জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি গ্রহণযোগ্য ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়নের উদ্যোগ চলছে, আর সে পথে অগ্রসর হতে হলে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে কিছু না কিছু ছাড় দিতে হবে—এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ।
রোববার (৪ মে) সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে সংলাপের শুরুতে তিনি এ আহ্বান জানান।
ড. রীয়াজ বলেন, “জাতীয় ঐকমত্য তৈরির দায়িত্ব শুধু জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নয়। এই দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোরও। আপনারা যারা সংগ্রামে আছেন, আজ আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন, আপনাদের সহযোগীদের সঙ্গেও আলোচনা করুন—কীভাবে আমরা এক জায়গায় আসতে পারি, সেটি খুঁজে বের করুন।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা জানি, সব বিষয়ে একমত হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু রাষ্ট্র গঠনের মৌলিক বিষয়গুলোতে ঐকমত্য গড়ে তুলতে হবে। এটাই হবে বাংলাদেশের সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ।”
ড. রীয়াজ জোর দিয়ে বলেন, শুধু টেবিলে বসে আলোচনার মাধ্যমেই জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়, বরং রাজনৈতিক দলগুলোকেই নিজেদের মধ্যকার ভিন্নমত সংকুচিত করে সমঝোতার ভিত্তি তৈরি করতে হবে। এ প্রক্রিয়ায় কমিশন একটি ‘অনুঘটক’ হিসেবে কাজ করছে বলে জানান তিনি।
সংলাপে জানানো হয়, মে মাসের মাঝামাঝি থেকে দ্বিতীয় দফা আলোচনা শুরু হবে, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবিত বিষয়ে ভিত্তি করে জাতীয় সনদের খসড়া তৈরি করা হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য প্রসঙ্গে ড. আলী রীয়াজ বলেন, “আমরা এমন একটি জাতীয় সনদ তৈরি করতে চাই, যা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পথনির্দেশিকা হিসেবে কাজ করবে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে সকলের অংশগ্রহণ ও মতের সমন্বয়ই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।”
তিনি আরও বলেন, “দেশ যখন ব্যক্তিকেন্দ্রিক স্বৈরতন্ত্রের কবলে পড়েছিল, তখন তরুণদের জাগরণ মানুষকে আবার আশার আলো দেখিয়েছে। আজ আমরা এই আলোচনায় বসেছি সেই আশার আলোকে সামনে রেখে।”
সংলাপটি সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া।