বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫ | ১২ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

দৃষ্টিনন্দন কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়া শাহী ও পাটিকাবাড়ী শাহী মসজিদ

ঐতিহ্যবাহী ‘ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ’ কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঝাউদিয়া ইউনিয়নের ঝাউদিয়া বাজারের উত্তরে পুরাতন মুসলমান জমিদার শাহ্ সুফি আদারী মিয়া’র চৌধুরী বাড়িতে অবস্থিত। কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ সড়কের লক্ষীপুর বাসষ্টপ থেকে ১৫ কিলোমিটার বা বিত্তিপাড়া থেকে ৯ কিলোমিটার পশ্চিমে দৃষ্টিনন্দন এই শাহী মসজিদটি অবস্থিত। এই মসজিদে কোনো শিলালিপি পাওয়া যায়নি, সে কারণে এর সঠিক নির্মাণকাল সম্পর্কে জানা যায় না।

ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ তিন গম্বুজবিশিষ্ট আয়তাকার ভূমি পরিকল্পনাবিশিষ্ট। গম্বুজের মধ্যে মেহরাবে, মসজিদের ভেতরের দেয়ালে শিউলী, গাঁদা, পদ্ম প্রভৃতি ফুল, ফুলের সাজি বা ফুলদানি, লতাপাতা দ্বারা অঙ্কিত। ফুলদানিগুলোর আকার ইরানি ফুলদানির আকৃতি বিশিষ্ট। চিত্রগুলির জ্যামিতিক ত্রিকোণ অঙ্কনে মুঘল স্থাপত্যকলার সঙ্গে বাঙালি স্থাপত্যকলার অপূর্ব সমাবেশ ঘটেছে। উত্তর-দক্ষিণে পরিমিতি ৪৬.৮ ফুট এবং পূর্ব-পশ্চিমে ১৫ ফুট।

মসজিদে নামাজের জন্য দুই কাতারে ৩০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন এবং মসজিদঘরের পশ্চিম দেওয়ালে তিনটি মেহরাব রয়েছে যাদের রূপ-নকশা তিন রকম। মেহরাব তিনটির মধ্যে মাঝখানের কেন্দ্রীয় মেহরাব কিছুটা বড় আকৃতির যার মাপ উচ্চতায় ৮ দশমিক ২১ ফুট এবং প্রশস্তে ৪ দশমিক ৬৭ ফুট। মসজিদের উত্তর-দক্ষিণে বড় জানালা আকৃতির আদলে ভেন্টিলেশন প্রাচীর রয়েছে যা মসজিদের স্বাভাবিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক বলে গবেষকরা মনে করেন এবং এরূপ আকৃতি ‘খিলান করা জানালা’ নামেও পরিচিত।

মসজিদের চার কোণায় চারটি বড় মিনার রয়েছে। সম্মুখের প্রশস্ত চত্বরের বেষ্টনীর দুই প্রান্তে এবং প্রবেশ পথের দুই দিকেও মিনার আছে। ক্ষুদ্রাকৃতির টালি, ইট ও চুন-সুরকির গাঁথুনি এবং দেওয়ালের বেড় ৩ ফুট। পশ্চিম ও পূর্ব দেয়ালের পুরুত্ব ৩ দশমিক ১০ ফুট এবং উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালের ৩ দশমিক ৩৩ ফুট। পূর্ব-পশ্চিমে উলম্বভাবে স্থাপিত দু’টি খিলানের ওপরে তিনটি গম্বুজের সাহায্যে মসজিদঘরের ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মসজিদের পূর্ব দেওয়ালে সম্মুখে তিনটি দরজা রয়েছে। কেন্দ্রীয় বা মধ্যবর্তী প্রবেশদ্বারটি, পাশ্ববর্তী দরজা দুটি অপেক্ষা কিছুটা উঁচু, এটির উচ্চতা ৬ দশমিক ৩৩ ফুট এবং প্রশস্ত ৩ দশমিক ৪২ ফুট।

