শনিবার, ২৪ মে ২০২৫ | ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
Dhaka Prokash

মানুষ বড় তার প্রাণে: কাজী রাফি

সমকালীন বাংলা কথা সাহিত্যের অনন্য প্রতিভাধর সাহিত্যিক কাজী রাফি। অসাধারণ ও সুনিপুণ লিখন শৈলীর ছোঁয়ায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের বাংলাভাষী পাঠক ও লেখক পরিমণ্ডলকে মোহিত করেছেন তিনি l তার লেখায় ফুটে উঠেছে দেশ ও বিশ্বের হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও বর্তমানের গভীর জীবনবোধ সম্পন্ন স্বয়ংসম্পূর্ন নির্দেশনাl লেখা নির্ধারণে তিনি প্রাকৃতিক নৈসর্গর সবুজ মায়াজাল আবৃতবৈচিত্র্যময় রূপ ও পাশাপাশি মানবজীবন কাঠামো ও মানব মনস্তত্বের সূক্ষতম দিক সুন্দর ধরেছেন l বিভিন্ন দেশ পরিভ্রমণ করেছেন l ভৌগোলিক বৈচিত্রময়তার অভিজ্ঞতালব্ধ মানব সমাজের বিকাশের অশ্রুত যে স্তর তার লেখায় ফুটে উঠেছে তা সৃষ্টি করেছে বাস্তবতাসমৃদ্ধ এক ঐন্দ্রজালিক আবহ l

প্রতিভাধর এই সাহিত্যিকের সাধনার উজ্জ্বল ভিত গড়ে উঠে কিশোর বেলায় বিশ্বসাহিত্যে, বাংলা সাহিত্য ও বিশ্বসাহিত্যের বিভিন্ন চরিত্রে কাল্পনিক সামঞ্জস্য খুঁজে নেবার প্রয়াসে l একটি বিশেষ আলাপচারিতায় তিনি আলোকপাত করেছেন তার সাহিত্য সাধনার উল্লেখযোগ্য দিক। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ফারজানা নাজ শম্পা। নিচে তার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো। 

ঢাকাপ্রকাশ: সমকালীন বাংলা সাহিত্যে আপনার অনন্য অবদান ও সাহিত্য সাধনার প্রতি আপনার আগ্রহ সৃষ্টির প্রথম ও প্রধান কারণ জানতে চাই। কোন বয়সে আপনি লেখা চর্চা শুরু করেন?

কাজী রাফি: আমার কাজের প্রতি আগ্রহের জন্য আপনাকে ও ঢাকাপ্রকাশ পত্রিকাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। ছোটবেলায় আমার বই পড়ার নেশা ছিল। সপ্তম শ্রেণিতে থাকতেই শেক্সপিয়ারের গল্পসমগ্র, পথের পাঁচালি, আরণ্যক, অষ্টম শ্রেণিতে হোমারের ইলিয়াড, ভিক্টোর হুগোর লা মিজারেবল এসব বই পড়ে হলো কি, আমি আমার বাস্তব জগতে কল্পনার সেই সব চরিত্রকে পেতে চাইতাম। আমার সাথে যারা বাস করে, কথা বলে, চলাফেরা করে গল্পের মানুষদের মতো এরা হয় না কেন? আমি কি আমার চারপাশের এই মানুষগুলোর সাথে বাস করতে চাই? আমি তো খুব প্রাণবান মানুষের সাথে জীবন কাটাতে চাই। কোথায় তারা? এই প্রশ্ন আমাকে খুব তাড়িত করত। আমি মনে মনে নিজ থেকেই কল্পনার চরিত্র বানিয়ে তাদের সাথে কথা বলতাম। আনমনে (এখনো উপন্যাস/গল্পের চরিত্রের সাথে ফিসফিস করে কথা বলার বদ-অভ্যাস আমার আছে)। আমি আসলে বাস করতে চাইতাম এমন এক জগতে সত্যিকার অর্থে যে জগতের বাসিন্দা হতে চাই। সে ধরনের জগতকে তৈরির একটা তাগাদা মনে হয় কৈশোরেই হয়েছিল। সুতরাং কল্পনার লালনটুকু এভাবেই আমার কৈশোর থেকে বড় হয়ে উঠেছিল। আমিও এমন জগত এবং চরিত্রের সমারোহ তৈরি করতে চেয়েছি যাদের সাথে আমি এই জীবনের অর্থবহতা নিশ্চিত করতে পারি। সাহিত্য সাধনার পথে আসার এ এক গূঢ় কারণ বটে। ছোটবেলায় ডায়েরি, কবিতা এসব লিখে লুকিয়ে রাখতাম যেন কেউ না দেখে এবং যথারীতি তা হারিয়েও ফেলতাম। বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি থেকে বাবা-মা’কে লম্বা চিঠি লিখতাম। এরপর আমার স্ত্রী’র সাথে বাগদানের পর তাকে বিশাল সব চিঠি লিখতাম। সেই-ই আমার লেখার শুরু বলা যায়।

