শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ | ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান

বাবা, তার মৃত্যু

যুদ্ধ, বোমা বিস্ফোরণ

একটানা পাঁচটা সিঁড়ি বেয়ে, নিশ্চিত গতিতে একটাও ভুল পদক্ষেপ না ফেলে, তার শরীর যেন সিঁড়িগুলোর সঠিক উচ্চতা এখনও ঠিক ঠিক মনে রেখেছে, তেমনিভাবে দৌড়ে উঠে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে দরজার সামনেই জ্যাক মাকে জড়িয়ে ধরল। যখন সে ট্যাক্সি থেকে নামল তখন রাস্তাটা ইতোমধ্যে জেগে উঠেছে; জায়গায় জায়গায় সকাল ঝলমল করে উঠছে। কুয়াশার ভেতরে পল্লবিত তাপ চারপাশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। অনেক দিন আগে যেখানে তাকে দেখা গেছে সেখানেই মাকে দেখতে পেল জ্যাক নাপিতের দোকানের মাথার উপরে দুই রুমের মাঝখানে সরু ব্যালকনিতে।

এই নাপিত লোকটা অবশ্য জাঁ এবং যোসেফের বাবা নন; তিনি যক্ষায় মারা গেছেন। তার স্ত্রী বলতেন তার কাজের কারণেই যক্ষা হয়েছিল, মানে তার নিঃশ্বাসের সঙ্গে সব সময় শরীরের মধ্যে চুল প্রবেশ করত। টিনের চালার উপরে আগের মতোই আছে ডুমুরের ফল, ছোট ছোট কাগজের টুকরো, সিগারেটের গোড়ালি ইত্যাদি। মা ওখানে দাঁড়িয়েছিলেন। চুল এখনও অনেক; তবে বেশ কয়েক বছর আগেই পেকে গেছে। বয়স বাহাত্তর বছর হয়ে গেলেও শরীর টানটান; হালকা পাতলা শরীরের কারণে তাকে আসলে বয়সের চেয়ে দশ বছরের মতো ছোট দেখায়। শরীরের শক্তি মনে হয় আগের মতোই আছে; তাদের পরিবারের সবারই শরীর-স্বাস্থ্য এরকমই। তাদের সবারই শরীর হালকা পাতলা, নির্লিপ্ত চালচলনের কারণে ক্লান্তিহীন অবয়ব। তাদের কারও উপরে বার্ধক্য ভর করতে পারেনি। পঞ্চাশ বছর বয়সেও তার আধাবোবা মামা এমিলকে অল্পবয়সী যুবকের মতো মনে হয়। নানি মারা যাওয়ার সময়েও তার মাথা একটু নুইয়ে পড়েনি। আর তার মা, যার কাছে জ্যাক এই তো ছুটে এসেছে, কোনো কিছুই তার নীরব সহ্য ক্ষমতাকে ক্ষয় করতে পারেনি। জ্যাক ছোটবেলায় সর্বান্তকরণে মায়ের অল্পবয়সী সুদর্শনা চেহারাটা ভক্তিতে উচ্চে তুলেছে; তার সেই চেহারাটা দশকের পর দশক ধরে কায়িক শ্রমের বোঝা পার করেছে। তবু যেন সেই অল্পবয়সীই রয়ে গেছেন তিনি।

জ্যাক চৌকাঠের কাছে পৌঁছলে মা দরজা খুলে দিয়ে নিজেকে ছেলের বাহুতে এলিয়ে দিলেন। আগে যেমন প্রতিবারই পুনর্মিলনের সময় দুতিনবার চুমু খেতেন ছেলেকে এবারও নিজের শরীরের সঙ্গে সর্বশক্তি দিয়ে চেপে ধরে চুমু খেলেন। আর জ্যাক মাকে নিজের বাহুর মধ্যে ধারণ করে মায়ের পাঁজরের হাড়গুলোর অস্তিত্ব টের পেল। মায়ের কাঁধের বের হয়ে আসা অস্থিগুলো যেন একটুখানি কেঁপে গেল। তখন মায়ের ত্বকের কোমল সুগন্ধ জ্যাকের নাকে আসে আর মনে পড়ে যায় মায়ের স্বরযন্ত্রের নিচে এবং ঘাড়ের তন্তুর মাঝের দাগের কথা। আগে ওখানে চুমু দেওয়ার সাহস হতো না।

তবে মাঝে মাঝে মা তাকে কোলে বসিয়ে দিলে ধুমের ভান করে ওখানে নাক ডুবিয়ে থাকতে ভালো লাগত; ছেলেবেলায় মায়ের ঘাড়ের ওখানে নাক ডুবিয়ে যে কোমলতার পরশ পেত ওই জীবনে আর কোথাও তেমন পেত না। মা এবার জ্যাককে বুকের মাঝে জড়িয়ে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আবার ছেড়ে দিলেন যেন ছেলের প্রতি তার ভালোবাসা কতখানি আছে কিংবা কতখানি প্রকাশ করেছেন তা মেপে দেখছেন এবং বুঝতে পারছেন, আরও খানিকটা বাদ আছে প্রকাশ করা। সেটুকু প্রকাশ করতেই তিনি আবেগভরা কণ্ঠে বলে উঠলেন, বাবা, কত দূরে ছিলি এতদিন! তারপর ঘুরে গিয়ে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে রাস্তামুখি খাবার ঘরটাতে গিয়ে বসলেন। মনে হলো, তিনি আর ছেলের কথা ভাবছেন না কিংবা তিনি আর বর্তমানের মুহূর্তে নেই: ছেলের দিকে এমনভাবে থেকে থেকে তাকাচ্ছেন যেন ছেলে তার সামনে নেই; ছেলে রাস্তায় আছে আর এই শূন্য, সরু, আবদ্ধ জায়গাতে তার একাকী অবস্থানকে ছেলের অনুপস্থিতি অস্থির করে দিচ্ছে।

জ্যাক তার পাশে বসে পড়ার পর মনে হলো, তিনি যেন আজও কোনো এক দুশ্চিতার মধ্যেই আছেন, থেকে থেকে রাস্তার দিকে তাকাচ্ছেন তার সুন্দর বিষণ্ন চাহনির প্রকাশ দিয়ে। যতক্ষণ চোখ জোড়া রাস্তার দিকে ততক্ষণ চোখের উপর অস্থিরতা ভর করে আছে; রাস্তা থেকে ছেলের দিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে আনার সঙ্গে সঙ্গে চোখ দুটো যেন শান্ত হয়ে যাচ্ছে।

রাস্তাটা আরও হৈচৈপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে: লাল রঙের বিশাল ট্রলিবাসগুলো ক্রমেই সংখ্যায় বেশি হচ্ছে এবং জোরে শব্দ করতে করতে চলা শুরু করছে। জ্যাক মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকে: সাদা কলারঅলা ধূসর রঙের ছোট একটা ব্লাউজ পরে আছেন তিনি; আগেও জানালার পাশের যে অস্বস্তিকর একটা চেয়ারে বসতেন সেটার উপরেই বসে আছেন; বয়সের কারণে পিঠটা একটুখানি প্রশস্ত হয়ে গেছে, তবু চেয়ারের গায়ে হেলান দেননি; হাতে একটা রুমাল; রুমালটা তার শক্ত হয়ে যাওয়া আঙুলে পেঁচিয়ে গোলাকার বল বানাচ্ছেন, আবার পরনের কাপড়ের ফাঁকায় রেখে দিচ্ছেন। মাথাটা কিছুটা জানালার দিকে ফেরানো। ত্রিশ বছর আগে যেমন ছিলেন তেমনই আছেন তিনি। মুখের উপরে বার্ধক্যের ভাঁজগুলো থাকলেও মুখটা অলৌকিকভাবে আগের মতোই রয়ে গেছে। মসৃণ এবং মার্জিত ভ্রু জোড়া যেন কপালের উপরে বসিয়ে দেয়ো হয়েছে। ছোট নাকটা সোজা, খাড়া। দুশ্চিন্তার ছাপ সত্ত্বেও মাড়ির পাশ থেকে ঠোঁটের সঙ্গে যেন তার মুখটা সুস্পষ্টভাবে অংকন করে রাখা হয়েছে। ঘাড়ের পাশটা দ্রুতই দুর্বল হয়েছে মনে হলেও আকৃতি আগের মতোই আছে; অবশ্য তন্তুগুলো গ্রন্থিল হয়ে গেছে; আর থুতনি কিছুটা দুর্বল হয়েছে।