মূল মসজিদ ঘরের পূর্বদিকে আয়তকার ‘সাহন’ রয়েছে। এর পরিমিতি পূর্ব-পশ্চিমে ৫৪ দশমিক ৪২ ফুট এবং উত্তর-দক্ষিণে ৫২ দশমিক ২ ফুট। উঁচু প্রবেশদ্বারের মূল ফটক এবং এর দুই পার্শ্বে কোণায় গম্বুজসহ মধ্যম গোলাকৃতি দুটি মিনার রয়েছে যা পুরো মসজিদের সৌন্দর্য বর্ধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। লোকচক্ষুর অন্তরালে একটি নিভৃত পল্লীতে মুঘল আমলে (শাসনকাল ১৫২৬-১৮৫৭) নির্মিত এই মসজিদটি কুষ্টিয়া তথা বাংলাদেশের একটি মূল্যবান স্থাপত্যশৈলী। ঝাউদিয়ার এই মসজিদটির ভিতরে মুঘল শিল্পকলার অপূর্ব নিদর্শন ও কারুকার্যে শোভিত রয়েছে- যা বাংলাদেশের মসজিদ স্থাপত্যশিল্পের নান্দনিক শিল্পের উদাহরণ। অনেক স্থানেই এমন অপূর্ব কারুকার্য শোভিত মসজিদ খুব কমই দেখা যায়। মুঘল আমলে নির্মিত মসজিদগুলির মধ্যে বাংলাদেশে যে কয়েকটি সৌন্দর্যে চমৎকার তার মধ্যে ঢাকার তারা মসজিদটির সঙ্গে ঝাউদিয়া শাহী মসজিদের তুলনা করা যায়। জমিদারের বংশীয় উত্তরসূরি হাসান আলী চৌধুরী তৎকালীন চেয়ারম্যান থাকাকালীন ১৯৬২ সালে মসজিদের বারান্দার উপর সুপ্রশস্ত ছাদ নির্মাণ করেন। কিন্তু মসজিদের পুরাকীর্তির মৌলিক সৌন্দর্য রক্ষার জন্যে প্রত্নতত্ত বিভাগ ১৯৭৯ সালে ছাদটি ভেঙে আগের অবস্থায় নিয়ে আসে। ১৯৮০ সালের দিকে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত বিভাগ এই ঐতিহ্যবাহী শাহী মসজিদ সংরক্ষণের দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং এখানে একজন কর্মচারী নিযুক্ত করে। প্রতি শুক্রবার এই মসজিদে জুম্মার নামায আদায় হয় এবং মান্নাত-সদ্কা-দান এসবের প্রাণি সম্প্রদানসহ নানা উদ্দেশে টাকা-পয়সা-সমমূল্যের উপঢৌকন দেবার জন্য প্রচুর সংখ্যক মুসলমানসহ অন্য ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। এ ছাড়া, এখানে শুক্রবার আরও শিরনি দেওয়ার জন্য শত শত লোকের আগমন ঘটে। পর্যটন মৌসুমে নানা শ্রেণির পর্যটকের সমাগমে মুখরিত হয়ে থাকে মসজিদের সম্মুখের প্রশস্ত বারান্দা ও চত্বর।