ঢাকাপ্রকাশ: বাংলাদেশ ও বৈশ্বিক পর্যায়ের কোন সুনির্দিষ্ট সাহিত্য আপনাকে অনুপ্রাণিত করে?

কাজী রাফি: যে কোনো চিন্তাশীল লেখা (বিশেষত গল্প-উপন্যাসই) আমাকে অনুপ্রাণিত করে। যে সাহিত্য জীবন এবং জগত নিয়ে সংকেতবাহী এবং যে গল্পের চরিত্রগুলি খুবই জীবন্ত, চিরকালীন বলে আমার মনে হয়- সেগুলোই আমাকে বেশি প্রাণিত করে।
 
ঢাকাপ্রকাশ: ‘সুসাহিত্যের মাধ্যমে আলোকিত মনন সমৃদ্ধ মানব সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব’- এই মতের সঙ্গে আপনি কি একমত? কোন সুনিদির্ষ্ট আদর্শ নিয়ে আপনার জীবন দর্শন পরিচালিত হয়- সেই সম্পর্কে জানতে চাই। আপনার দৃষ্টিতে সুলেখক হওয়ার পূর্বশর্ত কী কী?

কাজী রাফি: মানুষ হলো গল্প বলা স্পেসিস। আমি বলি, মানব সভ্যতা এতদূর উৎকর্ষিত হয়েছে- গল্প বলার তাগাদা থেকেই। কথা বলতে পারার আগেই মানুষ আসলে ইশারা ইঙ্গিতে গল্প বলতে চেয়েছে যে, বনের পাশে, ঠিক খরস্রোতা নদীর ধারে একটাবাঘ এসেছে (সুতরাং তোমরা সাবধান হও)। নিজেকে প্রকাশ করার এবং অন্যের অনুভবকে দোলা দেবার এক অভিনব সত্তা নিয়েই মানুষের যেন জন্ম হয়েছে। গল্প বলার আর্তি থেকেই তারা ভাষা এবং বলা আবিষ্কার করেছে। গল্পের এই যে উত্তেজনা তা সকল মানব-হৃদয়কে শান্ত করে তোলে। একটা বানানো এবং মিথ্যা গল্পও কী অদ্ভুতভাবে সত্যঘটনার প্রতিবেদন, পত্রিকার অনুসন্ধানী রিপোর্টের চেয়ে মহাকালের কাছে মহাসত্য হয়ে ওঠে! গল্প একই সাথে ভালো চরিত্রের প্রতি ভালোবাসা এবং খল চরিত্রের প্রতি ঘৃণার যে মিথস্ক্রিয়া পাঠক হৃদয়ে সৃষ্টি করে তা তাকে একজন আলোকিত এবং সংবেদনশীল মানুষে রূপান্তর করে। মানুষ অন্যের স্থানে নিজেকে প্রতিস্থাপন করতে জানে বলে একই সাথে হয়ে ওঠে আত্মসংযমী এবং আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন একজন মানুষ। আমরা মুসাফিরমাত্র। এই বোধ যার ভেতরে জন্ম নেয়, সে তো মৃত্যুকে ভয় না বরং অর্থমূল্যের চেয়ে জীবনে অর্থবহতা খুঁজে ফেরে। প্রাণভরে স্বল্পসময়ের এই জীবনটাকে গভীরভাবে ভালবেসে মানুষকেই আপন করে বুকে-মাথায় রাখে। সুতরাং সুসাহিত্যের ভূমিকা এখানেই গুরুত্ববহ।

