শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

রমজানে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে এখনই উদ্যোগ নিন

প্রতি বছর পবিত্র মাহে রমজান মাস আসার পূবেই নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। আর এই নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো প্রতিবছর নানারকম অঙ্গীকার-প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন, যে কোনো বিশেষ উপলক্ষে বাজারের চাবিকাটি চলে যায় অশুভ চক্রের হাতে। যে কোনো পূজা-পার্বণ-ঈদ এলেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে–এ যেন অলিখিত নিয়ম হয়ে গেছে। আবার বেশ কিছুদিন ধরেই লাফিয়ে লাফিয়ে দফায় দফায় বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম।

উৎসব, পূজা-পার্বণ উপলক্ষে সব দেশেই কিছু পণ্যের চাহিদা বাড়ে। ওই পণ্যগুলো শুধু নিছক উপহারের পণ্য–নিত্যপণ্য নয়। প্রতিদিন এসব পণ্য কেনা হয় না। কেবল বিশেষ দিনেই কেনা হয়। তাই ওই পণ্যগুলোর দাম বাড়লেও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ে না। এদিক দিয়ে আমাদের দেশ ভিন্নতর। দামি বিলাসী পণ্য নয়, সুযোগ পেলেই সব নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হয়।

প্রতি বছরই রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে। এবারও ব্যত্যয় হয়নি। তবে রমজান আসার দুই মাস আগেই বেড়েছে সয়াবিন, আটা, ময়দা ও ডালের দাম। ইফতারি ও সেহরি সামনে রেখে নতুনভাবে ভোজ্যতেল সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে কিংবা নানা অজুহাতে বাড়ানো হচ্ছে চাল, চিনি, মসুর ডাল, প্যাকেট আটা ও ময়দার দাম। মাঝারিমানের পাইজাম কেজিতে ২-৪ টাকা বেড়ে খুচরা বাজারে এসব চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়। এ ছাড়া মোটা স্বর্ণা ও চায়না ইরি চাল ৪৮-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরু মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল মানভেদে ৬৫-৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিপ্রতি খোলা আটা ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৩৮ এবং প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৮ টাকায়। কেজিপ্রতি মসুর ডালের দাম বেড়ে মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২৫ টাকায়।

আন্তর্জাতিক বাজারে হ্রাস পাওয়ার পরও দেশে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেন রিফাইনাররা। তাতে সরকারের সায় না মিললেও পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়ছিলেন, ৬ ফেব্রুয়ারির আগে ভোজ্যতেলের দাম বাড়বে না। অথচ বাজারে ইতোমধ্যেই সয়াবিন তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এ সপ্তাহে এক লিটারের বোতল আগের দামে বিক্রি হলেও রূপচাঁদা, তীর, বসুন্ধরাসহ বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ডের পাঁচ লিটার বোতলের দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে ৮০০ টাকা পর্যন্ত, যা আগে ছিল ৭৬০ টাকা।

অন্যদিকে, খুচরা ব্যবসায়ীরা খোলা সয়াবিন তেলের কেজি বিক্রি করছেন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা, যা আগে ছিল ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা। পাম অয়েলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা, তা আগে ছিল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা। ফলে নিত্যপণ্যের পাইকারি ও খুচরা বাজার দীর্ঘমেয়াদি অস্থিরতার দিকে যাচ্ছে। বেশ কয়েকটি কোম্পানি দাম বাড়িয়ে বোতলজাত তেল সরবরাহ করছে। প্রশ্ন হচ্ছে, মন্ত্রীর ঘোষণার পরও কেন দাম বাড়ানো হলো। কারণ কি ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট? সিন্ডিকেট তথা মুষ্টিমেয় ব্যবসায়ীচক্র বাজার একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না কেন? বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে নিত্যপণ্যের দাম দিন দিন বাড়তেই থাকবে। দেশের বাজারে কেউ অতিরিক্ত মুনাফা লাভের চেষ্টা করছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা দরকার।