সুফি আদারী চৌধুরী মুঘল সম্রাট শাহজাহানের (শাসনকাল ১৫৯২-১৬৬৬) রাজত্বকালে ও তৎপরবর্তী এ অঞ্চলের জমিদার ছিলেন। মসজিদের অনতিদূরেই রয়েছে তার মাজার। তিনি মুঘলদের দানকৃত লাখেরাজ সম্পত্তির জমিদারি ভোগ করতেন। এলাকায় তিনি একজন বিশিষ্ট ইসলাম প্রচারক ও কামেল পীর নামেও পরিচিত। যার কারণে মুঘল বাদশাহ’র সন্তুষ্টি লাভে সমর্থ হন এবং বাদশার আর্থিক আনুকূল্য ও কারিগরি সহায়তায় তিনি এই অপূর্ব নিদর্শণ নির্মাণ করতে সফল হন। মসজিদ নির্মাণের সম্পূর্ণ জমি-জায়গা ও মাজার চত্বর পীর সাহেবের নিজস্ব মালিকানার ভূমি বলে স্বীকৃত আছে। কুষ্টিয়া অঞ্চলের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও পুরাকীর্তি বিষয়ে কুমুদনাথ মল্লিক লিখিত (শ্রীমোহিত রায় সম্পাদিত) ‘নদীয়া-কাহিনিতে এই মসজিদের নির্মাণ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে: ‘মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা শাহ সুফি সৈয়দ আহাম্মদ আলী বা সুফি আদারী মিয়া চৌধুরী। তিনি মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের দানভাজন ছিলেন। মসজিদের পাশেই তার মাজার। তিনি কামেল ফকির রূপে খ্যাত হন।’ চৌধুরী পরিবার থেকেও জানা যায়, মসজিদটি অষ্টাদশ শতকে নির্মিত হয়েছে। তিনি সুদূর ইরাক হতে ভারত, ভারত থেকে ঝাউদিয়া এসে ইসলাম প্রচার শুরু করেন এবং মসজিদটি নির্মাণ করেন। তিনি এ অঞ্চলে একজন প্রজা দরদি জমিদার ও দরবেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। তার পিতা শাহ আজিজুর রহমান দিল্লীর বাদশাহের নিকট থেকে কিছু ভূ-সম্পত্তি লাভ করেন বলেও জানা যায়।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পশ্চিম প্রান্তে হালসা রেল স্টেশনের দক্ষিণে নিকটবর্তী পাটিকাবাড়ী গ্রামে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট একটি প্রাচীন ‘পাটিকাবাড়ী শাহী মসজিদ’ ছিল যা বিলুপ্ত হয়ে এখন ‘পাটিকাবাড়ী খামারপাড়া জামে মসজিদ’ নামে পরিচিত। মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনামলে (১৬৫৮-১৭০৭) ঝাউদিয়ার শাহ সুফি সৈয়দ আহাম্মেদ আলী (আদারী মিয়া চৌধুরী) তার কাছারি সংলগ্ন চৌধুরী বাড়িতে মুঘল স্থাপত্যশৈলীতে নান্দনিক ও দৃষ্টিনন্দন এই ক্ষুদ্র মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। ইতিহাসের পাতা থেকে খুব সামান্যই এই মসজিদটি সম্পর্কে জানা যায়, মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৩৩ ফুট এবং প্রস্থ ১৩ ফুট। মসজিদের উপরে সমান তিনটি গম্বুজ, চার কোণায় চারটি এবং মাঝের দরজার দুই পার্শ্বে দুটি পিলারের উপরে দুটি ছোট মিনার ছিলো। ছোট ছোট টেরাকোটার রূপ-নকশা সম্বলিত ইট, চুন ও সুরকির গাঁথুনি এর দেওয়ালের বেড় ৩ ফুট। মসজিদটিতে দুই কাতারে ১৬ জন নামাজ আদায় করতে পারতেন। মসজিদটির ভেতরে এবং বাইরের দেওয়ালে লতাপাতা, ফুল অঙ্কিত ছিল; যা অযত্ন অবহেলায় বিনষ্ট হয়ে যায়। দীর্ঘদিন লোকচক্ষুর অন্তরালে এই প্রাচীন মুঘল শিল্পকলার নিদর্শনটি পড়ে ছিল। ঝাউদিয়ার চৌধুরীদের তৈরি এই মসজিদটিরও পূর্ব দিকে তিনটি এবং উত্তর ও দক্ষিণে একটি করে দুটি দরজা ছিল; তবে পশ্চিমেও একটি দরজা ছিল কিন্তু তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ঝাউদিয়া শাহী মসজিদের মতো এত সুন্দর না হলেও এর প্রাচীনত্ব সমসাময়িক। কিন্তু ভগ্নদশা সহজেই চোখে পড়লে ১৯১৫ সালে আকবর আলী চৌধুরী মসজিদটি সংস্কার করেছিলেন বলে জানা যায়। মসজিদের পাশেই চৌধুরীদের খননকৃত পুকুর রয়েছে।

মসজিদের সম্মুখে দুই খণ্ড বড় আকারের কালো পাথর ছিল-যা এলাকাবাসী পবিত্র মনে করত। বড় আক্ষেপ ও পরিতাপের বিষয় এই যে, এখানে মসজিদের প্রাচীন ঐতিহ্য স্থাপনা ভেঙে শেষ স্মৃতি ও পবিত্রতার নিদর্শনস্বরূপ দুইখানা দূর্লভ কালোপাথরের একখানা কিছুদিন আগেও ছিল বর্তমানে এখন আর নেই! পাথর দুটি চুরি হয়ে যায় বলে জনশ্রুতি আছে। নির্বোধের মতো ধুলিস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠাতার নাম নিশানা সবকিছু। দাপটে ভূস্বামীদের কাছে ইতিহাস ঐতিহ্যের নির্মম পরাজয়! আরও পরিতাপের বিষয় এলাকার যে কয়েকজন শিক্ষিত মুরুব্বি ও যুব সম্প্রদায় ছিলেন, তারা কেউই ইসলামী মহান ঐত্যিহ্যের গুরুত্ব অনুধাবন করেননি, বাধাও দেননি! গবেষক মনে করেন, এই টেরাকোটা সজ্জিত মসজিদটি অবশ্যই সংরক্ষণ করা যেত, কারণ একই চৌধুরী জমিদারের হাতে তৈরি ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ যদি সংরক্ষণ করা যায় তবে এটাও সম্ভব ছিল।

