শনিবার, ৪ মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

নদীর ঘাটে এসে পৌঁছাবার পরে অশ্ব শকটের কিশোর চালক বখশিশের জন্যে হাত বাড়ালো। পকেট হাতড়ে একটা কুড়ি পাউন্ডের নোট তার হাতে দিলাম। এরপর সে তার ঘোড়া দেখিয়ে আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিলো, এবারে ঘোড়া জন্যেও কিছু দাও। এমনিতেই আর কোনো ছোট নোট ছিল না, কাজেই আমিও তাকে বাংলায় উচ্চারণ করে এবং হাতের ইশারায় বলে দিলাম, কুড়ি পাউন্ড ঘোড়ার সাথে ভাগাভাগি করে খাও।

টুইয়াতে ওঠার সময় আবার মাথাগুণতির কার্ড জমা দিয়ে একে একে লবিতে এসে জড়ো হবার পরে দেরি না করে সোজা ব্রেকফাস্টের টেবিলে বসে পড়লাম। আমরা যারা এক সাথে এডফু টেম্পল দেখতে গিয়েছিলাম সেই কয়জন ছাড়া রেস্তোঁরা পুরোপুরি খালি। সকাল নয়টাও বাজেনি, এরই মধ্যে নাস্তাপানির পালা শেষ! আমাদের সামনা সামনি একটা টেবিলে একজন সঙ্গীসহ মোস্তফা এবং বিপরীত দিকের একটি টেবিলে টুইয়ার ম্যানেজার নাস্তা খেতে বসেছেন। এটা যে বুফে ব্রেকফাস্ট, বিশেষ করে মোস্তফাকে এজন্য কোনো বিল দিতে হবে না সেটা তার উপচে পড়া প্লেট দেখলেই বোঝা যায়। ম্যানেজার সাহেবের নাস্তাও নিশ্চয়ই ফ্রি। তারপরেও তিনি এতো বেলায় টেবিলে বসে কেন শুধু কয়েকটা শুকনো বনরুটি চিবাচ্ছেন বুঝতে পারলাম না।

ছবি: টুইয়ার শপিং এলাকা

আমরা জাহাজে ওঠার পরপরই নোঙর তুলে যাত্রা শুরু করেছে টুইয়া। ধীরে ধীরে শহর এলাকা ছেড়ে যাবার সময় দেখলাম, আসোয়ানের মতো এখানেও নদীর তীরেই মসজিদসহ অনেকগুলা বহুতল ভবন। খুব দ্রুতই আমরা শহর এলাকা ছাড়িয়ে এক পাশের সারি সারি খেজুর গাছের ওপারে উঁচু নিচু পাহাড় আর অন্যপাশে খেজুর বনের ভেতরে ভেতরে সবুজ ফসলের মাঠ দেখতে দেখতে এগাতে শুরু করলাম। এদিকে সবুজের ছোঁয়া অনেক বেশি, কোথাও কোথাও মনে হলো জমিতে জল জমে আছে।

জাহাজে সম্ভবত আমাদের মতো পনের কুড়িজন হাভাতে টুরিস্ট বাদ দিলে বাকিরা সকলেই অভিজাত শ্রেণির। তারা হয়তো এর আগেও অনেক বার এইপথে আসা যাওয়া করেছে। সেই কারণে তারা প্রত্নতাত্ত্বিক কোনো নিদর্শন, মন্দির-মসজিদ-দুর্গ-দেয়াল কোনোটাই দেখতে যায় না। অনেক সময় জাহাজ থেকে নামেও না। তারা হয়তো এখন শুধু রিলাক্স করতেই নীল নদে ভেসে বেড়াতে এসেছে। এখন উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে বিয়ারের ক্যান অথবা কফির মগ হাতে ছাদে বসে আছে।

ছবি: জাহাজের সুইমিং পুল

সাড়ে নয়টার দিকে নাস্তা শেষ করে উপরে ওঠার সময় ভাবলাম টুইয়ার শপিং এলাকাটা একবার ঘুরে দেখা যাক। খুব বড় আকারের না হলেও দ্বিতীয় তলার একটা বড় অংশ জুড়ে পর্যটক প্রিয় নানা সামগ্রীর বিশাল সংগ্রহের পশরা সাজানো। সেখানে বিক্রি হচ্ছে মিশরের বিভিন্ন যুগের নানা নিদর্শনের রেপ্লিকা, টি শার্ট-টুপি, মেয়েদের স্কার্ফ-হিজাব, স্কার্ট-শর্টস, ধাতব এবং পাথরের গহনা, এমন কি জুতা স্যান্ডেল, চাদর-বালিশ, ব্যাগ- স্যুটকেস পর্যন্ত। জলযানে ভ্রমণ করতে এসে দাম কিছু বেশি দিয়ে হলেও স্যুভেনিয়ার নিশ্চয়ই কেনা যায়। কিন্তু এখানে যে বিপুল পরিমাণে জিনিসপত্রের সমাবেশ তা কারা যে কিনে নিয়ে যায় আল্লাহ মালুম।

আমরা ঘুরে ফিরে দেখে কিছুই না কিনে ঘরে ঢুকে সকালের বাড়তি জামা কাপড় রেখে সিঁড়ি দিয়ে আপার ডেকে উঠে গেলাম। মাঝে দুই সারিতে চেয়ার টেবিল পাতা থাকলেও আমাদের রানা ভাইসহ মাত্র দু চারজন বসে বই পড়ছেন অথবা বিয়ারের ক্যানে চুমুক দিতে দিতে গল্প করছেন। দুপাশের ডেক চেয়ারেও অলসভঙ্গিতে শুয়ে আছে অনেকেই। জাহাজের সামনের দিকে স্যুইমিং পুলে একটা ফোয়ারা থেকে অবিরাম জল ঝরছে। কিন্তু এই ভাসমান পুলে কাউকেই জলক্রীড়া করতে দেখা গেল না। তবে স্যুইমিং পুলের ওপারে একেবারে সামনের দিকে পাতা ডেক চেয়ারের একটিও খালি নেই। সকলেই সামনে এগিয়ে যাবার দৃশ্য দেখতে চায়। নীলের নিস্তরঙ্গ জল কেটে আমাদের ঠিক পাশাপাশি এগিয়ে যাচ্ছিল ক্রুইজ শিপ এম ভি কংক্রিট! দুই জাহাজের মধ্যে সামানে এগিয়ে যাবার কোনো প্রতিযোগিতা নেই। আমি অনেক্ষণ ধরে পাশ দিয়ে পিছিয়ে যাওয়া খেজুর বনের দৃশ্য দেখছিলাম। তবে দীর্ঘক্ষণ ধরে একই দৃশ্য দেখার একঘেয়েমিতে আক্রান্ত হবার পরে ভাবলাম ঘরে ফিরে স্নান সমাপন করে যথা সময়ে খেতে গেলেই চলবে।

ছবি: তোয়ালের বানর

জাহাজের কক্ষগুলোতে সে সময় ক্লিনিং আওয়ার চলছিল। পরিচ্ছন্নতা অভিযানের কারণে আমাদের কক্ষের দরজা খোলা। ঘরে ঢুকেই একটা অভাবনীয় দৃশ্য চোখে পড়লো। আমাদের কক্ষের বাথরুম এবং বিছানার মাঝখানের খোলা কপাটের উপর থেকে একটা বানর ঝুলছে! না–হাত পা এবং লেজওয়ালা আসল বানর নয়, তোয়ালে দিয়ে তৈরি বানর কাপড় শুকানোর ক্লিপ দিয়ে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে একটা হ্যাঙ্গারে। রুম সার্ভিসের ছেলেটা একটা নিষ্পাপ হাসি দিয়ে বললো, ‘ডু ইউ লাইক ইট স্যার?’ লাইক না করে আর উপায় কী! মনুষ্যকুলের পূর্ব পুরুষের কথা মনে করিয়ে দেয়াটা কোনো অপরাধের পর্যায়ে পড়ে না। সম্ভবত ঘরের কাজ শেষ করার পরে হাতে সময় থাকায় সে একটু শিল্প চর্চায় মন দিয়েছিল। তাকে আপাতত ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় করলাম।

