মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪ | ৬ কার্তিক ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

পুষ্পাদির চলে যাওয়া

পুষ্পা দিদি। আমি তাকে পুষ্পাদি বলে ডাকি।দিদি আমার থেকে ৫/৬ বছরের বড় ছিল।আমি পড়ি ষষ্ঠ শ্রেনিতে আর সে পড়ত অষ্টম শ্রেণিতে।আমরা দু’জন এক পাড়াতে থাকি এবং একই স্কুলে পড়ি। আমি আমার বাড়ি থেকে বের হয়ে পুষ্পাদির জন্য তার বাড়িতে এসে অপেক্ষা করি

আমাদের পাড়াটি মুসমান ও হিন্দু মিলে প্রায় দুই আড়াই হাজারের মানুষের বসবাস। অত্যন্ত দরিদ্র অর্ধষিত এলাকা। এর মধ্যে কিছু মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবার ও হিন্দু পরিবার আছে।যে সকল অভিভাবক একটু সচেতন তাদের ছেলে মেয়েরা স্কুলে যায়।আর বাকি সব ছেলে মেয়েরা যায়না। ১০/১২ বছর হলে ছেলেরা ক্ষেতের কাজ কর্মে লেগে যায়। আর মেয়েরা বাড়িতে সংসারের কাজে মাকে সাহায্য করার জন্য লেগে যায়। পুষ্পাদির বাবা আর দুই ভাই আমাদের স্থানীয় বাজারে স্বর্নাকার। টাকা পয়সা ভালই রোজগার করে। এজন্য ভায়েদের ইচ্ছা পুষ্প অন্তত মাধ্যমিকটা পাস করুক। পুষ্পাদির বড় ভাই সুমিত বলে,তোরা দু’জন একসাথে স্কুলে যাবি আবার এক সাথে আসবি। তাদের বাড়িতে গেলে নানা রকম পিঠা ,নাড়ু–,মুড়ি খেতে দেয় আমাকে। পূজা এলে আগেই দাওয়াত দিয়ে রাখে। এজন্য প্রহরির মত তার সাথে স্কুলে যাই আসি। গ্রামের দুষ্টু ছেলেরা মাঝে মধ্যে প্রেমের প্রস্তাব দেয় আবার সুযোগ পেয়ে ২/১ একটা চিঠি লেখে বইয়ের মাঝে গুজে দিতে চেষ্টা করে। পুষ্পাদি খুব শান্ত প্রকৃতির মেয়ে। তাঁর গায়েে রং কালো। কালো হলে কি হবে মুখের গঠন খুব সুন্দর।মাথার চুলগুলো অনেক লম্বা এবং কুচকুচে কালো। সুন্দর একটা ঘ্রাণের ক্রীম মুখে মাখে সে।পুষ্পাদির ক্রীমের ঘ্রাণটা আমারও ভালো লাগে। ঘ্রাণটা আমার নাকে আসলে পুষ্পাদিকে কেমন যেন অন্য রকম লাগে। এত দিন যাবত তার সাথে আসা যাওয়া তারপরও মনে হত সে এক রহস্যময়ি!তার হাতের সাথের আমার হাত স্পর্শ করলে সে ঘ্রাণটা লেগে থাকত অনেকক্ষণ।সে ঘ্রাণটা নিরবে অনুভব করি আমি। স্কুলে যাওয়ার জন্য তাঁর বাড়িতে আগে গিয়ে উপস্থিত হলে সে বলে,এই অন্তু একটু দাঁড়া আমার হয়ে গেছে।আমাকে দাঁড় করিয়ে সে পাটখড়ির বেড়ার সাথে ছোট্ট আয়নায় মুখ দেখে কৌটা থেকে ক্রীম মুখে মাখে। ইংরেজিতে লেখা-Tibet Snow আমি ইংরেজি উচ্চারণটা করার জন্য চেষ্টা করি,পারিনা। একদিন জানতে চাইলাম পুষ্পাদি তুমি যে ক্রীমটা মুখে দেও তার নাম কি? পুষ্পাদি বলে, কেনরে মুখে মাখার জন্য কিনবি? সে আরও বলে, এ ক্রীম মেয়েরা মুখে দেয়। তয় ছেলেরাও মাখে। এদিকে আয় এই বলে আমার মুখে মেখে দেয়। কী মোহনীয় খুশবু! পুষ্পাদিকে আবার দেখি ভালো করে। আমার চাওয়া দেখে সে বলে,কি দেখছিস ? এর নাম তিব্বত স্নো। আমি সারাদিন মনে রাখার চেষ্টা করি। তিব্বত স্নো।

আমার পরিবার মধ্যবিত্ত।জমিতে বিভিন্ন ফসল চাষ করে।গরু আছে গোয়ালে। বড় দুই ভাই বাবার সাথে জমিতে কাজ করে। তাঁরা সামান্য লেখাপড়া করেছে। আমি যত ক্লাস পড়তে পারি আমাকে তাঁরা পড়াবে। এজন্য লেখাপড়া এবং খেলার মাঠ উন্মুক্ত। বিকাল হলে বহর বাজারের ঐকাতন সংসদের মাঠে মিনাল,সিরাজ, আওলাদ ওদের সাথে ফুটবল খেলি। মাঝে মধ্যে বড়দের জন্য মাঠে সুযোগ না পেলে পাইক বাড়ির ফাঁকা জায়গায় খেলি। আামাদের একটা ফুটবল টিম আছে। সুযোগ পেলে বিভিন্ন পাড়ার সাথে টিম খেলি। নিজেরা টাকা তুলে শীল্ড কিনি পুরস্কারের জন্য। সন্ধ্যা হলে বাড়ি ফিরি। বাড়ি ফেরার সময় দেখি পুষ্পাদি পড়তে বসেছে। আমার আরও আগ্রহ বেড়ে যায় পড়ার প্রতি। বাড়ি এসে হাত মুখ ধুয়ে হারিকেন জালিয়ে পড়তে বসি।

একদিন সন্ধ্যায় বাবা বাড়ি ফিরে মায়ের সাথে আলাপ করতে শুনতে পেলাম শহরের অবস্থা বেশি ভালো না। ঢাকা শহর খুব গরম।কয়েক দিন আগে শেখ মুজিব ভাষণ দিয়েছিলেন সেজন্য শহরে মেলিটারি নামছে। শহরে এখন মিছিল মিটিং লেগে আছে। অনেক মানুষ ধরে জেলে আটকে রেখেছে। সামনের দিনগুলোতে কি হবে বুঝতে পারছেনা কেউ!

আমি শুনে তেমন অবাক হইনা। আমাদের গ্রামে কয়েক মাস আগে দুই পক্ষ ক্ষমতার আধিপত্য টিকিয়ে রাখার জন্য ঝগড়া হয়। এ ঝগড়াতে দুই পক্ষের কিছু লোক জখম হয়েছিল। মজিদ শেখের হাত ভেঙ্গে গিয়েছিল। আমি আর পুষ্পাদি নিয়মিত স্কুলে যাই।ভালোই চলছিল আমাদের স্কুলে আসা যাওয়া। নিয়মিত খেলাধুলা সন্ধ্যায় বই নিয়ে পড়তে বসা। একদিন স্কুলে গিয়ে শুনি দেশে যুদ্ধ লেগেছে। শহর থেকে হাজার হাজার লোক গ্রামে পালিয়ে আসছে।কেউ আসতে পেরেছে আবার কেউ গুলি খেয়ে রাস্তায় পরে মরে আছে। কেউ কোন ভাল খবর দিতে পারছেনা। সবাই যেন একটা গোলক ধাঁধার মধ্যে পড়ে আছে।স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যাও কম। ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা খুব কম। যে সকল স্যারেরা স্কুলে আছেন তারা ক্লাস না নিয়ে লাইব্রেরিতে বসে কথা বলছেন। সব স্যারেদের চোখে মুখে কেমন যেন একটা উৎকণ্ঠার ছাপ। ক্লাসে যাওয়ার জন্য স্যারেরা আগের মত কোন তাড়া দিচ্ছেনা। তাদের ব্যবহার দেখে মনে হল তারা স্কুলের কেউ না। ছাত্র ছাত্রীরা যে যার মত আড্ডা,গল্প করছে। কোন ক্লাস হলনা। স্যারেরা ছুটি দিয়ে দিলেন।বললেন, তোমরা সবাই বাড়ি চলে যাও। আমি আর পুষ্পাদি সেদিনের জন্য বাড়ি ফিরে আসি। আসার মধ্যে রাস্তায় আমার সাথে পুষ্পাদি তেমন কথা বললনা। দিদি কেমন যেন মনমরা হয়ে গেল বাড়ি ফেরার পথে।
বিকেল বেলা জানতে পারি দুই দিন আগে পাকিস্তানিরা শহরে আক্রমন করেছে বহু লোক মেরে ফেলেছে। যাকে যেখানে পায় সেখানে গুলি করে মেরে ফেলছে পশ্চিম পাকিস্তানিরা। শেখ মুজিবকে ধরে কোথায় নিয়ে গেছে বলতে পারেনা কেউ। সবার মধ্যে একটা উৎকণ্ঠার ছাপ। কেউ মন দিয়ে কাজে যায়না। ইচ্ছে হলে যায় আবার কেউ যায় মনু মোল্লার বাড়ি রেডিওর খবর শুনতে। গ্রামের মধ্যে যেন একটা শুনশান নিরবতা বিরাজ করছে। গ্রামের মানুষেদের মধ্যে কোন আনন্দ,উৎসাহ উদ্দীপনা নেই। স্কুলে যাওয়ার জন্য কেউ কিছু বলেনা। মাঝে মধ্যে পুষ্পাদির বাড়ির দিকে গিয়ে দেখি সে নীরবে কাজ করে যাচ্ছে। আমাকে দেখে আগের মত উৎসাহ নিয়ে ডাক দেয়না,কথা বলেনা। আমিও তার প্রতি একটু অভিমান করি। তাঁকে দিনে ২/১ বার দেখা হলে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে রাখি। দেখি সে আমাকে ডাক দেয় কিনা।না,তাঁর মধ্যে তেমন কোন প্রতিক্রিয়া হয়না। একবার কি কারণে পুষ্পাদি আমাকে একটা থাপ্পর মেরেছিল । আমি দু’দিন তাঁর সাথে স্কুলে যাইনি।পরের দিন আমার স্কুলে যাওয়া রাস্তা আটকিয়ে হাত ধরে বলে,ভাই আমি এতজোরে থাপ্পর মারতে চাইনি। লেগে গেছে। মাফ করে দে। হাত জোড় করে বলে। আমি তোর পুষ্পাদি না! আমি আর রাগ করে থাকতে পারিনি। তাকে ধরে কেঁদে ফেলেছি। পুষ্পাদি বলে,আর কোনদিন তোকে মারবনা। কিন্তু এখন সে এমন করছে কেন আমার সাথে? আমি তো এমন কিছু করিনি। মন খুব খারাপ লাগে। গ্রামের সব লোকজনই কেমন যেন অন্য রকম হয়ে গেছে। কারও মন বুঝতে পারেনা কেউ।

