সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৯২৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যা চলতি বছরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ হাজার ৩৬৫-এ পৌঁছেছে। এছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে নতুন করে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ফলে, এ বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮২ জনে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে প্রকাশিত নিয়মিত প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সারাদেশে ৯২৭ জন নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ৪৩২ জন ভর্তি আছেন। এছাড়া, ঢাকা বিভাগে ১৭৩ জন, বরিশালে ১০২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৯ জন, খুলনায় ৭৬ জন, ময়মনসিংহে ৩৮ জন এবং রাজশাহীতে ১৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশে মোট ৩৫ হাজার ৩৬৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ৬৩.২% পুরুষ এবং ৩৬.৮% নারী। একই সময়ে মারা যাওয়া ১৮২ জনের মধ্যে ৫১.১% নারী এবং ৪৮.৯% পুরুষ।
প্রতি বছর বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গুর পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত বছর দেশে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন, যার মধ্যে ঢাকায় ১ লাখ ১০ হাজার ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে ২ লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন ছিলেন।
অবশ্য, আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩ লাখ ১৮ হাজার ৭৪৯ জন। গত বছর মশাবাহিত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১ হাজার ৭০৫ জন, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যু।
২০১৯ সালে দেশে এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং সে সময় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু ঘটেছিল। ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমনটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে ২৮ হাজার ৪২৯ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন এবং ১০৫ জন মারা যান। এছাড়া, ২০২২ সালে মোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, যেখানে ২৮১ জনের মৃত্যু ঘটে।
জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং ডেঙ্গু মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে।