শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫ | ১৩ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

তুমি আমার জীবন গল্পের অভিশপ্ত এক বেঈমান

বাবু মধ্যবিত্ত পরিবারের একটা ছেলে। ছোটবেলা থেকে সে সবার চেয়ে আলাদা মন মানুসিকতা নিয়ে বড় হয়েছে। বাবু ছিল লাজুক স্বভাবের। সবসময় কম কথা বলত। তবে তার মেধা আর দক্ষতা ছিল সবার চেয়ে ভিন্ন। বাবু মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনাকালীন তার কোনো বান্ধবী ছিল না। অনেক মেয়ে বাবুকে বন্ধু হিসেবে পেতে চাইলেও বাবু তাদের ফিরিয়ে দিত। সালটা ২০১৫। বাবু সে সময় মাধ্যমিক স্তর পার করে সবেমাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছে। সেসময় বাবুর বয়স ১৮ বছর। কলেজে ভর্তি হওয়ার সুবাদে সে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে, পাশাপাশি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি করতে থাকে। ছাত্র রাজনীতি ও লেখালেখির সুবাদে বাবু অল্প সময়ের ভেতরে সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়।

একটা সময় লাজুক স্বভাবের বাবুর আচার-ব্যবহার, মেধা-দক্ষতা ও দেখতে শুনতে ভালো হওয়ায় কারণে অনেক মেয়ে তাদের জীবনে বাবুকে স্বপ্নের রাজকুমার হিসেবে পেতে চায়। তবে বাবু বরাবরের মতো কলেজ জীবনেও সম্পর্ক থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে।

বাবুর এক বন্ধু ছিল। তার নাম আরিফুল ইসলাম। একই গ্রামে তাদের বাসা। বাবুর চাচাতো বোনের সাথে আরিফুলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বাবু সেটা জানত। আরিফুল দেখতে শুনতে অনেক সুন্দর হওয়ায় অনেক মেয়ের সাথে আরিফুলের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে, বাবু আরিফুলের এসমস্ত কর্মকাণ্ড পছন্দ করত না। একের অধিক সম্পর্কে জড়িয়ে কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট না করার জন্য বাবু বহুবার আরিফুলকে অনুরোধ করে। তবে, আরিফুল বাবুর কোনো কোথায় কর্ণপাত করেনি। একপর্যায়ে এসংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আরিফুল ও বাবুর ভেতরে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এটা নিয়ে বাবু মনে মনে অনেক কষ্ট পায়। ঘটনার একপর্যায়ে বাবু আরিফুলের সাথে তর্কে জড়ায়। বাবু আরিফুলকে বলে 'চাইলে একটা প্রেমকে পূর্ণতা দেওয়া যায়, হাজারটা প্রেম করে কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট করার মানে হয় না। আর সেটা সে (বাবু) দেখিয়ে দেবে।'

এসবের মধ্যদিয়ে বাবু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে 'সে রিলেশনশিপে জড়াবে এবং রিলেশনশিপকে পূর্ণতা দেবে।' রিলেশনশিপে বিয়ে করবে বলে বাবু তার পরিবারকে জানায়। সালটা তখন ২০১৬। ওই সময়ে বাবুর পরিবার বাবুকে বলে 'বাবুর উপরে তাদের ভরসা আছে, বাবু যাকে পছন্দ করবে তার সাথে তাকে বিয়ে দিতে আপত্তি নেই। তবে কোনো মেয়ের জীবন নিয়ে যেন বাবু খেলা না করে।' পরিবারের এমন কথার পর বাবু মনে মনে মেয়ে খুঁজতে শুরু করে। ২০১৬ সালের ডিসেস্বর মাসে বাবু ইকরামুল নামে একটা ছেলের মাধ্যমে তারই এলাকায় সাবিকুন নাহার নামে একটা মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ওইসময় সাবিকুন সবেমাত্র অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সাবিকুনের পিতা ভ্যান চালিয়ে পেঁয়াজের ব্যবসা করত। জায়গা জমি বলতে বসতবাড়ি ছাড়া আর কোনোকিছু ছিল না। তবে, সাবিকুনের মামারা ছিল অভিজাত।

২০১৭ সাল। জানুয়ারি মাসের কোনো একদিন বাবু সাবিকুনের সাথে দেখা করে। সেইদিন বাবু সাবিকুনকে বলে 'সে ফ্যামিলিগত রিলেশনশিপে আগ্রহী। সাবিকুনের পরিবার তাকে (বাবু) মেনে নিলে সে সাবিকুনকে তার জীবনে গ্রহণ করবে।'

একপর্যায়ে সাবিকুন রিলেশনশিপের ব্যাপারে তার পরিবারকে জানায়। পরিবারকে জানানোর পর বাবু সাবিকুনের বাসায় গিয়ে সাবিকুনের পিতামাতার সাথে কথা বলে। সাবিকুনরা ছিল দুই বোন। তার কোনো ভাই ছিল না। বোনের ভেতরে সাবিকুন বড়। আর বাবুরা ছিল ৫ ভাইবোন। ভাই হিসেবে বাবু একা এবং সবার ছোট। তবে বাবু মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হলেও সমাজে বাবুসহ তার পরিবারকে সবাই সম্মান দিয়ে চলত।

এভাবে কেটে গেল কয়েক মাস। বাবুর ফোন নম্বরটা সাবিকুনের পিতার ফোনে 'জামাই' হিসেবে সেভ করা ছিল। একই গ্রামে বাসা হওয়ায় সাবিকুনের বাসায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল বাবুর। পুরো গ্রাম তাদের রিলেশনশিপের বিষয়ে জানত। অনেকের ধারণা ছিল 'বাবু-সাবিকুন বিবাহিত।'

এভাবে বাবু-সাবিকুনের প্রেম চলতে থাকে কয়েক বছর। এর ভেতরে সাবিকুনের দাদি মারা যায়। দাদি মারা যাওয়ার পর সাবিকুনের দাদিকে গোরস্থানে কবর দেওয়া নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়। কেননা, সাবিকুনের পরিবারের নিজস্ব কোনো গোরস্থান ছিল না। একপর্যায়ে সাবিকুনের পরিবার সিদ্ধান্ত নেয় 'সাবিকুনের দাদিকে তারা সরকারি গোরস্থান বা সাবিকুনের নানাবাড়ি মাটি দেবে।' তবে এটা ছিল সাবিকুনের পরিবারের জন্য লজ্জার ও আত্মসম্মানের বিষয়। তবে, দীর্ঘ প্রেমের সূত্র ধরে সাবিকুন বাবুকে ঘিরে অনেক ভরসা করত। সর্বমহলে বাবুর গ্রহণযোগ্যতা থাকাই সাবিকুনের বিশ্বাস ছিল 'একমাত্র বাবু পারবে এই বিষয়টি সমাধান করতে।' সাবিকুন একপর্যায়ে বাবুর সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে। বাবু তার গ্রহণযোগ্যতাকে ব্যবহার করে ওই গোরস্থানে সাবিকুনের দাদির কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করে। আর এঘটনায় সাবিকুনের পরিবারের কাছে বাবু ছিল এক নক্ষত্র।

এসবের মধ্যদিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে বাবুর ইউনিয়নে জাতীয় পরিচয় পত্র (স্মার্টকার্ড) বিতরণ শুরু হয়। তবে স্মার্টকার্ড গ্রহণ করাটা ছিল সব মানুষের জন্য কষ্টের। দীর্ঘ লাইন ও চৈত্রের খরতাপে মানুষের জীবন ছিল দুর্বিষহ। তবে, বাবু তার যোগাযোগ ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে সাবিকুনের পিতামাতার স্মার্টকার্ডগুলো ১০ মিনিটের ভেতরে পাইয়ে দেয়। স্মার্টকার্ড গ্রহণের সময় যখন সাবিকুনের পিতামাতাকে আনসার সদস্যরা নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল তখন অনেকে এটা নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্য করতে থাকে। ওইসময় আনসার সদস্যরা উপস্থিত মানুষের উদ্দেশে বলে 'ওনারা বাবুর বাগদত্তার পিতামাতা। আপনারা যদি চান তাহলে ওনারাও লাইনে দাঁড়িয়ে স্মার্টকার্ড গ্রহণ করবে।' তবে, বাবুকে তার নিজ ইউনিয়নের সকল শ্রেণিপেশার মানুষ ভালোবাসত ও সম্মান করত।

বাবু তাদের কাছে ছিল 'তাদের দুঃসময়ের সঙ্গী, অসহায়দের ভাগ্য পরিবর্তনের কারিগর।' এজন্য ওইসময় উপস্থিত হাজার হাজার মানুষ সাবিকুনের পিতামাতার যাওয়া নিয়ে দ্বিতীয়ত আর কোনো মন্তব্য করেনি। বরং যারা বিরূপ প্রতিক্রিয়া করেছিল তারাও তাদের ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চাই সাবিকুনের পিতামাতার কাছে। আর ওইদিনের পর থেকে বাবুর রিলেশনশিপের বিষয়ে তার ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ জেনে যায়। এভাবে কেটে যায় আরও কয়েকমাস। উভয়ের সম্পর্ক পারিবারিকভাবে আরও মজবুত হয়। উভয়ের পরিবারের সদস্যরা উভয়ের সাথে নিয়মিত মুঠোফোনে যোগাযোগ রাখতো।

একপর্যায়ে সাবিকুনের মাধ্যমিকের সার্টিফিকেট নিয়ে সমস্যা হয়। যেটা সমাধান না হলে সাবিকুন কলেজে ভর্তি হতে পারবেনা। বাবু, বিষয়টি জানার পর সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে অনবরত গিয়ে সাবিকুনের সার্টিফিকেটের সমস্যাটা সমাধান করে।

এ ছাড়াও বাবু নিজ দায়িত্বে সাবিকুনের বিভিন্ন খরচ মেটাতো। বাবুর বাসাতে যেটা উৎপাদন হতো সেটা বাবু সাবিকুনের বাসাতে নিয়ে যেত। আবার সাবিকুনের বাসাতে যেকোনো আয়োজনে বাবুকে দাওয়াত দিতে ভুলত না সাবিকুনের পরিবার।

