অনির্দিষ্টকালের দেশের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা। ছবি: সংগৃহীত
সারা দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যায় হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তিতে এমন নির্দেশনার কথা জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় করেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি বলা হয়েছে, বিদ্যালয় ও কলেজগামী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মাধ্যমিক (স্কুল) ও উচ্চমাধ্যমিক (কলেজ) পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং পলিটেকনিক ইনস্টিটিউসমূহের শ্রেণি কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
হংকং, জিম্বাবুয়ে, যুক্তরাষ্ট্রের পর এবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে ম্যাচ হেরে গেল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ২০৫ রানও যথেষ্ট হলো না শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশের বোলারদের পিটিয়ে এই রানও তুলে ফেললো আরব আমিরাত! ১ বল হাতে রেখেই ২ উইকেটের ব্যবধানে বাংলাদেশকে হারিয়ে দিলো স্বাগতিকরা!
শেষ ২ ওভারে আরব আমিরাতের প্রয়োজন ছিল ২৯ রান। টেলএন্ডার ব্যাটাররা কি এই রান আর তুলতে পারবে? এমন একটি ভাব ছিল বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে। যার ফলে ভুলটা করলেন শরিফুল ইসলাম। ১৯তম ওভারে তিনি দিলেন ১৭ রান। ওভারের শেষ বলে গিয়ে ওভার থ্রোতে বাউন্ডারি খেয়ে বসলেন। অহেতুক ৫টি রান হজম করে হারতে হলো টাইগারদের।
১ বল হাতে রেখেই ২ উইকেটের ব্যবধানে বাংলাদেশকে হারিয়ে দিলো স্বাগতিকরা। ছবি: সংগৃহীত
তবুও, শেষ ওভারে আমিরাতের প্রয়োজন ১২ রান। তানজিম হাসান সাকিব প্রথমেই দিলেন ওয়াইড। পরের বলে ১ রান। এরপর খেলেন ছক্কা। ৪ বলে ৪ রান প্রয়োজন। তৃতীয় বলটিতে দারুণ ডেলিভারি দিলেন, বোল্ড হলো ব্যাটার। ম্যাচ তখন জমে উঠলো।
তিন বলে চার রান দরকার। মাতিউল্লাহ ১ রান নিলেন। চাপের মুখে চতুর্থ বলটিকে নো করে বসলেন তানজিম। এসময় রান আউটেরও দারুণ সুযোগ ছিল। কিন্তু উইকেটরক্ষক জাকের আলির দুর্বল থ্রো এবং তানজিম সাকিবের তৎপরতার অভাবে রানআউট হলো না। পরের বলে ২ রান নিলেন হায়দার আলি। রান আউটের এবারও দারুণ সুযোগ। কিন্তু তাওহিদ হৃদয় বলটা প্রথমে থ্রো করেননি। কিন্তু যখন থ্রো করলেন তখন দেরি হয়ে গেছে। প্রথমে থ্রো করলেও রান আউট হতো নিশ্চিত।
ছোট ছোট এসব ভুলের কারণে ২০৫ রান করেও শেষ পর্যন্ত হারতে হলো বাংলাদেশকে।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়াম রান প্রসবিনী, আরও একবার প্রমাণ হলো। যে কারণে দুই দল মিলে টি-টুয়েন্টিতে তুলতে পারলো ৪১১ রান। এমন ম্যাচে হারতে হলো বাংলাদেশকে।
অথচ, সিরিজ জয় আজই নিশ্চিত করে ফেলার দারুণ সম্ভাবনা ছিল। আগের ম্যাচে ১৯১ রান করেও ২৭ রানে জয় পেয়েছিল লিটন দাসের দল। আজ ২০৫ রান করার পর জয় কেন নয়! এমনটাই ছিল সমর্থকদের চাওয়া।
কিন্তু ২০৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে আরব আমিরাতের দুই ওপেনার মুহাম্মদ জোহাইব ও মোহাম্মদ ওয়াসিম মিলে ১০৭ রানের অনবদ্য এক জুটি গড়েই বাংলাদেশকে পেছনের পায়ে ঠেলে দেন। ১০.১ ওভারে তানভির ইসলাম যখন জুটি ভাঙেন তখন আরব আমিরাতের ব্যাটারদের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে।
দুই ওপেনার জোহাইব ও ওয়াসিম মিলে অনবদ্য এক জুটি গড়েই বাংলাদেশকে পেছনের পায়ে ঠেলে দেন। ছবি: সংগৃহীত
৩৪ বলে ৩৮ রান করে আউট হন মুহাম্মদ জোহাইব। এরপর রাহুল চোপড়াকে রিশাদ হোসেন দ্রুত (২ রানে) ফিরিয়ে দিলে কিছুটা হলেও ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। দলীয় ১৪৮ রানের মাথায় বিপজ্জনক হয়ে ওঠা মোহাম্মদ ওয়াসিমের উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম। কিন্তু ততক্ষণে জয়ের কাজ করে দিয়ে গেছেন তিনি। ৪২ বলে খেলে গেছেন ৮২ রানের অনবদ্য ইনিংস। ৯টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৫টি ছক্কার মার মারেন তিনি।
এরপর নিয়মিত বিরতিতেই আরব আমিরাতের উইকেট নিতে থাকে বাংলাদেশের বোলাররা। আসিফ খান ১২ বলে ১৯ এবং আলিশান শরাফু ৯ বলে ১৩ রান করে কিছুটা চড়াও হতে চাইলেও নাহিদ রানা ও শরিফুল ইসলাম তাদেরকে বেশি এগুতে দেননি। এরপর আরিয়ানস শর্মা ৭ রানে আউট হলে বাংলাদেশ জয়ের কাছাকাছি চলে আসে।
কিন্তু ধ্রুব পারাসার ১১ রান করে এবং হায়দার আলি ৬ বলে ১৫ রান করে শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশের হাত থেকে ম্যাচটা কেড়ে নেন। এ ক্ষেত্রে অবশ্য বাংলাদেশের ফিল্ডারদেরও দায় কম নয়। অভিজ্ঞতায় স্রেয়তর দল হিসেবে এসব ভুলগুলো না করলে ম্যাচ বাংলাদেশেরই থাকতো।
টস হেরে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। ছবি: সংগৃহীত
এর আগে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম এবং লিটন দাস মিলে ৯০ রানের বিশাল জুটি গড়েই বড় স্কোরের ইঙ্গিত দেন। এরপর শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০৫ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
ওপেনার তানজিদ তামিম ৩৩ বলে ৮ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় ৫৯ রান করে আউট হন। তাওহিদ হৃদয় ২৪ বলে করেন ৪৫ রান এবং লিটন দাস করেন ৪০ রান। এছাড়া নাজমুল হোসেন শান্ত করেন ২৭ রান।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অব্যাহত রয়েছে ইসরায়েলিদের হামলা। চলমান এই হামলায় মধ্যরাত থেকে কমপক্ষে আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদিকে হামলার জেরে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৫৩ হাজার ৫০০ জনে পৌঁছেছে।
এছাড়া গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ৩৩৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২০ মে) পৃথকভাবে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
আল জাজিরা বলছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহর থেকে ফিলিস্তিনিদের পালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর মধ্যরাত থেকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় ব্যাপক বোমাবর্ষণ করেছে এবং আরও ৩৮ জনকে হত্যা করেছে।
এদিকে কানাডা, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের নেতারা গাজায় নতুন করে আক্রমণ বন্ধ না করলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে “জোরালো পদক্ষেপ” নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। অন্যদিকে ২২টি দেশ অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে সাহায্য প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
পৃথক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা আনাদোলু বলছে, গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ১৩৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে ভূখণ্ডটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৩ হাজার ৪৮৬ জনে পৌঁছেছে বলে সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি আক্রমণে আরও ৩৬৪ জন আহত হয়েছেন। এর ফলে সংঘাতের শুরু থেকে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ২১ হাজার ৩৯৮ জনে পৌঁছেছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।
দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় গত সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
করোনাভাইরাস আবারও ভয় ধরাচ্ছে ভারতসহ এশিয়ার একাধিক দেশে। সম্প্রতি হংকং ও সিঙ্গাপুরে করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউ দেখা দিয়েছে, যার প্রভাব এবার ভারতেও স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ভারতজুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এই মুহূর্তে দেশজুড়ে সক্রিয় কোভিড কেসের সংখ্যা ২৫৭ জনে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ১২ মে থেকে ভারতে নতুন করে ১৬৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে কেরালা, মহারাষ্ট্র ও তামিলনাড়ু রাজ্যে। কেরালায় গত সপ্তাহে নতুন করে ৬৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মহারাষ্ট্রে ৪৪ জন এবং তামিলনাড়ুতে ৩৪ জন।
মহারাষ্ট্রের করোনা পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। বর্তমানে সেখানে মোট ৫৬ জন কোভিড পজিটিভ রয়েছেন। সম্প্রতি মুম্বাইয়ের কিং এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল হাসপাতালে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। মৃতদের মধ্যে একজন ৫৯ বছর বয়সী ক্যানসার আক্রান্ত নারী এবং অন্যজন ১৪ বছর বয়সী কিডনি রোগে আক্রান্ত কিশোরী। যদিও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাদের মৃত্যু সরাসরি করোনার কারণে হয়নি, তবে তারা দুজনই কোভিড পজিটিভ ছিলেন।
এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তাদের মৃত্যুসনদে কেন কোভিড সংক্রান্ত কোনো উল্লেখ নেই। বিশেষ করে ৫৯ বছরের ওই নারীর মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর না করে মুম্বাইয়ের ভোইওয়াডা শ্মশানে সরকারি প্রোটোকল মেনে দাহ করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মাত্র দুইজন পরিবারের সদস্য। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সাবেক কর্পোরেটর অনিল কোকিল।
করোনার নতুন এই উত্থান ফের মানুষকে মনে করিয়ে দিচ্ছে ২০২০ থেকে ২০২২ সালের ভয়াবহ দিনগুলোর কথা। যখন কোভিড-১৯ মহামারিতে ভারতের স্বাস্থ্যব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছিল, অর্থনীতি ছিল চরম চাপে, এবং সাধারণ মানুষ ছিল চরম আতঙ্কে। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে প্রশ্ন উঠছে — আবার কি সেই ভয়াবহ সময় ফিরে আসছে?
সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ে বর্তমানে দৈনিক সংক্রমণ বাড়ছে। প্রশাসন দুই জায়গায়ই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ভারতের সঙ্গে এই দুই অঞ্চলের যোগাযোগ থাকায় নয়াদিল্লিতেও বেড়েছে উদ্বেগ।
তবে এখনো পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কিংবা কোনো রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নতুন কোনো স্বাস্থ্য নির্দেশিকা জারি করা হয়নি। চিকিৎসক মহলও এ নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন। কেউ কেউ সাবধানতার পরামর্শ দিচ্ছেন, আবার কেউ মনে করছেন আতঙ্ক না ছড়িয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করাই শ্রেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা এখনো পুরোপুরি বিদায় নেয়নি। তাই সচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এখনো জরুরি। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।