দুপুরে খাবার সময় হঠাৎ একটা বিপত্তি ঘটে গেল। আমাদের তিনজনের টেবিলে দুজন খেতে বসে লাঞ্চ প্রায় শেষ করে ফেলেছি, কিন্তু রানা ভাইয়ের দেখা নেই। ঘরে ফোন করেও তাঁকে পাওয়া গেল না। এদিকে লাঞ্চের সময়ও প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। ভাবলাম প্লেটের খাবার শেষ করেই তাঁকে খুঁজতে ছাদে যাবো। ঠিক এই সময়ে রানা ভাই এসে হাজির। বুফে কাউন্টার থেকে প্লেটে খাবার তুলে নিয়ে এসে টেবিলে রেখে যখন বসতে গেছেন তখন তাড়াহুড়ার কারণে অথবা অসাবধানতা বশত চেয়ারের কিনারায় বসে চেয়ারসহ মেঝেতে পড়ে গেলেন। সঙ্গে সঙ্গেই রেস্তোরাঁর দুজন কর্মী ছুটে এলে আমরা তিনজনে মিলে রানা ভাইকে ধরে টেনে তুলে ফেললাম। তিনি তেমন কোনো আঘাত পাননি, তবে ঘটনাটা মারাত্মক হতে পারতো। লাঞ্চ টাইম শেষ হয়ে গেলেও চণ্ডীদাসের খুড়ো এসে বলে গেলেন, ‘নো হারি, ডোন্ট ওরি। এনজয় ইয়োর লাঞ্চ।’

ছবি: এসনা লক

খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠা, এডফুর মন্দিরে দীর্ঘক্ষণ ঘোরাঘুরি এবং সব শেষে লোভনীয় লাঞ্চ যথেষ্ট পরিমাণে ‘এনজয়’ করার ফলে দুপুরে ঘরে এসেই বিছানায় গড়িয়ে পড়েছিলাম। শুয়ে শুয়ে কিছুক্ষণ নদী তীরের দৃশ্য, খেজুর বাগান আর ফসলের ক্ষেত, পাহাড়ের পাশ দিয়ে ছুটে চলা আন্তনগর ট্রেন এবং পাশ দিয়ে নৌযানের চলাচল দেখতে দেখতে চোখ ধরে এসেছিল। কিছু সময় ঘুমিয়েও নিয়ে মনে হয়। হঠাৎ জাহাজের পাশে বেশ হৈ চৈ শুনে তন্দ্রা ছুটে গেল। উঠে জানালার পাশে এসে দেখলাম আমাদের জাহাজ থেমে গেছে আর তার পাশে কয়েকটা নৌকায় ভাসমান ফেরিওয়ালা হাঁকডাক দিয়ে নদী থেকে জাহাজের আপার ডেক পর্যন্ত পুরো এলাকা সরগরম করে তুলেছে। প্রত্যেক নৌকায় একজন মাঝি হাল ধরে বসে আছে আর একজন ‘হ্যালো স্যার... ওনলি হান্ড্রেড পাউন্ড... গুড কোয়ালিটি... হ্যান্ড মেড স্যার...’ ইত্যাদি বলে সম্ভাব্য ক্রেতা আকর্ষণে ব্যস্ত। আমাদের পাশের ঘর থেকে রানা ভাইয়ের কণ্ঠও শোনা গেল। তিনি ফেরিওয়ালাদের সাথে কথোপকথন শুরু করে দিয়েছেন। একটু পরেই দেখলাম নদী থেকে বিক্রেতা উপরের দিকে কাপড়ের পোটলা ছুঁড়ে মারছে আর একটু পরেই কাপড়ের খালি ব্যাগ উপর থেকে নিচে চলে যাচ্ছে। নৌকায় দাঁড়ানো ফেরিওয়ালা ক্রিকেট বল ধরার মতো করে ব্যাগটা লুফে নিচ্ছে।

বুঝলাম আমাদের জাহাজ এসনায় পৌঁছে গেছে। শহর হিসাবে এসনা প্রাচীন মিশরীয়, টলেমিক, গ্রিকো-রোমান, ইসলামিক এবং একই সাথে বিশ শতকের আধুনিক নগরী। খ্রিস্টপূর্ব তিনশ অব্দে এসনা ছিল সে সময়ের আপার ঈজিপ্টের রাজধানী। নীল নদের উপরে এখানেই রয়েছে বিখ্যাত ‘এসনা লক!’ এডফু থেকে লক্সর অথবা লক্সর থেকে এডফু যাবার ঠিক মাঝখানে এই পথে প্রতিটি টুরিস্ট নৌযানকে একটি দীর্ঘ বাঁধের নিয়ন্ত্রিত অপরিসর পথ পেরিয়ে অপর পারে যেতে হয়। দুশ একুশ মিটার দীর্ঘ পথটুকু পেরোতে কুড়ি মিনিটের বেশি সময় লাগে না, তবে যেহেতু দু পারের নৌযান পারাপারের ক্ষেত্রে এটি একটি ‘ওয়ান ওয়ে’ বা একমুখি পারাপারের ব্যবস্থার কারণে এবং একই সাথে পানির স্তর সম্পর্কিত কৌশলগত সীমাবদ্ধতার ফলে একপাশের জাহাজকে ওপারে যাবার জন্যে অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। ‘লক’ মানে যখন তালা, তাহলে তালা খুলবার অপেক্ষায় তো থাকতেই হবে। এখন এই তালা খোলার চাবিটি কার হাতে সেটিই হলো আসল কথা।

