শনিবার, ৪ মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭  

কায়রোতে এসে নামার পরদিন থেকে গিজার পিরামিড, সাক্কারার ধ্বংসাবশেষ, ফিলাই দ্বীপ ও আবু সিম্বেলের স্থানান্তরিত প্রত্ম নিদর্শন এবং এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই কোমওম্বো, এদফু, কর্নাক, লুক্সর ও ভ্যালি অফ কিংস অ্যান্ড কুইন্সে হাজার তিনেক বছর আগের ফারাওদের রাজ্যে বিস্তর ঘোরাঘুরি ঘরে সকলেই বোধহয় একটু ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাই রামসেস-নেফারতারি কিংবা ক্লিওপেট্রা- তুতেনখামেন-নেফারতিতির প্রস্তর মূর্তি, পিলার ও দেয়াল, পিরামিড-স্ফিংস এবং অন্ধকার কবরের দেয়ালে হায়রোগ্লিফিক লিপিতে লেখা ইতিহাসের বাইরে বেরোবার জন্যে হাঁসফাঁস করছিলেন। সেই কারণে দেখা গেল ভ্যালি অফ কুইন্স থেকে লুক্সর ফেরার পথে কলোসি অফ মেমননে কিছু সময়ের জন্যেও কেউ দাঁড়াতে রাজি নয়। অবশ্য কনভেয়ার বেল্ট টুরিস্টদের যেমন করে ট্যুর গাইডেরা কুতুব মিনার দেখিয়ে দেয় তেমনি করে চলতে থাকা গাড়িতে বসেই মোস্তফা আমাদের কলোসি অফ মেমনন দেখিয়ে দিল।
 ফারাও তৃতীয় আমেনহোটপের দুটি বিশাল প্রস্তর মূর্তি দাঁড়িয়ে আছে প্রাচীন থিবস নগরীর সবচেয়ে বড় সমাধি মন্দিরের সামনে। তবে সমাধি মন্দির বলতে এখন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। খ্রিস্টপূর্ব ১৩৫০ অব্দ অর্থাৎ এখন থেকে তিন হাজার তিনশ বাহাত্তর বছর আগের নির্মিত মহামহিম যে প্রস্তরীভূত হয়ে এখনো সশরীরে দণ্ডায়মান থেকে পর্যটকদের কৌতূহল মিটিয়ে মিশরের সরকারকে রাজস্বের যোগান দিয়ে যাচ্ছেন সে জন্যেই তৃতীয় আমেনহোটপ এবং তাঁর সময়ের ভাস্কর্য শিল্পীদের ধন্যবাদ দেয়া যায়। অন্য সব বিবেচনা বাদ দিলেও এর বিশালত্বই রীতিমতো বিস্ময় জাগায়। 

কলোসি অফ মেমনন

কলোসি অফ মেমনন থেকে লুক্সর পৌঁছাতে চল্লিশ মিনিটের বেশি সময় লাগার কথা নয়। সম্ভবত সেই কারণে মোস্তফা তার সর্বশেষ বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করতে আর দেরি করেনি। দুটি সাদা খামের একটিতে তার নিজের এবং অন্যটিতে গাড়িচালকের নাম লিখে পেছনের দিকে পাঠিয়ে দিয়ে বললো, ‘তোমাদের যার যেমন ইচ্ছে টিপস-এই খামের ভেতরে ভরে দিতে পারো।’ রানা ভাই বললেন, ‘ইচ্ছে না করলে না দিলেও চলবে?’  মোস্তফার উত্তর, ‘আমার সার্ভিস যদি যথেষ্ট ভালো মনে না হয়ে থাকে বা টুরিস্ট গাইড হিসাবে আমার যদি কোনো সমস্যা থাকে তুমি বলতে পারো এবং কোনো টিপস নাও দিতে পারো।’ রানা ভাই শুরু থেকেই মোস্তফার উপরে খুব একাট খুশি ছিলেন না, তারপরেও অবাক হয়ে দেখলাম অংকের শিক্ষক কাম গাইড ওসামাকে বাদ দিলে তিনি মোস্তফাকেই টিপস দিয়েছেন সবচেয়ে বেশি। 

