ফেরেশতা এলেও কয়েক মাসে এ দেশকে ঠিক করতে পারবে না: সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা

বক্তব্য রাখছেন অন্তর্বর্তী সরকারের সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকারের সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, "বাংলাদেশ একটি দরিদ্র দেশ নয়, বরং এটি একটি দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনায় ডুবে থাকা দেশ। এই অবস্থায় ফেরেশতা এলেও কয়েক মাসে এই দেশকে ঠিক করা সম্ভব নয়।"
শনিবার (৩ মে) রাজধানীতে অনুষ্ঠিত "পিএফএস পলিউশন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ ইন বাংলাদেশ" শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পরিবেশবাদী সংগঠন ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশ।
শারমীন মুরশিদ বলেন, “আমাদের দেশে অগাধ সম্পদ রয়েছে। কিন্তু এই সম্পদকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো এখন বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা একটি ধ্বংসাত্মক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে চলছি। এটি কোনো একদিনে হয়নি, ৫৪ বছর ধরে এই ধারায় চলছি।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই আন্দোলনে ৩০ হাজার মানুষ পঙ্গু হয়েছে, ১৫০০ জন মারা গেছে। এগুলো ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যাবে না। তাই আমি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে অনুরোধ জানাই— নিজেদের সংস্কার করুন, তারপর আমাদের পাশে এসে দাঁড়ান।”
গার্মেন্টস খাতের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “যারা শ্রমিককে বাড়তি ৫ টাকা দিতে চায় না, তারা নদী রক্ষা করবে— এমনটি ভাবা ভুল। আমাদের অর্থনৈতিক চিন্তায় এক ধরণের নিষ্ঠুরতা গেঁথে গেছে।”
বর্তমান সরকারকে ‘সঠিক নীতি প্রণয়নের জন্য একটি সুযোগময় সময়’ হিসেবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, “এই সময়কে কাজে লাগাতে হবে। আমরা দরজা খোলা রেখেছি। পরিবেশ ধ্বংস হলে মানুষের সুরক্ষাও আর সম্ভব নয়। আমরা এখন এক পলিউটেড (দূষিত) অবস্থার মধ্যে রয়েছি। রাজনৈতিক দলগুলো একসঙ্গে কাজ না করলে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হবে।”
তিনি পানিদূষণের ভয়াবহতাও তুলে ধরে বলেন, “আজও আমাদের পানিতে আর্সেনিক পাওয়া যায়। আমরা এখনো ভূ-পৃষ্ঠের মিষ্টি পানি রক্ষা করতে পারিনি। এই পানিকে ইন্ডাস্ট্রি ধ্বংস করছে, আর স্থানীয় জনগণ কিছুই বলার সাহস পাচ্ছে না— এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
উপদেষ্টার মতে, পরিবেশ আন্দোলনকারীদের এখনই সক্রিয় হতে হবে। কারণ, সময় সীমিত এবং পরিস্থিতি গুরুতর। “চলুন সবাই মিলে নদী রক্ষা করি, দূষণ থেকে আমাদের পানি ও মানুষকে বাঁচাই,”— বলেন তিনি।
