শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১

বিষাদ বসুধা

মোহিনীর কপালে বিরক্তির ভাঁজ।

চরম বিরক্তি নিয়ে মধ্যরাত অবধি বসে আছেন মোহিনী। আরেফিন তখনো বাসায় ফেরেননি। মোহিনী বাসায় একা। তিনি আরেফিনের জন্য অপেক্ষা করছেন। তার চোখজুড়ে ঘুম নেমে আসছে। কিন্তু তিনি ঘুমাতে পারছেন না। আরেফিন বাসায় ফিরলে তারা একসঙ্গে খাবেন। এটাই তাদের প্রতিদিনকার রুটিন। সেই রুটিনের আজ ব্যত্যয় ঘটেছে।

রাত দশটার মধ্যে বাসায় ফেরার কথা আরেফিনের। কিন্তু তার বাসায় ফেরার নাম নেই। মোবাইল ফোনও বন্ধ। কেন বন্ধ তা মোহিনী বুঝতে পারছেন না। সাধারণত আরেফিন ফোন বন্ধ রাখেন না। বাসায় ফিরতে দেরি হলে তিনি আগে থেকেই জানিয়ে দেন। আজ কেন জানাননি তাও বুঝতে পারছেন না।

আরেফিন বিকেল থেকে একবারও ফোন করেননি। এটাও একটা দুশ্চিন্তার কারণ। রহস্যজনক বলেও মনে হয় মোহিনীর কাছে। তারপরও তিনি কোনো রকম নেতিবাচক ভাবনা আপাতত ভাবতে চাচ্ছেন না। তিনি ধরেই নিয়েছেন; বিশেষ কোনো ব্যস্ততার কারণে আরেফিন ফোন বন্ধ রেখেছেন। বিশেষ কোনো কারণে হয়তো দেরি হচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যে নিশ্চয়ই ফিরে আসবেন। অপেক্ষা করতে করতে দুই ঘণ্টা চলে গেছে। আরেফিন বাসায় ফেরেননি।

মোহিনী এখন ভীষণ বিরক্ত। ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছেন আর বলছেন, এখনো কেন আসছে না? কি এমন ব্যস্ততা! ব্যস্ততা থাকলে আমাকে একটা ফোন করে জানাতে পারত! না! ওর দায়িত্বজ্ঞানহীন কাণ্ড আর ভালো লাগে না।

মোহিনীর বিরক্তির পারদও চূড়ায় উঠতে শুরু করে। মোহিনী নিজেও সারাদিন অফিস করেছেন। নটা পাঁচটার ছকে বাঁধা সরকারি অফিস নয়। নিজের বাবার সু ফ্যাক্টরির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিনি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অফিস করে বাসার সব কাজ তিনি নিজেই সামলান। বাসায় একজন ছুটা কাজের মহিলা আছে। তার নাম মর্জিনা। সে সন্ধ্যা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত কাজ করে। দশটার দিকেই মোহিনীরা রাতের খাবার খান। এটো থালাবাসন ধুয়েমুছে দিয়ে যায় মর্জিনা। সে রাতের খাবার এই বাসা থেকেই নিয়ে যায়। বেতন দেয়ার পরও মোহিনী এই খাবারটা মর্জিনাকে বাড়তি দেন। কারণ, মর্জিনা ওর দুই বাচ্চাকে স্কুলে পড়ায়। সেই পড়ার খরচও মোহিনী বহন করেন।

মোহিনী খুবই মানবিক ধরনের মানুষ। কারো দুঃখ কষ্ট সে সহ্য করতে পারেন না। নিজে কষ্ট করবেন তবু অন্যের সমস্যা সমাধানে তিনি ঝাপিয়ে পড়বেন। মোহিনী যখন জানতে পারলেন, মর্জিনার স্বামী আরেকটা বিয়ে করে ওকে আর দুই সন্তানকে রেখে চলে গেছে। তখন থেকে মোহিনী মর্জিনা ও তার দুই সন্তানের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, মর্জিনার পরিবারের অনেক খরচও তিনি বহন করেন।

মোহিনী বলেন, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য কতটুকুই বা দরকার। তার চেয়ে বেশি রেখে কি হবে? মানুষ মরলে কবরে তো কিছুই নিয়ে যেতে পারে না। শুধু শুধু সম্পদের পাহাড় গড়ে মানুষ। এসব করে কি লাভ! তার চেয়ে গরীব মানুষদের সাহায্য করলে তারা ভালোভাবে জীবন কাটাতে পারে।

