সপ্তম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয় করলেন শাকিল, গড়লেন বিশ্ব রেকর্ড

এভারেস্টের চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা ওড়ালেন শাকিল। ছবি: সংগৃহীত
‘সি টু সামিট’ অভিযানের অংশ হিসেবে পায়ে হেঁটে কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্রসৈকত থেকে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন ইকরামুল হাসান শাকিল। এই অভিযানে তিনি সময় নিয়েছেন মাত্র ৮৪ দিন, যা দিয়ে তিনি গড়েছেন এক নতুন বিশ্ব রেকর্ড।
সোমবার (১৯ মে) দুপুরে সফলভাবে চূড়ায় পা রেখে এভারেস্টের চূড়ায় উড়িয়েছেন বাংলাদেশের পতাকা। এই অভিযানের মাধ্যমে তিনি হয়ে উঠেছেন সপ্তম বাংলাদেশি, যিনি মাউন্ট এভারেস্ট জয় করলেন।
শাকিলের এ ঐতিহাসিক অর্জনের খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিশ্চিত করেছেন তাঁর অভিযান সমন্বয়কারীরা। তারা জানান, "এইমাত্র খবর পেলাম, শাকিল সামিট করেছে এবং সুস্থ আছে। ক্যাম্প-৪–এ ফিরে এসেছে। তবে নেটওয়ার্ক না থাকায় বিস্তারিত জানানো সম্ভব হচ্ছে না।"
২০২৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কক্সবাজারের ইনানী সৈকত থেকে পায়ে হেঁটে শাকিল শুরু করেন তাঁর দুঃসাহসিক ‘সি টু সামিট’ যাত্রা। শুরুতে তিনি চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা ও মুন্সিগঞ্জ হয়ে ১২ দিনে ঢাকায় পৌঁছান। সেখানে কিছুদিন বিশ্রাম শেষে আবার হাঁটতে শুরু করেন এবং গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ হয়ে ২৮ মার্চ পৌঁছান পঞ্চগড়ে। এরপর ২৯ মার্চ তিনি সীমান্ত পার হয়ে প্রবেশ করেন ভারতে। ভারতের জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং হয়ে ৩১ মার্চ পৌঁছান নেপালে। দীর্ঘ ১,৪০০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ হেঁটে তিনি ২৯ এপ্রিল এভারেস্ট বেজক্যাম্পে পৌঁছান এবং সেখান থেকে শুরু হয় মূল পর্বতারোহণ।
বিশ্বরেকর্ড গড়ার দিক দিয়ে শাকিলের এই যাত্রা একটি মাইলফলক। ১৯৯০ সালে অস্ট্রেলিয়ান পর্বতারোহী টিম ম্যাকার্টনি-স্নেপ ভারতের গঙ্গাসাগর থেকে হেঁটে ৯৬ দিনে প্রায় ১,২০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে মাউন্ট এভারেস্টে পৌঁছান। শাকিল এই পথ পাড়ি দিয়েছেন মাত্র ৮৪ দিনে এবং তিনি হেঁটেছেন আরও একশ কিলোমিটার বেশি পথ। ফলে সময় ও দূরত্ব উভয় দিক থেকেই শাকিল নতুন একটি নজির স্থাপন করলেন।

উল্লেখ্য, এর আগে আরও ছয়জন বাংলাদেশি মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন। তারা হলেন—মুসা ইব্রাহীম, এম এ মুহিত, নিশাত মজুমদার, ওয়াসফিয়া নাজরীন, খালেদ হোসেন ও বাবর আলী। শাকিল তাদের পথ অনুসরণ করে নিজেকে যুক্ত করলেন গৌরবময় এ তালিকায়।
শাকিলের এই অর্জন শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্ব পর্বতারোহণ ইতিহাসেও এক অনন্য সংযোজন। তাঁর এই প্রচেষ্টা আগামী দিনের অভিযাত্রীদের জন্য এক অসাধারণ অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
