খেলা

ইতিহাস গড়ে প্রথমবার এএফসি এশিয়ান কাপে বাংলাদেশের নারী দল


স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ :০৩ জুলাই ২০২৫, ০১:১৯ এএম

ইতিহাস গড়ে প্রথমবার এএফসি এশিয়ান কাপে বাংলাদেশের নারী দল
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল গড়েছে ইতিহাস। প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। আজ বুধবার (২ জুলাই) স্বাগতিক মিয়ানমারকে ২-১ গোলে হারানোর পর গ্রুপের অপর ম্যাচে বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তান ২-২ গোলে ড্র করলে নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের গ্রুপ চ্যাম্পিয়নশিপ এবং এশিয়ান কাপের মূলপর্বে ওঠা।

ইয়াংগুনে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ঋতুপর্ণা চাকমার জোড়া গোলে দারুণ জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। ঐতিহাসিক এই জয়ে ৪৫ বছর পর আবারও এশিয়ান কাপের মূল পর্বে দেখা যাবে বাংলাদেশকে—তবে এবার নারীদের হাত ধরে।

সি গ্রুপে চার দলের মধ্যে দুই ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের পয়েন্ট ৬। মিয়ানমার ৩, আর বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তান পেয়েছে ১ পয়েন্ট করে। বাংলাদেশের আরেকটি ম্যাচ বাকি থাকলেও বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তান ম্যাচ ড্র হওয়ায় এখন আর কোনো দলের পক্ষেই পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ওঠা সম্ভব নয়। এমনকি বাংলাদেশের শেষ ম্যাচে হারলেও হেড টু হেড বিবেচনায় গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন থাকবে বাংলাদেশ।

এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বটি বসবে আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায়। ১৯৮০ সালে পুরুষ ফুটবল দল প্রথম এবং একমাত্রবারের মতো খেলেছিল এশিয়ান কাপের মূলপর্বে। এরপর দীর্ঘ ৪৫ বছর পর এবার নারী দলের এই ঐতিহাসিক সাফল্য বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য নতুন দিগন্তের সূচনা বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এই জয়ের পর আনন্দে ভাসছে গোটা দল। কোচ পিটার বাটলার বলছেন, “আমরা শুরু থেকেই জানতাম, আমাদের মেয়েরা পারবে। তারা সেটা আজ প্রমাণ করেছে। এখন আমরা শেষ ম্যাচে জিতে উৎসবকে আরও রাঙাতে চাই।”

বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তানের ম্যাচটি ছিল নাটকীয়তায় ভরপুর। শেষ মুহূর্তে তুর্কমেনিস্তান ২-১ গোলে এগিয়ে গেলে বাংলাদেশের জন্য তৈরি হচ্ছিল এক অনিশ্চয়তার চিত্র। কিন্তু ইনজুরি টাইমে বাহরাইনের সমতাসূচক গোলে ম্যাচটি ড্র হলে বাংলাদেশের পথ একেবারে পরিষ্কার হয়ে যায়।

এই জয়ের নায়িকা ঋতুপর্ণা চাকমা। তার জোড়া গোলেই কাঁপে মিয়ানমার। ২০১৭ সালে মিয়ানমারে অলিম্পিক বাছাইয়ে বাংলাদেশের জালে ৫ গোল দিয়েছিল মিয়ানমারের মেয়েরা। সেই দলকেই আজ হারিয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ।

৫ জুলাই তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটি এখন শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। তাতে হারলেও এশিয়ান কাপে লাল-সবুজের প্রতিনিধিত্বে কোনো বাধা নেই।

ফুটবল বিশ্লেষকরা বলছেন, এই অর্জন শুধু একটি টুর্নামেন্টে উত্তরণ নয়, বরং বাংলাদেশের নারী ফুটবলের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা। এই মেয়েরা এখন শুধু দেশের গর্ব নয়, দক্ষিণ এশিয়ার জন্যও এক বড় উদাহরণ।