বদলে গেলো নাম, ধানমন্ডি ২৭ এখন 'শহীদ ফারহান ফাইয়াজ' সড়ক

শহিদ ফারহান ফাইয়াজের নামে সড়কের ফলক উন্মোচন। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকার ধানমন্ডির পুরাতন ও পরিচিত ২৭ নম্বর সড়কটি এখন থেকে ‘শহীদ ফারহান ফাইয়াজ সড়ক’ নামে পরিচিত হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হওয়া ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ফারহানুল ইসলাম ভূঁইয়ার স্মরণে এই নামকরণ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)।
সম্প্রতি নামফলক উন্মোচনের মাধ্যমে সড়কের নতুন নামের ঘোষণা দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেন,
“ধানমন্ডির পুরাতন ২৭ নম্বর সড়ককে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে’ শহীদ ফারহান ফাইয়াজের নামে নামকরণ করে সড়কের ফলক উন্মোচন করেছে ডিএসসিসি।”
২০২৪ সালের ১৮ জুলাই, ধানমন্ডির এই রাস্তায় রাপা প্লাজা ও জেনেটিক প্লাজার মাঝামাঝি এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান একাদশ শ্রেণির ছাত্র ফারহান ফাইয়াজ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সামনের সারিতে থেকে পুলিশের গুলি ও ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়ে তিনি শহীদ হন।
নামফলক উন্মোচনের সময় উপস্থিত ছিলেন শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা আলহাজ্ব শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়া, ফাইয়াজের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের শিক্ষকবৃন্দ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জিল্লুর রহমান ও অন্যান্য কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহজাহান মিয়া বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের স্মরণ করাই আমাদের দায়িত্ব। ফারহান ফাইয়াজ ছিলেন সেই আন্দোলনের সাহসী মুখ। তার আত্মত্যাগের স্মারক হিসেবে এই সড়কের নতুন নামকরণ।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফারহান ফাইয়াজের বাবা বলেন, “আমার ছেলের প্রাণ গেছে বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলায়। এটি আমার জীবনের অপূরণীয় ক্ষতি। তবে আজকের এই নামকরণ কিছুটা হলেও গর্বের অনুভূতি এনে দিয়েছে। আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।”
অনুষ্ঠানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের জন্য মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়।
প্রসঙ্গত, ফারহান ফাইয়াজ ছিলেন ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছড়িয়ে পড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা। রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের মুখেও সাহসিকতার সঙ্গে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। তার মৃত্যু সেই সময় গোটা দেশে তীব্র প্রতিবাদ ও ছাত্র আন্দোলনের ঢেউ তোলে।