লুক্সরের পথে ফলের দোকান

ফেরার পথে রাস্তার ডান পাশে ধীরে ধীরে ধূসর পাহাড় এবং উঁচু নিচু হলদে বালুময় ঊসর মাটি সবুজে রূপান্তরিত হতে থাকে। কিন্তু এবারে খেজুর গাছের সারি, আখখেত এবং অন্যান্য ফসলের সবুজ ক্ষেত ছাড়াও মাইলের পর মাইল ফুটে আছে লাল গোলাপি হলদে সাদা নানা রঙের ফুল। অবশ্য একটা প্রায় পরিত্যক্ত ভাঙাচোরা রেল লাইন পেরিয়ে শহরের ঢুকবার পরেই ফলের সমারোহ উধাও হয়ে গেল, তার পরিবর্তে দেখা দিল রাস্তার পাশে সাজানো ফলের দোকান, মসজিদ এবং কোথাও কোথাও বসত বাড়ি। লুক্সরে নীল নদের জাহাজ ঘাট এগিয়ে আসতে থাকলে আমাদের প্রথম চিন্তা হলো টুইয়া থেকে লটবহর নামিয়ে নিয়ে শহরের পান্থ নিবাসে যাবার ব্যবস্থা। মোস্তফাকে বলতেই সে সানন্দে বলে উঠলো, ‘তোমাদের কোনো চিন্তা নাই। আমরাই পৌঁছে দেবো।’ 

 লুক্সর আদালত ভবন

সৌরভের দেয়া নির্দেশনার পাতা উল্টিয়ে দেখলাম ঘাট থেকে হোটেল একশ থেকে দেড়শ ঈজিপ্টশিয়ান পাউন্ড। মোস্তফা শুরুতেই একশ পাউন্ড বলে ফেলায় আর দর কষাকষির ঝামেলায় যেতে হলো না। এই বাড়তি একশ পাউন্ড যে ড্রাইভার এবং গাইডের মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে গাড়ির মালিকের হাতে এক পেনিও পৌছোব না তা নিশ্চিত করে বলা যায়। যাই হোক আমাদের গন্তব্যে পৌঁছানোটাই আসল কথা। সাথে বাড়তি সুবিধা হলো গাড়ি থেকে নামতে হলো না। আমাদের তিনজনের বোঝা দুজনে বয়ে নিয়ে গাড়িতে তুলে দিলে চারদিন তিনরাতে টুইয়া জাহাজকে বিদায় জানিয়ে চললাম লুক্সর শহরের পথে। 

রিসর্টের সীমানার পরে নীল নদ

সাত তোরণের থিবস নগরী যে আসলেই আধুনিক শহরে পরিণত হয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। নিশ্চিত করেই বলা যায়, আমার দেখা কায়রো, আসোয়ান, আলেক্সান্দ্রিয়া এবং ছোট ছোট আরো দুই একটি শহরের মধ্যে লুক্সরই সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন, সাজানো গোছানো। বিশাল বড় এলাকা নিয়ে বস্তি, ভাঙাচোরা দালান কোঠা ও ধূলি ধূসর কায়রো কিংবা পলেস্তারা খসা পুরোনো বসত বাড়িতে পরিপূর্ণ আসোয়ান এবং পরিচ্ছন্ন কিন্তু অপরিসর সমুদ্র শহর আলেক্সান্দ্রিয়ার সাথে তুলনা করলে নীলে তীরে গড়ে ওঠা লুক্সর অতীতের মতো এখনো তিলোত্তমা। বিশেষ করে আলোকোজ্জ্বল এবং জাকজমকে ভরা রাতের লুক্সর পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় শহর। এই শহরের মূল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পর্যটন কেন্দ্রীক হলেও হোটেল রেস্টুরেন্টের পাশাপাশি বেড়েছে ব্যাংক-বীমা, কিছু শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। চলার পথেই আমাদের চোখে পড়ে আদালত ভবন, লুক্সর  বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অফ আর্টস ভবনসহ বেশ কিছু আধুনিক স্থাপনা।        