জ্যাক জিজ্ঞেস করল, নাপিতের ওখানে গিয়েছিলে?

দুষ্টুমিতে ধরা পড়া বাচ্চা মেয়ের মতো করে হাসলেন মা, হ্যাঁ, তুই আসছিলি বলে। স্পষ্ট করে দেখা না গেলেও মায়ের আচরণে একটা অপ্রকাশী ভাব থাকে: যা বলছেন তার মধ্যে কেমন একটা প্যাঁচ। আবার অন্যদিকে তার পোশাক আশাকের ব্যাপারে একদম সোজাসাপটা: অরুচিকর কোনো পোশাক তাকে পড়তে দেখেনি জ্যাক। এখনও ধূসর আর কালো রঙের পোশাক পরেছেন; তার মধ্যে রয়েছে রুচিপূর্ণ নির্বাচনের ছাপ। এরকমটাই তাদের বংশের লোকদের ধারা: সব সময়ই হতভাগ্য অবস্থা, একেবারেই গরিব, কিংবা কারো অবস্থা একটু স্বচ্ছল–যা-ই হোক না কেন, তাদের পোশাকের বাছবিচার বেশ স্পষ্ট। তাদের সবাই, বিশেষ করে পুরুষেরা, ভূমধ্যগাগরীয় অন্য সবার মতোই সাদা শার্ট আর স্ত্রী করা ট্রাউজার পরার উপরে জোর দিয়ে আসছে।

নিজেদের পোশাক-আশাক সংখ্যায় কম হলেও নিয়মিত ভালো করে ধুয়ে স্ত্রী করার বাধ্যবাধকতা থাকার কারণে নারীদের কাজের পরিমাণ আরও বেড়ে যাওয়াই স্বাভাবিক, তা সে নারী মা, স্ত্রী যে-ই হোক না কেন। জ্যাকের মায়ের কথা বলতে গেলে, তিনি মনে করতেন, অন্য লোকদের ঘরদোর পরিষ্কার করা এবং জামা কাপড় ধোয়াই যথ্ষ্টে নয়, বাড়ির লোকদের জামাকাপড়ও পরিষ্কার করা দরকার। জ্যাকের যতদূর মনে পড়ে, তাদের দুভাইয়ের মাত্র একটা করে ট্রাউজার ছিল। তবু সেগুলো ধুয়ে নিয়মিত স্ত্রী করে দিতেন মা। পরবর্তীতে জ্যাক বাইরের জীবনে প্রবেশ করে দেখেছে সেখানে নারীরা কেউ এই কাজ করে না।

