দুই লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট চূড়ান্ত

ছবি: সংগৃহীত
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। রোববার (১৮ মে) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় এডিপির খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা, যা সংশোধিত হয়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ১৬ হাজার কোটিতে। সেখান থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে আগামী অর্থবছরের উন্নয়ন বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় হবে ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে আসবে ৮৬ হাজার কোটি টাকা। এডিপির আওতায় মোট ১ হাজার ১৪২টি প্রকল্পে ২ লাখ ১৫ হাজার ৫১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
উন্নয়ন বাজেটে বরাবরের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে। এই খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫৮ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ২৫.৬৪ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩২ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা (১৪.০৮ শতাংশ) বরাদ্দ পেয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। এছাড়া শিক্ষা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৮ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা (১২.৪২ শতাংশ), গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধা খাতে ২২ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা (৯.৯০ শতাংশ) এবং স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ১৮ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা (৭.৮৯ শতাংশ)।
এছাড়াও স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৩ হাজার ৪৭২ কোটি, কৃষি খাতে ১০ হাজার ৭৯৫ কোটি, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ খাতে ১০ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা। শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে বরাদ্দ ৫ হাজার ৩৮ কোটি, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিতে ৩ হাজার ৮৯৪ কোটি, ধর্ম, সংস্কৃতি ও বিনোদনে ৩ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ ২ হাজার ৭৭৭ কোটি, সামাজিক সুরক্ষা খাতে ২ হাজার ১৮ কোটি এবং সাধারণ সরকারি সেবা খাতে এক হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ মাত্র ৪৭৫ কোটি টাকা।
পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে মোট ২ লাখ ৫৪ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের চাহিদা পাওয়া গিয়েছিল। তবে বাস্তবতা বিবেচনায় এবং অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে বাস্তবায়নযোগ্য প্রকল্পগুলোকেই প্রাধান্য দিয়ে এডিপির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে। বরাদ্দ কম হলেও সংশোধিত এডিপির তুলনায় এটি ১৪ হাজার কোটি টাকা বেশি, যা সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় গতি আনার লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