মোহিনী নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করলেও সেখান থেকে তিনি বেতন নেন। যে টাকা তিনি আয় করে তার বেশির ভাগই গরীবদের বিলিয়ে দেন। এতেই তিনি তৃপ্তি অনুভব করেন। ভীষণ আনন্দ পান। মোহিনীর মা বাবাও এমনই। তাদের সম্পদও তারা গরীবদের বিলিয়ে দেন। তারা যেহেতু কোনো রকম কষ্টে নেই। সেহেতু মোহিনীরও কষ্ট হবে না। অন্যকে সাহায্য করলে সৃষ্টিকর্তা তাকে সহায়তা করবে। এটা তার বদ্ধমূল ধারনা।

মোহিনী একবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিনের একটা সাক্ষাৎকার পড়েছিলেন। সেটি পড়ে তার এতো ভালো লেগেছে যে, সেটা তার মগজে ঢুকে গেছে। শির বাবা ছোটবেলায় তাকে বলেছিলেন, বাবা তুমি তিনটি বিষয় মনে রেখ। তাহলে দেখবে জীবনে অনেক সাফল্য আসবে। একটি হচ্ছে, লোভ-লালসা সংবরণ করবে। দ্বিতীয়ত, কখনো নিজের স্বার্থকে বড় করে দেখ না। তৃতীয়ত, মানুষের জন্য নিজের জীবনকে বিলিয়ে দিও। মানুষের জন্য জীবন উৎসর্গ করলে জীবন বহুগুণ তোমাকে ফিরিয়ে দেবে।

মোহিনীর বাবাও তাকে এরকমই পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনিও মেয়েকে বলেছিলেন, লোভ-লালসা জীবনে অনেক ক্ষতির কারণ। আর নিজের স্বার্থকে বড় করে দেখ না। অন্যের জন্য কিছু কোরো। তাতেই পরম শান্তি।

বাবার সেই পরামর্শ মোহিনী প্রতি মুহূর্তে মনে রেখেছেন। তিনি নিজেও দেখে আসছেন, অন্যের জন্য কাজ করলে নিজের কিছু ক্ষতি হলেও তাতে অনেক প্রশান্তি লাভ করা যায়। মোহিনীর বাবা আরো বলেছেন, সংসার জীবনে ত্যাগ স্বীকার করার চেয়ে মহৎ কাজ আর কিছুই নেই। তুমিও তাই কোরো। তাতে হয়তো তোমার কিছু ক্ষতি হবে। কিন্তু এক সময় দেখবে, তুমিই লাভবান হয়েছ।
মোহিনী তার বাবার কথা চিন্তা করেই দাঁত কামড়ে এই সংসারে পড়ে আছেন। কিন্তু মানুষের ধৈর্যেরও একটা সীমা আছে। কখনো কখনো আরেফিন সীমা ছাড়িয়ে যায়। কখনো কখনো তিনি বাউণ্ডলে মানুষের মতো আচরণ করেন। অথচ বিয়ের আগে মোহিনীকে তিনি পাগলের মতো ভালোবাসতেন। তার ভালোবাসার কাছে হার মেনেছিলেন তিনি। বিয়ের পর সেই ভালোবাসা কোথায় গেলো?

মোহিনীর খুব কমই চাওয়া ছিল আরেফিনের কাছে। তিনি কখনো বাড়ি গাড়ি চাননি। চেয়েছেন শুধু ভালোবাসা। হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা। আরেফিনকে নিয়েই একটা ভালোবাসার সংসার সাজাতে চেয়েছিলেন তিনি। বিয়ের পর তেমনিভাবেই শুরু হয়েছিল তাদের সংসার। কিন্তু সেই ভালোবাসার তানপুরাতে আগের মতো সেই সুর আর বাজে না। কখনো কখনো বেসুরো হয়ে যায়। এতে মোহিনীর কোনো দোষ নেই। আরেফিনের অবহেলার কারণেই মোহিনীর মনের কোণে প্রশ্ন দানা বাঁধে। কেন এই অবহেলা?

মোহিনী মনে মনে বললেন, আমি কি ওকে সুখি করতে পারিনি? নাকি অন্য কোথাও ওর কোনো সম্পর্ক আছে? আগে কারো সঙ্গে কোনো সম্পর্ক কি ছিল? না তো! নতুন করে কোনো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে? নাকি কেবল বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাবাজি। ও জানে যে আমি বাসায় একা। আমার সময় কী করে কাটে। সেটা তো ওকে ভাবতে হবে। ও না ভাবলে কে ভাববে?

আরেফিন একটা সময় আড্ডাবাজি করে অনেক সময় নষ্ট করেছে। সেটা চাকরি জীবনের আগের কথা। বন্ধুদের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দিয়েছেন তিনি। বাজে অভ্যাস বলতে এটাই। মদ, গাজা কিংবা জুয়ার আসরে বসার অভ্যাস ছিল না। কাজেই এটাকে নেতিবাচকভাবে নেননি মোহিনী। বিয়ের পরও মাঝেমধ্যে বলেকয়ে আড্ডায় যেত। সেটাও সপ্তাহে একদিন। সময়মতো আবার তিনি ফিরে আসতেন।

আসলে প্রতিদিন সকালে অফিস করতে হলে আড্ডাবাজি করা যায় না। এটা আরেফিন নিজেও ভালো করেই জানেন। ইদানিং তিনি নিয়মিত দেরি করে বাসায় ফেরেন। এর রহস্য খুঁজে পান না মোহিনী।

মোহিনী বিষয়টা জানার জন্য আরেফিনকে সরাসরি জিজ্ঞাসাও করেছেন। কিন্তু আরেফিনের কাছ থেকে সদুত্তর পাওয়া যায়নি। যখনই মোহিনী প্রসঙ্গটি তুলেছেন তখনই তিনি বলেছেন, আর দেরি হবে না। অথচ প্রতিদিনই তিনি একই কাণ্ড করে যাচ্ছেন।

মোহিনীর চোখে রাজ্যের ঘুম নেমে আসে। তিনি আর বসে থাকতে পারেন না। একটা সময় বিছানায় গা এলিয়ে দেন। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েন তা তিনি নিজেও জানেন না।

অনেকক্ষণ ধরেই কলিং বেলের আওয়াজ কানে সুড়সুড়ি দিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু ঘুমের রেশ কাটাতে পারছিলেন না মোহিনী। এক পর্যায়ে তিনি ঘুম থেকে লাফিয়ে ওঠেন। স্থির হয়ে বসে থাকেন। তার দুই চোখ তখনো বন্ধ। তিনি চোখ খোলার চেষ্টা করেন। আবার কলিং বেলের আওয়াজ পান। ঘড়ির দিকে চোখ পড়তেই তিনি দেখেন ঘড়ির কাঁটা চারটার ঘরে। তিনি মনে মনে বলেন, ওহ মাই গড! চারটা! আরেফিন এখন এলো!

মোহিনী দরজা খুলে দেখে আরেফিন মাথা নীচু করে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। তাকে দেখে অচেনা মানুষ মনে হয় মোহিনীর। তিনি বিস্ময়ভরা কণ্ঠে জানতে চান, কি হয়েছে! এতো দেরি হলো কেন! কোনো সমস্যা!
আরেফিন নীচু গলায় বললেন, না।
তাহলে দেরি হলো কেন?
একটু দেরি হয়ে গেলো! সরি।

সরি শব্দটাই এখন আর সহ্য করতে পারেন না মোহিনী। ওই শব্দটা ওর মাথা বিগড়ে দেয়। সরি শুনেই মোহিনী চিৎকার দিয়ে বললেন, ডোন্ট সে সরি।

আরেফিন দাঁড়ালেন না। তিনি টলতে টলতে শোবার ঘরের দিকে চলে গেলেন। তার গা থেকে উটকো গন্ধ বের হয়। মোহিনী নাক চেপে ধরে বলেন, তুমি কোথায় গিয়েছিলে? তুমি কি মদ খেয়ে এসেছ? ছি! ছি আরেফিন!

আরেফিন কোনো কথা বললেন না। মোহিনী দরজার সিটকিনি আটকে শোবার ঘরে এসে দেখেন, আরেফিন গভীর ঘুমে ডুবে গেছেন। মরা লাশের মতো পড়ে আছেন তিনি। বড় অসহায় লাগছে তাকে। মোহিনী আর কিছু বললেন না। তিনিও তার পাশে শুয়ে পড়লেন। তার চোখেও গভীর ঘুম নামে। ঘুমের ঘোরে ডুবে যেতে যেতেই আজানের ধ্বনি তার কানে এলো।


চলবে..

