পদত্যাগ করলেন ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রী

আহমেদ আওয়াদ বিন মুবারক। ছবি: সংগৃহীত
ক্ষমতা ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েনের পর পদত্যাগ করলেন ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ আওয়াদ বিন মোবারক। শনিবার (৩ মে) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন।
বিবৃতিতে তিনি জানান, সরকারে কাঙ্ক্ষিত রদবদল আনতে ব্যর্থতা এবং বিভিন্ন প্রশাসনিক সমস্যার মুখোমুখি হয়ে তিনি এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।
তবে শুধু প্রশাসনিক ব্যর্থতাই নয়, এই পদত্যাগের পেছনে রয়েছে গভীর রাজনৈতিক টানাপোড়েন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট কাউন্সিলের প্রধান রাশাদ আল-আলিমির সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে জটিল দ্বন্দ্বে জড়িয়েছিলেন আহমেদ আওয়াদ। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, প্রধানমন্ত্রী অন্তত ১২ জন মন্ত্রীকে বরখাস্ত করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট কাউন্সিল তা প্রত্যাখ্যান করে। এরপর থেকেই দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে।
সরকারের ছয়টি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর দেশটির বর্তমান অর্থমন্ত্রী সালেম সালেহ বিন ব্রাইক নতুন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেতে পারেন।
আহমেদ আওয়াদ দীর্ঘদিন ইয়েমেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০২۳ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন। এর আগেই তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি পান ২০১৫ সালে হুথি বিদ্রোহীদের হাতে অপহৃত হওয়ার ঘটনার মধ্য দিয়ে। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আবদ-রাব্বু মনসুর আল-হাদির চিফ অব স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় হুথি বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়ান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর এই পদত্যাগ এমন সময় এলো, যখন ইয়েমেন উত্তপ্ত সামরিক সংকটে জর্জরিত। ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের সামরিক শক্তি দমনে যুক্তরাষ্ট্র একাধিক বিমান ও ড্রোন হামলা চালাচ্ছে, বিশেষ করে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হুথিদের হামলা প্রতিহত করতে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে হুথি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা দখলের মধ্য দিয়ে ইয়েমেনের বৈধ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়। এর পর থেকে দেশটি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ভয়াবহ গৃহযুদ্ধে লিপ্ত। বর্তমানে উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকা হুথিদের নিয়ন্ত্রণে।