ড. মুহম্মদ এমদাদ হাসনায়েন: ইতিহাস গবেষক

 

Header Ad
Header Ad

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে ‘পাবলিক’ রাখতে হবে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইল

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী ও এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের ভিসা (এফ, এম ও জে ক্যাটাগরি) পেতে এখন থেকে ভিসা আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রোফাইল ‘পাবলিক’ বা উন্মুক্ত রাখার বাধ্যবাধকতা জারি করেছে দেশটির সরকার।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কনস্যুলার অ্যাফেয়ার্স বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী, এখন থেকে এম, এম এবং জে ক্যাটাগরির ননইমিগ্র্যান্ট ভিসার আবেদনকারীদের ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স (সাবেক টুইটার), ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টের প্রাইভেসি সেটিংস ‘পাবলিক’ রাখতে হবে।

দূতাবাস জানিয়েছে, এই পদক্ষেপ অবিলম্বে কার্যকর হচ্ছে। মূলত ভিসা আবেদনকারীর পরিচয় যাচাই এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের যোগ্যতা নির্ধারণের প্রক্রিয়া আরও কার্যকর ও স্বচ্ছ করতেই এই নতুন নিয়ম চালু করা হয়েছে।

এতে স্পষ্ট করে বলা হয়, গোপন বা ‘প্রাইভেট’ প্রোফাইলের কারণে আবেদনকারীর তথ্য যাচাইয়ে অসুবিধা হতে পারে, যা ভিসা প্রক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

নতুন এই নীতির ফলে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থী ও বিনিময় কর্মসূচির অংশগ্রহণকারীদের নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট উন্মুক্ত করে রাখার প্রস্তুতি নিতে হবে, যাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রাসঙ্গিক তথ্য দ্রুত যাচাই করতে পারে।

Header Ad
Header Ad

প্রকৃত ঘটনা জানলে হাসনাত আবদুল্লাহ তার ভুল বুঝতে পারবেন: দুদকের ডিজি

এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ ও দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

‘স্বাধীন বাংলাদেশে দুদকের চা খাওয়ার বিল এক লাখ টাকা’—এমন শিরোনামে দুদকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে গত ২৪ জুন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুদক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দুদকের মহাপরিচালক (ডিজি) আক্তার হোসেন বলেছেন, হাসনাত আবদুল্লাহ যখন প্রকৃত ঘটনা জানতে পারবেন কী ঘটেছে, তিনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন; যে তিনি ভুল করেছেন। দুদক কর্মকর্তাদের নামে যারা ফোন দিয়েছিল, তারা ছিল প্রতারক। সেসব প্রতারকদের ধরতে দুদকসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও চেষ্টা করছেন।

তিনি বলেন, যে বিষয়টি হাসনাত আবদুল্লাহ তার ফেসবুক পেজে তুলে এনেছেন, সে বিষয়টির ওপর দুদক অনুসন্ধান করছে। এছাড়াও এ বিষয়ে অনুসন্ধানের আরও অনেক দিক আসবে। তবে হাসনাত আবদুল্লাহ একটা দায়িত্বশীল অবস্থানে থেকে ভেরিফাই না করে এ ধরনের তথ্য ছড়ালে প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রতিষ্ঠান যাতে বিতর্কিত না হয়, নিশ্চয়ই সবাই সহযোগিতা করবো।

আক্তার হোসেন বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিতে একটা এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালানো হয়েছিল। সেই অভিযানের পরপরই যে চিকিৎসক অভিযোগ করেছেন, এনফোর্সমেন্ট অভিযানে তার নাম এসেছে বলে দাবি করেছেন। কিন্তু দুদক থেকে যখন অভিযানের তথ্য গণমাধ্যমে দেওয়া হয়, তখন তার নাম দেওয়া হয়নি। তিনি অন্যভাবে নাকি জেনেছেন। তাকেও এই অভিযোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। তিনি দুদকের কাছে বার বার অভিযোগ করছিলেন। এখন কেন তিনি প্রতারকের ফাঁদে পড়েছেন, পুরো বিষয়টি নিয়েই অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুদকের জনসংযোগ দপ্তরের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর একটি পোস্ট কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। পোস্টটিতে তিনি যাচাই-বাছাই ছাড়াই দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করেন।