 লুক্সরের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের দপ্তর

সৌরভ আমাদের জন্য লুক্সর শহরের প্রান্তে ঠিক নীল নদের উপরে যে হোটেল বুক করে রেখেছিল সেখানে ঢুকে পড়ার পরেই মনে হলো গাছপালায় ঘেরা নির্জন এলাকায় যেখানে আমরা রাত্রি যাপন করতে যাচ্ছি সেটি শহরের ব্যস্ত এলাকায় প্রচলিত ধারণার কোনো হোটেল নয়। সাদামাটা বড় তোরণে লেখা নাম ফলক ‘স্টিগেন বার্গার রিসর্ট’। চত্বরে বিশাল উদ্যান, সুইমিংপুল, স্পা-জিম-ফিটনেস সেন্টার মিলিয়ে পাঁচতারা মর্যাদা সম্পন্ন একটি রিসর্টে রাত কাটাবার ব্যয় এতো কম কেন! ভাবলাম কোনো ভুল হচ্ছে না তো! চেক-ইন করার পরে ক্রেডিট কার্ড থেকে বাড়তি কত টাকা কেটে নেয় সেই আশঙ্কায় ছিলাম। কিন্তু লবিতে বসে ওয়েলকাম ড্রিংক শেষ হতে না হতেই চেক-ইন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়ে গেল। হতে পারে করোনো মহামারি থেকে উত্তরণের পরে পর্যটন শিল্পকে চাঙ্গা করতে সকলেই একটু ছাড় দিচ্ছে। লিফটে তিনতলায় নিজেদের ঘরে পৌঁছে জানালার পর্দা টেনে দিতেই চোখে পড়ে রিসর্টের সীমানার ওপারে বয়ে যাচ্ছে নীল। অবশ্য এই নদী  এতোটাই শান্ত যে দক্ষিণ থেকে উত্তরে প্রবহমান কোনো স্রোতধারা চোখেই পড়ে না, ফলে নদী আসলে বয়ে চলেছে বলে মনে হয় না । দুই একটা ফেলুকা পাল তুলে প্রায় গতিহীন ভেসে যাচ্ছে। ওপারে সবুজ গাছপালা এবং আধুনিক বাড়ির ওপারে রিসর্টের সীমানার ঠিক নিচেই ফেলুকা ছাড়াও গোটা কয়েক সাজানো গোছানো ছোট ছোট নৌযান অপেক্ষায় আছে, পর্যটক পেলেই ভেসে যাবে নীলের নীল জলে।  

 

ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে বেশিক্ষণ বাইরের দৃশ্য দেখার উপায় ছিল না। পেটে টান পড়লে বুঝতে বাকি থাকে না বেলা তিনটা বেজে পার। রানা ভাই খাদ্য অনুসন্ধানে আগেই নিচে নেমে গেছেন। আমরা এলে জানালেন এখানে লাঞ্চ আওয়ার শেষ, তবে রিসর্টের অঙ্গনেই একটাে রেস্তোঁরা আছে সেখানে কিছু পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু কপাল খারাপ হলে যা হয়। স্ন্যাকস জাতীয় খাবার থাকলেও সেখানেও শেফ নেই। অতএব বাইরে কোনো স্ট্রিটফুড বা পাড়ার ছোটখাট রেস্টুরেন্ট পাওয়া যায় কিনা দেখতে বের হলাম। গেট পেরিয়ে রিসর্টের বাইরে বেরোতেই হাতের ডান দিকে একটা কোক ফান্টা বিস্কিট চানাচুরের দোকানের মতো গ্রোসারিশপ পাওয়া গেল। ব্রেড বাটার থাকলে এখানেই যাত্রা বিরতি দিয়ে কিছু কিনে ঘরে ফেরা যেতো। কিন্তু হা হোতস্মি! এ দোকানের ব্রেডও শেষ গেছে আমরা আসার আগেই। তবে তিনজন ক্ষুধার্ত ভিনদেশিকে দেখে দোকানী আমাদেরকে গলিপথ ধরে সামনে কিছুটা এগিয়ে যেতে বললেন। ঝকঝকে পাঁচতারা হোটেলের বাইরেই অপরিসর নোংরা গলিপথ ধরে খানিক দূর এগোতে সত্যিই একটা রেস্টুরেন্ট চোখে পড়লো। আমাদের হাতিরপুল বাজার বা সেন্ট্রাল রোডের মাথায় যেমন রেস্টুরেন্ট দেখা যায় তেমনি এক রেস্টুরেন্টের বাইরে হাড়ি পাতিল মাজা ধোয়ার কাজ চলছে। বিদেশি দেখে রেস্তোাঁর এক তরুণ কর্মী উৎসাহের সাথে এগিয়ে আসায় বেশ ভরসা পেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের কথা শুনে সে দুঃখ প্রকাশ করে বললো, ‘নাইট কাম, গিভ গুড ফুড!’ বুঝলাম সে নৈশ্যভোজে ভালো খাবারের ব্যবস্থা করতে পারবে, তবে আপাতত কিছু করার নেই। এভাবে প্রতিবেলার খাবার শেষ করে বসে থাকলে এরা ব্যবসা চালাবে কেমন করে! আমাদের রেস্টুরেন্টে নাকি যতো দিনের দোকান ততোদিনের ডাল পাওয়া যায়! 