তবে সাবিকুনের একটা অভ্যাস ছিল। জিন্স প্যান্ট পরা। আর এটা বাবুর পছন্দ ছিল না। বাবু চাইতো সাবিকুন শালীনতা বজায় রেখে চলাফেরা করুক। যেহেতু বাবুর সমাজে ভালো গ্রহণযোগ্যতা ছিল সেকারণে সে সম্মানটাকে সবসময় গুরুত্ব দিত। তবে, বহুবার সাবিকুন জিন্স না পরার প্রতিশ্রুতি দিয়েও সেটা রাখেনি। এনিয়ে বাবুর সাথে ২০১৮ সালে সম্পর্কে অবনতি ঘটে সাবিকুনের। কয়েকমাস বাবু সাবিকুনের সাথে যোগাযোগ রাখেনি। তবে, সাবিকুনের পরিবার নিয়মিত যোগাযোগ রাখতো বাবুর সাথে। যাতে বাবু আগের মতো সাবিকুনকে গ্রহণ করে। তবে বাবু ছিলো একঘেয়েমি ও প্রচুর অভিমানি। তবে বাবুর বড় একটা দুর্বলতা ছিলো সাবিকুনের পরিবারের করে। কেননা, সাবিকুনের পিতামাতার কোন ছেলে সন্তান না থাকাই সাবিকুনের পিতামাতা বাবুকে প্রচুর ভালোবাসতো। এসবের মধ্যে একপর্যায়ে রোজার ঈদে সাবিকুনের পিতা বাবুকে দাওয়াত করে। বাবু যেতে অপারগতা প্রকাশ করলেও একপর্যায়ে বাবু তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। সে ঈদেরদিন সাবিকুনের বাসাতে যায়। এবং ওইদিন সাবিকুন তার পিতামাতার সামনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাবুর কাছে ক্ষমা চাই। এবং বাবু সাবিকুনকে ক্ষমা করে দেয়।

এভাবে ভালোই চলছিল তাদের সম্পর্ক। বাবু-সাবিকুনের ভালোবাসা অন্যদের জন্য ছিলো উদাহারণ। কেননা, বন্ধুর সাথে তর্কে জড়িয়ে বাবু দেখিয়েছিল কীভাবে একটা সম্পর্ক করে নিজেকে ঠিক রাখা যায়।

এসবের ভিতরে সাবিকুন যখন মাধ্যমিক পাশ করে তখন সাবিকুনের পরিবার সাবিকুনকে বিয়ের জন্য বাবুকে চাপ দিতে থাকে। তবে বাবু জানাই 'তার দুলাভাই দেশে না ফেরা পর্যন্ত সে বিয়ের পিঁড়িতে বসবেনা। ২০২০ সালের জানুয়ারীতে দুলাভাই দেশে ফিরলে সাবিকুনকে বিয়ে করবে সে।' ওইসময় সাবিকুনের পিতামাতা বাবুকে বলে একটা সরকারি করতে। যাতে তাদের এই সম্পর্ক নিয়ে সাবিকুনের মামারা দ্বিমত পোষণ না করে। কেননা, সাবিকুনের মামারা সবাই সরকারি চাকরিজীবী। তবে, বাবু ছিল চাকরি বিমুখ। সে কোন ধরাবাঁধার ভিতরে থাকতে পছন্দ করতো না। তাছাড়া, বাবু তার পরিবারের একমাত্র ছেলে সন্তান হওয়ার সুবাদে চাকরির চেয়ে বাবু পিতামাতার খেদমত করাকে প্রাধান্য দিতে থাকে।

এসবের মধ্য দিয়ে বাবু ছাত্ররাজনীতি ও লেখালেখির সুবাদে একজন ভালো ছাত্রনেতা ও সাংবাদিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে। বাবুর নেতৃত্ব ও লেখালেখিতে সবাই ছিল মুগ্ধ। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে একটা ব্যাংকের চাকরির জন্য বাবুকে ইনফরমেশন পাঠাই সাবিকুন। একপর্যায়ে বাবু তার পিতামাতার কথাতে এবং ভালোবাসার মানুষের অনুরোধ রক্ষা করতে সিদ্ধান্ত নেই সে সরকারি চাকরি করবে। তবে চাকরি যদি মনোগত না হয় তাহলে করবেনা। ঢাকাতে যাওয়ার আগে বাবু সাবিকুনের পরিবারের সাথে দেখা করতে যায়। সেদিন সাবিকুনের দাদু সাবিকুনদের বাসাতে ছিল। বছরের কয়েকমাস সাবিকুনদের বাসাতে থাকেন তিনি। দাদার কাছ থেকে দোয়া নিয়ে যখন বাবু চলে আসবে তখন সাবিকুনের দাদু বাবুর হাত ধরে কান্নাকাটি করতে থাকে। কেননা, তার স্ত্রীর গোরস্থানে কবর দেওয়া নিয়ে বাবুর অবদানটা সবচেয়ে বেশি। ওইসময় সাবিকুনের দাদু সাবিকুনকে ডাকে এবং সাবিকুনের পিতামাতাকেও ডাকে। বাবু আর সাবিকুনের দুইহাত এক করে সাবিকুনের পিতামাতাকে সাবিকুনের দাদু বলে 'বাবু তুমি কখনও সাবিকুনকে ছেড়ে যাবে না, আর সাবিকুন তুমিও কখনও বাবুকে ছেড়ে যাবে না।' ওইসময় সাবিকুনের পিতামাতা সাবিকুনের দাদার উদ্দেশে বলে 'পুরো গ্রামের সবাই জানে সাবিকুনের সাথে বাবুর সম্পর্কের বিষয়টা। তুমি নিশ্চিত থাকো বাবু আমাদের আরেক সন্তান। সাবিকুনের বিয়ে বাবুর সাথে হবে।'

ওইসময় বাবু অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ে। মনেমনে মহান আল্লাহ্ তা'য়ালার কাছে শুকরিয়া আদায় করে। যাহোক, বাবুর হাতে সময় ছিলো ৯ মাস। ৯ মাসের ভিতরে তাকে সরকারি চাকরি পেতে হবে। কেননা, দুলাভাই দেশে ফিরবে ২০২০ জানুয়ারিতে। ১৫ দিন ছুটি কাটিয়ে দুলাভাই আবারও চলে যাবেন দেশের বাইরে। একপর্যায়ে সাবিকুনকে বাবুর পছন্দের একটি মহিলা কলেজে ভর্তি করে দিয়ে সাবিকুনের পরিবারের চাওয়া পূরণ করতে বাবু ঢাকাতে যায় একটা ব্যাংকের চাকরির জন্য। তবে বাবু জানতো না সে চাকরিটা ছিল প্রতারকদের প্রতারণার ফাঁদ। ওই চাকরির ফাঁদে পড়ে বাবু ৮ লাখ টাকা হারায়। যেটা নিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে বাবু। এবিষয়ে বাবু নিজের পরিবারকেও কোনকিছু বলতে পারছিলো না নাইবা নিজের মাঝে কথাগুলো ধরে রাখতে পারছিলো। একপর্যায়ে ঢাকাতে অবস্থান কালীন সময়ে বাবু সাবিকুনের পিতামাতাকে জানাই চাকরি করা তার পক্ষে সম্ভব না। এনিয়ে বাবু করে মনোক্ষুণ্ন হয় সাবিকুনের পরিবার।

এভাবে বাবুর কয়েকমাস কেটে গেল ঢাকাতে। বাবুর পরিবার জানতো তাদের ছেলে চাকরি সংক্রান্ত কারনে ঢাকাতে আছে। তবে বাস্তবতা যে ভিন্ন সেটা বাবু ছাড়া অন্যকেউ জানতো না। নাইবা কাউকে এ ব্যাপারে শেয়ার করতো বাবু।

এদিকে ৬/৭ মাস বাবু সাবিকুনকে সময় না দিতে পারার কারনে সাবিকুন অন্য একটা ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। সে ছেলেটি ছিলো আভিজাত্য পরিবারের। ঢাকাতে থাকলেও বাবু বিষয়গুলো জানতে পারে। কেননা, যারা বাবুকে চেনে তারা সাবিকুনকেও চিনতো। সাবিকুনের নতুন সম্পর্কের ব্যাপারে বাবু বহুবার সাবিকুনকে প্রশ্ন করলেও সাবিকুন অস্বীকার করতো, সে বলতো ও (সাবিকুনের নতুন প্রেমিক) তার কোচিংয়ের ফ্রেন্ড। দীর্ঘ সময় ধরে সাবিকুনের সাথে সম্পর্ক থাকার সুবাদে বাবু সাবিকুনের কথায় বিশ্বাস করতো। তাছাড়া যেহেতু উভয় পরিবার সম্পর্কের বিষয়ে জানতো একারনে বাবুও সাবিকুনের কথায় বিশ্বাস করতো।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরের কথা। চাকরি সংক্রান্ত কারনে বাবু যে প্রতারণা শিকার সেটা সমন্ধে সে সকলকে অবগত করে। আর ২০২০ সালের জানুয়ারীতে দুলাভাই দেশে ফিরবে। একারনে, সাবিকুনের পরিবারের সাথে একটা মারফত সাবিকুনকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাই বাবু। ওইসময় সাবিকুনের পরিবার বাবুকে কিছু কন্ডিশন দেয়। কন্ডিশনের শর্ত ছিল এগনেস্ট-এর দিন সাবিকুনকে কয়েক ভরি স্বর্ণের গহণা দিতে হবে। আর বিয়ের দিন সাবিকুনের পুরো অলংকার বাবুকে বহন করতে হবে। হঠাৎকরে সাবিকুনের পরিবারের এমন কথাতে আকাশভেঙ্গে পড়ে বাবুর মনে। হঠাৎ কী এমন হলো? যার কারনে সাবিকুনের পরিবার এমন কথা বলছে? বাবুর মনে বিভিন্ন প্রশ্ন জন্মায় আর প্রশ্নের উত্তরগুলো খুঁজতে বাবু সাবিকুনের দুঃসম্পর্কের এক দাদার সাথে কথা বলে। ওইসময় বাবু জানতে পারে 'তার অর্জিত অর্থ গুলো প্রতারণার শিকারে নষ্ট হওয়াতে সাবিকুনকে বাবুর হাতে তুলে দিতে চাচ্ছেনা সাবিকুনের পরিবার। আর সাবিকুন অন্য সম্পর্কে জড়ানোয় সেও চাচ্ছেনা বাবুকে বিয়ে করতে।' তবে, সবকিছু জেনেও না জানার অভিনয় করতো বাবু। এতোকিছুর পরেও বাবুর বিশ্বাস ছিলো সাবিকুনের পরিবার তাকে ফেরাবে না।

ডিসেম্বরের ৩১ তারিখে ছিল সাবিকুনের জন্মদিন। সাবিকুনের জন্মদিন উপলক্ষে ঢাকা থেকে দামি কয়েকটি উপহার ক্রয় করে নিজ বাসাতে ফেরে বাবু। পরে ওই উপহারগুলো নিয়ে সাবিকুনকে সারপ্রাইজ দিতে শহরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে বাবু।

