বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪ | ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২২

স্নানের শব্দ

‘শো কজ নোটিশ পেলাম ম্যাডাম। শেষ মেশ চাকরিটা খেয়েই দিলেন! উপকারের প্রতিদান ভালোই পেলাম। সত্যি সেধে পড়ে কারও জন্য কিছু করতে হয় না! সারা জীবন মনে রাখার মতো একটা শিক্ষা হলো, যাই বলেন, ফোনের অপর প্রান্ত থেকে কন্ঠে তীব্র বিষ মিশিয়ে হিস হিস করে বললো মনিরুজ্জামান। এইচ আর অবশ্য আগেই এই খবরটা জানিয়েছিল শবনমকে, ফলে তথ্যটা তার কাছে নতুন নয়।

‘মনিরুজ্জামান শোনো, আমার আসলে এখানে কিছু করার ছিল না, আমি অনেক চেষ্টা করেছি, আমার দিক থেকে যতখানি সম্ভব...’
‘থাক, থাক, মিথ্যা কথা বলে আর ভাল মানুষ সাজার চেষ্টা না করলেও চলবে ম্যাডাম। আপনি কী করেছেন সেটা খুব বোঝা হয়ে গেছে আমার, আপনার মতো বিড়াল তপস্বী আগে কখনো দেখিনি.. ’
ভয়ংকর শ্লেষ আর বিদ্রুপ ঝরে পড়ে মনিরুজ্জামানের গলায়।
‘বিশ্বাস করো...আমি চাইনি এরকম কিছু হোক...কিন্তু আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছিল বিষয়টা...’
শবনম যেন আর্তনাদ করে।
‘চুপ থাক হারামজাদি, খানকি মাগি...’
চাপা কন্ঠে বাজে গালি দুটো ছুড়ে দিয়েই খট করে ফোন কেটে দেয় মনিরুজ্জামান। শবনমের কানে যেন উত্তপ্ত গলিত লোহার মতো আছড়ে পড়ে গালিগুলো। বিস্ময়ে বিমূঢ় ও হতবাক হয়ে যায় সে। নিজের কানকেও যেন বিশ্বাস হয় না তার, এও সম্ভব? সজ্ঞানে স্বেচ্ছায় এমন করে ঊর্ধ্বতন পদধারী একজন বয়স্ক সম্মানিত নারীকে গালি দিতে পারল মনিরুজ্জামান? তার রুচিতে একটুও বাঁধল না? কোনো ভদ্র ঘরের শিক্ষিত ছেলে পারবে এমন করে অনায়াসে নোংরা শব্দগুলো উচ্চারণ করতে? সে ছাড়া যদিও কেউ শোনেনি তবু মরমে মরে যেতে ইচ্ছা করল শবনমের। অসদাচরণের অভিযোগে এক্ষুনি সাসপেন্ড করা যায় মনিরুজ্জামানকে। এই ক্ষমতা তার আছে। কিন্তু এই ঘটনা জানাজানি হলে শবনমের মর্যাদা কী বাড়বে? বরং মানুষজন একটা মুখরোচক বিষয় খুঁজে পাবে সিইও ম্যাডামকে নিয়ে দাঁত বের করে হাসাহাসি করার। এই বয়সে, এরকম অবস্থানে এসে মানুষের কাছে হাসির পাত্র হওয়ার কোনো ইচ্ছা নাই শবনমের। তবে মনিরুজ্জামানের প্রতি মনের কোণায় তার যে সফট কর্নারটা তৈরি হয়েছিল এই ঘটনায় সেটা পুরোপুরিই দূর হয়ে গেল। সেখানে জন্ম নিলো অপরিসীম রাগ, ক্রোধ, ঘৃণা সবশেষে হতাশা। আর এইসব নেতিবাচক অনুভূতি এক সঙ্গে মিলে একটা অসহ্য দমবন্ধ অস্থিরতা তৈরি করল তার মধ্যে। নাক কান দিয়ে যেন আগুন বেরুচ্ছে। কেমন একটা চাপ অনুভূত হচ্ছে বুকের মধ্যে। শবনমের ইচ্ছা করল অফিস টফিস সব কিছু ফেলে ছুটে বেরিয়ে যেতে।