 নীল নদের ওপারে সূর্যাস্ত

কয়েকদিন জাহাজে সময় মতো বুফে ব্রেকফাস্ট-লাঞ্চ-ডিনারে চর্ব চোষ্য লেহ্য পেয়, কোনো কিছুরই সদ্ব্যবহার করতে ছাড়িনি। জলযান থেকে বাস্তুচ্যুত হবার প্রথম দিনেই খাদ্য পানীয়ের অভাবে প্রাণ প্রায় ওঠাগত। আর সামনে এগোবার শক্তি সাহস কোনোটাই ছিল না বলে আবার আমাদের আস্তানায় ফিরে এলাম। বেলা চারটে বেজে যাওয়ায় রেস্তোঁরার কাজ শুরু হবার পরে তিনজনের জন্য স্যান্ডুইচের অর্ডার দেয়া হলো। রানা ভাই জিজ্ঞেস করলেন, ‘কতোক্ষণ লাগবে?’ উত্তর এলো, ‘টেন টু ফিফটিন মিনিটস স্যার।’ এই ফিফটিন মিনিটস যখন থার্টি মিনিটসে দাঁড়ালো তখন রানা ভাই রাগ করে বললেন, ‘এবারে চলেন ঘরে চলে যাই, শুয়ে থাকি। ডিনারের সময় হলে নেমে আসা যাবে।’ রানা ভাইয়ের উত্তেজনা প্রশমনের জন্য আমি ইচ্ছে করেই একটা গল্প শুরু করলাম। গল্প হলেও গল্পটা অনেক বছর আগের এক ঘটনা।


একটা আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে যোগ দিতে কেরালায় এসেছি। ত্রিবান্দ্রম তখনও নাম বদলে দুঃসাধ্য উচ্চারণের নতুন নগরীতে পরিণত হয়নি। উৎসবের দ্বিতীয় সপ্তাহে এক সন্ধ্যায় একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে খেতে গেছি। সঙ্গে এফডিসির পরিচালক সাজ্জাদ জহির এবং ভারতীয় বন্ধু চলচ্চিত্র পরিচালক সুরজিৎ ধর। যতোদূর মনে পড়ে চিকেন ফ্রাইড রাইস এবং একটা ভেজিটেবল ছাড়াও বিফের একটা আইটেম ছিল। যাঁরা জানেন না, তাঁদের  জন্য বলে রাখা ভালো, কেরালার সকল নন-ভেজ রেস্তোঁরায় সে সময় বিফ সহজলভ্য ছিল। পরিবর্তিত রাজনৈতিক বাস্তবতায় সেই কেরালা এখন কোন পথে হাঁটছে জানি না। আমরা খাবারের অর্ডার দিয়ে বসে আছি তা আছিই। পনের কুড়ি পঁচিশ মিনিটেও খাবার আসে না। দুবার তিনবার জিজ্ঞেস করা হয়ে গেছে। প্রতিবারই উত্তর আসে ফাইভ মিনিটস স্যার! পঁয়তাল্লিশ মিনিটের সময় সুরজিৎ সিদ্ধান্ত দিয়ে দিল, ‘যে মুহূর্তে কিচেনের দরজা দিয়ে খাবারের ট্রে হাতে পরিবেশক ভেতরে আসবে সেই মুহূর্তে আমরা সামনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যাবো।’ আরো দশ মিনিট অর্থাৎ পঞ্চান্ন মিনিট পরে যখন সত্যিই খাবারের দেখা মিলল ঠিক সেই সময় আমরা সামনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। পেছন থেকে শুনতে পাচ্ছিলাম, ‘ইওর ফুড ইজ অন দ্য টেবল স্যার!’  


