মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫ | ১৭ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান

সৈকতে যেতে ভেড়ার পথ নামক একটা এলাকা পর হতে হতো। কারণ আসলেই আলজিয়ার্সের মাইসন কারি বাজারে যাওয়া আসার পথে অনেক ভেড়া ওই পথে যাতায়াত করত। আসলে সেটা ছিল একটা পার্শ্বিক রাস্তা। সমুদ্র আর শহরকে বিভাজনকারী এই রাস্তাটা এম্পিথিয়েটারের মতো পাহাড়ের দিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। রাস্তা আর সমুদ্রের মাঝে ছিল কারখানা, ইটের ভাটা, গ্যাসের কারখানা; রাস্তাটা কাদামাটি কিংবা চুনাগুড়ার আস্তরণে ঢাকা বালিময় এলাকা দ্বারা বিচ্ছিন্ন ছিল অন্য সবকিছু থেকে। সেখানে লোহা আর কাঠের ছাঁট সাদায় পরিণত হতো। সাবলেতেস সৈকতে পৌঁছতে হলে ওই ঊষঢ় এলাকাটা পার হতে হতো। সৈকতের বালির মধ্যে থাকত ময়লা আবর্জনা। আর প্রথম ঢেউয়ের পানি সব সময় পরিষ্কার থাকত না। ডান দিকের গণগোসলখানায় কেবিন ছিল। রণপায়ের ওপর স্থাপিত কাঠের বাক্সের আকারের হলে ছুটির দিনে নাচার ব্যবস্থাও থাকত।

জমজমাট মৌসুমে ফ্রেঞ্চ-ফ্রাইঅলা সৈকতে স্টোভ জ্বালাত। জ্যাকদের ছোট দলের কারো কাছে বেশিরভাগ সময়ই এক ঠোঙা আলুভাজা খাওয়ার পয়সাও থাকত না। যদি কখনও তাদের কারো কাছে ভাজা কেনার পয়সা থাকত তাহলে সে ঠোঙা হাতে গম্ভীর চালে সোজা সৈকতের দিকে হাঁটা দিত। পেছনে বাকিরা তাকে সমীহের সঙ্গে অনুসরণ করত। সমুদ্রের ধারে আটকে থাকা ভাঙাচোরা পুরনো কোনো বজরার ছায়ায় পা বিছিয়ে বসে এক হাতে ঠোঙার নিচের অংশ অন্য হাতে ঠোঙার ওপরের অংশ ধরে থাকত যাতে একটা মচমচে টুকরোও যেন পড়ে না যায়। তাদের মধ্যে নিয়ম ছিল ঠোঙার মালিক সঙ্গীদের প্রত্যেককে সুগ্রাস হিসেবে একটা করে টুকরো দেবে এবং তারা শ্রদ্ধার সঙ্গে গরম গরম ওই এক টুকরো খেয়ে কড়া তেলের স্বাদে আহাউহু করে উঠবে। ঠোঙার ভাগ্যবান মালিক বাকি টুকরোগুলো আয়েশ করে খাবে এবং বাকিরা তার খাওয়া দেখবে। টুকরোগুলো শেষ হয়ে গেলে ঠোঙার তলায় পড়ে থাকা আলু ভাজার গুঁড়োগুলো খাওয়ার জন্য সঙ্গীরা পেটুক মালিকের কাছে অনুনয় বিনয় করত। ঠোঙার মালিক কিপটে জাঁ ছাড়া অন্য কেউ হলে সাধারণত ঠোঙাটা ছিড়ে ভেতরের অংশটা বাইরে এনে প্রত্যেককে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র একেকটা টুকরো খেতে দিত। তখন সবার মাঝে কাড়াকাড়ি পড়ে যেত কে আগে নেবে, কে বড় টুকরোটা নেবে।

খাওয়া-পর্ব শেষ হয়ে গেলে আনন্দ আর হতাশার কথাও তারা ভুলে যেত। এরপর সৈকতের পশ্চিম প্রান্তের দিকে দৌড় শুরু করত সবাই। পশ্চিম প্রান্তে ছিল ইটসুরকির একটা ভাঙা কাঠামো। হয়তো কোনো এক সময়কার বাংলোর ভিত্তি ছিল সেটা। ওই কাঠামোটার কাছে না পৌঁছনো পর্যন্ত তাদের দৌড় চলতেই থাকত। কাঠামোটার আড়ালে সবাই পরনের কাপড় খুলে ফেলত। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সবাই দিগম্বর হয়ে যেত। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই সবাই পানিতে নেমে আনাড়ি ভঙ্গিতে সাঁতার কাটত, চিৎকার ছুড়ে দিত, মুখ থেকে কুলি করে পানি ছিটিয়ে দিত, কে কত গভীরে ডুব দিতে পারে কিংবা কে সবচেয়ে বেশিক্ষণ পানির নিচে ডুব দিয়ে থাকতে পারে তার বাজি ধরত।

সমুদ্র শান্ত এবং উষ্ণ; তাদের ভেজা মাথার ওপরে সূর্যের হালকা আলো পড়ত আর আলোর ঔজ্জ্বল্য তাদের কচি শরীরের ওপর পড়ার ফলে থেকে থেকে আনন্দের চিৎকার ছুড়ে দিত তারা। জীবনের ওপরে এবং সমুদ্রের ওপরে তারা রাজত্ব করত তখন। অভিজাত লোকদের মতো তারা মনে করত, তাদের সম্পদের কোনো সীমা নেই। বেপরোয়ভাবে তারা পৃথিবীর এই দানের সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ উপহার উপভোগ করত।

সমুদ্র আর সৈকতের মাঝে ওঠা নামা করতে করতে তারা সময়ের কথা ভুলে যেত। বালির ওপরে উঠে আসলে তাদের শরীর আঠালো মনে হতো আর সমুদের পানিতে নেমে আবার সাদা পোশাকের মতো বালি ধুয়ে ফেলত। তারা এরপর দৌড়তে থাকত এবং দৌড়ের সঙ্গে তাদের চিৎকার আশপাশের কারখানাগুলোর মধ্যে ডুবে যেতে থাকত। তখন আকাশ ফাঁকা হয়ে যেত এবং দিনের তপ্ত হালকা কুয়াশা উঠে গেলে চারপাশ পরিষ্কার হয়ে উঠত, তারপর সবুজাভ আভা ছড়িয়ে পড়ত। আলো কমে আসলে উপসাগরের অন্য পাশটা তখনও মনে হতো কুয়াশায় ঢাকা। বাড়িঘর আর শহরের ঢালু বিস্তার আরও সুস্পষ্ট মনে হতো। তখনও দিন; তবু আফ্রিকার সংক্ষিপ্ত গোধূলির প্রস্তুতি হিসেবে বাতি জ্বালানো হতো তখনই।

সবার আগে সাধারণত পিয়েরে সংকেত দিত, দেরি হয়ে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে যেত, যতদূর সম্ভব দ্রুত বিদায়। অন্যদের কথা মোটেও না ভেবে যোসেফ এবং জাঁর সঙ্গে বাড়ির দিকে দৌড়তে থাকত জ্যাক। সৈকতের সীমানার বাইরে না আসা পর্যন্ত তারা ঘোড়ার দুলকি দৌড়ের গতিতে চলতে থাকত। তাদের জানা ছিল, যোসেফের মায়ের হাত ভালোই চলে; জ্যাকের নানির হাতও। দ্রুত নেমে আসা রাতের মধ্যে তারা দৌড়ত। গ্যাসের প্রথম আলো জ্বলে উঠলে তাদের আত্মা চমকে উঠত। তাদের সামনে থেকে ট্রলি বাসগুলো আলো জ্বালিয়ে দূরে বিলীন হয়ে যেত। আরও দ্রুত দৌড়তে দৌড়তে তারা দেখতে পেত, রাত ইতোমধ্যে জেঁকে বসেছে। শেষে দরজার কাছে এসে জ্যাক ওদের থেকে আলাদা হয়ে যেত বিদায় না জানিয়েই।

এ রকম সব সন্ধ্যায় জ্যাক পুতিগন্ধময় সিঁড়ির কাছে এসে দেয়ালে হেলান দিয়ে খানিক দাঁড়িয়ে থাকত যাতে হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক হয়ে আসে। কিন্তু অপেক্ষা করতে পারত না। আতঙ্কে বরং হৃদস্পন্দন আরও বেড়ে যেত। তিন লাফে সিঁড়ির মাঝখানে, টয়লেটের দিকে যাওয়ার দরজা দিয়ে সোজা মেঝের দিকে পা বাড়াত এবং দরজা খুলত। খাবার ঘরের কোণায় আলো জ্বলত। থালাবাসনের সঙ্গে ঘষা খাওয়া চামচের ক্যাচক্যাচানি শোনা যেত। আরও সামনে প্রবেশ করে দেখত, তার আধো বোবা মামা সশব্দে সুপ পান করে যাচ্ছে। মায়ের বয়স তখনও অল্প ছিল। ছড়িয়ে পড়া বাদামী চুলের আড়ালে মায়ের শান্ত চাহনি চোখে পড়ত। মা কথা বলা শুরু করতেন, তুই ভালো করেই জানিস....।

কিন্তু জ্যাক তখন নানির শুধু পেছন পাশটা দেখেছে যখন তিনি তার মেয়ের কথার মাঝে নিজেই কথা বলা শুরু করে দিয়েছেন। কালো পোশাকে নানির শরীর ঋজু; মুখাবয়ব কাঠিন্যে ভরা; সোজাসুজি কড়া চোখে তাকিয়ে নানি জিজ্ঞেস করতেন, কোথায় ছিলি?

–পিয়েরে আমার পাটীগণিতের বাড়ির কাজ দেখিয়ে দিচ্ছিল।

সোজা হয়ে উঠে দাঁড়িয়ে নানি তার কাছে এসে জ্যাকের চুল শুঁকতেন। তারপর জ্যাকের পায়ের দিকে হাত দিয়ে দেখতেন–বালির আস্তরণে ঢাকা পড়ে আছে গোড়ালি।

–তুই সৈকতে গিয়েছিলি।

মামা কোনো রকমে বলে উঠতেন, তাহলে তুমি মিথ্যে বলছ।

জ্যাকের পিছন দিকে এগিয়ে গিয়ে নানি দরজার পেছন থেকে কড়া চাবুকটা নিয়ে আসেন। পায়ের নিচের দিকে এবং পাছায় সপাং সপাং বাড়ি মারেন গোটা চারেক। ব্যথায় চিৎকার দিয়ে ওঠে জ্যাক। একটু পরে মুখ আর গলা অশ্রুতে ভরে গেলেও মামার দয়াপরবশ হয়ে দেওয়া সুপের প্লেট সামনে নিয়ে জ্যাক আপ্রাণ চেষ্টা করে চোখ বেয়ে যেন অশ্রু না নামে। নানির দিকে এক নজর তাকিয়ে মা তার কাছে উঠে আসেন। মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে জ্যাক ভেতর থেকে অনুভব করতে থাকে, এই তার একমাত্র প্রিয় মুখ। মা বলেন, তোর সুপ খেয়ে ফেল। আর কিছু বলবে না। আর কিছু বলবে না। জ্যাক তখন সব প্রচেষ্টা ছেড়ে দিয়ে কান্নায় ভাসতে থাকত।

জ্যাক করমারি জেগে উঠেছে। ঘুলঘুলির তামার ওপরে আর সূর্যের আলো পড়ছে না। সূর্য দিগন্তে অস্ত গেছে। কেবিনের কাঠের আচ্ছাদনের ওপর আলো পড়ছে। পোশাক পরে নিয়ে জ্যাক ডেকের দিকে পা বাড়াতে থাকে। রাত শেষ হলেই আলজিয়ার্সের দেখা পাবে সে।

(চলবে)

এসএ/

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

বছর ঘুরে ফিরল গণঅভ্যুত্থানের জুলাই

ছবি: সংগৃহীত

আজ ১ জুলাই। দিনটি ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে ‘জুলাই গণ অভ্যুত্থান’-এর সূচনাদিবস হিসেবে। এক বছর আগে এই দিনে দেশের শিক্ষাঙ্গনে শুরু হয়েছিল কোটা সংস্কার আন্দোলনের নতুন ঢেউ, যা পরিণত হয়েছিল ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে।

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে রাজপথে নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)সহ দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

“কোটা না মেধা, মেধা মেধা” স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে শিক্ষাঙ্গন। আন্দোলনকারীরা সরকারকে তিন দিনের আলটিমেটাম দেন, যা পরবর্তীতে রূপ নেয় ৩৬ দিনের এক বিরল গণআন্দোলনে। ২০১৮ সালে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও, ২০২৪ সালের ৫ জুন হাইকোর্ট ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশ দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধেই ১ জুলাই ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

সেদিন শিক্ষার্থীরা কলাভবন, শ্যাডো, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ ও হলগুলো ঘুরে ভিসিচত্বর হয়ে রাজু ভাস্কর্যে সমবেত হন। সেখানে তারা উত্থাপন করেন চার দফা দাবি: ১) ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন বহাল রাখা, ২) মেধাভিত্তিক নিয়োগ অব্যাহত রাখা, ৩) কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল, এবং ৪) কেবল সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্যই সুযোগ রাখার প্রস্তাব।

আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট বার্তা দেন, দাবি না মানা হলে আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে। ২ জুলাই ঢাবি থেকে গণপদযাত্রা এবং ৪ জুলাই পর্যন্ত ক্লাস ও পরীক্ষাবর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘৪ জুলাইয়ের মধ্যে সরকারের উচিত আমাদের দাবির চূড়ান্ত আইনি সমাধান ঘোষণা করা।’ তিনি জানান, একইসাথে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজেও গণপদযাত্রা কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ওইদিন আন্দোলনে সরব ছিলেন। তারা জানিয়ে দেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বৃষ্টিতে ভিজে বিক্ষোভ-সমাবেশে অংশ নেন। তাদের বক্তব্য ছিল স্পষ্ট—"১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে, অথচ আজও আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে। চাকরিতে কোটা নয়, নিয়োগ হতে হবে মেধার ভিত্তিতে।"

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে জাবির প্রধান ফটকে গিয়ে প্রতীকী অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। ১০ মিনিট ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উভয় দিক বন্ধ রেখে সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দেন তারা—৪ জুলাইয়ের মধ্যে রায় বাতিল না হলে এই মহাসড়ক পুরোপুরি অবরোধ করে রাজধানী অচল করে দেওয়া হবে।

একইসাথে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভে অংশ নেন। তারা রায়সাহেব বাজার হয়ে বিক্ষোভ মিছিল শেষে রফিক ভবনের সামনে এসে সমবেত হন। সেখান থেকে তারা ঘোষণা দেন, প্রয়োজনে রক্ত দিয়েও কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তিতে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি ঘোষণা করেছে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ নামের দেশব্যাপী কর্মসূচি। আজ সকালে রংপুরের পীরগঞ্জে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে শুরু হবে এ কর্মসূচি। এরপর গাইবান্ধা ও রংপুর সদরে পথসভায় অংশ নেবেন দলটির নেতারা।

অন্যদিকে বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপির উদ্যোগে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে অংশ নেবেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এবং আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের পরিবার।

Header Ad
Header Ad

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট পাস

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের জন্য ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ইউজিসি থেকে বরাদ্দ পাওয়া যাবে ৬৯ কোটি টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৭ কোটি ১০ লাখ টাকা।

সোমবার (৩০ জুন) প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স রুমে সিন্ডিকেট এর ১০৪তম সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান এই বাজেট উপস্থান করেন। একই সঙ্গে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের সরকারি বরাদ্দের ভিত্তিতে ৭৫ কোটি ৬৯ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদন করা হয়।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত বাজেট চাহিদা ৯২ কোটি ৭০ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা হলেও প্রায় ১৬ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার বাজেট ঘাটতি নিয়েই পাশ হয়েছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট।

পাশকৃত বাজেটে গবেষণায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে দুই কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা যা মোট বাজেটের ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এই খাতে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে বরাদ্দ ছিল দুই কোটি ৬১ লক্ষ টাকা। এছাড়া মোট বাজেটের ৬২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে বেতন-ভাতা ও পেনশন বাবদ। পণ্য ও সেবা বাবদ সহায়তায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ, গবেষণা অনুদান খাতে ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে মূলধন খাতে।

বাজেট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, '২০০৭-২০০৮ অর্থ বছরে বাজেট ছিল এক কোটি ১০ লক্ষ টাকা, সেখান হতে আজকের বাজেট বৃদ্ধি পেয়ে দাড়িয়েছে ৭৬ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। আশার কথা হলো গত বছরের তুলনায় নিজস্ব অর্থায়ন হ্রাস করে সরকারি অনুদান বৃদ্ধি করা গেছে। ভবিষ্যৎ-তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক চাহিদা অনুযায়ী সর্বমোট বাজেট বৃদ্ধি পাবে।'

তিনি আরো বলেন, 'ইউজিসির বরাদ্দ চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত। তবে সংশোধিত বাজেটে ইউজিসির সাথে আলোচনা করে বাজেট আরও বৃদ্ধি করা হবে।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: হায়দার আলী বলেন, 'সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রেখে বাজেট ব্যয় করা হবে।'

Header Ad
Header Ad

সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ খালি

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ২২০টি পদ খালি রয়েছে। সোমবার (৩০ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ২০২৪ সালের সরকারি কর্মচারীদের পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সরকারি চাকরিতে বর্তমানে ১৯ লাখ ১৯ হাজার ১১১টি অনুমোদিত পদ রয়েছে। এর বিপরীতে ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৮৯১ জন কর্মরত আছেন; খালি আছে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ২২০টি পদ।

সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৭টি, ২০১৯ সালে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৩৩৮টি, ২০২০ সালে ৩ লাখ ৮০ হাজার ৯৫৫ এবং ২০২১ সালে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১২৫টি, ২০২২ সালে ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৯৭৬টি এবং ২০২৩ সালে ৪ লাখ ৭৩ হাজার একটি পদ ফাঁকা ছিল।

এখন সরকারি চাকরিতে প্রথম থেকে নবম গ্রেডের (আগের প্রথম শ্রেণি) ২ লাখ ৫৯ হাজার ৬৫৭টি অনুমোদিত পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন এক লাখ ৯০ হাজার ৭৭৩ জন। ফাঁকা আছে ৬৮ হাজার ৮৮৪টি পদ।

১০ থেকে ১২তম গ্রেডে (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) ৩ লাখ ৬২ হাজার ২৮৯টি পদের বিপরীতে কাজ করছেন ২ লাখ ৩৩ হাজার ৭২৬ জন। ফাঁকা রয়েছে এক লাখ ২৯ হাজার ১৬৬টি পদ।

১৩ থেকে ১৬তম গ্রেডে (আগের তৃতীয় শ্রেণি) ৭ লাখ ৬০ হাজার ৬৩৪টি পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৬ লাখ ১৩ হাজার ৮৩৫ জন। ফাঁকা আছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৯টি পদ।

অন্যদিকে ১৭ থেকে ২০তম গ্রেডে (আগের চতুর্থ শ্রেণি) ৫ লাখ ১৯ হাজার ৮১২টি পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৪ লাখ ৪ হাজার ৫৭৭ জন। ফাঁকা রয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ২৩৫টি পদ।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সরকারি দপ্তরে নির্ধারিত ও অন্যান্য কাজের জন্য ১৬ হাজার ১১৬টি পদ থাকলেও এসব পদের বিপরীতে কাজ করছেন ৭ হাজার ৮৯০ জন। ফাঁকা রয়েছে ৮ হাজার ১৩৬টি পদ।

প্রথম থেকে ১২তম গ্রেডের গেজেটেড পদগুলোতে নিয়োগ দেয় সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। আর ১৩ থেকে ২০তম গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগ দেয় মন্ত্রণালয় ও বিভাগ।

সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ৬ হাজার ৬৪টি এবং অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরে ২ লাখ ৯৬ হাজার ১১২টি পদ ফাঁকা রয়েছে। আর বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ১৫ হাজার ২৯টি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে ফাঁকা রয়েছে এক লাখ ৫১ হাজার ১৫টি পদ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বছর ঘুরে ফিরল গণঅভ্যুত্থানের জুলাই
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট পাস
সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ খালি
পুলিশ পরিচয়ে ব্যবহার করা যাবে না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: আরপিএমপি কমিশনার
ভোলায় চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
টাঙ্গাইলের নির্ধারিত স্থানে মডেল মসজিদ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন (ভিডিও)
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ
চুয়াডাঙ্গায় ট্রেন থেকে ফেলে পাউবো কর্মচারীকে হত্যা, পরিবারের মামলা
দেশে নতুন করে আরও ২১ জনের করোনা শনাক্ত
ঢাকার প্রতিটি ভবনের ছাদে সৌর প্যানেল বসানোর নির্দেশ হাইকোর্টের
লুঙ্গি পরে রিকশায় প্যাডেল মেরে ঢাকা থেকে বিদায় নিলেন জার্মান রাষ্ট্রদূত
ইসরায়েলের ৩১ হাজারেরও বেশি ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইরান (ভিডিও)
ইরানের সাথে আলোচনা করছি না, তাদের কিছু দিচ্ছিও না: ট্রাম্প
আসিফ মাহমুদের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে প্রশ্ন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বললেন ‘আইনটা দেখিনি’
নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছে চীন: মির্জা ফখরুল
বিপিএলে নোয়াখালীর অভিষেক, আসছে ‘নোয়াখালী রয়্যালস’
হোটেল থেকে সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার, ময়নাতদন্তে যা জানা গেল
আমাদের ডিভোর্স হয়নি, হিরো আলম অভিমান করেছিল: রিয়ামনি
সরকারি উদ্যোগেও কমেনি ইলিশের দাম, খালি হাতেই ফিরছেন ক্রেতারা
মঙ্গলবার ব্যাংক হলিডে, বন্ধ থাকবে সব লেনদেন