শরীর খারাপ লাগার অজুহাত দেখিয়ে একটা মিটিং ক্যান্সেল করল শবনম। বেশ কয়েকটা ফোন কলও ধরল না সে। বাথরুমে গিয়ে আয়নায় নিজের আহত অপমানিত চেহারার দিকে তাকিয়ে থাকল অনেকক্ষণ। যেন নিজের দুঃখিত, ক্ষতবিক্ষত আত্মাকে দেখল কিছুক্ষণ। তারপর পিঠ চাপড়ে দেওয়ার ভঙ্গীতে বলল, ‘অনেক চড়াই উৎরাই বাধা বিপত্তি পেরিয়ে আসা মানুষ তুমি, ভেঙে পড়ো না, এবারও পারবে সামাল দিতে। এটাকেও এক ধরনের শিক্ষা হিসেবে নাও। পাত্তা দিও না। ইটস ওকে!’ চোখে মুখে ঘাড়ে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিয়ে এসে একটু সুস্থির হয়ে নিজের চেয়ারে গা এলিয়ে বসল শবনম। লম্বা করে কয়েকটা শ্বাস নিল। তারপর নিজের পিঠে হাত বুলিয়ে নিজেকেই বোঝাল সে, ‘না হে, এক অর্বাচীনের সামান্য দুটো গালি শুনে এত বিচলিত বোধ করলে চলবে না, এত অস্থির হওয়ার কিছু নেই। এত ভেঙে পড়ারও কিছু নেই।’

এই পর্যন্ত আসতে আসতে পথে পথে কম তো আর দেখেনি বা শোনেনি সে। কত তাচ্ছিল্য, কত ঈর্ষা, কত উপেক্ষার কঠিন পথ ধৈর্য্য ধরে পারি দিয়ে এসেছে। চোখে, মুখে, আচার আচরণে নারী বসকে মানতে না পারার বিরক্তি আর নাক সিটকানো অভিব্যক্তি দেখে দেখে সয়ে সয়ে তবেই না আজকের অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে শবনম। সমুদ্রে শয্যা পেতে এখন শিশিরের ভয়ে মূর্ছা গেলে চলবে? এত কাতর হওয়ারই বা কী আছে? বোঝাই যাচ্ছে অকস্মাৎ চাকরি হারানোর চিন্তায় মনিরুজ্জামানের মাথা ঠিক নেই। আসন্ন বিপদের কথা ভেবে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে ছেলেটা। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। মাথা গরম করে কি বলতে, কি বলে ফেলেছে। হয়তো মাথা ঠান্ডা হলে অনুতপ্ত হবে, কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইবে।

ধুলায় গড়াতে থাকা মুরগী যেমন গড়ানো শেষে গা ঝাড়া দেয় সেভাবেই মন থেকে সমস্ত অপ্রসন্নতা ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করে শবনম। সচেতনভাবে সামলে নেয় নিজেকে। ব্যাগ থেকে ছোট আয়না আর লিপষ্টিক বের করে, শুকনো ঠোট দুটোতে হাল্কা রঙ বুলিয়ে অবিন্যস্ত চুলগুলো পরিপাটি করে একাউন্ট সেকশনের নির্ধারিত মিটিং-এ ঢুকে পড়ে সে।

মিটিং শেষে একাউন্টিং সেকশনের সবাই বেরিয়ে যাওয়ার পরও চীফ একাউন্টেন্ট আতিয়ার রহমান সাহেব বসেই থাকেন। শবনম বুঝলো, আলাদা করে কিছু বলতে চান তিনি। ফলে অপেক্ষা করছিল সে।
‘একটা কথা ছিল ম্যাডাম’ বলে শুরু করল আতিয়ার সাহেব। তারপর কাঁচুমাঁচু মুখে হাত কচলে ইনিয়ে বিনিয়ে অনেকক্ষণ ধরে যা বললেন তার সারমর্ম হচ্ছে, শো কজ নোটিশ পাওয়া চারজন অপরাধির মধ্যে একজন তার ভাগিনা শাজাহান আকন্দ। কম্পিউটর সেকশনে কাজ করে। ছেলেটা সহজ সরল, বোকা সোকা। বউ আছে, ছোট ছোট দুটো বাচ্চাও আছে তার। এই চাকরিটা ছাড়া অন্য কোনো আয়ের উৎসও নেই। না বুঝে অন্যদের পাল্লায় পড়ে একটা অন্যায় করে ফেলেছে সে। এখন নিজের দোষ অকপটে স্বীকার করতে চায় শাজাহান এবং কর্তৃপক্ষের কাছে ভবিষ্যতে আর এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না সেই প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা ভিক্ষা করতে চায়। এখন শবনম যদি চেয়ারম্যান সাহেবকে বলে একটু সুপারিশ করে ওর চাকরিটা বাঁচায়, তাহলে চিরকৃতজ্ঞ থাকবেন তিনি। নইলে বউ বাচ্চা নিয়ে ছেলেটা রাস্তায় বসবে। এই আক্রার দিনে রাতারাতি আরেকটা চাকরিও তো পাবে না।

শবনম চুপ করে শুনলো কিন্তু বেশি আশা দিলো না আবার নিরাশও করলো না। নিরাসক্ত গলায় বললো,
‘আচ্ছা, দরখাস্ত দিতে বলেন, দেখি কি করা যায়!’
‘ঠিকাছে ম্যাডাম। একটু দেখবেন ম্যাডাম।’ বলে বেরিয়ে যায় আতিয়ার সাহেব। হঠাৎ করে রাজ্যের ক্লান্তি আর অবসাদ জড়িয়ে ধরে শবনমকে। সে পিএসকে ফোন করে দ্রুত গাড়ি রেডি করতে বলে। বাড়ি গিয়ে বিশ্রাম নিতে হবে। তখনি মোবাইল ফোনটা বাজে। আশ্চর্য, ওসমান গনি ফোন করেছে! কেনো, হঠাৎ! প্রাক্তন সহকর্মী, প্রাক্তন প্রতিপক্ষও বটে, আরও বড় কথা পরাজিত প্রতিপক্ষ! শবনম ফোনটা ধরবে কী ধরবে না ভাবতে ভাবতেই দ্বিধা নিয়ে ফোনটা ধরলো। ওপাশে ওসমান গণির উল্লসিত কন্ঠ শোনা গেল, ‘হ্যালো ম্যাডাম, আপনার প্রিয় মনিরুজ্জামান এখন নতুন তথ্য দিচ্ছে, হা হা হা, আপনি তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে আমার বিরুদ্ধে ডকুমেন্টস বের করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন, হা হা হা, আপনি দেখিয়ে দিলেন ম্যাডাম, এই বয়সে এসেও নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য প্রেমের খেলা...হে হে হে খ্যা খ্যা খ্যা ..’
আরেক দফা গরম গলিত সীসা যেন কেউ ঢেলে দিল শবনমের কানে। ফোন বেয়ে যে হাসি ভেসে আসছে তা কি মানুষের নাকি শয়তানের? মানুষের হাসি এত কুৎসিত হতে পারে!

‘এসব কী বলছেন ওসমান গণি ! ছি ছি ! অসভ্যতার সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছেন আপনি!’
কোনো রকমে বলতে পারল শবনম।
‘সীমা তো ছাড়িয়েছেন আপনি ম্যাডাম, এমন পড়ন্ত বয়সেও অল্পবয়সী ছেলেদের মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছেন, নিজেকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে এই পর্যায়ে উঠে এসেছেন!
‘মুখ সামলে কথা বলেন ওসমান গণি !’
ততক্ষণে রাগে ক্ষোভে শবনমের সারা শরীর কাঁপতে শুরু করেছে।
‘সব ফাঁস করে দেব, সবার সামনে ভালমানুষির মুখোশ খুলে দেব, কেমন করে সিইও থাকেন দেখব...
ওইপাশ থেকে ওসমান গণির হুমকি শোনা গেল। এবার আর সহ্য করতে পারল না শবনম, বোতাম টিপে ফোনটা কেটে দিল সে। উত্তেজনায় কখন যেন দাঁড়িয়ে পড়েছিল, এখন ফোন কেটে ধপ করে নিজের রিভলভিং চেয়ারে বসে পড়ল সে। তার মাথাটা ফাঁকা আর শূন্য শূন্য লাগছে। হাতে পায়ে শরীরের কোথাও যেন এক ফোটা শক্তি অবশিষ্ট নেই। শবনমের মন আর্তনাদ করে ওঠে! হায়, এ কোনো কাঁটার সিংহাসনে বসলাম আমি! যেন নোংরা কাদায় আপাদমস্তক ডুবে যাচ্ছি ! যেন কেউ ঝুড়ি ভর্তি দুর্গন্ধ আবর্জনা ছুড়ে মারছে আমার দিকে! এ্ইসব কদর্য অপপ্রচার থেকে কেমন করে নিজেকে বাঁচানো যাবে জানি না! উফ! এই জঘন্য ষড়যন্ত্রের শেষ কোথায়?

চলবে...

আরও পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব-২১

স্নানের শব্দ: পর্ব-২০

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৯

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৮

 

Header Ad

গণমাধ্যমের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

কর্মশালায় বক্তব্য রাখছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। ছবি: সংগৃহীত

তথ্য অধিকার আইনের আওতায় গণমাধ্যমের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

মঙ্গলবার (৮ মে) রাজধানীর দারুস সালামে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘তথ্য অধিকার আইন ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, তথ্য অধিকার আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন সরকার নিশ্চিত করতে চায়। এ আইন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে পাশ করা হয়। সরকার নিজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য এ আইন করেছে। তবে যেকোনো একটি আইন সমাজে তৈরি হলে, সে আইন বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে। এ আইনে যারা তথ্য নেবেন বা যারা তথ্য দেবেন দুই পক্ষেরই কিছু বোঝাপড়ার অভাব থাকতে পারে। এ আইন শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবে গণমাধ্যমকে আরও শক্তিশালী করেছে। কিন্তু সে অস্ত্রের ব্যবহার না অপব্যবহার হবে সেটা বোঝা এবং এ আইনে যাদের কাছে তথ্য চাওয়া হবে তাদের মধ্যে একটি সংস্কৃতিগত রূপান্তর দরকার। তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় জড়তা থাকে। যেগুলো জনসম্পৃক্ত তথ্য, জনগণের যেটা অধিকার সে তথ্য দেয়ার বিষয়টি সরকার নিশ্চিত করতে চায়। গণমাধ্যমের সাংবাদিকদেরও তথ্য চাওয়ার ক্ষেত্রে পেশাদার অ্যাপ্রোচ থাকা প্রয়োজন।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, তথ্য অধিকার আইনের অধীন যে তথ্য চাওয়ার অধিকার আছে সে বিষয় নিয়ে অনেক সময় যারা তথ্য চাইবেন তাদের পক্ষ থেকেও কিছু ভুল বোঝাবুঝি থাকে। কোনো তথ্য সর্বসাধারণের জন্য এবং কোনো তথ্য গোপন তথ্য সেটার পার্থক্য করতে পারা জরুরি। কিছু তথ্য আছে স্পর্শকাতর যেগুলো গোপন আইনের অধীন রক্ষিত আছে, এগুলো সর্বসাধারণের জন্য নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক, বিটিআরসিসহ এ ধরনের অন্যান্য স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হয়। এসব কৌশল বাস্তবায়নের আগপর্যন্ত অনেক সময় গোপন রাখতে হয়। এগুলো প্রকাশ করলে অনেক সময় বৃহত্তর স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এক্ষেত্রে সাংবাদিকতা, তথ্যের অবাধ প্রবাহ, তথ্য মানুষের কাছে পৌঁছানো এবং স্পর্শকাতর তথ্য এসবগুলোর মধ্যে ভারসাম্য করতে হয়। সেখানে প্রশিক্ষণ, যোগাযোগ ও মিথস্ক্রিয়া সব পক্ষের করা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, তথ্যের অবাধ প্রবাহ, জনগণের কাছে তথ্য পৌঁছানো ও অপতথ্য মোকাবিলা করতে হবে। তবে সর্বসাধারণের জন্য তথ্য এবং জাতীয় স্বার্থে যেগুলোক পৃথিবীর সব দেশে স্পর্শকাতর ও গোপন তথ্য হিসেবে ধরা হয় সেগুলোর মধ্যে পার্থক্য নিরূপণের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। আমরা সরকার ও প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিতে চাই। এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অঙ্গীকার।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, তথ্য অধিকার আইনকে আমরা আরও প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমরা চাই, সাংবাদিকরা যেন এ আইন ব্যবহার করে আরও ক্ষমতাপ্রাপ্ত হোন, এ আইনের পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারেন এবং তার উপযোগিতা আমরা সমাজে পাই। একইসঙ্গে এ আইনের আমরা দায়িত্বশীল ব্যবহার দেখতে চাই। যাদের এ আইনের অধীনে তথ্য দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে তাদের প্রতি আহ্বান থাকবে যেন তথ্য চাওয়া হলে সেটি দেওয়া হয়। জনগণের পক্ষ থেকে যখন গণমাধ্যম তথ্য চাইবে, সে তথ্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। সঠিক তথ্য যত দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরবরাহ করা হবে, ততো গুজব বা অপপ্রচার হওয়ার সুযোগ কম হবে।

তিনি আরও বলেন, যে তথ্য জনগণের বলে তথ্য অধিকার আইন নিশ্চিত করছে, সেই তথ্য গণমাধ্যমকে দিতে হবে। এ তথ্যগুলো যত দ্রুততার সঙ্গে সহজলভ্য করা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ এ ধরনের অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠানের জন্য তত ভালো। আমাদের সবার এ মানসিকতা তৈরি করা দরকার যে, সঠিক তথ্য যত দ্রুত জনগণের কাছে চলে আসবে- এটা আমাদের জন্য মঙ্গল।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার চায় তথ্য অধিকার আইনের আওতায় যারা তথ্য দেবেন না, তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে যেন কোনো ধরনের জড়তা বা মানসিক বাধা না থাকে। সরকার আরও চায় সরকারি প্রতিটি প্রতিষ্ঠান দ্রুততম সময়ের মধ্যে তথ্য সহজলভ্য করুক। আর যারা তথ্য চাইবেন আমরা চাই তথ্য অধিকার আইন তারা সঠিকভাবে ব্যবহার করবেন। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই আইন ব্যবহারের সক্ষমতা তৈরি হোক সেটাও আমরা চাই; যাতে এ আইনের অপব্যবহার কেউ না করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য দেওয়া প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটি পরিকল্পিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য সহজলভ্য করা হবে।

তিনি আরও যোগ করেন, অপসংবাদিকতা হলে তার সবচেয়ে বড় শিকার হয় পেশাদার সাংবাদিকরা। অপপ্রচার হলে পেশাদার সাংবাদিকতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সব আইনেই কিছু অসৎ ব্যক্তি অপব্যবহারের সুযোগ নিতে চায়। সেটা আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে; কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা আইন (সিএসএ) ব্যবহার করে কোনো সাংবাদিকতার চর্চা আটকে দেওয়ার সুযোগ নেই। সিএসএ পেশাদার সাংবাদিকতাকে সুরক্ষা দেবে।

জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সুফী জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য কমিশনের প্রধান তথ্য কমিশনার ডক্টর আবদুল মালেক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. খুরশীদ আলম।