পঁয়ত্রিশ মিনিটের সময় আমার গল্প শেষ হতে না হতেই তিনটি বিশাল আকৃতির স্যান্ডুইচ এসে হাজির হলো। আমরা এবারে সত্যিই নিজেদের ঘরে চলে গেলাম, তবে যাবার সময় স্যান্ডুইচগুলো সঙ্গে নিতে ভুলিনি। প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত হলেও দুজনের দুটি স্যান্ডুইচ শেষ করা সম্ভব হলো না। প্রচণ্ড ক্লান্তির কারণে কিছুক্ষণের জন্য ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুম ভাঙলে ব্যলকনিতে দাঁড়িয়ে মোহিত হয়ে দেখলাম নীল নদের ওপারে অসাধারণ সূর্যাস্ত!  

 

 

চলবে...

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

   

Header Ad

মিল্টন সমাদ্দারের মানবিকতার আড়ালে প্রতারণা, যা বললেন ব্যারিস্টার সুমন

ছবি: সংগৃহীত

হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা অনিয়মের প্রতিবাদ ও মানবিক স্টোরি তুলে ধরে ব্যাপক আলোচনায় আসেন এই সংসদ সদস্য।

বর্তমানে এমপি হলেও আগের মতো নানা ইস্যুতে আওয়াজ তুলেন ব্যারিস্টার সুমন। সেই ধারাবাহিকতায় মানবিকতার আড়ালে ভয়ংকর প্রতারক মিল্টন সমাদ্দারকে নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন তিনি।

মিল্টন সমাদ্দার মানবিক কাজ দিয়ে জনপ্রিয় হয়েছিলেন। বর্তমানে তার মানবিক কাজগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, এ বিষয়ে কী বলবেন? জবাবে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, একটা বিষয় আমাদের মনে রাখা উচিৎ, যারা মানবিক কাজ করে মুখ দিয়ে নয়, হৃদয় দিয়ে করে। মুখ দিয়ে মানবিক কাজ করলে নানা প্রশ্নবিদ্ধ হবে কিন্তু হৃদয় থেকে করলে তাকে কেউ আটকাতে পারবে না।

মানবিক কাজগুলো প্রশ্নবিদ্ধ হলে সমাজে কী নীতিবাচক প্রভাব ফেলে না? এমন প্রশ্নের জবাবে এই সংসদ সদস্য বলেন, সমাজে নীতিবাচক প্রভাব ফেলতে ফেলতে এই পর্যায়ে আমরা দাঁড়িয়েছি। আর পেছনের যাওয়ার সুযোগ নেই, সামনের দিকে যেতে হবে। আমরা নষ্ট হওয়ার শেষ পেরিয়ে গেছি। এর থেকে বেশি নষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই।

প্রসঙ্গত, দুস্থ, অসহায় ব্যক্তিদের আশ্রয় ও সাহায্যের মতো মানবিক কাজের কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচিত পান মিল্টন সমাদ্দার।

সম্প্রতি গণমাধ্যমে এসব কাজের আড়ালে তার নানা অন্যায়-অনিয়মের অভিযোগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এরপর বুধবার এই মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

