শনিবার, ৭ জুন ২০২৫ | ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
Dhaka Prokash

শিক্ষকদের নিরাপত্তা কে দেবে

নিজ জীবনের সরাসরি শিক্ষকতা, প্রশিক্ষক ও শিক্ষা প্রশাসক হিসেবে অর্জিত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়মিত পরিদর্শনের উপর ভিত্তি করে বিষয়গুলো সংশ্লিষ্টদের জানানোর নিমিত্তে এবং নিজের আত্মতৃপ্তির জন্য পত্রিকার পাতায় আশ্রয় নিই। কিছু পত্রিকা গুরুত্ব সহকারে সেগুলো ছেপেও দেয়। কিছু শিক্ষক এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা সেগুলো পড়েন, তাদের প্রতিক্রিয়া জানান। আবার কেউ কেউ উল্টো কথা লেখেন, বিভিন্ন মাধ্যমে জানান। এসব দিয়ে কি হবে, আসল কথা লেখেন। শিক্ষা জাতীয়করণ কবে হবে সেটা লেখেন। শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির কথা লেখেন। যদিও আমার বহু লেখায় শিক্ষা জাতীয়করণের কথা, যুক্তিসহ তুলে ধরেছি। শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি কেন দরকার তা লিখেছি। কিন্তু সব লেখায় তো আর একই কথা লেখা যায়না। সব লেখার টপিক এবং বিষয়ও এক নয়। শিক্ষকদের অবস্থার উন্নয়ন আমরা সবাই চাই। আবার শিক্ষকদের নিবেদিতপ্রাণ হওয়া, শ্রেণিকক্ষে ও শ্রেণিকক্ষের বাইরে একজন শিক্ষককে সে ধরনের ভুমিকায়ও সমাজ দেখতে চায়।

তবে ইদানিং সব ঘটনাকে ছাপিয়ে একটি বিষয় প্রতিদিনই দেখছি দেশের কোথাও না কোথাও শিক্ষকগণ কমিটির সদস্যদের হাতে, কিংবা রাজনৈতিক কোনো নেতার হাতে, তথাকথিত ছাত্রনেতাদের হাতে, অভিভাবকের হাতে এমনকি শিক্ষার্থীদের হাতে নিগৃহীত হচ্ছেন, লাঞ্ছিত হচ্ছেন, অপমানিত হচ্ছেন, শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছেন। এটি কেমন বিষয়? একজন শিক্ষক তা সে যে কোন পর্যায়েরই হোক, যে কোনো বিষয়েরই হোক তিনি শিক্ষকই। তার গায়ে মানুষ কীভাবে হাত তোলে? আর সমাজ ও রাষ্ট্র সেটিকে নিয়ে রাজনীতি করে, কালক্ষেপন করে? আমাদের দেশের শিক্ষকদের আমরা অতিশয় সম্মান প্রদর্শন করে আসছি যুগ যুগ ধরে, এটি আমাদের কালচার। পশ্চিমা দুনিয়ায় শিক্ষকদের আমাদের মতো সম্মান প্রদর্শন করে না; কিন্তু শিক্ষকের গায়ে হাত দেওয়া তারা কল্পনাও করতে পারেনা। তাহলে সমাজ কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছে?

আমরা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে শেখাই কীভাবে তারা একটি শ্রেণিকক্ষকে, বিদ্যালয়ের পরিবেশকে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপাদ রাখবেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। একটি শ্রেণিকক্ষকে কীভাবে সব ধরনের শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ করা যায়, সব শিক্ষার্থী যাতে নির্ভয়ে, কোন ধরনের ইতস্তত না করে শ্রেণিকার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারে সে ধরনের একটি পরিবেশ একজন শিক্ষককে তৈরি করতে হয়। এ ধরনের পরিবেশ শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে সাহস যোগাব, কোনো কিছু না বুঝলে সত্যিকারভাবে বুঝার জন্য শিক্ষকের শরণাপন্ন হবে, শিক্ষার্থীরা ক্লাস ফাঁকি দিবে না, ক্লাসে আসার জন্য উদগ্রীব থাকবে, শিক্ষা হবে আনন্দময়। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের আনন্দ দেখে নিজের দুঃখের কথা ভুলে যাবেন। শিক্ষার্থীদের সাথে যে বন্ধুত্বপূর্ণ, হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক এবং বিশ্বাসের সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে সেটি শ্রেণিকার্যক্রম থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।