আমাকে দিয়ে যেন অন্য কারো ক্ষতি না হয় এমনকি আমার কথা এবং আচরণে কেউ যেন ব্যথিত না হয় কখনোই -এটাই আমার শিক্ষক বাবা বলতেন। আমি এই আদর্শ এবং শিক্ষাটুকুই মেনে চলার চেষ্টা করি সবসময়।

সুলেখক হওয়ার প্রাথমিক শর্ত হলো মানুষের জীবনের আর্তির প্রতি সংবেদনশীল এবং ভালোবাসা এবং ভারসাম্যপূর্ণ হৃদয়ের একজন মানুষ হয়ে ওঠা। পদ, ক্ষমতা অথবা শ্রেণিতে নয় মানুষ বড় তার প্রাণে- এই জন্মবিশ্বাসকে আজীবন লালন করা। ভেতরের আত্মিক শক্তি থেকে তার কাছে ঝরণাধারার কুলকুল ধ্বনি হয়ে এই শব্দছন্দ (আসলে গভীর জীবনবোধ) প্রবাহিত হয়। এটা কিছুটা স্নায়ুবিক বিধায় জন্মগত। তবু, সংবেদনশীল মানুষ হয়ে ওঠার চর্চাটুকু পরিবার থেকে গড়ে ওঠে যেখানে জীবনচর্চা বড় একটা ভূমিকা রাখে।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনার জন্মস্থান কোথায়? শৈশব ও কৌশোর এবং যৌবনের দিনগুলো ও শিক্ষাজীবন কোথায় কেটেছে? আমরা জেনেছি আপনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন- সেই নিয়মনিষ্ঠ জীবনে আপনি কীভাবে সাহিত্যচর্চা করেছেন?

কাজী রাফি: আমি জন্মেছি বগুড়ায়। আমার শৈশব-কৈশোরের ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত দিনগুলো কেটেছে গ্রামে। আমাদের গ্রামের বাড়িটা বেশ বিস্তৃত জায়গা নিয়ে। বাগান, কয়েকটা পুকুর-খাল মিলে ছড়ানো এই মায়ালোক, এর শীত-হেমন্ত, বর্ষা আর বসন্ত, গোধূলী-সাঁঝের আলো-আধাঁরি, রোদ্দুর-ছায়া আমার অন্তর্লোকে প্রভূত প্রভাব বিস্তার করে আছে। এই প্রকৃতি আমাকে শব্দ সম্ভারের ঝঙ্কার আর নিঃশব্দের ভাষা শিখিয়েছে।

সেনাবাহিনীতে একজন সামরিক অফিসার হিসেবে গড়ে ওঠাটা আমাকে শারীরিকভাবে যোগ্যতর করে তোলার পাশাপাশি সময়ানুবর্তিতার গুরুত্ব শিখিয়েছে। এ ছাড়াও চাকরির প্রয়োজনে বিভিন্ন পাহাড়, জনপদ আর জাতিসংঘ মিশনে আফ্রিকায় বসবাসের যে সুযোগ হয়েছে তা আমার দৃষ্টিভঙ্গিকে শাণিত করার পাশাপাশি আমাকে অনেক কিছু দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। দেখার বিস্তৃতি একজন লেখকের কল্পলোককে সমৃদ্ধ করে।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনার অবসর ও ব্যক্তিগত পারিবারিক জীবন নিয়ে জানতে চাই।

কাজী রাফি: লেখকের জন্য অবসর সময় পাওয়া কঠিন। লেখালেখির জন্য আমার প্রিয় সময় ভোর রাত। অবসর খুঁজি বইপড়ার জন্য। আর পরিবারের সাথে আড্ডার জন্য। অনুষ্ঠান ব্যতীত বাইরে আড্ডার অভ্যাস আমার নেই। ভ্রমণ আমার খুবই প্রিয়। সুযোগ পেলেই পরিবার নিয়ে বেড়িয়ে পড়ি। বছরে অন্তত একবার দেশের বাইরে বেড়ানোর আসার চেষ্টা করি।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনার সুদীর্ঘ সাহিত্যচর্চায় স্বীকৃতি এসেছে বিভিন্নভাবে- এ বিষয়ে কিছুটা আলোকপাত করুন।

কাজী রাফি: আমার প্রথম উপন্যাস ‘ধূসর স্বপ্নের সাসান্দ্রা’র জন্য পেয়েছিলাম এইচএসবিসি-কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার -২০১০ এবং এমএস ক্রিয়েশন অ্যাওয়ার্ড -২০১০। উপন্যাস ও ছোটগল্পে অসামান্য অবদানের জন্য পেয়েছি নির্ণয় স্বর্ণপদক। তবে এসব পুরস্কারের চেয়ে বড় স্বীকৃতি পেয়েছিলাম। তা হলো, হাসান আজিজুল হক স্যার ‘ত্রিমোহিনী’ উপন্যাস পড়ে কালি ও কলম পত্রিকায় লিখেছিলেন - ‘ঔপন্যাসিক হিসেবে বাংলাদেশে এবং বর্তমান বাংলা সাহিত্যে একজন জিনিয়াসের আবির্ভাব ঘটেছে। সেই জিনিয়াসের নাম কাজী রাফি। তার 'ত্রিমোহিনী' এক মহাকাব্যিক উপন্যাস।  …কাজী রাফির সৃষ্টিতে, তার লেখনীতে, তার গল্প-উপন্যাসে মানুষের এই অফুরান গল্প তাদের প্রেম-ভালোবাসা হয়ে, তাদের স্বদেশভূমি হয়ে, তার স্বপ্ন-কল্পনার উপাখ্যান হয়ে একদিন ছড়িয়ে পড়বে পৃথিবীময় - এই প্রত্যাশা।'

ঢাকাপ্রকাশ: ত্রিমোহিনী' ও 'ধূসর স্বপ্নের সাসান্দ্রা' আপনার এই অসাধারণ উপন্যাস দুটির প্রেক্ষাপট বিষয়ে জানতে চাই।

কাজী রাফি: বাঙালির মহান ইতিহাস এবং ঐতিহ্য নিয়ে এ বাংলায় উপন্যাস প্রায় নেই বললেই চলে। পুন্ড্র-সভ্যতার ছায়া নিয়ে এবং এই সভ্যতার প্রভাব কীভাবে আমাদের মহান স্বাধীনতা-যুদ্ধ এবং ভাষা আন্দোলন পর্যন্ত বিস্তৃত তা নিয়েই ‘ত্রিমোহিনী’উপন্যাস।

সদ্য ব্রিটিশমুক্ত বাংলাদেশে একজন গল্প বলিয়ে হারিকেনের সলতে কমিয়ে তার গল্পের জাদুকরী প্রভাবে বুঁদ করে রেখেছে ত্রিমোহিনী বাসীকে। আর ঘরের সব আলো নিভিয়ে স্বাধীনতার পরবর্তী প্রজন্মের এক ঔপন্যাসিক গল্পের চেয়েও শব্দের মায়াজালবিস্তার করে চলছে একই সাথে দুই নারীর মননে। স্বাধীনতা-যুদ্ধপূর্ব এবং যুদ্ধ-পরবর্তী প্রস্তুতি হিসেবে একইসাথে তৈরি হচ্ছে দুইপ্রজন্মের দুই শক্তিশালী গল্প-স্রষ্টা যারা গল্পচ্ছলে মূলত মানবমননে তৈরি করে দৃশ্যকল্প।