বাবু যখন শহরে পৌঁছায় তখন বাবুর সহকর্মীদের সাথে দেখা হয়। তখন বাবুর সহকর্মীরা জানায় 'সাবিকুনকে একটা ছেলের সাথে দেখেছে তারা।' বাবু বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিক ভাবে ওই মেলাতে যায় সাবিকুনের খোঁজে। মেলাতে যেয়ে বাবুর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। যে সাবিকুনকে দেখে বাবু ঢাকায় গিয়েছিল সেই সাবিকুনের সাথে এই সাবিকুনের কোনো মিল নেই। সব দেখেও বাবু নিরব ছিল। বাবু এমন একটা অবস্থার ভিতরে পড়েছিল যেটা প্রকাশ করা তার জন্য সবচেয়ে কষ্টের ছিল। বাবু মেলাতে সাবিকুনকে কয়েকবার ডাকলেও সাবিকুন বাবুর ডাকে রেন্সপন্স করিনি। বাবু ভাবছিলো 'সাবিকুনের পরনে এমন পোশাক যেটা সে পছন্দ করে না। একারনে হয়তোবা সাবিকুন সামনে আসতে সাহজ পাচ্ছে না।' এই ভেবে বাবু সাবিকুনকে কয়েকটি টেক্স পাঠিয়ে মেলা থেকে চলে যায়।

সকাল গড়িয়ে বিকাল। হঠাৎ বাবুর কাছে তার এক সহকর্মীর ফোন। ফোনে বাবুর সহকর্মী বাবুকে বলছে 'সাবিকুন কান্নাকাটি করছে, আপনি একটু আসুন'। বাবু যখন ঘটনাস্থলে যায় তখন বাবু হতভম্ব হয়ে যায়। সাবিকুন যে শ্লীলতাহানির শিকার সেটার জন্য সাবিকুন নিজে দায়ী। ওইসময় বাবু এতোটা পরিমাণে অপমানবোধ করেছিলো ওইখান থেকে সাবিকুনের পরিবারের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে। এবং সাবিকুনকে বিয়ে করবে না বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেই। ওইদিন সন্ধ্যায় সাবিকুনের পরিবার থেকে দেওয়া উপহার সামগ্রীগুলো বস্তাবন্দি করে সাবিকুনের বাসাতে ফেরত দিয়ে আসে বাবু।

সাবিকুনের বাসা থেকে ফেরার মাসখানেকের ভিতরে সাবিকুনের পিতামাতা তাদের ভুলগুলো বুঝতে পারে। তবে সাবিকুন করে লজ্জিত ছিল তারা। একারণে, সাবিকুনের হয়ে তারা বাবুর কাছে ক্ষমা চান।

এভাবে ৬ মাস কেটে গেল। বাবু মানসিক যন্ত্রণায় মারাত্বকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাবু এতোটাই ভেঙে পড়েছিল কয়েকবার সুইসাইড করতে যায়। এসবের মাথায় বাবুর পরিবারও সবকিছু জেনে যায়। এসময় তারা বাবুকে মানসিকভাবে সাপোর্ট দিতে থাকে।

তারপরেও বাবুর মন মানেনা। বাবুর বিশ্বাস ছিলো তার ভালোবাসার সাবিকুন নিজের ভূলগুলো বুঝতে পেরে হয়তো কোন একদিন ফিরবে তার জীবনে।

সাবিকুনের সাথে বাবুর সম্পর্ক না থাকলেও সাবিকুনের পড়াশোনা কেন্দ্রিক সবখানে বাবুর নাম ও কন্টাক নাম্বার ছিল। একারণে, সম্পর্ক বিচ্ছেদের পরেও সাবিকুনের পড়াশোনা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বাবুর সহযোগিতা নিয়মিত প্রয়োজন ছিল। বাবু এমন একটা ছেলে ছিল সম্পর্ক বিচ্ছেদের পরেও সাবিকুনকে নিয়ে কোন নেতিবাচক মন্তব্য সে করেনি। বরং, পুরো ঘটনার জন্য বাবু নিজেকে দায়ী করে। সম্পর্কে জড়ানোটা তার জন্য ভূল ছিল।

একটা সময় বাবুর সবচেয়ে কাছের দুলাভাই মারা যায়। বাবুর দুলাভাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার কয়েকদিন আগেও সাবিকুনের নাম নিয়ে বলেছিলো 'আমি বাঁচব কিনা জানি না। তবে তুমি সাবিকুনের জন্য যে কষ্ট পেয়েছো সেটা সহ্য করা তোমার জন্য কষ্টের। আমার আক্ষেপ তুমি যদি রিলেশনশিপে না জড়াতে তাহলে হয়তোবা তোমার বিয়ে হতো অন্য কারও সাথে।' বাবুর দুলাভাই মারা যাওয়ার পরে বাবুর আব্বুও মারা যায়। মারা যাওয়ার আগে বাবুকে তার আব্বু বলেছিল 'তোমাকে নিয়ে আমার গর্বের শেষ নেই। যদি বেচেঁ থাকি ওই মেয়ের চেয়ে সুন্দর বৌমা তোমার জন্য আমি নিয়ে আসব।'

বাবুর আব্বু যেদিন মারা গেছিলো সেদিন সাবিকুনসহ তার পিতামাতা এসেছিলো বাবুর বাসায়। তার কিছুদিন পর সাবিকুন বাবুকে নক করে। তাকে বাবুর জীবনে পুনরায় গ্রহণের জন্য বলে। সাবিকুনের কথার পরিপ্রেক্ষিতে বাবু বলে 'সরি সাবিকুন। তোমাকে গ্রহণ করা আমার পক্ষে সম্ভব না। তোমার কারণে আমার জীবন নষ্ট হয়েছে। মৃত্যুর সময়ও দুলাভাই-আব্বু আক্ষেপ করেছে। তুমি আমার জীবন গল্পের অভিশপ্ত এক বেঈমান।' এঘটনার প্রায় এক বছর অতিবাহিত হয়েছে। তবে বাবু আজও নিরবে কাঁদে। কে দেবে তাকে সান্ত্বনা? কে বুঝবে তার কষ্ট? কেনবা এমন ঘটল?