দুই দিনের ঢাকা সফরে এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা দুই দিনের সফরে ঢাকা এসেছেন। বুধবার (৮ মে) সন্ধ্যায় এক বিশেষ ফ্লাইটে তিনি বিমানবন্দরে অবতরণ করেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর এ‌টি দি‌ল্লির কোনো প্রতি‌নি‌ধির প্রথম ঢাকা সফর।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাঠানো দিল্লি সফরের আমন্ত্রণপত্র তুলে দেবেন। ওই দিন তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা ঢাকা সফরের সময় পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও ভারত আগামী জুন মাসের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের বিষয়টি মোটামুটি চূড়ান্ত করেছিল। এখন প্রধানমন্ত্রীর ওই সফর পিছিয়ে জুলাইয়ে আয়োজন করতে চাইছে ভারত। ঢাকা সফরের সময় বিনয় কোয়াত্রা এটি বাংলাদেশের কাছে তুলে ধরতে পারেন।

ছেলে-পুত্রবধূর অপমান সইতে না পেরে বৃদ্ধ মা-বাবার বিষপান

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ছবি: সংগৃহীত

নাটোরের গুরুদাসপুরে ছেলের ওপর অভিমান করে মা-বাবার এক সঙ্গে বিষ পানের ঘটনা ঘটেছে। স্বজন ও স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন।

বুধবার (৮ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের হামলাইকোল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

বিষপানে গুরুতর অসুস্থ বাবা-মা হলেন- মো. আলম শেখ (৬০) ও নাজমা বেগম (৫০)।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আলম শেখ বলেন, আমার দুই মেয়ে এক ছেলে। ছেলে সবুজ শেখকে সব জমি-জমা লিখে দিয়েছি। ছেলে কথা দিয়েছিল সংসারের সকল দায়িত্ব নেবে এবং আমার সব ঋণ পরিশোধ করবে। কিন্তু জমি লিখে নেওয়ার পর ছেলে কথা রাখেনি। এদিকে ঋণের কারণে পাওনাদারদের অপমান-অপদস্থ সহ্য করতে হচ্ছে। পাশাপাশি ছেলে ও ছেলের বউ এর দুর্ব্যবহার তো রয়েছেই। তাই অতিষ্ঠ হয়ে স্বামী-স্ত্রী এক সঙ্গে বিষপান করেছেন বলে জানান তিনি।

মা-বাবার বিষপানে আত্মহত্যাচেষ্টার বিষয়ে জানতে চাইলে ছেলে সবুজ শেখ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. স্নিগ্ধা আক্তার জানান, বিষপান করে দুজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে আলম শেখের স্ত্রী নাজমা বেগমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

গণমাধ্যমের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
দুই দিনের ঢাকা সফরে এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব
ছেলে-পুত্রবধূর অপমান সইতে না পেরে বৃদ্ধ মা-বাবার বিষপান
৪৬তম বিসিএস প্রিলির ফল প্রকাশ হতে পারে আগামীকাল
জনগণের কষ্ট লাঘবে সরকার সবসময় সচেষ্ট: প্রধানমন্ত্রী
ফের আলিয়া ভাটের আপত্তিকর ভিডিও ফাঁস!
‘কাচ্চি ভাই’ রেস্টুরেন্টের মালিক সিরাজ গ্রেপ্তার, দুই দিনের রিমান্ডে
এক লাফে ডলারের দাম বাড়ল ৭ টাকা
আজ বিশ্ব গাধা দিবস, পালন করা হয় যেভাবে...
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ৩০-৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে: সিইসি
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে জাইকার প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ
প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা
বগুড়ায় ব্যালট পেপার বাইরে দেওয়ায় প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও প্রার্থীর এজেন্ট আটক
জাতীয় দলে ফিরলেন সাকিব-মুস্তাফিজ-সৌম্য
ওমরাহ পালন শেষে দেশে ফিরলেন মির্জা ফখরুল
মাদারীপুরে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, বিস্ফোরণ, আহত ১০
দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে অনুসন্ধান চলছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ভোট কারচুপির অভিযোগে ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির ভোট বর্জন
মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুপক্ষের মারামারি, আহত ৫০
নওগাঁর ভোট কেন্দ্রগুলোতে নেই ভোটার উপস্থিতি