এক ডজন কল্পিত চরিত্রের পাশাপাশি 'ত্রিমোহিনী উপন্যাসে আরও আছেন ফকির মজনু শাহ, রাণী ভবানী এবং ভাষাসৈনিকগণ। এই উপন্যাসে পুন্ড্রসভ্যতার পাশাপাশি আছেন গৌতম বুদ্ধ, সম্রাট অশোক,অষ্টম শতাব্দীর জয়াপীড় এবং কমলানাম্নী প্রাচীন এক নর্তকী চরিত্র। এক ডজন শক্তিশালী প্রধান চরিত্রের সাথে আরও অসংখ্য চরিত্র আর জটিল গল্পের বুনন আমাদের চিরচেনা জগতের মতোই এই উপন্যাসে বহমান। গভীরতম বোধের স্বচ্ছতম জলকণা থেকে কুড়িয়ে আনা শব্দসম্ভারে ধ্বনিত ত্রিমোহিনী শুধু এক উপন্যাস নয়, আমাদের জাতীসত্তার আবেগি চিহ্ন ধারণকারী এক শক্তিশালী দলিল।

ধূসর স্বপ্নের সাসান্দ্রা আমার প্রথম উপন্যাস। লিখেছিলাম আফ্রিকায়। একটা ত্রিভূজ প্রেমের কাহিনী, নরখাদক এলাকায় একটিরোমাঞ্চকর সামরিক অভিযানে অংশ নেওয়া বাংলাদেশি তরুণ অফিসার অথৈ এবং লাস্যময়ী ফরাসি তরুণী ক্যাপ্টেন এলমার প্রেমের পাশাপাশি জাতিসংঘ এবং বিশ্বের শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো কীভাবে তাদের সাম্রাজ্যের জাল বিছিয়ে আফ্রিকাকে শোষণ করছে তারই দলিল আমার এই উপন্যাসটি। সাড়ে তিনশ পৃষ্ঠার উপন্যাসটি আমি আট মাসেই লিখে শেষ করেছিলাম আফ্রিকাতেই।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনার বিবেচনায় আধুনিক মানবসভ্যতার শুদ্ধ ও পূর্ণাঙ্গরূপে বিকাশের জন্য কোন বিষয়টি সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ?

কাজী রাফি: মানুষ সংবেদনশীল এবং আত্মমর্যাদাশীল হয়ে উঠলেই মানবতা বিকশিত হবে। কেমন সংবেদনশীলতা? যা কিছু মানুষের মাঝে ভেদাভেদ সৃষ্টি করে তা পরিহার করা। যা কিছু মানুষকে ছোট-খাটো করে দেয়, সকল প্রাণ এবং মানবতা ওমানুষের আগামী দিনকে সংকটাপন্ন করে তুলতে পারে এমন পরিস্থিতিতে থেকে সাবধান হতে শেখায়। সংবেদনশীল মানুষ অন্যের জীবনার্তিতে ব্যকুল হয়ে ওঠেন। আর আত্মমর্যাদা? যা কিছু নিজের ব্যক্তিত্ব, আত্মবিশ্বাসের প্রতি সন্দিহান করে তোলে, নিজের কাছে নিজেকে ছোট করে দেয়, মাথা উঁচু করতে শেখায় -তাই-ই আত্মমর্যাদা। আত্মমর্যাদাশীল ব্যক্তি অন্যের আত্মমর্যাদা এবং সম্মানের প্রতি খুবই সজাগ থাকেন। একজন শিল্পী জন্মগতভাবে আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন বলে তিনি নিজের তো বটেই অন্য কারো মাথা নত করাতে চান না। লোভের কাছে, যশ-খ্যাতি-দখলে, অর্থ-বিত্তের মোহে শিল্পের অভিনয়কারী মানুষদের মাথা নত হয়ে থাকলেও, একজন সত্যিকারের জাত শিল্পী এসব পায়ের তলায় রেখেই জন্মগ্রহণ করেন। আধুনিক মানবসভ্যতার শুদ্ধ অথবা পূর্ণাঙ্গরূপে বিকাশের জন্য লালনের কথাটি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই- ‘মানুষ ভঁজলে সোনার মানুষ পাবে’।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

কাজী রাফি: আপনাকে ও ঢাকাপ্রকাশের শ্রদ্ধেয় সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ।

ডিএসএস/

Header Ad
Header Ad

প্রধান উপদেষ্টা নয়, বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণ চায় বিএনপি

