শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

পুষ্পাদির চলে যাওয়া

পুষ্পা দিদি। আমি তাকে পুষ্পাদি বলে ডাকি।দিদি আমার থেকে ৫/৬ বছরের বড় ছিল।আমি পড়ি ষষ্ঠ শ্রেনিতে আর সে পড়ত অষ্টম শ্রেণিতে।আমরা দু’জন এক পাড়াতে থাকি এবং একই স্কুলে পড়ি। আমি আমার বাড়ি থেকে বের হয়ে পুষ্পাদির জন্য তার বাড়িতে এসে অপেক্ষা করি

আমাদের পাড়াটি মুসমান ও হিন্দু মিলে প্রায় দুই আড়াই হাজারের মানুষের বসবাস। অত্যন্ত দরিদ্র অর্ধষিত এলাকা। এর মধ্যে কিছু মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবার ও হিন্দু পরিবার আছে।যে সকল অভিভাবক একটু সচেতন তাদের ছেলে মেয়েরা স্কুলে যায়।আর বাকি সব ছেলে মেয়েরা যায়না। ১০/১২ বছর হলে ছেলেরা ক্ষেতের কাজ কর্মে লেগে যায়। আর মেয়েরা বাড়িতে সংসারের কাজে মাকে সাহায্য করার জন্য লেগে যায়। পুষ্পাদির বাবা আর দুই ভাই আমাদের স্থানীয় বাজারে স্বর্নাকার। টাকা পয়সা ভালই রোজগার করে। এজন্য ভায়েদের ইচ্ছা পুষ্প অন্তত মাধ্যমিকটা পাস করুক। পুষ্পাদির বড় ভাই সুমিত বলে,তোরা দু’জন একসাথে স্কুলে যাবি আবার এক সাথে আসবি। তাদের বাড়িতে গেলে নানা রকম পিঠা ,নাড়ু–,মুড়ি খেতে দেয় আমাকে। পূজা এলে আগেই দাওয়াত দিয়ে রাখে। এজন্য প্রহরির মত তার সাথে স্কুলে যাই আসি। গ্রামের দুষ্টু ছেলেরা মাঝে মধ্যে প্রেমের প্রস্তাব দেয় আবার সুযোগ পেয়ে ২/১ একটা চিঠি লেখে বইয়ের মাঝে গুজে দিতে চেষ্টা করে। পুষ্পাদি খুব শান্ত প্রকৃতির মেয়ে। তাঁর গায়েে রং কালো। কালো হলে কি হবে মুখের গঠন খুব সুন্দর।মাথার চুলগুলো অনেক লম্বা এবং কুচকুচে কালো। সুন্দর একটা ঘ্রাণের ক্রীম মুখে মাখে সে।পুষ্পাদির ক্রীমের ঘ্রাণটা আমারও ভালো লাগে। ঘ্রাণটা আমার নাকে আসলে পুষ্পাদিকে কেমন যেন অন্য রকম লাগে। এত দিন যাবত তার সাথে আসা যাওয়া তারপরও মনে হত সে এক রহস্যময়ি!তার হাতের সাথের আমার হাত স্পর্শ করলে সে ঘ্রাণটা লেগে থাকত অনেকক্ষণ।সে ঘ্রাণটা নিরবে অনুভব করি আমি। স্কুলে যাওয়ার জন্য তাঁর বাড়িতে আগে গিয়ে উপস্থিত হলে সে বলে,এই অন্তু একটু দাঁড়া আমার হয়ে গেছে।আমাকে দাঁড় করিয়ে সে পাটখড়ির বেড়ার সাথে ছোট্ট আয়নায় মুখ দেখে কৌটা থেকে ক্রীম মুখে মাখে। ইংরেজিতে লেখা-Tibet Snow আমি ইংরেজি উচ্চারণটা করার জন্য চেষ্টা করি,পারিনা। একদিন জানতে চাইলাম পুষ্পাদি তুমি যে ক্রীমটা মুখে দেও তার নাম কি? পুষ্পাদি বলে, কেনরে মুখে মাখার জন্য কিনবি? সে আরও বলে, এ ক্রীম মেয়েরা মুখে দেয়। তয় ছেলেরাও মাখে। এদিকে আয় এই বলে আমার মুখে মেখে দেয়। কী মোহনীয় খুশবু! পুষ্পাদিকে আবার দেখি ভালো করে। আমার চাওয়া দেখে সে বলে,কি দেখছিস ? এর নাম তিব্বত স্নো। আমি সারাদিন মনে রাখার চেষ্টা করি। তিব্বত স্নো।

আমার পরিবার মধ্যবিত্ত।জমিতে বিভিন্ন ফসল চাষ করে।গরু আছে গোয়ালে। বড় দুই ভাই বাবার সাথে জমিতে কাজ করে। তাঁরা সামান্য লেখাপড়া করেছে। আমি যত ক্লাস পড়তে পারি আমাকে তাঁরা পড়াবে। এজন্য লেখাপড়া এবং খেলার মাঠ উন্মুক্ত। বিকাল হলে বহর বাজারের ঐকাতন সংসদের মাঠে মিনাল,সিরাজ, আওলাদ ওদের সাথে ফুটবল খেলি। মাঝে মধ্যে বড়দের জন্য মাঠে সুযোগ না পেলে পাইক বাড়ির ফাঁকা জায়গায় খেলি। আামাদের একটা ফুটবল টিম আছে। সুযোগ পেলে বিভিন্ন পাড়ার সাথে টিম খেলি। নিজেরা টাকা তুলে শীল্ড কিনি পুরস্কারের জন্য। সন্ধ্যা হলে বাড়ি ফিরি। বাড়ি ফেরার সময় দেখি পুষ্পাদি পড়তে বসেছে। আমার আরও আগ্রহ বেড়ে যায় পড়ার প্রতি। বাড়ি এসে হাত মুখ ধুয়ে হারিকেন জালিয়ে পড়তে বসি।

একদিন সন্ধ্যায় বাবা বাড়ি ফিরে মায়ের সাথে আলাপ করতে শুনতে পেলাম শহরের অবস্থা বেশি ভালো না। ঢাকা শহর খুব গরম।কয়েক দিন আগে শেখ মুজিব ভাষণ দিয়েছিলেন সেজন্য শহরে মেলিটারি নামছে। শহরে এখন মিছিল মিটিং লেগে আছে। অনেক মানুষ ধরে জেলে আটকে রেখেছে। সামনের দিনগুলোতে কি হবে বুঝতে পারছেনা কেউ!

