপটে বুধবার একাধিক পক্ষ মিলে উদ্যানের নিরাপত্তা জোরদারে কয়েকটি তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-
১. টিএসসি সংলগ্ন ফটকটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হবে।
২. মাদক ও অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করবে সিটি করপোরেশন, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, ডিএমপি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
৩. উদ্যানে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো ও নিয়মিত পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করা হবে।
৪. রমনা পার্কের আদলে নিরাপত্তাব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।
৫. রাত ৮টার পর উদ্যান বন্ধ থাকবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ বক্স স্থাপন করা হবে।
সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পাশাপাশি নিয়মিত নজরদারির জন্য একটি যৌথ কমিটি গঠন করা হবে, যাতে উদ্যানের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে।