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ চায় না, বরং উপদেষ্টা পরিষদের বিতর্কিত তিন সদস্যের অপসারণ চায় দলটি—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

শনিবার (২৪ মে) রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, “আমরা কখনোই প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করিনি, এখনো তা চাই না। আমরা বরং তাঁর কাছ থেকে একটি সুস্পষ্ট নির্বাচন রোডম্যাপ চাই, যাতে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।”

তিনি আরও জানান, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে উপদেষ্টা পরিষদে যারা বিতর্কিত ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের বাদ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। একইসঙ্গে দলটি একটি লিখিত বক্তব্যও প্রধান উপদেষ্টার হাতে তুলে দিয়েছে।

বিএনপি নেতা বলেন, “নির্বাচনের বিলম্ব মানে স্বৈরাচারের ফেরার সম্ভাবনা বাড়ানো। তাই অবিলম্বে নির্বাচনকালীন রোডম্যাপ প্রকাশ করতে হবে। আমরা চাই সংস্কার চলুক, আর সে সংস্কার বিএনপি ক্ষমতায় এলেও অব্যাহত থাকবে।”

আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা কারও প্রতি প্রতিশোধে বিশ্বাস করি না, তবে আইনের শাসনের পক্ষে। যাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে—কিন্তু সেটা হতে হবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে।”

প্রসঙ্গত, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ড. ইউনূসের পদত্যাগ সম্ভাবনা নিয়ে যে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে, তার পটভূমিতে বিএনপি এই বৈঠকে বসে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল মঈন খান এবং সালাহউদ্দিন আহমদ।

Header Ad
Header Ad

একনেকে ১১ হাজার ৮৫১ কোটি টাকার ৯ প্রকল্প অনুমোদন

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ১১ হাজার ৮৫১ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন থেকে ব্যয় করা হবে ৮ হাজার ৪৬ কোটি ৯ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ থেকে আসবে ২ হাজার ৯৮৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ধরা হয়েছে ৮১৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

শনিবার (২৪ মে) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সভা শেষে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার, শিক্ষা, ধর্ম, প্রবাসী কল্যাণ এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে অবকাঠামো উন্নয়ন, কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানির সংযোজন, প্রবাস ফেরতদের পুনর্বাসন এবং শিশু শিক্ষার সম্প্রসারণ।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতায় ‘আরবান ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ইউসিআরআইপি)’ ও ‘প্রবৃদ্ধি: স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন (এলইডি)’ প্রকল্প দুটি অনুমোদন পেয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘৮টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একাডেমিক ভবন নির্মাণ’, ‘১৫টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সক্ষমতা বৃদ্ধির’ প্রকল্প এবং ‘তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মানোন্নয়ন’ প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধিত প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।

এছাড়া ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ‘নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ উন্নয়নে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (অষ্টম পর্যায়)’ এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ‘রেইজ: রিইন্টেগ্রেশন অব রিটার্নিং মাইগ্রেন্টস (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্পটিও অনুমোদন পেয়েছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ‘ওজোপাডিকোর জন্য গ্রিড বিদ্যুৎ সরবরাহ উন্নয়ন’ এবং ‘পাওয়ার ট্রান্সমিশন স্ট্রেংথেনিং অ্যান্ড ইন্টিগ্রেশন অব রিনিউয়েবল এনার্জি’ শীর্ষক প্রকল্প দুটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

এদিকে একনেক সভায় ‘ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার পুনঃনির্মাণ (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়।

সভায় আরও জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টা ইতিমধ্যে পরিকল্পনা উপদেষ্টা কর্তৃক অনুমোদিত চারটি প্রকল্পের বিষয়েও একনেক সদস্যদের অবহিত করেছেন। এসব প্রকল্প হচ্ছে—কক্সবাজারে শুতলি ক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপন, সরকারের ভিডিও কনফারেন্সিং প্ল্যাটফর্ম শক্তিশালীকরণ, বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ এবং চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প (লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত)।

পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি এবং প্রবাসী কল্যাণসহ নানা খাতে টেকসই উন্নয়নের অগ্রগতি সাধিত হবে।