আমি শুনে তেমন অবাক হইনা। আমাদের গ্রামে কয়েক মাস আগে দুই পক্ষ ক্ষমতার আধিপত্য টিকিয়ে রাখার জন্য ঝগড়া হয়। এ ঝগড়াতে দুই পক্ষের কিছু লোক জখম হয়েছিল। মজিদ শেখের হাত ভেঙ্গে গিয়েছিল। আমি আর পুষ্পাদি নিয়মিত স্কুলে যাই।ভালোই চলছিল আমাদের স্কুলে আসা যাওয়া। নিয়মিত খেলাধুলা সন্ধ্যায় বই নিয়ে পড়তে বসা। একদিন স্কুলে গিয়ে শুনি দেশে যুদ্ধ লেগেছে। শহর থেকে হাজার হাজার লোক গ্রামে পালিয়ে আসছে।কেউ আসতে পেরেছে আবার কেউ গুলি খেয়ে রাস্তায় পরে মরে আছে। কেউ কোন ভাল খবর দিতে পারছেনা। সবাই যেন একটা গোলক ধাঁধার মধ্যে পড়ে আছে।স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যাও কম। ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা খুব কম। যে সকল স্যারেরা স্কুলে আছেন তারা ক্লাস না নিয়ে লাইব্রেরিতে বসে কথা বলছেন। সব স্যারেদের চোখে মুখে কেমন যেন একটা উৎকণ্ঠার ছাপ। ক্লাসে যাওয়ার জন্য স্যারেরা আগের মত কোন তাড়া দিচ্ছেনা। তাদের ব্যবহার দেখে মনে হল তারা স্কুলের কেউ না। ছাত্র ছাত্রীরা যে যার মত আড্ডা,গল্প করছে। কোন ক্লাস হলনা। স্যারেরা ছুটি দিয়ে দিলেন।বললেন, তোমরা সবাই বাড়ি চলে যাও। আমি আর পুষ্পাদি সেদিনের জন্য বাড়ি ফিরে আসি। আসার মধ্যে রাস্তায় আমার সাথে পুষ্পাদি তেমন কথা বললনা। দিদি কেমন যেন মনমরা হয়ে গেল বাড়ি ফেরার পথে।
বিকেল বেলা জানতে পারি দুই দিন আগে পাকিস্তানিরা শহরে আক্রমন করেছে বহু লোক মেরে ফেলেছে। যাকে যেখানে পায় সেখানে গুলি করে মেরে ফেলছে পশ্চিম পাকিস্তানিরা। শেখ মুজিবকে ধরে কোথায় নিয়ে গেছে বলতে পারেনা কেউ। সবার মধ্যে একটা উৎকণ্ঠার ছাপ। কেউ মন দিয়ে কাজে যায়না। ইচ্ছে হলে যায় আবার কেউ যায় মনু মোল্লার বাড়ি রেডিওর খবর শুনতে। গ্রামের মধ্যে যেন একটা শুনশান নিরবতা বিরাজ করছে। গ্রামের মানুষেদের মধ্যে কোন আনন্দ,উৎসাহ উদ্দীপনা নেই। স্কুলে যাওয়ার জন্য কেউ কিছু বলেনা। মাঝে মধ্যে পুষ্পাদির বাড়ির দিকে গিয়ে দেখি সে নীরবে কাজ করে যাচ্ছে। আমাকে দেখে আগের মত উৎসাহ নিয়ে ডাক দেয়না,কথা বলেনা। আমিও তার প্রতি একটু অভিমান করি। তাঁকে দিনে ২/১ বার দেখা হলে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে রাখি। দেখি সে আমাকে ডাক দেয় কিনা।না,তাঁর মধ্যে তেমন কোন প্রতিক্রিয়া হয়না। একবার কি কারণে পুষ্পাদি আমাকে একটা থাপ্পর মেরেছিল । আমি দু’দিন তাঁর সাথে স্কুলে যাইনি।পরের দিন আমার স্কুলে যাওয়া রাস্তা আটকিয়ে হাত ধরে বলে,ভাই আমি এতজোরে থাপ্পর মারতে চাইনি। লেগে গেছে। মাফ করে দে। হাত জোড় করে বলে। আমি তোর পুষ্পাদি না! আমি আর রাগ করে থাকতে পারিনি। তাকে ধরে কেঁদে ফেলেছি। পুষ্পাদি বলে,আর কোনদিন তোকে মারবনা। কিন্তু এখন সে এমন করছে কেন আমার সাথে? আমি তো এমন কিছু করিনি। মন খুব খারাপ লাগে। গ্রামের সব লোকজনই কেমন যেন অন্য রকম হয়ে গেছে। কারও মন বুঝতে পারেনা কেউ।

গ্রামের সবাই বলাবলি করছে দেশে গন্ডগোল লাগছে। গ্রামেও পাকিস্তানি মেলিটারিরাও হামলা করছে। আমি মনে মনে ভাবি গ্রামে মেলিটারিরা আসলে কি হবে এখানে কেউ মিটিং,মিছিল করেনা।
কয়েকদিন ধরে পুষ্পাদির বাড়ির দিকে যাওয়া হয়না। আজ কেন যেন সকাল থেকে তার কথা মনে পড়ছে। আবার ভাবি সে পড়াশোনা করছে কিনা গিয়ে দেখি। সকালে ঘুম থকে ওঠে তাদের বাড়ির দিকে যাই। গিয়ে দেখি ঘরের দরজা বন্ধ। পুষ্পাদির মা ঘরের কোণে বসে চুপচাপ কি যেন করছে।আর কাউকে বাড়িতে দেখছিনা। কেমন যেন ঝিম মেরে গেছে বাড়িটা। আরও কয়েক বার ঘুরে বাড়ি চলে আসি। মনে মনে ভাবি,হয়তো কোথাও বেড়াতে গেছে বিকেল হলে চলে আসবে। সারাদিন এদিক ওদিকে ঘুরে দিন কাটে। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে মায়ের কাছে শুনতে পাই পুষ্পাদি আর দুই ভাই রাতে ইন্ডিয়া চলে গেছে। ইন্ডিয়া কেন চলে গেছে আমি বুঝতে পারিনা। ইন্ডিয়া কোথায়? আর কেনইবা গেল আমি জানার জন্য অস্থির কার কাছে জানব ? সাহস হলনা কাউকে জিজ্ঞাসা করার। আবার ভাবি,হয়তো কিছুদিন পর চলে আসবে।

একদিন সব জানতে পারি এবং বুঝতে পারলাম আর কোনদিন আসবে এখানে। পরশু রাতে উত্তর পাড়া প্রাইমারি স্কুলে মেলিটারি এসেছে। উত্তর পাড়া আমাদের গ্রাম থেকে তিন সাড়ে কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মাঝে শুধু একটা বড় চক পড়ে। গ্রামের জোয়ান জোয়ান ছেলেদের ধরে গুলি করে মেরে ফেলে। কারণ তাঁরাই মুক্তিযুদ্ধে গিয়ে তারা দেশটাকে স্বাধিন করার জন্য অনেক পাকিস্তানি মেলিটারিদের হত্যা করছে। তাদের নাম মুক্তিযোদ্ধা কোন গ্রামে হিন্দু থাকলে তাদের উপর বেশি অত্যাচার করে এবং মেরে ফেলে। যুবতি মেয়েদের ধরে নিয়ে যায় পাকিস্তানি ক্যাম্পে। নানাভাবে র্নিযাতন করে।গ্রামের জোয়ান ছেলে মেয়েরা কেউ নিরাপদ না।গ্রাম ছেড়ে সবাই দূরে কোথাও পালাতে লাগল। এই জন্য পুষ্পাদিরা রাতের আঁধারে ইন্ডিয়া চলে গেছে। তার চলে যাওয়ার কথা শোনে আমার চিৎকার করে কান্না পেতে লাগল।কিন্তু পারিনি কাঁদতে। শুধু মাঝে তার জন্য একটা পাথর জমা হয়ে আছে। আরও মনে হতে লাগল,গ্রামের মাটির পথ ধরে সর্ষে ক্ষেতের আল ধরে সে চলে যাচ্ছে খুব সহজে। আর কোন দিন পুষ্পাদির সাথে দেখা হবে না এ কথা ভেবে খুব কষ্ট হচ্ছে।

 

ডিএসএস/ 

Header Ad

চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড, জনজীবনে অস্বস্তি

চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গা জেলা তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন অস্থির হয়ে উঠেছে। দু’দিন পর আবারও এ জেলায় তাপমাত্রার তীব্রতা বেড়ে গেছে। দু’দিনে এ জেলায় ২ থেকে ৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা বেড়েছে।

আজ শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) চুয়াডাঙ্গায় মওসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কেন্দ্র থেকে এ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১১ শতাংশ।

৪২.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা । ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

এদিকে তীব্র রোদ আর রোদে আগুনের ফুলকির মতো তেজ যেন মরুভূমির তাপমাত্রা। অতি তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মানুষ ও প্রাণীকুল। তীব্র রোদের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা-ভ্যান চালকরা কাজ করতে না পেরে অনাহারে দিন পার করছেন। একটু প্রশান্তির খোঁজে গাছের ছায়া ও ঠান্ড পরিবেশে স্বস্তি খুঁজছে স্বল্প আয়ের মানুষ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে  রাস্তা ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে। আবার অনেকে জরুরি প্রয়োজন ও জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ উপেক্ষা করে কাজে বের হচ্ছেন। তবে রোদের এতো উত্তাপ যে মাথা ঘুরে যাচ্ছে। হিট স্ট্রোকে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

৪২.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা । ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

এদিকে অতি তীব্র তাপদাহে রবিবার থেকে স্কুল খোলার সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন এ জেলার অভিভাবকরা। যেখানে জাতী সংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ চলতি তাপপ্রবাহে বাংলাদেশের শিশুদের  অতি উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রেখেছে। সেখানে স্কুলগুলো চলমান তাপপ্রবাহ পর্যন্ত বন্ধ রাখার জন্য সরকারের অনুরোধ জানিয়েছে এ জেলার অভিভাবকরা।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২৯ শতাংশ। এদিন বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৪ শতাংশ ও দুপুর ১২টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৬ শতাংশ এবং সকাল ৯টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪৪ শতাংশ।

এর আগে বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৩৪ শতাংশ, এদিন বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২১ শতাংশ ও দুপুর ১২টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২৩ শতাংশ এবং সকাল ৯টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫৩ শতাংশ।

বিএনপির আরও ৭৫ নেতা বহিষ্কার

ফাইল ছবি

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ৭৫ জন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে এসব নেতাদের নির্দেশক্রমে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এর আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জনের দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় দলটি।

প্রেমিকার আত্মহত্যা, শোক সইতে না পেরে প্রেমিকও বেছে নিলেন সে পথ

নিহত সিফাত। ছবি: সংগৃহীত

প্রেমিকার আত্মহত্যার শোক সইতে না পেরে ১৯ দিন পর প্রেমিক সিফাত (১৯) ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে নরসিংদীর শিবপুরের মাছিমপুর ইউনিয়নের খড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সিফাত ওই গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে। তিনি শিবপুর সরকারি শহীদ আসাদ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।

মৃত্যুর আগে এক দীর্ঘ ফেসবুকে স্ট্যাটাসে সিফাত লিখেছেন, ‘তানহা আত্মহত্যা করে প্রমাণ করে গেল আমারে কতটা ভালোবাসে। আমিও প্রমাণ করে দিমু তানহারে আমি কতটা ভালোবাসি। কারও সঙ্গে ভুল করে থাকলে মাফ করে দিও। আর দেখা হবে না সবাই দোয়া কইরো শান্তিতে থাকি কিংবা অশান্তিতে দুজন যেন একসঙ্গে থাকতে পারি। আমার শেষ ইচ্ছা তানহার কবরের পাশে আমাকে কবর দেওয়া হোক।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি পরিস্থিতির শিকার। আর আমার কোনো কিছুর জন্য তানহার পরিবার বা আমার পরিবার দায়ী না, এমনকি আমার কোনো ভাই-ব্রাদার বা বন্ধুও দায়ী না। যা হবে আমার নিজের ইচ্ছেতে হবে। সত্যি বলতে আমার আর বাঁচার ইচ্ছে নাই। আমাকে যদি কেউ বাঁচিয়েও নেয় আমি পুনরায় আত্মহত্যার চেষ্টা করব। প্লিজ আমাকে কেউ বাঁচানোর চেষ্টা কইরো না। বেঁচে থেকে আর কি হবে, যার জন্য বাঁচার কথা ছিল সে তো আর নেই।’

সিফাত লিখেছেন, ‘তানহা আমারে কথা দিছিলো যদি বাঁচি তো একসঙ্গে বাঁচমু আর যদি মরতে হয় তো একসঙ্গে মরমু। আমি তানহারে এই কথাটাই দিছিলাম। কিন্তু একটা চরিত্রহীন জানোয়ার আমাদের সুখে থাকতে দিল না। ওদের অত্যাচারে তানহা আত্মহত্যা করল। এক প্রকার তারা তানহারে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করল। জানোয়ারের পরিবারকেই আমি খুনি বলে দাবি করি। আমি যদি বেঁচে থাকি তাহলে জানোয়ারের পরিবার স্বাধীনভাবে চলবে, ওদের কোনো সাজা হবে না। আর অন্যদিকে আমার তানহা শেষ, আমি অর্ধেক শেষ আমার পরিবারও শেষ। আমি আর কষ্ট সহ্য করতে পারছি না (প্রমাণ হয়ে যাক দুজন দুজনকে কতটা ভালোবাসতাম) আর আমি চরিত্রহীন জানোয়ারের পরিবারের সঠিক বিচারের দাবি জানাচ্ছি। এমন সাজা দেওয়া হোক অন্য কোনো মেয়ের সঙ্গে যেন এমন না হয়। আর যেন কারও প্রাণ না ঝরে। কেউ যেন ব্ল‍্যাকমেইলের শিকার না হয়। আমার শেষ একটাই ইচ্ছে- আমরা দুজনে সারাজীবন একসঙ্গে থাকতে চেয়েছিলাম, বাস্তবে তা হলো না। তাই আমার মৃত্যুর পর তানহার কবরের পাশে যেন আমার কবর দেওয়া হয়। আমি আঙ্গুররে মারছি শুধু একটা কারণে, হেয় তানহার হাতে ধরছিল। তানহারে খারাপ প্রস্তাব দিছিল। আমি সহ্য করতে পারি নাই। তাই হেরে কোবাইছি। আমরা প্রেম করছি এটাই কি অপরাধ ছিল। আমাদের জীবন শেষ করে দিল। ভালো থাকুক আঙ্গুর আর আঙ্গুরের পরিবার।’