শিক্ষার্থীদের বুঝাতে হবে যে, আপনি শ্রেণিকক্ষে কিংবা বিদ্যালয়ে আছেন শিক্ষার্থীদের জন্য, তাদের সহায়তা করার জন্য, তাদের কথা শোনার জন্য এবং তাদের গল্প জানার জন্য। তাদেরকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনতে হবে, জানতে হবে। তাদের পছন্দ অপছন্দ জানতে হবে, কিসে তারা মজা পা, কিসে তারা ভয় পায় এগুলো জানা এবং সে অনুযায়ী কাজ করা তাদের একটি নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করে। শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে হবে এবং শ্রেণিকক্ষেই প্র্যাকটিস করাতে হবে যে, একে-অপরকে কীভাবে সম্মান করতে হয়। একজন শিক্ষার্থী যদি কোনো ভুল উত্তরও দেয় তাহলে কেউ যাতে তাকে হাসি ঠাট্টার পাত্র না বানায়, তাকে ক্লাসে লজ্জা না দেয়। বুঝাতে হবে যে, আমরা সবাই এখানে একে-অপরের কাছ থেকে শেখার জন্য এসেছি। আমরা ভুল করে করে শিখি। সহনশীলতার অভ্যাস শ্রেণিকক্ষ থেকেই অনুশীলন করাতে হবে। তাহলে দুর্বল ছেলেটি, পিছিয়ে পাড় শিক্ষার্থী, লাজুক শিক্ষার্থীও শ্রেণিকক্ষকে নিরাপদ মনে করবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতি যতটা হাসিখুশি থাকব তাদের কাছ থেকে তার চেয়েও বেশি হাসিখুশি প্রফুল্ল মন আমরা দেখতে পাব। শিক্ষাদান প্রক্রিয়া সব সময়ই অত্যন্ত সিরিয়াসলি নেওয়া ঠিক হবেনা। যখন টেনসন কাজ করে, পরীক্ষার আগে, হঠাৎ কোন ঘটনা ঘটে গেলে হাসির অভ্যাসটা করতে হবে তাহলে পরিবেশ হালকা হয় যা শিখন-শেখানো পরিবেশ ফিরিয়ে আনে। কিছু কিছু বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নিকট কারাগারের মতো মনে হয়।

শিক্ষার্থীরা সেখানে কথা বলতে পারেনা, আনন্দ করতে পারেনা। কঠিন শাসন, পান থেকে চুন খসলে ধমক, তিরস্কার, লজ্জা দেওয়া ও শারীরিক শাস্তি প্রদান করা হয়। আবার কিছু কিছু বিদ্যালয় আছে যেখানে নিয়ম-কানুনের কোন বালাই নেই। শিক্ষকদের কথা শিক্ষার্থীরা শোনে না, শিক্ষার্থীরা যা ইচ্ছে, তাই করে। শিক্ষকদের কোনো ধরনের সম্মান প্রদর্শন করে না। এ দুটো পরিস্থিতিই কিন্তু চরম। এই চরম অবস্থা যেসব বিদ্যালয়ে বিরাজ করে সেখানে পড়াশোনা হয় না, শিখণ-শেখানোর পরিবেশ বিরাজ করে না।

উপরোক্ত বিষয়গুলো আমরা এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে আলোচনা করি; কিন্তু শিক্ষক নিজেই যদি শ্রেণিকক্ষে, বিদ্যালয়ে, সমাজে ও রাষ্ট্রে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন তাহলে তিনি কীভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করবেন। কথাটি বার বার মনে আসছে। বিদ্যালয় তো একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। রাষ্ট্রব্যবস্থায় শিক্ষকের পেশাগত মর্যাদা, আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা শিক্ষাব্যবস্থায় মেধাবীদের অংশগ্রহণের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে। আমাদের শিক্ষক সমাজের কর্মপরিবেশ এবং কর্মসন্তষ্টির মাত্রার উপর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় আমাদের শিক্ষকরা দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তটস্থ থাকেন শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তাহীনতায়, যা তাদের কর্মস্পৃহাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে।

অতি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়, কি হবে ভবিষ্যত প্রজন্মের? কীভাবে ভবিষ্যত প্রজন্ম সভ্যতাকে, জাতিকে টিকিয়ে রাখবে যেখানে মানুষ গড়ার কারিগরদের পদে পদে অপদস্থ হতে হতে হচ্ছে সমাজের বখাটেদের কাছে? ১৩ এপ্রিল গাইবান্ধা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয় জোহরের নামাজ শেষে কলেজ মসজিদ থেকে বের হয়ে কয়েকজন যুবককে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে উচ্চ শব্দে হর্ন বাজিয়ে বেপরোয়াভাবে মোটরবাইক চালানোরত অবস্থায় দেখতে পান। ফলে স্বীয় দায়িত্ববোধ থেকেই অধ্যক্ষ মহোদয় যুবকদের থামিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে এভাবে বাইক চালাতে নিষেধ করেন। এতেই যুবকরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে অধ্যক্ষ মহোদয়কে এলোপাথাড়ি আঘাত করতে শুরু করে। তারা কাদের সন্তান? বুঝতে কষ্ট হয় না। তারা জানে যে, তাদের কিছু হবে না। তারা এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটিয়েছে। একজন শিক্ষক তো শুধু ক্যাম্পাসের নয়, সমাজের নেতা, সমাজের অভিভাবক। তিনি সমাজে যে কোনো ধরনের অঘটন ঘটতে দেখলে বাঁধা দিবেন, এটিই তার ধর্ম, এটিই তার কর্ম, এজন্যই তিনি শিক্ষক। কিন্তু কি হয়েছে সমাজে?

৩০ মার্চ শরীয়তপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহামান সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষাকেন্দ্রে বহি:পরীক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য আগত অন্য কলেজের কয়েকজন শিক্ষক ও সাবেক বিভাগীয় প্রধানের সম্মানে বিভাগের পক্ষ থেকে ছোট পরিসরে খাবারের আয়োজন করা হয়। ওই খাবার অনুষ্ঠানে দাওয়াত না দেওয়ায়, একটি ছাত্র সংগঠনের কলেজ শাখার সভাপতি বিক্ষুদ্ধ হয়ে ২০-২৫ জন কর্মীসহ বাংলা বিভাগে উপস্থিত হয়ে শিক্ষকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয় এবং এক পর্যায়ে বাংলা বিভাগের একজন প্রভাষককে লাথি ও কিল-ঘুষি মারতে শুরু করে। পুলিশ মামলা নেয়নি। পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের সুযোগ না দেওয়ার অপরাধে হেনস্তা করা হয়েছে বহু শিক্ষককে। এসব ঘটনায় ছুরিকাঘাতও করেছে শিক্ষকদের। এসব ক্ষেত্রে মামলাও করা হয়নি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক প্রভাবের কাছে হার মেনেছে শিক্ষকের মর্যাদা রক্ষা এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকরণে বিষয়টি। এসব কারনে নিরাপত্তাহীনতায় ইতোমধ্যেই শিক্ষক সমাজের আত্মসম্মান ও দায়িত্ববোধে চিড় ধরে গেছে।