 

Header Ad
Header Ad

দেশজুড়ে রথযাত্রা উৎসব শুরু আজ

ছবি: সংগৃহীত

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উৎসব শুরু আজ। সনাতনী রীতি অনুযায়ী, প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শুরু হয় জগন্নাথদেবের রথযাত্রা।

বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে আনন্দমুখর পরিবেশে ৯ দিনব্যাপী শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা মহোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। আগামী ৫ জুলাই বিকেল ৩টায় উল্টো রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে এই উৎসব শেষ হবে। এ বছর ঢাকাসহ সারা দেশে ইসকনের ১২৮টি মন্দির ও আশ্রমে এদিন রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, জগন্নাথদেব হলেন জগতের নাথ বা অধীশ্বর। জগৎ হচ্ছে বিশ্ব আর নাথ হচ্ছেন ঈশ্বর। তাই জগন্নাথ হচ্ছেন জগতের ঈশ্বর। তার অনুগ্রহ পেলে মানুষের মুক্তিলাভ হয়। জীবরূপে তাকে আর জন্ম নিতে হয় না। এই বিশ্বাস থেকেই রথের উপর জগন্নাথ দেবের প্রতিমূর্তি রেখে রথ নিয়ে যাত্রা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

শুভ রথযাত্রা উপলক্ষ্যে ঢাকায় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) আয়োজিত ৯ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান মালায় রয়েছে, হরিনাম সংকীর্তন, বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামানায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, পদাবলী কীর্তন, আরতি কীর্তন, ভগবত কথা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শ্রীমদ্ভাগবত গীতা পাঠ, ধর্মীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শন ও ধর্মীয় নাটক মঞ্চায়ন।

ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী জানান, ইসকন স্বামীবাগ আশ্রমে শুক্রবার সকাল ৮টায় বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞের মধ্য দিয়ে শুভ রথযাত্রা মহোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়ে দুপুর দেড়টায় আলোচনা সভা শেষে বিকেল ৩টায় রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করা হবে।

ঢাকায় রথযাত্রার রুট উল্লেখ করে তিনি জানান, স্বামীবাগ আশ্রম থেকে রথযাত্রা শুরু হয়ে জয়কালী মন্দির, ইত্তেফাক মোড়, শাপলা চত্বর, দৈনিক বাংলা মোড়, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেট, পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেস ক্লাব, কদম ফোয়ারা, হাইকোর্ট মাজার, দোয়েল চত্বর, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জগন্নাথ হল, পলাশী মোড় হয়ে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে গিয়ে পৌঁছবে। পরে আগামী ৫ জুলাই বিকেল ৩টায় উল্টোরথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা একই পথে বিপরীত দিক থেকে অর্থাৎ ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির থেকে স্বামীবাগ আশ্রমে আনা হবে।

এছাড়া পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারের জগন্নাথ জিউ ঠাকুর মন্দির, জয়কালী রোডের রামসীতা মন্দির এবং শাঁখারীবাজার একনাম কমিটিসহ রাজধানীর অন্যান্য মন্দির ও দেশের বিভিন্ন মন্দিরেও রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

Header Ad
Header Ad

ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ বিলিয়ন ডলারের গোপন প্রস্তাব

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের সঙ্গে সমঝোতায় গোপনে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনা এবং মার্কিনদের কথামতো চালাতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন নানাভাবে চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে চারটি সূত্র সিএনএনকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র মতে, ট্রাম্প প্রশাসন ইরানকে বেসামরিক-শক্তি উৎপাদনকারী পারমাণবিক কর্মসূচি গড়ে তুলতে সহায়তা করার জন্য ৩০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত অর্থ প্রদান, নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা এবং বিশ্বব্যাপী ইরানের ফ্রিজ হওয়া তহবিলের বিলিয়ন ডলার মুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা করেছে। আর এ সবই করা হচ্ছে অত্যন্ত গোপনে।

যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের মূল খেলোয়াড়রা গত দুই সপ্তাহে ইরান ও ইসরায়েলে সামরিক হামলার মধ্যেও পর্দার আড়ালে ইরানিদের সঙ্গে কথা বলেছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর এই সপ্তাহেও আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেছেন, বেশ কয়েকটি প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে। এগুলো প্রাথমিক ও ক্রমবর্ধমান। তবে একটি অ-আলোচনাযোগ্য শর্ত বহাল রয়েছে। তা হলো, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শূন্য হতে হবে। যদিও ইরান ধারাবাহিকভাবে বলেছে, তাদের প্রয়োজনে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ করা হচ্ছে তবুও চাপ প্রয়োগকারীরা এ শর্তে ছাড় দিতে নারাজ। দুটি সূত্র সিএনএনকে অন্তত একটি প্রাথমিক খসড়া প্রস্তাব সরবরাহ করেছে। এতে ইরানের জন্য বেশ কয়েকটি প্রণোদনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং উপসাগরীয় অংশীদারদের মধ্যে একটি গোপন বৈঠকে কিছু বিবরণ চূড়ান্ত করা হয়েছে। মার্কিন সামরিক হামলার আগের দিন ছিল কয়েক ঘণ্টার সেই বৈঠক সম্পর্কে জানা দুটি সূত্র সিএনএনকে এসব নিশ্চিত করেছে।