ছবি: নীল নদের ভাসমান ফেরিওয়ালা

বাঁধ নির্মাণে প্রকৌশলগত উৎকর্ষের দিক থেকে সতের মিটার চওড়া এবং দুশ একুশ মিটার লম্বা ‘এসনা লক’ নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। আসোয়ান হাইড্যাম থেকে প্রায় একশ সত্তুর কিলোমিটার ভাটিতে নীল নদের গতিপথ পরিবর্তন করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আসোয়ানের ভাটিতে নির্মিত সাতটি বাঁধের মধ্যে অন্যতম ‘এসনা লক’ নির্মিত হযেছিল নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ এবং উজানে পানির স্তর স্থিতিশীল রাখার জন্যে। জলের গভীরতা এখানে কম বেশি সাড়ে চৌদ্দ মিটার। ১৯০৬ সালে প্রথমে ব্রিটিশদের তৈরি এই বাঁধের আধুনিকায়ন হয়েছে ১৯৯৬ সালে।

ঐতিহাসিক এসনা লক পারাপারের দৃশ্য নিজের চোখে দেখার জন্যে ক্যামেরা হাতে উপরে উঠে এলাম। এ সময় টুইয়ার আপার ডেকের সামনের দিকে ভিড় করে বিপুল সংখ্যক আর্য নরনারী যেভাবে ক্যামেরা বাগিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাতে খর্বকায় দ্রাবিড়ের পক্ষে সামনে থেকে ছবি তোলা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ালো। রানাভাইও তাঁর ভাসমান বাজারের কেনাকাটা শেষ করে উপরে উঠে এসেছেন। জানলাম একশ পাউন্ড দামের একটা শাল দরদাম করে সত্তুর পাউন্ডে কিনেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত একটা একশ পাউন্ডের নোট নিচে ছুঁড়ে দিয়ে হাল ধরে থাকা মাঝিকে কুড়ি পাউন্ড দিয়ে দিতে বলেছেন।

ছবি: এসনা লক পারাপার

এখানে অনেক সময় তালা খুলতে দেড় দুই ঘণ্টাও লাগে বলে শুনেছি। আমাদের কপাল ভালো বলে এই অপেক্ষার সময় কুড়ি পঁচিশ মিনিটের বেশি হলো না। একপাশে নদী বন্দর এসনা এবং অন্যদিকে দীর্ঘ বাঁধের দৃশ্য বেশ আকর্ষণীয় বলে ছবি তোলার জন্যে সকলেই ব্যস্ত। আমি এদিক সেদিক ঘুরে আবার যখন জাহাজের সামনের দিকে এসে দাঁড়ালাম তখন অনেকেরই উৎসাহে ভাটা পড়েছে। অতএব টুইয়া পারাপারের অনুমতি পেলে সামনে থেকে এই ‘তালাবদ্ধ’ বাঁধ পেরোবার অসাধারণ দৃশ্যটি ধরে রাখতে সমস্যা হলো না। জাহাজ চলতে শুরু করার পরে প্রায় প্রতি মুহূর্তেই মনে হচ্ছিল, এই বোধহয় একপাশের পাড় বা খুঁটি ছুঁয়ে দিল। কিন্তু না, আমাদের সাড়ে চৌদ্দ মিটার চওড়া এবং বাহাত্তর মিটার লম্বা জাহাজ ধীরে ধীরে বলা যায় অতি ধীরে সরু পথ পাড়ি দিয়ে নির্বিঘ্নে ওপারে পৌঁছে গেল।

এই শীর্ণ নৌপথে যদি এতো বড় জাহাজ পারাপার করতে পারে, তাহলে আমাদের লঞ্চগুলো পদ্মা সেতুর দুই খুঁটির নিচে দিয়ে যাবার সময় যথেষ্ট জায়গা থাকা সত্ত্বেও মাঝে মাঝেই ধাক্কা দেয় কেন! আমাদের আমলা কর্মচারীরা কতো কিছু শিখতে বিদেশে যান, জাহাজ পারাপারের কৌশল শিখতে জাহাজের ক্যাপ্টেন সারেং বা মাস্টারদের নীল নদে পাঠানো যেতে পারে।
এসনা লক পার হয়ে আসার পরে ‘টুইয়া’ আবার পূর্ণ গতিতে ছুটতে শুরু করল।

চলবে...

