সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে ট্রাম্প প্রশাসনের আদেশ জারি

ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন গতকাল শুক্রবার জারি করা একটি আদেশে বলেছে, সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা কার্যকরভাবে তুলে নেবে তারা।
এর আগে চলতি মাসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভয়াবহ গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত সিরিয়ার পুনর্গঠনে সহায়তার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা শিথিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ একটি অনুমতিপত্র ইস্যু করেছে। ফলে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার, দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে লেনদেন করতে পারবে।
ট্রেজারি বিভাগের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জিএল২৫ নামে পরিচিত ওই অনুমতিপত্র সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞায় নিষিদ্ধ লেনদেনকে এখন অনুমোদন দিয়েছে। এতে কার্যত সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “জিএল২৫ মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে (সিরিয়ায়) নতুন বিনিয়োগ ও বেসরকারি খাতের কার্যক্রমের পথ প্রশস্ত করবে।”
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ‘সিজার আইন’-এর আওতায় ১৮০ দিনের জন্য একটি ছাড়পত্র জারি করেছেন। এর উদ্দেশ্য, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা যাতে সিরিয়ায় বিনিয়োগে বাধা না হয় এবং দেশটিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানি ও স্যানিটেশন পরিষেবা দেওয়ার পাশাপাশি মানবিক প্রচেষ্টাকে সহায়তা করা যায়। এক বিবৃতিতে এসব কথা জানান রুবিও।
তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার এই আদেশ যুক্তরাষ্ট্র-সিরিয়ার নতুন সম্পর্কের প্রথম পদক্ষেপ। রুবিও আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রত্যাশা করেন, এর প্রতিক্রিয়ায় সিরিয়া সরকার সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পদক্ষেপ নেবে।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, গত সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময় ট্রাম্প সিরিয়ার নেতা শারার সঙ্গে দেখা করেন। ওই সময় প্রেসিডেন্ট সিরিয়ায় নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা বলেন। এছাড়াও দেশটিতে বিদেশি সেনাসদস্য ত্যাগের বিষয়ে আলোচনা করেন।
রুবিও বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিরিয়ার সরকারকে দেশের অভ্যন্তরে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির সুযোগ করে দেন।
অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার এ পদক্ষেপকে আজ শনিবার সকালে স্বাগত জানিয়েছে সিরিয়া। এটিকে মানবিক ও অর্থনৈতিক দুর্ভোগ লাঘবে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদ ও তার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছরের ডিসেম্বরে শারার নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীরা আসাদকে উৎখাত করে দেশটির শাসনক্ষমতা গ্রহণ করেন।
