মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের শপথ নিয়ে অনেক আইনি সমস্যা ও মেয়াদ সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
তিনি বলেছেন, ‘জটিলতা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না।’ আজ সোমবার দুপুরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে ইউএনএফপিএ এর সঙ্গে এক সমঝতা স্মারক স্বাক্ষর শেষে তিনি এ কথা বলেন।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের জনদুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।’ এ সময় নগরবাসীর ভোগান্তি নিরসনে আন্দোলনকারীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের পাকিস্তান সফর বিষয় তিনি বলেন, ‘সীমান্তবর্তী কোনো স্টেডিয়ামে যাতে খেলা না হয় এবং সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাকিস্তান এম্বাসির সঙ্গে যোগাযোগ চলছে।’
এ সময় তিনি বিসিবি নির্বাচনের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘এক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেসব জটিলতা নিরসন সম্ভব নয়।’
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: সংগৃহীত
সরকার এখন পর্যন্ত মোট ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
সোমবার (১৯ মে) রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
প্রেস সচিব বলেন, “বর্তমানে সরকারের জব্দ করা সম্পদের পরিমাণ ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৫৮.৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে রয়েছে বিদেশি অর্থ ১৬৪ মিলিয়ন ডলার, অস্থাবর সম্পত্তি ৪২ হাজার ৬১৪.২৭ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ অর্থ ২০.৭ মিলিয়ন ডলার।”
তিনি আরও জানান, “এই অর্থ বাজেটে নয়, বরং দরিদ্র মানুষের কল্যাণে ব্যয় করা হবে। প্রধান উপদেষ্টা একটি বিশেষ তহবিল গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন, যেখানে এই অর্থ সংরক্ষণ করে জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করা হবে।”
সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, “দেশের ব্যাংক খাত থেকে লুটপাট ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তাদের দেশের ভেতরের অনেক সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।”
গভর্নর আরও জানান, “এই জব্দকৃত সম্পদের ব্যবস্থাপনায় একটি ম্যানেজমেন্ট বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ব্যাংক সংশ্লিষ্ট জব্দ অর্থ বিক্রি করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংকগুলোকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। আর দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ ব্যয় হবে জনকল্যাণমূলক কাজে।”
তিনি বলেন, “এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ আইনি কাঠামোর আওতায় পরিচালিত হবে এবং প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধন করা হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান এএফএম শাহীনুল ইসলাম।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রস্তুত ও সংগঠিত করার লক্ষ্যে দিনাজপুরের বিরামপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) একটি কর্মী সভার আয়োজন করেছে।
সোমবার (১৯ মে) সকাল ১০টায় বিরামপুর পৌর শহরের শালবাগান কে এম কমিউনিটি সেন্টারে উপজেলা ও পৌর বিএনপির যৌথ উদ্যোগে এই কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিরামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মিঞা শফিকুল ইসলাম মামুন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর ইলাহী চৌধুরী রুবেল এবং পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজু।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিরামপুর পৌর বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন কবির, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি দবিরুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক নুর ইসলামসহ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সম্পাদক এবং বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, “আমাদের সামনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জাতীয় নির্বাচন রয়েছে। এই নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়, সে লক্ষ্যে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিএনপির প্রতীক ধানের শীষকে বিজয়ী করতে হলে প্রতিটি নেতাকর্মীকে নিষ্ঠা ও দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে। জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ গড়ে তুলতে হবে, যাতে তারা আমাদের ওপর আস্থা রাখতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “এই নির্বাচন হবে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই। তাই এখন থেকেই দলের প্রতিটি ইউনিটকে সক্রিয় ও প্রস্তুত হতে হবে।”
সভার শেষে দলীয় কার্যক্রম আরও জোরদার ও মাঠপর্যায়ে সংগঠনের ভিত্তি মজবুত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে পানি বাড়ছে। সেইসঙ্গে অসময়ে শুরু হয়েছে নদীর পাড় ভাঙন। গত বছর নদী ভাঙনের পর যেটুক ভূমি ছিল সেটুকুও এবার ভাঙনের আশঙ্কায় চরম হতাশার দিন পার করছেন নদীপাড়ের শতশত ভাঙন কবলিত মানুষ। ইতোমধ্যে কিছু কিছু এলাকায় ভাঙন শুরু হয়ে গেছে।
সরেজমিনে উপজেলার জিগাতলা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জিগাতলা গ্রামের প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। সেখানে এবার স্থানীয়রা ভুট্টা, তিল, বাদাম, বোরো ধান ও পাটসহ অন্যান্য ফসল চাষাবাদ করেছিল। এছাড়াও রামপুর, গোপিনাথপুর, বাসুদেবকোল এলাকাতেও একই চিত্র দেখা যায়।
গত বছরের মতো এবারও উপজেলার চিতুলিয়াপাড়া, ভালকুটিয়া, কষ্টাপাড়া ও মাটিকাটা, পাটিতাপাড়া, কোনাবাড়ীসহ কয়েকটি এলাকায় ভাঙনের শঙ্কা রয়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন নদীপাড়ের মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড বার বার আশ্বাস দিলেও বাঁধের কাজ শুরু হচ্ছে না।
এদিকে, প্রতি বছর বন্যায় ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফেলা বাঁধের জিওব্যাগ আনলোড ড্রেজারগুলোর কারণে মাটি ধসে যাচ্ছে। যার ফলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা ও আধপাকা সড়ক, গাইড বাঁধ, বসত-বাড়ি, মসজিদ-মন্দির, ছোট-বড় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।
জিগাতলা গ্রামের ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, এখান থেকে প্রতি বছর অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হতো। সেসময় কোনো ব্যক্তি প্রতিবাদ করতে পারত না, প্রতিবাদ করলে তাদের হুমকি দিত। সাবেক এমপি ছোট মনির খোকার মাধ্যমে ঘাটটি পরিচালনা করতেন। এখন তার খেসারত দিচ্ছে এলাকাবাসী।
ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
ভুক্তভোগীরা আরও জানান, যমুনা নদীতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পানি বাড়ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে ভাঙনও দেখা দিয়েছে। কিন্তু ভাঙনরোধে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। তাদের দাবি যতদ্রুত সম্ভবত ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া। তা না হলে ফসলি জমির সঙ্গে তাদের ঘরবাড়িও নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু আবদুল্লাহ খানকে একাধিবার মোবাইলে কল করলে তিনি রিসিভ করেনি।
টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী শামীম মিয়া জানান, ‘ভূঞাপুরের ইউএনও, এসিল্যান্ডের সঙ্গে তিনি ভাঙন কবলিত জিগাতলা এলাকা পরিদর্শন করেছেন। নদী ভাঙনের স্থান থেকে প্রায় পাঁচ-ছয়’শ মিটার কাছে ঘরবাড়ি রয়েছে। সুতরাং এলাকাটি মনিটরিং করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব’।