এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী সমন্বয়কের ওপর হামলা!
আহত সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম শহীদের ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১১টায় নগরীর হেতেম খাঁ এলাকায় এ হামলা চালানো হয়।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ বুধবার দুপুর দেড়টায় দুর্বৃত্তদের অতর্কিত হামলা ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আহত সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রাফট সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রাশেদ রাজন বলেন, ‘শহীদরা কয়েকজন মিলে মহানগরীর হেতেমখাঁ এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে মেস করে থাকেন। সেখানে মঙ্গলবার রাত ১১টায় শহীদ রাতের খাবার খাচ্ছিলেন। এ সময় অতর্কিতে ২০ থেকে ২৫ জন দুর্বৃত্ত বাড়িতে প্রবেশ করে লোহার রোড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে।’
স্টুডেন্ট রাইটস এসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী সজীব বলেন, ‘গতকাল রাতে নুরুল ইসলাম শহীদের উপর যে অতর্কিত হামলা করা হয়েছে তা প্রমাণ করে আমি আপনি এবং বিপ্লবী সবার প্রতি এই হামলা ধেয়ে আসছে। প্রধান উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টামণ্ডলী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন রাখতে চাই যারা জুলাই অভ্যুত্থানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। জুলাই বিপ্লবের সম্মুখ সারির নেতারা যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে আপনাদের চেয়ারও খুব বেশিদিন টিকে থাকবে না।’
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের নানা প্রান্তে যারা জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্বে দিয়েছে তাদের উপর হামলা, গুপ্ত হামলা এবং নানাভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমরা উপদেষ্টাদের কেন বসিয়েছিলাম? তাদের কি খালি জায়গা পূরণ করতে বসিয়েছি? যতই দিন যাচ্ছে ততই মনে হচ্ছে বিপ্লবটা চুরি হয়ে যাচ্ছে। যারা অপরাধের সাথে যুক্ত তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমাদের যদি নিরাপত্তাও না থাকে তাহলে বাংলাদেশে থেকে আমাদের কি লাভ? আমাদের নিরাপত্তার যা কিছু দরকার প্রশাসনকে সেই সব পদক্ষেপ নিতে হবে।’
ক্যাম্পাস নিয়ে আরও পড়ুন
জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা সাক্ষাৎ
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ছবিঃ সংগৃহীত
সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনের ফাঁকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেইজ থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
তবে তাদের মাঝে কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয়ে আলাপ হয়েছে কি না সে বিষয়ে জানানো হয় নি।
উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টা সোমবার (২০ জানুয়ারি) দিনগত রাত ১টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সুইজারল্যান্ডের জুরিখের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটে তিনি সেখানে পৌঁছান। সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারিক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম তাকে স্বাগত জানান।
আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না আওয়ামী লীগ
প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: সংগৃহীত
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করার গুঞ্জন থাকলেও দলটি ফিরতে পারবে না বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বুধবার (২২ জানুয়ারি) তার নিজস্ব ফেসবুক প্রোফাইলে এক পোস্টে এই কথা জানান তিনি।
ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করে তিনি জানান, গণহত্যা সমর্থনকারী আওয়ামী লীগের সমর্থকরা ভ্রান্তিতে আছেন যে, দেশ নির্বাচনের দিকে ফিরে গেলে তারা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ফিরতে পারবেন। কিন্তু মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার না করলে এবং খুন ও গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নির্মূল না করা পর্যন্ত এটি সম্ভব না। পাশাপাশি ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগের সদস্য এবং এর সহযোগীদেরও বিচার হবে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিভিন্ন বিদেশি কূটনীতিক এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও লিখেছেন, তারা খুব কমই সমঝোতার বিষয়ে আহ্বান জানিয়েছেন। তারাও বুঝতে পেরেছেন যে, অপরাধীরা যদি তাদের অপরাধ স্বীকার না করে, তাহলে কীভাবে সমঝোতার আহ্বান জানানো যায়? বরং তারা সংস্কার এবং দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঠিক করার বিষয়ে বেশি সমর্থন জানিয়েছেন।
বছর বছর আওয়ামী লীগের সমর্থকরা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ, রক্ষীবাহিনীর হত্যাকাণ্ড এবং শেখ মুজিবের একদলীয় শাসনের স্মৃতি মুছে ফেলতে চেষ্টা চালিয়ে গেছে বলেও স্ট্যাটাসে অভিযোগ করেন শফিকুল আলম।
আরও জানান, বর্তমান প্রজন্ম এবার জেগে উঠেছে এবং তারা স্বৈরশাসনের প্রতিটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে সজাগ রয়েছে। তাদের প্রচেষ্টা প্রতিদিন পুরোনো স্মৃতিকে সতেজ করছে।