আলোচিত শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, ইরানের একটি নতুন অ-সমৃদ্ধকরণ পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য আনুমানিক ২০-৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হবে। এ কেন্দ্র বেসামরিক শক্তি উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হবে। ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং প্রস্তাব সম্পর্কে জানা সূত্রগুলো সিএনএনকে জানিয়েছে, অর্থ সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসবে না; বরং আরব অংশীদাররা এই বিল পরিশোধ করার পথ খোঁজা হচ্ছে। ইরানের পারমাণবিক শক্তি সুবিধাগুলোতে বিনিয়োগের বিষয়টি সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পারমাণবিক আলোচনার পূর্ববর্তী রাউন্ডগুলোতেও আলোচিত হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই আলোচনাগুলোর নেতৃত্ব দিতে ইচ্ছুক। পারমাণবিক কর্মসূচি গড়ে তুলতে কারও না কারও অর্থ প্রদান করতে হবে। তবে আমরা সেই প্রতিশ্রুতি দেব না।

অন্যান্য প্রণোদনার মধ্যে রয়েছে ইরানের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা অপসারণের সম্ভাবনা এবং ইরানকে ৬ বিলিয়ন ডলার ফ্রিজ সম্পদ ব্যবহার করতে দেওয়া, যা বর্তমানে বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রয়েছে এবং তারা বহু বছর তা অবাধে ব্যবহার করতে পারছে না।

সূত্র সিএনএনকে বলেছে, বিভিন্ন মানুষের দ্বারা অনেক ধারণা উত্থাপিত হচ্ছে এবং তাদের অনেকেই সৃজনশীল হওয়ার চেষ্টা করছে। এখানে কী ঘটবে, তা সম্পূর্ণরূপে অনিশ্চিত। ইসরায়েলি ও মার্কিন হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে প্রথম পাঁচ রাউন্ডের আলোচনা সম্পর্কে জানা একটি পৃথক সূত্রও একই তথ্য দিয়েছে।

উইটকফ বুধবার সিএনবিসিকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি শান্তি চুক্তি চায়। সব প্রস্তাব ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র প্রাপ্তি থেকে বিরত রাখার জন্য নকশা করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র বলেছে , ইরান শান্তিপূর্ণ বেসামরিক উদ্দেশ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি চালু রাখতে পারে। তবে সেই কর্মসূচির জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না। পরিবর্তে ইরান সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম স্বল্প মাত্রায় আমদানি করতে পারবে। কতটুকু খরচ হচ্ছে, তা পর্যবেক্ষকদের নিয়মিত জানাতে হবে।

উইটকফ বলেন, এখন ইরানের সঙ্গে আলোচনা হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমরা কীভাবে ইরানকে উন্নত বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচি চালু রাখার সুযোগ দেব, সেটিই মুখ্য।

 

Header Ad
Header Ad

প্রত্যেক জেলায় হাসপাতালের মত সিনেমা হলও দরকার: জাহিদ হাসান

ছবি: সংগৃহীত

‘প্রত্যেকটা জেলায় শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য যেমন হাসপাতাল আছে তেমনি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সিনেমা হল থাকা দরকার। সুস্থ বিনোদন থাকলে মানুষ নেশা, হানাহানি ও মব জাস্টিস থেকে দূরে থাকবে। আমাদের যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাসস্থান দরকার তেমনি বিনোদনের জন্য সিনেমা হল দরকার।’

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানী বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘উৎসব’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনী শেষে কথাগুলো বলছিলেন নন্দিত অভিনেতা জাহিদ হাসান।

‘উৎসব’ সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান। চরিত্রের নাম জাহাঙ্গীর। শুটিংয়ের বহুদিন পেরিয়ে গেলেও জাহাঙ্গীর চরিত্রের মধ্যে থেকে এখনো বের হতে পারেননি বলেন জানালেন এই অভিনেতা।

 

ছবি: সংগৃহীত

জাহিদ হাসান বলেন, ‘এখনো আমি এই চরিত্রটার মধ্যে ডুবে আছি। সিনেমার আমার চরিত্রের নাম জাহাঙ্গীর। আসলে আমাদের প্রত্যেকটা মানুষের মাঝে জাহাঙ্গীর লুকিয়ে আছে। কারণ, আমাদের প্রত্যেকটি মানুষের মাঝে হিরোইজম আছে, ভিলেন আছে। আছে উপলব্ধি করার ক্ষমতা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমাদের সেই রিয়েলাইজেশনের সময়টা আছে। কখন মৃত্যু হয় আমরা জানি না। এই রিয়েলাইজ যদি আমাদের মধ্যে থাকে তাহলে আজ আমরা যারা জাহাঙ্গীরের মত আছি, কাল আমরা ভালো হয়ে যাবো।’

ঈদের সিনেমা মানেই এখন যেন অ্যাকশন অথবা থ্রিলার। গত কয়েক বছরে ঈদে বাজিমাত করা সিনেমাগুলোর দিকে তাকালে এমনটাই মনে হতে পারে। সেসব থেকে বেরিয়ে হাস্যরস পরিবার এবং সম্পর্কের গল্পে এবার ঈদে বাজিমাত করেছে ‘উৎসব’। এই সফলতার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করলেন প্রত্যেক শিল্পীর সততাকে।

জাহিদ হাসানের কথায়, ‘প্রডাক্টশন বয় থেকে শুরু করে এই সিনেমার সঙ্গে আমরা যারা যুক্ত ছিলাম তারা প্রত্যেকেই অনেক সৎ ছিলাম। অভিনয় নিয়ে কোনো অসৎ অবস্থার মধ্যে আমরা যাইনি। এটাই মনে হয় আমাদের সফলতার বড় বিষয়। এই সিনেমার প্রত্যেকটি দৃশ্যের সঙ্গে আমাদের আবেগ জড়িয়ে আছে।’

করোনা মহামারির পর অভিনয়ে খুব একটা দেখা যায়নি জাহিদ হাসানকে। নির্মাতাদের সঙ্গে অভিনয় নিয়ে খুব একটা কথা হয়নি তার। কারোনার পর ‘উৎসব’-ই তার প্রথম সিনেমা। তার ভাষ্য, ‘করোনার পর খুব একটা অভিনয় করা হয়নি। আমাকে অভিনয়ে নেওয়া বা না নেওয়াটা নির্মাতাদের দায়িত্ব। বলতে গেলে গত কয়েকবছর সেভাবে সুযোগও আসেনি। ‘উৎসব’ সিনেমার মধ্যে সেই সুযোগটা এলো। অভিনয় করলাম। দর্শক প্রতিক্রিয়া দেখে বুঝেছি অন্তত ফেল করিনি।’

 

ছবি: সংগৃহীত

সিনেমার হলের সংখ্যা কম হওয়ায় দেশের সিনেমা সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছচ্ছে না বলে দুঃখ প্রকাশ করেন জাহিদ হাসান। সেইসঙ্গে জেলা প্রশাসকদের বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ারও অনুরোধ জানান তিনি।

জাহিদ হাসান বলেন, ‘আমার বাড়ি সিরাজগঞ্জ। আমার বোন ফোন করে বললেন এখানে তো সিনেমা হলে নেই। তাই আমরা সিনেমা দেখতে পারছি না। এই কথা শুনে কষ্ট পেয়েছি। এটা সত্য সিরাজগঞ্জের মত দেশের অনেক বড় শহরে সিনেমা হল নেই। জেলা প্রশাসকসহ দায়িত্বশীল পর্যায়ে যারা আছে তাদের সবাইকে অনুরোধ করবো তারা যেন প্রত্যেকটি জেলায় সিনেমা হলের ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়ে তার বাস্তবায়ন করেন।’

তানিম নূর পরিচালিত ‘উৎসব’ সিনেমায়ি জাহিদ হাসান ছাড়াও অভিনয় করেছেন জয়া আহসান, অপি করিম, চঞ্চল চৌধুরী, আফসানা মিমি, তারিক আনাম খান, আজাদ আবুল কালাম, ইন্তেখাব দিনার, সুনেরাহ বিনতে কামাল, সৌম্য জ্যোতি, সাদিয়া আয়মান।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দেশজুড়ে রথযাত্রা উৎসব শুরু আজ
ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ বিলিয়ন ডলারের গোপন প্রস্তাব
প্রত্যেক জেলায় হাসপাতালের মত সিনেমা হলও দরকার: জাহিদ হাসান
দেশে ফিরতে ইরান থেকে পাকিস্তান পৌঁছেছেন ২৮ বাংলাদেশি
যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির সাক্ষাৎ
খুলনায় বিএনপির নেতার বাড়ি ভাঙচুর, এসআই সুকান্ত চুয়াডাঙ্গায় গ্রেপ্তার
বিশেষ সুবিধা: ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের কার কত বেতন বাড়ছে
হানিয়া আমিরের সঙ্গে সিনেমায় অভিনয়, ভারতে দিলজিৎকে নিষিদ্ধের দাবি
আমি যদি ভবিষ্যতে শেখ হাসিনার মতো করি, আমারও পতন হবে: কাদের সিদ্দিকী
চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে জোট গড়ছে না বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের নামে থাকা ৯৭৭ স্থাপনার নাম পরিবর্তন
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে ‘পাবলিক’ রাখতে হবে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইল
প্রকৃত ঘটনা জানলে হাসনাত আবদুল্লাহ তার ভুল বুঝতে পারবেন: দুদকের ডিজি
বিরামপুরে আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস পালিত
এনসিপির তুষারের বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর আলাপ’সহ যত অভিযোগ নীলা ইসরাফিলের
২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ১৯ জনের করোনা শনাক্ত
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছর নির্ধারণ করে স্বৈরাচারকে রুখে দেয়া হয়েছে: সালাহউদ্দিন আহমদ
নীরবতা ভেঙে খামেনি বললেন, ইরান ‘বিজয়’ অর্জন করেছে (ভিডিও)
সাংবাদিকতায় বাংলাদেশের মতো স্বাধীনতা উন্নত বিশ্বেও নাই: প্রেস সচিব
রংপুরে দেশীয় অস্ত্র ও অবৈধ মাদকসহ ২ যুবক গ্রেফতার