গ্রামের সবাই বলাবলি করছে দেশে গন্ডগোল লাগছে। গ্রামেও পাকিস্তানি মেলিটারিরাও হামলা করছে। আমি মনে মনে ভাবি গ্রামে মেলিটারিরা আসলে কি হবে এখানে কেউ মিটিং,মিছিল করেনা।
কয়েকদিন ধরে পুষ্পাদির বাড়ির দিকে যাওয়া হয়না। আজ কেন যেন সকাল থেকে তার কথা মনে পড়ছে। আবার ভাবি সে পড়াশোনা করছে কিনা গিয়ে দেখি। সকালে ঘুম থকে ওঠে তাদের বাড়ির দিকে যাই। গিয়ে দেখি ঘরের দরজা বন্ধ। পুষ্পাদির মা ঘরের কোণে বসে চুপচাপ কি যেন করছে।আর কাউকে বাড়িতে দেখছিনা। কেমন যেন ঝিম মেরে গেছে বাড়িটা। আরও কয়েক বার ঘুরে বাড়ি চলে আসি। মনে মনে ভাবি,হয়তো কোথাও বেড়াতে গেছে বিকেল হলে চলে আসবে। সারাদিন এদিক ওদিকে ঘুরে দিন কাটে। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে মায়ের কাছে শুনতে পাই পুষ্পাদি আর দুই ভাই রাতে ইন্ডিয়া চলে গেছে। ইন্ডিয়া কেন চলে গেছে আমি বুঝতে পারিনা। ইন্ডিয়া কোথায়? আর কেনইবা গেল আমি জানার জন্য অস্থির কার কাছে জানব ? সাহস হলনা কাউকে জিজ্ঞাসা করার। আবার ভাবি,হয়তো কিছুদিন পর চলে আসবে।

একদিন সব জানতে পারি এবং বুঝতে পারলাম আর কোনদিন আসবে এখানে। পরশু রাতে উত্তর পাড়া প্রাইমারি স্কুলে মেলিটারি এসেছে। উত্তর পাড়া আমাদের গ্রাম থেকে তিন সাড়ে কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মাঝে শুধু একটা বড় চক পড়ে। গ্রামের জোয়ান জোয়ান ছেলেদের ধরে গুলি করে মেরে ফেলে। কারণ তাঁরাই মুক্তিযুদ্ধে গিয়ে তারা দেশটাকে স্বাধিন করার জন্য অনেক পাকিস্তানি মেলিটারিদের হত্যা করছে। তাদের নাম মুক্তিযোদ্ধা কোন গ্রামে হিন্দু থাকলে তাদের উপর বেশি অত্যাচার করে এবং মেরে ফেলে। যুবতি মেয়েদের ধরে নিয়ে যায় পাকিস্তানি ক্যাম্পে। নানাভাবে র্নিযাতন করে।গ্রামের জোয়ান ছেলে মেয়েরা কেউ নিরাপদ না।গ্রাম ছেড়ে সবাই দূরে কোথাও পালাতে লাগল। এই জন্য পুষ্পাদিরা রাতের আঁধারে ইন্ডিয়া চলে গেছে। তার চলে যাওয়ার কথা শোনে আমার চিৎকার করে কান্না পেতে লাগল।কিন্তু পারিনি কাঁদতে। শুধু মাঝে তার জন্য একটা পাথর জমা হয়ে আছে। আরও মনে হতে লাগল,গ্রামের মাটির পথ ধরে সর্ষে ক্ষেতের আল ধরে সে চলে যাচ্ছে খুব সহজে। আর কোন দিন পুষ্পাদির সাথে দেখা হবে না এ কথা ভেবে খুব কষ্ট হচ্ছে।

 

ডিএসএস/ 

Header Ad

হাফ ভাড়া না নেওয়ায় ৩০ বাস আটকেছে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীরা

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থীকে ভিআইপি পরিবহনের বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে শিক্ষার্থীরা ৩০টি বাস আটক করেছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থী সাবিত, যিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের ছাত্র, অভিযোগ করেছেন যে তিনি বাসে উঠার পর হাফ ভাড়া নিয়ে বাসের হেল্পারের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। বাস থেকে নামার সময় হেল্পার তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়, ফলে তার দুই পা কেটে যায়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা নিতে হয়।

আহত সাবিত জানান, "আমি আজিমপুর থেকে কলেজে আসার জন্য ভিআইপি বাসে উঠি। নামার সময় হাফ ভাড়া দিতে চাওয়ায় তারা আমার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এরপর আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়, যার ফলে আমি পা ও হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হই।"

অপরদিকে, আটক বাস চালকরা জানিয়েছেন, পূর্ববর্তী কোনো ঘটনার কারণে এসব বাস আটক করা হয়েছে। লিটন নামের এক চালক বলেন, "কোন বাসের সঙ্গে ঘটনা ঘটেছে সেটা আমি জানি না। তবে, শুনেছি কলেজের এক ছাত্রকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে হেল্পার। তাই আমাদের বাসগুলো আটক করেছে।"

ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস এই বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, "আমরা বিষয়টি জেনেছি এবং নিউমার্কেট থানাকে জানিয়েছি। থানার কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি দেখছে। তবে শিক্ষার্থীদের নিজেদের হাতে বিচার তুলে নেওয়া উচিত নয়।"

বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে স্থানীয় নিউমার্কেট থানার পুলিশ ও কলেজ প্রশাসনের মধ্যস্থতায় আটক বাসগুলো নিয়ে যায় মালিকপক্ষ। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি না ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা।

Header Ad

ভারত-চীন সীমান্ত বিরোধের অবসান ঘটেছে, ঘোষণা দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের

ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘকাল ধরে চলমান ভারত ও চীনের সীমান্ত সমস্যা অবশেষে মিটে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষও ঘটেছে, কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি উন্নতির পথে রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ভারতের গণমাধ্যম দ্য হিন্দু এবং আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা এএফপির রিপোর্টে এ তথ্য প্রকাশিত হয়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) সংক্রান্ত এলাকায় 'টহল বন্দোবস্ত' এবং সেনা মোতায়েনের বিষয়ে যে অচলাবস্থা ছিল, তা সমাধান করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে রাশিয়ায় অবস্থান করছেন। তাঁর এই সফরের প্রেক্ষিতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি বলেন, "গত কয়েক সপ্তাহে ভারত ও চীনের কূটনীতিক এবং সামরিক মধ্যস্থতাকারীরা বিভিন্ন ফোরামে আলোচনা করেছেন। এই আলোচনার ফলস্বরূপ, সীমান্তে বিরোধের বিষয়গুলো সমাধান হয়েছে।"

তিনি আরও জানান, দুই দেশ এখন 'পরবর্তী উদ্যোগ' নিতে শুরু করবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও এই চুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, "২০২০ সালের আগে সীমান্তে যে ধরনের টহল কার্যক্রম পরিচালনা করা হত, তা আবারও শুরু হবে।"

যদিও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই চুক্তির বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি, তবে জয়শঙ্কর বলেছেন, "২০২০ সালের পরিস্থিতিতে ফিরে গেছি, যার মাধ্যমে আমি বলতে পারি যে চীনের সঙ্গে সীমান্তে বিরোধের অবসান ঘটেছে।"

অতীতে, ভারত সরকার জানিয়েছিল যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি তখনই ফিরে আসবে, যখন চীন তাদের সেনা সরিয়ে নেবে। চীনের সেনা মোতায়েনের জবাবে ভারতও ওই এলাকায় সেনা মোতায়েন করে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্রিকস সম্মেলন শুরুর এক দিন আগে এই ঘোষণায় মোদি ও শি জিনপিংয়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে মোদি ও শি'র দেখা হয়েছে ১৪ বার, কিন্তু ২০২২ সালে গালওয়ান উপত্যকায় সংঘাতের পর মাত্র দুইবার তারা সাক্ষাৎ করেছেন।

এ বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লি জিয়ান জানিয়েছেন, "ভারত-চীন সীমান্তের বিরোধিতাপূর্ণ বিষয়গুলো সমাধানে দুই দেশ একমত হয়েছে।"

Header Ad

টাকা না পেয়ে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের গেটে তালা দিল গ্রাহকরা

ছবি: সংগৃহীত

টাকা না পাওয়ায় চাঁদপুরের সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল) শাখায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকাল থেকে শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার ফয়সাল শপিং কমপ্লেক্সে অবস্থিত ব্যাংকটিতে টাকা উত্তোলনের জন্য গ্রাহকরা জড়ো হন। তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ লেনদেন বন্ধ রাখলে উত্তেজিত গ্রাহকরা প্রবেশদ্বারে তালা লাগিয়ে দেন।

পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়। চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া উপস্থিত হয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