হৃদয় মন্ডল নামে আর একজন শিক্ষক ১৯দিন কারাগারে থাকার পর ১০ এপ্রিল মুক্তি পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছিল। স্পর্শকাতর বিষয়, যাতে সবাইকে দ্রুত ক্ষেপানো যায়। তিনি আসলে কি করেছিলেন সেটি ভাবার আগেই যেহেতু ধর্ম নিয়ে কথা তাই সবাই ক্ষেপে গিয়ে তাকে আক্রমণ করেছে। তার উপর আক্রমণ মানে গোটা শিক্ষক সমাজের উপর আক্রমণ। একজন শিক্ষক যে মতাদর্শেরই হোক না কেন, যে কোনো ধর্মেরই হোক না কেন, তিনি কখনোই অন্য ধর্মের অবমাননা করবেন না। ঘটনা ঘটার পরপরই আমরা বুঝতে পেরেছি; কিন্তু যারা পানি ঘোলাটে করে মাছ শিকার করতে চায় সমাজ কিংবা রাষ্ট্র তাদের কথা চিন্তা করে না, ব্যবস্থা নেয় না, লাগামহীনভাবে ঘটনাগুলোর ঘটতে দেয়। হৃদয় মণ্ডল তার উপর আক্রমণ সম্পর্কে বলেছেন, ‘কতজন মানুষ সেখানে হামলা করেছিল, সেটা আমি দেখিনি, রুমের ভেতরে ছিলাম। তাদের চিৎকারের শব্দ শুনছিলাম। পরবর্তীতে পুলিশ এসে আমাকে নিয়ে যায়। পুলিশ যেভাবে আমাকে জড়িয়ে ধরে সেখানে থেকে বের করেছে, সেটা না করলে আমার মুত্যু নিশ্চিত ছিল।রুম থেকে বের হয়ে দেখতে পাই বড় বড় লাঠি নিয়েও অনেকে সেখানে ছিল। পুলিশ আমাকে গাড়িতে তুলে যখন নিয়ে যাচিছল তখনো মানুষ আমার মারার চেষ্টা করছিল, ইট ছুঁড়ছিল। অনেক গাড়িতে ওঠারও চেষ্টা করে। পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। তারা প্রায় আধা কিলোমিটার পর্যন্ত আমকে তাড়া করে।’ এখানে পুলিশ একটি প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু পুলিশ তো সর্বত্র ও সবসময় শিক্ষকদের এভাবে নিরাপত্তা দিতে পারবে না। সমাজ ও রাষ্ট্রকেই কাজটি করতে হবে। কারাগারের ছোট ফটক দিয়ে যখন হৃদয় মণ্ডল বের হলেন তার মাথা নিচু করে, সেটি কিন্তু গোটা শিক্ষক সমাজেরই মাথা নিচু হওয়ার ইঙ্গিত বা প্রতীক। এটি কোন সমাজে হতে দেওয়া ঠিক নয়।

একটি জাতীয় দৈনিকের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন থেকে যতটুকা জানা যায় তা হচ্ছে, স্কুলের টেস্ট পরীক্ষায় জোর করে নম্বর বাড়িয়ে না দেওয়া, প্রাইভেট টিউশন নিয়ে অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে বিরোধ, প্রাইভেট টিউশনের অন্য শিক্ষকেরা স্কুলে পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের নানা অনৈতিক সুবিধা দেন যা হৃদয় মন্ডল করেন না। সেই সঙ্গে সাম্প্রতিককালে এলাকায় ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা তৈরি এর পেছনে কাজ করেছে। মূলত স্থানীয় ক্ষমতাসীন রাজনীতি, ধর্মীয় প্রভাব, বিদ্যালয়ের আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে ঘুরেফিরে একটি চক্র জড়িত। কিছু শ্ক্ষিক, কর্মচারী, ম্যানেজিং কমিটির কিছু সদস্য ও স্থানীয় প্রভাবশালী এর সঙ্গে জড়িত। তারাই ইন্ধন যুগিয়েছে এ ঘটনায়। ক’দিন আগে ফেসবুকে দেখলাম একজন মাদ্রাসা শিক্ষককে হাতীর মতো একব্যক্তি উন্মুক্ত মাঠে সবার সামনে বেদন প্রহার করছে। এ কি সমাজ?সবাই আবার সেটি দেখছে? কেউ কিছু বলছেনা, শুধুমাত্র একজন দুর্বলভাবে ফেরানোর চেষ্টা করছিলেন কিন্তু দৈত্যের মতো মানুষটিকে ফেরাতে পারছেন না। বুঝলাম এলকার মাস্তান কিংবা তথাকথিত লিডার হবেন, তা না হলে এতমানুষের সামনে দাড়িুযুব্বা পড়া একজন মানুষকে এভাবে অন্য কেউ হেনন্ত করবে না।

আমাদের সংসদে অনেক কিছুই আলোচনা হয়। আমি অনুরোধ করব একটি আইন যাতে পাস করা হয় যে, কোন ধরনের শিক্ষকের গাঁয়ে কেউ হাত দিতে পারবেনা। কেউ শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ধরনের আইন হাতে তুলে নিতে পারবেনা , তা সে যতই ক্ষমতাবান হোন না কেন।যদি কেউ করার চেষ্টাও করে সেটি হবে রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল, মানবতা ভুলুন্ঠিত করার সামিল। সর্বাগ্রে এ ধরনের অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে সমাজে যে পচন ধরেছে এ সমাজকে টিকিয়ে রাখা যাবেনা। আমাদের কোথাও না কোথাও থেকে শুরু করতে হবে। এখান থেকেই শুরু হোক। এটি নিয়ে কোনো ধরনের রাজনীতি যাতে কেউ না করে সেজন্য সবাইকে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।

এসএ/

Header Ad
Header Ad

দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত আরও ২৬ জন, মোট মৃত্যু ২৩

ছবি: সংগৃহীত

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৬ জন রোগী। তবে আশার কথা, এ সময়ে মশাবাহিত এই রোগে কারও মৃত্যু হয়নি।

শনিবার (৭ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় চারজন, দক্ষিণ সিটি কর্পোরশনে সাতজন এবং ঢাকা বিভাগের অন্যান্য এলাকায় আরও ১০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চট্টগ্রাম বিভাগে তিনজন ও ময়মনসিংহ বিভাগে দুইজন নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৭ জন। এ নিয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত মোট ৪ হাজার ৪৮৬ জন ডেঙ্গু রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৪ হাজার ৯৩০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৫৯ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৫ শতাংশ নারী। এ বছর ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের পুরো বছরজুড়ে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন, যাদের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৫৭৫ জন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই সচেতন না হলে বর্ষা মৌসুমে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। তাই সময়মতো মশার প্রজননস্থল ধ্বংস, বাসা-বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখা এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

Header Ad
Header Ad

রাজধানীতে কোরবানির মাংস কাটতে গিয়ে আহত ৭৭ জন

ছবি: সংগৃহীত

ঈদুল আজহার কোরবানি কার্যক্রম চলাকালে রাজধানী ঢাকায় অসাবধানতায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে অন্তত ৭৭ জন আহত হয়েছেন। এসব আহত ব্যক্তি ঈদের দিন শনিবার সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন।

ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মুশতাক আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঈদের দিন কোরবানি দিতে গিয়ে ঢাকাসহ আশপাশের এলাকা থেকে ধারালো অস্ত্র ব্যবহারে অসতর্কতার কারণে অন্তত ৭৭ জন আহত হয়ে হাসপাতালে আসেন। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের ভর্তি করা হয়েছে, আর বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়।

প্রতিবছর ঈদুল আজহার সময় পশু জবাই ও মাংস কাটার সময় অসতর্কতা, অভিজ্ঞতার অভাব এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা না মেনেই অনেকেই ছুরি, চাপাতি বা দা ব্যবহার করে থাকেন। এতে দুর্ঘটনা ঘটে এবং অনেকেই ছোট-বড় আহত হন।

চিকিৎসকরা বলছেন, কোরবানি দিতে গিয়ে ধারালো অস্ত্র ব্যবহারের সময় বাড়তি সতর্কতা জরুরি। অভিজ্ঞ কারিগরের সহায়তা নেওয়া এবং ছোটদের দূরে রাখা উচিত। একইসঙ্গে প্রয়োজন হলে গ্লাভস ও সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার করলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে।

চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ ও জনসচেতন মহলের পরামর্শ, ঈদের মতো আনন্দঘন সময় যেন দুর্ঘটনায় মলিন না হয়, সেজন্য সবাইকে সতর্কতার সঙ্গে কোরবানি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

Header Ad
Header Ad

ঈদ মৌসুমে টানা পাঁচ দিনের বৃষ্টির পূর্বাভাস, সতর্ক থাকতে বলছে আবহাওয়া অফিস

ছবি: সংগৃহীত

ঈদুল আজহার আগমনী মুহূর্তে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে টানা পাঁচ দিন বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ৭ জুন শনিবার সকালে দেওয়া এক পূর্বাভাসে সংস্থাটি জানিয়েছে, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়া অফিস জানায়, শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় উল্লিখিত বিভাগের দু-একটি জায়গায় এই আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে। অন্যদিকে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকলেও আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। এই সময়ে সারা দেশের দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

রবিবার, সোমবার ও মঙ্গলবারেও আবহাওয়ার একই ধারা অব্যাহত থাকতে পারে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে এসময়ে বিক্ষিপ্তভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে অন্যান্য বিভাগে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকলেও তেমন বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।

মঙ্গলবারের পরের দিন অর্থাৎ বুধবারের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু এলাকায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের অন্যত্র তখনও আবহাওয়া শুষ্কই থাকবে এবং তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

ঈদের সময় মানুষ সাধারণত ঘরমুখো হয় এবং খোলা আকাশের নিচে কোরবানি কার্যক্রম চলে থাকে। তাই এমন বৃষ্টির পূর্বাভাস ঈদ উদযাপনে কিছুটা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে জনসাধারণকে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

বৃষ্টির এই ধারাবাহিকতা ঈদের আনন্দে বিঘ্ন সৃষ্টি করলেও, খরা ও দাবদাহের পর দেশের কৃষি ও পরিবেশের জন্য এটি কিছুটা স্বস্তির বার্তাও বয়ে আনছে বলে মত দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত আরও ২৬ জন, মোট মৃত্যু ২৩
রাজধানীতে কোরবানির মাংস কাটতে গিয়ে আহত ৭৭ জন
ঈদ মৌসুমে টানা পাঁচ দিনের বৃষ্টির পূর্বাভাস, সতর্ক থাকতে বলছে আবহাওয়া অফিস
ঈদের দিন গাজায় ৪ ইসরায়েলি সেনা নিহত
পাকিস্তানের নেতৃত্ব খুবই শক্তিশালী : ট্রাম্প
ঢাকায় দেড় ঘণ্টায় ২১ মিলিমিটার বৃষ্টি, ঈদের আনন্দে ব্যাঘাত নেই
কোরবানির বর্জ্য দ্রুত অপসারণ কার্যক্রম পরিদর্শনে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা
নগরজুড়ে কোরবানির পশু জবাই, পরিচ্ছন্নতায় প্রস্তুত ২০ হাজারের বেশি কর্মী
ঈদের দিন বন্ধ মেট্রোরেল, কাল থেকে ফের চলবে
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সস্ত্রীক সাক্ষাৎ
কাশ্মীর হামলায় ভারতকে সমর্থন চীন-ইরানের, পাকিস্তানের ওপর বাড়ছে কূটনৈতিক চাপ
দেশকে গণতান্ত্রিক ধারা থেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে: ইশরাক হোসেন
লা লিগার সেরা রাফিনিয়া, অনূর্ধ্ব-২৩ বিভাগে ইয়ামাল
ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে জাতির জন্য ভালো হবে: মির্জা ফখরুল
ঈদের দিনেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা, ঝরল ৪২ প্রাণ
ঈদের ছুটিতে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ভিড়, খালি নেই হোটেল-রিসোর্ট
ইলন মাস্কের সঙ্গে ঝগড়া, নিজের টেসলা গাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের
বায়তুল মোকাররমে ঈদুল আজহার ৫ জামাত অনুষ্ঠিত
ঈদগাহে যাওয়ার পথে বাসচাপায় প্রাণ গেল বাবা-ছেলের
শাহবাগে ঈদের নামাজ পড়লেন হামজা-জামাল ও ফাহমেদুলরা