এ বিষয়ে সতর্কতা জারি করে দুদক বলে, একটি প্রতারক চক্র দুদকের চেয়ারম্যান, মহাপরিচালক বা কর্মকর্তা পরিচয়ে মামলা থেকে অব্যাহতির আশ্বাস দিয়ে প্রতারণা করে আসছে। যার সঙ্গে কমিশনের কোনো কর্মকর্তা জড়িত নন। ইতিমধ্যে কমিশন বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে এবং প্রতারক চক্রের অনেককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

এর আগে, ২৪ জুন রাতে নিজের ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, 'স্বাধীন বাংলাদেশে দুদকের চা খাওয়ার বিল ১ লাখ টাকা।' ওই স্ট্যাটাসে আরও উল্লেখ করা হয়, 'আপনার নামে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ না থাকলেও ক্লিয়ারেন্স নিতে আপনাকে ১ লাখ টাকা দিতে হবে।'

তিনি দাবি করেন, সম্প্রতি মাহমুদা মিতুর কাছে থেকে এই টাকা দাবি করা হয়েছে দুদকের ডিজি আকতার ও একজন উপপরিচালকের পরিচয়ে। মাহমুদাকে বলা হয়, 'আপনি একজন ডাক্তার, আপনার তো টাকা-পয়সার অভাব থাকার কথা না। আপনি এক লাখ টাকা দিয়ে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যান।'

বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর দুদকের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ ঘটনায় দুদকের কোনো কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা নেই।

Header Ad
Header Ad

বিরামপুরে আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস পালিত

বিরামপুরে আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস পালিত। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনটি উদ্‌যাপন করা হয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রথমে একটি র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়।

পরে বিকেল ৪টায় উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফার্স্ট কনসার্ন্স (বিওয়াইএফসি)-এর আয়োজনে একটি আলোচনা সভা ও খেলাধুলার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুজহাত তাসনীম আওন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিরামপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সমশের আলী মন্ডল, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এনামুল হক চৌধুরী, একাডেমিক সুপারভাইজার আব্দুস সালাম এবং বিরামপুর প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক শাহ্ আলম মন্ডল।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিওয়াইএফসি'র প্রোগ্রাম ম্যানেজার সম্রাট বেপারী। আলোচনা সভায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন এবং মাদকবিরোধী সচেতনতা বিষয়ে মতামত ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।

আলোচনা শেষে বিওয়াইএফসি’র পক্ষ থেকে উপজেলার ১৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে খেলার সামগ্রী বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি ও তরুণ সমাজকে খেলাধুলা ও ইতিবাচক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানানো হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে ‘পাবলিক’ রাখতে হবে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইল
প্রকৃত ঘটনা জানলে হাসনাত আবদুল্লাহ তার ভুল বুঝতে পারবেন: দুদকের ডিজি
বিরামপুরে আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস পালিত
এনসিপির তুষারের বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর আলাপ’সহ যত অভিযোগ নীলা ইসরাফিলের
২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ১৯ জনের করোনা শনাক্ত
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছর নির্ধারণ করে স্বৈরাচারকে রুখে দেয়া হয়েছে: সালাহউদ্দিন আহমদ
নীরবতা ভেঙে খামেনি বললেন, ইরান ‘বিজয়’ অর্জন করেছে
সাংবাদিকতায় বাংলাদেশের মতো স্বাধীনতা উন্নত বিশ্বেও নাই: প্রেস সচিব
রংপুরে দেশীয় অস্ত্র ও অবৈধ মাদকসহ ২ যুবক গ্রেফতার
৪৩ দিন পর নগর ভবনে এলেন ডিএসসিসি প্রশাসক, পেলেন অভ্যর্থনা
ভেঙেই গেল জনপ্রিয় মার্কিন গায়িকা কেটি পেরির সংসার!
সব সরকারি ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল বসানোর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
জেলার সব প্রতিষ্ঠানে ডোপ টেস্টের ঘোষণা দিলেন ডিসি
রংপুরে চিকিৎসা অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু, হাসপাতালকে ২ লাখ জরিমানা
টাঙ্গুয়ার হাওরে গাঁজা সেবন দায়ে ৫ পর্যটকের কারাদণ্ড
৮৩ লাখ মাদকাসক্ত দেশে, গাঁজা সেবনকারী সবচেয়ে বেশি
নতুন গিলাফে আবৃত পবিত্র কাবা শরিফ
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়ালের ৩ দিনের রিমান্ড
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ
সারাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এইচএসসি পরীক্ষা চলছে: শিক্ষা উপদেষ্টা