চাঁদপুর জেলা শাখায় সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ২২ হাজার গ্রাহক রয়েছে, কিন্তু বর্তমানে ১০০ জন গ্রাহকেরও টাকা দিতে পারছে না ব্যাংক। জেলার অন্যান্য শাখাগুলোর পরিস্থিতিও একই রকম। ব্যাংকের টাকা সংকটের কারণে গ্রাহকরা চাহিদা অনুযায়ী সেবা পাচ্ছেন না, যা তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

সরকার পতনের পর থেকেই ব্যাংকটির লেনদেনে জটিলতা শুরু হয় এবং তা এখনও স্বাভাবিক হয়নি। বর্তমানে ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। তবে টাকার সংকটের কারণে প্রতিষ্ঠানটি ঠিকমতো সেবা দিতে পারছে না।

অনেক গ্রাহক জানান, দুই সপ্তাহ ধরে টাকা তোলার জন্য ব্যাংকে এসে ব্যর্থ হচ্ছেন। প্রতিবারই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের পরবর্তী সপ্তাহে আসার পরামর্শ দেন, কিন্তু টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা হয় না। আজকের দিনেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় গ্রাহকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ব্যাংকের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন।

ব্যাংকের ম্যানেজার মো. মাহবুব আলম জানান, রোববার ও সোমবার সীমিত আকারে লেনদেন চলছিল, তবে গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। আজ সম্পূর্ণ লেনদেন বন্ধ থাকায় গ্রাহকরা তালা মেরেছেন। তিনি আরও জানান, প্রধান কার্যালয় থেকে ২০ লাখ টাকা দেওয়ার আশ্বাস পাওয়া গেছে, যা দিয়ে আপাতত গ্রাহকদের ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া সম্ভব হবে।

ওসি মো. বাহার মিয়া বলেন, "ব্যাংকে ভিড় জমেছে এবং গ্রাহকরা তাদের টাকা পাচ্ছেন না, এমন খবর পেয়ে আমরা টহল পার্টি পাঠাই। পরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে আমি নিজে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি এবং ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে কিছু টাকার ব্যবস্থা করি। আশা করছি, আপাতত গ্রাহকদের শান্ত করা যাবে।"

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

হাফ ভাড়া না নেওয়ায় ৩০ বাস আটকেছে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীরা
ভারত-চীন সীমান্ত বিরোধের অবসান ঘটেছে, ঘোষণা দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
টাকা না পেয়ে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের গেটে তালা দিল গ্রাহকরা
২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম
আন্দোলনে মাথায় গুলিবিদ্ধ শিশু মুসা উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হলো
বিরামপুরে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইনের এ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত
১৭ প্রতিষ্ঠানসহ সালমান পরিবারের নথি তলবে ৭০ সংস্থায় চিঠি
আন্ডারপাসের দাবিতে ঢাকা-যমুনা সেতু মহাসড়ক অবরোধ, যানবাহনের দীর্ঘলাইন
নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আইনি লড়াইয়ের পথ খুলল
এসআই অব্যাহতির পেছনে কোনো রাজনৈতিক কারণ নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ক্ষমা চেয়ে আদালতে ব্যারিস্টার সুমন বললেন, ‘আমি খুব সরি স্যার’
ফেসবুক লাইভে মিথ্যা আতঙ্ক ছড়ালেন সাদিয়া আয়মান
পঞ্চগড়ে সর্বনিম্ন ১৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড
১৬ বছরে ২৪ হাজার কোটি টাকার চাঁদাবাজি করেছেন শাজাহান খান
নারায়ণগঞ্জে আসামির ছুরিকাঘাতে পুলিশ সদস্য আহত
ব্যারিস্টার সুমন ৫ দিনের রিমান্ডে
লিবিয়া থেকে ফিরলেন আরও ১৫৭ বাংলাদেশি
সারদায় পুলিশের ২৫০ ক্যাডেট এসআইকে অব্যাহতি
ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ও রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে গনজমায়েতের ডাক
৩৬৯ দিন পর অবশেষে মাঠে ফিরলেন নেইমার