সিফাতের বাবা ইব্রাহিম জানান, প্রতিবেশী চাচাতো বোন খলিলের মেয়ে তানহার (১৫) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল আমার ছেলে সিফাতের। গত ৩ এপ্রিল দিবাগত রাত ২টার সময় তানহা ঘরের ভেতর থেকে আর সিফাত জানালার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় দেখে ফেলে একই এলাকার রাজুর ছেলে আঙ্গুর (২৫)। এ সময় আঙ্গুর তানহাকে কুপ্রস্তাব দেয়। সিফাত এতে নিষেধ করে। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আঙ্গুর সিফাতকে মারধর করে টাকা দাবি করে। পরে সে উত্তেজিত হয়ে আঙ্গুরকে কুপিয়ে আহত করে। মারামারির বিষয়ে মামলা চলমান রয়েছে। লোকলজ্জায় গত ৬ এপ্রিল রাতে তানহা নিজ ঘরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এসব বিষয়ে গ্রামীণ সালিস দরবার হওয়ার কথা ছিল। সালিস দরবারে আমাকে ও আমার ছেলেকে এটা করবে ওটা করবে বলে বিভিন্নভাবে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতো। দরবারে গেলে জমির দলিল নিয়ে যেতে বলতো। এসব মানসিক চাপ সইতে না পেরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ছেলে সিফাত। আমি এর বিচার দাবি করছি।

শিবপুর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্তের পর আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

সর্বশেষ সংবাদ

চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড, জনজীবনে অস্বস্তি
বিএনপির আরও ৭৫ নেতা বহিষ্কার
প্রেমিকার আত্মহত্যা, শোক সইতে না পেরে প্রেমিকও বেছে নিলেন সে পথ
দুই বিভাগে ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস
অভিষেকেই শূন্য রানে ৭ উইকেট নিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়লেন রোহমালিয়া
ফিলিস্তিন স্বাধীন হলে অস্ত্র ত্যাগ করবে হামাস
দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না: ওবায়দুল কাদের
কয়েক মিনিটের দেরিতে বিসিএসের স্বপ্ন ভঙ্গ ২০ পরীক্ষার্থীর
লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
থাই প্রধানমন্ত্রীর গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে শেখ হাসিনা
আগুন নেভাতে দেরি হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, ২ ফায়ারম্যান আহত
পাবনায় অগ্রণী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ১০ কোটি টাকা আত্নসাৎ, গ্রেপ্তার ৩
মৃত্যুর দু’বছর পর ব্রুনাই থেকে দেশে ফিরছে দুই প্রবাসীর লাশ
৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা চলছে
পরিবারের অমতে বিয়ে, স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সৌদির যেকোনো ভিসা থাকলেই ওমরাহ পালন করা যাবে
নাটোরে বোনের বৌভাতে গিয়ে একে একে তিন ভাইয়ের মৃত্যু
জনপ্রতি ১২-১৪ লাখ চুক্তিতে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রশ্নফাঁস, গ্রেপ্তার ৫
কুড়িগ্রামে হিট স্ট্রোকে নারীর মৃত্যু
রবিবার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারও চলবে ক্লাস