Header Ad
Header Ad

বিয়ের পর আমার ভাগ্য খুলে গেছে: মেহজাবীন

মেহজাবীন চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীর জীবনে যেন একের পর এক শুভক্ষণ ধরা দিচ্ছে। বছরের শুরুতে দীর্ঘ ১৩ বছরের প্রেম শেষে পরিচালক আদনান আল রাজীবকে বিয়ে করেছেন তিনি। আর বিয়ের পর থেকেই যেন ভাগ্য তার প্রতি মুখ তুলে হাসছে—এমনটাই বললেন নিজেই।

সম্প্রতি মেহজাবীন অভিনীত চলচ্চিত্র ‘প্রিয় মালতী’ দেশ-বিদেশের নানা উৎসবে প্রশংসা কুড়িয়েছে। গেল ডিসেম্বরে এই ছবি ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার অর্জন করে। এরপর লন্ডন বাঙালি চলচ্চিত্র উৎসবেও দর্শক পুরস্কার পায় ছবিটি।

সাফল্যের এই ধারাবাহিকতায় মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ২০২৪-এও বাজিমাত করেছেন মেহজাবীন। ‘প্রিয় মালতী’ চলচ্চিত্রের জন্য একসঙ্গে দুটি বিভাগে—সমালোচক ও তারকা জরিপে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার হাতে নিয়েছেন তিনি। একই ছবিটি পেয়েছে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কারও।

পুরস্কার গ্রহণ করতে মঞ্চে উঠে নিজের আবেগ লুকাতে পারেননি এই তারকা। জানালেন, “বিয়ের পর মনে হচ্ছে আমার ভাগ্য খুলে গেছে।”

তবে এই আনন্দঘন মুহূর্তে পাশে না থাকায় মিস করেছেন জীবনসঙ্গী আদনান আল রাজীবকে, যিনি বর্তমানে ফ্রান্সের কান চলচ্চিত্র উৎসবে নিজের নির্মিত ছবি ‘আলী’র প্রদর্শনী নিয়ে ব্যস্ত।

পুরস্কার হাতে নিয়ে মেহজাবীন আরও বলেন, “দেশে আরও বেশি নারীপ্রধান চরিত্রের সিনেমা বানানো উচিত। দর্শকদের কাছ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি, তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।”

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

প্রধান উপদেষ্টা নয়, বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণ চায় বিএনপি
একনেকে ১১ হাজার ৮৫১ কোটি টাকার ৯ প্রকল্প অনুমোদন
বিয়ের পর আমার ভাগ্য খুলে গেছে: মেহজাবীন
দায়িত্ব পালন অসম্ভব করে তুললে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সিদ্ধান্ত
পুলিশকে হুমকি দিয়েছে নুর: পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন
বিরামপুরে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগের ৪ নেতাকর্মী গ্রেফতার
সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে ট্রাম্প প্রশাসনের আদেশ জারি
সালমানের বাংলোতে ঢুকতে লাগবে পরিচয়পত্র, ছাড় পাবেন না তারকারাও
ড. ইউনূস জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের নাটক মঞ্চস্থ করছেন: রুমিন ফারহানা
রোববার যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে সর্বদলীয় বৈঠক
লন্ডনে সালমান এফ রহমানের ছেলে ও ভাতিজার ১৪৭৯ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ (ভিডিও)
বিয়ের অল্পদিনের মধ্যেই বিচ্ছেদ, রাগে ঘটককে ছুরিকাঘাতে হত্যা
বিনিয়োগকারীরা নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে: আমীর খসরু
বলিউড অভিনেতা মুকুল দেব মারা গেছেন
ভারতের নতুন টেস্ট অধিনায়ক শুভমান গিল
বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান ও পরিবারের ৩৮ ব্যাংক হিসাব জব্দ
ঈদে আসছে নতুন নোট, থাকছেনা কোনো ব্যক্তির ছবি: গভর্নর
প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন না
১৩ বছরের শরিফুলের অবাক করা সাফল্য, মাত্র ৬ মাসে হাফেজ!
উপদেষ্টা আসিফের সাবেক এপিএসের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা