বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৪

নেই দেশের নাগরিক

“কোথায় আজান হচ্ছে বাপ? আমাদের দংখালীর মসজিদের আজান এখানে ভেসে আসছে!” কান খাড়া করলেন হালেমা।
“না না, কোথায় দংখালী আর আমরা কোথায় আছি! এটা বাংলাদেশের নয়াপাড়া থেকে ভেসে আসছে।“ চোখ বাঁকালো মতি। তারপর হাতে পিতলের ঘটিটা নিয়ে, নৌকার কানা থেকে নদীতে পা ঝুলিয়ে বসে বলল, “ওজু করে নাও। আমি নদীর পানি তুলে দিচ্ছি।“ বলেই ‘ছলাৎ’ করে ঘটিটা জলে চুবড়িয়ে নিল। স্বচ্ছ জল। লবণ মিশে মোটা হয়ে গেছে। জলের ঘটিটা ছইয়ের কাছে হাত বাড়িয়ে আরিফাকে দিয়ে বলল, “মা’কে দাও, ওজু করবে।“ মতি নিজে কোমর কুঁজো করে হাত দিয়ে সরাসরি নদী থেকে জল তুলল। সে জল খরচ করে ওজু করতে লাগল। মতি পাকা মুসল্লি। আগে ওত পরহেজগার ছিল না। বছর পাঁচেক আগে জামাতের পাল্লায় পড়ে সেই যে নামাজ ধরল, ধরল তো ধরল, আর এক ওয়াক্তও কাজা করেনি। মতি, মুখে ওজুর জল দিয়ে বলল, “নুহু, তুই শক্ত করে হাল ধরে থাক। জোয়ার আসতে পারে। আমি নামাজটা পড়ে নিই।“ মতির খেয়াল আছে শেষ জোয়ার আসা বারো ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। গতকাল বিকেলে মুখ্য জোয়ার এসেছিল। সুতরাং একটা হাল্কা পাতলা গৌণ জোয়ার যেকোনো সময় ধেয়ে আসতে পারে! তারপরে নৌকাটা অনেকটাই মোহনার দিকে চলে এসেছে। ফলে জোয়ারের একটা প্রবল ধাক্কা খাওয়ার ঘোর সম্ভাবনা। এরকম জোয়ারে নৌকা অনেকসময় পাল্টিও খায়। ঢেউ এর ঝুঁটি ধরে আঁকড়ে থাকতে হয়। এখন নদী একেবারে ডোবা পুকুরের মতো থির। চোখে এখনও ঘুম জড়ানো। কোনো হেলদোল নেই। যেন জোয়ারের জোর ধাক্কা খাওয়ার জন্যে, চোখ বন্ধ করে অজানা সংকেতের প্রহর গুণছে! খোলা নৌকার পাটাতনের ওপরে কেবলামুখী করে নামাজে দাঁড়িয়ে গেল মতি। কেবলামুখী অর্থাৎ মক্কার কাবাশরীফের দিকে মুখ। ধিক ধিক করে চলছে নৌকাটা। যেন ক্লান্ত। শ্রান্ত। শরীর আর নিচ্ছে না। পূবালী বাতাসটা ঝিরঝির করে বয়ছে। আকাশের নীল তটরেখা দিয়ে উড়ে গেল এক ঝাঁক হরিয়াল। পাখিগুলোর গায়ে জড়িয়ে আছে ভোরের মিহি আলো।