মা বললেন, এই লোকটা ইতালীয়; কাজকর্ম ভালোই করে।

হ্যাঁ, বলল জ্যাক। সে বলতে যাচ্ছিল, মা তুমি কত সুন্দর। কিন্তু বলতে পারল না। মা সম্পর্কে তার ধারণা সব সময় এরকমই ছিল। তবে কখনওই বলা হয়নি। অবশ্য এর পেছনে এমন কোনো কারণ নেই যে, মা তার এই প্রশংসার কথা অবজ্ঞাভরে উড়িয়ে দেবেন, কিংবা এরকম প্রশংসায় মা খুশি হবেন–তাও মনে হয়নি। বরং মনে হয়েছে, তার এবং মায়ের মাঝে যে অদৃশ্য দেয়াল আছে সেটায় ফাটল তৈরি হতে পারে; দেয়ালের আড়ালেই মাকে সে সারা জীবন আশ্রয় নিতে দেখে এসেছে। তখন মাকে মনে হয়েছে কত বিনয়ী, নম্র, সৌজন্যপূর্ণ, এমনকি অপ্রতিরোধী তবে কোনো ব্যক্তি কিংবা কোনো বিষয় তাকে জয় করতে পারেনি। কিছুটা বধির হওয়ার কারণে তিনি সবার থেকে বিচ্ছিন্ন, নিজেকে প্রকাশ করতে অপারগ। সুন্দর হলেও কার্যত অপ্রবেশ্য; আর মায়ের এই অবস্থাটা সবচেয়ে বেশি মনে বেজেছে মা যখন অন্য সময়ের চেয়ে একটু বেশি হাসিখুশি ছিলেন এবং জ্যাক মায়ের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য পেতে উৎসুক ছিল তখন। হ্যাঁ, সারা জীবন জ্যাক মায়ের এরকম আচরণই দেখে এসেছে: সমীহজাগানিয়া-ভীতিকর এবং নমনীয়, তবু দূরের।

ত্রিশ বছর আগেও মায়ের এই চাহনিই দেখেছে জ্যাক; তখন তার নানি চাবুক দিয়ে জ্যাককে আঘাত করেছেন। আর মা কিছু বলতে পারেননি। মা নিজে কোনো দিন তাদের গায়ে হাত তোলেননি, এমনকি কোনো দিন বকুনিও দেননি; সন্দেহ নেই, ছেলের গায়ের আঘাতে তিনিও জর্জরিত হয়েছেন। তবু তিনি কিছু করতে পারেননি। কারণ তিনি ছিলেন ক্লান্ত; কারণ বলার মতোকোনো কথা তার মুখ দিয়ে বের হয়নি। কারণ তার মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাও ছিল; তিনি হস্তক্ষেপ করতে পারেননি।

প্রত্যেকটা দীর্ঘ দিন, প্রত্যেকটা দীর্ঘ বছর তিনি তার সন্তানদের উপর বর্ষিত সেই আঘাত সহ্য করেছেন যেভাবে অন্য লোকদের কাজ করার জন্য তাকে কঠিন পরিশ্রমের ভেতর দিয়ে সময় পার করতে হয়েছে: তাদের কাপড় ধোয়া, হাঁটুর উপর ভর করে মেঝে পরিষ্কার করা–সবই করতে হয়েছে। পুরুষ-শূন্য জীবন যাপন করতে হয়েছে অন্য লোকদের আবর্জনা পরিষ্কার করে। একটা একটা করে দিন পার হয়ে বছর গড়িয়ে গেছে তার জীবনে। জীবনে কোনো আশা না থাকায় তার মধ্যে ক্ষোভও তৈরি হয়নি। অজ্ঞ থেকে ধৈর্য ধারণ করতে পেরেছেন। নিজের এবং তার সন্তানদের জীবন কষ্ট ভোগের কাছে ছেড়ে দিয়েছেন। জ্যাক মাকে কখনও কারো বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করতে শোনেনি। বড় জোর বলেছেন তিনি ক্লান্ত, কিংবা সারা দিন অনেক কাপড়-চোপড় ধুয়ে পিঠ ব্যথা করছে। মাকে কারো নামে কোনো খারাপ কথা বলতেও শোনেনি জ্যাক। কখনও হয়তো উল্লেখ করেছেন অমুক বোন কিংবা অমুক খালা-চাচি কেমন রূঢ় আচরণ করেছেন। অন্যদিকে, মাকে কোনো দিন প্রাণ খুলে হাসতেও দেখেনি সে। ইদানিং মায়ের হাসিখুশি ভাবটা একটু বেড়েছে; কারণ তাকে আর অন্য লোকদের কাজ করতে হয় না। তার সব প্রয়োজন তার সন্তানেরা মিটিয়ে থাকে। বাড়িটাও আগের মতোই আছে; এখানে মায়ের নিয়ম মতো চলা। এই পাড়ায় সব কিছু তার কাছে সহজলভ্য; অন্য কোনো আরামের জায়গায় গেলে সবকিছু কঠিন হয়ে যেত বলে মনে হয় তার। এই রুমটাও সেই একই রকম আছে; শুধু আসবাবগুলো তারা বদলে দিয়েছে। এখন আরেকটু মার্জিত রূপ পেয়েছে রুমটা; হত অবস্থাটা কিছুটা দূর হয়েছে; তবু আসবাবপত্রগুলো কেমন ফাঁকা ফাঁকা মনে হয়। সবগুলো আসবাই এখনও দেয়ালঘেঁষা।

তুই আগের মতোই সবকিছু হাতড়ে বেড়াস কেমন, মা বললেন।

হ্যাঁ, দেরাজ না খুললে যেন তার চলেই না; প্রবল আকাঙ্ক্ষা নিয়ে খুলতে গেলেও আসলে দেরাজের ভেতরে অতি নগণ্য প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় না। দেরাজের নিরাভরণ চেহারাটাও তাকে আকর্ষণ করে। দেরাজের ড্রয়ারগুলো খুলে দেখতে পায় দুতিন রকমের ওষুধ–বাড়ির মানুষদের জন্য দরকারে কোনো রকমে চালিয়ে নেয়ওার মতো ওষুধ। সেখানে দুতিন রকমের পুরনো খবরের কাগজ, কয়েক টুকরো সুতা, পড়ে থাকা কয়েকটা বোতামভরা কয়েকটা কার্ডবোর্ড বাক্স আর সবার পরিচিতিমূলক পুরনো একটা ছবির সঙ্গে মিশে আছে। এখানে অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর চেহারাও মলিন; কারণ অপ্রয়োজনীয় জিনিস তাদের কখনোই ছিল না।

জ্যাকের ভালো করেই জানা আছে, তার নিজের বর্তমানের বাড়ির মতো জায়গায় যেখানে সবকিছুর প্রাচুর্য আছে তার মাকে সেখানে নিয়ে গেলেও মা শুধু অতিপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলোই ব্যবহার করবেন। সে জানে, পাশের ঘরটায় মা থাকেন; সেখানে রয়েছে একটা ছোট আলমারি, একটা সরু বিছানা, কাঠের একটা ড্রেসিং টেবিল আর নিচে খড় দেওয়া একটা চেয়ার। ঘরটার একটা জানালায় হাতে বোনা নকশাঅলা একটা পর্দা ঝুলছে। তা ছাড়া আর তেমন কিছু সেখানে পাওয়া যাবে না। বড় জোর ড্রেসিং টেবিলটার উপরে মোড়ানো একটা রুমাল থাকতে পারে। মা আগে সেরকমই রাখতেন।

(চলবে)

এসএ/

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad

অস্থির ডিমের বাজার, প্রতি ডজনে বেড়েছে ৩০ টাকা

ছবি: সংগৃহীত

গত কয়েক মাস পর্যন্ত ডিমের বাজারে কিছুটা স্বস্তি থাকলেও দুই সপ্তাহ থেকে আবারও ঊর্ধ্বমুখী ডিমের দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনে বেড়েছে ৩০ টাকা। মুরগীর দামও বাড়তি।

মাত্র দুই সপ্তাহ আগের ১২০ টাকা ডজনের ডিম এখন কিনতে হচ্ছে ১৫০ টাকায়। এতে বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা। কারণ, ডিমই হলো তুলনামূলক কম দামে প্রোটিন পাওয়ার সবচেয়ে ভালো উৎস।

শুক্রবার (১৭ মে) রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। যা মাসখানেক আগেও ৩৮ থেকে ৪০ টাকা হালিতে বিক্রি হয়েছে। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশও (টিসিবি) তাদের বাজারদরের প্রতিবেদনে ডিমের দাম বাড়ার বিষয়টি তুলে ধরেছে।

ডিম ব্যবসায়ীরা বলেছেন, গত কিছু দিনে সারাদেশে তীব্র দাবদাহের কারণে খামারে অনেক মুরগি মরে গেছে। এতে ডিমের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।

তারা আরও জানান, এক মাস আগে রমজানের সময় ডিমের চাহিদা কমে গিয়েছিল। ফলে তখন দাম কমেছিল। কিন্তু এখন ডিমের চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি ডিমের উত্পাদন কমেছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ডিমের দামের উপর। তবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ডিমের উত্পাদন খরচ হিসেব করে বলছে, একটি ডিমের দাম সর্বোচ্চ ১০ টাকা ৪৯ পয়সা হতে পারে। গত ১৫ মার্চ কৃষি বিপণন অধিদপ্তর যে ২৯টি পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছিল, তাতে একটি ডিমের খুচরা দাম নির্ধারণ করা হয় ১০ টাকা ৪৯ পয়সা।

এদিকে স্বস্তি নেই মুরগির বাজারেও। ব্রয়লারের কেজি ২২০ টাকা আর সোনালী বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব খন্দকার মো. মোহসিন বলেন, গরমের কারণে ডিমের উত্পাদন ব্যাহত হচ্ছে। যার প্রভাব পড়েছে ডিমের দামের ওপর। রমজানের সময় ডিমের চাহিদা কম থাকায় দাম কমে আসে। কিন্তু এখন বাজারে সবজি ও মাছের দাম বাড়ায় ভোক্তারা ডিমের প্রতি বেশি ঝুঁকেছে। ডিমের দাম বাড়ার এটিও একটি কারণ বলে তিনি মনে করেন।

প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, কিছুদিন আগে ডিমের দাম কম ছিল। তখন এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী কোল্ড স্টোরেজে ডিম সংরক্ষণ করেছে। এখন সেই ডিম তারা বেশি দামে বিক্রি করছে। এ কারণে ডিমের দাম বেড়েছে। তবে ডিমের বাড়তি এই দর এখন খামারিরা পাচ্ছেন বলে তিনি জানান।

মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ গেল কলেজছাত্রের

নিহত কলেজছাত্র মেহেদী হাসান মিশু। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় মেহেদী হাসান মিশু (১৮) নামে এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন। শনিবার (১৮ মে) ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

শুক্রবার (১৮ মে) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কষ্টাপাড়া নামক এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন মিশু।

নিহত মেহেদী হাসান মিশু উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কয়েড়া গ্রামের স্কুলশিক্ষক রফিকুল ইসলাম মোল্লার ছেলে। গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কয়েড়া ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রুবেল সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, মেহেদী হাসান শুক্রবার রাতে মোটরসাইকেলযোগে গোবিন্দাসী এলাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে কষ্টাপাড়া এলাকায় পৌঁছালে পেছন দিক থেকে একটি ট্রাক মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে যায় মেহেদী।

এরপর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। পরে তার অবস্থার আরও অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। সে ঘাটাইল ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্র।

ইউপি সদস্য মো. রুবেল সরকার বলেন, গত শুক্রবার রাতে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আজ শনিবার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। বাদ আসর নামাজের পর জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন করা হবে।

এ ঘটনায় ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্ বলেন, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর খবর জানা নেই। কেউ অভিযোগও করেনি।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রবল ঝড়ের আঘাতে ৭ জনের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টন শহরে ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে অন্তত ৭ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। শক্তিশালী এই ঝড়ের তাণ্ডবে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে ওই অঞ্চলের পাঁচ লক্ষাধিক বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। সেখানের কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাতের এ ঝড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েক সপ্তাহ বিদ্যুৎহীন থাকতে হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গাছপালা ও বিদ্যুতের লাইন উপড়ে এবং বজ্রপাতে বেশিরভাগ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। ঝড়ের পর উপসাগরীয় উপকূল অঞ্চলে বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তবে ঝড়টি প্রতিবেশী লুইসিয়ানা অঙ্গরাজ্যে চলে গেছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা।

ঝড়ের পর গতকাল শুক্রবার কর্তৃপক্ষ জানায়, শক্তিশালী এ ঝড়ে বজ্রপাতে ৮৫ বছর বয়সী এক নারী, বৈদ্যুতিক খুঁটি সরাতে গিয়ে ৫৭ বছর বয়সী একজন এবং অসুস্থ অবস্থায় অক্সিজেনের অভাবে আরও একজন মারা গেছে। কর্মকর্তারা এর আগে বলেছিলেন, ঝড়ে গাছ পড়ে দুজন, ক্রেন পড়ে একজন এবং গাড়ির ওপর গাছ পড়ে একজনসহ মোট চারজন মারা গেছেন। এ নিয়ে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় সাতজনে।

গতকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে হ্যারিস কাউন্টির শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা টেক্সাসের বিচারক লিনা হিডালগো জানান, কমপক্ষে দুটি টর্নেডো বৃহস্পতিবার রাতে এই অঞ্চলে আঘাত হেনেছে। বৃহস্পতিবারের ঝড়ে হিউস্টন শহরের বিভিন্ন ভবনের জানালার কাচ ভেঙে রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। জ্বলছে না সড়কের বাতিও। কর্তৃপক্ষ বলেছে, ঝড়টির গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ১৭৭ কিলোমিটার।

১৯৮৩ সালে হারিকেন অ্যালিসিয়ার পর এই অঞ্চলে এমন গতিতে আর কোনো ঝড় হয়নি বলেও জানান বিচারক হিডালগো।

শুক্রবার হিউস্টনে মৃদু তাপমাত্রা ছিল, তবে আর্দ্রতার সঙ্গে সপ্তাহের শেষে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া বিভাগের কর্মকর্তারা। ঝড়ের কারণে গতকাল শুক্রবার ওই অঞ্চলে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রোববার (১৯ মে) পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়। খবর বিবিসি

সর্বশেষ সংবাদ

অস্থির ডিমের বাজার, প্রতি ডজনে বেড়েছে ৩০ টাকা
মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ গেল কলেজছাত্রের
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবল ঝড়ের আঘাতে ৭ জনের মৃত্যু
জিয়াউর রহমান বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন: ওবায়দুল কাদের
মা হারালেন সংগীতশিল্পী মোনালি ঠাকুর
মালয়েশিয়ায় ২ লাখ টাকায় বিক্রি হওয়ার অভিজ্ঞতা জানালেন বাংলাদেশি শ্রমিক
মসজিদে ভোজের আয়োজন করলেন ডিআইজি বাতেন, ইসিতে অভিযোগ
ধোলাইখালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের আগুন নিয়ন্ত্রণে
টাঙ্গাইলে ধান কাটতে এসে বজ্রপাতে প্রাণ হারালেন দুই ভাই
মেসি-বার্সা চুক্তির সেই ন্যাপকিন বিক্রি হলো ১১ কোটি টাকায়
এবার রাজধানীর ধোলাইখালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে আগুন
কারওয়ান বাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে
গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি-বাতাসে রাজধানীতে স্বস্তি
সাতক্ষীরায় ট্রাক উল্টে প্রাণ গেল দুই শ্রমিকের, আহত ১১
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট
ভাঙা হাত নিয়েই ‘কান চলচ্চিত্র উৎসব’ মাতালেন ঐশ্বরিয়া
ঢাকাসহ ৬ বিভাগে ঝড়-শিলাবৃষ্টির আভাস, কমবে তাপপ্রবাহ
আচরণবিধি লঙ্ঘন: আ.লীগ নেতাকে জরিমানা, ৭ ডেগ খিচুড়ি জব্দ
সৌদিতে চলতি বছরে প্রথম বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু
যমজ ২ বোনকে হাতুড়ি দিয়ে পেটালেন ছাত্রলীগ নেতা