এসএ/

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

Header Ad

পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলো ভারত

ফাইল ছবি

প্রায় ৬ মাস পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রাখার পর অবশেষে তা তুলে নিল ভারত। শনিবার দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক কেন্দ্রীয় সংস্থা ডিরেক্টোরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিশ্চিত করেছে এ তথ্য।

শনিবার (৪ মে) এক প্রজ্ঞাপনে ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছে। মহারাষ্ট্রে লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখেই মূলত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের এমন পদক্ষেপে স্বস্তি মিলবে সেখানের ব্যবসায়ীদের।

ভারতের ডিরেক্টর জেনারেল অব ফরেন ট্রেড প্রতি টন পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করেছে ৫৫০ ডলার।

ভারতের, বিশেষ করে মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজ চাষি ও ব্যবসায়ীরা অনেক আগে থেকেই পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছে। কারণ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরই তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তবে নিষেধাজ্ঞা চলাকালেও ভারত সরকার সীমিত আকারে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আমিরাতে পেঁয়াজ রপ্তানি করেছে। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ডাক পেলেন আম্পায়ার সৈকত

বাংলাদেশি আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহিদ সৈকত। ছবি: সংগৃহীত

আগামী জুনের ২ তারিখ থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এবারের টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করবে ২০টি দল। দুই দেশ মিলিয়ে মাঠে গড়াবে মোট ৫৫টি ম্যাচ।

এদিকে শুক্রবার (৩ মে) আইসিসি এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিশ্বকাপের দায়িত্ব পালন করতে যাওয়া আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারিদের তালিকা প্রকাশ করে। সেই তালিকায় নাম রয়েছে আইসিসির এলিট প্যানেল আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহিদ সৈকতের। বাংলাদেশ থেকে তিনিই এ দায়িত্ব পালন করবেন।

এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মোট ২০ জন্য আম্পায়ার ম্যাচ পরিচালনা করবেন। বর্তমানে আইসিসির এলিট প্যানেলে ১২ জন আম্পায়ার রয়েছেন। তাদের বাইরে আরো আট জন ম্যাচ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছেন। এছাড়া থাকবেন ছয়জন ম্যাচ রেফারি। এবারের আসরে দায়িত্ব পালন করা আম্পায়াদের মধ্যে সর্বোচ্চ চার জন নেওয়া হয়েছে ইংল্যান্ড থেকে।

এছাড়া পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার রয়েছে তিন জন করে আম্পায়ার। দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত ও নিউজিল্যান্ড থেকে রয়েছেন দুই জন করে। অন্যদিকে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের একজন করে আম্পায়ার দায়িত্ব পালন করবেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে।

গত ২৮ মার্চ প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আইসিসি এলিট প্যানেল অব আম্পায়ারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন সৈকত। গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপেও ম্যাচ পরিচালনা করেছিলেন তিনি।

আরও একাধিক আইসিসি ইভেন্টে আম্পায়ারিং করেছিলেন সৈকত। ২০১৭ ও ২০২১ সালের মেয়েদের বিশ্বকাপ, ২০১৮ সালে মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তিনি দায়িত্বে ছিলেন। ১০ টেস্ট, ৬৩ ওয়ানডে ও ৪৪ টি-টোয়েন্টিতে অনফিল্ড আম্পায়ার ছিলেন সৈকত।

২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আম্পায়ারদের তালিকা:

শরফুদ্দৌলা ইবনে শহিদ সৈকত (বাংলাদেশ), মাইকেল গফ (ইংল্যান্ড), রিচার্ড কেটলবরা (ইংল্যান্ড), রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ (ইংল্যান্ড), অ্যালেক্স ওয়ার্ফ (ইংল্যান্ড), আহসান রাজা (পাকিস্তান), রশিদ রিয়াজ (পাকিস্তান), আসিফ ইয়াকুব (পাকিস্তান), রডনে টাকার (অস্ট্রেলিয়া), স্যাম নোগাজস্কি (অস্ট্রেলিয়া), পল রাইফেল (অস্ট্রেলিয়া), আল্লাহুদিন পালেকার (দক্ষিণ আফ্রিকা), অ্যাড্রিয়ান হোল্ডস্টক (দক্ষিণ আফ্রিকা), নিতিন মেনন (ভারত), জয়রামন মদনগোপাল (ভারত), ক্রিস ব্রাউন (নিউজিল্যান্ড), ক্রিস গ্যাফানি (নিউজিল্যান্ড), কুমার ধর্মসেনা (শ্রীলঙ্কা), জোয়েল উইলসন (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) ও ল্যাংটন রুসেরে (জিম্বাবুয়ে)।

ইসরায়েলবিরোধী পোস্ট করলেই গ্রেপ্তার করছে সৌদি

ইসরায়েলবিরোধী পোস্ট করলেই গ্রেপ্তার করছে সৌদি আরব। ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ ইসরায়েলবিরোধী কিছু পোস্ট করলে তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। ইসরায়েলবিরোধী কথা বলায় ইতিমধ্যে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ।

বৃহস্পতিবার (২ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। ইসরায়েলবিরোধী মনোভাব প্রকাশের কারণে যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন একটি কোম্পানির সর্বোচ্চ কর্মকর্তা। তার কোম্পানিটি সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের একটি প্রকল্পের সঙ্গে কাজ করে।

নাম গোপন রাখার শর্তে একটি সূত্র জানিয়েছে, ওই কর্মকর্তা গাজায় চলমান হামাস ও ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি করেছিলেন।

আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আমেরিকান মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর পণ্য বয়কটের আহ্বান জানানোয়। বিশ্বের বেশিরভাগ মুসলিম দেশে ইসরায়েলি ও মার্কিন কোম্পানির পণ্য বয়কটের আহ্বান জানানো হচ্ছে। এই বয়কটের জেরে অনেক কোম্পানি তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে।

ব্লুমবার্গকে সৌদি সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, আশঙ্কা করা হচ্ছে সৌদিতে ইরানপন্থি একটি প্রভাবের বিস্তার ঘটতে পারে। আর এই আশঙ্কা থেকে এসব ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তবে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলবিরোধী অবস্থানের কারণে ঠিক কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেটি স্পষ্ট করে জানায়নি ব্লুমবার্গ।

দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদির কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এরমধ্যেই জানা গেল ইসরায়েলবিরোধীদের ওপর গ্রেপ্তারের মতো কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে ক্ষমতাধর মুসলিম দেশ সৌদি আরব।

সর্বশেষ সংবাদ

পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলো ভারত
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ডাক পেলেন আম্পায়ার সৈকত
ইসরায়েলবিরোধী পোস্ট করলেই গ্রেপ্তার করছে সৌদি
মুন্সীগঞ্জে প্রাইভেটকার খাদে পড়ে একই পরিবারের ৩ জন নিহত
চড়া দামে গ্রাহকরা কিনছে কচ্ছপ গতির ইন্টারনেট
হামাসকে ৭ দিনের সময় দিল ইসরায়েল
বিদেশে পাড়ি জমানো কানাডিয়ানদের সংখ্যা বাড়ছে : গবেষণা
নওগাঁয় ট্রলির চাপায় সড়কে প্রাণ গেল এনজিও কর্মীর
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে দীর্ঘ হচ্ছে বিএনপিতে বহিষ্কারের তালিকা
প্রথমবারের মতো চাঁদে স্যাটেলাইট পাঠাল পাকিস্তান
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে কঠিন শর্ত দিল সৌদি
রাজশাহীতে আগুনে পুড়ল শত বিঘা জমির পান বরজ
জিম্বাবুয়েকে হেসে-খেলে হারাল টাইগাররা
চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করল তুরস্ক
বাংলাদেশের কোনো ভাষাকেই হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না: প্রধান বিচারপতি
বৃষ্টি হতে পারে যেসব বিভাগে, যে তথ্য দিল আবহাওয়া অফিস
ভূমধ্যসাগরে নিহত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তর
কাল থেকে বাড়তি ভাড়ায় চড়তে হবে ট্রেনে, কোন রুটে ভাড়া কত
সবসময় আস্থা রাখায় ধোনিকে ধন্যবাদ জানালেন মোস্তাফিজ
সুষ্ঠু ভোটের আয়োজনে প্রার্থীদেরও ভূমিকা রয়েছে : ইসি রাশেদা