নুহু আসমানের দিকে চোখ তুলে দেখল, পাখিগুলো নয়াপাড়া থেকে উড়ে যাচ্ছে আকিয়াবের দিকে। পাখিগুলোকে এভাবে শূন্যে ডানা মেলে আপন খেয়ালে উড়ে যেতে দেখে, নুহুর মনপাখিটাও পাখা ঝাপ্টালো। মনের পালকে লাগল উড়ুক্ক হাওয়ার দোলা। নুহু ভাবল, আহাঃ যদি পাখি হতাম, যেদিকে ইচ্ছে উড়ে যেতাম! কেউ কখনও মানা করত না। সব দেশই আমার দেশ হয়ে যেত। কোনো সংবিধানই আমাকে কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে রাখতে পারত না। আমি সকালে এক দেশে খেলে বিকেলে অন্য দেশে খেলতে যেতাম। আমার পালকে লেগে থাকত নানান দেশের জল-মাটি। আমি গান গাইতে গাইতে পেরিয়ে যেতাম নাফ নদী। কক্সবাজারের শিমুল গাছ থেকে শুয়োপোকা ধরে এনে দংখালীর তেঁতুল গাছে বাঁধা বাসায় কিচিরমিচির করতে থাকা শাবকছানাকে খাইয়ে দিতাম। তারপর সবাই মিলে ডানা মেলে ঘুরতে যেতাম অন্য কোনো দেশ।
মতি প্রথম রাকাতের সিজদা দিয়ে আবার খাড়া হয়ে দাঁড়াল। মিনমিন করে সুরা ‘ফাতেহা’ আউড়াচ্ছেন। মাথার ফেজ টুপিটা চুলের সাথে এঁটে আছে। চাপ দাড়িটা মুখটাকে আরও পরহেজগার ইনসান বানিয়ে দিচ্ছে। হালেমা ছইয়ের ভেতর শীতলপাটির জায়নামাজ বিছিয়ে বসে বসে নামাজ আদায় করছেন। কোমরে ব্যাথা। উঠতে গেলেই ‘কট’ করে ওঠে। মাজায়, হাঁটুতে, বাত। রাতদিন কনকন করে। খাড়া হয়ে নামাজ পড়তে পারেন না।
এসব দেখে, জাফর আলি বলেন, তোমারও সময় হয়ে এসেছে হালেমা, হাড়ের নাটবোল্ট ঢিলা হতে লেগেছে, দেখবে, হুট করে একদিন আজরাইল এসে ঠং করে বাড়ি দিয়ে জানটা নিয়ে চলে যাবে! আরিফা সাকিবের কপালে হাত ঠেকিয়ে দেখল, গা’টা গরম আছে কি না। নাহ, জ্বরটা ঢেরটুকু কমেছে। গতরাতে তো হাত ঠেকানোই যাচ্ছিল না, একেবারে ছ্যাঁক করে উঠছিল। গা’টা অত গরম না থাকলেও, আরিফা আরও একবার জলপট্টি দিল। ঘুমে মুদে থাকা চোখ আলতো করে খুলল সাকিব। মৃদু নড়ে উঠল ঠোঁট, “মা”। আরিফা ছেলের মাথাটাকে বুকের মধ্যে পুরে নিয়ে বলল, “কোন ভয় নেই বাপ, কোন ভয় নেই, এই তো জ্বর কমে গেছে, সকাল হলেই একেবারে ভালো হয়ে যাবি।“ সাকিব তার জ্বরমুখো মাথাটা মায়ের কোলে রেখে ফুঁপিয়ে ওঠে, “মা, আমি বাড়ি যাব। তুমি আমাকে বাড়ি নিয়ে চলো।“
‘বাড়ি!’ কথাটা শুনে প্রথমে খেয়ালি হয়ে ওঠে আরিফা। তারপর ভাবে, সে কী আর এজন্মে ফেরা হবে রে বাপ? আদৌ কী আর কোনো বাড়ি কপালে জুটবে? আল্লাহ কী আর আমাদের কপালে কোনো ঠিকানা লিখে রেখেছেন? সাকিব আঁচল মুখে গুঁজে রীতিমত বায়না ধরে, “মা, আমি বাড়ি যাব, আমাকে বাড়ি নিয়ে চলো, এই নৌকা আমার আর ভাল্লাগছে না।“
“যাব বাপ, সকাল হলেই যাব। তুই আর একটু ঘুমিয়ে নে। জ্বরে সারারাত ভালো করে ঘুম হয়নি।“
“তুমিও তো সারারাত ঘুমোওনি মা, তুমিও ঘুমিয়ে নাও।“
হ্যাঁ, ঘুমোব, একটু সবুর কর, আমি একা কেন, আমরা সবাই ঘুমোব। এমন ঘুম ঘুমোব, এজন্মে আর চেতন পাব না। যাকে বলে, শেষ ঘুম। বার্মা সেনারা এসে আমাদের ঠিক সে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে যাবে। আনমনা হয়ে উঠল আরিফা।
“মা, কী হলো? তুমি ঘুমোও। তুমি না ঘুমোলে আমিও ঘুমোব না।“ জেদ ধরে ন-বছরের সাকিব। ছেলের আবদারে ঘোর ভাঙল আরিফার, “অমন করতে হয় না, বাপ, বড়দের কথা শুনতে হয়, আমার এখন ঘুমোলে হয়? কত্ত কাজ পড়ে রয়েছে।“
“নৌকাতে আবার তোমার কী কাজ মা, এটা কী বাড়ি যে ঘুম থেকে উঠে উঠেই তোমাকে হুটপাট করে কাজে লেগে পড়তে হবে?” পাক্কা বুড়োর মতো কথা বলল সাকিব। তাই তো? এটা তো নৌকা! আমাদের দংখালীর আটপৌরে বাড়িটা তো নয়? মাথা ঠক করল আরিফার। আসলে অভ্যাসের বসে কথাগুলো মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেছে আরিফার। দংখালীর বাড়িতে ফজরের আজান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে বিছানা থেকে উঠে পড়তে হয়। ওঠার সময় কানে আসে মোরগের ‘ক-ক ক-ক’ ডাক। সূর্য ওঠার আগেই ঘর-দোর, উঠোন-বারান্দা ঝাড়পুছ দেয়। বাড়ির সম্মুখের রাস্তাটাও ঝাড় দিয়ে সাফসুতরো করে। ধুলোর ওপর লেগে থাকে ঝাঁটার খিলের সরু সরু দাগ। খিলেনের আঁকিবুঁকি। তাতে রোদ এসে কিতকিত খেলে। মুরগির খাঁচার টিনের মুখটা খুলে দিতেই পকপক করে বেরিয়ে আসে মুরগির পাল। তারপর মতি গোয়াল ঘর থেকে গাই গরুটাকে টেনে বের করে এনে নানেরপাড়ের খুঁটিতে বেঁধে দিলে, আরিফা মুত-গোবর পরিষ্কার করে। গোবরগুলো ছেনে ছেনে পেছনের দেওয়ালে ঘুঁটো দেয়। পাটকাঠির ওপরে দলা দলা গোবর চেপে বানায় লুদা। তারপর হাতমুখ ধুয়ে এঁটো বাসনপত্তর নিয়ে বসে পড়ে কলপাড়ে। মতি পান্তা ভাত খেয়ে ঘাড়ে গামছা নিয়ে বেরিয়ে যায় মাঠে। আরিফা নুন-মরিচ, আনাচপাতি, হাঁড়িকুঁড়ি নিয়ে পিঁড়ি নিয়ে বসে আখারপাড়ে। পাঠকাঠির জ্বালান ঠেসে পুরে দিয়ে ধরিয়ে দেয় আগুন। মাথায় খিজিবিজি লেগে যায়, কত্ত কাজ! সাকিব ঘুম থেকে উঠলে, হাগা-মুতা করিয়ে দিতে হয়, শাশুড়িটার পায়ে বাতের ওষুধ ডলে দিতে হয়, শ্বশুরটাকে খাইয়ে দিতে হয় চার রকমের ওষুধ। তারপর তিন বিহেনের ধাড়ি ছাগলটা ‘ভ্যা’ করে উঠলেই, আঁচল গুছিয়ে দৌড়াতে হয়। কুরবানির খাসিটাও সারাদিন খুইখুই করে বেড়ায়। কাজ যেন ফুরোতেই চায় না, আঁঠার মতো আঁচলে লেগে থাকে।
“পাকা পাকা কথা শিখেছিস? ঘুমোও, সূর্য উঠলেই বাড়ি চলে যাব।“ মাথার চুলে আদরের ছোঁয়া লাগাল আরিফা। চুলে বিলি কাটল। আঁচল দিয়ে হাওয়া করতে করতে বলল, “ঠিক আছে, আমার কোলেই ঘুমোও। বিছানায় আর ঘুমোতে হবে না।“ ছইয়ের বাঁকানো দেওয়ালে পিঠ রেখে, পাদুটো ছড়িয়ে বসল আরিফা। ধকলের ক্লান্তি চুলের সিঁথি দিয়ে হেঁটে আসতে লাগল সারা শরীরে। সাকিবের মাথাটাকে কোলের উপর শুইয়ে দিয়ে, আঁচলের হাওয়া দিতে লাগল। ঘুম চাদরের মতো বিছিয়ে গেল সাকিবের শরীরে। তার চোখ বুঁজে এলে, আরিফা মনে মনে বলে উঠল, হ্যাঁ, সূর্য উঠলেই বাড়ি ফিরে যাব। হ্যাঁ, সূর্য, নতুন সূর্য। আতিফ একদিন বলেছিল, দেখো, ভাবি, একদিন আমরা স্বাধীন দেশ পাব, আমাদের দেশ, আমাদের নিজস্ব দেশ, সেখানে অন্য কোন দেশ নাক গলাতে পারবে না। যে দেশে থেকে কখনই মনে হবে না, আমরা পর, আমরা ভিনদেশি। সে দেশে উঠবে নতুন সূর্য। স্বাধীনতার সূর্য। আমরা সেদিন সারাদিন ধরে নাচব, গাইব আর আহ্লাদে আটখানা হয়ে উঠব। গায়ে মাখব স্বাধীনতার রঙ। মনে লাগাব স্বাধীন দেশের আবির। তোমরা পরবে নতুন শাড়ি। পায়ে আলতা, হাতে মেহদি। খোঁপায় রজনীগন্ধা গুঁজে গায়বে স্বাধীনতার গান। মায়েরা পড়বেন কোরআন। আব্বারা দাঁড়াবেন নামাজের কাতারে। রাস্তায় রাস্তায় বেরোবে শোভাযাত্রা। ছাদে ছাদে পতপত করে উড়বে স্বাধীনতার পতাকা। ভাবি, তুমি দেখো, আমরা সেই নতুন সূর্য একদিন না একদিন আনবোই, ইনশাল্লাহ। তুমি দোয়া করো।
চোখ ছলছল করে ওঠে আরিফার। মাথাটাকে ছইয়ের দেওয়ালে হেলান দিয়ে দেয়। চোখ চুইয়ে গালে নামে অশ্রু। পানপাতার মতো মুখের তামাটে গালদুটো নদীর ভাঙা পাড় হয়ে ওঠে। চোখের জলের তোড়ে একটু একটু করে ধসে পড়ে সৌন্দর্যের লাবন্য। মুখ বড় অভাগী হয়ে ওঠে। দুঃখ আর যন্ত্রণা ঠাসাঠাসি করে লেগে থাকে এ গালে ও গালে।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব ১৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

এসএন 

 

আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি

হিট অ্যালার্ট জারি। ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে চলমান তাপমাত্রার পারদে উঠতি গতার খুব একটা হেরফের না হওয়ায় এখনও অস্বস্তি কমেনি। মাথার ওপর গনগনে সূর্যকে সঙ্গী করেই প্রচণ্ড দাবদাহে নাজেহাল পরিস্থিতি পার করছে মানুষ। যদিও কয়েকদিনের তুলনায় কিছুটা বাতাসের উপস্থিতি থাকলেও পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান এ তথ্য জানান।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, আমরা এর আগে তিন দিনের যে হিট অ্যালার্ট জারি করেছিলাম তার মেয়াদ আজ শেষ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) থেকে আরও তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করা হবে। কারণ, আপাতত বড় পরিসরে বৃষ্টি হয়ে তাপপ্রবাহ দূর হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আমরা হিট অ্যালার্ট জারি করে সরকারকে জানিয়ে দিই। সরকার সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। সংশ্লিষ্টরা তাদের করণীয় যা সেটা করবে।

তিনি বলেন, সারাদেশের তাপমাত্রা গতকালের থেকে আজ কিছুটা বেড়েছে। চলতি এপ্রিল মাসে তাপপ্রবাহ পুরোপুরি দূর হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমরা দেখছি যে এটা মে মাসের ২ থেকে ৩ তারিখ পর্যন্ত চলবে। এরপর হয়তো বিভিন্ন অঞ্চলে কিছু বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এর আগে পর্যন্ত বড় পরিসরে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। স্থানীয়ভাবে বিচ্ছিন্নভাবে কোথাও কোথাও বৃষ্টি হতে পারে।

মো. আজিজুর রহমান বলেন, আপাতত দিনের তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখছি না। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তাপমাত্রা আর খুব বেশি বাড়ার সম্ভাবনা নেই।

এদিকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় দেওয়া পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। খুলনা বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলাসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগ এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিবিরাজ করতে পারে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপ প্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প আসছে বাংলাদেশের পর্দায়

ডকুফিল্ম ‘মুচাচোস’ এর পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা। সৌদি আরবের কাছে হেরে অঘটন দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিল আলবিসেলেস্তারা। তবে শেষমেশ লিওনেল মেসির হাতেই ওঠে বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফি, এমন বিশ্ব আসরকে সেরা বলতে বাধ্য যে কেউ।

অবিস্মরণীয় এই বিশ্বকাপের রোমাঞ্চ নিয়ে এরইমধ্যে নির্মিত হয়েছে বেশ কিছু ডকুফিল্ম। যার মধ্যে আলোচিত একটি স্প্যানিশ ভাষায় নির্মিত ডকুফিল্ম ‘মুচাচোস’।

স্প্যানিশ পরিচালক জেসাস ব্র্যাসেরাস নির্মাণ করেছেন ১০০ মিনিটের এই ডকুফিল্ম। গত ডিসেম্বরে আর্জেন্টিনায় মুক্তি পাওয়া ‘মুচাচোস’ সেখানকার দর্শকদের মধ্যে দারুণ সাড়া তুলেছিল।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্টার সিনেপ্লেক্স জানিয়েছে, আগামী শুক্রবার ‘মুচাচোস’ মুক্তি পাবে এই মাল্টিপ্লেক্সের সবগুলো শাখায়।

বাংলাদেশে ডকুফিল্মটি মুক্তি নিয়ে স্টার সিনেপ্লেক্সের মিডিয়া ও মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার বিপুলসংখ্যক সমর্থক রয়েছে। কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার খেলা উপভোগ করেছে কোটি মানুষ। বিশ্বকাপ জয়ের পর ঢাকাসহ সারাদেশ উৎসবমুখর হয়ে উঠেছিল। বাংলাদেশের সমর্থকদের উন্মাদনা দেখে রীতিমত অবাক হয়েছেন আর্জেন্টিনার মানুষও।

“লিওনেল মেসির হাত ধরে বিশ্বকাপ জয়ের এই মুহূর্ত নিয়ে ভক্তদের উৎসাহ ফুরাবে না সহজে। এই ভক্ত-সমর্থকদের জন্যই ‘মুচাচোস’ নিয়ে এসেছি আমরা। আশা করি এই ছবি দেখাটা চমৎকার একটা ব্যাপার হবে দর্শকদের জন্য।’’

‘মুচাচোস’এ অভিনয় করেছেন জেসুস ব্র্যাসেরাস, বসসি অগাস্টিন বসি, হার্নান ক্যাসশিয়ারি, ম্যাক্সিমিলিয়ানো লাসানস্কিসহ আরও অনেকে।

শরীয়তপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ৫

হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন সংঘর্ষে আহত এক ব্যক্তি। ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুরের জাজিরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও তার প্রতিপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে দফায় দফায় উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের সারেংকান্দি এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়।

আহতরা হলেন- শাহাবুদ্দিন সারেং (৩০), মো. আরশাদুল (১১), সৈকত সরদার (১৯), হাজেরা বেগম (৭৫) ও আকাশ হাওলাদার (২৮)।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, জাজিরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বেপারী এবং তার নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আব্দুল জলিল মাদবরের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। এই নিয়ে বেশ কয়েকবার দুপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গত ২৭ মার্চ দুপক্ষের সংঘর্ষে বোমার আঘাতে সজীব মুন্সী নামের এক যুবক গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সেই ঘটনার সূত্র ধরে আজ আবারও দুপক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। সকাল থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। এসময় তারা সারেংকান্দি এলাকায় ফসলি জমিতে নেমে একে–অপরকে লক্ষ্য করে হাতবোমা (ককটেল) ছুঁড়তে থাকে। ককটেলের মুহুর্মুহু শব্দে ভারী হয়ে উঠে আশপাশ। এই ঘটনায় শাহাবুদ্দিন, আরশাদুল, সৈকত, আকাশ ও হাজেরা নামে ৫ জন গুরুতর আহত হয়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য শাহাবুদ্দিন, আরশাদুল, সৈকত ও আকাশকে ঢাকায় পাঠান। এছাড়া দুপক্ষের বেশকিছু বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুল জলিল মাদবর অভিযোগ করে বলেন, ‘কুদ্দুস বেপারীর লোকজন গতকাল মঙ্গলবার আমাকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকে স্টাটাস দিয়ে বলেন, ‘‘বাবার জন্মে হয়ে থাকলে সবার সামনে গিয়ে মারামারি করিস। পোলাপান সামনে দিয়ে মারামারি করিস না। আগামীকাল সকালে শুরু হবে।’’ এ বিষয়ে আমি পুলিশকে জানিয়েছি। পরে আজ কুদ্দুস বেপারীর লোকজন আমার লোকজনের বাড়িঘর ভাংচুর করে ও আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়।’

তবে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুস বেপারী বলেন, ‘জলিল মাদবর মারামারি করার জন্য কয়েক গ্রাম থেকে লোকজন এনে আমার লোকজনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। পরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আমার একজন লোক মুমূর্ষু অবস্থায় আছে।’

এ বিষয়ে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, কয়েক বছর যাবত বিলাসপুর ইউনিয়নে দুইটি গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব, হামলা-মামলা চলছে। তারই জেরে আজ দুই পক্ষ সংঘর্ষে জরায়। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষ থামাতে চেষ্টা করি। কিন্তু আমরা পৌঁছানোর আগেই দুপক্ষের অন্তত চারজন লোক আহত হয়। তারা বেশ কিছু ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। যারা এসব ঘটিয়েছে তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ সংবাদ

আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প আসছে বাংলাদেশের পর্দায়
শরীয়তপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ৫
মুক্তি পেল ইমতু রাতিশ ও অলংকার এর 'বরিশাইল্লা সং'
জরুরি সাংগঠনিক নির্দেশনা দিলো ছাত্রলীগ
সাহিত্য চর্চার আড়ালে শিশু পর্নোগ্রাফি বানাতেন টিপু কিবরিয়া
সাজেকে শ্রমিকবাহী ট্রাক খাদে পড়ে নিহত ৬
ধাওয়া খেয়ে গরু ও গাড়ি রেখে পালালো চোর, গাড়িতে আগুন দিল জনতা
আর্জেন্টাইন ফুটবলার কার্লোস তেভেজ হাসপাতালে ভর্তি
সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এফডিসিতে মানববন্ধন
রাজবাড়ীতে হিটস্ট্রোকে স্কু‌লশিক্ষকের মৃত্যু
প্রসূতির পেটে গজ ও ফুল রেখে সেলাইয়ের অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন
তাপদাহ কমে গেলে লোডশেডিং থাকবে না: বিদ্যুৎ সচিব
ইন্টারনেট ছাড়াই হোয়াটসঅ্যাপে ছবি-ভিডিও পাঠাবেন যেভাবে
ইতিহাস গড়লেন বাংলাদেশি নারী বক্সার জিন্নাত ফেরদৌস
নিজে না মেরেও সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চাইলেন রিয়াজ
নারী কর্মীদের বোরকা ও নেকাব পরা নিষিদ্ধ করল চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল
ব্যাংককে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা
কালশী উড়ালসেতুর নাম বদলে হলো শেখ তামিম মহাসড়ক
ক্যান্সারে না ফেরার দেশে পেপার রাইম ব্যান্ডের সাদ