তার বিরুদ্ধে ডেথ সার্টিফিকেট জালিয়াতি, মানবপাচার, আশ্রয় দেওয়া অসহায়, দুস্থ ব্যক্তিদের মৃত্যুর পর তাদের কিডনি বিক্রি, জমি দখলসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে: ইরান

ছবি: সংগৃহীত

চলমান ছাত্র বিক্ষোভে দমন-পীড়ন ও ধরপাকড়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের মুখ থেকে ভণ্ডামির মুখোশ সরে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি। শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স বার্তায় এই মন্তব্য করেন তিনি। খবর ইরানি গণমাধ্যম ইরনার

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ দমন প্রসঙ্গে কানানি বলেছেন, বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকারের মিথ্যা রক্ষকদের মুখ থেকে ভণ্ডামির মুখোশ সরে গেছে। তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনপন্থি ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ঠেকাতে দমন-পীড়নকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য সত্যকে বিকৃত করে শিক্ষার্থী ও একাডেমিক কর্মীদের প্রকৃত ক্ষোভ ও তাদের প্রতিবাদকে ইহুদিবিদ্বেষ হিসাবে বর্ণনা করছে মার্কিন সরকার।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের হামলার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক ডজন বিশ্ববিদ্যালয় উত্তাল। বিভিন্ন কর্মসূচির পাশাপাশি ক্যাম্পাসে তাঁবু টানিয়ে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা। এর জেরে ক্লাস-পরীক্ষা বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। সে সঙ্গে ক্যাম্পাসে পুলিশ ডাকতেও বিন্দুমাত্র পিছপা হননি তারা।

এমনকি পুলিশ এসে শান্তিপূর্ণ শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়েছে। গ্রেফতার করেছে দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে। তবে এতকিছু করেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা পুলিশ প্রশাসন। উলটো তা আরও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি মার্কিন শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ছাড়িয়ে এখন বৈশ্বিক রূপ ধারণ করেছে।

নিজের মান ইজ্জত রক্ষা করুন, মন্ত্রী-এমপিদের প্রতি ইসি রাশেদা

ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, যেকোন মূল্যে উপজেলা নির্বাচন হবে প্রভাবমুক্ত। সরকারের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রভাবশালীরা এই নির্বাচনে প্রভাব খাটালে কমিশন প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে বিধিবিধান অন্যুায়ী ব্যবস্থা নিবে।

শনিবার দুপুরে রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে রাজশাহীর চার জেলার প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাশেদা সুলতানা একথা বলেন।

রাশেদা সুলতানা বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি পছন্দের প্রার্থী পক্ষে নেক দৃষ্টি দিয়ে সরকারের অতি সুবিধাভোগি কিছু ব্যক্তিরা (মন্ত্রী-এমপি) এ নির্বাচনে প্রভাব খানাটোর চেষ্টা করছেন। ওই সমস্ত পদে যারা আছেন তাদের প্রতি অনুরোধ করবো- দয়া করে আপনারা আপনাদের জায়গায় থাকেন। আপনি এলাকার ভোটার আপনি আসবেন ভোট দিবেন চলে যাবেন। আপনি যে পর্যায়ে আছেন- আপনি আপনার মান ইজ্জত রক্ষা করবেন। আপনার ইজ্জত আপনি যদি রক্ষা না করেন তাহলে কিন্তু যে কোন মুহুর্তে বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে। এর দায় কিন্তু আমরা নিব না। আপনাই সেটা বহন করবেন। আপনারা নিজের মর্যাদায় আসিন থেকে দ্বায়ীত্ব পালন করবেন।

প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে ইসি রাশেদা সুলতানা আরও বলেন, ভোটারবিহীন নির্বাচনের সৌন্দর্য নেই, গ্রহনযোগ্যতা নেই, আনন্দও নেই। ১০ শতাংশ ভোট পেয়ে যেতা আর ৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে জেতার মধ্যে প্রার্থক্য আপনারাই বুঝতে পারবেন। তাই আপনার চিন্ত করেন, পরিবেশ নষ্ট করে ১০ শতাংশ ভোটে জিততে চান ভোটার না এনে; ৮০ শতাংশ ভোটে জিততে চান। আপনাদের উপর এই ভারটা ছেড়ে দিলাম সিদ্ধান্ত নেয়ার।