 

Header Ad

বাংলাদেশের কোনো ভাষাকেই হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না: প্রধান বিচারপতি

ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছন, বাংলাদেশের কোনো ভাষাকেই হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না, যেকোনো মূল্যে খাড়িয়া সম্প্রদায়ের মাতৃ (পার্সী)-ভাষাকে রক্ষা করতে হবে। এর জন্য তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।

শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে শ্রীমঙ্গলস্থ বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্রের গেস্ট হাউসে খাড়িয়া জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক সাক্ষাতের সময় এ কথা জানান তিনি।

এ সময় খারিয়া জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। সাক্ষাতে শ্রীমঙ্গল বর্মা ছড়ার খাড়িয়া সম্প্রদায়ের দুই বোন ভেরোনিকা কেরকেটা ও খ্রিস্টিনা কেরকেটা তাদের ভাষায় কথা বলেন এবং তাদের সম্প্রদায়ের জহরলাল ইন্দোয়া নামের একজন তা বাংলায় বর্ণনা করেন।

সাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক উর্মি বিনতে সালাম, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আল-মাহমুদ ফায়জুল কবির, জেলা পুলিশ সুপার মো. মঞ্জুর রহমান, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো আবু তালেব ও শ্রীমঙ্গল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিনয় ভূষণ রায়।

প্রধান বিচারপতি জানান, ভাষা বৈচিত্রের দেশ আমাদের বাংলাদেশ। তিনি গণমাধ্যমের সূত্রে জেনেছেন, খাড়িয়া সম্প্রদায়ের দুজন লোকই বেঁচে আছেন। যারা তাদের মাতৃভাষায় কথা বলতে পারেন। তারা মারা গেলে বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে যাবে এই ভাষা। এই বিষয়টি তাকে ভাবান্বিত করেছে। তাই নিজ উদ্যোগেই এই দুজন মহিলার সঙ্গে তিনি দেখা করতে এসেছেন। তিনি আস্বস্ত হয়েছেন শুধু দুজন নয়, এই ভাষায় কথা বলতে পারেন আরও কয়েকজন আছেন এবং খাড়িয়া জনগোষ্ঠীর প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার মানুষ বাংলাদেশে বসবাস করছেন। তবে এই ভাষাটি রক্ষার জন্য সর্বোচ্চ উদ্যোগ গ্রহণের ওপর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে উদ্যোগ নিতে বলেন।

এর আগে তিনি বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের আবিষ্কৃত চায়ের জাত ও তৈরি চায়ের গুণগত মান যাচাই করেন। এ সময় তিনি বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চায়ের গুণগত মান ধরে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান করেন।

বৃষ্টি হতে পারে যেসব বিভাগে, যে তথ্য দিল আবহাওয়া অফিস

ছবি: সংগৃহীত

পুরো এপ্রিল জুড়ে ছিল তাপপ্রবাহ।‌ টানা তাপপ্রবাহের মধ্যে অসস্তিতে কেটেছে নগরবাসীর জীবন। তীব্র গরমে সারাদেশে জনজীবন ছিল বিপর্যস্ত। বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ দেশের অনেক জায়গায় বহুল আকাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা মিলেছে। এতে জনজীবনে স্বস্তি ফিরেছে। এরই মধ্যে আগামী তিন দিনের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এতে কয়েকটি বিভাগে বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে।

শুক্রবার (৩ মে) সন্ধ্যা ৬টায় দেওয়া পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

সংস্থাটি জানায়, শনিবার (৪ মে) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও বাগেরহাট জেলা সমূহের উপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর ও বরিশাল বিভাগ এবং খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

রবিবার (৫ মে) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। দেশের পশিচমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে বিরাজমান তাপ প্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

সোমবার (৬ মে) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা (১-২) ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে।

সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

বর্ধিত ৫ (পাঁচ) দিনের আবহাওয়ার অবস্থায় বলা হয়েছে, সারাদেশে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা আরো হ্রাস পেতে পারে।

ভূমধ্যসাগরে নিহত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তর

ছবি: সংগৃহীত

তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে মারা যাওয়া ৮ বাংলাদেশি নাগরিকের মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) মর্গ থেকে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় নৌকাডুবিতে তাদের মৃত্যু হয়।

