বাংলাদেশি পণ্যে ভারতের নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্যিক ক্ষতির শঙ্কায় ভারতীয় ব্যবসায়ীরা

ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পণ্য স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত। এতে ক্ষতির আশঙ্কায় পড়েছেন দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও সীমান্তবর্তী স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর (ডিজিএফটি) এই নির্দেশনা জারি করে।
নির্দেশনায় জানানো হয়, বাংলাদেশের তৈরি রেডিমেড পোশাক, ফলের স্বাদযুক্ত কার্বনেটেড পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসামগ্রী, তুলা ও তুলাজাতীয় বর্জ্য, প্লাস্টিক ও পিভিসি পণ্য, রঙ ও প্লাস্টিসাইজার, কাঠের আসবাবপত্রসহ বেশ কিছু পণ্য ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম এবং পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ী স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। তবে এসব পণ্য সমুদ্রবন্দর— যেমন কলকাতা বা মুম্বাইয়ের নাভা শেভা বন্দরের মাধ্যমে আমদানি করা যাবে।
এ নিষেধাজ্ঞা থেকে মাছ, এলপিজি, ভোজ্যতেল এবং চূর্ণ পাথর মুক্ত থাকবে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ থেকে নেপাল বা ভুটানে যাওয়া পণ্যের ওপরও নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, "রেডিমেড পোশাক আমদানির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে। এর ফলে কলকাতা বা মুম্বাই বন্দর ব্যবহার বাধ্যতামূলক হওয়ায় পরিবহন ব্যয় ও সময় অনেক বেড়ে যাবে।"
তিনি জানান, পেট্রাপোল, ঘোজাডাঙ্গা, মহদীপুর- এই বন্দরে এখনো কিছু পণ্যের প্রবেশে অনুমতি থাকলেও চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ীর মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দরে নিষেধাজ্ঞা বাণিজ্যের ওপর বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে। এতে কয়েক হাজার শ্রমিক ও বহু লজিস্টিক কোম্পানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও ভারতীয় তুলা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং তৃতীয় দেশে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের প্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে দুই দেশের মধ্যকার স্থলবন্দরভিত্তিক পণ্যবাণিজ্যে নতুন অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
বাণিজ্য বিশ্লেষকদের মতে, এই নিষেধাজ্ঞাগুলো দীর্ঘমেয়াদে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং সীমান্ত অঞ্চলের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে। বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের উচ্চপর্যায়ে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।