ইসি বলেন, ভোটের দিন কোন রকম উশৃঙখলতা, বিশৃঙখলাতা, সহিংস আচরণ, ভোট কেন্দ্র দখল করার মত কোন দুঃসাহস করবেন না। আপনার অবৈধভাবে যে ব্যালটই রাখেন না কেন আমাদের কাছে তথ্য গেলে প্রমান পেলে সেই ভোট বাতিল করে দিব যেকোন মুহুর্তে। আর অসাধুচারণ করেন, আচরন বিধি ভঙ্গ করেন আমরা কিন্তু নির্বাচনের মুহুর্তেও প্রার্থীতা বাতিল করে দিব। ভোটের দিন যে কোন নৈরাজ্য মূলক আচরণ করলে আমরা কিন্তু নির্বাচন স্থগিত করবো, নির্বাচন বাতিল করবো, প্রার্থীতা বাতিল করবো।

তিনি আরও বলেন, গনতন্ত্রের মূল ভিত্তি হচ্ছে নির্বাচন। তাই নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় সেজন্য নির্বাচন কমিশন কাজ করে যাচ্ছে। জনগনের মনে যেন গেঁথে থাকে এমন একটি নির্বাচন হবে এবার। তাই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কমিশন চায় না।

নির্বাচনে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের উদেশ্যে রাশেদা সুলতানা বলেন, কোন প্রার্থী জিতল কোন প্রার্থী জিতল না এ নিয়ে ইসির কোন মাথা বেথা নেই। নির্বাচন কমিশনের একটি নির্দেশনা, আপনার সব প্রার্থীকে সমান চোখে দেখবেন, নিরপেক্ষতার সাথে দেখবেন, যে হাঙ্গামা করবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন। তবে কমিশনার নির্দেশনা যিনি প্রতি পালন করবেন না তার দায়দায়িত্বও তিনি নিবেন। আপনাদের কৃতকর্মের দায় কমিশন বহন করবে না।

রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও জয়পুরহাটের উপজেলার প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী ও কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর।

সর্বশেষ সংবাদ

মিল্টন সমাদ্দারের মানবিকতার আড়ালে প্রতারণা, যা বললেন ব্যারিস্টার সুমন
যুক্তরাষ্ট্রের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে: ইরান
নিজের মান ইজ্জত রক্ষা করুন, মন্ত্রী-এমপিদের প্রতি ইসি রাশেদা
উদ্যোক্তারাই দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অগ্রগতির কাণ্ডারী : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
টানা ৬ দিন হতে পারে ঝড়বৃষ্টি জানাল আবহাওয়া অফিস
সেই ভাইরাল নেতা পাকিস্তান জামায়াতের আমির নির্বাচিত
টানা ৮ দফা কমার পর বাড়ল স্বর্ণের দাম
দিয়াবাড়ির লেক থেকে ২ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
রাজধানীবাসীর জন্য সুখবর দিল আবহাওয়া অফিস
মক্কায় প্রবেশে আজ থেকে কঠোর বিধি-নিষেধ
‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কার জিতলেন মিথিলা
ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো বগুড়ার আলু ঘাঁটি উৎসব
টাঙ্গাইলে পাগলা কুকুরের কামড়ে শিশুসহ ২২ জন আহত
১৭ রোগীকে হত্যার দায়ে মার্কিন নার্সের ৭৬০ বছর কারাদণ্ড
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে ছাত্রলীগের কর্মসূচি ঘোষণা
দুবাইয়ের ‘গোল্ডেন ভিসা’ পেলেন শাকিব খান
সুন্দরবনের গহীনে ভয়াবহ আগুন, ছড়িয়েছে দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে
স্কুলে দেরি করে আসায় শিক্ষিকাকে ঘুষি মারলেন অধ্যক্ষ
আইপিএলের প্লে অফের দৌড়ে এগিয়ে কারা?
আবারও বাংলাদেশে প্রবেশ করল মিয়ানমারের ৪০ বিজিপি সদস্য