আজ শুক্রবার (৩ মে) বিকেলে ঢাকা জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সায়েম ইমরানের উপস্থিতে বিমানবন্দর থানার এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম মৃতদেহগুলোর আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেন। যেহেতু ওই দেশে ইতিপূর্বে তাদের ময়নাতদন্ত হয়েছে তাই নতুন করে আর করা হয়নি।

মৃতরা হলেন- মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার সেনদিয়া গ্রামের সজল বৈরাগী (২২), একই থানার কদমবাড়ি গ্রামের মৃত পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে নয়ন বিশ্বাস (১৮), সরমঙ্গল গ্রামের মামুন শেখ (২৪), কোদালিয়া গ্রামের কাজী সজীব (১৮), কেশরদিয়া গ্রামের তোতা খলিফার ছেলে কায়সার খলিফা (৩৫) গোপালগঞ্জ জেলার মোকসেদপুর থানার দাদন শেখের ছেলে রিফাত শেখ (২৪) একই থানার পদ্মপট্টি গ্রামের আবুল কাশেম শেখের ছেলে রাসেল শেখ (২৫) এবং পদ্মাপট্টি গ্রামের পান্নু শেখের ছেলে ইমরুল কায়েস আপন (২৩)।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ঘটনায় মানব পাচার আইনে একটি মামলা হয়েছে। আপনারা জানেন, সৌদি এয়ারলাইন্সে বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে মরদেহগুলো বিমানবন্দরে পৌঁছেছে। মাননীয় পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এখানে উপস্থিত আছেন। সবার মতামতে, বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পূর্ব নির্ধারিত ফরেনসিক চিকিৎসক প্রভাষক ডা. ফাহমিদা হকসহ আমরা তিনজন, ডেড বডিগুলোর আলামত দেখলাম।

দেশের বাইরে যে পোস্টমোর্টেম হয়েছে তা দেখলাম, সেখানে কোনোরকম কোনো প্রবলেম আছে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য। এখানে যাদের গার্ডিয়ান আছে, ম্যাজিট্রেট স্যারের উপস্থিতিতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস চেক করে, মরদেহগুলো তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করি।’

তিনি আরো বলেন, ‘এই মামলায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হচ্ছেন- যুবরাজ ও কামাল।

তাদেরকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে যে সব তথ্যাবলি পাওয়া গেছে, তা যাচাই করা হচ্ছে। এটি একটি আন্তর্জাতিক চক্র, এদের সাথে যাদের কানেক্টিভিটি আছে দেশে এবং দেশের বাইরে, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মনিটরিং করছেন বলেও জানান তিনি। এর সাথে যারই কানেক্টিভিটি পাব বা থাকবে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।

সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশের কোনো ভাষাকেই হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না: প্রধান বিচারপতি
বৃষ্টি হতে পারে যেসব বিভাগে, যে তথ্য দিল আবহাওয়া অফিস
ভূমধ্যসাগরে নিহত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তর
কাল থেকে বাড়তি ভাড়ায় চড়তে হবে ট্রেনে, কোন রুটে ভাড়া কত
সবসময় আস্থা রাখায় ধোনিকে ধন্যবাদ জানালেন মোস্তাফিজ
সুষ্ঠু ভোটের আয়োজনে প্রার্থীদেরও ভূমিকা রয়েছে : ইসি রাশেদা
টাঙ্গাইলে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে গণমাধ্যমকর্মীদের সমাবেশ
গণতন্ত্রের জন্য লড়াইকারীদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে : রিজভী
সরকারকে যারা চাপে রাখতে চেয়েছিল তারা নিজেরাই চাপে আছে : ওবায়দুল কাদের
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ, গ্রেপ্তার ২ হাজার
ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন পুলিশ কর্মকর্তা
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভা শনিবার
যেসব অভিযোগে ১১১০ দিন কারাগারে ছিলেন মামুনুল হক
শনিবার যেসব জেলার স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা বন্ধ থাকবে
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি!
নওগাঁয় আ.লীগ নেতার প্রচারে যাওয়া ছাত্রদলের ২ নেতাকে শোকজ
বলিউডের ছবিতে গাইলেন আসিফ আকবর
যাত্রীবাহী বাস উল্টে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ২০
১০ টাকায় টিকিট কেটে চোখ পরীক্ষা করালেন প্রধানমন্ত্রী
এসএসসির ফল প্রকাশ ১২ মে