রমজানে ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা, পেঁয়াজ, ডাল ও খেজুর এর চাহদা বাড়ে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশে সারাবছর ভোজ্যতেলের চাহিদা ২১ লাখ টন, যার ৯০ শতাংশই আমদানি করতে হয়। কেবল রমজান মাসেই এ তেলের চাহিদা থাকে ৪ লাখ টনের মতো। সারাবছরের জন্য প্রয়োজন হয় ১৮ লাখ টন চিনি, এর মধ্যে ৩ লাখ টনের চাহিদা থাকে কেবল রমজান মাসে। সারাবছর যেখানে ৫ লাখ টন মসুর ডাল লাগে, সেখানে রমজানে চাহিদা থাকে ৮০ হাজার টনের মতো। ডালের চাহিদা মেটাতে ৫০ শতাংশ আমদানি করতে হয়। বছরে ৮০ হাজার টন ছোলার প্রয়োজন হয় দেশে, যার ৮০ শতাংশই ব্যবহার হয় রমজান মাসে। এ সময় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় পেঁয়াজের। ২৫ লাখ টন বার্ষিক চাহিদার ৫ লাখ টনই ব্যয় হয় রমজান মাসে। তাই রমজান এলে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা শুরু হয়। পণ্যমূল্য বাড়াতে তারা কারসাজির আশ্রয় নেয়। এতে করে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে।

ব্যবসায়ীরা প্রতিবছরই নানা কৌশলে আগেই দাম বাড়িয়ে দেন সংঘবদ্ধভাবে। ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার সুযোগ নেই। আর রমজানে দাম বৃদ্ধি না পাওয়ায় অভিযোগ করারও সুযোগ থাকে না। বরং ব্যবসায়ীরাই বলেন ‘দাম বাড়েনি’। বাজার দাম তদারকি ও নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংস্থাগুলোও বাজার যাচাই করে জানায়, রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। কিন্তু রমজানের প্রাক্কালে পণ্যের দাম যে পরিমাণ বাড়ানো হয়, পরে তা আর কমানো হয় না। সাধারণ ভোক্তাদের অভিযোগ, সরকার নিত্যপণ্যের বাজারের মূল দায়িত্ব ব্যবসায়ীদের ওপর ছেড়ে দিয়েছে, ফলে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা দৃশ্যমান নেই। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কোন কর্তৃপক্ষও সাধারন মানুষের এই আকাংখিত নিত্যপণ্যের বাজার তদারকির ন্যূনতম কোনো দায়িত্ব পালনে আগ্রহ নেই। যার কারণে বাজারে এক লাফে জিনিসের দাম দ্বিগুণ হারে বেড়েই চলেছে। পুরো বছর জুড়েই দফায় দফায় চক্রাকারে একেক বার একেকটি পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের দুয়েকজন কর্মকর্তা নিয়মিত বাজার তদারকি করেও এই নিত্যপণ্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির লাগাম টানতে পারছেন না।

ভোক্তা ও বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ‘কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্সে (সিপিআই) দেখা যায়, খাদ্যে মূল্যস্ফীতি সার্বিক মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি। তার অর্থ হলো–সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা, বিশেষত শ্রমজীবী ও সীমিত আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে দেখা যায়, গত ডিসেম্বর শেষে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। করোনার কারণে সংকটে থাকা ব্যবসা-বাণিজ্যসহ পুরো অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। অর্থাৎ ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে একজন মানুষ ১০০ টাকায় যত জিনিসপত্র কিনেছেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ওই টাকা দিয়ে সেই জিনিসপত্র পাচ্ছে না। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় ওই একই পণ্য কিনতে ১০৬ টাকা ৫ পয়সা খরচ করতে হবে। ৬ টাকা ৫ পয়সা হলো মূল্যস্ফীতি। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য মতে, দেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। চাল, ডাল, তেল থেকে শুরু করে সবজিসহ সবকিছুর দামই বাড়তি। এ অবস্থা শুধু ঢাকা শহরেই নয়, গ্রামেও একই চিত্র। প্রতিনিয়ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। একই সঙ্গে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে পরিবহন ব্যয়। ফলে মূল্যস্ফীতির চাপ অব্যাহতভাবে বাড়ছে।

মহামারি করোনায় এলোমেলো হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন। করোনার নতুন ধরন অমিক্রনের কারণে এই অভিঘাত আরও বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অমিক্রনের প্রভাবে বিভিন্ন দেশে জারি করা হয়েছে নানা বিধিনিষেধ। বাংলাদেশেও এর প্রভাব বাড়ছে। সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে কর্মক্ষেত্রে। চাকরি হারিয়ে অনেকে বেকার হয়ে পড়েছে। এর বাইরে নিত্যপণ্যের মূল্য প্রান্তিক ও সীমিত আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতিও বেশ ঊর্ধ্বমুখী। মূল্যস্ফীতি বাড়া মানেই প্রান্তিক ও সীমিত আয়ের মানুষের ভোগান্তি বৃদ্ধি। এতে খাদ্য উৎপাদন, বণ্টন, সরবরাহ ও মূল্যস্তরে পড়তে পারে নেতিবাচক প্রভাব; যা খাদ্যমূল্যের ওপর অস্বস্তিকর প্রভাব ফেলবে। বাংলাদেশে চলমান শীতে সবজির ভরা মৌসুমেও তরিতরকারির দাম সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে। চাল, ডাল, তেল, আটা, চিনিসহ নিত্যপণ্যের দামও চড়া প্রায় দুবছর ধরে। এ অবস্থায় প্রান্তিক ও সীমিত আয়ের মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।

অবশ্য ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বাড়ালেও ভোক্তাদেরও দায় কোনো অংশে কম নয়। সামর্থ্যবান ভোক্তাদের অনেকেই রোজার আগেই পরিবারের বাজার সেরে ফেলেন। রমজান সংযম ও আত্মশুদ্ধির মাস। পবিত্র এই মাসে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের চেষ্টা করেন। ধর্মপ্রাণ ব্যবসায়ীরা ধর্মকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও অনেকে ধর্মের অনুশাসন না মেনে পণ্য মজুদ করেন। তাই রোজার মাসে যেন নিত্যপণ্যের বাজারে চাহিদা ও সরবরাহে সংকট তৈরী না হয়, সেজন্য একসঙ্গে বাজার না করে সপ্তাহের বাজার করা, দরিদ্রদের মাঝে ইফতারী হিসাবে সমাগ্রী বিতরণের পরিবর্তে নগদ অর্থ বিরতনের আহবান জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

বাজারব্যবস্থার স্বাভাবিক গতি যোগসাজশের মাধ্যমে বাধাগ্রস্ত করা হলে অবশ্যই ভোক্তাস্বার্থ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। যা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। ভোক্তা ও বাজার বিশ্লেষকদের মতে সরকার ও বানিজ্য মন্ত্রনালয় নিত্যপণ্যের বাজারের দায়িত্ব পুরোটাই ব্যবসায়ীদের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। সরকারের এ ব্যবসায়ী তোষনণীতির কারনে ব্যবসায়ীরা সুন্তোষ্ঠ হলেও সাধারন মানুষের মুখে হাসি নেই। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর্যায়ে থাকলে কভিডকালে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা যে কমেছে, তা মানতে হবে। গত কয়েক বছরে সরকারের পদক্ষেপ সত্ত্বেও নিত্যপণ্যের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি কেন থামানো যায়নি, তা খতিয়ে দেখা উচিত। সে কারণে ঢাকা শহরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১৪টি টিম বাজার তদারকি করার কথা থাকলেও বাজারে ভোক্তারা এই টিমের দেখা পান না। জেলা শহরে জেলা প্রশাসনের বাজার তদারকি টিম মাঠে থাকার কথা। অথচ অনেকেই ফটো সেশনের মতো বাজার তদারকি করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এই তদারকি কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না। উদার বাণিজ্য নীতির সুযোগ নিয়ে স্বার্থান্বেষী কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী বা প্রতিষ্ঠান বাজারের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত করার অপচেষ্টা করছে।

ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে মুনাফা করতেই হবে; কিন্তু মুনাফা অর্জনের নামে অনৈতিক কর্মকাণ্ড সমর্থনযোগ্য না। এ অবস্থায় পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বাজার তদারকি বাড়ানো; বিকল্প ব্যবস্থাপনায় চাল, আটা, চিনি, পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্য প্রান্তিক, শ্রমজীবী ও সীমিত আয়ের মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য একটি ব্যবস্থাপনা কাঠামো তৈরি; প্রয়োজনে প্রান্তিক ও শ্রমজীবিদের জন্য রেশনিং কার্ড প্রবর্তন করা যেতে পারে। বিশেষ করে করোনাকালে যাদের আয় কমে গেছে, তাদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর কর্মসূচির আওতা বাড়াতে হবে। গ্রাম ও শহরাঞ্চলের প্রান্তিক ও শ্রমজীবি মানুষ যাতে খেয়ে-পরে বাঁচতে পারে, সেজন্য নিত্যপণ্য্যের দাম যেমন স্থিতিশীল রাখতে হবে, তেমনি তাদের আয় বাড়ানো ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির ওপর জোর দিতে হবে। আমদানিকারক, উৎপাদক, পরিবেশক, সরবরাহকারী, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী পর্যায়ে সমন্বিত বাজার তদারকি নিশ্চিত, কার্যকর টিসিবি, সর্বোপরি ট্যারিফ কমিশন, কৃষি, খাদ্য, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রাজস্ব বোর্ডের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে। আসন্ন রমজানে যাতে নিত্যপণ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকারকে এখন থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

লেখক: ভাইস প্রেসিডেন্ট, কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)

এসএ/

Header Ad
Header Ad

নওগাঁয় দুলাভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে গ্রেপ্তার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে গ্রেপ্তার হলেন রাজশাহীর সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের এপিএস আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটুকে (৪০)। শুক্রবার (৯ মে) ভোর তিনটার দিকে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে উপজেলার চাকরাইল এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় টিটুকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে ওই বাড়ির মালিক আব্দুল ওহাব চৌধুরী সাগরকেও (৪৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

অপরদিকে একই দিনে পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের আরও তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটু (৪০) রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের এপিএস এবং রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার রাণীবাজার এলাকার মৃত আব্দুল ওয়াদুদ খানের ছেলে। এছাড়া তিনি রাজশাহী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে।

অপরদিকে গ্রেপ্তার বাড়ির মালিক আব্দুল ওহাব চৌধুরী সাগর (৪৫) চাকরাইল এলাকার মৃত সাব্বির আহমেদ চৌধুরীর ছেলে।

অপর গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে এবং উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ও ওই ইউনিয়নের মেম্বার আমিনুল ইসলাম উজ্জল (৪০), রাজাপুর এলাকার বাবুল হোসেনের ছেলে ও আওয়ামীলীগের সমর্থক মিলন হোসেন (৩৮) এবং বালুভরা ইউনিয়নের চকগোপালপুর গ্রামের মৃত অশোক কুমার সরকারের ছেলে ও আওয়ামীলীগের সমর্থক পুলকেশ সরকার (৫২)।

জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটু বাসার মালিক সাগর চৌধুরীর ভাই টিটুর সম্পর্কে বড় শ্যালক। সেই সুবাদে আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটু গত বুধবার রাতে বেড়াতে আসে। এরপর গোপনে সেখানে লুকিয়ে ছিল। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই বাসা ঘেরাও করে রাখে স্থানীয় জনতা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে।

এদিকে গ্রেপ্তারকৃত ৫ জনের মধ্যে ৪ জনকে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তার দেখালেও বাড়ির মালিক সাগর চৌধুরীকে নিয়ে চলছে নাটকীয়তা। তাকে কোন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে তা নিয়ে চলছে আইনগত আলোচনা।

সকলকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, খবর পেয়ে শুক্রবার ভোর রাতে চাকরাইল এলাকায় সাগর চৌধুরীর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এসময় ওয়াহেদ খান টিটুকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই সাথে বাড়ির মালিককেও গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া একই রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত ৫ জনের মধ্যে ৪ জনকে ঘটে যাওয়া ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আর বাড়ির মালিক সাগর চৌধুরীর ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তাকে নিয়ে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান আছে।

উল্লেখ, গত বছরের ৫ নভেম্বর বদলগাছী উপজেলার গোবরচাঁপা হাট এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে (আজ) শুক্রবার তাদেরকে আদালতে পাঠানোর কথা রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

বাংলাদেশ সফরে আসছে না ভারত, অনিশ্চিত এশিয়া কাপ

ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের আগস্টে বাংলাদেশ সফরে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে আসার কথা ছিল ভারতের। পাশাপাশি সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় এশিয়া কাপ নিয়েও ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রত্যাশা ছিল তুঙ্গে। কিন্তু হঠাৎ করে বদলে যাওয়া ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এই সফর এবং এশিয়া কাপ উভয় ইভেন্টেই অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে।

ভারতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বিসিসিআই স্পষ্টতই জানিয়েছে—ভারত বাংলাদেশ সফর করবে না এবং এশিয়া কাপেও অংশ নেবে না। এ সময়টিতে বরং স্থগিত হয়ে যাওয়া আইপিএলের বাকি ম্যাচ আয়োজন করার পরিকল্পনা করছে তারা।

গতকাল (৮ মে) ধর্মশালায় পাঞ্জাব কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালসের মধ্যকার ম্যাচ চলাকালে হঠাৎ নিরাপত্তাজনিত কারণে ফ্লাডলাইট নিভিয়ে খেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে জানানো হয়, ম্যাচটি স্থগিত করা হয়েছে। এর আগে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সামরিক উত্তেজনা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে। ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বন্দুকধারীদের হামলার জবাবে ভারত পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যার পর পাকিস্তানও পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখায় বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ধর্মশালার ঘটনার পর আইপিএলের সব ক্রিকেটার ও স্টাফরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং ম্যাচ শেষে তারা তড়িঘড়ি করে সেখান থেকে বেরিয়ে যান। বিসিসিআই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাকেই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

 

ছবি: সংগৃহীত

সূচি অনুযায়ী, আইপিএল চলতি মে মাসেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। এরপর জুনের শুরুতে ইংল্যান্ডে পাঁচ টেস্টের সিরিজ খেলতে যাওয়ার কথা রয়েছে ভারতীয় দলের। কিন্তু ধর্মশালার ঘটনার জেরে বিসিসিআই আইপিএলের অবশিষ্ট ১৬টি ম্যাচ পিছিয়ে দিয়ে পরে আয়োজনের চিন্তা করছে। এর ফলে জুন-সেপ্টেম্বর সময়টায় আন্তর্জাতিক সফর কিংবা এশিয়া কাপ আয়োজন সম্ভব নয় বলেই জানানো হয়েছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, বিসিসিআই এমনকি বাংলাদেশ সফর ও এশিয়া কাপ বাতিলের সিদ্ধান্তে নমনীয় হওয়ার কোনো ইঙ্গিতও দিচ্ছে না।

এ সিদ্ধান্ত দক্ষিণ এশিয়ার ক্রিকেটের জন্য একটি বড় ধাক্কা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এবং এসিসি (এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল) হয়তো ভারত ছাড়া বিকল্প ব্যবস্থার চিন্তা করতে পারে, কিন্তু টুর্নামেন্টের আকর্ষণ ও বাণিজ্যিক গুরুত্ব ভারত ছাড়া অনেকটাই কমে যাবে।

Header Ad
Header Ad

আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল শাহবাগ, জনস্রোতে ভরপুর রাজপথ

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজপথ। হাজার হাজার ছাত্র, যুবক ও সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণে শুক্রবার (৯ মে) বিকেল থেকে এ অবরোধ শুরু হয়।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর আহ্বানে এ কর্মসূচি শুরু হয়। তিনি সকালে যমুনা ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “বাদ জুমা শাহবাগ ফোয়ারার সামনে জনসমুদ্র গড়ে উঠবে। আজ বোঝা যাবে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চায় কি না।”

বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে মিন্টো রোড থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগে পৌঁছে আন্দোলনকারীরা অবরোধ শুরু করেন। রাস্তার মাঝে বসে পড়ে তারা স্লোগানে স্লোগানে উত্তপ্ত করে তোলে চারদিক।

এ সময় ‘ব্যান ব্যান আওয়ামী লীগ’, ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর’, ‘ফাঁসি চাই শেখ হাসিনার’—এমন নানা স্লোগান দিতে শোনা যায়।

অবরোধে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ছাত্রশিবির, আপ বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ইনকিলাব মঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। বিকেল ৫টার দিকে আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদের নেতৃত্বে একটি বড় মিছিল শাহবাগে এসে যোগ দেয়।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাংলামোটর দিক থেকে ঢাকা মহানগর শিবিরের শত শত নেতাকর্মী মিছিলসহ শাহবাগে এসে যোগ দেন এবং শিবির-শিবির স্লোগানে মুখর করে তোলেন মোড়টি।

এছাড়া কওমি মাদ্রাসার বিভিন্ন স্তরের ছাত্রদের উপস্থিতিও দেখা যায় বিক্ষোভস্থলে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, “যতক্ষণ না আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকারিভাবে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না।”

অবরোধের কারণে শাহবাগ থেকে সায়েন্সল্যাব, বাংলামোটর, টিএসসি ও মৎস্যভবন অভিমুখে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এতে আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নওগাঁয় দুলাভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে গ্রেপ্তার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা
বাংলাদেশ সফরে আসছে না ভারত, অনিশ্চিত এশিয়া কাপ
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল শাহবাগ, জনস্রোতে ভরপুর রাজপথ
বিএনপি ছাড়া সব রাজনৈতিক দল এখন শাহবাগে: সারজিস আলম
শিক্ষার্থী পারভেজ হত্যায় গ্রেপ্তার টিনা ৩ দিনের রিমান্ডে
চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড ৪১.০২ ডিগ্রি সেলসিয়াস; বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ
কাশ্মীরে ফের বিএসএফের গুলি, ৭ পাকিস্তানি নিহত: দিল্লির দাবি বিচ্ছিন্নতাবাদী
নওগাঁয় ককটেল বিস্ফোরণে উড়ে গেল বাড়ির টিন
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত ‘আমাদের বিষয় নয়’: যুক্তরাষ্ট্র
দেশের তীব্র তাপপ্রবাহ নিয়ে যা বলল আবহাওয়া অফিস
আ.লীগ নিষিদ্ধে গুরুত্বের সাথে সরকার বিবেচনা করছে: সরকারের বিবৃতি
টাঙ্গাইলে নাশকতা মামলায় আ.লীগ নেতা রাজ্জাকসহ ২ জন গ্রেফতার
অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত আইপিএল
এবার অপেক্ষা তারেক রহমানের ফেরার, চলছে জোরালো প্রস্তুতি
পদ্মার এক ইলিশের দাম সাড়ে ৮ হাজার টাকা
৫ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে থানায় নেওয়া হলো আইভীকে
জুমার পর যমুনার সামনে বড় জমায়েতের ডাক হাসনাত আব্দুল্লাহর
প্রথম আমেরিকান পোপ হলেন রবার্ট প্রিভোস্ট
একের পর এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল ভারত, সীমান্তজুড়ে ব্ল্যাকআউট
নিষিদ্ধ হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগ